ইশতিয়াক হাসান

আমাদের দেশের কোন বনে বাঘ আছে জিজ্ঞেস করলে নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের নামই বলবেন। অথচ একসময় বাংলাদেশের বহু অরণ্যেই বাঘ ছিল। তবে অনেকেই জানেন না, এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো কোনো জঙ্গলে বাঘ দেখার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আসলেই কি এখনো আমাদের পাহাড়ের বনে বিচরণ করছে বাঘেরা? সে উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে।
পুরোনো সেই দিনের কথা
আমাদের দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের বর্তমান হাল-হকিকত জানার আগে বরং এখানকার বাঘেদের অতীত বিচরণের কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। বাঘ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরীর একটা লেখায় ১৯৫৯ সালে কাপ্তাইয়ের (বর্তমানে রাঙামাটি জেলায় পড়েছে) বনে শিকার করা একটা বাঘের ছবি দেখেছিলাম। শিকার করেছিলেন একজন মারমা। ২০০৭–০৮ সালের দিকে যখন কাপ্তাই যাই, ওই শিকারির খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। আশ্চর্যজনকভাবে শিলছড়ি মারমাপাড়ায় ওই শিকারির ছেলেকে পেয়ে যাই। ছবিটা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিল গোটা পাড়ার লোকেরা।
আজ থেকে বেশি নয়, ৬০-৭০ বছর আগের পার্বত্য চট্টগ্রাম আর সিলেট বিভাগের বনের অবস্থা জানতে আমাকে সাহায্য করে এনায়েত মওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইটা। জীবনে বন নিয়ে যত বই পড়েছি, এতটা ভালো লেগেছে কমই। মনটা হুহু করে ওঠে কাপ্তাই বাঁধ তৈরির জন্য কাসালং রিজার্ভ ফরেস্টের গাছপালা কাটার মহাযজ্ঞের বর্ণনা পড়ে। কাসালং রিজার্ভের মাইনি, মাহিল্লা—এসব এলাকায় বাঘ মারার কাহিনিগুলো পড়ে মন খারাপ করে বসে থেকেছি। এখনো যতবার বইটি পড়ি, মনটা কেঁদে ওঠে।
১৯৫৭-৫৮ সালের দিকে কয়েকটি বাঘ শিকারের বর্ণনা আছে ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইটিতে। এটি আমাকে এতটাই প্রভাবিত করে যে পরে মাইনি, পাবলাখালী গিয়েছি। পাবলাখালী থেকে নৌকা রিজার্ভ করে কাসালং নদী ধরে মাহিল্লা পেরিয়ে যাওয়ার সময় যেন এনায়েত মওলার সময়টায় ফিরে গিয়েছিলাম। তখনকার গভীর জঙ্গল যেন মনের চোখে দেখতে পাচ্ছিলাম।
২০১১ সালের দিকে মাইনি বন বাংলোয় উঠে অবশ্য আশপাশে আর বনের ছিটেফোঁটা দেখিনি। কিন্তু বাংলোর দেয়ালে টাঙানো হাতি খেদার ছবিসহ পুরোনো কিছু ছবি দেখে শরীরের রোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তবে রাতে পুরোনো ভিজিটরস বুকটা দেখতে গিয়েই চমকেছি। খুঁজতে খুঁজতে ১৯৫০-৬০ সালের মধ্যকার একটি এন্ট্রিতে চোখ আটকে যায়। সেখানে একজন লিখেছেন, ‘আজ একটা বেঙ্গল টাইগার মেরেছি।’ বাঘটার মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত মাপও দেওয়া ছিল।
১৯৫০ সালের অক্টোবরে কাসালং রিজার্ভে বাঘ দেখার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন বন বিভাগের এক সময়কার ইন্সপেক্টর জেনারেল ইউসুফ এস আহমেদ। তাঁর ‘উইথ দ্য ওয়াইল্ড অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল’ বইটিতে ওই সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার অরণ্য-বন্যপ্রাণীর ভালো চিত্র পাওয়া যায়।
চট্টগ্রামের বাঘের অবস্থার চমৎকার চিত্র পাই এরশাদ উল্লা খানের ‘চট্টগ্রামের শিকার কাহিনী’ বইয়ে। ১৯৫৫ সালে চুনতির ওহাইদ্যা ঘোনায় (আরাকান রোডের পাশের পাহাড়ে) বাঘ শিকারের বর্ণনা করেছেন লেখক। কক্সবাজারের হিমছড়িতে আস্তানা গাড়া বিশাল আকারের একটি বাঘের কাহিনিও শুনিয়েছেন তিনি।’ ঘটনাটা গত শতকের পঞ্চাশের দশকের। ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে রাঙামাটির নানিয়ারচরের ধারের মরাচেঙ্গির ধূর্ত এক বাঘের কাহিনিও পড়ি তাঁর এ বইয়ে।
এদিকে ড. রেজা খানের ‘বাংলাদেশের বন্য প্রাণী’ (তৃতীয় খণ্ড) পড়ে জানতে পেরেছি ১৯৮১ সালের দিকে গারো পাহাড়ে, নেত্রকোনা ও কক্সবাজারের ফাঁসিয়াখালি রেঞ্জে তিনটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মারা পড়েছে।
কালো চিতা খুবই কালেভদ্রে দেখা গেলেও কালো বাঘ আরও অনেক বেশি দুষ্প্রাপ্য। এরও রেকর্ড আছে বাংলাদেশেই। ১৮৪৬ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ে (পার্বত্য চট্টগ্রামও বুঝিয়ে থাকতে পারেন লেখক) এমনই কালো বাঘ দেখা যাওয়ার কথা বলেছিলেন এক প্রকৃতিবিদ।
বাঘের গল্প
একসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল-গাজীপুরের ভাওয়াল ও মধুপুরের অরণ্যসহ অনেক এলাকাতেই ছিল বাঘেদের রাজ্য। আর তাই বান্দরবান, রাঙামাটি, সিলেট যেখানেই যাই, খোঁজ নিই বাঘেদের। একটু বয়স্ক কাউকে পেলে চেপে ধরি পুরোনো দিনের জঙ্গলের গল্প শোনার জন্য। তাঁদের মুখে এসব কাহিনি শুনতে শুনতে আমারও মনে হয়—আহ ওই সময় যদি থাকতাম! কিংবা সত্যি যদি টাইম মেশিন থাকত, তবে দেশের কত জঙ্গলেই না বাঘেদের দেখা পেতাম। অন্যদের মুখে শোনা বাঘ দেখার কিছু কাহিনিই তুলে ধরছি পাঠকদের সামনে।
২০২০। বান্দরবানের কেওক্রাডংয়ের পাদদেশে পরিচ্ছন্ন, শান্ত এক পাড়া। দার্জিলিং পাড়া। সন্ধ্যা নেমেছে। পাড়াপ্রধানের খাবারের ঘরটায় তাঁকে ঘিরে বসে আছি কয়েকজন। সৌরবিদ্যুতে জ্বলা বাতির মিটমিটে আলোয় ঘরটার অন্ধকার কাটেনি। অদ্ভুত এক আলো-আঁধারির খেলা কামরাজুড়ে। পাড়াপ্রধান ছোটখাটো গড়নের অমায়িক এক মানুষ। মুখের বহু ভাঁজ, চোখের নিচের কুঁচকানো চামড়া জানান দিচ্ছে অনেকগুলো গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত পাড় করে এসেছেন। সেই সঙ্গে স্মৃতি হিসেবে জমা আছে হাজারো বিচিত্র ঘটনা।
একটা গল্প শুনতে চেয়েছিলাম। সত্যি গল্প। ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলতে লাগলেন। তবে কাহিনিটা এত রোমাঞ্চকর, ভাষার ছোট্ট সমস্যাটা উড়ে গেল এক নিমেষে। এমনই এক রাত ছিল। তবে সময়টা অন্তত পঁচিশ বসন্ত আগের। ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেছে পাড়ার মানুষগুলো। হঠাৎ একটা শব্দে ঘুম টুটে যায় কারবারির। গোয়ালঘরের দিক থেকে আসছে আওয়াজটা। দৌড়ে ঘরের দরজা খুলে বের হলেন। দেরি হয়ে গেছে। তাঁর সবচেয়ে বড় গরুটাকে নিয়ে গেছে ওটা। ডোরা বাঘ।
আমি যেন হঠাৎ করেই পিছিয়ে গেলাম দুই যুগ কিংবা তারও আগে। স্পষ্ট একটা হুটোপুটির শব্দ শুনলাম। তারপর ভারী একটা কিছু হিঁচড়ে নেওয়ার আওয়াজ। বাঘ বড় সাইজের গরু বা মোষ মেরে নেওয়ার সময় মাটিতে মড়ি ঘষটানোর কারণে যে শব্দ হয়!
২০১১ সালের ঘটনা। বন্ধু মিশুক-মেহেদীসহ বড় মোদকের দিকে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল সাঙ্গু রিজার্ভের গহিনে ঢুকে বাঘের খোঁজ করা। আমাদের গাইড ছিলেন মধ্যবয়স্ক এক মারমা। ভারী হাসি-খুশি মানুষ। তিন্দু পেরিয়েছি তখন। রেমাক্রির ধারে। হঠাৎ এক পাহাড় দেখিয়ে বললেন, বিশাল একটা বাঘ বসে থাকতে দেখেছিলেন এখানে। ভয় পেয়ে একটা পাথরের ওপাশে লুকিয়ে পড়েন। বাঘটাকে আয়েশ করে গড়াগড়ি খেতে দেখেছিলেন ঝোপ-জঙ্গলের মাঝে। তাঁর অভিজ্ঞতা ১৯৮০-৮২ সালের।
মাস দেড়েক আগের ঘটনা। বান্দরবানে গিয়ে নীলাচল এলাকায় দেখা হয় পঞ্চাশোর্ধ্ব একজন খুমির সঙ্গে। কিছুটা আলাপ হতেই গল্পের ঝুলি মেলে দিলেন। ছোটবেলা কেটেছে রাঙামাটির বিলাইছড়িতে। ১৯৮৪–৮৫ সালের দিকে বাবার সঙ্গে বিলাইছড়ির এক জুমে কাজ করতে যান। তখনই দেখেন বিশাল এক বাঘ। গল্পটা বলতে গিয়ে যেন পুরোনো সেই স্মৃতি জ্যান্ত হয়ে উঠেছিল তাঁর মনে। চোখ বড় বড় হয়ে উঠেছিল। জুম থেকে কিছুটা দূরের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন বাঘটাকে। তারপর হারিয়ে যায় গাছপালার আড়ালে।
মহানন্দায় বাঘ মিলেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামেও মিলবে কি
ভারতের শিলিগুড়ির কাছেই মহানন্দা অভয়ারণ্য। বছর কয়েক আগে দার্জিলিং যাওয়া-আসার পথে মহানন্দার দেখা পেয়েছিলাম গাড়ি থেকে। তবে জঙ্গলের অন্দরমহলে যাওয়া হয়নি। দুই যুগ পর সেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা মিলেছে।
রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানা যায়, বাঘ আছে এমন জানতে পেরে জঙ্গলের একাধিক জায়গায় ক্যামেরা ট্র্যাপ বসানো হয়েছিল। আর সেই ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে ডোরাকাটা প্রাণীটি। তারা মনে করছেন আরও বাঘ আছে ওই অভয়ারণ্যে। এর আগে নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক ও বক্সা টাইগার রিজার্ভে বাঘের দেখা মিলেছিল। এবার মহানন্দাতেই ক্যামেরাবন্দী হলো পূর্ণবয়স্ক বাঘ। এটা এ বছরের এপ্রিলের ঘটনা।
মহানন্দা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের কিছুটা দূরেই শালুগাড়া আর্মি ক্যাম্প। সেখানে শেষবার ১৯৯৯ সালের দিকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দেখা পাওয়া গিয়েছিল। তবে বন দপ্তর সূত্র বলছে, সেটি বুড়ো বাঘ। এরপর ২০১০ সালের দিকে বাঘের অস্তিত্ব টের পাওয়া গেলেও ছবি পাওয়া যায়নি। তার মানে, এই অরণ্যে বাঘের দেখা মিলল দুই যুগ পর।
আমাদেরও কিন্তু খুব হতাশার কিছু নেই। রাঙামাটি-বান্দরবানের বন-পাহাড়ে সাম্প্রতিক সময়েও বাঘ দেখার দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে সমস্যা হলো, এখনো নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি মহানন্দার মতো।
সাম্প্রতিক খবর
সাজেক-কাসালংয়ের উত্তর-পুবে ভারতের মিজোরামে ডামপা টাইগার রিজার্ভ। একেবারে সীমান্ত বিন্দুতেই এর অবস্থান দেখাচ্ছে গুগল আর্থ। ডামপার কথা জানার পর আশার পারদটা চূড়ায় গিয়ে ঠেকে। ডামপায় বাঘ থাকলে সীমান্তের এপাশে কাসালং-সাজেকে কেন থাকবে না!
তবে ভারতের ২০১৮ সালের বাঘ জরিপের ফলাফল মনটা একটু ভার করে দেয়। ওই জরিপে মিজোরামের ডামপা টাইগার রিজার্ভে বাঘের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলেনি। তবে ২০২১ সালের জুনেই খুশির খবর মিলল। ডামপায় ক্যামেরা ট্র্যাপে বাঘের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে আবার। মে মাসে বাঘ ধরা দিয়েছে জাখুমা ডন নামের এক বন্য প্রাণীপ্রেমী এবং বনপ্রহরীর ক্যামেরা ট্র্যাপে। ২০১৪ সালের পর আবার ডামপায় ক্যামেরা ফাঁদে বন্দী হলেন মহারাজা। অবশ্য কোনো কারণে ডামপায় বাঘ না থাকলেও কাসালং-সাজেকে থাকতেই পারে বাঘের বসতি।
সাজেকে ২০২০ সালেও শুনেছি বাঘের তাজা কাহিনি। সেপ্টেম্বরে সাজেকের পাহাড় রাজ্য ভ্রমণের তৃতীয় রাতে একটি রেস্তোরাঁর ছাদে গেলাম ভ্রমণসঙ্গীদের নিয়ে। এখানেই এক রিসোর্ট মালিকের সঙ্গে আলাপ তখন। একাধিক রিসোর্ট আছে তাঁর।
রাতে পাহাড় কেবল আবছা চোখে পড়ছিল। অদ্ভুত এক আলো-আঁধারি। এর মধ্যে ওই রিসোর্ট মালিক ভদ্রলোক গল্প বলা শুরু করলেন। ‘এখন তো জন্তুরা এদিকে আসে না। দূরের পাহাড়ে আছে। কখনো কখনো শিকারিরা পাহাড়ের ভেতর থেকে বন্য জন্তু মেরে আনে। ওই তো কয়েক বছর আগেই একটা বাঘ শিকার হইছিল।’
‘বাঘ নাকি চিতা?’ কোনোভাবে ঢোক গিলে প্রশ্ন করলাম।
‘কী বলেন! রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। একটা দাঁতও আছে আমার কাছে।’ রীতিমতো চটে গেলেন হাসিখুশি ভদ্রলোকটি। রিসোর্ট মালিক শিক্ষিত, বিদেশি সংস্থায়ও চাকরি করার অভিজ্ঞতা আছে। তাঁর ভুল হওয়ার কথা নয়। কষ্টের মধ্যেও এক চিলতে আশার আলো দেখলাম। কয়েক বছর আগে যেহেতু ছিল, এখনো নিশ্চয় দু-একটা আছে।
নভেম্বর, ২০২০। সকালের নাশতা শেষে কেওক্রাডংয়ে উঠেই দেখা পাহাড়টির মালিক লালা বমের সঙ্গে। তাঁর কাছেই শুনলাম গল্পটা, আর রোমাঞ্চে কাঁটা দিয়ে উঠল শরীর। আগের বছর, মানে ২০১৯-এ তাঁর বিশাল একটা গরু মারা পড়েছিল বাঘের আক্রমণে। লালা বমের বর্ণনা ঠিক হলে দূরের পাহাড়ে থাকে বিশাল বেঙ্গল টাইগার। শিকারের জন্য হানা দেয় মাঝেমধ্যে এদিকে। হেলিপ্যাডের ঠিক নিচেই মেরে খেয়ে গিয়েছিল গরুটাকে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ মনিরুল খান তাঁর ‘টাইগারস ইন ম্যানগ্রোভস’ বইয়ে ২০১০ সালে কাসালং রিজার্ভে বাঘ দেখা যাওয়ার খবর জানিয়েছেন। ২০১১ সালে বান্দরবানের তাজিংডং পাহাড়ে স্থানীয় এক শিকারির কাছে বাঘের চর্বি আবিষ্কার করেন তিনি। তাজিংডংয়ের আশপাশেই ওই বছর বাঘটি শিকার করা হয়। ওটার হাড়-চামড়া কিনে নিয়ে যান মিয়ানমারের শিকারিরা। ওই শিকারিই জানান, তারের শক্তিশালী এক ধরনের ফাঁদ পাতা হয় বাঘের জন্য। ওই ফাঁদে বাঘের পা আটকে যায়। তারপর অনাহারে সেখানে মারা পড়ে বিশাল জন্তুটি।
বড় মোদক এলাকায় ২০১০ সালে ও এর আগে এক স্থানীয় শিকারি দুটি বাঘ শিকার করেন বলে জানা যায়। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের সাম্প্রতিক আনাগোনার ব্যাপারে প্রথম মোটামুটি নিশ্চিত প্রমাণ হাজির করে বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। ২০১৬ সালে বান্দরবানের মাতামুহুরি সংরক্ষিত বনে বাঘের পায়ের ছাপের ছবি তোলেন তাঁদের প্যারা বায়োলজিস্টরা।
দীর্ঘদিন পার্বত্য চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করছেন রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রিয় চাকমা। তাঁর থেকেই জানতে পারি ২০০৫-০৬ সালের দিকে কাসালং সংরক্ষিত অরণ্যে পাহাড়ের দুর্গমের বাসিন্দাদের হাতে দুটি বাঘ মারা পড়ার কাহিনি। ২০১০-১১ সালে রাঙামাটির রাইংক্ষ্যং অরণ্যেও পেয়েছিলেন বাঘের খোঁজ।
আলীকদমের ভারত সীমান্তঘেঁষা এক পাড়ার বাসিন্দার সঙ্গে আলাপ হয় বছর দুয়েক আগে। আশপাশের বন-পাহাড় আর বুনো জন্তুদের খবর নিলাম। একপর্যায়ে বললেন, তাঁদের দুই পাড়ার মাঝখানে বিশাল এক জঙ্গল। দিনের বেলায়ও ওই অরণ্য পাড়ি দিতে ভয় হয়। সেখানেই আস্তানা বড় এক বাঘের। হঠাৎ হঠাৎ ডাক শোনা যায়। ২০২০ সালে পাড়ার দু-একজন দেখাও পেয়েছিল ভয়ংকর সুন্দর এই জন্তুর।
তবে বাঘের সর্বশেষ খবর পাই মনিরুল খানের কাছ থেকে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি দেশের দক্ষিণ-পূর্বে পাহাড়ের খণ্ড বনগুলো করিডরের মাধ্যমে জোড়া লাগানোর বিষয়ে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করে বন বিভাগ। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় আইইউসিএনকে। এ সমীক্ষার অংশ হিসেবেই অন্য গবেষক, বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাসালংয়ের গহিন অরণ্যে যান মনিরুল খান। জুলাইয়ের এই ভ্রমণের সময় স্থানীয়দের কাছে শোনেন আগের মাস মানে জুনেই বাঘের কাসালং নদী সাঁতরে পেরোনোর গল্প। কাসালং রিজার্ভের উত্তরের বেশ গভীরে দেখা যায় বাঘটিকে। মনিরুল খানের কাসালংসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় ভ্রমণের রোমাঞ্চকর বিবরণ আছে তাঁর লেখা সম্প্রতি প্রকাশিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাণবৈচিত্র্যের সন্ধানে’ বইটিতে।
আশা নিয়ে থাকি
আশা করি এই দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বাঘের বন বললেই আমাদের শুধু সুন্দরবনের নাম বলতে হবে না, বলতে পারব কাসালং কিংবা সাঙ্গু-মাতামুহুরির নামও। বন্যপ্রাণী ও বাঘ বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরীর সঙ্গে কথা হলে জানিয়েছেন এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে কয়েকটি হলেও বাঘ টিকে থাকা অসম্ভব নয়। এদিকে মনিরুল খান খুব অল্প সংখ্যায় হলেও কাসালং ও সাঙ্গু-মাতামুহুরির অরণ্যে এখনো বাঘের বিচরণ আছে বলেই বিশ্বাস করেন। গতকাল ছিল বিশ্ব বাঘ দিবস। আজ তাই একটাই আশা, অচিরেই পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে ক্যামেরা ট্র্যাপে বা সরাসরি ক্যামেরায় বন্দী হবে ডোরাকাটা সেই রাজকীয় প্রাণী। আর আমরা নিশ্চিত হব পাহাড়ের বনে এখনো তার বিচরণ সম্পর্কে। তবে আশঙ্কাও আছে! যদি সত্যি বাঘ থেকেও থাকে পাহাড়ের বনে, এখনই এদের রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে একসময় দেশের অন্য বনগুলোতে ঘুরে বেড়ানো বাঘদের মতো হারিয়ে যাবে এরাও।

আমাদের দেশের কোন বনে বাঘ আছে জিজ্ঞেস করলে নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের নামই বলবেন। অথচ একসময় বাংলাদেশের বহু অরণ্যেই বাঘ ছিল। তবে অনেকেই জানেন না, এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো কোনো জঙ্গলে বাঘ দেখার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আসলেই কি এখনো আমাদের পাহাড়ের বনে বিচরণ করছে বাঘেরা? সে উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে।
পুরোনো সেই দিনের কথা
আমাদের দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের বর্তমান হাল-হকিকত জানার আগে বরং এখানকার বাঘেদের অতীত বিচরণের কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। বাঘ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরীর একটা লেখায় ১৯৫৯ সালে কাপ্তাইয়ের (বর্তমানে রাঙামাটি জেলায় পড়েছে) বনে শিকার করা একটা বাঘের ছবি দেখেছিলাম। শিকার করেছিলেন একজন মারমা। ২০০৭–০৮ সালের দিকে যখন কাপ্তাই যাই, ওই শিকারির খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। আশ্চর্যজনকভাবে শিলছড়ি মারমাপাড়ায় ওই শিকারির ছেলেকে পেয়ে যাই। ছবিটা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিল গোটা পাড়ার লোকেরা।
আজ থেকে বেশি নয়, ৬০-৭০ বছর আগের পার্বত্য চট্টগ্রাম আর সিলেট বিভাগের বনের অবস্থা জানতে আমাকে সাহায্য করে এনায়েত মওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইটা। জীবনে বন নিয়ে যত বই পড়েছি, এতটা ভালো লেগেছে কমই। মনটা হুহু করে ওঠে কাপ্তাই বাঁধ তৈরির জন্য কাসালং রিজার্ভ ফরেস্টের গাছপালা কাটার মহাযজ্ঞের বর্ণনা পড়ে। কাসালং রিজার্ভের মাইনি, মাহিল্লা—এসব এলাকায় বাঘ মারার কাহিনিগুলো পড়ে মন খারাপ করে বসে থেকেছি। এখনো যতবার বইটি পড়ি, মনটা কেঁদে ওঠে।
১৯৫৭-৫৮ সালের দিকে কয়েকটি বাঘ শিকারের বর্ণনা আছে ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইটিতে। এটি আমাকে এতটাই প্রভাবিত করে যে পরে মাইনি, পাবলাখালী গিয়েছি। পাবলাখালী থেকে নৌকা রিজার্ভ করে কাসালং নদী ধরে মাহিল্লা পেরিয়ে যাওয়ার সময় যেন এনায়েত মওলার সময়টায় ফিরে গিয়েছিলাম। তখনকার গভীর জঙ্গল যেন মনের চোখে দেখতে পাচ্ছিলাম।
২০১১ সালের দিকে মাইনি বন বাংলোয় উঠে অবশ্য আশপাশে আর বনের ছিটেফোঁটা দেখিনি। কিন্তু বাংলোর দেয়ালে টাঙানো হাতি খেদার ছবিসহ পুরোনো কিছু ছবি দেখে শরীরের রোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তবে রাতে পুরোনো ভিজিটরস বুকটা দেখতে গিয়েই চমকেছি। খুঁজতে খুঁজতে ১৯৫০-৬০ সালের মধ্যকার একটি এন্ট্রিতে চোখ আটকে যায়। সেখানে একজন লিখেছেন, ‘আজ একটা বেঙ্গল টাইগার মেরেছি।’ বাঘটার মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত মাপও দেওয়া ছিল।
১৯৫০ সালের অক্টোবরে কাসালং রিজার্ভে বাঘ দেখার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন বন বিভাগের এক সময়কার ইন্সপেক্টর জেনারেল ইউসুফ এস আহমেদ। তাঁর ‘উইথ দ্য ওয়াইল্ড অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল’ বইটিতে ওই সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার অরণ্য-বন্যপ্রাণীর ভালো চিত্র পাওয়া যায়।
চট্টগ্রামের বাঘের অবস্থার চমৎকার চিত্র পাই এরশাদ উল্লা খানের ‘চট্টগ্রামের শিকার কাহিনী’ বইয়ে। ১৯৫৫ সালে চুনতির ওহাইদ্যা ঘোনায় (আরাকান রোডের পাশের পাহাড়ে) বাঘ শিকারের বর্ণনা করেছেন লেখক। কক্সবাজারের হিমছড়িতে আস্তানা গাড়া বিশাল আকারের একটি বাঘের কাহিনিও শুনিয়েছেন তিনি।’ ঘটনাটা গত শতকের পঞ্চাশের দশকের। ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে রাঙামাটির নানিয়ারচরের ধারের মরাচেঙ্গির ধূর্ত এক বাঘের কাহিনিও পড়ি তাঁর এ বইয়ে।
এদিকে ড. রেজা খানের ‘বাংলাদেশের বন্য প্রাণী’ (তৃতীয় খণ্ড) পড়ে জানতে পেরেছি ১৯৮১ সালের দিকে গারো পাহাড়ে, নেত্রকোনা ও কক্সবাজারের ফাঁসিয়াখালি রেঞ্জে তিনটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মারা পড়েছে।
কালো চিতা খুবই কালেভদ্রে দেখা গেলেও কালো বাঘ আরও অনেক বেশি দুষ্প্রাপ্য। এরও রেকর্ড আছে বাংলাদেশেই। ১৮৪৬ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ে (পার্বত্য চট্টগ্রামও বুঝিয়ে থাকতে পারেন লেখক) এমনই কালো বাঘ দেখা যাওয়ার কথা বলেছিলেন এক প্রকৃতিবিদ।
বাঘের গল্প
একসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল-গাজীপুরের ভাওয়াল ও মধুপুরের অরণ্যসহ অনেক এলাকাতেই ছিল বাঘেদের রাজ্য। আর তাই বান্দরবান, রাঙামাটি, সিলেট যেখানেই যাই, খোঁজ নিই বাঘেদের। একটু বয়স্ক কাউকে পেলে চেপে ধরি পুরোনো দিনের জঙ্গলের গল্প শোনার জন্য। তাঁদের মুখে এসব কাহিনি শুনতে শুনতে আমারও মনে হয়—আহ ওই সময় যদি থাকতাম! কিংবা সত্যি যদি টাইম মেশিন থাকত, তবে দেশের কত জঙ্গলেই না বাঘেদের দেখা পেতাম। অন্যদের মুখে শোনা বাঘ দেখার কিছু কাহিনিই তুলে ধরছি পাঠকদের সামনে।
২০২০। বান্দরবানের কেওক্রাডংয়ের পাদদেশে পরিচ্ছন্ন, শান্ত এক পাড়া। দার্জিলিং পাড়া। সন্ধ্যা নেমেছে। পাড়াপ্রধানের খাবারের ঘরটায় তাঁকে ঘিরে বসে আছি কয়েকজন। সৌরবিদ্যুতে জ্বলা বাতির মিটমিটে আলোয় ঘরটার অন্ধকার কাটেনি। অদ্ভুত এক আলো-আঁধারির খেলা কামরাজুড়ে। পাড়াপ্রধান ছোটখাটো গড়নের অমায়িক এক মানুষ। মুখের বহু ভাঁজ, চোখের নিচের কুঁচকানো চামড়া জানান দিচ্ছে অনেকগুলো গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত পাড় করে এসেছেন। সেই সঙ্গে স্মৃতি হিসেবে জমা আছে হাজারো বিচিত্র ঘটনা।
একটা গল্প শুনতে চেয়েছিলাম। সত্যি গল্প। ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলতে লাগলেন। তবে কাহিনিটা এত রোমাঞ্চকর, ভাষার ছোট্ট সমস্যাটা উড়ে গেল এক নিমেষে। এমনই এক রাত ছিল। তবে সময়টা অন্তত পঁচিশ বসন্ত আগের। ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেছে পাড়ার মানুষগুলো। হঠাৎ একটা শব্দে ঘুম টুটে যায় কারবারির। গোয়ালঘরের দিক থেকে আসছে আওয়াজটা। দৌড়ে ঘরের দরজা খুলে বের হলেন। দেরি হয়ে গেছে। তাঁর সবচেয়ে বড় গরুটাকে নিয়ে গেছে ওটা। ডোরা বাঘ।
আমি যেন হঠাৎ করেই পিছিয়ে গেলাম দুই যুগ কিংবা তারও আগে। স্পষ্ট একটা হুটোপুটির শব্দ শুনলাম। তারপর ভারী একটা কিছু হিঁচড়ে নেওয়ার আওয়াজ। বাঘ বড় সাইজের গরু বা মোষ মেরে নেওয়ার সময় মাটিতে মড়ি ঘষটানোর কারণে যে শব্দ হয়!
২০১১ সালের ঘটনা। বন্ধু মিশুক-মেহেদীসহ বড় মোদকের দিকে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল সাঙ্গু রিজার্ভের গহিনে ঢুকে বাঘের খোঁজ করা। আমাদের গাইড ছিলেন মধ্যবয়স্ক এক মারমা। ভারী হাসি-খুশি মানুষ। তিন্দু পেরিয়েছি তখন। রেমাক্রির ধারে। হঠাৎ এক পাহাড় দেখিয়ে বললেন, বিশাল একটা বাঘ বসে থাকতে দেখেছিলেন এখানে। ভয় পেয়ে একটা পাথরের ওপাশে লুকিয়ে পড়েন। বাঘটাকে আয়েশ করে গড়াগড়ি খেতে দেখেছিলেন ঝোপ-জঙ্গলের মাঝে। তাঁর অভিজ্ঞতা ১৯৮০-৮২ সালের।
মাস দেড়েক আগের ঘটনা। বান্দরবানে গিয়ে নীলাচল এলাকায় দেখা হয় পঞ্চাশোর্ধ্ব একজন খুমির সঙ্গে। কিছুটা আলাপ হতেই গল্পের ঝুলি মেলে দিলেন। ছোটবেলা কেটেছে রাঙামাটির বিলাইছড়িতে। ১৯৮৪–৮৫ সালের দিকে বাবার সঙ্গে বিলাইছড়ির এক জুমে কাজ করতে যান। তখনই দেখেন বিশাল এক বাঘ। গল্পটা বলতে গিয়ে যেন পুরোনো সেই স্মৃতি জ্যান্ত হয়ে উঠেছিল তাঁর মনে। চোখ বড় বড় হয়ে উঠেছিল। জুম থেকে কিছুটা দূরের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন বাঘটাকে। তারপর হারিয়ে যায় গাছপালার আড়ালে।
মহানন্দায় বাঘ মিলেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামেও মিলবে কি
ভারতের শিলিগুড়ির কাছেই মহানন্দা অভয়ারণ্য। বছর কয়েক আগে দার্জিলিং যাওয়া-আসার পথে মহানন্দার দেখা পেয়েছিলাম গাড়ি থেকে। তবে জঙ্গলের অন্দরমহলে যাওয়া হয়নি। দুই যুগ পর সেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা মিলেছে।
রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানা যায়, বাঘ আছে এমন জানতে পেরে জঙ্গলের একাধিক জায়গায় ক্যামেরা ট্র্যাপ বসানো হয়েছিল। আর সেই ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে ডোরাকাটা প্রাণীটি। তারা মনে করছেন আরও বাঘ আছে ওই অভয়ারণ্যে। এর আগে নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক ও বক্সা টাইগার রিজার্ভে বাঘের দেখা মিলেছিল। এবার মহানন্দাতেই ক্যামেরাবন্দী হলো পূর্ণবয়স্ক বাঘ। এটা এ বছরের এপ্রিলের ঘটনা।
মহানন্দা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের কিছুটা দূরেই শালুগাড়া আর্মি ক্যাম্প। সেখানে শেষবার ১৯৯৯ সালের দিকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দেখা পাওয়া গিয়েছিল। তবে বন দপ্তর সূত্র বলছে, সেটি বুড়ো বাঘ। এরপর ২০১০ সালের দিকে বাঘের অস্তিত্ব টের পাওয়া গেলেও ছবি পাওয়া যায়নি। তার মানে, এই অরণ্যে বাঘের দেখা মিলল দুই যুগ পর।
আমাদেরও কিন্তু খুব হতাশার কিছু নেই। রাঙামাটি-বান্দরবানের বন-পাহাড়ে সাম্প্রতিক সময়েও বাঘ দেখার দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে সমস্যা হলো, এখনো নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি মহানন্দার মতো।
সাম্প্রতিক খবর
সাজেক-কাসালংয়ের উত্তর-পুবে ভারতের মিজোরামে ডামপা টাইগার রিজার্ভ। একেবারে সীমান্ত বিন্দুতেই এর অবস্থান দেখাচ্ছে গুগল আর্থ। ডামপার কথা জানার পর আশার পারদটা চূড়ায় গিয়ে ঠেকে। ডামপায় বাঘ থাকলে সীমান্তের এপাশে কাসালং-সাজেকে কেন থাকবে না!
তবে ভারতের ২০১৮ সালের বাঘ জরিপের ফলাফল মনটা একটু ভার করে দেয়। ওই জরিপে মিজোরামের ডামপা টাইগার রিজার্ভে বাঘের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলেনি। তবে ২০২১ সালের জুনেই খুশির খবর মিলল। ডামপায় ক্যামেরা ট্র্যাপে বাঘের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে আবার। মে মাসে বাঘ ধরা দিয়েছে জাখুমা ডন নামের এক বন্য প্রাণীপ্রেমী এবং বনপ্রহরীর ক্যামেরা ট্র্যাপে। ২০১৪ সালের পর আবার ডামপায় ক্যামেরা ফাঁদে বন্দী হলেন মহারাজা। অবশ্য কোনো কারণে ডামপায় বাঘ না থাকলেও কাসালং-সাজেকে থাকতেই পারে বাঘের বসতি।
সাজেকে ২০২০ সালেও শুনেছি বাঘের তাজা কাহিনি। সেপ্টেম্বরে সাজেকের পাহাড় রাজ্য ভ্রমণের তৃতীয় রাতে একটি রেস্তোরাঁর ছাদে গেলাম ভ্রমণসঙ্গীদের নিয়ে। এখানেই এক রিসোর্ট মালিকের সঙ্গে আলাপ তখন। একাধিক রিসোর্ট আছে তাঁর।
রাতে পাহাড় কেবল আবছা চোখে পড়ছিল। অদ্ভুত এক আলো-আঁধারি। এর মধ্যে ওই রিসোর্ট মালিক ভদ্রলোক গল্প বলা শুরু করলেন। ‘এখন তো জন্তুরা এদিকে আসে না। দূরের পাহাড়ে আছে। কখনো কখনো শিকারিরা পাহাড়ের ভেতর থেকে বন্য জন্তু মেরে আনে। ওই তো কয়েক বছর আগেই একটা বাঘ শিকার হইছিল।’
‘বাঘ নাকি চিতা?’ কোনোভাবে ঢোক গিলে প্রশ্ন করলাম।
‘কী বলেন! রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। একটা দাঁতও আছে আমার কাছে।’ রীতিমতো চটে গেলেন হাসিখুশি ভদ্রলোকটি। রিসোর্ট মালিক শিক্ষিত, বিদেশি সংস্থায়ও চাকরি করার অভিজ্ঞতা আছে। তাঁর ভুল হওয়ার কথা নয়। কষ্টের মধ্যেও এক চিলতে আশার আলো দেখলাম। কয়েক বছর আগে যেহেতু ছিল, এখনো নিশ্চয় দু-একটা আছে।
নভেম্বর, ২০২০। সকালের নাশতা শেষে কেওক্রাডংয়ে উঠেই দেখা পাহাড়টির মালিক লালা বমের সঙ্গে। তাঁর কাছেই শুনলাম গল্পটা, আর রোমাঞ্চে কাঁটা দিয়ে উঠল শরীর। আগের বছর, মানে ২০১৯-এ তাঁর বিশাল একটা গরু মারা পড়েছিল বাঘের আক্রমণে। লালা বমের বর্ণনা ঠিক হলে দূরের পাহাড়ে থাকে বিশাল বেঙ্গল টাইগার। শিকারের জন্য হানা দেয় মাঝেমধ্যে এদিকে। হেলিপ্যাডের ঠিক নিচেই মেরে খেয়ে গিয়েছিল গরুটাকে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ মনিরুল খান তাঁর ‘টাইগারস ইন ম্যানগ্রোভস’ বইয়ে ২০১০ সালে কাসালং রিজার্ভে বাঘ দেখা যাওয়ার খবর জানিয়েছেন। ২০১১ সালে বান্দরবানের তাজিংডং পাহাড়ে স্থানীয় এক শিকারির কাছে বাঘের চর্বি আবিষ্কার করেন তিনি। তাজিংডংয়ের আশপাশেই ওই বছর বাঘটি শিকার করা হয়। ওটার হাড়-চামড়া কিনে নিয়ে যান মিয়ানমারের শিকারিরা। ওই শিকারিই জানান, তারের শক্তিশালী এক ধরনের ফাঁদ পাতা হয় বাঘের জন্য। ওই ফাঁদে বাঘের পা আটকে যায়। তারপর অনাহারে সেখানে মারা পড়ে বিশাল জন্তুটি।
বড় মোদক এলাকায় ২০১০ সালে ও এর আগে এক স্থানীয় শিকারি দুটি বাঘ শিকার করেন বলে জানা যায়। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের সাম্প্রতিক আনাগোনার ব্যাপারে প্রথম মোটামুটি নিশ্চিত প্রমাণ হাজির করে বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। ২০১৬ সালে বান্দরবানের মাতামুহুরি সংরক্ষিত বনে বাঘের পায়ের ছাপের ছবি তোলেন তাঁদের প্যারা বায়োলজিস্টরা।
দীর্ঘদিন পার্বত্য চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করছেন রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রিয় চাকমা। তাঁর থেকেই জানতে পারি ২০০৫-০৬ সালের দিকে কাসালং সংরক্ষিত অরণ্যে পাহাড়ের দুর্গমের বাসিন্দাদের হাতে দুটি বাঘ মারা পড়ার কাহিনি। ২০১০-১১ সালে রাঙামাটির রাইংক্ষ্যং অরণ্যেও পেয়েছিলেন বাঘের খোঁজ।
আলীকদমের ভারত সীমান্তঘেঁষা এক পাড়ার বাসিন্দার সঙ্গে আলাপ হয় বছর দুয়েক আগে। আশপাশের বন-পাহাড় আর বুনো জন্তুদের খবর নিলাম। একপর্যায়ে বললেন, তাঁদের দুই পাড়ার মাঝখানে বিশাল এক জঙ্গল। দিনের বেলায়ও ওই অরণ্য পাড়ি দিতে ভয় হয়। সেখানেই আস্তানা বড় এক বাঘের। হঠাৎ হঠাৎ ডাক শোনা যায়। ২০২০ সালে পাড়ার দু-একজন দেখাও পেয়েছিল ভয়ংকর সুন্দর এই জন্তুর।
তবে বাঘের সর্বশেষ খবর পাই মনিরুল খানের কাছ থেকে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি দেশের দক্ষিণ-পূর্বে পাহাড়ের খণ্ড বনগুলো করিডরের মাধ্যমে জোড়া লাগানোর বিষয়ে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করে বন বিভাগ। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় আইইউসিএনকে। এ সমীক্ষার অংশ হিসেবেই অন্য গবেষক, বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাসালংয়ের গহিন অরণ্যে যান মনিরুল খান। জুলাইয়ের এই ভ্রমণের সময় স্থানীয়দের কাছে শোনেন আগের মাস মানে জুনেই বাঘের কাসালং নদী সাঁতরে পেরোনোর গল্প। কাসালং রিজার্ভের উত্তরের বেশ গভীরে দেখা যায় বাঘটিকে। মনিরুল খানের কাসালংসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় ভ্রমণের রোমাঞ্চকর বিবরণ আছে তাঁর লেখা সম্প্রতি প্রকাশিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাণবৈচিত্র্যের সন্ধানে’ বইটিতে।
আশা নিয়ে থাকি
আশা করি এই দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বাঘের বন বললেই আমাদের শুধু সুন্দরবনের নাম বলতে হবে না, বলতে পারব কাসালং কিংবা সাঙ্গু-মাতামুহুরির নামও। বন্যপ্রাণী ও বাঘ বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরীর সঙ্গে কথা হলে জানিয়েছেন এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে কয়েকটি হলেও বাঘ টিকে থাকা অসম্ভব নয়। এদিকে মনিরুল খান খুব অল্প সংখ্যায় হলেও কাসালং ও সাঙ্গু-মাতামুহুরির অরণ্যে এখনো বাঘের বিচরণ আছে বলেই বিশ্বাস করেন। গতকাল ছিল বিশ্ব বাঘ দিবস। আজ তাই একটাই আশা, অচিরেই পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে ক্যামেরা ট্র্যাপে বা সরাসরি ক্যামেরায় বন্দী হবে ডোরাকাটা সেই রাজকীয় প্রাণী। আর আমরা নিশ্চিত হব পাহাড়ের বনে এখনো তার বিচরণ সম্পর্কে। তবে আশঙ্কাও আছে! যদি সত্যি বাঘ থেকেও থাকে পাহাড়ের বনে, এখনই এদের রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে একসময় দেশের অন্য বনগুলোতে ঘুরে বেড়ানো বাঘদের মতো হারিয়ে যাবে এরাও।
ইশতিয়াক হাসান

আমাদের দেশের কোন বনে বাঘ আছে জিজ্ঞেস করলে নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের নামই বলবেন। অথচ একসময় বাংলাদেশের বহু অরণ্যেই বাঘ ছিল। তবে অনেকেই জানেন না, এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো কোনো জঙ্গলে বাঘ দেখার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আসলেই কি এখনো আমাদের পাহাড়ের বনে বিচরণ করছে বাঘেরা? সে উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে।
পুরোনো সেই দিনের কথা
আমাদের দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের বর্তমান হাল-হকিকত জানার আগে বরং এখানকার বাঘেদের অতীত বিচরণের কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। বাঘ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরীর একটা লেখায় ১৯৫৯ সালে কাপ্তাইয়ের (বর্তমানে রাঙামাটি জেলায় পড়েছে) বনে শিকার করা একটা বাঘের ছবি দেখেছিলাম। শিকার করেছিলেন একজন মারমা। ২০০৭–০৮ সালের দিকে যখন কাপ্তাই যাই, ওই শিকারির খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। আশ্চর্যজনকভাবে শিলছড়ি মারমাপাড়ায় ওই শিকারির ছেলেকে পেয়ে যাই। ছবিটা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিল গোটা পাড়ার লোকেরা।
আজ থেকে বেশি নয়, ৬০-৭০ বছর আগের পার্বত্য চট্টগ্রাম আর সিলেট বিভাগের বনের অবস্থা জানতে আমাকে সাহায্য করে এনায়েত মওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইটা। জীবনে বন নিয়ে যত বই পড়েছি, এতটা ভালো লেগেছে কমই। মনটা হুহু করে ওঠে কাপ্তাই বাঁধ তৈরির জন্য কাসালং রিজার্ভ ফরেস্টের গাছপালা কাটার মহাযজ্ঞের বর্ণনা পড়ে। কাসালং রিজার্ভের মাইনি, মাহিল্লা—এসব এলাকায় বাঘ মারার কাহিনিগুলো পড়ে মন খারাপ করে বসে থেকেছি। এখনো যতবার বইটি পড়ি, মনটা কেঁদে ওঠে।
১৯৫৭-৫৮ সালের দিকে কয়েকটি বাঘ শিকারের বর্ণনা আছে ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইটিতে। এটি আমাকে এতটাই প্রভাবিত করে যে পরে মাইনি, পাবলাখালী গিয়েছি। পাবলাখালী থেকে নৌকা রিজার্ভ করে কাসালং নদী ধরে মাহিল্লা পেরিয়ে যাওয়ার সময় যেন এনায়েত মওলার সময়টায় ফিরে গিয়েছিলাম। তখনকার গভীর জঙ্গল যেন মনের চোখে দেখতে পাচ্ছিলাম।
২০১১ সালের দিকে মাইনি বন বাংলোয় উঠে অবশ্য আশপাশে আর বনের ছিটেফোঁটা দেখিনি। কিন্তু বাংলোর দেয়ালে টাঙানো হাতি খেদার ছবিসহ পুরোনো কিছু ছবি দেখে শরীরের রোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তবে রাতে পুরোনো ভিজিটরস বুকটা দেখতে গিয়েই চমকেছি। খুঁজতে খুঁজতে ১৯৫০-৬০ সালের মধ্যকার একটি এন্ট্রিতে চোখ আটকে যায়। সেখানে একজন লিখেছেন, ‘আজ একটা বেঙ্গল টাইগার মেরেছি।’ বাঘটার মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত মাপও দেওয়া ছিল।
১৯৫০ সালের অক্টোবরে কাসালং রিজার্ভে বাঘ দেখার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন বন বিভাগের এক সময়কার ইন্সপেক্টর জেনারেল ইউসুফ এস আহমেদ। তাঁর ‘উইথ দ্য ওয়াইল্ড অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল’ বইটিতে ওই সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার অরণ্য-বন্যপ্রাণীর ভালো চিত্র পাওয়া যায়।
চট্টগ্রামের বাঘের অবস্থার চমৎকার চিত্র পাই এরশাদ উল্লা খানের ‘চট্টগ্রামের শিকার কাহিনী’ বইয়ে। ১৯৫৫ সালে চুনতির ওহাইদ্যা ঘোনায় (আরাকান রোডের পাশের পাহাড়ে) বাঘ শিকারের বর্ণনা করেছেন লেখক। কক্সবাজারের হিমছড়িতে আস্তানা গাড়া বিশাল আকারের একটি বাঘের কাহিনিও শুনিয়েছেন তিনি।’ ঘটনাটা গত শতকের পঞ্চাশের দশকের। ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে রাঙামাটির নানিয়ারচরের ধারের মরাচেঙ্গির ধূর্ত এক বাঘের কাহিনিও পড়ি তাঁর এ বইয়ে।
এদিকে ড. রেজা খানের ‘বাংলাদেশের বন্য প্রাণী’ (তৃতীয় খণ্ড) পড়ে জানতে পেরেছি ১৯৮১ সালের দিকে গারো পাহাড়ে, নেত্রকোনা ও কক্সবাজারের ফাঁসিয়াখালি রেঞ্জে তিনটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মারা পড়েছে।
কালো চিতা খুবই কালেভদ্রে দেখা গেলেও কালো বাঘ আরও অনেক বেশি দুষ্প্রাপ্য। এরও রেকর্ড আছে বাংলাদেশেই। ১৮৪৬ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ে (পার্বত্য চট্টগ্রামও বুঝিয়ে থাকতে পারেন লেখক) এমনই কালো বাঘ দেখা যাওয়ার কথা বলেছিলেন এক প্রকৃতিবিদ।
বাঘের গল্প
একসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল-গাজীপুরের ভাওয়াল ও মধুপুরের অরণ্যসহ অনেক এলাকাতেই ছিল বাঘেদের রাজ্য। আর তাই বান্দরবান, রাঙামাটি, সিলেট যেখানেই যাই, খোঁজ নিই বাঘেদের। একটু বয়স্ক কাউকে পেলে চেপে ধরি পুরোনো দিনের জঙ্গলের গল্প শোনার জন্য। তাঁদের মুখে এসব কাহিনি শুনতে শুনতে আমারও মনে হয়—আহ ওই সময় যদি থাকতাম! কিংবা সত্যি যদি টাইম মেশিন থাকত, তবে দেশের কত জঙ্গলেই না বাঘেদের দেখা পেতাম। অন্যদের মুখে শোনা বাঘ দেখার কিছু কাহিনিই তুলে ধরছি পাঠকদের সামনে।
২০২০। বান্দরবানের কেওক্রাডংয়ের পাদদেশে পরিচ্ছন্ন, শান্ত এক পাড়া। দার্জিলিং পাড়া। সন্ধ্যা নেমেছে। পাড়াপ্রধানের খাবারের ঘরটায় তাঁকে ঘিরে বসে আছি কয়েকজন। সৌরবিদ্যুতে জ্বলা বাতির মিটমিটে আলোয় ঘরটার অন্ধকার কাটেনি। অদ্ভুত এক আলো-আঁধারির খেলা কামরাজুড়ে। পাড়াপ্রধান ছোটখাটো গড়নের অমায়িক এক মানুষ। মুখের বহু ভাঁজ, চোখের নিচের কুঁচকানো চামড়া জানান দিচ্ছে অনেকগুলো গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত পাড় করে এসেছেন। সেই সঙ্গে স্মৃতি হিসেবে জমা আছে হাজারো বিচিত্র ঘটনা।
একটা গল্প শুনতে চেয়েছিলাম। সত্যি গল্প। ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলতে লাগলেন। তবে কাহিনিটা এত রোমাঞ্চকর, ভাষার ছোট্ট সমস্যাটা উড়ে গেল এক নিমেষে। এমনই এক রাত ছিল। তবে সময়টা অন্তত পঁচিশ বসন্ত আগের। ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেছে পাড়ার মানুষগুলো। হঠাৎ একটা শব্দে ঘুম টুটে যায় কারবারির। গোয়ালঘরের দিক থেকে আসছে আওয়াজটা। দৌড়ে ঘরের দরজা খুলে বের হলেন। দেরি হয়ে গেছে। তাঁর সবচেয়ে বড় গরুটাকে নিয়ে গেছে ওটা। ডোরা বাঘ।
আমি যেন হঠাৎ করেই পিছিয়ে গেলাম দুই যুগ কিংবা তারও আগে। স্পষ্ট একটা হুটোপুটির শব্দ শুনলাম। তারপর ভারী একটা কিছু হিঁচড়ে নেওয়ার আওয়াজ। বাঘ বড় সাইজের গরু বা মোষ মেরে নেওয়ার সময় মাটিতে মড়ি ঘষটানোর কারণে যে শব্দ হয়!
২০১১ সালের ঘটনা। বন্ধু মিশুক-মেহেদীসহ বড় মোদকের দিকে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল সাঙ্গু রিজার্ভের গহিনে ঢুকে বাঘের খোঁজ করা। আমাদের গাইড ছিলেন মধ্যবয়স্ক এক মারমা। ভারী হাসি-খুশি মানুষ। তিন্দু পেরিয়েছি তখন। রেমাক্রির ধারে। হঠাৎ এক পাহাড় দেখিয়ে বললেন, বিশাল একটা বাঘ বসে থাকতে দেখেছিলেন এখানে। ভয় পেয়ে একটা পাথরের ওপাশে লুকিয়ে পড়েন। বাঘটাকে আয়েশ করে গড়াগড়ি খেতে দেখেছিলেন ঝোপ-জঙ্গলের মাঝে। তাঁর অভিজ্ঞতা ১৯৮০-৮২ সালের।
মাস দেড়েক আগের ঘটনা। বান্দরবানে গিয়ে নীলাচল এলাকায় দেখা হয় পঞ্চাশোর্ধ্ব একজন খুমির সঙ্গে। কিছুটা আলাপ হতেই গল্পের ঝুলি মেলে দিলেন। ছোটবেলা কেটেছে রাঙামাটির বিলাইছড়িতে। ১৯৮৪–৮৫ সালের দিকে বাবার সঙ্গে বিলাইছড়ির এক জুমে কাজ করতে যান। তখনই দেখেন বিশাল এক বাঘ। গল্পটা বলতে গিয়ে যেন পুরোনো সেই স্মৃতি জ্যান্ত হয়ে উঠেছিল তাঁর মনে। চোখ বড় বড় হয়ে উঠেছিল। জুম থেকে কিছুটা দূরের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন বাঘটাকে। তারপর হারিয়ে যায় গাছপালার আড়ালে।
মহানন্দায় বাঘ মিলেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামেও মিলবে কি
ভারতের শিলিগুড়ির কাছেই মহানন্দা অভয়ারণ্য। বছর কয়েক আগে দার্জিলিং যাওয়া-আসার পথে মহানন্দার দেখা পেয়েছিলাম গাড়ি থেকে। তবে জঙ্গলের অন্দরমহলে যাওয়া হয়নি। দুই যুগ পর সেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা মিলেছে।
রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানা যায়, বাঘ আছে এমন জানতে পেরে জঙ্গলের একাধিক জায়গায় ক্যামেরা ট্র্যাপ বসানো হয়েছিল। আর সেই ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে ডোরাকাটা প্রাণীটি। তারা মনে করছেন আরও বাঘ আছে ওই অভয়ারণ্যে। এর আগে নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক ও বক্সা টাইগার রিজার্ভে বাঘের দেখা মিলেছিল। এবার মহানন্দাতেই ক্যামেরাবন্দী হলো পূর্ণবয়স্ক বাঘ। এটা এ বছরের এপ্রিলের ঘটনা।
মহানন্দা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের কিছুটা দূরেই শালুগাড়া আর্মি ক্যাম্প। সেখানে শেষবার ১৯৯৯ সালের দিকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দেখা পাওয়া গিয়েছিল। তবে বন দপ্তর সূত্র বলছে, সেটি বুড়ো বাঘ। এরপর ২০১০ সালের দিকে বাঘের অস্তিত্ব টের পাওয়া গেলেও ছবি পাওয়া যায়নি। তার মানে, এই অরণ্যে বাঘের দেখা মিলল দুই যুগ পর।
আমাদেরও কিন্তু খুব হতাশার কিছু নেই। রাঙামাটি-বান্দরবানের বন-পাহাড়ে সাম্প্রতিক সময়েও বাঘ দেখার দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে সমস্যা হলো, এখনো নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি মহানন্দার মতো।
সাম্প্রতিক খবর
সাজেক-কাসালংয়ের উত্তর-পুবে ভারতের মিজোরামে ডামপা টাইগার রিজার্ভ। একেবারে সীমান্ত বিন্দুতেই এর অবস্থান দেখাচ্ছে গুগল আর্থ। ডামপার কথা জানার পর আশার পারদটা চূড়ায় গিয়ে ঠেকে। ডামপায় বাঘ থাকলে সীমান্তের এপাশে কাসালং-সাজেকে কেন থাকবে না!
তবে ভারতের ২০১৮ সালের বাঘ জরিপের ফলাফল মনটা একটু ভার করে দেয়। ওই জরিপে মিজোরামের ডামপা টাইগার রিজার্ভে বাঘের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলেনি। তবে ২০২১ সালের জুনেই খুশির খবর মিলল। ডামপায় ক্যামেরা ট্র্যাপে বাঘের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে আবার। মে মাসে বাঘ ধরা দিয়েছে জাখুমা ডন নামের এক বন্য প্রাণীপ্রেমী এবং বনপ্রহরীর ক্যামেরা ট্র্যাপে। ২০১৪ সালের পর আবার ডামপায় ক্যামেরা ফাঁদে বন্দী হলেন মহারাজা। অবশ্য কোনো কারণে ডামপায় বাঘ না থাকলেও কাসালং-সাজেকে থাকতেই পারে বাঘের বসতি।
সাজেকে ২০২০ সালেও শুনেছি বাঘের তাজা কাহিনি। সেপ্টেম্বরে সাজেকের পাহাড় রাজ্য ভ্রমণের তৃতীয় রাতে একটি রেস্তোরাঁর ছাদে গেলাম ভ্রমণসঙ্গীদের নিয়ে। এখানেই এক রিসোর্ট মালিকের সঙ্গে আলাপ তখন। একাধিক রিসোর্ট আছে তাঁর।
রাতে পাহাড় কেবল আবছা চোখে পড়ছিল। অদ্ভুত এক আলো-আঁধারি। এর মধ্যে ওই রিসোর্ট মালিক ভদ্রলোক গল্প বলা শুরু করলেন। ‘এখন তো জন্তুরা এদিকে আসে না। দূরের পাহাড়ে আছে। কখনো কখনো শিকারিরা পাহাড়ের ভেতর থেকে বন্য জন্তু মেরে আনে। ওই তো কয়েক বছর আগেই একটা বাঘ শিকার হইছিল।’
‘বাঘ নাকি চিতা?’ কোনোভাবে ঢোক গিলে প্রশ্ন করলাম।
‘কী বলেন! রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। একটা দাঁতও আছে আমার কাছে।’ রীতিমতো চটে গেলেন হাসিখুশি ভদ্রলোকটি। রিসোর্ট মালিক শিক্ষিত, বিদেশি সংস্থায়ও চাকরি করার অভিজ্ঞতা আছে। তাঁর ভুল হওয়ার কথা নয়। কষ্টের মধ্যেও এক চিলতে আশার আলো দেখলাম। কয়েক বছর আগে যেহেতু ছিল, এখনো নিশ্চয় দু-একটা আছে।
নভেম্বর, ২০২০। সকালের নাশতা শেষে কেওক্রাডংয়ে উঠেই দেখা পাহাড়টির মালিক লালা বমের সঙ্গে। তাঁর কাছেই শুনলাম গল্পটা, আর রোমাঞ্চে কাঁটা দিয়ে উঠল শরীর। আগের বছর, মানে ২০১৯-এ তাঁর বিশাল একটা গরু মারা পড়েছিল বাঘের আক্রমণে। লালা বমের বর্ণনা ঠিক হলে দূরের পাহাড়ে থাকে বিশাল বেঙ্গল টাইগার। শিকারের জন্য হানা দেয় মাঝেমধ্যে এদিকে। হেলিপ্যাডের ঠিক নিচেই মেরে খেয়ে গিয়েছিল গরুটাকে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ মনিরুল খান তাঁর ‘টাইগারস ইন ম্যানগ্রোভস’ বইয়ে ২০১০ সালে কাসালং রিজার্ভে বাঘ দেখা যাওয়ার খবর জানিয়েছেন। ২০১১ সালে বান্দরবানের তাজিংডং পাহাড়ে স্থানীয় এক শিকারির কাছে বাঘের চর্বি আবিষ্কার করেন তিনি। তাজিংডংয়ের আশপাশেই ওই বছর বাঘটি শিকার করা হয়। ওটার হাড়-চামড়া কিনে নিয়ে যান মিয়ানমারের শিকারিরা। ওই শিকারিই জানান, তারের শক্তিশালী এক ধরনের ফাঁদ পাতা হয় বাঘের জন্য। ওই ফাঁদে বাঘের পা আটকে যায়। তারপর অনাহারে সেখানে মারা পড়ে বিশাল জন্তুটি।
বড় মোদক এলাকায় ২০১০ সালে ও এর আগে এক স্থানীয় শিকারি দুটি বাঘ শিকার করেন বলে জানা যায়। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের সাম্প্রতিক আনাগোনার ব্যাপারে প্রথম মোটামুটি নিশ্চিত প্রমাণ হাজির করে বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। ২০১৬ সালে বান্দরবানের মাতামুহুরি সংরক্ষিত বনে বাঘের পায়ের ছাপের ছবি তোলেন তাঁদের প্যারা বায়োলজিস্টরা।
দীর্ঘদিন পার্বত্য চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করছেন রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রিয় চাকমা। তাঁর থেকেই জানতে পারি ২০০৫-০৬ সালের দিকে কাসালং সংরক্ষিত অরণ্যে পাহাড়ের দুর্গমের বাসিন্দাদের হাতে দুটি বাঘ মারা পড়ার কাহিনি। ২০১০-১১ সালে রাঙামাটির রাইংক্ষ্যং অরণ্যেও পেয়েছিলেন বাঘের খোঁজ।
আলীকদমের ভারত সীমান্তঘেঁষা এক পাড়ার বাসিন্দার সঙ্গে আলাপ হয় বছর দুয়েক আগে। আশপাশের বন-পাহাড় আর বুনো জন্তুদের খবর নিলাম। একপর্যায়ে বললেন, তাঁদের দুই পাড়ার মাঝখানে বিশাল এক জঙ্গল। দিনের বেলায়ও ওই অরণ্য পাড়ি দিতে ভয় হয়। সেখানেই আস্তানা বড় এক বাঘের। হঠাৎ হঠাৎ ডাক শোনা যায়। ২০২০ সালে পাড়ার দু-একজন দেখাও পেয়েছিল ভয়ংকর সুন্দর এই জন্তুর।
তবে বাঘের সর্বশেষ খবর পাই মনিরুল খানের কাছ থেকে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি দেশের দক্ষিণ-পূর্বে পাহাড়ের খণ্ড বনগুলো করিডরের মাধ্যমে জোড়া লাগানোর বিষয়ে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করে বন বিভাগ। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় আইইউসিএনকে। এ সমীক্ষার অংশ হিসেবেই অন্য গবেষক, বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাসালংয়ের গহিন অরণ্যে যান মনিরুল খান। জুলাইয়ের এই ভ্রমণের সময় স্থানীয়দের কাছে শোনেন আগের মাস মানে জুনেই বাঘের কাসালং নদী সাঁতরে পেরোনোর গল্প। কাসালং রিজার্ভের উত্তরের বেশ গভীরে দেখা যায় বাঘটিকে। মনিরুল খানের কাসালংসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় ভ্রমণের রোমাঞ্চকর বিবরণ আছে তাঁর লেখা সম্প্রতি প্রকাশিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাণবৈচিত্র্যের সন্ধানে’ বইটিতে।
আশা নিয়ে থাকি
আশা করি এই দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বাঘের বন বললেই আমাদের শুধু সুন্দরবনের নাম বলতে হবে না, বলতে পারব কাসালং কিংবা সাঙ্গু-মাতামুহুরির নামও। বন্যপ্রাণী ও বাঘ বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরীর সঙ্গে কথা হলে জানিয়েছেন এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে কয়েকটি হলেও বাঘ টিকে থাকা অসম্ভব নয়। এদিকে মনিরুল খান খুব অল্প সংখ্যায় হলেও কাসালং ও সাঙ্গু-মাতামুহুরির অরণ্যে এখনো বাঘের বিচরণ আছে বলেই বিশ্বাস করেন। গতকাল ছিল বিশ্ব বাঘ দিবস। আজ তাই একটাই আশা, অচিরেই পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে ক্যামেরা ট্র্যাপে বা সরাসরি ক্যামেরায় বন্দী হবে ডোরাকাটা সেই রাজকীয় প্রাণী। আর আমরা নিশ্চিত হব পাহাড়ের বনে এখনো তার বিচরণ সম্পর্কে। তবে আশঙ্কাও আছে! যদি সত্যি বাঘ থেকেও থাকে পাহাড়ের বনে, এখনই এদের রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে একসময় দেশের অন্য বনগুলোতে ঘুরে বেড়ানো বাঘদের মতো হারিয়ে যাবে এরাও।

আমাদের দেশের কোন বনে বাঘ আছে জিজ্ঞেস করলে নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের নামই বলবেন। অথচ একসময় বাংলাদেশের বহু অরণ্যেই বাঘ ছিল। তবে অনেকেই জানেন না, এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো কোনো জঙ্গলে বাঘ দেখার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আসলেই কি এখনো আমাদের পাহাড়ের বনে বিচরণ করছে বাঘেরা? সে উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছি লেখাটিতে।
পুরোনো সেই দিনের কথা
আমাদের দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের বর্তমান হাল-হকিকত জানার আগে বরং এখানকার বাঘেদের অতীত বিচরণের কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। বাঘ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরীর একটা লেখায় ১৯৫৯ সালে কাপ্তাইয়ের (বর্তমানে রাঙামাটি জেলায় পড়েছে) বনে শিকার করা একটা বাঘের ছবি দেখেছিলাম। শিকার করেছিলেন একজন মারমা। ২০০৭–০৮ সালের দিকে যখন কাপ্তাই যাই, ওই শিকারির খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। আশ্চর্যজনকভাবে শিলছড়ি মারমাপাড়ায় ওই শিকারির ছেলেকে পেয়ে যাই। ছবিটা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিল গোটা পাড়ার লোকেরা।
আজ থেকে বেশি নয়, ৬০-৭০ বছর আগের পার্বত্য চট্টগ্রাম আর সিলেট বিভাগের বনের অবস্থা জানতে আমাকে সাহায্য করে এনায়েত মওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইটা। জীবনে বন নিয়ে যত বই পড়েছি, এতটা ভালো লেগেছে কমই। মনটা হুহু করে ওঠে কাপ্তাই বাঁধ তৈরির জন্য কাসালং রিজার্ভ ফরেস্টের গাছপালা কাটার মহাযজ্ঞের বর্ণনা পড়ে। কাসালং রিজার্ভের মাইনি, মাহিল্লা—এসব এলাকায় বাঘ মারার কাহিনিগুলো পড়ে মন খারাপ করে বসে থেকেছি। এখনো যতবার বইটি পড়ি, মনটা কেঁদে ওঠে।
১৯৫৭-৫৮ সালের দিকে কয়েকটি বাঘ শিকারের বর্ণনা আছে ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইটিতে। এটি আমাকে এতটাই প্রভাবিত করে যে পরে মাইনি, পাবলাখালী গিয়েছি। পাবলাখালী থেকে নৌকা রিজার্ভ করে কাসালং নদী ধরে মাহিল্লা পেরিয়ে যাওয়ার সময় যেন এনায়েত মওলার সময়টায় ফিরে গিয়েছিলাম। তখনকার গভীর জঙ্গল যেন মনের চোখে দেখতে পাচ্ছিলাম।
২০১১ সালের দিকে মাইনি বন বাংলোয় উঠে অবশ্য আশপাশে আর বনের ছিটেফোঁটা দেখিনি। কিন্তু বাংলোর দেয়ালে টাঙানো হাতি খেদার ছবিসহ পুরোনো কিছু ছবি দেখে শরীরের রোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তবে রাতে পুরোনো ভিজিটরস বুকটা দেখতে গিয়েই চমকেছি। খুঁজতে খুঁজতে ১৯৫০-৬০ সালের মধ্যকার একটি এন্ট্রিতে চোখ আটকে যায়। সেখানে একজন লিখেছেন, ‘আজ একটা বেঙ্গল টাইগার মেরেছি।’ বাঘটার মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত মাপও দেওয়া ছিল।
১৯৫০ সালের অক্টোবরে কাসালং রিজার্ভে বাঘ দেখার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন বন বিভাগের এক সময়কার ইন্সপেক্টর জেনারেল ইউসুফ এস আহমেদ। তাঁর ‘উইথ দ্য ওয়াইল্ড অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল’ বইটিতে ওই সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার অরণ্য-বন্যপ্রাণীর ভালো চিত্র পাওয়া যায়।
চট্টগ্রামের বাঘের অবস্থার চমৎকার চিত্র পাই এরশাদ উল্লা খানের ‘চট্টগ্রামের শিকার কাহিনী’ বইয়ে। ১৯৫৫ সালে চুনতির ওহাইদ্যা ঘোনায় (আরাকান রোডের পাশের পাহাড়ে) বাঘ শিকারের বর্ণনা করেছেন লেখক। কক্সবাজারের হিমছড়িতে আস্তানা গাড়া বিশাল আকারের একটি বাঘের কাহিনিও শুনিয়েছেন তিনি।’ ঘটনাটা গত শতকের পঞ্চাশের দশকের। ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে রাঙামাটির নানিয়ারচরের ধারের মরাচেঙ্গির ধূর্ত এক বাঘের কাহিনিও পড়ি তাঁর এ বইয়ে।
এদিকে ড. রেজা খানের ‘বাংলাদেশের বন্য প্রাণী’ (তৃতীয় খণ্ড) পড়ে জানতে পেরেছি ১৯৮১ সালের দিকে গারো পাহাড়ে, নেত্রকোনা ও কক্সবাজারের ফাঁসিয়াখালি রেঞ্জে তিনটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মারা পড়েছে।
কালো চিতা খুবই কালেভদ্রে দেখা গেলেও কালো বাঘ আরও অনেক বেশি দুষ্প্রাপ্য। এরও রেকর্ড আছে বাংলাদেশেই। ১৮৪৬ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ে (পার্বত্য চট্টগ্রামও বুঝিয়ে থাকতে পারেন লেখক) এমনই কালো বাঘ দেখা যাওয়ার কথা বলেছিলেন এক প্রকৃতিবিদ।
বাঘের গল্প
একসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল-গাজীপুরের ভাওয়াল ও মধুপুরের অরণ্যসহ অনেক এলাকাতেই ছিল বাঘেদের রাজ্য। আর তাই বান্দরবান, রাঙামাটি, সিলেট যেখানেই যাই, খোঁজ নিই বাঘেদের। একটু বয়স্ক কাউকে পেলে চেপে ধরি পুরোনো দিনের জঙ্গলের গল্প শোনার জন্য। তাঁদের মুখে এসব কাহিনি শুনতে শুনতে আমারও মনে হয়—আহ ওই সময় যদি থাকতাম! কিংবা সত্যি যদি টাইম মেশিন থাকত, তবে দেশের কত জঙ্গলেই না বাঘেদের দেখা পেতাম। অন্যদের মুখে শোনা বাঘ দেখার কিছু কাহিনিই তুলে ধরছি পাঠকদের সামনে।
২০২০। বান্দরবানের কেওক্রাডংয়ের পাদদেশে পরিচ্ছন্ন, শান্ত এক পাড়া। দার্জিলিং পাড়া। সন্ধ্যা নেমেছে। পাড়াপ্রধানের খাবারের ঘরটায় তাঁকে ঘিরে বসে আছি কয়েকজন। সৌরবিদ্যুতে জ্বলা বাতির মিটমিটে আলোয় ঘরটার অন্ধকার কাটেনি। অদ্ভুত এক আলো-আঁধারির খেলা কামরাজুড়ে। পাড়াপ্রধান ছোটখাটো গড়নের অমায়িক এক মানুষ। মুখের বহু ভাঁজ, চোখের নিচের কুঁচকানো চামড়া জানান দিচ্ছে অনেকগুলো গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত পাড় করে এসেছেন। সেই সঙ্গে স্মৃতি হিসেবে জমা আছে হাজারো বিচিত্র ঘটনা।
একটা গল্প শুনতে চেয়েছিলাম। সত্যি গল্প। ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলতে লাগলেন। তবে কাহিনিটা এত রোমাঞ্চকর, ভাষার ছোট্ট সমস্যাটা উড়ে গেল এক নিমেষে। এমনই এক রাত ছিল। তবে সময়টা অন্তত পঁচিশ বসন্ত আগের। ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেছে পাড়ার মানুষগুলো। হঠাৎ একটা শব্দে ঘুম টুটে যায় কারবারির। গোয়ালঘরের দিক থেকে আসছে আওয়াজটা। দৌড়ে ঘরের দরজা খুলে বের হলেন। দেরি হয়ে গেছে। তাঁর সবচেয়ে বড় গরুটাকে নিয়ে গেছে ওটা। ডোরা বাঘ।
আমি যেন হঠাৎ করেই পিছিয়ে গেলাম দুই যুগ কিংবা তারও আগে। স্পষ্ট একটা হুটোপুটির শব্দ শুনলাম। তারপর ভারী একটা কিছু হিঁচড়ে নেওয়ার আওয়াজ। বাঘ বড় সাইজের গরু বা মোষ মেরে নেওয়ার সময় মাটিতে মড়ি ঘষটানোর কারণে যে শব্দ হয়!
২০১১ সালের ঘটনা। বন্ধু মিশুক-মেহেদীসহ বড় মোদকের দিকে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল সাঙ্গু রিজার্ভের গহিনে ঢুকে বাঘের খোঁজ করা। আমাদের গাইড ছিলেন মধ্যবয়স্ক এক মারমা। ভারী হাসি-খুশি মানুষ। তিন্দু পেরিয়েছি তখন। রেমাক্রির ধারে। হঠাৎ এক পাহাড় দেখিয়ে বললেন, বিশাল একটা বাঘ বসে থাকতে দেখেছিলেন এখানে। ভয় পেয়ে একটা পাথরের ওপাশে লুকিয়ে পড়েন। বাঘটাকে আয়েশ করে গড়াগড়ি খেতে দেখেছিলেন ঝোপ-জঙ্গলের মাঝে। তাঁর অভিজ্ঞতা ১৯৮০-৮২ সালের।
মাস দেড়েক আগের ঘটনা। বান্দরবানে গিয়ে নীলাচল এলাকায় দেখা হয় পঞ্চাশোর্ধ্ব একজন খুমির সঙ্গে। কিছুটা আলাপ হতেই গল্পের ঝুলি মেলে দিলেন। ছোটবেলা কেটেছে রাঙামাটির বিলাইছড়িতে। ১৯৮৪–৮৫ সালের দিকে বাবার সঙ্গে বিলাইছড়ির এক জুমে কাজ করতে যান। তখনই দেখেন বিশাল এক বাঘ। গল্পটা বলতে গিয়ে যেন পুরোনো সেই স্মৃতি জ্যান্ত হয়ে উঠেছিল তাঁর মনে। চোখ বড় বড় হয়ে উঠেছিল। জুম থেকে কিছুটা দূরের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন বাঘটাকে। তারপর হারিয়ে যায় গাছপালার আড়ালে।
মহানন্দায় বাঘ মিলেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামেও মিলবে কি
ভারতের শিলিগুড়ির কাছেই মহানন্দা অভয়ারণ্য। বছর কয়েক আগে দার্জিলিং যাওয়া-আসার পথে মহানন্দার দেখা পেয়েছিলাম গাড়ি থেকে। তবে জঙ্গলের অন্দরমহলে যাওয়া হয়নি। দুই যুগ পর সেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা মিলেছে।
রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানা যায়, বাঘ আছে এমন জানতে পেরে জঙ্গলের একাধিক জায়গায় ক্যামেরা ট্র্যাপ বসানো হয়েছিল। আর সেই ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে ডোরাকাটা প্রাণীটি। তারা মনে করছেন আরও বাঘ আছে ওই অভয়ারণ্যে। এর আগে নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক ও বক্সা টাইগার রিজার্ভে বাঘের দেখা মিলেছিল। এবার মহানন্দাতেই ক্যামেরাবন্দী হলো পূর্ণবয়স্ক বাঘ। এটা এ বছরের এপ্রিলের ঘটনা।
মহানন্দা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের কিছুটা দূরেই শালুগাড়া আর্মি ক্যাম্প। সেখানে শেষবার ১৯৯৯ সালের দিকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দেখা পাওয়া গিয়েছিল। তবে বন দপ্তর সূত্র বলছে, সেটি বুড়ো বাঘ। এরপর ২০১০ সালের দিকে বাঘের অস্তিত্ব টের পাওয়া গেলেও ছবি পাওয়া যায়নি। তার মানে, এই অরণ্যে বাঘের দেখা মিলল দুই যুগ পর।
আমাদেরও কিন্তু খুব হতাশার কিছু নেই। রাঙামাটি-বান্দরবানের বন-পাহাড়ে সাম্প্রতিক সময়েও বাঘ দেখার দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে সমস্যা হলো, এখনো নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি মহানন্দার মতো।
সাম্প্রতিক খবর
সাজেক-কাসালংয়ের উত্তর-পুবে ভারতের মিজোরামে ডামপা টাইগার রিজার্ভ। একেবারে সীমান্ত বিন্দুতেই এর অবস্থান দেখাচ্ছে গুগল আর্থ। ডামপার কথা জানার পর আশার পারদটা চূড়ায় গিয়ে ঠেকে। ডামপায় বাঘ থাকলে সীমান্তের এপাশে কাসালং-সাজেকে কেন থাকবে না!
তবে ভারতের ২০১৮ সালের বাঘ জরিপের ফলাফল মনটা একটু ভার করে দেয়। ওই জরিপে মিজোরামের ডামপা টাইগার রিজার্ভে বাঘের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলেনি। তবে ২০২১ সালের জুনেই খুশির খবর মিলল। ডামপায় ক্যামেরা ট্র্যাপে বাঘের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে আবার। মে মাসে বাঘ ধরা দিয়েছে জাখুমা ডন নামের এক বন্য প্রাণীপ্রেমী এবং বনপ্রহরীর ক্যামেরা ট্র্যাপে। ২০১৪ সালের পর আবার ডামপায় ক্যামেরা ফাঁদে বন্দী হলেন মহারাজা। অবশ্য কোনো কারণে ডামপায় বাঘ না থাকলেও কাসালং-সাজেকে থাকতেই পারে বাঘের বসতি।
সাজেকে ২০২০ সালেও শুনেছি বাঘের তাজা কাহিনি। সেপ্টেম্বরে সাজেকের পাহাড় রাজ্য ভ্রমণের তৃতীয় রাতে একটি রেস্তোরাঁর ছাদে গেলাম ভ্রমণসঙ্গীদের নিয়ে। এখানেই এক রিসোর্ট মালিকের সঙ্গে আলাপ তখন। একাধিক রিসোর্ট আছে তাঁর।
রাতে পাহাড় কেবল আবছা চোখে পড়ছিল। অদ্ভুত এক আলো-আঁধারি। এর মধ্যে ওই রিসোর্ট মালিক ভদ্রলোক গল্প বলা শুরু করলেন। ‘এখন তো জন্তুরা এদিকে আসে না। দূরের পাহাড়ে আছে। কখনো কখনো শিকারিরা পাহাড়ের ভেতর থেকে বন্য জন্তু মেরে আনে। ওই তো কয়েক বছর আগেই একটা বাঘ শিকার হইছিল।’
‘বাঘ নাকি চিতা?’ কোনোভাবে ঢোক গিলে প্রশ্ন করলাম।
‘কী বলেন! রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। একটা দাঁতও আছে আমার কাছে।’ রীতিমতো চটে গেলেন হাসিখুশি ভদ্রলোকটি। রিসোর্ট মালিক শিক্ষিত, বিদেশি সংস্থায়ও চাকরি করার অভিজ্ঞতা আছে। তাঁর ভুল হওয়ার কথা নয়। কষ্টের মধ্যেও এক চিলতে আশার আলো দেখলাম। কয়েক বছর আগে যেহেতু ছিল, এখনো নিশ্চয় দু-একটা আছে।
নভেম্বর, ২০২০। সকালের নাশতা শেষে কেওক্রাডংয়ে উঠেই দেখা পাহাড়টির মালিক লালা বমের সঙ্গে। তাঁর কাছেই শুনলাম গল্পটা, আর রোমাঞ্চে কাঁটা দিয়ে উঠল শরীর। আগের বছর, মানে ২০১৯-এ তাঁর বিশাল একটা গরু মারা পড়েছিল বাঘের আক্রমণে। লালা বমের বর্ণনা ঠিক হলে দূরের পাহাড়ে থাকে বিশাল বেঙ্গল টাইগার। শিকারের জন্য হানা দেয় মাঝেমধ্যে এদিকে। হেলিপ্যাডের ঠিক নিচেই মেরে খেয়ে গিয়েছিল গরুটাকে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ মনিরুল খান তাঁর ‘টাইগারস ইন ম্যানগ্রোভস’ বইয়ে ২০১০ সালে কাসালং রিজার্ভে বাঘ দেখা যাওয়ার খবর জানিয়েছেন। ২০১১ সালে বান্দরবানের তাজিংডং পাহাড়ে স্থানীয় এক শিকারির কাছে বাঘের চর্বি আবিষ্কার করেন তিনি। তাজিংডংয়ের আশপাশেই ওই বছর বাঘটি শিকার করা হয়। ওটার হাড়-চামড়া কিনে নিয়ে যান মিয়ানমারের শিকারিরা। ওই শিকারিই জানান, তারের শক্তিশালী এক ধরনের ফাঁদ পাতা হয় বাঘের জন্য। ওই ফাঁদে বাঘের পা আটকে যায়। তারপর অনাহারে সেখানে মারা পড়ে বিশাল জন্তুটি।
বড় মোদক এলাকায় ২০১০ সালে ও এর আগে এক স্থানীয় শিকারি দুটি বাঘ শিকার করেন বলে জানা যায়। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঘের সাম্প্রতিক আনাগোনার ব্যাপারে প্রথম মোটামুটি নিশ্চিত প্রমাণ হাজির করে বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। ২০১৬ সালে বান্দরবানের মাতামুহুরি সংরক্ষিত বনে বাঘের পায়ের ছাপের ছবি তোলেন তাঁদের প্যারা বায়োলজিস্টরা।
দীর্ঘদিন পার্বত্য চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করছেন রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রিয় চাকমা। তাঁর থেকেই জানতে পারি ২০০৫-০৬ সালের দিকে কাসালং সংরক্ষিত অরণ্যে পাহাড়ের দুর্গমের বাসিন্দাদের হাতে দুটি বাঘ মারা পড়ার কাহিনি। ২০১০-১১ সালে রাঙামাটির রাইংক্ষ্যং অরণ্যেও পেয়েছিলেন বাঘের খোঁজ।
আলীকদমের ভারত সীমান্তঘেঁষা এক পাড়ার বাসিন্দার সঙ্গে আলাপ হয় বছর দুয়েক আগে। আশপাশের বন-পাহাড় আর বুনো জন্তুদের খবর নিলাম। একপর্যায়ে বললেন, তাঁদের দুই পাড়ার মাঝখানে বিশাল এক জঙ্গল। দিনের বেলায়ও ওই অরণ্য পাড়ি দিতে ভয় হয়। সেখানেই আস্তানা বড় এক বাঘের। হঠাৎ হঠাৎ ডাক শোনা যায়। ২০২০ সালে পাড়ার দু-একজন দেখাও পেয়েছিল ভয়ংকর সুন্দর এই জন্তুর।
তবে বাঘের সর্বশেষ খবর পাই মনিরুল খানের কাছ থেকে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি দেশের দক্ষিণ-পূর্বে পাহাড়ের খণ্ড বনগুলো করিডরের মাধ্যমে জোড়া লাগানোর বিষয়ে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করে বন বিভাগ। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় আইইউসিএনকে। এ সমীক্ষার অংশ হিসেবেই অন্য গবেষক, বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাসালংয়ের গহিন অরণ্যে যান মনিরুল খান। জুলাইয়ের এই ভ্রমণের সময় স্থানীয়দের কাছে শোনেন আগের মাস মানে জুনেই বাঘের কাসালং নদী সাঁতরে পেরোনোর গল্প। কাসালং রিজার্ভের উত্তরের বেশ গভীরে দেখা যায় বাঘটিকে। মনিরুল খানের কাসালংসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় ভ্রমণের রোমাঞ্চকর বিবরণ আছে তাঁর লেখা সম্প্রতি প্রকাশিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাণবৈচিত্র্যের সন্ধানে’ বইটিতে।
আশা নিয়ে থাকি
আশা করি এই দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বাঘের বন বললেই আমাদের শুধু সুন্দরবনের নাম বলতে হবে না, বলতে পারব কাসালং কিংবা সাঙ্গু-মাতামুহুরির নামও। বন্যপ্রাণী ও বাঘ বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরীর সঙ্গে কথা হলে জানিয়েছেন এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে কয়েকটি হলেও বাঘ টিকে থাকা অসম্ভব নয়। এদিকে মনিরুল খান খুব অল্প সংখ্যায় হলেও কাসালং ও সাঙ্গু-মাতামুহুরির অরণ্যে এখনো বাঘের বিচরণ আছে বলেই বিশ্বাস করেন। গতকাল ছিল বিশ্ব বাঘ দিবস। আজ তাই একটাই আশা, অচিরেই পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে ক্যামেরা ট্র্যাপে বা সরাসরি ক্যামেরায় বন্দী হবে ডোরাকাটা সেই রাজকীয় প্রাণী। আর আমরা নিশ্চিত হব পাহাড়ের বনে এখনো তার বিচরণ সম্পর্কে। তবে আশঙ্কাও আছে! যদি সত্যি বাঘ থেকেও থাকে পাহাড়ের বনে, এখনই এদের রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে একসময় দেশের অন্য বনগুলোতে ঘুরে বেড়ানো বাঘদের মতো হারিয়ে যাবে এরাও।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস।
২ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ শনিবার ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজকের আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকতে পারে এবং আকাশ থাকবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী শহর ঢাকায় দূষণ কমছেই না। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে ঢাকা। প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ৩৮০ একিউআই স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
আজ সকাল ৮টা ২০ মিনিটে আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১০ দূষিত শহরের তালিকার বাকি শহরগুলো হলো —
(বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে)
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (২৯১, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। তৃতীয় স্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ (১৭৫, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ঢাকা এবং পঞ্চম স্থানে পাকিস্তানের করাচি (১৬১,সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।
শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:
৬. কায়রো, মিসর (১৫৮)
৭. বাকু, আজারবাইজান (১৫৭)
৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৫২)
৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৪৯)
১০. কলকাতা, ভারত (১৪৩)
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

রাজধানী শহর ঢাকায় দূষণ কমছেই না। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে ঢাকা। প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ৩৮০ একিউআই স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
আজ সকাল ৮টা ২০ মিনিটে আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১০ দূষিত শহরের তালিকার বাকি শহরগুলো হলো —
(বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে)
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (২৯১, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। তৃতীয় স্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ (১৭৫, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ঢাকা এবং পঞ্চম স্থানে পাকিস্তানের করাচি (১৬১,সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।
শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:
৬. কায়রো, মিসর (১৫৮)
৭. বাকু, আজারবাইজান (১৫৭)
৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৫২)
৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৪৯)
১০. কলকাতা, ভারত (১৪৩)
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

আমাদের দেশের কোন বনে বাঘ আছে জিজ্ঞেস করলে নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের নামই বলবেন। অথচ একসময় বাংলাদেশের বহু অরণ্যেই বাঘ ছিল। তবে অনেকেই জানেন না এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো কোনো জঙ্গলে বাঘ দেখার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আসলেই কি এখনো আমাদের পাহাড়ের বনে বিচরণ করছে বাঘেরা? সে উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছ
৩০ জুলাই ২০২৩
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ শনিবার ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজকের আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকতে পারে এবং আকাশ থাকবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টির প্রবণতা কমে এসেছে। ফলে আবহাওয়া শুষ্ক, বেড়েছে তাপমাত্রা। তবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে নিম্নচাপ। এটি গভীর নিম্নচাপ থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে ২৮ অক্টোবর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিণে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আজ রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ সারা দেশে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কাল সোমবার থেকে আবহাওয়া প্রায় একই রকম থাকবে। তবে ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম ছাড়াও রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
বৃষ্টির এই ধারা ২৯ অক্টোবরও অব্যাহত থাকতে পারে। ৩০ অক্টোবর থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে গভীর নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও এটির বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। আজ সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় যা-ই হোক না কেন, আপাতত এর গতিবিধিতে মনে হচ্ছে এটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টির প্রবণতা কমে এসেছে। ফলে আবহাওয়া শুষ্ক, বেড়েছে তাপমাত্রা। তবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে নিম্নচাপ। এটি গভীর নিম্নচাপ থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে ২৮ অক্টোবর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিণে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আজ রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ সারা দেশে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কাল সোমবার থেকে আবহাওয়া প্রায় একই রকম থাকবে। তবে ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম ছাড়াও রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
বৃষ্টির এই ধারা ২৯ অক্টোবরও অব্যাহত থাকতে পারে। ৩০ অক্টোবর থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে গভীর নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও এটির বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। আজ সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় যা-ই হোক না কেন, আপাতত এর গতিবিধিতে মনে হচ্ছে এটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আমাদের দেশের কোন বনে বাঘ আছে জিজ্ঞেস করলে নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের নামই বলবেন। অথচ একসময় বাংলাদেশের বহু অরণ্যেই বাঘ ছিল। তবে অনেকেই জানেন না এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো কোনো জঙ্গলে বাঘ দেখার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আসলেই কি এখনো আমাদের পাহাড়ের বনে বিচরণ করছে বাঘেরা? সে উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছ
৩০ জুলাই ২০২৩
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস।
২ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ শনিবার ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজকের আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকতে পারে এবং আকাশ থাকবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ শনিবার ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজকের আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকতে পারে এবং আকাশ থাকবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্তমানে রাজধানী এবং এর আশপাশ এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ।
আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে গতকালকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় কোনো বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়নি, যার ফলে আবহাওয়া শুষ্ক থাকার প্রবণতা বজায় রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ শনিবার ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজকের আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকতে পারে এবং আকাশ থাকবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্তমানে রাজধানী এবং এর আশপাশ এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ।
আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে গতকালকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় কোনো বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়নি, যার ফলে আবহাওয়া শুষ্ক থাকার প্রবণতা বজায় রয়েছে।

আমাদের দেশের কোন বনে বাঘ আছে জিজ্ঞেস করলে নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের নামই বলবেন। অথচ একসময় বাংলাদেশের বহু অরণ্যেই বাঘ ছিল। তবে অনেকেই জানেন না এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো কোনো জঙ্গলে বাঘ দেখার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আসলেই কি এখনো আমাদের পাহাড়ের বনে বিচরণ করছে বাঘেরা? সে উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছ
৩০ জুলাই ২০২৩
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস।
২ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
রাজধানী ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, লাহোর (পাকিস্তান) ৩৬০ একিউআই স্কোর নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। এরপরে রয়েছে ভারতের দিল্লি ও কলকাতা।
শীর্ষ দূষণের ১০ শহর:
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টার কাছাকাছি সময়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের তালিকা নিচে দেওয়া হলো (বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে) :
তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (৩৬০, বিপজ্জনক), এরপরে আছে ভারতের দুটি শহর—দিল্লি (২৭০, খুবই অস্বাস্থ্যকর) এবং কলকাতা (১৮৯, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। এরপর ১৭৮ নিয়ে চীনের রাজধানী বেইজিং রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে।
শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:
৫. ঢাকা, বাংলাদেশ (১৬৯)
৬. তাশকেন্ত, উজবেকিস্তান (১৫৬)
৭. করাচি, পাকিস্তান ( ১৫৪)
৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৩৯)
৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত ( ১২৯)
১০. কুয়েত সিটি, কুয়েত (১১৭)
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

রাজধানী ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, লাহোর (পাকিস্তান) ৩৬০ একিউআই স্কোর নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। এরপরে রয়েছে ভারতের দিল্লি ও কলকাতা।
শীর্ষ দূষণের ১০ শহর:
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টার কাছাকাছি সময়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের তালিকা নিচে দেওয়া হলো (বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে) :
তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (৩৬০, বিপজ্জনক), এরপরে আছে ভারতের দুটি শহর—দিল্লি (২৭০, খুবই অস্বাস্থ্যকর) এবং কলকাতা (১৮৯, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। এরপর ১৭৮ নিয়ে চীনের রাজধানী বেইজিং রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে।
শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:
৫. ঢাকা, বাংলাদেশ (১৬৯)
৬. তাশকেন্ত, উজবেকিস্তান (১৫৬)
৭. করাচি, পাকিস্তান ( ১৫৪)
৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৩৯)
৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত ( ১২৯)
১০. কুয়েত সিটি, কুয়েত (১১৭)
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

আমাদের দেশের কোন বনে বাঘ আছে জিজ্ঞেস করলে নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের নামই বলবেন। অথচ একসময় বাংলাদেশের বহু অরণ্যেই বাঘ ছিল। তবে অনেকেই জানেন না এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো কোনো জঙ্গলে বাঘ দেখার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আসলেই কি এখনো আমাদের পাহাড়ের বনে বিচরণ করছে বাঘেরা? সে উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছ
৩০ জুলাই ২০২৩
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস।
২ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ শনিবার ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজকের আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকতে পারে এবং আকাশ থাকবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
১ দিন আগে