Ajker Patrika

নভেরার রিকশা গার্ল হয়ে ওঠা

মীর রাকিব হাসান
নভেরার রিকশা গার্ল হয়ে ওঠা

ঢাকা: প্রথম ছবি ‘আয়নাবাজি’ নির্মাণ করেই হইচই ফেলে দিয়েছিলেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী। এরপর কেটে গেছে প্রায় পাঁচ বছর। এবার আসছেন নিজের দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘রিকশা গার্ল’ নিয়ে। গত মঙ্গলবার রাতে ‘রিকশা গার্ল’–এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেলার প্রকাশিত হয়েছে। সোয়া দুই মিনিটের ট্রেলারটিতে পাওয়া গেছে দারুণ এক গল্পের আভাস। সেই সঙ্গে চমৎকার দৃশ্য, রং মুগ্ধ করবে যেকোনো সিনেমাপ্রেমীকে।

ল্পীমনা নারী নাঈমার গল্প ‘রিকশা গার্ল’। অন্তত ট্রেলারে তেমনই ইঙ্গিত। সোয়া দুই মিনিটের ট্রেলারে দেখা যায়, নাঈমার কাছে ছবি আঁকা ভীষণ পছন্দের। কিন্তু দরিদ্র সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার বাবা হঠাৎ একদিন অসুস্থ হলে সবকিছু পাল্টে যায়। ছবি এঁকে যেহেতু পয়সা পাওয়া যায় না, তাই বাধ্য হয়ে সেই নাঈমা রাস্তায় রিকশা নিয়ে বের হয়। তাকে সম্মুখীন হতে হয় নানা জটিলতার।

‘রিকশা গার্ল’ সিনেমায় নভেরা রহমানমূল চরিত্র নাঈমার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নভেরা রহমান। পুরো ট্রেলারে উজ্জ্বল উপস্থিতি তাঁর। সেই সঙ্গে তাঁর মায়ের চরিত্রে দেখা যায় মোমেনা চৌধুরী ও বাবার চরিত্রে নরেশ ভুঁইয়াকে। এটি আমেরিকা ও বাংলাদেশের প্রথম যৌথ প্রযোজনায় কোনো পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।

নভেরা রহমানের বয়স যখন চার মাস, তখন তাঁর মা মোমেনা চৌধুরী অভিনীত একটা নাটক চলছিল ‘দূরে কোথাও’। সেটাতে মোমেনা চৌধুরীর বাচ্চার চরিত্র করার জন্য আগে থেকেই একটা বাচ্চা ঠিক করা ছিল। কিন্তু সেই বাচ্চাটা সেটে আসতে পারেনি। বাচ্চাটা আমেরিকায় চলে গিয়েছিল। এমন একটা সমস্যার কারণে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো নভেরার।

‘রিকশা গার্ল’ সিনেমায় নভেরা রহমানমায়ের কোলেই প্রথম কাজ। প্রথম দৃশ্যটাই মা-মেয়ের কেমিস্ট্রি ভালো ছিল বলে দৃশ্যটা খুব ভালো হয়েছে। তখন এতই ছোট ছিলেন যে অনেক আত্মীয়ও তখনো তাঁকে সামনে থেকে দেখেননি। গ্রামের বাড়ি বগুড়া থেকে তাঁরাও প্রথমবার বিটিভিতে দেখলেন। টেলিভিশনে দেখেই তাঁরা বুঝে গেছেন যে এই বাচ্চাটা মোমেনার মেয়ে। নাহয় এত ভালো কেমিস্ট্রি হওয়ার কথা নয় এই বয়সে।

তারপর থেকে শিশুশিল্পী হিসেবে অনেক কাজ করা হয়েছে। ‘পাখি সব করে রব’, ‘একান্নবর্তী’র মতো আরও অনেক নাটকে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করা হয়েছে। মা আরণ্যকে থাকায় মঞ্চের ব্যাকস্টেজেই বড় হয়েছেন নভেরা। এমনও হয়েছে ট্রাংকের ওপর ঘুম পাড়িয়ে শো করতে যেতেন মা মোমেনা।

সেই জায়গা থেকে থিয়েটার রক্তের মধ্যেই আছে। চোখের সামনে থিয়েটারকে একদম ভেতর থেকে দেখেছি। আরণ্যকের জন্য আমার অভিনয় বা চিন্তাভাবনার বিকাশটা হয়েছে। কারণ, সংক্রান্তি দেখে বড় হয়েছি। এমনও হয়েছে সংক্রান্তি, ময়ূর সিংহাসন–এর সংলাপ আমার মুখস্থ থাকত। এত নাটক দেখেছি এই দলের!

নভেরা রহমান, ‘রিকশা গার্ল’ অভিনেত্রী

তবে ছোটবেলা থেকে কখনোই চিন্তা ছিল না অভিনেত্রী হবেন। বড় হয়ে আর্কিওলজিস্ট হওয়ারই ভাবনা ছিল। ইতিহাস নিয়ে চিন্তাভাবনা ছিল মাথায়। কিন্তু সেটা আর শেষ পর্যন্ত হয়নি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন গেলেন তখন খুব শখ করে একটা থিয়েটার কোর্স নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কোর্সটা করে এতটা ভালো লাগল, মনে হলো আমি ওই জায়গাটাতেই থাকতে পারি। ‘এর মধ্যে আমি কানাডায় গিয়েছিলাম থিয়েটার আর ইকোনমিকসে পড়াশোনার জন্য। আলাদাভাবে দুটি বিষয়ের ওপর ডিপ্লোমা করা হচ্ছিল। থিয়েটারটা শেষ করে ইকোনমিকস আর শেষ করা হয়নি। সেটা এখন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে কন্টিনিউ করছি।’ বললেন নভেরা।

কানাডায় গিয়ে যখন থিয়েটার করা শুরু করলাম। সেখান থেকে উৎসাহ পেলাম। ওখানকার সবাই বলত, তোমার অভিনয়টা ভালোই হচ্ছে। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম অভিনয়টাকে প্রফেশন হিসেবে নিতে পারি। ওভাবে কানাডায় একটা থিয়েটার কোম্পানির সঙ্গে কাজ করেছি। আমার ট্রেনিংটা ওখান থেকেই নেওয়া।

নভেরা রহমান, ‘রিকশা গার্ল’ অভিনেত্রী

নভেরা রহমানএকটা পর্যায়ে কানাডায় আর মন টিকল না। ভাবলেন, একটা সেমিস্টার অফ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ঘুরে আসি। সেই এক সেমিস্টারের ব্রেক নিতে এসেই পরিচয় হয় পরিচালক রুবাইয়াত হোসেনের সঙ্গে। রুবাইয়াত অডিশন নিচ্ছেলেন তাঁর সিনেমা ‘মেড ইন বাংলাদেশ’–এর জন্য। সেখানে অডিশন দিতেই টিকে গেলেন। সেখানে অভিনয় করলেন। তারপর থেকে বাংলাদেশেই স্থায়ী হয়ে গেলেন। মেড ইন বাংলাদেশের পোস্ট প্রোডাকশন শেষ। মেড ইন বাংলাদেশ গার্মেন্টসের কর্মীদের স্ট্রাগল নিয়ে ছবিটি। ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। তাঁর বান্ধবীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

এর আগেও মান্নান হীরার ‘একাত্তরের ক্ষুধিরাম’ সিনেমায় কাজ করেছেন। সেখানে মাত্র দুটি দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। নতুন একজন হিন্দু বউ, তাঁকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে যাবে। ওই দৃশ্যটা এত ভালো হয়েছিল, যার জন্য মান্নান হীরা সিনেমায় তাঁর জন্য আরেকটা দৃশ্য রেখেছিলেন। যেটা ছিল সিনেমায় প্রথম কাজ। তারপর মেড ইন বাংলাদেশে কাজ করা।

সেটে গিয়ে দেখি ইয়ং একজন মেয়ে সেটে বসগিরি করছেন। সেটা আমার খুবই ভালো লেগেছিল। সিনেমাটির ডিরেক্টর, সিনেমাটোগ্রাফি, চিফ এডি, সাউন্ডে যে ছিলেন সবাই নারী। আমরা পাঁচজন নারী অভিনয় করেছি মূল চরিত্রে। অনেক নারীর দক্ষতায় সিনেমাটি নির্মাণ হয়েছে।

নভেরা রহমান, ‘রিকশা গার্ল’ অভিনেত্রী

এরপর শঙ্খ দাসগুপ্তর ‘সুন্দর চান’ নামের একটি শর্টফিল্মে অভিনয় করেছেন। সিনেমায় একজন পতিতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। পতিতা ও তাঁর বানরকে নিয়ে গল্পটা। ‘অভিজ্ঞতটা ক্রেজি ছিল। এই চরিত্রের জন্য নিজেকে তৈরি করতে হয়েছে। এই শর্টফিল্মের শুটিং হয়েছে দৌলতদিয়ায়। শুটিংয়ের আগে সেখানে গিয়ে ওখানকার পতিতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওখানে থেকেছি, যা আমার জন্য নতুন একটা অভিজ্ঞতা ছিল।’

মা মোমেনা চৌধুরীর সঙ্গে নভেরাওটা করার আগেই ‘রিকশা গার্ল’র কাস্টিং হয়ে গিয়েছিল। বলেন, ‘মুক্তির আগে মুখ খুলতে চাইছি না। অমিতাভ ভাই কিন্তু পুরা দেশে বড় একটা অ্যানাউন্স করেছিলেন, তুমি কি অমিতাভ রেজার পরের সিনেমায় কাজ করতে চাও? ওই পোস্টার দিয়ে ৫০ থেকে ৬০টি মেয়ের অডিশন নিয়েছেন। এর মধ্যেই আমি একজন ছিলাম। এর আগে তাঁর সঙ্গে আড়ং দুধের একটি টিভিসিতে কাজ করেছি। ওই কাজটা করার পর হয়তো তাঁর পছন্দ হয়েছিল। তবে তার চেয়ে অডিশনের পর প্রোডিউসাররা আমাকে বেশ পছন্দ করেছেন শুনেছি। আমাদের প্রোডিউসার হলেন আমেরিকান। সেভাবেই ছবিটিতে রাজি হওয়া।’

আমি অনেক গবেষণা করেছি। আমি অনেকবার ফিল্ডে গিয়েছি। ফিল্ডে গিয়ে অনেকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। রিকশা গার্লের জন্য আমার অনেক মানুষ দেখতে হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই আমার মানুষ দেখতে ভালো লাগে। বাসে বসে মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। রিকশা গার্লের জন্য ঢাকায় অনেক ঘুরেছি।

নভেরা রহমান, ‘রিকশা গার্ল’ অভিনেত্রী

তবে নভেরার ভীষণ আগ্রহ ক্যামেরার পেছনে কাজ করার। ‘“মেড ইন বাংলাদেশ” করার পরপরই আমার মনে হলো ফিল্ম মেকিং করব। এখনো আমার ইচ্ছে আছে ক্যামেরার পেছনে কাজ করার। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই আফসানা মিমির প্রোডাকশনে সহকারী হিসেবে কাজ করতে ঢুকি। ইন্টার্ন হিসেবে ঢুকে প্রায় প্রধান সহকারী হয়ে গিয়েছিলাম। তা ছাড়া কানাডায় কস্টিউম নিয়েও পড়া হয়েছিল। এরপর দেশে এসে মায়ের “শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটার” কোম্পানির কস্টিউম ও মিউজিক্যাল পার্ট দেখতাম। ঢাকার বাইরে গিয়ে কাজ করতাম, যেটা আমার নিজের ব্যস্ততায় এখন আর হচ্ছে না।’

নতুন একটা রেকর্ড লেভেলের জন্য কাজ করছেন। রেকর্ড লেভেলটার নাম হচ্ছে ‘দ্য মাদারশিপ’। ‘আমরা নতুন ব্যান্ডকে প্রকাশ করি। মাত্র শুরু করলাম আমাদের যাত্রা। ইতিমধ্যে নতুন কয়েকটি ব্যান্ড ও সলো ভালো আর্টিস্ট পেয়েছি আমরা। খুব শিগগিরই বড় পরিসরে আত্মপ্রকাশ করব।’

দেখুন ‘রিকশা গার্ল’ সিনেমার ট্রেলার:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিচ্ছেদের গুঞ্জন উড়িয়ে পূর্ণিমা জানালেন, সুখে আছেন তাঁরা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আশফাকুর রহমান ও পূর্ণিমা
আশফাকুর রহমান ও পূর্ণিমা

হঠাৎ করেই আলোচনায় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। তবে অভিনয় নয়, ব্যক্তিজীবন নিয়ে। কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, আশফাকুর রহমানের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্যজীবনে চলছে ভাঙনের সুর। দুজনের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে—এমন খবরও শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জল আর বেশি দূর গড়াতে না দিয়ে গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় পূর্ণিমা জানালেন, তাঁর সংসার ভাঙার খবর সত্য নয়। স্বামীর সঙ্গে সুখে আছেন তিনি। বিচ্ছেদের খবর তাঁকে বিস্মিত করেছে।

পূর্ণিমার বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠে তাঁর দেওয়া এক ফেসবুক পোস্ট থেকে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘মিথ্যা সম্পর্কের ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলার চেয়ে নিঃসঙ্গতা অনেক বেশি শান্ত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ।’ এরপরেই শুরু হয় গুঞ্জন।

বিষয়টি টের পেয়ে ২২ অক্টোবর স্বামীর সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করেন পূর্ণিমা। কিন্তু তাতেও থামছিল না গুঞ্জন। অবশেষে গতকাল বিষয়টি পরিষ্কার করেন অভিনেত্রী।

ফেসবুকে পূর্ণিমা লেখেন, ‘সুদিনে মানুষের বন্ধুর অভাব হয় না। এদের অধিকাংশই হচ্ছে সুযোগসন্ধানী কৃত্রিম বন্ধু। এরা সব সময়ই নিজের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যতিব্যস্ত থাকে। দুর্দিনে এদের খুঁজে পাওয়া ভার! কিছুদিন আগে আমার দেওয়া স্ট্যাটাসটি থেকে এমনটাই বোঝানো হয়েছিল। আসলে প্রতিটি মানুষের চারপাশে যা কিছু ঘটে, এসবকে কেন্দ্র করেই স্ট্যাটাসটা লেখা হয়েছিল। দিন শেষে আমিও একজন মানুষ। সবার মতো আমারও কমবেশি কাছের-দূরের মানুষ রয়েছে। এ কারণে আমাকেও সুসময়ের বন্ধু ও স্বার্থপরদের ফেস করতে হয়েছে। কিন্তু লেখাটির কিছু অংশ আগে-পিছে না বুঝে অনেকে আমার পারিবারিক জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেছে!’

তিনি আরও লেখেন, ‘কিছু সংবাদমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে সত্যতা নিশ্চিত না করে অনেকটা চটকদার শিরোনাম দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে, যা আমাকে ও আমার পরিবারকে বিস্মিত ও মর্মাহত করেছে। আমার দেওয়া স্ট্যাটাসের সঙ্গে পারিবারিক জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমরা আমাদের পরিবার ও সংসারজীবন নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি।’

২০২২ সালের ২৭ মে আশফাকুর রহমান রবিনকে বিয়ে করেন পূর্ণিমা। রবিন একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এর আগে ২০০৭ সালে আহমেদ জামাল ফাহাদকে বিয়ে করেছিলেন পূর্ণিমা। তাঁদের এক কন্যাসন্তান আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুসান থেকে ফিরে শুটিংয়ে মনোজ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
মনোজ প্রামাণিক। ছবি: সংগৃহীত
মনোজ প্রামাণিক। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র প্রযোজনাবিষয়ক কোর্স করতে গত মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলেন মনোজ প্রামাণিক। বুসান এশিয়ান ফিল্ম স্কুলের ‘প্রডিউসিং ট্র্যাক’ প্রোগ্রাম শেষ করে সাত মাস পর ২২ অক্টোবর দেশে ফিরেছেন তিনি। গতকাল অংশ নিয়েছেন একটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে। এটা শেষ করেই শুটিং করবেন দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্যসহ কয়েকটি নাটকের। মনোজ বলেন, ‘বুসানে সাতটি মাস অভিনয়টা খুব মিস করেছি। ওখানে থাকতেই এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে কথা হয়েছে। সাত মাস পর আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। খুব ভালো লাগছে।’

সাত মাসের এই কোর্স সম্পর্কে মনোজ বলেন, ‘এই কোর্সে মূলত প্রযোজনা বিষয়ে পড়াশোনা হয়েছে। এ ছাড়া প্র্যাকটিকালি শেখানো হয়েছে কীভাবে একটি সিনেমাকে মার্কেটে উপস্থাপন করতে হয়। বুসান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের যে মার্কেট আছে সেখানে আমাদের পিচিং করানো হয়। এটা খুব এক্সাইটিং ছিল। এ ছাড়া পড়াশোনার ধরন, শিক্ষক, বিষয়—সবই ভালো ছিল।’

মনোজ আরও বলেন, ‘এই কোর্সে এশিয়ার ১৫টি দেশ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। সবাই মিলে একসঙ্গে থাকা, রান্না করা, খাওয়া, ক্লাস অ্যাটেন্ড করা—মনে হচ্ছিল আবার ছাত্রজীবনে ফিরে গিয়েছি। আমাদের মধ্যে সংস্কৃতির দারুণ একটা আদান-প্রদান হয়েছে। ১৫টি দেশের নতুন বন্ধু পেয়েছি। এ এক বিশাল পাওয়া।’

অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনার সঙ্গে আগে থেকেই যুক্ত মনোজ। মনপাচিত্র নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে তাঁর। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‘সেয়ানা’ নামের সিনেমা নির্মাণের জন্য প্রযোজক হিসেবে অনুদান পেয়েছেন তিনি। এই কোর্সের অভিজ্ঞতা প্রযোজক হিসেবে অনেক কাজে দেবে বলে মনে করেন মনোজ। তিনি বলেন, ‘প্রযোজক হিসেবে কোর্সটি আমার অনেক উপকারে আসবে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। কীভাবে সারা বিশ্বের নির্মাতাদের সঙ্গে কমিউনিকেশন বিল্ডআপ করতে হয়, কীভাবে একটি প্রজেক্ট উপস্থাপন করতে হয়, ফান্ড কালেক্ট করতে হয়—এসব বিষয়ে এই কোর্সে জোর দেওয়া হয়েছে।’

মনোজ জানিয়েছেন, তাঁর সেয়ানা সিনেমার প্রি-প্রোডাকশনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। শিগগিরই অভিনয়শিল্পী চূড়ান্ত করে আগামী বছরের প্রথম ভাগে শুরু করতে চান শুটিং। সিনেমাটি পরিচালনা করবেন ইকবাল হাসান খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরশাদ ওয়ারসির পছন্দের ৩ সিরিজ

বিনোদন ডেস্ক
আরশাদ ওয়ারসির পছন্দের ৩ সিরিজ

বলিউড অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি নিজে কমেডি চরিত্র বেশি করেন। তবে দর্শক হিসেবে তাঁর পছন্দের শীর্ষে থাকে ক্রাইম ও থ্রিলার গল্প। সম্প্রতি দেখা তিনটি সিরিজের নাম জানালেন আরশাদ ওয়ারসি, ভক্তদের দেখার জন্যও সাজেস্ট করলেন।

‘মবল্যান্ড’ সিরিজের দৃশ্য
‘মবল্যান্ড’ সিরিজের দৃশ্য

মবল্যান্ড

রোনান বেনেট পরিচালিত ব্রিটিশ ক্রাইম ড্রামা সিরিজ ‘মবল্যান্ড’-এর কেন্দ্রে আছে দুটি পরিবার—দ্য হারিগানস ও দ্য স্টিভেনসন। সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা। নিজেদের সাম্রাজ্য বাঁচাতে, ক্রমবর্ধমান সংঘাত মোকাবিলা করতে হ্যারি দা সুজা নামের একজনকে নিয়োগ দেয় হারিগানস পরিবার। স্টিভেনসন পরিবারের সব রকমের হামলা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মাঠে নামে সে। মবল্যান্ড সিরিজের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম হার্ডি, পিয়ার্স ব্রসনান, হেলেন মিরেন প্রমুখ। গত ৩০ মার্চ সিরিজটি মুক্তি পেয়েছে প্যারামাউন্ট প্লাসে। মবল্যান্ড নিয়ে আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘দারুণ চিত্রনাট্য, অনবদ্য নির্মাণ। এই সিরিজে সবচেয়ে যেটা ভালো লেগেছে তা হলো, অভিনয়শিল্পীদের পারফরম্যান্স আর টানটান গল্প।’

‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজের দৃশ্য
‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজের দৃশ্য

ব্ল্যাক র‍্যাবিট

জ্যাক ও ভিন্স—দুই ভাইয়ের গল্প। এক ভাই নিউইয়র্ক শহরে রেস্টুরেন্ট চালায়। ব্ল্যাক র‍্যাবিট নামের রেস্টুরেন্টটি যখন জমজমাট, তখন একদিন হঠাৎ ফিরে আসে ভিন্সের ভাই জ্যাক। সে ঋণে জর্জরিত। জ্যাক আসার সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের বিপদও আসে। মিথ্যা, সহিংসতা, বিশ্বাসঘাতকতায় তাদের জীবন ধ্বংসের মুখোমুখি হয়। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে দুই ভাই। এ দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুড ল এবং জেসন বেটম্যান। নেটফ্লিক্সে ‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজটি প্রচার শুরু হয় ১৮ সেপ্টেম্বর। আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘দারুণভাবে তৈরি করা হয়েছে সিরিজটি। গল্প কোথাও গতি হারায়নি, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা ছিল।’

‘ওজার্ক’ সিরিজের দৃশ্য
‘ওজার্ক’ সিরিজের দৃশ্য

ওজার্ক

আমেরিকান ক্রাইম ড্রামা সিরিজ ‘ওজার্ক’। নেটফ্লিক্সে এই পর্যন্ত প্রচারিত হয়েছে চারটি সিজন। প্রতি সিজনে ১০টি করে পর্ব। তবে সবশেষ ২০২২ সালে প্রচারিত চতুর্থ সিজনে ১৪টি পর্ব ছিল। বড় অঙ্কের একটি অর্থ পাচারের পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে যাওয়ার পর অর্থ উপদেষ্টা মার্টি বার্ড ভিন্ন পথ অবলম্বন করে। স্ত্রীকে নিয়ে মিসৌরির ওকার্ড হ্রদ অঞ্চলে পাড়ি জমায়। সেখানে গিয়ে স্থানীয় মাফিয়া ও অপরাধীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে মার্টি বার্ড। আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘নির্মাতারা খুবই কৌশলী। প্রথম পর্ব এমন নাটকীয়ভাবে তৈরি করেছে যে বাকি পর্বগুলো দেখার আগ্রহ তৈরি হয়। প্রথম পর্ব যেভাবে মনোযোগ কেড়ে নেয়, তাতে পুরোটা না দেখে ওঠা কঠিন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সিনেমায় একসঙ্গে চঞ্চল-ফারিণ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
কলকাতায় একসঙ্গে ফারিণ ও চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
কলকাতায় একসঙ্গে ফারিণ ও চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ১০ বছরের বিরতি কাটিয়ে এ বছর বাংলা সিনেমা নির্মাণে ফিরেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। গত জুলাইয়ে মুক্তি পেয়েছে ‘ডিয়ার মা’। এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জয়া আহসান। এবার এই নির্মাতার সিনেমায় দেখা যাবে বাংলাদেশের দুই অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী ও তাসনিয়া ফারিণকে। এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন চঞ্চল ও ফারিণ।

ব্রাত্য বসুর ‘শেকড়’ সিনেমার শুটিং করতে গত মাসে পশ্চিমবঙ্গে গেছেন চঞ্চল চৌধুরী। গত শুক্রবার কোয়েল মল্লিকের ডাকে গিয়েছিলেন ‘স্বার্থপর’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে। সেখানে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ফারিণ। সেখানেই চঞ্চল জানান, তাঁরা দুজনেই সেদিন সিনেমা নিয়ে আলাপ করেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে। তবে আগে থেকে তাঁরা জানতেন না অনিরুদ্ধ তাঁদের একসঙ্গে ডেকেছেন। তাই একে অপরকে দেখে দুজনেই চমকে গিয়েছিলেন।

চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কেউ জানতাম না দুজনেই কলকাতায় আছি, পুরোটাই কাকতালীয়। সিনেমার শুটিং আর টোনিদা অর্থাৎ অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে একটি মিটিং করার জন্য আমি কলকাতায় আসি। আর ও (ফারিণ) এখানে টোনিদার সঙ্গে মিটিং করতে আসে। দুজনেই যাওয়ার পর দেখা হয় এবং তখন জানতে পারি দুজনেই এখানে আছি।’

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর পরিচালনায় দুজনকে একই সিনেমায় দেখা যাবে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে চঞ্চল বলেন, ‘সেটা এখনো নিশ্চিত না। তবে কথাবার্তা চলছে। সম্ভাবনা আছে। আশা করি আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’

চঞ্চলের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ফারিণকেও বলতে শোনা যায়, ‘কথা হচ্ছে। দেখা যাক। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’

এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় তাসনিয়া ফারিণের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে খুদে বার্তায় ফারিণ জানান, এ বিষয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে চান না তিনি।

টালিউড সিনেমা ‘আরও এক পৃথিবী’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় ফারিণের। প্রথম সিনেমাতেই প্রশংসিত হয় তাঁর অভিনয়। পেয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা পুরস্কার। এরপর বিপ্লব গোস্বামীর ‘পাত্রী চাই’ এবং অভিজিৎ সেনের ‘প্রজাপ্রতি ২’ সিনেমায় অভিনয়ের কথা ছিল ফারিণের। ভিসা জটিলতার কারণে দুটি সিনেমা থেকেই সরে আসেন তিনি।

গত বছর সৃজিত মুখার্জির ‘পদাতিক’ সিনেমা দিয়ে টালিউডে যাত্রা শুরু চঞ্চল চৌধুরীর। এতে তিনি অভিনয় করেন কিংবদন্তি নির্মাতা মৃণাল সেনের চরিত্রে। সম্প্রতি চঞ্চল শেষ করেছেন শেকড় সিনেমার শুটিং। তাঁর হাতে রয়েছে অমিতাভ ভট্টাচার্যের ‘ত্রিধারা’। এতে প্রথমবার চঞ্চলের সঙ্গে দেখা যাবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত