Ajker Patrika

মারা গেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়

মারা গেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়

বাংলার সংগীত জগতের এক স্বর্ণযুগের অবসান। মারা গেলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় । মঙ্গলবার সন্ধায় কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৯০ বছরের কিংবদন্তি। শিল্পীর মারা যাওয়ার খবর টুইট করে জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ শান্তনু সেন। শিল্পীর প্রয়াণে শোকাহত অনুরাগীরা। শোক প্রকাশ করেছেন বিনোদন ও সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্টরা।

কণ্ঠের জাদুতে কয়েক দশক ধরে সংগীত জগৎকে মাতিয়ে  রেখেছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়া এলাকায় জন্ম। ৬ ভাইবোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে ছোট। ছোটবেলা থেকেই সংগীতের প্রতি প্রেম। পণ্ডিত সন্তোষ কুমার বসু, অধ্যাপক এ টি কান্নান, অধ্যাপক চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে তাঁর শিক্ষা শুরু। ছিলেন উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর শিষ্যা। মুম্বাইয়ে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। রাইচাঁদ বড়াল, শচীন দেববর্মনের মতো সংগীত পরিচালকের সুরে গেয়েছেন ‘আঞ্জান গড়’, ‘তরানা’ র মতো সিনেমার গানে নেপথ্য কণ্ঠ দিয়েছিলেন।

প্রায় ১৭টি হিন্দি ছবির জন্য গান গাওয়ার পর ব্যক্তিগত কারণে কলকাতায় চলে আসেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সেই থেকে শুরু বাংলার সুরেলা জগতের এক নতুন অধ্যায়। ‘সপ্তপদী’ , ‘পথে হল দেরী’, ‘অগ্নি পরীক্ষা’, ‘দেওয়া নেওয়া’, ‘পিতা পুত্র’– একের পর এক সিনেমায় তাঁর কণ্ঠের জাদু শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে বললে কম বলা হবে। বলা যায়, বাঙালির সাংস্কৃতিক মননে যোগ করেছে এক অভূতপূর্ব মাইলফলক। এক সময় নাকি সুচিত্রা সেনের কন্ঠ হিসেবে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ছাড়া আর কাউকেই ভাবতে পারতেন না সংগীত পরিচালকরা। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সলিল চৌধুরীর সঙ্গে জুটি বেঁধে বহু কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন । জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ‘জয় জয়ন্তী’, ‘নিশিপদ্ম’ সিনেমায় গান গেয়ে। পেয়েছেন বঙ্গ বিভূষণ। ১৯৬৬ সালে কবি ও গীতিকার শ্যামল গুপ্তকে বিয়ে করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। কিংবদন্তি সন্ধ্যার গাওয়া বহু গানের কথাই শ্যামল গুপ্তর লেখা।

এত সুর, এত গানের একচ্ছত্র সম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। প্রজাতন্ত্র দিবসের ঠিক আগেই তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দিতে চেয়েছিল সরকার। অভিমানে তা প্রত্যাখ্যান করেন শিল্পী। তার পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন। শোনা যায়, বাথরুমে পড়ে গিয়েছিলেন। তারপর হাসপাতাল হয়ে আর বাড়ি ফিরলেন না এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত