Ajker Patrika

১০ বছর পর আসছে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি নিয়ে কামারের মনোলগ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘একটি সূতার জবানবন্দী’ সিনেমার দৃশ্য। ছবি: নির্মাতার সৌজন্যে
‘একটি সূতার জবানবন্দী’ সিনেমার দৃশ্য। ছবি: নির্মাতার সৌজন্যে

দেশের পোশাকশিল্পের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন ২৪ এপ্রিল। আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন আইএলওর হিসাবমতে, ২০১৩ সালের এই দিনে সাভারে রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩২ জন নিহত হন। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি নিয়ে ২০১৫ সালে নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন বানিয়েছেন ‘একটি সূতার জবানবন্দী’। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় শিল্প দুর্ঘটনা রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ পূর্তির দিনে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পাচ্ছে চলচ্চিত্রটি। মাঝে কয়েকটি বিশেষ প্রদর্শনী হলেও নির্মাণের ১০ বছর পর দর্শকদের জন্য মুক্তি দেওয়া হচ্ছে সিনেমাটি।

পোশাকশিল্পের দুর্ঘটনা ও কর্মীদের মানবেতর জীবনযাপন নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি সূতার জবানবন্দী। এর দৈর্ঘ্য ৫২ মিনিট। তবে একে প্রামাণ্যচিত্র বা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বলতে নারাজ নির্মাতা। কামার আহমাদ সাইমনের ভাষায় একটি সূতার জবানবন্দী হলো একটি অসমাপ্ত মনোলগ কোলাজ।

কামার আহমাদ সাইমন বলেন, ‘আকিরা কুরোসাওয়ার রাশোমনের (১৯৫০) অনুপ্রেরণায় একটি সূতার জবানবন্দী ৫২ মিনিটের একটি মনোলগ কোলাজ। আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক কাঠামোগত ব্যর্থতার সংখ্যার পেছনে মানুষের মুখ খুঁজে বের করার চেষ্টা। রানা প্লাজার পর আমাদের সমাজে যে ব্যাপক আলোচনা চলছিল, সেইটা নিয়ে একটা রিসার্চ করছিলাম। একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা বানানোর ইচ্ছা ছিল, শেষ পর্যন্ত সিনেমাটি বানানো যায়নি। কারণ অনেক, আমরা তখন নতুন করে সেলফ সেন্সরড হতে শুরু করেছিলাম। তা ছাড়া নিউ লিবারেল পুঁজির দাপটে গোটা কালচারাল ইন্ডাস্ট্রিই তখন এক অর্থে লুম্পেনাইজড। তাই এর রিসার্চ ম্যাটেরিয়াল জোড়া দিয়ে একরকম অসম্পূর্ণ একটা কোলাজ দাঁড় করেছিলাম, যেটাকে প্রামাণ্যচিত্র বা ফিচার সিনেমা কোনোটাই বলা যাবে না। আমি বলি অসম্পূর্ণ মনোলগ কোলাজ, দর্শক স্রেফ ছবি হিসেবে দেখতে পারেন।’

নির্মাণের ১০ বছর পর সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া প্রসঙ্গে কামার আহমাদ সাইমন বলেন, ‘আমার সিনেমাগুলো একটু ডিমান্ডিং, সময়ের বিচারে সম্ভবত ১০ বছর আগে বানানো। আমার প্রথম সিনেমা “শুনতে কি পাও”-এর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল, সেটিও ওটিটিতে এসেছে প্রায় ১০ বছর পরে। আমাদের প্রচলিত যে চলচ্চিত্র চর্চা বা কালচারাল ইন্ডাস্ট্রি, তার সঙ্গে এই সিনেমাগুলোর কোনো দেনা-পাওনা ছিল না। কিন্তু এখন বরং একরকম উল্টো, অনেক দিন পরে মানুষ একসঙ্গে পুরোনো বন্দোবস্তগুলো বোঝার চেষ্টা করছে, নতুন করে রাস্তা খুঁজছে। সংস্কৃতিচর্চায় “দায় আর দরদ”-এর প্রশ্ন তাই এখন অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। এখনকার দর্শকও অনেক এক্সপোজড, তারা সারা দুনিয়ার ফিকশন, নন-ফিকশন, হাইব্রিড অনেক ধরনের কনটেন্ট দেখে অভ্যস্ত।’

পোশাকশিল্পে দুর্ঘটনা ও পোশাককর্মীদের মানবেতর জীবনের যে চিত্র এতে দেখানো হয়েছে, এত দিনেও কি সেই অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মাতার ভাষ্য, ‘আজকের দুনিয়ায় পোশাকশিল্প হলো নতুন ক্রীতদাস ব্যবস্থা। পার্থক্য শুধু, আগে জলদস্যুরা জোর করে সহজসরল মানুষের ধরে নিয়ে গিয়ে ভিনদেশে দাস হিসেবে বিক্রি করে দিত। আর এখন লিবারেল পুঁজি দেশি রাজনীতি-ব্যবসায়ী-ঠিকাদারের চক্করে দেশে দেশেই দাসব্যবস্থা তৈরি করে। তাই শ্রমিক-কৃষকের আলাপ আমাদের শহরকেন্দ্রিক তত্ত্বালোচনার বাইরেই থাকে। তাই পরিবর্তন তো দূরের কথা, প্রশ্নগুলোই তো আমরা এখনো তুলতে পারিনি।’

কামার আহমাদ সাইমনের রচনা ও পরিচালনা এবং সারা আফরীনের প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে একটি সূতার জবানবন্দী। ২০১৩ সালে ‘দ্য এশিয়ান পিস’ পুরস্কার জয় করেছিল এটি। পরবর্তী সময়ে এশিয়ার অন্যতম চারটি টেলিভিশন—জাপানের এনএইচকে, কোরিয়ার কেবিএস, তাইওয়ানের পিটিএস ও সিঙ্গাপুরের মিডিয়াকর্প যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে সিনেমাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করলেন সোনিয়া, জানালেন কেমন আছেন নায়ক

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সোনিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সোনিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেখানে মেয়ের সঙ্গে আছেন তিনি। গত জুলাই মাসে ইলিয়াস কাঞ্চন লন্ডন গেলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় চিত্রনায়িকা রোজিনার। ওই সময় রোজিনা ছিলেন কানাডায়। সেখান থেকে ফিরে গত সেপ্টেম্বর অভিনেতাকে দেখেতে যান তিনি। তখন রোজিনা জানিয়েছিলেন, অসুস্থতার ধঁকলে কিছুটা বিধ্বস্ত দেখালেও কাঞ্চন দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছেন নিয়মিত। ধীরে ধীরে কথা বলছেন। ব্রেনের সস্যার কারণে মাঝে মাঝে কথা ভুলে যান ইলিয়াস কাঞ্চন। ব্রেনের স্পর্শকাতর জায়গায় টিউমার হওয়ায় অস্ত্রোপচার করে সম্পূর্ণ টিউমার সরানো যায়নি। তবে কেমোথেরাপির মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসা চলবে।

সম্প্রতি ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করেছেন বাংলা সিনেমার নব্বই দশকের আরেক জনপ্রিয় নায়িকা সোনিয়া। অনেক বছর হলো স্বামী-সন্তান নিয়ে ইংল্যান্ডে স্থায়ী হয়েছেন সোনিয়া। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করে তিনি জানিয়েছেন, এখন আগের চেয়ে ভালো আছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন তিনি।

গত সেপ্টেম্বরে ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখতে যান রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত
গত সেপ্টেম্বরে ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখতে যান রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত

ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন সোনিয়া। নায়কের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্যসহ জানিয়েছেন চিকিৎসার খবর।

স্ট্যাটাসে সোনিয়া লেখেন, ‘ইংল্যান্ডের কর্মব্যস্ত জীবনের কারণে অনেকদিন ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া হয়নি। যোগাযোগ সবসময় হয়, তবে আজ প্রথম সুযোগ পেলাম তাকে দেখতে যাওয়ার। ভাইয়ার চলমান চিকিৎসায় কিছুদিনের বিরতি ছিল। আগামী সপ্তাহে আবার চিকিৎসা শুরু হবে।’

সোনিয়া জানিয়েছেন, ইলিয়াস কাঞ্চন এখন স্বাভাবিকভাবেই কথা বলছেন। সময় কাটাচ্ছেন স্বজনদের সঙ্গে। তবে শিগগির দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই তাঁর। এ বিষয়ে সোনিয়া লেখেন, ‘ভাইয়া আমার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেছেন। উনার পরিবারের সঙ্গে কাটালাম ভালো সময়। তবে আপাতত বাংলাদেশে ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই তাঁর। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া পরবর্তী কোনো সিদ্ধান্ত জানানো যাচ্ছে না।’

সোনিয়া আরও জানিয়েছেন, ইলিয়াস কাঞ্চনের চিকিৎসা বেশ ভালোভাবেই চলছে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন নায়ক। পুরো চিকিৎসাপ্রক্রিয়া শেষে চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন অভিনেতা। সোনিয়া অনুরোধ করেছেন, কোনো ধরনের গুজব না ছড়িয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের সুস্থতার জন্য দোয়া করতে।

উল্লেখ্য, ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে ‘ভয়ংকর ৭ দিন’, ‘বিদ্রোহী কন্যা’, ‘বডিগার্ড’, ‘শেষ রক্ষা’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন সোনিয়া। তবে তাঁর নায়িকা হয়ে কোনো সিনেমায় অভিনয় করা হয়নি তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাজাখস্তানে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন নিশো

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৩
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত

৮ ডিসেম্বর ছিল অভিনেতা আফরান নিশোর জন্মদিন। প্রতিবছরের মতো এবারও তাঁর ভক্তরা দিনটি উদ্‌যাপন করলেন বিশেষ আয়োজনে। তবে ‘দম’ সিনেমার শুটিংয়ে কাজাখস্তানে থাকায় অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, এই আয়োজনে উপস্থিত থাকতে পারবেন না নিশো। শেষ পর্যন্ত সবাইকে চমকে দিয়ে ভক্তদের সঙ্গে নিজের জন্মদিন উদ্‌যাপনে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষ হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। দেশে ফিরেই ভক্তদের আমন্ত্রণে নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির হন নিশো। এদিন তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দম সিনেমার পরিচালক রেদওয়ান রনি ও নায়িকা পূজা চেরি। স্বাভাবিকভাবে উঠে আসে দম সিনেমার প্রসঙ্গ। নির্মাতা জানালেন, কতটা কঠিন পরিস্থিতির মাঝে শুটিং করেছেন তাঁরা। একদিন পাহাড়ে শুটিং করতে গিয়ে হাত কেটে যায় নিশোর। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ, শুটিং হয়েছে দুর্গম এলাকায়। তবু থেমে যাননি নিশো, আহত অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যের শুটিং চালিয়ে গেছেন।

দম সিনেমার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে নিশো বলেন, ‘আমরা সবাই চাই গল্প, চাই পারফরম্যান্স। দম সিনেমার মতো একটি গল্পের দায়িত্ব আমার কাঁধে, এটা আমার কাছে আশীর্বাদের মতো। এটা যদি ঠিকমতো পালন করতে না পারি, তাহলে কীভাবে হবে? আমি জানি, একজন সিনিয়র হিসেবে টিমের স্পিড অনেকটাই আমার ওপর নির্ভর করে। তখন এই হাত কাটা, পা কাটা, সেখানে মেডিকেল সাপোর্ট এল কি এল না, এসব কোনো বিষয় না। এ ছাড়া আমাদের খুব টাইট শিডিউল ছিল। সেখানে ১০ মিনিটের একটা বিরতি মানে শিডিউল ফেল করা। আমি দাবি নিয়ে বলতে পারি, এই সিনেমায় টিমের সবাই যতটা কষ্ট নিয়ে কাজ করেছে, এত কষ্ট কোনো প্রোডাকশনে করতে হয়নি। অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল সেখানে।’

নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজাখস্তানের শুটিং শেষ করেছে দম টিম। নিশো বলেন, ‘বয়স ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বটা বেড়ে যায়। এখানে নিজেকে শুধু অভিনেতা হিসেবে ভাবিনি। ভেবেছি, আমিও নির্মাতার একটি অংশ। আমরা যে ওয়েদারে কাজ করেছি, সেখানে ২টার সময় সূর্যের আলো থাকে না। আমরা কখনোই ভাবি নাই, সানলাইট ২টার সময় চলে যায়। এত জটিলতার পরেও আমরা এক দিনও বেশি শুটিং করি নাই। নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করেছি। সিনেমাসংশ্লিষ্টদের কাছে আমরা আমাদের কথা রেখেছি।’

দম সিনেমার গল্প নিয়ে এখনই বিস্তারিত বলতে চান না এই অভিনেতা। শুধু জানালেন, বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিতে এ ধরনের গল্প নিয়ে আগে কাজ হয়নি। তিনি আশা করেন, গল্পটি সবাই উপভোগ করবে এবং সিনেমাটি দেখার পর সবাই গর্ব করবে যে এটি বাংলাদেশের সিনেমা।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষে এবার দমের শুটিং হবে দেশে। কয়েকটা দিন বিশ্রাম নিয়ে আবার লাইট, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন অভিনয়শিল্পীরা। নিশো, পূজা চেরির সঙ্গে এতে আরও অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। আগামী বছর রোজার ঈদে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে দম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংগীত নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা জানতে চান হামিন আহমেদ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
হামিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
হামিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

এই সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল। এরপর বেজে উঠবে নির্বাচনী ঘণ্টা। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পরিকল্পনা জানাচ্ছে, যা প্রকাশ করা হবে নির্বাচনী ইশতেহার হিসেবে। এমন সময়ে সংগীত নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা জানতে চাইলেন মাইলস ব্যান্ডের প্রধান সংগীতশিল্পী হামিন আহমেদ। শুধু তা-ই নয়, সংগীত ও সংস্কৃতি নিয়ে ইতিবাচক পরিকল্পনা না থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোট না দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল ফেসবুকে হামিন আহমেদ লেখেন, ‘জাতীয় নির্বাচন কিছুদিন পরেই। সংগীতস্রষ্টা, শিল্পী এবং সংগীতপ্রেমীরা জানতে চান—ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য আপনার সাংস্কৃতিক ও সংগীতভিত্তিক ইশতেহার কী? বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দল সংগীত নিয়ে তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেনি। অন্য সবকিছু নিয়ে করেছে, কিন্তু সংগীত নিয়ে নয়! আমরা জানতে চাই (সংগীত নিয়ে পরিকল্পনা)।’

আরও একটি পোস্টে হামিন তুলে ধরেন বাংলাদেশে গান শোনা মানুষের পরিসংখ্যান। সেখানে হামিন লেখেন, ‘২০২৫ সালে বাংলাদেশে রেডিও, পডকাস্ট ও অন্যান্য মাধ্যমে গান শোনা লোকের সংখ্যা জনসংখ্যার প্রায় ২৮.৪০ শতাংশ। এআই বলছে ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৫১.৯১ মিলিয়নে পৌঁছাবে; যা মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ। এই বিপুল সংখ্যক মানুষ যদি বলে, বাংলাদেশে সংগীতের বিরোধিতাকারী দল/প্রার্থীদের ভোট দেব না, তাহলে কী হবে বলে আপনার মনে হয়? এই ক্ষমতা উপলব্ধি করুন।’

বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশনের (বামবা) সভাপতির দায়িত্বে থাকা হামিন আহমেদের এই পোস্ট ইতিমধ্যে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেশের অনেক সংগীতশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, ব্যান্ড সদস্য ও সংগীতপ্রেমীরা পোস্টটি শেয়ার করে নিজেদের সমর্থন জানাচ্ছেন।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কথা হয় হামিন আহমেদের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে অনেক দিন ধরে সহশিল্পীদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। আমরা খেয়াল করলাম, রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সবকিছু আলাদাভাবে উপস্থাপন করা হলেও মিউজিক বা আর্ট কালচার নিয়ে কখনোই কিছু বলা হয় না। অথচ এমন কোনো অনুষ্ঠান নেই, যেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান-বাজনা হয় না। কেন মিউজিশিয়ানরাই বারবার সাফার করবে। এক পক্ষ বলবে বন্ধ করে দেব, আরেক পক্ষ বলবে চালু রাখব। তারা কী চাইছে, সেটা স্পষ্ট করা দরকার। সবাই তো মিউজিশিয়ানদের কাছেও ভোট চাইবে। বাংলাদেশে ২ থেকে ৩ কোটি মানুষ গান গাওয়া ও শোনার সঙ্গে জড়িত। কেউ যদি মিউজিক বন্ধ করে দিতে চায়, তাকে তো এই মানুষগুলো ভোট দেবে না। কারণ, কারও পক্ষ থেকে মিউজিক নিয়ে কোনো পরিকল্পনার কথা শোনা যায়নি।’

হামিন আহমেদ আরও বলেন, ‘এখন বাংলাদেশের যে সময়, সেটা যেকোনো সময়ের চেয়ে দুর্যোগপূর্ণ, বিভ্রান্তিকর ও চক্রান্তমূলক। বিভিন্ন শো ক্যানসেল হচ্ছে, আবার শোনা যাচ্ছে, গান-বাজনা বন্ধ করতে হবে ইত্যাদি। এখনই কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না। আমরা জানতে চাই, যে দলগুলো নির্বাচনে যাচ্ছে, আমাদের জন্য তাদের স্ট্র্যাটেজি কী? আর্ট কালচার নিয়ে তাদের চিন্তা-ভাবনা কী? সংস্কৃতি কীভাবে এগোবে, এই বিষয়ে কী ভাবছে তারা? এখনো এ বিষয়ে ঘোষণা আসেনি কোনো দলের পক্ষ থেকে। আমরা সেটাই স্পষ্ট জানতে চাইছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিজয়ের মাসে সুমীর চার গান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সুমী শারমীন,সাব্বির জামান ও প্রিয়াঙ্কা গোপ। ছবি: সংগৃহীত
সুমী শারমীন,সাব্বির জামান ও প্রিয়াঙ্কা গোপ। ছবি: সংগৃহীত

বিজয়ের মাসে নতুন চার গান নিয়ে আসছেন গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী সুমী শারমীন। চারটি গানই লিখেছেন সুমী, দুটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন, বাকি দুটি গান গেয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গোপ ও সাব্বির জামান। গানগুলো সুর করেছেন শান সায়েক ও সাব্বির জামান।

সুমী গেয়েছেন ‘রোদ্দুর কোলাহল’ ও ‘কোনো এক বিকেলে’ শিরোনামের দুটি গান। রোদ্দুর কোলাহল গানটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন শান সায়েক। কোনো এক বিকেলের সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন সাব্বির জামান। অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কা গোপ গেয়েছেন ‘বিজয় রাঙানো সুখ’ শিরোনামের গান। এটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন শান সায়েক; সাব্বির জামান গেয়েছেন নিজের সুর ও সংগীতায়োজনে ‘ভালোবাসি তোমায়’ শিরোনামের গান। সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন লোকেশনে গানগুলোর মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে।

গানগুলো নিয়ে সুমী শারমীন বলেন, ‘প্রতিটি গানেই জীবনের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। গানগুলো নিয়ে আমি ভীষণ আশাবাদী। চারটি গানেরই সুর শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যাবে—এতটুকু আমি নিশ্চিত বলতে পারি।’

প্রিয়াঙ্কা গোপ বলেন, ‘বিজয় রাঙানো সুখ গানটির কথা যেমন চমৎকার, গানের সুরও সহজ-সরল। সাধারণত এই ধরনের গান আমার গাওয়া হয় না। কিন্তু এই গান গেয়ে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।’

সাব্বির জামান বলেন, ‘সুমী আপার গানের কথাগুলো সাবলীল ও গভীরতায় পূর্ণ। তাঁর লেখনীর গুণেই সুর করাটা সহজ হয়ে যায়। এই গানগুলোর সুর সত্যিই মনে গেঁথে যাওয়ার মতো।’

প্রিয়াঙ্কা গোপের গাওয়া গানটি প্রকাশিত হবে এনিগমা টিভি ইউটিউব চ্যানেলে এবং সাব্বিরের গানটি আলফা আই ইউটিউব চ্যানেলে। সুমী শারমীনের গাওয়া গান দুটিও প্রকাশিত হবে ইউটিউবে, চ্যানেলের নাম শিগগির শ্রোতাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত