Ajker Patrika

সত্যজিৎ-সৌমিত্রের স্মৃতিধন্য বাড়ি, হাত বদলে হয়ে যাচ্ছে করপোরেট অফিস

আপডেট : ০১ জুন ২০২৪, ১৪: ১০
সত্যজিৎ-সৌমিত্রের স্মৃতিধন্য বাড়ি, হাত বদলে হয়ে যাচ্ছে করপোরেট অফিস

দক্ষিণ কলকাতার, ৩ লেক টেম্পল রোডের তিনতলা বাড়িটির ফ্ল্যাটে একসময় সপরিবারে বাস করেছেন গুরু-শিষ্য—সত্যজিৎ রায় ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলা সিনেমার দুই কৃতীর স্মৃতিধন্য সেই বাড়িই এখন হাত বদলে চলে গেছে করপোরেট সংস্থার হাতে। ঐতিহাসিক বাড়িটির বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইন।

১৯৫৯ সালে ৩ লেক টেম্পল রোডের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন সত্যজিৎ রায়। বাড়ির মালিক বারীন্দ্রনাথ বসুর কাছ থেকে তিনতলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন তিনি। ওই বাড়িতে সত্যজিৎ ছিলেন ১৯৭০ সাল পর্যন্ত। তাঁরপর উঠে আসেন বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়িতে। পরের বছর থেকে ওই একই ফ্ল্যাট ভাড়া নেন সৌমিত্র। তিনি ওই বাড়িতে ছিলেন ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত। প্রায় তিন দশক বাড়িটি দুই খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বের জীবনযাত্রার সাক্ষী থেকেছে।

লেক টেম্পল রোডে বাড়িটির মূল কাঠামো এখনো আগের মতোই রয়েছে। তবে ভেতরে চলছে সংস্কারকাজ। বাইরে নতুন করে সিমেন্টের প্লাস্টার করা হচ্ছে। জানালা ও দরজার ফ্রেমের আকারও বদলে ফেলা হচ্ছে। বাড়ির মূল গেটে ঝুলছে তালা। অতীতের ‘বসু’ ফলকের পরিবর্তে এখন লেখা হয়েছে ‘মেট্রো আর্ক—ফার্স্ট ইন সিলিকনস ইন ইন্ডিয়া’।

বছর পাঁচেক আগে বারীন্দ্রনাথ বসু ও তাঁর স্ত্রী প্রয়াত হন। বছর দু-এক আগেই তাঁদের তিন ছেলে বাড়িটি বিক্রি করে দেন চুপিসারে।

লেক টেম্পল রোডের বাড়ি যে বিক্রি হয়ে গেছে, সে খবর জানতেন না সত্যজিৎপুত্র সন্দীপ রায়। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে সন্দীপের প্রতিক্রিয়া, ‘সে কী! কবে বিক্রি করা হলো! ওই বাড়িতে তো আমার ছোটবেলার প্রচুর স্মৃতি।’ সত্যজিতের পর ওই একই বাড়িতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কেন থাকতে শুরু করেছিলেন, তার নেপথ্যে সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করলেন সন্দীপ। তাঁর কথায়, ‘সৌমিত্রকাকুর আগের বাড়িটা খুব বড় ছিল না। তারপর যখন জানতে পারলেন যে আমরা চলে যাচ্ছি, তখন তিনি বাবার কাছে ওই ফ্ল্যাটেই থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বিষয়টা এভাবেই এগোয়।’

লেক টেম্পল রোডের বাড়ির বাইরে নতুন ফলক। ছবি: আনন্দবাজারলেক টেম্পল রোডের বাড়িতে থাকাকালীনই সত্যজিৎ তাঁর পেশাগত জীবনের নতুন আঙিনায় প্রবেশ করেন। ওই বাড়িতেই তাঁর কলমে ফেলুদা এবং প্রফেসর শঙ্কুর জন্ম। সন্দীপ বলেন, ‘১৯৬১ সালে ওই বাড়িতেই তো ‘‘সন্দেশ’’ পত্রিকার নবজন্ম। এমনকি, ‘‘প্রতিদ্বন্দ্বী’’র বেশ কিছু কাজও ওই বাড়িতে শুরু হয়। কিন্তু, শেষ হয় আমাদের বর্তমান বাড়িতে এসে।’

সন্দীপ আরও জানালেন, বছর পাঁচেক আগে এক পরিচিতের সূত্রে লেক টেম্পল রোডের বাড়ির কিছু ছবি তিনি দেখেছিলেন। বাড়ির অন্দরের কিছু কিছু পরিবর্তন তখনই তাঁর নজরে আসে। তবে এই বাড়িতে তাঁর শৈশবের সেরা সময় কাটিয়েছেন বলেই জানালেন সন্দীপ। বললেন, ‘ওই বাড়িতে ঠাকুমা, দিদা সবাই থেকেছেন। তিন তলায় থাকতাম বলে ছাদটা ছিল আমাদের উপরি পাওনা। মনে আছে, ছাদে জন্মদিন পালন ও অন্যান্য অনুষ্ঠানও হতো।’ একই সঙ্গে সন্দীপ জানালেন, ওই বাড়িতে থাকাকালীনই রায় পরিবারে পিয়ানোর প্রবেশ। সন্দীপের কথায়, ‘ও বাড়ি থেকেই তো বাবার সংগীত পরিচালনার সূত্রপাত। তাই বাবার ক্ষেত্রে সব দিক থেকেই ওই বাড়ি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।’

লেক টেম্পল রোডের বাড়িটির মালিকানা বদল নিয়ে অবগত নন সৌমিত্রকন্যা পৌলোমী চট্টোপাধ্যায়ও। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘খবরটা জানতাম না। ওখানে অফিস হবে! ভাবতে পারছি না।’ পৌলোমী জানালেন, তাঁর বড় হওয়ার দিনগুলোর যাবতীয় সুখস্মৃতি লেক টেম্পল রোডের বাড়ির সঙ্গেই জুড়ে রয়েছে। বললেন, ‘এই বাড়িকে আমরা কোনো দিন ভাড়াবাড়ি হিসেবে দেখিনি। বাবা কত ভালো ভালো কাজ ওই বাড়িতে থাকাকালীন করেছিলেন! সামনের বাগানে স্কুল থেকে ফিরে খেলাধুলো করার দিনগুলো এক ঝটকায় মনে পড়ে গেল। ওই পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে আজও আমার যোগাযোগ রয়েছে।’ ছেলেবেলার স্মৃতির হাতবদলে পৌলোমীর মনে কি কোনো আক্ষেপ কাজ করছে? পৌলোমী বলেন, ‘আক্ষেপ নেই, কাউকে দোষারোপও করতে চাই না। কারণ, দিনের শেষে ওটা ব্যক্তিগত সম্পত্তি। অনেক সময়েই অনেক কিছু করে ওঠা সম্ভব হয় না।’

সন্দীপ রায় ও পৌলোমী চট্টোপাধ্যায় । ছবি: সংগৃহীত২০১৪ সালে এই বাড়িতেই তাঁর ‘ফেলুদা: ফিফটি ইয়ারস অব রেজ ডিটেকটিভ’ তথ্যচিত্রের আংশিক শুটিং করেছিলেন পরিচালক সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ওই বাড়িতেই তো লেখক সত্যজিৎ রায়ের শুরু। ফেলুদার জন্ম ওই বাড়িতে বলে সেখানে শুটিং করতেই হয়েছিল।’

ব্যক্তিগত মালিকানার কোনো সম্পত্তির হাতবদল নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে না। কিন্তু যে বাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে, সেখানে সরকারি পদক্ষেপ হয়তো করা যেত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের বাড়িও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ছিল। কিন্তু উদ্যোগ নিয়ে সেগুলো সংরক্ষণের উদাহরণও আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তান-বিরোধী থিম: মধ্যপ্রাচ্যে নিষিদ্ধ হলো বলিউডের ‘ধুরন্ধর’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ধুরন্ধর সিনেমার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
ধুরন্ধর সিনেমার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের রণবীর সিং অভিনীত নতুন ছবি ‘ধুরন্ধর’ ভারতের ব্যাপক ব্যবসা করছে। মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই ২০০ কোটি রুপি আয় করেছে। তবে ছবিটি মধ্যপ্রাচ্যে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে। ‘পাকিস্তান-বিরোধী থিম’-এর অভিযোগ এনে বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছবিটির মুক্তি আটকে দেওয়া হয়েছে।

বলিউড হাঙ্গামার প্রতিবেদন অনুযায়ী, উপসাগরীয় দেশগুলোর কর্তৃপক্ষ ‘ধুরন্ধর’-এর পাকিস্তান-বিরোধী বিষয়বস্তু নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার হওয়া সত্ত্বেও, ছবিটি সেখানে মুক্তির অনুমতি পায়নি।

একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, এই আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল, কারণ ছবিটি ‘পাকিস্তান-বিরোধী চলচ্চিত্র’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সূত্রটি আরও জানায়, এর আগে এই অঞ্চলে এমন চলচ্চিত্র মুক্তির অনুমতি পায়নি। তবুও ‘ধুরন্ধর’-এর দল চেষ্টা করেছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, সব দেশই ছবিটির থিম অনুমোদন করেনি। এই কারণেই উপসাগরীয় দেশগুলোতে ‘ধুরন্ধর’ মুক্তি পায়নি।

নির্মাতা ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দাবি করছে, ‘ধুরন্ধর’ একটি স্পাই থ্রিলার, যার পটভূমি পাকিস্তানে। ছবিটির গল্প হামজা আলি মাজারি নামে এক রহস্যময় ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত, যিনি লিয়ারি অঞ্চলের রহমান ডাকাতের গ্যাংয়ে অনুপ্রবেশ করেন। ছবিতে রণবীর সিং ছাড়াও অক্ষয় খান্না, অর্জুন রামপাল, আর. মাধবন এবং সারা অর্জুন মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

বক্স অফিসে ছবিটি বিপুল সাফল্য পেয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি ট্র্যাকার Sacnilk-এর রিপোর্ট অনুসারে, ‘ধুরন্ধর’ সম্প্রতি ভারতে ২০০ কোটির মাইলফলক অতিক্রম করেছে এবং বিশ্বব্যাপী মোট ২৭৪ দশমিক ২৫ কোটি রুপি সংগ্রহ করেছে।

ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসা পেলেও, চলচ্চিত্র সমালোচকদের কাছ থেকে এটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। এর মধ্যে ছবিটির রিভিউ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি, ফিল্ম ক্রিটিকস গিল্ড ছবিটির সমালোচনা করার জন্য চলচ্চিত্র সমালোচকদের ওপর ‘হামলা, হয়রানি এবং ঘৃণা’ ছড়ানোর তীব্র নিন্দা করেছে। তাদের অফিসিয়াল বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মতভেদের শুরু দ্রুত ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং সমালোচকদের পেশাদার সততাকে হেয় করার সংগঠিত প্রচেষ্টায় পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ইউরোভিশন ট্রফি ফিরিয়ে দিলেন নেমো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২০২৪ সালের ইউরোভিশন ট্রফি জিতেছিলেন নেমো। ছবি: সংগৃহীত
২০২৪ সালের ইউরোভিশন ট্রফি জিতেছিলেন নেমো। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ চলাকালীন ‘ইউরোভিশন সং সং কনটেস্টে’ ইসরায়েলের অব্যাহত অংশগ্রহণের প্রতিবাদে ট্রফি ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিলেন ২০২৪ সালের ইউরোভিশন বিজয়ী নেমো। গত বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দেন সুইজারল্যান্ডের এই শিল্পী।

‘দ্য কোড’ নামে একটি ড্রাম-অ্যান্ড-বেস, অপেরা, র‍্যাপ এবং রক গান গেয়ে ২০২৪ সালের এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন নন-বাইনারি গায়ক নেমো। তিনি বলেন, ইসরায়েলের অব্যাহত অংশগ্রহণ এই প্রতিযোগিতার অন্তর্ভুক্তি এবং সব মানুষের জন্য মর্যাদার আদর্শের পরিপন্থী।

ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে নেমো বলেন, ‘ইউরোভিশন দাবি করে যে তারা ঐক্য, অন্তর্ভুক্তি এবং সব মানুষের মর্যাদার পক্ষে দাঁড়ায়। আর এই মূল্যবোধগুলোই এই প্রতিযোগিতাটিকে আমার কাছে এত অর্থবহ করে তোলে।’

নেমো আরও বলেন, ‘কিন্তু জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশন অব ইনকোয়ারি (অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডসহ পূর্ব জেরুজালেম এবং ইসরায়েল সম্পর্কিত) গণহত্যা বলে উপসংহারে পৌঁছেছে। সেই সময় ইসরায়েলের অব্যাহত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে এই আদর্শ এবং ইবিইউ-এর সিদ্ধান্তের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট সংঘাত রয়েছে।’

ইসরায়েল অবশ্য গণহত্যার সমস্ত অভিযোগ বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তারা দাবি করে, তারা আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করছে এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে হামাসের নেতৃত্বাধীন আন্তসীমান্ত হামলার পর নিজেদের আত্মরক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে।

নেমোর এই মন্তব্য ইউরোভিশনের আয়োজক ইউরোপীয় ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (ইবিইউ)-এর বিরুদ্ধে চলমান প্রতিবাদের সর্বশেষ সংযোজন। ইসরায়েলকে আগামী বছর অস্ট্রিয়াতে অনুষ্ঠেয় ইভেন্টে অংশ নেওয়ার ছাড়পত্র দেওয়ায় ইতিমধ্যেই পাঁচটি দেশ প্রতিযোগিতা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট পরিস্থিতির প্রতিবাদে নেমোর আগে স্পেন, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড এবং স্লোভেনিয়া ইউরোভিশন ২০২৩ প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গত বুধবার আইসল্যান্ডের সরকারি সম্প্রচার সংস্থা আরইউভি জানিয়েছে, তারা ২০২৬ সালের ইউরোভিশন সং সং কনটেস্টে অংশ নেবে না।

নেমো বলেন, দেশগুলো যখন প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসে, তখন স্পষ্টতই বোঝা যায় যে কোথাও বড় কোনো সমস্যা রয়েছে। তিনি ইউরোভিশন ট্রফিটি জেনেভায় ইবিইউ-এর সদর দপ্তরে ফেরত পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন।

প্রায় ১৬ কোটি দর্শক দেখে থাকেন ইউরোভিশন সং সং কনটেন্ট। এমন একটি প্রতিযোগিতার আয়োজক ইবিইউ-এর উদ্দেশে নেমোর স্পষ্ট বার্তা হলো: ‘আপনারা যা দাবি করেন, তা বাস্তবে মেনে চলুন। মঞ্চে আমরা যে মূল্যবোধগুলো উদ্‌যাপন করি, যদি মঞ্চের বাইরে তা না থাকে, তবে সবচেয়ে সুন্দর গানগুলোও অর্থহীন হয়ে যায়। আমি সেই মুহূর্তের অপেক্ষায় আছি যখন কথা ও কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য আসবে। তত দিন পর্যন্ত এই ট্রফিটি আপনাদের।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জয়া ও রুনার ফটোশুট নিয়ে চুমকির সমালোচনা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ফারজানা চুমকি। ছবি: সংগৃহীত
ফারজানা চুমকি। ছবি: সংগৃহীত

অভিনয়ের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও নজরকাড়া উপস্থিতি রয়েছে অভিনেত্রী জয়া আহসান ও রুনা খানের। বিভিন্ন ফটোশুটের ছবি নিজেদের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করেন তাঁরা। এসব ছবি নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্যও দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সম্প্রতি দুই অভিনেত্রীর ফটোশুট নিয়ে সমালোচনা করলেন আরেক অভিনেত্রী ফারজানা চুমকি।

কয়েক দিন আগে মনজু আহমেদের একটি ইউটিউব অনুষ্ঠানে অতিথি হয়েছিলেন চুমকি। সেখানে জয়া ও রুনার ফটোশুট নিয়ে ফারজানা চুমকি বলেন, জয়া আহসান ও রুনা খানের কিছু ফটোশুট দেখলে মনে হয় এগুলো তাঁরা না করলেও পারতেন। এরপর চুমকির সেই মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ তাঁর সঙ্গে একমত পোষণ করলেও অনেকে করছেন সমালোচনা। সহকর্মীদের নিয়ে এমন মন্তব্য করা ঠিক হয়নি বলে মত দিয়েছেন তাঁরা।

যেভাবে ঘটনা শুরু

১৯৯৯ সালে লাক্স আনন্দধারা ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হয়েছিলেন ফারজানা চুমকি। এরপর নিয়মিত ফটোশুট করতেন তিনি। প্রায় এক যুগের বেশি হয়েছে, ফটোশুটে সময় দেননি তিনি। অনুষ্ঠানে চুমকি জানান, ওজন বেড়ে যাওয়ায় ফটোশুট করা হয়নি তাঁর। তবে নতুন করে আবার ফটোশুটে সময় দিতে চান তিনি। সেই সময় উপস্থাপক জানতে চান, রুনা খান ওজন কমিয়ে ফটোশুট করছেন, তাহলে তিনি কেন পারেননি? জবাবে ফারজানা চুমকি বলেন, ‘রুনা খান অনেক ডেডিকেটেড ছিল। অনেক চেষ্টার পর ও পেরেছে। আমার হয়তো ওই চেষ্টাটা ছিল না। রুনা খানের টার্গেট ছিল সে শুকাবে, ফটোশুট করবে, হট হট ফটোশুট করছে। আমার মাথায় এই চিন্তাটাই নেই। এ ছাড়া আমার বয়স হয়েছে, ছেলে বড় হয়েছে।’

তিনিও রুনা খানের মতো হট ফটোশুট করবেন কি না, জানতে চাইলে চুমকি জানান, এমনটা করলে তিনি অনেক আগেই সিনেমায় অভিনয় করতেন। চুমকি বলেন, ‘ফটোসুন্দরী হওয়ার পর অনেক সিনেমার অফার এসেছে। কিন্তু ওই সময় সিনেমার অবস্থা একটু দুস্থ ছিল বা ভালগার টাইপের। প্রথমত, আমাকে বাসা থেকে দেয়নি, আমারও মনে হয়েছে ওই ধরনের কাজ আমি করতে পারব না।’

রুনা খানকে নিয়ে জেলাস কি না, জানতে চাইলে চুমকি বলেন, ‘রুনার সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ও ওর জায়গা থেকে কাজ করছে। জেলাস হব কেন? তবে মাঝে মাঝে কিছু ফটোশুট দেখে মনে হয় দরকার কী? না করলেও পারত। রুনা অনেক ভালো অভিনেত্রী। ওর এভাবে ফটোশুট না করলেও হতো।’

এর পরেই জয়া আহসানের ফটোশুট নিয়ে মন্তব্য করেন চুমকি। তিনি বলেন, ‘জয়া আপার কিছু হট ছবি মনে হয় অসম্ভব ভালো। আবার কিছু ছবি দেখলে মনে হয় ভালো লাগছে না। কারণ, জয়া আপাকে আমি শুরুতে যখন দেখেছি, একটি সেফটিপিন যাতে সরে গিয়ে পেট না দেখা যায়—এতটা সচেতন থাকতেন। ওভাবে দেখে অভ্যস্ত।

এ জন্য হঠাৎ করে আমাদের ধাক্কা লাগে। আর কিছু না।’

চুমকির বক্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার বিষয়টি নজর এড়ায়নি চুমকির। তাই নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে ফেসবুকে চুমকি লেখেন, ‘আমি কাউকে নিয়ে এভাবে কথা বলি নাই। জয়া আপা আমার ভীষণ পছন্দের একজন অভিনেত্রী। রুনা আমার ছোট বোনের মতো। ওর অভিনয়ের ভক্ত আমি। কাউকে আমি ছোট করে কথা বলি নাই। আপনারা কেন এই ভাবে লিখেন। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৌদির রেড সি ফেস্টিভ্যালে সেরা রোহিঙ্গা ভাষার ‘লস্ট ল্যান্ড’

বিনোদন ডেস্ক
‘লস্ট ল্যান্ড’ সিনেমার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘লস্ট ল্যান্ড’ সিনেমার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব সিনেমার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠছে সৌদি আরব। সারা বছর সেখানে সিনেমাকেন্দ্রিক নানা আয়োজন চলে। সৌদির সবচেয়ে বড় আয়োজন রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। ৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এ উৎসবের পঞ্চম আসর। আজ শেষ হবে এই আয়োজন। শেষ হওয়ার আগেই গত বৃহস্পতিবার রাতে ঘোষণা করা হয়েছে এবারের উৎসবে বিজয়ীদের নাম। এবার রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান ‘গোল্ডেন ইউসর’ জিতে নিয়েছে রোহিঙ্গা ভাষার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘লস্ট ল্যান্ড’। ক্রেস্টের পাশাপাশি পুরস্কার হিসেবে এই সিনেমাটি পেয়েছে ১ লাখ ডলার প্রাইজমানি।

‘ইউনান’ সিনেমার জন্য সেরা নির্মাতা নির্বাচিত হয়েছেন সিরিয়ার নির্মাতা আমির ফখের এলদিন। এই সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন জর্জ খাব্বাজ। সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন সিও সু-বিন, তিনি সেরা হয়েছেন ‘দ্য ওয়ার্ল্ড অব লাভ’ সিনেমার জন্য।

লস্ট ল্যান্ড সিনেমার গল্প লেখা হয়েছে মিয়ানমারে পালিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া দুই শিশুকে ঘিরে। ৯ বছর বয়সী সামিরা চার বছর বয়সী ভাই শফিকে নিয়ে মালয়েশিয়ায় থাকা চাচাদের কাছে পৌঁছানোর উদ্দশে যাত্রা শুরু করে। তাদের এই দুঃসহ যাত্রাপথের গল্প নিয়ে সিনেমা। এ বছর ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের হরাইজনস বিভাগে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারে বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছিল লস্ট ল্যান্ড।

পুরস্কার ঘোষণা অনুষ্ঠানের শুরুতে অ্যান্থনি হপকিন্স, ইদ্রিস এলবা, ড্যারেন অ্যারোনোফস্কি এবং সৌদি নির্মাতা আহদ কামেলকে সম্মাননা জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জনি ডেপ, সালমান খান, শাইলিন উডলির মতো তারকারা।

এবার রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে জুরি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ছিলেন অস্কারজয়ী হলিউড নির্মাতা শন বেকার। তাঁর সঙ্গে জুরি বোর্ডে ছিলেন রিজ আহমেদ, নাওমি হ্যারিস, ওলগা কুরিলেঙ্কো ও নাদিন লাবাকি। পুরস্কার দেওয়ার সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জুরি বোর্ডের সদস্যরা।

নির্বাচিত সেরাদের তালিকা

সিনেমা

লস্ট ল্যান্ড (আকিও ফুজিমোতো)

জুরি পুরস্কার

হিজরা (শাহাদ আমিন)

পরিচালক

আমির ফখের এলদিন (ইউনান)

চিত্রনাট্য

সিরিল অ্যারিস ও বেন ফাকিহ (আ স্যাড অ্যান্ড বিউটিফুল ওয়ার্ল্ড)

অভিনেতা

জর্জ খাব্বাজ (ইউনান)

অভিনেত্রী

সিও সু-বিন (দ্য ওয়ার্ল্ড অব লাভ)

সেরা তথ্যচিত্র

ইন-আই ইন মোশন (জুলিয়েট বিনোচে)

সৌদি চলচ্চিত্র

হিজরা (শাহাদ আমিন)

স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র

কোয়োটস (সাইদ জাঘা)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত