Ajker Patrika

উন্নয়ন যেন পরিবেশের বিরুদ্ধে না যায়, প্রয়োজন নীতিগত সমন্বয়: পরিবেশ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
টেকসই উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যকর ভূমিকার ওপর জোর দিয়েছেন উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
টেকসই উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যকর ভূমিকার ওপর জোর দিয়েছেন উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টেকসই উন্নয়নের সঠিক মানদণ্ড নিশ্চিত না হলে ন্যায্য রূপান্তর সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি মনে করেন, এতে ‘গ্রিন ওয়াশিং’ (সবুজ ধোঁকাবাজি) প্রবণতা বাড়ে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ জাস্ট ট্রানজিশন একাডেমি: সবুজ অর্থনীতিতে সবার জন্য মর্যাদাপূর্ণ কাজ’ শীর্ষক সেশনে এসব কথা বলেন তিনি।

সেশনে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, টেকসই পরিবর্তন কেবল জ্বালানি খাতে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। কৃষি, উৎপাদন ও টেক্সটাইলসহ প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকা দরকার। যাতে পুরো দেশ একসঙ্গে এগিয়ে যেতে পারে।

রিজওয়ানা বলেন, পোড়ানো ইটের বিকল্প নিয়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও, এটি এখনো কাঠামোগত পরিবর্তন অর্জন করেনি। উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংসকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। পরিবেশ অধিদপ্তর শুধু প্রকল্প অনুমোদনের কাজ করছে— এ ধারণা বদলানো প্রয়োজন। উন্নয়ন যেন পরিবেশের বিরুদ্ধে না যায়, সে বিষয়ে নীতিগত সমন্বয় প্রয়োজন। ৩২টি দেশ ইতিমধ্যে পোড়ানো ইট নিষিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশকেও এখনই বিকল্পের দিকে পূর্ণাঙ্গভাবে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ভবনগুলোতে শুধু ‘সবুজ সনদ’ যথেষ্ট নয়, বরং দেখতে হবে— ওই ভবনগুলো নারীবান্ধব কিনা, শ্রমিকদের বিশ্রাম নিশ্চিত করা হচ্ছে কিনা, পানি পুনর্ব্যবহার ও টেকসই জ্বালানি ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা।

বিদ্যুৎ অপচয় রোধে সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, একদিকে আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাই, অন্যদিকে আমদানি করা জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে বিদ্যুৎ অপচয় করি— এটি নীতির পাশাপাশি মূল্যবোধের বিষয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা যেসব খাতে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি, সেখানে প্রায়ই সমাধান আসে বেসরকারি খাত থেকে, কিন্তু তা বিস্তৃত হয় না। আমাদের কাঠামোগত পরিবর্তনের প্রয়োজন।

উপদেষ্টা এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যকর ভূমিকার ওপর জোর দেন এবং সরকারি সংস্থাগুলোকেও পরিবেশগত মূল্যবোধকে তাদের নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বেসরকারি খাত ও এনজিও একযোগে কাজ করলে টেকসই পদ্ধতিগুলো নীতিমালায় প্রতিফলিত হবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে।

আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর তুয়োমো পোতিয়াইনেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— সুইডেন দূতাবাসের সহযোগিতাবিষয়ক প্রধান মারিয়া স্ট্রিডসমান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশির কবীর, এনসিসিডব্লিউইর চেয়ারপারসন বাদল খান, এফএডির প্রতিনিধি জিয়াওকুন শি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত