Ajker Patrika

মূল সমাপ্তি ও বাদ পড়া দৃশ্য নিয়ে আজ মুক্তি পাচ্ছে ‘শোলে’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৫, ১২: ৩৪
শোলে সিনেমার প্রধান দুই চরিত্রে ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ বচ্চন। ছবি: সিপ্পি ফিল্ম
শোলে সিনেমার প্রধান দুই চরিত্রে ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ বচ্চন। ছবি: সিপ্পি ফিল্ম

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ইতালির বোলোগনা শহর। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাটো’ উৎসবে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারকৃত ও আনকাট সংস্করণ। পঞ্চাশ বছর আগে মুক্তি পেয়ে ভারতীয় সিনেমা জগতে যে ঝড় তুলেছিল ‘শোলে’, এই নতুন সংস্করণ সেই উন্মাদনা আবার ফিরিয়ে আনছে।

এই নতুন সংস্করণে দর্শকেরা দেখতে পাবেন ছবির আসল সমাপ্তি, যা সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে কিছু বাদ পড়া দৃশ্যও থাকবে নতুন সংস্করণে। উৎসবের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ পিয়াজ্জা ম্যাগিওরে-তে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এটি ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম উন্মুক্ত মঞ্চ।

ভারতীয় সিনেমায় ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ছায়া

চিত্রনাট্য লেখক জুটি সেলিম-জাভেদের হাতে রচিত, ‘শোলে’তে অভিনয় করেছেন সেই সময়ের সব বড় তারকারা—অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, জয়া ভাদুড়ি, সঞ্জীব কুমার এবং গব্বর সিং চরিত্রে আমজাদ খান (প্রয়াত)। ছবিটি ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ক্ল্যাসিক থেকে অনুপ্রাণিত হলেও, এটি ভারতীয় আত্মীকরণে অনন্য। ২০৪ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি মূলত রামগড় নামের একটি কাল্পনিক গ্রামে দুই ছোটখাটো মাস্তান জয় ও বীরুর (অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্র) গল্প। তাঁরা একজন সাবেক জেলার, ঠাকুর বলদেব সিং-এর ভাড়াটে নিযুক্ত হন কুখ্যাত ডাকাত গব্বর সিংকে দমন করার জন্য। গব্বর সিং ভারতীয় সিনেমার অন্যতম আইকনিক খলনায়ক।

মুক্তির পর, মুম্বাইয়ের ১ হাজার ৫০০ আসনের মিনার্ভা থিয়েটারে ছবিটি টানা পাঁচ বছর প্রদর্শিত হয়। বিবিসি ইন্ডিয়ার অনলাইন জরিপে এটিকে ‘সহস্রাব্দের সেরা চলচ্চিত্র’ এবং ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের জরিপে ‘সর্বকালের সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্র’ হিসেবে নির্বাচিত হয়। আর. ডি. বর্মনের সংগীত এবং ছবির সংলাপের ৫ লাখ রেকর্ড ও ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল।

গব্বর সিং চরিত্রে আমজাদ খান। ছবি: সিপ্পি ফিল্ম
গব্বর সিং চরিত্রে আমজাদ খান। ছবি: সিপ্পি ফিল্ম

‘শোলে’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা। এর সংলাপ এখনো বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে উদ্ধৃত হয়, রাজনৈতিক বক্তৃতায় ব্যবহৃত হয়, বিজ্ঞাপনে প্যারোডি করা হয়। ছবিতে একটি ছোটখাটো মাস্তানের চরিত্রে অভিনয় করা ধর্মেন্দ্র সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শোলে হলো বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য।’ অমিতাভ বচ্চন ছবিটি শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাকে ‘অবিস্মরণীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদিও তখন আমার কোনো ধারণা ছিল না যে এটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হয়ে উঠবে।’

পুরো সিনেমাটি যেভাবে পুনরুদ্ধার করা হলো

ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গারপুর জানিয়েছেন, এই নতুন সংস্করণটিই ‘শোলে’র সবচেয়ে অথেনটিক রূপ। কারণ এতে সিনেমার প্রকৃত সমাপ্তি এবং আগে কখনো না দেখা বাদ পড়া দৃশ্যগুলো রয়েছে।

হলিউডের ওয়েস্টার্ন ও জাপানের সামুরাই ঘরানার ছাড়া অবলম্বনে হলেও ভারতীয় হিসেবেও এই সিনেমার অনন্য। ছবি: সিপ্পি ফিল্ম
হলিউডের ওয়েস্টার্ন ও জাপানের সামুরাই ঘরানার ছাড়া অবলম্বনে হলেও ভারতীয় হিসেবেও এই সিনেমার অনন্য। ছবি: সিপ্পি ফিল্ম

মূল গল্পে, ঠাকুর গব্বরকে তাঁর কাঁটাযুক্ত জুতো দিয়ে পিষে মেরে ফেলে। কিন্তু সেন্সর বোর্ড এতে আপত্তি জানায়। একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন, এই ধারণায় তাঁরা আপত্তি করেন। তাঁদের কাছে ছবির স্টাইলিশ সহিংসতাও অতিরিক্ত মনে হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সময় ছবিটি মুক্তি পাওয়ায় সেন্সরের কড়াকড়ি ছিল অনেক বেশি।

সেন্সর বোর্ডের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা ব্যর্থ হলে, পরিচালক সিপ্পিকে সমাপ্তি দৃশ্যটি পুনরায় শুট করতে বাধ্য করা হয়। অভিনেতাদের নিয়ে দ্রুত দক্ষিণ ভারতের রামানাগারাম-এর পাহাড়ে ফিরে যেতে হয়। এটিই ছবিতে রামগড় গ্রাম। নতুন এবং অপেক্ষাকৃত কম সহিংস সমাপ্তিতে গব্বর সিংকে হত্যা না করে বন্দী করা হয়। এরপরই ছবিটি সেন্সরের ছাড়পত্র পায়।

এই মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রটির তিন বছরের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া মোটেও সহজ ছিল না। ছবির মূল ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্টগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ক্যামেরার নেগেটিভগুলোও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিল।

২০২২ সালে, রমেশ সিপ্পির ছেলে শেহজাদ সিপ্পি ছবিটি পুনরুদ্ধার করার প্রস্তাব নিয়ে মুম্বাই-ভিত্তিক ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের কাছে যান। তিনি জানান, ছবির কিছু উপাদান মুম্বাইয়ের একটি গুদামে সংরক্ষিত আছে। এটি প্রথমে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ মনে হলেও, পরে প্রায় অলৌকিকভাবে মিলে যায়: লেবেলবিহীন ক্যানগুলোর ভেতর পাওয়া যায় আসল ৩৫ মিলিমিটারের ক্যামেরা ও সাউন্ড নেগেটিভ!

মুম্বাইয়ের মিনার্ভার থিয়েটারের দর্শকদের ভিড়। ছবি: সিপ্পি ফিল্ম
মুম্বাইয়ের মিনার্ভার থিয়েটারের দর্শকদের ভিড়। ছবি: সিপ্পি ফিল্ম

সিপ্পি ফিল্মস ফাউন্ডেশনকে জানায়, যুক্তরাজ্যের একটি গুদামেও অতিরিক্ত রিল সংরক্ষিত আছে। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহায়তায়, দলটি সেই আর্কাইভের উপাদানগুলো সংগ্রহ করে। এরপর সেগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বোলোগনার এল’ইমাজিন রিট্রোভাটা-তে পাঠানো হয়। এটি বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র পুনরুদ্ধার কেন্দ্র।

আশ্চর্যের বিষয়, মুক্তির প্রথম দিকে ‘শোলে’র যাত্রা মসৃণ ছিল না। প্রাথমিক রিভিউগুলো ছিল নেতিবাচক, বক্স অফিস ছিল নড়বড়ে, ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্ট কাস্টমসে আটকে গিয়েছিল।

ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিন ছবিটি সম্পর্কে লিখেছিল ‘একটি নিভে যাওয়া অঙ্গার’। ফিল্মফেয়ার-এর বিক্রম সিং লিখেছিলেন, ছবির মূল সমস্যা ছিল ‘ব্যর্থ প্রচেষ্টা, ভারতীয় প্রেক্ষাপটে একটি ওয়েস্টার্ন সিনেমা জুড়ে দেওয়া চেষ্টা করা হয়েছে।’ প্রাথমিক প্রদর্শনীতে দর্শকেরা নীরব ছিলেন—কোনো হাসি, কান্না বা করতালি ছিল না। চলচ্চিত্র লেখক অনুপমা চোপড়া তাঁর ‘শোলে: দ্য মেকিং অব অ্যা ক্ল্যাসিক’ বইয়ে লিখেছেন, ‘শুধু নীরবতা।’ সপ্তাহান্তে প্রেক্ষাগৃহগুলো পূর্ণ হলেও দর্শকদের প্রতিক্রিয়া অনিশ্চিত ছিল। সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।

পরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা ছবিটি গ্রহণ করতে শুরু করেন এবং মুখে মুখে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। অনুপমা চোপড়া লিখেছেন, ‘ভিজ্যুয়ালগুলো ছিল মহাকাব্যিক এবং শব্দ ছিল জাদুকরী...তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা সংলাপগুলো আওড়াচ্ছিল। এর মানে হলো, কিছু দর্শক অন্তত দ্বিতীয়বারের মতো ছবিটি দেখতে আসছিল।’

‘শোলে’ মুক্তির এক মাস পর, পলিডর একটি ৪৮ মিনিটের সংলাপ রেকর্ড প্রকাশ করে—এবং পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ছবির চরিত্রগুলো আইকনিক হয়ে ওঠে। গব্বর সিং—এক ‘সত্যিই ভীতিকর, কিন্তু ব্যাপক জনপ্রিয়’ খলনায়ক—একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা হিসেবে আবির্ভূত হন। বিদেশি সমালোচকেরা এটিকে ভারতের প্রথম ‘কারি ওয়েস্টার্ন’ বলে অভিহিত করেন।

মুম্বাইয়ের মিনার্ভা থিয়েটারে ‘শোলে’ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল—তিন বছর নিয়মিত শোতে এবং দুই বছর ম্যাটিনি শোতে। এমনকি ২৪০ তম সপ্তাহেও শো ছিল হাউসফুল। ২০১৫ সালের এপ্রিলে, ৪০ বছর পুরোনো হওয়া সত্ত্বেও, ‘শোলে’ পাকিস্তানের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং ২০০২ সালের ‘দেবদাস’-এর মতো এক দশকেরও বেশি পুরোনো বেশির ভাগ ভারতীয় ছবিকে ছাপিয়ে যায়।

পঞ্চাশ বছর পরেও কেন ‘শোলে’ দর্শকদের মন জয় করে চলেছে? অমিতাভ বচ্চন এক সাক্ষাৎকারে এর একটি সহজ, কিন্তু গভীর উত্তর দিয়েছেন: ‘ভালো এবং মন্দের জয়... এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তিন ঘণ্টার মধ্যে পয়েটিক জাস্টিস! যা আপনি এবং আমি সারা জীবনেও পাব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাজাখস্তানে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন নিশো

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৩
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত

৮ ডিসেম্বর ছিল অভিনেতা আফরান নিশোর জন্মদিন। প্রতিবছরের মতো এবারও তাঁর ভক্তরা দিনটি উদ্‌যাপন করলেন বিশেষ আয়োজনে। তবে ‘দম’ সিনেমার শুটিংয়ে কাজাখস্তানে থাকায় অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, এই আয়োজনে উপস্থিত থাকতে পারবেন না নিশো। শেষ পর্যন্ত সবাইকে চমকে দিয়ে ভক্তদের সঙ্গে নিজের জন্মদিন উদ্‌যাপনে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষ হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। দেশে ফিরেই ভক্তদের আমন্ত্রণে নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির হন নিশো। এদিন তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দম সিনেমার পরিচালক রেদওয়ান রনি ও নায়িকা পূজা চেরি। স্বাভাবিকভাবে উঠে আসে দম সিনেমার প্রসঙ্গ। নির্মাতা জানালেন, কতটা কঠিন পরিস্থিতির মাঝে শুটিং করেছেন তাঁরা। একদিন পাহাড়ে শুটিং করতে গিয়ে হাত কেটে যায় নিশোর। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ, শুটিং হয়েছে দুর্গম এলাকায়। তবু থেমে যাননি নিশো, আহত অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যের শুটিং চালিয়ে গেছেন।

দম সিনেমার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে নিশো বলেন, ‘আমরা সবাই চাই গল্প, চাই পারফরম্যান্স। দম সিনেমার মতো একটি গল্পের দায়িত্ব আমার কাঁধে, এটা আমার কাছে আশীর্বাদের মতো। এটা যদি ঠিকমতো পালন করতে না পারি, তাহলে কীভাবে হবে? আমি জানি, একজন সিনিয়র হিসেবে টিমের স্পিড অনেকটাই আমার ওপর নির্ভর করে। তখন এই হাত কাটা, পা কাটা, সেখানে মেডিকেল সাপোর্ট এল কি এল না, এসব কোনো বিষয় না। এ ছাড়া আমাদের খুব টাইট শিডিউল ছিল। সেখানে ১০ মিনিটের একটা বিরতি মানে শিডিউল ফেল করা। আমি দাবি নিয়ে বলতে পারি, এই সিনেমায় টিমের সবাই যতটা কষ্ট নিয়ে কাজ করেছে, এত কষ্ট কোনো প্রোডাকশনে করতে হয়নি। অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল সেখানে।’

নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজাখস্তানের শুটিং শেষ করেছে দম টিম। নিশো বলেন, ‘বয়স ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বটা বেড়ে যায়। এখানে নিজেকে শুধু অভিনেতা হিসেবে ভাবিনি। ভেবেছি, আমিও নির্মাতার একটি অংশ। আমরা যে ওয়েদারে কাজ করেছি, সেখানে ২টার সময় সূর্যের আলো থাকে না। আমরা কখনোই ভাবি নাই, সানলাইট ২টার সময় চলে যায়। এত জটিলতার পরেও আমরা এক দিনও বেশি শুটিং করি নাই। নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করেছি। সিনেমাসংশ্লিষ্টদের কাছে আমরা আমাদের কথা রেখেছি।’

দম সিনেমার গল্প নিয়ে এখনই বিস্তারিত বলতে চান না এই অভিনেতা। শুধু জানালেন, বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিতে এ ধরনের গল্প নিয়ে আগে কাজ হয়নি। তিনি আশা করেন, গল্পটি সবাই উপভোগ করবে এবং সিনেমাটি দেখার পর সবাই গর্ব করবে যে এটি বাংলাদেশের সিনেমা।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষে এবার দমের শুটিং হবে দেশে। কয়েকটা দিন বিশ্রাম নিয়ে আবার লাইট, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন অভিনয়শিল্পীরা। নিশো, পূজা চেরির সঙ্গে এতে আরও অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। আগামী বছর রোজার ঈদে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে দম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংগীত নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা জানতে চান হামিন আহমেদ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
হামিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
হামিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

এই সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল। এরপর বেজে উঠবে নির্বাচনী ঘণ্টা। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পরিকল্পনা জানাচ্ছে, যা প্রকাশ করা হবে নির্বাচনী ইশতেহার হিসেবে। এমন সময়ে সংগীত নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা জানতে চাইলেন মাইলস ব্যান্ডের প্রধান সংগীতশিল্পী হামিন আহমেদ। শুধু তা-ই নয়, সংগীত ও সংস্কৃতি নিয়ে ইতিবাচক পরিকল্পনা না থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোট না দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল ফেসবুকে হামিন আহমেদ লেখেন, ‘জাতীয় নির্বাচন কিছুদিন পরেই। সংগীতস্রষ্টা, শিল্পী এবং সংগীতপ্রেমীরা জানতে চান—ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য আপনার সাংস্কৃতিক ও সংগীতভিত্তিক ইশতেহার কী? বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দল সংগীত নিয়ে তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেনি। অন্য সবকিছু নিয়ে করেছে, কিন্তু সংগীত নিয়ে নয়! আমরা জানতে চাই (সংগীত নিয়ে পরিকল্পনা)।’

আরও একটি পোস্টে হামিন তুলে ধরেন বাংলাদেশে গান শোনা মানুষের পরিসংখ্যান। সেখানে হামিন লেখেন, ‘২০২৫ সালে বাংলাদেশে রেডিও, পডকাস্ট ও অন্যান্য মাধ্যমে গান শোনা লোকের সংখ্যা জনসংখ্যার প্রায় ২৮.৪০ শতাংশ। এআই বলছে ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৫১.৯১ মিলিয়নে পৌঁছাবে; যা মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ। এই বিপুল সংখ্যক মানুষ যদি বলে, বাংলাদেশে সংগীতের বিরোধিতাকারী দল/প্রার্থীদের ভোট দেব না, তাহলে কী হবে বলে আপনার মনে হয়? এই ক্ষমতা উপলব্ধি করুন।’

বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশনের (বামবা) সভাপতির দায়িত্বে থাকা হামিন আহমেদের এই পোস্ট ইতিমধ্যে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেশের অনেক সংগীতশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, ব্যান্ড সদস্য ও সংগীতপ্রেমীরা পোস্টটি শেয়ার করে নিজেদের সমর্থন জানাচ্ছেন।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কথা হয় হামিন আহমেদের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে অনেক দিন ধরে সহশিল্পীদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। আমরা খেয়াল করলাম, রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সবকিছু আলাদাভাবে উপস্থাপন করা হলেও মিউজিক বা আর্ট কালচার নিয়ে কখনোই কিছু বলা হয় না। অথচ এমন কোনো অনুষ্ঠান নেই, যেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান-বাজনা হয় না। কেন মিউজিশিয়ানরাই বারবার সাফার করবে। এক পক্ষ বলবে বন্ধ করে দেব, আরেক পক্ষ বলবে চালু রাখব। তারা কী চাইছে, সেটা স্পষ্ট করা দরকার। সবাই তো মিউজিশিয়ানদের কাছেও ভোট চাইবে। বাংলাদেশে ২ থেকে ৩ কোটি মানুষ গান গাওয়া ও শোনার সঙ্গে জড়িত। কেউ যদি মিউজিক বন্ধ করে দিতে চায়, তাকে তো এই মানুষগুলো ভোট দেবে না। কারণ, কারও পক্ষ থেকে মিউজিক নিয়ে কোনো পরিকল্পনার কথা শোনা যায়নি।’

হামিন আহমেদ আরও বলেন, ‘এখন বাংলাদেশের যে সময়, সেটা যেকোনো সময়ের চেয়ে দুর্যোগপূর্ণ, বিভ্রান্তিকর ও চক্রান্তমূলক। বিভিন্ন শো ক্যানসেল হচ্ছে, আবার শোনা যাচ্ছে, গান-বাজনা বন্ধ করতে হবে ইত্যাদি। এখনই কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না। আমরা জানতে চাই, যে দলগুলো নির্বাচনে যাচ্ছে, আমাদের জন্য তাদের স্ট্র্যাটেজি কী? আর্ট কালচার নিয়ে তাদের চিন্তা-ভাবনা কী? সংস্কৃতি কীভাবে এগোবে, এই বিষয়ে কী ভাবছে তারা? এখনো এ বিষয়ে ঘোষণা আসেনি কোনো দলের পক্ষ থেকে। আমরা সেটাই স্পষ্ট জানতে চাইছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিজয়ের মাসে সুমীর চার গান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সুমী শারমীন,সাব্বির জামান ও প্রিয়াঙ্কা গোপ। ছবি: সংগৃহীত
সুমী শারমীন,সাব্বির জামান ও প্রিয়াঙ্কা গোপ। ছবি: সংগৃহীত

বিজয়ের মাসে নতুন চার গান নিয়ে আসছেন গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী সুমী শারমীন। চারটি গানই লিখেছেন সুমী, দুটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন, বাকি দুটি গান গেয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গোপ ও সাব্বির জামান। গানগুলো সুর করেছেন শান সায়েক ও সাব্বির জামান।

সুমী গেয়েছেন ‘রোদ্দুর কোলাহল’ ও ‘কোনো এক বিকেলে’ শিরোনামের দুটি গান। রোদ্দুর কোলাহল গানটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন শান সায়েক। কোনো এক বিকেলের সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন সাব্বির জামান। অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কা গোপ গেয়েছেন ‘বিজয় রাঙানো সুখ’ শিরোনামের গান। এটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন শান সায়েক; সাব্বির জামান গেয়েছেন নিজের সুর ও সংগীতায়োজনে ‘ভালোবাসি তোমায়’ শিরোনামের গান। সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন লোকেশনে গানগুলোর মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে।

গানগুলো নিয়ে সুমী শারমীন বলেন, ‘প্রতিটি গানেই জীবনের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। গানগুলো নিয়ে আমি ভীষণ আশাবাদী। চারটি গানেরই সুর শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যাবে—এতটুকু আমি নিশ্চিত বলতে পারি।’

প্রিয়াঙ্কা গোপ বলেন, ‘বিজয় রাঙানো সুখ গানটির কথা যেমন চমৎকার, গানের সুরও সহজ-সরল। সাধারণত এই ধরনের গান আমার গাওয়া হয় না। কিন্তু এই গান গেয়ে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।’

সাব্বির জামান বলেন, ‘সুমী আপার গানের কথাগুলো সাবলীল ও গভীরতায় পূর্ণ। তাঁর লেখনীর গুণেই সুর করাটা সহজ হয়ে যায়। এই গানগুলোর সুর সত্যিই মনে গেঁথে যাওয়ার মতো।’

প্রিয়াঙ্কা গোপের গাওয়া গানটি প্রকাশিত হবে এনিগমা টিভি ইউটিউব চ্যানেলে এবং সাব্বিরের গানটি আলফা আই ইউটিউব চ্যানেলে। সুমী শারমীনের গাওয়া গান দুটিও প্রকাশিত হবে ইউটিউবে, চ্যানেলের নাম শিগগির শ্রোতাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে আপত্তি কেট উইন্সলেটের

বিনোদন ডেস্ক
কেট উইন্সলেট। ছবি: সংগৃহীত
কেট উইন্সলেট। ছবি: সংগৃহীত

সৌন্দর্য ধরে রাখতে অনেকে এখন প্লাস্টিক সার্জারির আশ্রয় নিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এ প্রবণতা বেড়েছে হলিউডের নতুন অভিনেত্রীদের মধ্যে। বিষয়টির সমালোচনা করেছেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট। সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেট বলেছেন, ‘এ প্রজন্মের অভিনেত্রীরা ইনস্টাগ্রামে আরও বেশি লাইক পাওয়ার জন্য নিজেদের নিখুঁত দেখানোর প্রতি মগ্ন হয়ে পড়েছে। এটা আমাকে খুব বিরক্ত করে।’

শুধু প্লাস্টিক সার্জারি নয়, ওজন কমানোর জন্য অনেকে নানা রকম ওষুধ সেবন করেন। এটি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে কেট উইন্সলেট বলেন, ‘কেউ যদি মনে করে, তার আত্মসম্মান নির্ধারিত হবে শুধুই তার চেহারা দিয়ে, তাহলে সেটা ভয়ানক। অনেকে ওজন কমানোর জন্য ওষুধ খাচ্ছে। বোটক্স ও ফিলারের পেছনে প্রচুর অর্থ খরচ করছে। এসব তাদের কাছে নেশার মতো হয়ে গেছে। নিজেদের শরীর ও চেহারা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট হতে পারছে না। কিন্তু আসলে এসব ওষুধ যে তাদের কতটা ক্ষতি করছে, সে ব্যাপারে তারা সচেতন নয়। নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি প্রচণ্ড অবহেলা করছে তারা। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমে খারাপের দিকে যাচ্ছে।’

কেট উইন্সলেট জানান, বার্ধক্য রোধের জন্য তিনি কখনো এসব উপায় অবলম্বনের চিন্তাও করেননি। অভিনেত্রী জানান, শুধু তিনি নন, হেলেন মিরেন, টনি কোলেট, আন্দ্রেয়া রাইজবোরো, সিগর্নি ওয়েভার—সবাই হলিউডের প্লাস্টিক সার্জারির প্রবণতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। কেট উইন্সলেট বলেন, ‘যখন হাতে-মুখে বয়সের ছাপ পড়ে যায়, সেটা দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। এটাই তো জীবন। বয়স অনুযায়ী চেহারা বদলায়। আমার চোখে সবচেয়ে সুন্দরী নারী যারা, তাদের অনেকের বয়স ৭০ বছরের বেশি। এখনকার অনেক নারীর সৌন্দর্য সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই, এটা আমাকে হতাশ করে।’

কৃত্রিমতায় কোনো সৌন্দর্য নেই, নকলের আশ্রয় না নিয়ে সব সময় যেটা বাস্তব, সেটাই প্রকাশ করতে হবে—নতুন অভিনেত্রীদের প্রতি এটাই পরামর্শ কেট উইন্সলেটের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত