Ajker Patrika

বড্ড ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন সুমনদা

খায়রুল বাসার নির্ঝর
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২১, ১২: ২৪
বড্ড ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন সুমনদা

১৯৭৩ সাল। কলকাতা। গঙ্গার ধারে মশলামুড়ি খাচ্ছেন কবীর সুমন। বিকেল সম্ভবত। পাঁচ-ছয় বছরের এক ছেলে এল। খালি গা। ঢিলে হাফপ্যান্ট হাঁটুর নিচ অবধি ঝুলছে। নোংরা শরীরে যতখানি বিনয়, তার চেয়ে বেশি অসহায়ত্ব। বলল, ‘বাবু, ঠোঙাটা ফেলো না, ওটা আমি চাটব।’

কবীর সুমন লিখলেন—
‘খিদের কিন্তু সীমান্ত নেই, নেই চিতা নেই কবরটাও
যুদ্ধটাকেই চিতায় তোলো, যুদ্ধটাকেই কবর দাও
...’

দুই.

এর ঠিক বারো বছর পর ১৯৮৫ সালের ঘটনা। স্থান নিকারাগুয়া। মানাগুয়া শহরের পথে পথে হেঁটে বেড়াচ্ছেন কবীর সুমন। ‘তোমাকে চাই’ দিয়ে বাংলা গানের শরীর–মন পাল্টে দেওয়ার ঘটনা কিন্তু ঘটবে আরও সাত বছর পর। নিকারাগুয়া তখনো বয়ে বেড়াচ্ছে যুদ্ধের ক্ষত। ১০০ বছরের বঞ্চনার ক্ষত নিকারাগুয়ার শরীরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক কর্তৃত্বের ইতিহাস পাল্টে দিয়ে তরুণ বিপ্লবীরা, তথা সমগ্র কৃষক শ্রেণি স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়েছে এর বছর ছয়েক আগে।

কবীর সুমন যখন মানাগুয়ার গলি ধরে হাঁটছেন, তত দিনে বিগত শাসনের রেখে যাওয়া দারিদ্র্য আর ধ্বংসাবশেষ একটু একটু করে সেরে উঠছে। এক কিশোর বাতিল চাকা চালিয়ে খেলছে রাস্তায়। সুমন জিজ্ঞেস করলেন—তোমার দেশে একটা বিপ্লব হয়েছে, তুমি জানো?

‘হ্যাঁ।’
‘বিপ্লব কী?’
কিশোরটি ভাবল মুহূর্ত কয়েক। পবিত্র ভূমিতে পায়ের বুড়ো আঙুল ঘষতে ঘষতে বলল—সোই লা রেভোলুসিয়ন (আমিই বিপ্লব)।

‘আগুন দেখেছি আমি কত জানলায়
কত জানলার কাছে কাতারে কাতার
জমেছে মানুষ, দাবি গরাদ ভাঙার...’

কবীর সুমনের হাসপাতালে ভর্তির খবর সবার বুকেই একটা ধুকপুকানি তৈরি করেছিলতিন.

সাল ২০০৭। এবারের স্থান নন্দীগ্রাম। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইচ্ছা সেখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার। এর জন্য জমি দরকার। যেহেতু মসনদে উঠলে সমগ্র জমিন শাসনযন্ত্রের নিজস্ব উঠোন হয়ে যায়, ফলে তারা চাইল কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করতে। রুখে দাঁড়াল কৃষক, নিরন্ন, অসহায় মানুষ। যারা শাসকের কাছে কেবলই ভোট, কেবলই সংখ্যা। শাসক দল জোট বেঁধে প্রকাশ্যে তাদের খুন করল, গুম করল, ধর্ষণ করল। সঙ্গে অন্য দলগুলো ঢুকে পড়ল, যে যার মতো আখের গোছাতে। প্রতিবাদে শামিল কবীর সুমন। কলকাতা থেকে ৭০ মাইল দূরে; নন্দীগ্রাম।

এক কৃষকের বাড়ির উঠোনে বসে কথা বলছেন। শ্রোতার সারি থেকে একজন প্রবীণ এলেন। সাদা টুপি। সাদা দাঁড়ি। দীর্ঘদেহী। বললেন, ‘আমায় নামাজ পড়তে যেতে হবে। বেশি সময় নেই। শুনুন, আমি বেঁচে থাকলে আপনি ভাত পাবেন। তাই চাল–ডাল পাঠাবেন না আমাদের। একখানা এসএলআর (সেলফ লোডিং রাইফেল) দিন।’

‘আমি বেঁচে থাকলে আপনি ভাত পাবেন’—এই একটি বাক্য কবীর সুমনকে ভাবিয়েছিল বহু দিন, এখনো ভাবায়। এমন কত মুহূর্ত, কত মানুষ, কত হাহাকার তাঁর মাথার ভেতর খোদাই হয়ে আছে! তারপর ওই উত্তাল সময়ে একটি টিভি অনুষ্ঠানে তিনি বলছেন, ‘মাননীয় বন্ধুরা, আমি দীর্ঘকাল সাংবাদিকতা করেছিলাম। মাঝে বছর দশেক ভুল করে, পথ ভুল করে গানটাকে পেশা করেছিলাম। তার জন্য পচতেছি, পচতেছি, পচতেছি...’

কবীর সুমনের এই আক্ষেপের শানেনুজুল আমরা জানি। এসব লিখতে, মগজে রাখতে আমাদের ঘেন্না হয়। যে সমাজে সুমন জন্ম নিচ্ছেন এবং বেড়ে উঠছেন; সেখানেই তিনি দিনের পর দিন হয়েছেন অপমানিত-অপদস্ত। পরপর গানের শো বন্ধ হয়ে যায়। বাড়িতে টেলিফোনে আসে হুমকি ও গালাগাল। কথিত প্রগতিশীল পত্রিকাগুলো তার নামে ছাপায় ব্যঙ্গচিত্র ও মিথ্যের ফুলঝুরি।

অপরাধ?

তিনি খবরের কাগজ থেকে গান পেড়ে আনেন। চিকিৎসকের অবহেলায় যখন হাসপাতালে ছোট্ট পাপড়ি মারা যায়, তখন লেখেন—

‘পাপড়িটা বড় বোকা, হাসপাতালের যন্ত্র
খারাপ হয়েছে হোক না, দেখবি বাঁচবেই গণতন্ত্র’

যখন অনীতা দেওয়ানকে দিনে দুপুরে গণধর্ষণ করা হয় এবং বিচার নিয়ে চলে প্রহসন, কেবল কবীর সুমনই লেখেন তখন—

‘অনীতা দেওয়ান ক্ষমা করো, বড় বেকুবের মতো
গান গাইছি আমি আর কিছু পারি না বলে

কানোরিয়া শ্রমিক আন্দোলনে তাঁকে দেখা যায়। তাঁকে দেখা যায় সিঙ্গুরে; বিদ্রোহী জনতার মাঝখানে।

চার.

অপরাধই বটে!

শিল্পী কেন হিপোক্রেট হবেন না? কেন হবেন তিনি ‘রাজনৈতিক’? কেন ঠান্ডা ঘরে বসে মদের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বাজাবেন না ততধিক ঠান্ডা কোনো সুর, নিটোল প্রেমের? মহা অপরাধ!

ফলে আমরা, যারা নব্বইজুড়ে বেঁচে ছিলাম, এখনো আছি—তারা কতিপয়, এবং দেখা যায়, এই ‘কতিপয়’ও নেহাত কম নয়; তারা এই ‘অপরাধী’কে ভালোবাসি। এবং এই দুঃসময়ে, চরম আদর্শিক দীনতার দিনে, একটা গর্ব অন্তত করতে পারি—‘আমরা বেঁচে আছি কবীর সুমনের সময়ে’।

বাহাত্তর পেরিয়ে তিনি মাস তিনেক আগেই পা রেখেছেন তিয়াত্তরে। এখনো তিনি একই, অবিকল। অথচ কতজনই তো চোখের সামনে পাল্টে নিল নিজস্ব রং; শিবির; এককালে যারা মানুষের ছিলেন।

তিন মাস আগে তিয়াত্তরে পা রাখা কবীর সুমন এখনো প্রাণপ্রাচুর্যে অবিকলপাঁচ.

এবারের লড়াইটাও খুব ভালোভাবে লড়লেন কবীর সুমন।

দুই বাংলায় যাঁরা সুমনের গান শোনেন, ঘুণাক্ষরেও পছন্দ করেন বা করতেন কোনো এক সময়ে; দিন কয়েক আগে তাঁরা খানিকটা দুলে উঠেছিলেন। ২৮ জুন রাতে হঠাৎ খবর আসে—কবীর সুমন হাসপাতালে ভর্তি। ৭২ বছরের একটা মানুষ, এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে, চারদিক থেকে যখন কেবল নিখোঁজ সংবাদ ভেসে আসছে; কবীর সুমনের হাসপাতাল ভর্তির খবরটা তাই অনেকগুণ উদ্বেগের হয়ে ধরা দিয়েছিল।

তবে হাসপাতালের বেড তাঁকে বেশিক্ষণ শুইয়ে রাখতে পারেনি। এক দিনের মাথায় সুমন মেরুদণ্ড তুলে উঠে বসেছেন। সবার সঙ্গে গলা মিলিয়ে হেসেছেন। একটা প্রসঙ্গ টেনে অনেকক্ষণ ধরে গল্প করেছেন। ব্যবস্থাপত্রের সব জটিল টার্মকে থোড়াই কেয়ার করে গানওয়ালা কণ্ঠে তুলেছেন রাগ হংসধ্বনি।

ভক্তদের তাবৎ উৎকণ্ঠায় জল ছিটিয়ে হাসপাতাল থেকে এরই মধ্যে ছাড়া পেয়েছেন গানওয়ালা। তারপর ফিরেছেন কাজে, নিজের মতো করে। আগেই সে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন ফেসবুক স্ট্যাটাসে—‘ছেড়ে দিলেই বাড়ি চলে যাব। ফিরে যাব বাংলা খেয়াল অনুশীলন, রচনা ও শেখানোয়। সেটাই আমার বাকি জীবনের কাজ, ব্রত।’

সেটাই হোক। বাংলা গান আরও বহুদিন পাশে পাক তাঁকে। তবে এবার কিন্তু বড্ড ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন সুমনদা!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিচ্ছেদের গুঞ্জন উড়িয়ে পূর্ণিমা জানালেন, সুখে আছেন তাঁরা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৩২
আশফাকুর রহমান ও পূর্ণিমা
আশফাকুর রহমান ও পূর্ণিমা

হঠাৎ করে আলোচনায় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। তবে অভিনয় নয়, ব্যক্তিজীবন নিয়ে। কয়েক দিন ধরে শোনা যাচ্ছে, আশফাকুর রহমানের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্যজীবনে চলছে ভাঙনের সুর। দুজনের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে—এমন খবরও শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জল আর বেশি দূর গড়াতে না দিয়ে গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় পূর্ণিমা জানালেন, তাঁর সংসার ভাঙার খবর সত্য নয়। স্বামীর সঙ্গে সুখে আছেন তিনি। বিচ্ছেদের খবর তাঁকে বিস্মিত করেছে।

পূর্ণিমার বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠে তাঁর দেওয়া এক ফেসবুক পোস্ট থেকে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘মিথ্যা সম্পর্কের ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলার চেয়ে নিঃসঙ্গতা অনেক বেশি শান্ত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ।’ এরপরেই শুরু হয় গুঞ্জন।

বিষয়টি টের পেয়ে ২২ অক্টোবর স্বামীর সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করেন পূর্ণিমা। কিন্তু তাতেও থামছিল না গুঞ্জন। অবশেষে গতকাল বিষয়টি পরিষ্কার করেন অভিনেত্রী।

ফেসবুকে পূর্ণিমা লেখেন, ‘সুদিনে মানুষের বন্ধুর অভাব হয় না। এদের অধিকাংশই হচ্ছে সুযোগসন্ধানী কৃত্রিম বন্ধু। এরা সব সময় নিজের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যতিব্যস্ত থাকে। দুর্দিনে এদের খুঁজে পাওয়া ভার! কিছুদিন আগে আমার দেওয়া স্ট্যাটাসটি থেকে এমনটাই বোঝানো হয়েছিল। আসলে প্রতিটি মানুষের চারপাশে যা কিছু ঘটে, এসবকে কেন্দ্র করেই স্ট্যাটাসটা লেখা হয়েছিল। দিন শেষে আমিও একজন মানুষ। সবার মতো আমারও কমবেশি কাছের-দূরের মানুষ রয়েছে। এ কারণে আমাকেও সুসময়ের বন্ধু ও স্বার্থপরদের ফেস করতে হয়েছে। কিন্তু লেখাটির কিছু অংশ আগে-পিছে না বুঝে অনেকে আমার পারিবারিক জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেছে!’

তিনি আরও লেখেন, ‘কিছু সংবাদমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে সত্যতা নিশ্চিত না করে অনেকটা চটকদার শিরোনাম দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে, যা আমাকে ও আমার পরিবারকে বিস্মিত ও মর্মাহত করেছে। আমার দেওয়া স্ট্যাটাসের সঙ্গে পারিবারিক জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমরা আমাদের পরিবার ও সংসারজীবন নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি।’

২০২২ সালের ২৭ মে আশফাকুর রহমান রবিনকে বিয়ে করেন পূর্ণিমা। রবিন একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এর আগে ২০০৭ সালে আহমেদ জামাল ফাহাদকে বিয়ে করেছিলেন পূর্ণিমা। তাঁদের এক কন্যাসন্তান আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুসান থেকে ফিরে শুটিংয়ে মনোজ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
মনোজ প্রামাণিক। ছবি: সংগৃহীত
মনোজ প্রামাণিক। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র প্রযোজনাবিষয়ক কোর্স করতে গত মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলেন মনোজ প্রামাণিক। বুসান এশিয়ান ফিল্ম স্কুলের ‘প্রডিউসিং ট্র্যাক’ প্রোগ্রাম শেষ করে সাত মাস পর ২২ অক্টোবর দেশে ফিরেছেন তিনি। গতকাল অংশ নিয়েছেন একটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে। এটা শেষ করেই শুটিং করবেন দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্যসহ কয়েকটি নাটকের। মনোজ বলেন, ‘বুসানে সাতটি মাস অভিনয়টা খুব মিস করেছি। ওখানে থাকতেই এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে কথা হয়েছে। সাত মাস পর আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। খুব ভালো লাগছে।’

সাত মাসের এই কোর্স সম্পর্কে মনোজ বলেন, ‘এই কোর্সে মূলত প্রযোজনা বিষয়ে পড়াশোনা হয়েছে। এ ছাড়া প্র্যাকটিকালি শেখানো হয়েছে কীভাবে একটি সিনেমাকে মার্কেটে উপস্থাপন করতে হয়। বুসান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের যে মার্কেট আছে সেখানে আমাদের পিচিং করানো হয়। এটা খুব এক্সাইটিং ছিল। এ ছাড়া পড়াশোনার ধরন, শিক্ষক, বিষয়—সবই ভালো ছিল।’

মনোজ আরও বলেন, ‘এই কোর্সে এশিয়ার ১৫টি দেশ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। সবাই মিলে একসঙ্গে থাকা, রান্না করা, খাওয়া, ক্লাস অ্যাটেন্ড করা—মনে হচ্ছিল আবার ছাত্রজীবনে ফিরে গিয়েছি। আমাদের মধ্যে সংস্কৃতির দারুণ একটা আদান-প্রদান হয়েছে। ১৫টি দেশের নতুন বন্ধু পেয়েছি। এ এক বিশাল পাওয়া।’

অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনার সঙ্গে আগে থেকেই যুক্ত মনোজ। মনপাচিত্র নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে তাঁর। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‘সেয়ানা’ নামের সিনেমা নির্মাণের জন্য প্রযোজক হিসেবে অনুদান পেয়েছেন তিনি। এই কোর্সের অভিজ্ঞতা প্রযোজক হিসেবে অনেক কাজে দেবে বলে মনে করেন মনোজ। তিনি বলেন, ‘প্রযোজক হিসেবে কোর্সটি আমার অনেক উপকারে আসবে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। কীভাবে সারা বিশ্বের নির্মাতাদের সঙ্গে কমিউনিকেশন বিল্ডআপ করতে হয়, কীভাবে একটি প্রজেক্ট উপস্থাপন করতে হয়, ফান্ড কালেক্ট করতে হয়—এসব বিষয়ে এই কোর্সে জোর দেওয়া হয়েছে।’

মনোজ জানিয়েছেন, তাঁর সেয়ানা সিনেমার প্রি-প্রোডাকশনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। শিগগিরই অভিনয়শিল্পী চূড়ান্ত করে আগামী বছরের প্রথম ভাগে শুরু করতে চান শুটিং। সিনেমাটি পরিচালনা করবেন ইকবাল হাসান খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরশাদ ওয়ারসির পছন্দের ৩ সিরিজ

বিনোদন ডেস্ক
আরশাদ ওয়ারসির পছন্দের ৩ সিরিজ

বলিউড অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি নিজে কমেডি চরিত্র বেশি করেন। তবে দর্শক হিসেবে তাঁর পছন্দের শীর্ষে থাকে ক্রাইম ও থ্রিলার গল্প। সম্প্রতি দেখা তিনটি সিরিজের নাম জানালেন আরশাদ ওয়ারসি, ভক্তদের দেখার জন্যও সাজেস্ট করলেন।

‘মবল্যান্ড’ সিরিজের দৃশ্য
‘মবল্যান্ড’ সিরিজের দৃশ্য

মবল্যান্ড

রোনান বেনেট পরিচালিত ব্রিটিশ ক্রাইম ড্রামা সিরিজ ‘মবল্যান্ড’-এর কেন্দ্রে আছে দুটি পরিবার—দ্য হারিগানস ও দ্য স্টিভেনসন। সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা। নিজেদের সাম্রাজ্য বাঁচাতে, ক্রমবর্ধমান সংঘাত মোকাবিলা করতে হ্যারি দা সুজা নামের একজনকে নিয়োগ দেয় হারিগানস পরিবার। স্টিভেনসন পরিবারের সব রকমের হামলা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মাঠে নামে সে। মবল্যান্ড সিরিজের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম হার্ডি, পিয়ার্স ব্রসনান, হেলেন মিরেন প্রমুখ। গত ৩০ মার্চ সিরিজটি মুক্তি পেয়েছে প্যারামাউন্ট প্লাসে। মবল্যান্ড নিয়ে আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘দারুণ চিত্রনাট্য, অনবদ্য নির্মাণ। এই সিরিজে সবচেয়ে যেটা ভালো লেগেছে তা হলো, অভিনয়শিল্পীদের পারফরম্যান্স আর টানটান গল্প।’

‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজের দৃশ্য
‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজের দৃশ্য

ব্ল্যাক র‍্যাবিট

জ্যাক ও ভিন্স—দুই ভাইয়ের গল্প। এক ভাই নিউইয়র্ক শহরে রেস্টুরেন্ট চালায়। ব্ল্যাক র‍্যাবিট নামের রেস্টুরেন্টটি যখন জমজমাট, তখন একদিন হঠাৎ ফিরে আসে ভিন্সের ভাই জ্যাক। সে ঋণে জর্জরিত। জ্যাক আসার সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের বিপদও আসে। মিথ্যা, সহিংসতা, বিশ্বাসঘাতকতায় তাদের জীবন ধ্বংসের মুখোমুখি হয়। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে দুই ভাই। এ দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুড ল এবং জেসন বেটম্যান। নেটফ্লিক্সে ‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজটি প্রচার শুরু হয় ১৮ সেপ্টেম্বর। আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘দারুণভাবে তৈরি করা হয়েছে সিরিজটি। গল্প কোথাও গতি হারায়নি, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা ছিল।’

‘ওজার্ক’ সিরিজের দৃশ্য
‘ওজার্ক’ সিরিজের দৃশ্য

ওজার্ক

আমেরিকান ক্রাইম ড্রামা সিরিজ ‘ওজার্ক’। নেটফ্লিক্সে এই পর্যন্ত প্রচারিত হয়েছে চারটি সিজন। প্রতি সিজনে ১০টি করে পর্ব। তবে সবশেষ ২০২২ সালে প্রচারিত চতুর্থ সিজনে ১৪টি পর্ব ছিল। বড় অঙ্কের একটি অর্থ পাচারের পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে যাওয়ার পর অর্থ উপদেষ্টা মার্টি বার্ড ভিন্ন পথ অবলম্বন করে। স্ত্রীকে নিয়ে মিসৌরির ওকার্ড হ্রদ অঞ্চলে পাড়ি জমায়। সেখানে গিয়ে স্থানীয় মাফিয়া ও অপরাধীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে মার্টি বার্ড। আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘নির্মাতারা খুবই কৌশলী। প্রথম পর্ব এমন নাটকীয়ভাবে তৈরি করেছে যে বাকি পর্বগুলো দেখার আগ্রহ তৈরি হয়। প্রথম পর্ব যেভাবে মনোযোগ কেড়ে নেয়, তাতে পুরোটা না দেখে ওঠা কঠিন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সিনেমায় একসঙ্গে চঞ্চল-ফারিণ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
কলকাতায় একসঙ্গে ফারিণ ও চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
কলকাতায় একসঙ্গে ফারিণ ও চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ১০ বছরের বিরতি কাটিয়ে এ বছর বাংলা সিনেমা নির্মাণে ফিরেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। গত জুলাইয়ে মুক্তি পেয়েছে ‘ডিয়ার মা’। এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জয়া আহসান। এবার এই নির্মাতার সিনেমায় দেখা যাবে বাংলাদেশের দুই অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী ও তাসনিয়া ফারিণকে। এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন চঞ্চল ও ফারিণ।

ব্রাত্য বসুর ‘শেকড়’ সিনেমার শুটিং করতে গত মাসে পশ্চিমবঙ্গে গেছেন চঞ্চল চৌধুরী। গত শুক্রবার কোয়েল মল্লিকের ডাকে গিয়েছিলেন ‘স্বার্থপর’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে। সেখানে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ফারিণ। সেখানেই চঞ্চল জানান, তাঁরা দুজনেই সেদিন সিনেমা নিয়ে আলাপ করেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে। তবে আগে থেকে তাঁরা জানতেন না অনিরুদ্ধ তাঁদের একসঙ্গে ডেকেছেন। তাই একে অপরকে দেখে দুজনেই চমকে গিয়েছিলেন।

চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কেউ জানতাম না দুজনেই কলকাতায় আছি, পুরোটাই কাকতালীয়। সিনেমার শুটিং আর টোনিদা অর্থাৎ অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে একটি মিটিং করার জন্য আমি কলকাতায় আসি। আর ও (ফারিণ) এখানে টোনিদার সঙ্গে মিটিং করতে আসে। দুজনেই যাওয়ার পর দেখা হয় এবং তখন জানতে পারি দুজনেই এখানে আছি।’

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর পরিচালনায় দুজনকে একই সিনেমায় দেখা যাবে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে চঞ্চল বলেন, ‘সেটা এখনো নিশ্চিত না। তবে কথাবার্তা চলছে। সম্ভাবনা আছে। আশা করি আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’

চঞ্চলের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ফারিণকেও বলতে শোনা যায়, ‘কথা হচ্ছে। দেখা যাক। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’

এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় তাসনিয়া ফারিণের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে খুদে বার্তায় ফারিণ জানান, এ বিষয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে চান না তিনি।

টালিউড সিনেমা ‘আরও এক পৃথিবী’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় ফারিণের। প্রথম সিনেমাতেই প্রশংসিত হয় তাঁর অভিনয়। পেয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা পুরস্কার। এরপর বিপ্লব গোস্বামীর ‘পাত্রী চাই’ এবং অভিজিৎ সেনের ‘প্রজাপ্রতি ২’ সিনেমায় অভিনয়ের কথা ছিল ফারিণের। ভিসা জটিলতার কারণে দুটি সিনেমা থেকেই সরে আসেন তিনি।

গত বছর সৃজিত মুখার্জির ‘পদাতিক’ সিনেমা দিয়ে টালিউডে যাত্রা শুরু চঞ্চল চৌধুরীর। এতে তিনি অভিনয় করেন কিংবদন্তি নির্মাতা মৃণাল সেনের চরিত্রে। সম্প্রতি চঞ্চল শেষ করেছেন শেকড় সিনেমার শুটিং। তাঁর হাতে রয়েছে অমিতাভ ভট্টাচার্যের ‘ত্রিধারা’। এতে প্রথমবার চঞ্চলের সঙ্গে দেখা যাবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত