Ajker Patrika

রাসেল ও’নীল:...ফের দেখা হবে?

গুঞ্জন রহমান
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮: ৩৪
রাসেল ও’নীল:...ফের দেখা হবে?

ডিজিটাল খাতা খুলে বসে আছি, প্রতি শুক্রবারের মতো নিজের কলাম লিখব বলে। লিখতে পারছি না। একটা শব্দও টাইপ করতে পারিনি। ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে একটা সুইসাইড নোট। খানিক পরে ছেড়ে যাবেন যে দেহটাকে, তাকে কাটাছেঁড়া না করতে অনুরোধ করেছেন একজন গীতিকবি। এক জীবনের শেষ অনুরোধ। কবি কি আসলে দেহে থাকেন? রক্তমাংসের দেহকে কেটে-ছিঁড়ে জানা যায় কি কবিকে? জানা যায় মৃত্যুর কারণ? কবির কি মৃত্যু হয়? কবি বরাবর সত্য বলেন। কিন্তু কবি রাসেল ও’নীল শেষ কথাটা মিথ্যা লিখে গেলেন। লিখে গেলেন, ‘কেউ দায়ী নয়’।

বললেই হলো কেউ দায়ী নয়? মৃত্যু কোনো আনন্দভ্রমণ নয় যে স্বপ্রণোদিত হয়ে কেউ খুশিমনে টিকিট কেটে হাসতে হাসতে চেপে বসবে মৃত্যু-শকটে। অনন্যোপায় শেষযাত্রায় পা বাড়ানোর কঠোরতম সিদ্ধান্তটা নেওয়ার পেছনে কেউ তো নিশ্চয়ই দায়ী। কে সেটা? কিংবা, কে কে? জানা যাবে না। কোনো দিন আর জানা যাবে না। কারণ, কবি নিজেই চাননি জানাতে। আমরা তাঁর কে, যাকে উজাড় করে জানাবেন অন্তর-বাহির? আমরা কতটাই-বা জানতে চেয়েছি? জানতে চাই? একজন কবিকে? বিশেষ করে, গীতিকবিকে? তিনি যা জানান, তাও তো আমরা ‘তাঁর কথা’ বলে জানি না। জেনে নিই, কিংবা ধরে নিই এবং মেনে নিই অন্য কারও কথা বলে। যাঁর কণ্ঠে শুনি সেই গীতিকাব্য, তাঁর কথাই ভাবি সবচেয়ে বেশি। আর তারপর, নিজের কথা। আমার জন্যই গেয়েছেন আমার প্রিয় শিল্পী। কে লিখে দিলেন সেই গান–তিনি তখন অনেক তফাতে। তাই রাসেল ও’নীলের গান শোনেননি এমন শ্রোতা এই প্রজন্মে বিরল হলেও রাসেলেরই যে গান এগুলো—এই কথা তাদের কজন জানতেন? কজন জানেন! 

মৃত্যু অনেক কারণেই হতে পারে। তার মধ্যে সবচেয়ে তুচ্ছ কারণ আত্মহত্যা। যার কোনো মানে নেই। যার কোনো ব্যাখ্যা নেই, যার কোনো কারণও নেই বলে দাবি করি আমরা সবাই। আমিও করি। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে—যখন এটা ঘটে, মানে এই হৃদয়বিদারক, প্রায় অসম্ভব অঘটনটা...ঠিক ওই মুহূর্তে, ওই ব্যক্তিটির স্থানে নিজেকে স্থাপন করতে চেষ্টা করে দেখুন না! দেখবেন, তখন পৃথিবীতে আর কোনো কারণ নেই, নেই কোনো আশা, কোনো সম্ভাবনা, কোনো একটা হেল্পলাইন। নচেত তিনি সফল হন কী করে আত্মহননে? আমি নিজে একাধিকবার চেষ্টা করে দেখেছি, পারিনি এবং মেনে নিয়েছি—এই পৃথিবীতে আত্মহননের চেয়ে কঠিন কাজ আর নেই, আমার পক্ষে যা করা হয়তো সম্ভব হবে না কোনো দিন। 

তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল একবারই। সেটা সম্ভবত ২০০৫ কিংবা ২০০৬ সালে। খুবই সাধারণ একটা সাক্ষাৎ। পুরানা পল্টনে সংবাদ পত্রিকার অফিসে। তিনি তখন চাকরি করতেন সেখানে। সম্ভবত বিনোদন বিভাগে। আমাকে তাঁর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন আমার বন্ধু সুজন আরিফ। মাত্র কিছুদিন আগে আরিফের একটা নতুন গান তৈরি হয়েছিল আমার লিরিকে। সেই গান শুনে প্রশংসা করেছিলেন রাসেল ভাই। ‘ভালোবাসিরে’ শিরোনামের সেই গানটা আসলে পুরোটা আমার লেখা নয়। আরিফ নিজেই গানের মুখটুকু তৈরি করেছিল নিজের কথা ও সুরে। পরে অন্তরার সুর করে হৃদয় খান, আমি সেই সুরের ওপরে কথা সাজাই। রাসেল ভাই তখন পর্যন্ত মানতেন যে, সুর অনুসরণ করে ভালো লিরিক লেখা যায় না। আমি সুরের ওপরে লিরিক লিখি শুনে বকা দিয়েছিলেন। কিন্তু আরিফের সেই গানটা শুনে, সেটা ওভাবেই লেখা জেনে তিনি নিজের কথা ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘এইটা আমার ভালো লেগেছে। মেনে নিচ্ছি, পরে লিরিক লিখেও, মানে বাঁধা মিটারে কথা সাজিয়েও ভালো লিরিক লেখা যায়।’ কিন্তু আবার এটাও বলেছিলেন, ‘আপনাকে কবিতার মতো করে, অর্থাৎ সুরের আগে লিরিক লিখার প্র্যাকটিস ছেড়ে দিলে হবে না। কারণ, আপনি লিরিকে যা বলতে চান, তা পুরোপুরি বলতে পারবেন তখনই, যখন আপনার সামনে কোনো প্যারামিটার থাকবে না।’ 

রাসেল ভাই, আপনি লিরিকে যা বলতে চেয়েছিলেন, তা কি পুরোপুরি বলতে পেরেছিলেন? অন্তত যে লিরিকে লিখেছিলেন সেই কথাগুলো, একদম ভেতরের কথা, গহিনের কথা, সেই লিরিকগুলো কি শোনাতে পেরেছেন কোনো শ্রোতাকে? কোনো সুরকার কি সুর দিয়েছেন তাতে? গেয়েছেন কোনো গায়ক? ‘রাসেলের গান’ বা ‘রাসেল ও’নীলের গান হয়ে উঠতে পেরেছিল কি কোনো গান? এখনকার বাংলাদেশে কোনো গীতিকারই কি শেষ পর্যন্ত লিখতে পারে সেই কথাগুলো? প্যারামিটার ছাড়া একটা ধবধবে শাদা-শুভ্র গানের খাতা কেউ কি দিয়েছে কোনো গীতিকারকে? দেয় কেউ! 

আপনার মৃত্যু অন্য কোনো রোগে হলে বা কোনো রোগ ছাড়াই...হয়তো দুর্ঘটনায়, কিংবা ঘুমের মধ্যে স্বাভাবিক মৃত্যু, অথবা...ওই যে ডাক্তারেরা বলেন না, হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে...দেখুন, মানুষের শরীরে কতই না অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। আমরা বলি না মস্তিষ্কযন্ত্র, বলি না ফুসফুসযন্ত্র, বলি না বৃক্কযন্ত্র বা যকৃৎযন্ত্র; কিন্তু আমরা বলি হৃদ্‌যন্ত্র! হৃদয় ব্যাপারটা জড়িত যার সঙ্গে, তাকেই আমরা যন্ত্র বানিয়ে দিলাম! যন্ত্রের মতো চলতে থাকাই যার কাজ। কোনো মানবিক আবেগ স্পর্শ করবে না, কোনো ভাবালুতায় আক্রান্ত হওয়া যাবে না, সিঁড়ির নিচের কোনায় লুকানো পানির পাম্পের মতো একঘেয়ে চলতে থাকতে হবে আর রক্ত পাম্প করতে থাকতে হবে সারা শরীরে—এই হলো কাজ আমাদের হৃদয়ের। সেই যন্ত্র—কঠিন হৃদয়টা যদি সেইভাবে চালিয়ে যেতে দিতে পারতেন, যদি তাকে থামতে দিতেন নিজের নিয়মে, নিজের নির্ধারিত সময়ে, তার আগে আপনিই তাকে আগবাড়িয়ে থামিয়ে না দিতেন; এত কথা হয়তো উঠত না। মানুষ তো কতভাবেই নিজেকে ধ্বংস করে। নিজের অমিত সম্ভাবনা নষ্ট করে, প্রতিভার প্রতি অন্যায় করে, সৃজনশীলতা নষ্ট করে, নিজের স্বাধীনতা ধ্বংস করে, নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছার গলা টিপে মারে, নিজের কণ্ঠস্বরকে বাজেয়াপ্ত হতে দেয়...আপনি নিজের জীবনটাকেই শেষ করে দিলেন।...আপনার সাথে আমার ওই একটা দিনের পরিচয়, একদিনের আলাপ। তারপর আর কোনো দিন দেখা হয়নি, কথাও হয়নি। আমরা ফেসবুকেও ছিলাম না পরস্পরের ফ্রেন্ড লিস্টে। কিন্তু আপনার লেখা গান আমি শুনতাম। জানি না, আপনিও শুনতেন কিনা আমার লেখা গান। আমার শোনার উপযোগী গান আপনি লিখতেন নিয়মিত, আপনার শোনার উপযোগী গান আমি লিখতে পেরেছি কিনা জানি না, ওই একটা ছাড়া। একটা গোটাও নয়, অর্ধেকের একটু বেশি। সেই গানটা আপনার ভালো লেগেছিল। আর আমার ভালো লেগেছিল আপনার আন্তরিক ব্যবহার। অন্য অনেকের মতো কপট গাম্ভীর্য ধরে রেখে, কিংবা ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ ভদ্রতা দেখিয়ে ‘জি ভাই, ভালো আছেন’—টাইপ ফর্মালিটির ধার না ধেরে আপনি সরাসরি বলেছিলেন আপনার পছন্দ-অপছন্দের কথা। বয়সে এবং কাজের অভিজ্ঞতায় অল্প কয়েক বছরের অগ্রজ হলেও সুপরামর্শ দিতে আপনি কার্পণ্য করেননি, এবং তা করেছেন আন্তরিকতা নিয়েই। ভান-ভণিতা আমি দেখিনি আপনার আচরণে। 

আর ‘যদি না হয় কথা/জমে নীরবতা’, তাহলে কী হবে? আপনি বলেছিলেন, ‘ফের দেখা হবে।’ বলেছিলেন ‘চোখে রাখতে চোখ’, বলেছিলেন, ‘চোখে চোখে কথা হোক’। হায়, চোখই বুঁজে ফেললেন এত তাড়াতাড়ি? এই অবেলায়! বলে গেলেন, ‘যত দূরেই যাই/জানি না তো কবে/জেনে রেখো শুধু/ফের দেখা হবে।’ অথচ, এত দূরে চলে গেলেন, আর কবে দেখা হবে?...কিংবা, কে জানে, হতো বেশি দূরেও নয়, খুব দেরিও নেই! আমিই কি জানি, আমি কতটা দূরে আছি সেই শেষ গন্তব্যের?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিচ্ছেদের গুঞ্জন উড়িয়ে পূর্ণিমা জানালেন, সুখে আছেন তাঁরা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আশফাকুর রহমান ও পূর্ণিমা
আশফাকুর রহমান ও পূর্ণিমা

হঠাৎ করেই আলোচনায় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। তবে অভিনয় নয়, ব্যক্তিজীবন নিয়ে। কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, আশফাকুর রহমানের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্যজীবনে চলছে ভাঙনের সুর। দুজনের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে—এমন খবরও শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জল আর বেশি দূর গড়াতে না দিয়ে গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় পূর্ণিমা জানালেন, তাঁর সংসার ভাঙার খবর সত্য নয়। স্বামীর সঙ্গে সুখে আছেন তিনি। বিচ্ছেদের খবর তাঁকে বিস্মিত করেছে।

পূর্ণিমার বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠে তাঁর দেওয়া এক ফেসবুক পোস্ট থেকে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘মিথ্যা সম্পর্কের ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলার চেয়ে নিঃসঙ্গতা অনেক বেশি শান্ত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ।’ এরপরেই শুরু হয় গুঞ্জন।

বিষয়টি টের পেয়ে ২২ অক্টোবর স্বামীর সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করেন পূর্ণিমা। কিন্তু তাতেও থামছিল না গুঞ্জন। অবশেষে গতকাল বিষয়টি পরিষ্কার করেন অভিনেত্রী।

ফেসবুকে পূর্ণিমা লেখেন, ‘সুদিনে মানুষের বন্ধুর অভাব হয় না। এদের অধিকাংশই হচ্ছে সুযোগসন্ধানী কৃত্রিম বন্ধু। এরা সব সময়ই নিজের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যতিব্যস্ত থাকে। দুর্দিনে এদের খুঁজে পাওয়া ভার! কিছুদিন আগে আমার দেওয়া স্ট্যাটাসটি থেকে এমনটাই বোঝানো হয়েছিল। আসলে প্রতিটি মানুষের চারপাশে যা কিছু ঘটে, এসবকে কেন্দ্র করেই স্ট্যাটাসটা লেখা হয়েছিল। দিন শেষে আমিও একজন মানুষ। সবার মতো আমারও কমবেশি কাছের-দূরের মানুষ রয়েছে। এ কারণে আমাকেও সুসময়ের বন্ধু ও স্বার্থপরদের ফেস করতে হয়েছে। কিন্তু লেখাটির কিছু অংশ আগে-পিছে না বুঝে অনেকে আমার পারিবারিক জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেছে!’

তিনি আরও লেখেন, ‘কিছু সংবাদমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে সত্যতা নিশ্চিত না করে অনেকটা চটকদার শিরোনাম দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে, যা আমাকে ও আমার পরিবারকে বিস্মিত ও মর্মাহত করেছে। আমার দেওয়া স্ট্যাটাসের সঙ্গে পারিবারিক জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমরা আমাদের পরিবার ও সংসারজীবন নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি।’

২০২২ সালের ২৭ মে আশফাকুর রহমান রবিনকে বিয়ে করেন পূর্ণিমা। রবিন একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এর আগে ২০০৭ সালে আহমেদ জামাল ফাহাদকে বিয়ে করেছিলেন পূর্ণিমা। তাঁদের এক কন্যাসন্তান আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুসান থেকে ফিরে শুটিংয়ে মনোজ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
মনোজ প্রামাণিক। ছবি: সংগৃহীত
মনোজ প্রামাণিক। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র প্রযোজনাবিষয়ক কোর্স করতে গত মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলেন মনোজ প্রামাণিক। বুসান এশিয়ান ফিল্ম স্কুলের ‘প্রডিউসিং ট্র্যাক’ প্রোগ্রাম শেষ করে সাত মাস পর ২২ অক্টোবর দেশে ফিরেছেন তিনি। গতকাল অংশ নিয়েছেন একটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে। এটা শেষ করেই শুটিং করবেন দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্যসহ কয়েকটি নাটকের। মনোজ বলেন, ‘বুসানে সাতটি মাস অভিনয়টা খুব মিস করেছি। ওখানে থাকতেই এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে কথা হয়েছে। সাত মাস পর আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। খুব ভালো লাগছে।’

সাত মাসের এই কোর্স সম্পর্কে মনোজ বলেন, ‘এই কোর্সে মূলত প্রযোজনা বিষয়ে পড়াশোনা হয়েছে। এ ছাড়া প্র্যাকটিকালি শেখানো হয়েছে কীভাবে একটি সিনেমাকে মার্কেটে উপস্থাপন করতে হয়। বুসান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের যে মার্কেট আছে সেখানে আমাদের পিচিং করানো হয়। এটা খুব এক্সাইটিং ছিল। এ ছাড়া পড়াশোনার ধরন, শিক্ষক, বিষয়—সবই ভালো ছিল।’

মনোজ আরও বলেন, ‘এই কোর্সে এশিয়ার ১৫টি দেশ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। সবাই মিলে একসঙ্গে থাকা, রান্না করা, খাওয়া, ক্লাস অ্যাটেন্ড করা—মনে হচ্ছিল আবার ছাত্রজীবনে ফিরে গিয়েছি। আমাদের মধ্যে সংস্কৃতির দারুণ একটা আদান-প্রদান হয়েছে। ১৫টি দেশের নতুন বন্ধু পেয়েছি। এ এক বিশাল পাওয়া।’

অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনার সঙ্গে আগে থেকেই যুক্ত মনোজ। মনপাচিত্র নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে তাঁর। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‘সেয়ানা’ নামের সিনেমা নির্মাণের জন্য প্রযোজক হিসেবে অনুদান পেয়েছেন তিনি। এই কোর্সের অভিজ্ঞতা প্রযোজক হিসেবে অনেক কাজে দেবে বলে মনে করেন মনোজ। তিনি বলেন, ‘প্রযোজক হিসেবে কোর্সটি আমার অনেক উপকারে আসবে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। কীভাবে সারা বিশ্বের নির্মাতাদের সঙ্গে কমিউনিকেশন বিল্ডআপ করতে হয়, কীভাবে একটি প্রজেক্ট উপস্থাপন করতে হয়, ফান্ড কালেক্ট করতে হয়—এসব বিষয়ে এই কোর্সে জোর দেওয়া হয়েছে।’

মনোজ জানিয়েছেন, তাঁর সেয়ানা সিনেমার প্রি-প্রোডাকশনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। শিগগিরই অভিনয়শিল্পী চূড়ান্ত করে আগামী বছরের প্রথম ভাগে শুরু করতে চান শুটিং। সিনেমাটি পরিচালনা করবেন ইকবাল হাসান খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরশাদ ওয়ারসির পছন্দের ৩ সিরিজ

বিনোদন ডেস্ক
আরশাদ ওয়ারসির পছন্দের ৩ সিরিজ

বলিউড অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি নিজে কমেডি চরিত্র বেশি করেন। তবে দর্শক হিসেবে তাঁর পছন্দের শীর্ষে থাকে ক্রাইম ও থ্রিলার গল্প। সম্প্রতি দেখা তিনটি সিরিজের নাম জানালেন আরশাদ ওয়ারসি, ভক্তদের দেখার জন্যও সাজেস্ট করলেন।

‘মবল্যান্ড’ সিরিজের দৃশ্য
‘মবল্যান্ড’ সিরিজের দৃশ্য

মবল্যান্ড

রোনান বেনেট পরিচালিত ব্রিটিশ ক্রাইম ড্রামা সিরিজ ‘মবল্যান্ড’-এর কেন্দ্রে আছে দুটি পরিবার—দ্য হারিগানস ও দ্য স্টিভেনসন। সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা। নিজেদের সাম্রাজ্য বাঁচাতে, ক্রমবর্ধমান সংঘাত মোকাবিলা করতে হ্যারি দা সুজা নামের একজনকে নিয়োগ দেয় হারিগানস পরিবার। স্টিভেনসন পরিবারের সব রকমের হামলা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মাঠে নামে সে। মবল্যান্ড সিরিজের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম হার্ডি, পিয়ার্স ব্রসনান, হেলেন মিরেন প্রমুখ। গত ৩০ মার্চ সিরিজটি মুক্তি পেয়েছে প্যারামাউন্ট প্লাসে। মবল্যান্ড নিয়ে আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘দারুণ চিত্রনাট্য, অনবদ্য নির্মাণ। এই সিরিজে সবচেয়ে যেটা ভালো লেগেছে তা হলো, অভিনয়শিল্পীদের পারফরম্যান্স আর টানটান গল্প।’

‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজের দৃশ্য
‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজের দৃশ্য

ব্ল্যাক র‍্যাবিট

জ্যাক ও ভিন্স—দুই ভাইয়ের গল্প। এক ভাই নিউইয়র্ক শহরে রেস্টুরেন্ট চালায়। ব্ল্যাক র‍্যাবিট নামের রেস্টুরেন্টটি যখন জমজমাট, তখন একদিন হঠাৎ ফিরে আসে ভিন্সের ভাই জ্যাক। সে ঋণে জর্জরিত। জ্যাক আসার সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের বিপদও আসে। মিথ্যা, সহিংসতা, বিশ্বাসঘাতকতায় তাদের জীবন ধ্বংসের মুখোমুখি হয়। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে দুই ভাই। এ দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুড ল এবং জেসন বেটম্যান। নেটফ্লিক্সে ‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজটি প্রচার শুরু হয় ১৮ সেপ্টেম্বর। আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘দারুণভাবে তৈরি করা হয়েছে সিরিজটি। গল্প কোথাও গতি হারায়নি, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা ছিল।’

‘ওজার্ক’ সিরিজের দৃশ্য
‘ওজার্ক’ সিরিজের দৃশ্য

ওজার্ক

আমেরিকান ক্রাইম ড্রামা সিরিজ ‘ওজার্ক’। নেটফ্লিক্সে এই পর্যন্ত প্রচারিত হয়েছে চারটি সিজন। প্রতি সিজনে ১০টি করে পর্ব। তবে সবশেষ ২০২২ সালে প্রচারিত চতুর্থ সিজনে ১৪টি পর্ব ছিল। বড় অঙ্কের একটি অর্থ পাচারের পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে যাওয়ার পর অর্থ উপদেষ্টা মার্টি বার্ড ভিন্ন পথ অবলম্বন করে। স্ত্রীকে নিয়ে মিসৌরির ওকার্ড হ্রদ অঞ্চলে পাড়ি জমায়। সেখানে গিয়ে স্থানীয় মাফিয়া ও অপরাধীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে মার্টি বার্ড। আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘নির্মাতারা খুবই কৌশলী। প্রথম পর্ব এমন নাটকীয়ভাবে তৈরি করেছে যে বাকি পর্বগুলো দেখার আগ্রহ তৈরি হয়। প্রথম পর্ব যেভাবে মনোযোগ কেড়ে নেয়, তাতে পুরোটা না দেখে ওঠা কঠিন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সিনেমায় একসঙ্গে চঞ্চল-ফারিণ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
কলকাতায় একসঙ্গে ফারিণ ও চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
কলকাতায় একসঙ্গে ফারিণ ও চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ১০ বছরের বিরতি কাটিয়ে এ বছর বাংলা সিনেমা নির্মাণে ফিরেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। গত জুলাইয়ে মুক্তি পেয়েছে ‘ডিয়ার মা’। এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জয়া আহসান। এবার এই নির্মাতার সিনেমায় দেখা যাবে বাংলাদেশের দুই অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী ও তাসনিয়া ফারিণকে। এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন চঞ্চল ও ফারিণ।

ব্রাত্য বসুর ‘শেকড়’ সিনেমার শুটিং করতে গত মাসে পশ্চিমবঙ্গে গেছেন চঞ্চল চৌধুরী। গত শুক্রবার কোয়েল মল্লিকের ডাকে গিয়েছিলেন ‘স্বার্থপর’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে। সেখানে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ফারিণ। সেখানেই চঞ্চল জানান, তাঁরা দুজনেই সেদিন সিনেমা নিয়ে আলাপ করেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে। তবে আগে থেকে তাঁরা জানতেন না অনিরুদ্ধ তাঁদের একসঙ্গে ডেকেছেন। তাই একে অপরকে দেখে দুজনেই চমকে গিয়েছিলেন।

চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কেউ জানতাম না দুজনেই কলকাতায় আছি, পুরোটাই কাকতালীয়। সিনেমার শুটিং আর টোনিদা অর্থাৎ অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে একটি মিটিং করার জন্য আমি কলকাতায় আসি। আর ও (ফারিণ) এখানে টোনিদার সঙ্গে মিটিং করতে আসে। দুজনেই যাওয়ার পর দেখা হয় এবং তখন জানতে পারি দুজনেই এখানে আছি।’

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর পরিচালনায় দুজনকে একই সিনেমায় দেখা যাবে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে চঞ্চল বলেন, ‘সেটা এখনো নিশ্চিত না। তবে কথাবার্তা চলছে। সম্ভাবনা আছে। আশা করি আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’

চঞ্চলের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ফারিণকেও বলতে শোনা যায়, ‘কথা হচ্ছে। দেখা যাক। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’

এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় তাসনিয়া ফারিণের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে খুদে বার্তায় ফারিণ জানান, এ বিষয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে চান না তিনি।

টালিউড সিনেমা ‘আরও এক পৃথিবী’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় ফারিণের। প্রথম সিনেমাতেই প্রশংসিত হয় তাঁর অভিনয়। পেয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা পুরস্কার। এরপর বিপ্লব গোস্বামীর ‘পাত্রী চাই’ এবং অভিজিৎ সেনের ‘প্রজাপ্রতি ২’ সিনেমায় অভিনয়ের কথা ছিল ফারিণের। ভিসা জটিলতার কারণে দুটি সিনেমা থেকেই সরে আসেন তিনি।

গত বছর সৃজিত মুখার্জির ‘পদাতিক’ সিনেমা দিয়ে টালিউডে যাত্রা শুরু চঞ্চল চৌধুরীর। এতে তিনি অভিনয় করেন কিংবদন্তি নির্মাতা মৃণাল সেনের চরিত্রে। সম্প্রতি চঞ্চল শেষ করেছেন শেকড় সিনেমার শুটিং। তাঁর হাতে রয়েছে অমিতাভ ভট্টাচার্যের ‘ত্রিধারা’। এতে প্রথমবার চঞ্চলের সঙ্গে দেখা যাবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত