Ajker Patrika

চীনা বিনিয়োগে সৌদি আরবে লাফিয়ে বাড়ছে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সৌর বিদ্যুতের বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে সৌদি আরব। ছবি: এএফপি
সৌর বিদ্যুতের বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে সৌদি আরব। ছবি: এএফপি

বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরবে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুতের ওপর ভর্তুকি তুলে নেওয়ার পর বড় ব্যবসায়ীরা এখন সৌর বিদ্যুতের দিকে ঝুঁকছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা বিদ্যুৎ খরচ কমাতে চাইছেন।

ফিন্যানসিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফটোভোলটাইক প্যানেলের দাম কমে আসা এবং সরকারের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নানা প্রণোদনার কারণে উৎসাহিত হয়ে, সম্প্রতি লজিস্টিকস থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রয় পর্যন্ত বিভিন্ন খাতের বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি তাদের ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপন করেছে।

সৌদি সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের বিদ্যুতের অর্ধেক নবায়নযোগ্য উৎস থেকে এবং ২০৬০ সালের মধ্যে নেট জিরো কার্বন অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সৌর বিদ্যুতের এই ব্যাপক ব্যবহারের প্রধান কারণ হতে পারে ২০১৮ সালে শুরু হওয়া জ্বালানি ভর্তুকি পর্যায়ক্রমে বাতিল করা। এটি সৌদি সরকারের বৃহত্তর অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ, যার মধ্যে বৃহৎ আকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পও অন্তর্ভুক্ত।

সৌদি আরবের ফাকিহ কেয়ার গ্রুপের সভাপতি মাজেন ফাকিহ বলেন, ‘আমরা সৌর বিদ্যুতে বিনিয়োগ করেছি এবং সত্যি বলতে এটা লাভজনক হচ্ছে। আমরা আমাদের কার্বন নিঃসরণ কমাতে পেরেছি, খরচও কিছুটা হলেও কমাতে পেরেছি, যদিও সৌর বিদ্যুৎ এখনো সস্তা নয় এবং মূলধন বিনিয়োগ অনেক বড়।’

জেদ্দার ফিলিস্তিন স্ট্রিটে হাসপাতালের কাছে কোম্পানির বহুতল পার্কিং লটের ছাদে স্থাপন করা পিভি প্যানেলগুলো ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ বিল বাবদ ১ লাখ ৭০ হাজার সৌদি রিয়ালেরও বেশি (৪৫ হাজার মার্কিন ডলার) সাশ্রয় করতে সাহায্য করেছে। জানান মাজেন ফাকিহ।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ, তাই সম্পূর্ণ বিনিয়োগের রিটার্ন দেখতে দুই বা তিন দশক সময় লাগবে। তবে প্রাথমিক ফলাফলে আমরা বেশ উৎসাহিত বোধ করছি।’

নবায়নযোগ্য জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা তৈরিতে সাহায্য করে স্থানীয় স্টার্ট-আপ হালা এনার্জি। সংস্থাটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফারিস আল-সুলাইমান বলেন, বাণিজ্যিক ও শিল্প খাতের ক্লায়েন্টদের মধ্যে চাহিদার স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যিক ক্লায়েন্ট, যেমন শপিংমল, গুদাম ইত্যাদি, যারা প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টায় দশমিক ৩০ সৌদি রিয়াল সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ মাসুল পরিশোধ করে, তারা ছাদে সৌর বিদ্যুতের ব্যবসায়িক সম্ভাবনার প্রতি অনেক বেশি আগ্রহী। অন্যদিকে, শিল্প খাতের ক্লায়েন্টরা, যারা দশমিক ১৮ সৌদি রিয়ালের কম মাসুল পরিশোধ করে, তারা তুলনামূলকভাবে কম সাড়া দিচ্ছে।’

ইকিয়া এবং জিএসকের মতো বহুজাতিক গ্রুপের অংশীদার সৌদি কোম্পানিগুলো তাদের মূল কোম্পানির উৎসাহে সৌর বিদ্যুৎ অবকাঠামো স্থাপন করেছে। তাদের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য রয়েছে। পশ্চিমা বাজারের সঙ্গে সংযোগ থাকা লজিস্টিকস ও পরিবহন ব্যবসার মতো অন্যান্য সৌদি গ্রুপগুলোও এ দিকে ঝুঁকছে।

১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠিত তামের গ্রুপের প্রধান সরবরাহ চেইন কর্মকর্তা আমর এলমানসৌরি বলেন, ‘প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো, সরবরাহ চেইনের টেকসই উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখা, কারণ শেষ পর্যন্ত এটি আমাদের বিক্রেতা, সরবরাহকারী এবং অংশীদারদের দ্বারাও স্বীকৃত।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন শিল্পের বিশ্বজুড়ে ২০০ টিরও বেশি সরবরাহকারীর সঙ্গে অংশীদারত্ব করি। আর সবুজায়নের ক্ষেত্রে তাদেরও নিজস্ব লক্ষ্য রয়েছে।’

জেদ্দা ও রিয়াদে তাদের লজিস্টিক হাবগুলোতে ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপনের পর গত বছর কোম্পানিটি জ্বালানি দক্ষতা এবং কম ইউটিলিটি খরচের মাধ্যমে ৪ লাখ ৪০ হাজার সৌদি রিয়ালেরও বেশি সাশ্রয় করেছে। এলমানসৌরি জানান, তাঁদের লক্ষ্য, এখন দুই বছরের মধ্যে সমস্ত প্রধান বিতরণ কেন্দ্রে সৌর বিদ্যুৎ অবকাঠামো সম্প্রসারিত করা।

চীনে তৈরি তুলনামূলক সস্তা পিভি মডিউলের সরবরাহ এই পরিবর্তনে দারুণভাবে সহায়তা করেছে। ২০২১ থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত চীন থেকে সৌদি আরবে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার। এফডিআই মার্কেটসের তথ্য অনুযায়ী, বিনিয়োগের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যাটারি, সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের মতো কার্বনমুক্ত প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভর্তুকি কমানো এবং অর্থনীতিকে বহুমুখী করার সংস্কারই এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হয়ে থাকতে পারে। তাঁর এই পদক্ষেপের কারণে গত বছর ডিজেলের দাম ৪৪ শতাংশ বেড়েছে।

জাপান-ভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনমিকসের সিনিয়র গবেষক শিগেতো কোন্দো বলেন, ‘যদিও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাম কমে যাওয়াও এখানে একটি ভূমিকা রেখেছে, তবে সৌদি সরকারের আর্থিক সংস্কারের দিকনির্দেশনা–যার মধ্যে জ্বালানি ভর্তুকি পরিবর্তনও অন্তর্ভুক্ত–কোম্পানিগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানির বাইরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বিকল্পগুলো সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তর-পূর্ব জাপান, সুনামি সতর্কতা জারি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। জাপান আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৪ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় ২টা ৪৪ মিনিট) নাগাদ এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০ কিলোমিটার গভীরে। মূল কম্পনের পর বেশ কয়েকটি ছোট আফটারশকও অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাগুলোর জন্য সতর্কতা হিসেবে ‘সুনামি অ্যাডভাইজরি’ জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, ঢেউগুলো প্রায় এক মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, তাই উপকূলবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে একই অঞ্চলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে বহু বাসিন্দা আহত হয়েছেন। সর্বশেষ পরিস্থিতি ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, দিল্লির অবস্থা বিপজ্জনক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শুক্রবার ঢাকার অবস্থান ১০ম। অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি।

আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৬৭, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা দিল্লির বায়ুমান ৩৮৫, যা বিপজ্জনক বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভিয়েতনামের হ্যানয়, ভারতের কলকাতা, কুয়েতের কুয়েত সিটি ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৫৫, ২৪৬, ২১৭ ও ২১১।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা ১৫.৫

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রা কমছিল। তবে আজ শুক্রবার শীত বেশ ভালোভাবেই জেঁকে বসেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকালে সেটি কমে হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাস থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সাধারণত অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৩ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ৩৩ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দূষিত শহরের তালিকায় আবারও শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৩
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহরের তালিকায় ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অবস্থান সপ্তম। অন্য দিকে শীর্ষস্থানে আবারও ফিরে এসেছে দিল্লি।

আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১৯১, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

আর শীর্ষে থাকা দিল্লির বায়ুমান ২৪৫, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো—ভিয়েতনামের হ্যানয়, ভারতের কলকাতা, মিসরের কায়রো ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৩৮, ২৩৫, ২২৭ ও ২১৮।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ ও দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়; ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়; ১০১-১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতি মাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক ও সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত