Ajker Patrika

লালনসম্রাজ্ঞীর বিদায়...

চলে গেলেন লালনসম্রাজ্ঞী, রেখে গেলেন শূন্যতা। শনিবার রাতে ফরিদা পারভীনের প্রয়াণে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমেছে শোকের ছায়া। দেশ-বিদেশের শিল্পীরা শোক প্রকাশ করেছেন। শিল্পী আর শিল্পীর গাওয়া গান নিয়ে স্মৃতি হাতড়ে জানিয়েছেন নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা।

বিনোদন ডেস্ক
সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন; ছবি: সংগৃহীত
সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন; ছবি: সংগৃহীত

1

ফরিদা পারভীনের মতো শিল্পীকে হারানো আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতি

রুনা লায়লা

এ রকম একটা খবর পেয়ে মনটা ভীষণ খারাপ। দেশের বাইরে থাকার কারণে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারলাম না। দেশে থাকলে অবশ্যই যেতাম। তার অসুস্থতার খবর শুনে অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করেছি। যেকোনো কারণে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সব সময় তার সুস্থতা কামনা করেছি। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে খুব মর্মাহত।

ফরিদা পারভীনের মতো একজন শিল্পীকে হারানো আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিরাট ক্ষতি। মানুষ হিসেবেও সে ভীষণ ভালো ছিল। আমাকে খুব ভালোবাসত এবং শ্রদ্ধা করত। আমাদের খুব বেশি দেখা হয়নি। তবে যখনই দেখা হয়েছে, হাসিমুখে আমাকে বরণ করে নিয়েছে। তার ছেলের বিয়েতে যাওয়াতে সে খুব খুশি হয়েছিল। আমি দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত নসিব করেন। ফরিদাকে নিয়ে গুছিয়ে বলতে পারছি না। এই মুহূর্তে কিছু বলার মতো মনের অবস্থা নেই। এই শোক কাটিয়ে উঠতে তার পরিবারকে যেন আল্লাহ শক্তি দেন। এত বড় ক্ষতি যেন তারা সইতে পারে।

forida-parvin--gazi-abdul-hakim

ফরিদা পারভীনের মতো শিল্পী শতবর্ষে একবার আসেন

গাজী আবদুল হাকিম

ফরিদা পারভীনের মতো শিল্পী শতবর্ষে একবার আসেন। তাঁর চলে যাওয়ার ক্ষতি পূরণ কীভাবে হবে আমি জানি না। কারও জন্য তো কোনো কিছু আটকে থাকে না। এটাও ঠিক, ফরিদা পারভীন আর আসবেন না। কাজী নজরুল ইসলাম কি আর কোনো দিন হবে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কি হবে? আমি তাঁদের সঙ্গে তুলনা করছি না। কিন্তু ফরিদা পারভীন শতবর্ষে একবার আসেন।

কুষ্টিয়ার আখড়া থেকে পৃথিবীর দরবারে লালনগীতি পৌঁছে দিয়েছেন ফরিদা পারভীন। বড়লোকদের ড্রয়িংরুমে পৌঁছে দিয়েছেন। এর চেয়ে বড় কিছু তো আর হতে পারে না।

তাঁর স্মৃতি নিয়ে বাকি জীবনটুকু বেঁচে থাকতে হবে। কিন্তু এই বেঁচে থাকা অনেক কষ্টের। আমরা যুগলবন্দী ছিলাম। আমার বাঁশি আর ফরিদা পারভীনের গান যেভাবে ক্লিক করেছে, সেটা আর কোথাও হয়নি। আমি জানি না আমার বাঁশির সুরের কী হবে। হয় আমাকে ছেড়ে দিতে হবে, নাহলে আরও বেশি করে বাজাতে হবে, যাতে ওপারে সে তৃপ্তি পায় যে আমার হাকিম তো বাঁশিটা বাজাচ্ছে।

Moushumi-Bhoumik_Pro

ফরিদা পারভীনের গানের ভেতরে কোনো খাদ নেই

মৌসুমী ভৌমিক

ফরিদা পারভীন যথাস্থানে শিক্ষিত, দীক্ষিত (মোকসেদ আলী সাঁইয়ের কাছে সেই ছোটবেলা থেকে গান শিখেছেন তিনি)। ফলে তাঁর গানের একদম ভেতরটাতে কোনো খাদ নেই। ফরিদা পারভীনের গান শুনতে শুনতে একটা জিনিস খেয়াল করি, অঞ্চলের একটা ধ্বনি যে থাকে, কণ্ঠস্বরের একটা টেক্সচার, টোন—একেক অঞ্চলের শিল্পীদের গলায় বিভিন্নতার ভেতরে এই একটা মিলও শুনতে পাওয়া যায়। ফরিদা পারভীন যতই দেশ-বিদেশে, কমার্শিয়াল প্রোডাকশনে, টিভিতে, ক্যাসেটে, রেকর্ডে, কিবোর্ড প্যাডের অনুষঙ্গে গান গেয়ে থাকুন; তাঁর গান থেকে কুষ্টিয়া মুছে যায়নি বলেই আমার মনে হয়।

১৯৯৫-৯৬ সালে ঢাকার নিউমার্কেট থেকে আমার জন্য একটি ক্যাসেট তৈরি করে এনে দিয়েছিল শাহীন আখতারের বোন রোনা। মিক্সটেপ যাকে বলে। কলকাতায় ফিরে ঘরে বসে শুনে শুনে আমি সব গানের নাম লিখে রেখেছিলাম আর কিছু কিছু গান গাইতেও শিখেছিলাম। সেই প্রথম আমার ফরিদা পারভীন শুনে গান শেখা। টেপ রেকর্ডারটা সারাতে দিয়েছি, অথচ আজ এতই ইচ্ছে হচ্ছে এই ক্যাসেটটা একবার শুনি। আমি জানি, শুনতে শুরু করলে সব ইন্টারলিউড, প্রিলিউড, ফরিদা পারভীনের গলার ভাঁজ, যা আমার পক্ষে অননুকরণীয়, সব আমার মনে পড়ে যাবে। তবু গলা মিলিয়ে মিলিয়ে গাইতে থাকব, সেও আমি জানি। এসব গান আমাদের জীবনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে বাঁধা। ভালো-মন্দের ঊর্ধ্বে।

Untitled-1

লালনের গান আধুনিকায়ন করে আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন তিনি

কনকচাঁপা

ফরিদা পারভীন আপা লালনগীতিতে যে জনপ্রিয়তা তৈরি করেছিলেন, সেই পুরো জায়গাটা শূন্য করে নিজের সঙ্গে নিয়ে চলে গেলেন। আধুনিক জীবনে আমরা যারা লালনগীতি শুনতাম, এখনো শুনি, সেই জায়গাটা ফরিদা আপা সৃষ্টি করেছেন। যাঁরা লালন সাঁইজির আখড়ায় গান করেন, তাঁদের গান একরকম। সেই গান আধুনিকায়ন করে আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন তিনি।

লালনগীতি ছাড়াও তাঁর কণ্ঠে দেশের গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাঁর গলার সুর ছিল তিরের মতো। আল্লাহ তাঁর এতটুকুই হায়াত রেখেছিলেন। কিন্তু উনার আরও দীর্ঘদিন বাঁচার দরকার ছিল আমাদের জন্য, বাংলাদেশের শ্রোতাদের জন্য, শিল্পীদের জন্য।

সংগীতাঙ্গনে যাঁরা আমাদের মাথার ওপর বটবৃক্ষের মতো ছিলেন। যে ভরাট সংগীতাঙ্গন দেখে বড় হয়েছি, ঋদ্ধ হয়েছি; সেই অঙ্গনের অনেককে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। অসহায় হয়ে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষ নিজের সময়কে আনন্দময় করতে গান শোনেন। কিন্তু শিল্পীর মৃত্যুর পর পাপ-পুণ্য, বেহেশত-দোজখ—এসব নিয়ে এত কথা বলে! সেই মন্তব্যগুলো দেখলে আমরা ভীত হয়ে যাই। ভেঙে পড়ি। আমার বিনীত অনুরোধ, আমাদের শিল্পীদের এত পাপী ভাববেন না।

একনজরে ফরিদা পারভীন

জন্ম : ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৫৪ (নাটোরের সিংড়া উপজেলার সাউল গ্রামে)

মা-বাবা : বাবা দেলোয়ার হোসেন, মা রউফা বেগম।

গানে হাতেখড়ি: পাঁচ বছর বয়সে ওস্তাদ কমল চক্রবর্তীর কাছে। পরে গান শিখেছেন মোকসেদ আলী সাঁইয়ের কাছে।

শিক্ষাজীবন: মীর মশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (এসএসসি), কুষ্টিয়া গার্লস কলেজ (এইচএসসি), কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ (বাংলা সাহিত্যে অনার্স)

সংগীত শুরু: প্রথম জীবনে নজরুলসংগীত গাইতেন। বেশ কিছু আধুনিক এবং দেশাত্মবোধক গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন।

লালনসংগীতে আগ্রহ: স্বাধীনতার পর লালনের গান শেখা ও গাওয়া শুরু করেন।

প্রথম পরিচিতি: বাংলাদেশ টেলিভিশনের গীতি-আলেখ্য অনুষ্ঠানে ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ এবং ‘সত্য বল সুপথে চল’ গান দুটি গেয়ে প্রথম পরিচিতি পান।

জনপ্রিয় আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গান: ‘এই পদ্মা, এই মেঘনা, এই যমুনা সুরমা নদী তটে’, ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে’ ইত্যাদি।

পুরস্কার ও সম্মাননা: একুশে পদক (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩), জাপান সরকারের ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার পুরস্কার (২০০৮)

মৃত্যু : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (ঢাকা)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৯ বছর পর সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত
সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত

‎ঢালিউডের নামকরা অভিনেতা প্রয়াত সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় রমনা থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার মধ্যরাতে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করেন সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম। আজ দুপুরে বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম। ‎

‎তিনি বলেন, নায়ক সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল রাতেই রমনা থানায় তাঁর মামা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ‎

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিউ ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় ভাড়াবাসা থেকে সালমান শাহের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে সালমান শাহের বাবা ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন।

২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হয়। এরপর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ওই প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ বলা হয়।

২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন আবেদন করেন সালমানের মা নীলা চৌধুরী। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৬০০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, সালমান শাহ ‘আত্মহত্যা’ করেছিলেন।

পিবিআইয়ের সেই প্রতিবেদনে নারাজি দিয়েছিলেন নীলা চৌধুরী। একই সঙ্গে প্রতিবেদনটির বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন তিনি।

গতকাল নীলা চৌধুরীর সেই আবেদন মঞ্জুর করে ২৯ বছর আগের ঘটনায় হত্যা মামলা করার নির্দেশ দেন আদালত; যা তদন্তের ভার দেওয়া হয় রমনা থানাকে।

এ অবস্থায় গতকাল রাতেই রমনা থানায় সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুভ আসছেন আরও নতুন গান নিয়ে

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শুভেন্দু দাস শুভ। ছবি: তালহা মোস্তফা
শুভেন্দু দাস শুভ। ছবি: তালহা মোস্তফা

‘লালবাজারে গলির মোড়ে পান দোকানের খরিদ্দার, বাকের আলীর আদুরে মেয়ে নাম ছিল তার গুলবাহার’—এমন কথার গানটি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম হিট গান। ‘গুলবাহার’ শিরোনামের গানটি ইশান মজুমদারের লেখা, সুর করা ও গাওয়া। আর পুরো গানটির পেছনের মানুষটির নাম শুভ, পুরো নাম শুভেন্দু দাস শুভ। গুলবাহারের প্রযোজক তিনি, সংগীতায়োজনটাও তাঁর। শুভ নিজেও কণ্ঠ দেন গানে, তবে গাওয়ার চেয়ে গাওয়াতেই বেশি ভালোবাসেন তিনি। গানগুলোকে নানা ঘরানায়, নানা আয়োজনের সুর-সংগীতে সাজিয়ে তোলার এক অদ্ভুত নেশা আছে তাঁর। এ ছাড়া, কোক স্টুডিও বাংলাতেও নিয়মিত কাজ করছেন শুভ। ‘মুড়ির টিন’, ‘বুলবুলি’, ‘লং ডিসট্যান্স লাভ’, ‘দাঁড়ালে দুয়ারে’সহ কোক স্টুডিও বাংলার বেশকিছু গানে তাঁর সংগীত আয়োজন এবং গিটারবাদন দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছে। মুড়ির টিনসহ কয়েকটি গানে কণ্ঠও দিয়েছেন তিনি।

শুভর কণ্ঠে প্রথম প্রকাশিত মৌলিক গান ছিল মৌমিতা রায়ের লেখা ও শুভর সুর করা ‘ফাগুন বেলায়’। গানের জগতে প্রায় দেড় যুগ সময় পেরিয়ে শুভ এখন হয়ে উঠেছেন জনপ্রিয় আর নির্ভরতার এক নাম। কাজ করছেন একগুচ্ছ নতুন গান নিয়ে। অন্যের গানের পাশাপাশি নিজেও গাইছেন কিছু গান। শিগগিরই মুক্তি পাবে তাঁর গাওয়া ‘মেঘেদের ভেসে যাওয়া’, ‘মন খুঁজে প্রেম নেব’সহ একাধিক গান। মেঘেদের ভেসে যাওয়া গানটি লিখেছেন আবদুল্লাহ আল ইমরান, মন খুঁজে প্রেম নেব লিখেছেন অটোমনাল মুন। দুটো গানেরই সুর-সংগীত করেছেন শুভ। নিজের সুর ও সংগীতে ‘শব্দকল্পদ্রুম’ নামে একটা প্রজেক্ট তৈরি করছেন শুভ। নিজের গাওয়ার পাশাপাশি অন্য শিল্পীদের গান থাকবে এই প্রজেক্টে। কণ্ঠশিল্পী সানজিদা মাহমুদ নন্দিতার সঙ্গে গেয়েছেন ‘মিষ্টি করে বৃষ্টি ঝরে’ শিরোনামের গান, লিখেছেন অটোমনাল মুন।

নন্দিতার সঙ্গে এটাই শুভর প্রথম গান নয়। তাঁর কম্পোজিশনে নন্দিতার সঙ্গে দ্বৈত এবং নন্দিতার একক অনেক গান ইউটিউবসহ অনলাইনে শ্রোতাদের মন মাতিয়ে যাচ্ছে। মোজি অ্যান্ড কোং নামে একটা ব্যান্ডও গড়েছেন তাঁরা দুজন। গাইছেন সেই ব্যান্ডের গানও। পাশাপাশি শুধু গিটার বাজিয়ে ‘আমায় প্রশ্ন করে’, ‘আকাশ এত মেঘলা’, ‘ঝিলমিল ঝিলমিল ঝিলের জলে’, ‘আহা আজি এ বসন্তে’, ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’সহ বেশ কিছু বাংলা গান কাভার করেছেন মোজি অ্যান্ড কোং নামের ইউটিউব চ্যানেলে।

সিনেমার গানেও কাজ করছেন শুভ। তবে পলিসিগত কারণে এখনই সেই তথ্য প্রকাশ করতে চান না।

শুভর বড় ভাই সংগীতশিল্পী অটোমনাল মুন। তাঁর কাছেই গিটারের হাতেখড়ি শুভর। দুই ভাই-ই দারুণ গিটার বাজান।

শুভেন্দু দাস শুভ বলেন, ‘সংগীত পরিচালনার কাজটাই বেশি উপভোগ করি আমি। তবে অনেকে আমার গাওয়া গানও পছন্দ করেছেন। তাঁদের কথা মাথায় রেখে নিজেই গাইছি কিছু গান। নানা ঘরানার মিউজিক সম্পর্কে জানাশোনা আছে আমার। চেষ্টা করছি আরও শিখতে এবং নিজের এই জানাশোনাটা দিয়ে নানা ঘরানার নতুন গান উপহার দিতে। নিজেকে কোনো বলয়ে আটকে রাখতে চাই না। শ্রোতারা যেহেতু আমার মিউজিক পছন্দ করছে, এই ধারাটা ধরে রাখতে চাই। আমার বিশ্বাস শ্রোতা-দর্শক আমার পাশে থাকবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নুসরাত ফতেহ আলী খানের স্মরণে ‘শাম-ই-নুসরাত’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
নুসরাত ফতেহ আলী খান। ছবি: সংগৃহীত
নুসরাত ফতেহ আলী খান। ছবি: সংগৃহীত

উপমহাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী ওস্তাদ নুসরাত ফতেহ আলী খানের স্মরণে ঢাকায় আয়োজন করা হচ্ছে সুফি সংগীতের সন্ধ্যা ‘শাম-ই-নুসরাত’। ২৫ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় আগারগাঁওয়ের জাতীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে এই সংগীতসন্ধ্যা। যৌথভাবে আয়োজন করছে ক্যাপিটাল কার্ভ কমিউনিকেশনস এবং কারার-দ্য সুফি ব্যান্ড।

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য নুসরাত ফতেহ আলী খানের অসাধারণ সংগীতজীবন ও তাঁর আধ্যাত্মিক সুরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা। তাঁকে স্মরণ করে এই কনসার্টে পরিবেশিত হবে সুফি ঘরানার কাওয়ালি ও আধ্যাত্মিক সংগীত।অনুষ্ঠানে পারফর্ম করবে সুফি ব্যান্ড কারার। এ ছাড়া থাকবে সুফি ড্যান্স পারফরম্যান্স।

কনসার্টের টিকিটের দাম রাখা হয়েছে ১ হাজার টাকা। পাওয়া যাচ্ছে টিকিটো বাংলাদেশ নামের ওয়েবসাইটে।

ওস্তাদ নুসরাত ফতেহ আলী খান ছিলেন পাকিস্তানের একজন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী। কাওয়ালি গানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনপ্রিয় করে তোলেন তিনি। তাঁকে ‘শাহেনশাহ-ই-কাওয়ালি’ বা কাওয়ালির সম্রাট বলা হয়।

১৯৪৮ সালের ১৩ অক্টোবর পাকিস্তানের এক কাওয়ালি সংগীত পরিবারে জন্ম নুসরাত ফতেহ আলী খানের। তাঁর বাবা ওস্তাদ ফতেহ আলী খানও একজন প্রখ্যাত কাওয়ালি গায়ক ছিলেন। ১৯৭১ সালে তাঁর চাচার মৃত্যুর পর তিনি পারিবারিক কাওয়ালি দলের প্রধান হন। তাঁর গাওয়া জনপ্রিয় কিছু গান হলো ‘তুমহে দিল লাগি ভুল জানি প্যারেগি’, ‘আলী মওলা’, ‘মাস্ত কালান্দার’, ‘আল্লাহু আল্লাহু’ ইত্যাদি। সংগীতে তাঁর অবদানের জন্য তিনি প্রাইড অব পারফরম্যান্স, পিটিভি লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৯৭ সালের ১৬ আগস্ট মাত্র ৪৮ বছর বয়সে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে মারা যান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নান্দনিক নাট্য সম্প্রদায়ের ৪৮ বছর পূর্তি

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘ক্লিওপেট্রা’ নাটকের দৃশ্য।	ছবি: সংগৃহীত
‘ক্লিওপেট্রা’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

নাট্যচর্চায় ৪৮ বছর পূর্ণ করল নান্দনিক নাট্য সম্প্রদায়। এ উপলক্ষে গতকাল ২০ অক্টোবর সোমবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে নাট্যদলটির ৪৮ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান করা হয়। অনুষ্ঠানে নান্দনিক নাট্যদলের নাট্যকর্মীদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দলের নাট্যকর্মীরা। কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়। সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেন নান্দনিকের সদস্যরা। আলোচনায় অংশ নেন আ মা ম হাসানুজ্জামান, আব্দুর রাজ্জাক, নিলুফার ওয়াহিদ পাপড়ি, মাহবুব রহমান, শায়েস্তা, বদরুদ্দোজা, শাবান খানসহ অনেকে।

১৯৭৭ সালের ১৬ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় নান্দনিক নাট্য সম্প্রদায়। দীর্ঘ থিয়েটার চর্চায় দলটি গুরুত্ব দিয়েছে ঐতিহাসিক ও রাজনীতি সচেতন বিভিন্ন মঞ্চনাটকের ওপর। নান্দনিকের প্রথম নাটক ‘আমার সোনার হরিণ চাই’। এরপর একে একে মঞ্চে এনেছে ‘রক্তকরবী’, ‘শাস্তি’, ‘নৃপতি’, ‘ক্লিওপেট্রা’, ‘মহাবিদ্রোহ’, ‘সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর’সহ অনেক প্রযোজনা।

নান্দনিক নাট্যদলের দলপ্রধান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আ মা ম হাসানুজ্জামান বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশ-বিদেশের নান্দনিক নাটক মঞ্চে আনা। আমরা চেয়েছি একটু বেছে বেছে কাজ করতে। তাই আমাদের প্রোডাকশন সংখ্যা কম, কিন্তু গুণগত মানে আমরা কখনোই ছাড় দিইনি। আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে থিয়েটার শুরু করেছিলাম, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে হয়তো তা শতভাগ পূরণ হয়নি, তবে আমার বিশ্বাস, তরুণ সদস্যরা দলকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

দলের সিনিয়র সদস্য বদরুদ্দোজা বলেন, ‘নান্দনিক একটা পরিবার, যেখানে সদস্যদের মানবিক মানুষ হিসেবে তৈরি করা হয়। থিয়েটার শুধু অভিনয় করা ও শেখার জন্য নয়, দেশপ্রেমিক মানুষ গড়ার জায়গা। ৪৮ বছর মঞ্চে কাজ করা একটা বিশাল অর্জন।’

দলটির প্রযোজনা ব্যবস্থাপক নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, ‘মঞ্চনাটকের পাশাপাশি সম্প্রতি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করছে নান্দনিক। সেখানে দলের সদস্যরা অভিনয় করছেন। এটা একটা বিরল দৃষ্টান্ত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় নতুন নির্দেশিকা, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও স্বস্তি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত