Ajker Patrika

লালনসম্রাজ্ঞীর বিদায়...

চলে গেলেন লালনসম্রাজ্ঞী, রেখে গেলেন শূন্যতা। শনিবার রাতে ফরিদা পারভীনের প্রয়াণে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমেছে শোকের ছায়া। দেশ-বিদেশের শিল্পীরা শোক প্রকাশ করেছেন। শিল্পী আর শিল্পীর গাওয়া গান নিয়ে স্মৃতি হাতড়ে জানিয়েছেন নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা।

বিনোদন ডেস্ক
সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন; ছবি: সংগৃহীত
সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন; ছবি: সংগৃহীত

1

ফরিদা পারভীনের মতো শিল্পীকে হারানো আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতি

রুনা লায়লা

এ রকম একটা খবর পেয়ে মনটা ভীষণ খারাপ। দেশের বাইরে থাকার কারণে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারলাম না। দেশে থাকলে অবশ্যই যেতাম। তার অসুস্থতার খবর শুনে অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করেছি। যেকোনো কারণে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সব সময় তার সুস্থতা কামনা করেছি। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে খুব মর্মাহত।

ফরিদা পারভীনের মতো একজন শিল্পীকে হারানো আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিরাট ক্ষতি। মানুষ হিসেবেও সে ভীষণ ভালো ছিল। আমাকে খুব ভালোবাসত এবং শ্রদ্ধা করত। আমাদের খুব বেশি দেখা হয়নি। তবে যখনই দেখা হয়েছে, হাসিমুখে আমাকে বরণ করে নিয়েছে। তার ছেলের বিয়েতে যাওয়াতে সে খুব খুশি হয়েছিল। আমি দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত নসিব করেন। ফরিদাকে নিয়ে গুছিয়ে বলতে পারছি না। এই মুহূর্তে কিছু বলার মতো মনের অবস্থা নেই। এই শোক কাটিয়ে উঠতে তার পরিবারকে যেন আল্লাহ শক্তি দেন। এত বড় ক্ষতি যেন তারা সইতে পারে।

forida-parvin--gazi-abdul-hakim

ফরিদা পারভীনের মতো শিল্পী শতবর্ষে একবার আসেন

গাজী আবদুল হাকিম

ফরিদা পারভীনের মতো শিল্পী শতবর্ষে একবার আসেন। তাঁর চলে যাওয়ার ক্ষতি পূরণ কীভাবে হবে আমি জানি না। কারও জন্য তো কোনো কিছু আটকে থাকে না। এটাও ঠিক, ফরিদা পারভীন আর আসবেন না। কাজী নজরুল ইসলাম কি আর কোনো দিন হবে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কি হবে? আমি তাঁদের সঙ্গে তুলনা করছি না। কিন্তু ফরিদা পারভীন শতবর্ষে একবার আসেন।

কুষ্টিয়ার আখড়া থেকে পৃথিবীর দরবারে লালনগীতি পৌঁছে দিয়েছেন ফরিদা পারভীন। বড়লোকদের ড্রয়িংরুমে পৌঁছে দিয়েছেন। এর চেয়ে বড় কিছু তো আর হতে পারে না।

তাঁর স্মৃতি নিয়ে বাকি জীবনটুকু বেঁচে থাকতে হবে। কিন্তু এই বেঁচে থাকা অনেক কষ্টের। আমরা যুগলবন্দী ছিলাম। আমার বাঁশি আর ফরিদা পারভীনের গান যেভাবে ক্লিক করেছে, সেটা আর কোথাও হয়নি। আমি জানি না আমার বাঁশির সুরের কী হবে। হয় আমাকে ছেড়ে দিতে হবে, নাহলে আরও বেশি করে বাজাতে হবে, যাতে ওপারে সে তৃপ্তি পায় যে আমার হাকিম তো বাঁশিটা বাজাচ্ছে।

Moushumi-Bhoumik_Pro

ফরিদা পারভীনের গানের ভেতরে কোনো খাদ নেই

মৌসুমী ভৌমিক

ফরিদা পারভীন যথাস্থানে শিক্ষিত, দীক্ষিত (মোকসেদ আলী সাঁইয়ের কাছে সেই ছোটবেলা থেকে গান শিখেছেন তিনি)। ফলে তাঁর গানের একদম ভেতরটাতে কোনো খাদ নেই। ফরিদা পারভীনের গান শুনতে শুনতে একটা জিনিস খেয়াল করি, অঞ্চলের একটা ধ্বনি যে থাকে, কণ্ঠস্বরের একটা টেক্সচার, টোন—একেক অঞ্চলের শিল্পীদের গলায় বিভিন্নতার ভেতরে এই একটা মিলও শুনতে পাওয়া যায়। ফরিদা পারভীন যতই দেশ-বিদেশে, কমার্শিয়াল প্রোডাকশনে, টিভিতে, ক্যাসেটে, রেকর্ডে, কিবোর্ড প্যাডের অনুষঙ্গে গান গেয়ে থাকুন; তাঁর গান থেকে কুষ্টিয়া মুছে যায়নি বলেই আমার মনে হয়।

১৯৯৫-৯৬ সালে ঢাকার নিউমার্কেট থেকে আমার জন্য একটি ক্যাসেট তৈরি করে এনে দিয়েছিল শাহীন আখতারের বোন রোনা। মিক্সটেপ যাকে বলে। কলকাতায় ফিরে ঘরে বসে শুনে শুনে আমি সব গানের নাম লিখে রেখেছিলাম আর কিছু কিছু গান গাইতেও শিখেছিলাম। সেই প্রথম আমার ফরিদা পারভীন শুনে গান শেখা। টেপ রেকর্ডারটা সারাতে দিয়েছি, অথচ আজ এতই ইচ্ছে হচ্ছে এই ক্যাসেটটা একবার শুনি। আমি জানি, শুনতে শুরু করলে সব ইন্টারলিউড, প্রিলিউড, ফরিদা পারভীনের গলার ভাঁজ, যা আমার পক্ষে অননুকরণীয়, সব আমার মনে পড়ে যাবে। তবু গলা মিলিয়ে মিলিয়ে গাইতে থাকব, সেও আমি জানি। এসব গান আমাদের জীবনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে বাঁধা। ভালো-মন্দের ঊর্ধ্বে।

Untitled-1

লালনের গান আধুনিকায়ন করে আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন তিনি

কনকচাঁপা

ফরিদা পারভীন আপা লালনগীতিতে যে জনপ্রিয়তা তৈরি করেছিলেন, সেই পুরো জায়গাটা শূন্য করে নিজের সঙ্গে নিয়ে চলে গেলেন। আধুনিক জীবনে আমরা যারা লালনগীতি শুনতাম, এখনো শুনি, সেই জায়গাটা ফরিদা আপা সৃষ্টি করেছেন। যাঁরা লালন সাঁইজির আখড়ায় গান করেন, তাঁদের গান একরকম। সেই গান আধুনিকায়ন করে আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন তিনি।

লালনগীতি ছাড়াও তাঁর কণ্ঠে দেশের গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাঁর গলার সুর ছিল তিরের মতো। আল্লাহ তাঁর এতটুকুই হায়াত রেখেছিলেন। কিন্তু উনার আরও দীর্ঘদিন বাঁচার দরকার ছিল আমাদের জন্য, বাংলাদেশের শ্রোতাদের জন্য, শিল্পীদের জন্য।

সংগীতাঙ্গনে যাঁরা আমাদের মাথার ওপর বটবৃক্ষের মতো ছিলেন। যে ভরাট সংগীতাঙ্গন দেখে বড় হয়েছি, ঋদ্ধ হয়েছি; সেই অঙ্গনের অনেককে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। অসহায় হয়ে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষ নিজের সময়কে আনন্দময় করতে গান শোনেন। কিন্তু শিল্পীর মৃত্যুর পর পাপ-পুণ্য, বেহেশত-দোজখ—এসব নিয়ে এত কথা বলে! সেই মন্তব্যগুলো দেখলে আমরা ভীত হয়ে যাই। ভেঙে পড়ি। আমার বিনীত অনুরোধ, আমাদের শিল্পীদের এত পাপী ভাববেন না।

একনজরে ফরিদা পারভীন

জন্ম : ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৫৪ (নাটোরের সিংড়া উপজেলার সাউল গ্রামে)

মা-বাবা : বাবা দেলোয়ার হোসেন, মা রউফা বেগম।

গানে হাতেখড়ি: পাঁচ বছর বয়সে ওস্তাদ কমল চক্রবর্তীর কাছে। পরে গান শিখেছেন মোকসেদ আলী সাঁইয়ের কাছে।

শিক্ষাজীবন: মীর মশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (এসএসসি), কুষ্টিয়া গার্লস কলেজ (এইচএসসি), কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ (বাংলা সাহিত্যে অনার্স)

সংগীত শুরু: প্রথম জীবনে নজরুলসংগীত গাইতেন। বেশ কিছু আধুনিক এবং দেশাত্মবোধক গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন।

লালনসংগীতে আগ্রহ: স্বাধীনতার পর লালনের গান শেখা ও গাওয়া শুরু করেন।

প্রথম পরিচিতি: বাংলাদেশ টেলিভিশনের গীতি-আলেখ্য অনুষ্ঠানে ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ এবং ‘সত্য বল সুপথে চল’ গান দুটি গেয়ে প্রথম পরিচিতি পান।

জনপ্রিয় আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গান: ‘এই পদ্মা, এই মেঘনা, এই যমুনা সুরমা নদী তটে’, ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে’ ইত্যাদি।

পুরস্কার ও সম্মাননা: একুশে পদক (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩), জাপান সরকারের ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার পুরস্কার (২০০৮)

মৃত্যু : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (ঢাকা)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রুবাইয়াত হোসেনের সিনেমায় বাঁধন, শিমু ও সুনেরাহ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরে ‘দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড’ সিনেমা নিয়ে কাজ করছেন নির্মাতা রুবাইয়াত হোসেন। চিত্রনাট্য নিয়ে ঘুরেছেন বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক ফান্ড। অবশেষে জানা গেল এ সিনেমার অভিনয়শিল্পীদের নাম। দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড সিনেমায় অভিনয় করছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া তিন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, রিকিতা নন্দিনী শিমু ও সুনেরাহ বিনতে কামাল। তাঁদের সঙ্গে আছেন জাইনিন করিম চৌধুরী। সংবাদমাধ্যম ভ্যারাইটিকে এমনটাই জানিয়েছেন নির্মাতা।

সিনেমাটির গল্পে দেখা যাবে, এক মেয়ের স্বপ্ন রূপকথার মতো আয়োজনে তার বিয়ে হবে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে এক জটিল রোগে ভুগছে। সমস্যা সমাধানে ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করে। কোনো ফল না পাওয়ায় মানসিক চাপ বাড়তে থাকে। একদিন বিউটি পারলারে গিয়ে লম্বা চুলের এক রহস্যময় নারীকে কল্পনায় দেখতে শুরু করে মেয়েটি।

ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে সিনেমাটির শুটিং। অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে রুবাইয়াত হোসেন বলেন, ‘প্রত্যেক অভিনয়শিল্পী উজাড় করে দিয়েছেন। নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়েছেন। আমি তাঁদের আস্থা, তাঁদের উদারতা, তাঁদের নিখুঁত শৈল্পিকতা এবং দৃঢ় প্রত্যয়ের জন্য কৃতজ্ঞ।’ নির্মাতা জানান, গল্পটি নিয়ে প্রায় দুই দশক ধরে কাজ করছেন তিনি। ২০০৬ সালে প্রথমে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা হিসেবে নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড। পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত বদলে পূর্ণদৈর্ঘ্য নির্মাণের পথে হাঁটেন।

রুবাইয়াত হোসেন বলেন, ‘২১ বছর ধরে গল্পটি মনের মধ্যে রেখেছি, বারবার লিখেছি। আমার জীবনের অর্ধেক সময়জুড়ে আছে এই গল্প। অবশেষে একটা দুর্দান্ত টিম নিয়ে সিনেমাটি বানাতে পেরেছি। এটা আমার কাছে মিরাকলের মতো লাগছে।’

দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড সিনেমার চিত্রগ্রহণে আছেন পর্তুগিজ নির্মাতা লিওনর টেলস। অন্যান্য বিভাগেও কাজ করেছেন আন্তর্জাতিক কলাকুশলীরা। রুবাইয়াত হোসেনের সঙ্গে সিনেমাটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছেন ফ্রান্সের ফ্রাঁসোয়া ডি’আর্টেমারে, জার্মানির আন্না ক্যাচকো, পর্তুগালের পেড্রো বোর্গস, নরওয়ের ইনগার্ড লিল হটন।

১৩ ডিসেম্বর থেকে ফ্রান্সে শুরু হতে যাওয়া লেস আর্কস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ওয়ার্ক-ইন-প্রোগ্রেস প্রোগ্রামে এই সিনেমার প্রকল্পটি প্রদর্শিত হবে। জানা গেছে, এখন চলছে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। ২০২৬ সালের মার্চ নাগাদ প্রস্তুত হবে দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড। এর পর অংশ নেবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এবার অপু বিশ্বাসের নায়ক সজল

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কয়েক দিন আগে শবনম বুবলীর সঙ্গে ‘শাপলা শালুক’ সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন আবদুন নূর সজল। সরকারি অনুদানের সিনেমাটি পরিচালনা করছেন রাশেদা আক্তার লাজুক। শাপলা শালুকের পর আরও এক সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন সজল। এবার তাঁর নায়িকা অপু বিশ্বাস। ১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ‘দুর্বার’ নামের সিনেমার শুটিং। এটি পরিচালনা করছেন কামরুল হাসান ফুয়াদ।

দুর্বার সিনেমার গল্প নিয়ে এখনই বিস্তারিত কথা বলতে চান না নির্মাতা। শুধু জানালেন, এটি নির্মিত হবে থ্রিলার ও মার্ডার মিস্ট্রি গল্পে। ১৬ ডিসেম্বর থেকে একটানা দৃশ্যধারণের কাজ শেষ করতে চান তিনি। এতে আরও অভিনয় করছেন জান্নাতুল নূর, সানজু জনসহ অনেকে। সিনেমার গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন আবদুল্লাহ জহির বাবু।

শোনা যাচ্ছে, আগামী বছর কোরবানির ঈদে মুক্তির পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি হচ্ছে দুর্বার। নির্মাতা কামরুল হাসান ফুয়াদ বলেন, ‘আগে সিনেমার কাজ ভালোভাবে শেষ করতে চাই। এরপর মুক্তির তারিখ ঘোষণা করব। আমাদের ইচ্ছা আছে কোনো একটি উৎসবে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার। তবে কোনো রকম তাড়াহুড়া করতে চাই না। আমাদের সবার উদ্দেশ্য, দর্শকদের ভালো একটি সিনেমা উপহার দেওয়া।’

জানা গেছে, এখন সিনেমার রিহার্সালে ব্যস্ত সময় পার করছেন অভিনয়শিল্পীরা। পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে চান সজল ও অপু। শুটিং শুরুর আগে ১৪ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ফটোশুটে অংশ নেওয়ার কথা আছে তাঁদের।

সিনেমার পাশাপাশি ডাবিং আর্টিস্ট হিসেবেও ব্যস্ত সময় পার করছেন সজল। একাধিক বিদেশি সিরিয়ালের ডাবিং করছেন তিনি। এই মাধ্যমের কাজও দারুণ উপভোগ করছেন সজল। অন্যদিকে, কয়েক দিন আগে জানা গেছে অপু বিশ্বাসের আরও এক সিনেমার খবর। বন্ধন বিশ্বাসের পরিচালনায় ‘সিক্রেট’ নামে আরেক সিনেমায় অভিনয় করবেন তিনি। এতে অপুর নায়ক আদর আজাদ। দুর্বারের কাজ শেষ হওয়ার পর সিক্রেট সিনেমার শুটিং শুরু করবেন অপু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হঠাৎ অভিনয় ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মৌ খান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৯
হঠাৎ অভিনয় ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মৌ খান
মৌ খান

২০১৯ সালে ‘প্রতিশোধের আগুন’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় মৌ খানের। সেই থেকে নিয়মিত কাজ করছেন শোবিজে। এখনো একাধিক সিনেমা রয়েছে তাঁর হাতে। হঠাৎ করেই অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিলেন মৌ খান। সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী জানান, ব্যক্তিগত কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে বাকিটা জীবন কাটাতে চান মৌ।

অভিনয়কে বিদায় জানানোর ঘোষণা দিয়ে গতকাল ফেসবুকে মৌ খান লেখেন, ‘আমার এই দীর্ঘ অভিনয়জীবনে আপনাদের অসীম ভালোবাসা, সমর্থন ও দোয়া সব সময় গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ রাখব। তবে আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের জায়গা থেকে জানাতে চাই, আমি আর অভিনয় ক্যারিয়ারটি চালিয়ে যেতে চাই না।’

অভিনয় ছাড়ার কারণ জানিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবেই আমার নিজস্ব ও ভেবেচিন্তে নেওয়া সিদ্ধান্ত। জীবনের বাকি পথ আমি আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী, নামাজ-কোরআন ও দ্বীনের আলোকে চলতে চাই। রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরেই আমার পরবর্তী জীবন গড়ে তুলতে চাই।’

নতুন করে কোনো সিনেমায় আর চুক্তিবদ্ধ হবে না বলে জানিয়েছেন মৌ খান। তবে হাতে থাকা অসম্পূর্ণ কাজগুলো শেষ করবেন। দ্রুত সেই কাজগুলো শেষ করতে পরিচালকদের অনুরোধ করেছেন তিনি। মৌ খান বলেন, ‘যে কয়েকটি কাজ এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে, সেগুলোর সম্মানিত পরিচালকদের প্রতি অনুরোধ, দয়া করে আপনারা সেগুলো সম্পন্ন করে নেবেন। আমার যতটুকু কাজ আছে, তা আমি শেষ করে দেব।’

সব শেষ গত অক্টোবরে মুক্তি পেয়েছিল মৌ খান অভিনীত সিনেমা ‘বান্ধব’। এখন কাজ করছেন ‘আবার হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘চাইল্ড অব দ্য স্টেশন’ এবং ‘তবুও প্রেম দামি’ সিনেমায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৌদিতে সিনেমার উৎসবে ঐশ্বরিয়া

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫২
ঐশ্বরিয়া রাই। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ঐশ্বরিয়া রাই। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

কয়েক বছর ধরে সৌদি আরব হয়ে উঠেছে বিশ্ব সিনেমার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। সারা বছর সেখানে সিনেমাকেন্দ্রিক নানা আয়োজন চলে। এ ক্ষেত্রে সৌদির সবচেয়ে বড় আয়োজন রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। ৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এ উৎসবের পঞ্চম আসর। ১০ দিনের এই উৎসবে ৫০টির বেশি দেশের ১০০টির বেশি সিনেমা প্রদর্শিত হবে।

প্রতিবছর রেড সি ফেস্টিভ্যালে হলিউড, বলিউডসহ আরববিশ্বের নামকরা অভিনয়শিল্পী-নির্মাতারা হাজির থাকেন। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে উৎসবের রেড কার্পেট হয়ে উঠেছিল তারকাময়। হাজির ছিলেন অ্যাড্রিয়েন ব্রডি, ঐশ্বরিয়া রাই, কার্স্টেন ডানস্ট, ভিন ডিজেল, জেসিকা আলবা, কুইন লতিফা, ডাকোটা জনসন, আনা ডি আরমাস, রিজ আহমেদ, নাওমি হ্যারিস, উমা থারম্যান, কৃতি শ্যানন প্রমুখ। সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত করা হয় জুলিয়েট বিনোচে, স্যার মাইকেল কেইন, স্ট্যানলি টংয়ের মতো কিংবদন্তি শিল্পীদের।

উৎসবের প্রথম দিন এক ঘণ্টার বিশেষ সেমিনারে যোগ দেন ঐশ্বরিয়া রাই। সেখানে নিজের ক্যারিয়ারের নানা পর্যায় নিয়ে আলাপ করেন অভিনেত্রী। দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে যেসব সিনেমার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন, যেসব সিনেমার কলাকুশলীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ঐশ্বরিয়া জানান, জীবনের সব পরিস্থিতিতে কখনোই সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেননি তিনি। অন্যরা কী বলবে, এ চিন্তা না করে নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। তিনি বলেন, ‘কখনো অনিরাপদ বোধ করি না; যে কারণে আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। চারপাশের নানা মানুষের নানা মত অনেক সময় মানুষের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। কিন্তু আমি সেটা হতে দিইনি।’

জীবনকে সব সময় একজন শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে দেখেছেন ঐশ্বরিয়া। নানা পরিস্থিতি থেকে প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টা করেছেন। অভিনেত্রী বলেন, ‘ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম। আমি সায়েন্সের ছাত্রী ছিলাম। স্থাপত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছি। পরে ভাগ্য আমাকে শোবিজে নিয়ে এসেছে। এখনো জীবনের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি একজন শিক্ষার্থীর মতো; যা কিছু ঘটেছে, শেখার চেষ্টা করেছি।’

বড় আয়োজন কিংবা বড় বাজেটের সিনেমা নয়, ঐশ্বরিয়া সব সময় চেষ্টা করেছেন ভালো কাজের সঙ্গী হতে। সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘দেবদাস’-এর মতো বড় প্রজেক্টে অভিনয়ের পর যুক্ত হয়েছিলেন কম বাজেটের বাংলা সিনেমায়। ঐশ্বরিয়া বলেন, ‘আমার মনে আছে, দেবদাসের পর সবাই ভাবছিল, এরপর আমার বড় প্রজেক্ট কী হবে? তখন আমি ঋতুপর্ণ ঘোষের “চোখের বালি” করেছি। কারণ, এমন সুন্দর গল্পেই আমি সব সময় কাজ করতে চেয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত