
সারা বছর দেশের প্রেক্ষাগৃহে নিয়মিত সিনেমা মুক্তি না পেলেও ঈদ এলেই পাল্টে যায় চিত্র। তড়িঘড়ি করে নির্মাণ শেষ করে ঈদে আসতে চান নির্মাতারা। এই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ঈদের সিনেমার সংখ্যা বাড়ছেই। গত বছর রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছিল ৮টি সিনেমা। এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩। নিকট অতীতে এক ঈদে এত সিনেমা মুক্তির নজির নেই। দেশে হলের সংখ্যা কম থাকায় এত সিনেমা কোথায় চলবে, লগ্নি উঠে আসবে কি না, এই চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে সংশ্লিষ্টব্যক্তিদের। তবে মুক্তির সিদ্ধান্তে অনড় নির্মাতা-প্রযোজকেরা। সবাই নিজেদের জায়গা থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার।
আলোচনায় এগিয়ে শাকিব ও রাজ
ঈদের সিনেমার আলোচনায় এগিয়ে রয়েছে শাকিব খান ও শরিফুল রাজ। গত বছর হিমেল আশরাফের পরিচালনায় ‘প্রিয়তমা’ দিয়ে চমকে দিয়েছিলেন শাকিব খান। এবার একই পরিচালকের ‘রাজকুমার’ সিনেমায় দেখা যাবে তাঁকে। তবে সিনেমার গানগুলো তেমন আলোচনা সৃষ্টি করতে পারেনি যেমনটা হয়েছিল প্রিয়তমার বেলায়। বিশেষ করে ‘আমি একাই রাজকুমার’ গানটি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রায় দেড় বছর পর নতুন সিনেমা নিয়ে আসছেন শরিফুল রাজ। ঈদে একটি নয়, তিনটি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে তাঁর। গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’, মোস্তফা কামাল রাজের ‘ওমর’ ও মিশুক মনি পরিচালিত ‘দেয়ালের দেশ’। গান, টিজার ও ট্রেলার প্রকাশের পর প্রশংসিত হচ্ছে সিনেমা তিনটি।
প্রচারণার হাতিয়ার এখন সোশ্যাল মিডিয়া
একসময় সিনেমা মুক্তির আগে দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগানো হতো, টিভি ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপা হতো, মাইকিং করতে দেখা যেত। সময়ের সঙ্গে প্রচারণায় এসেছে ভিন্নতা। প্রচারণায় সবাই এখন মনোযোগী সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মাধ্যমে। সেখানেই সিনেমার গান, টিজার ও ট্রেলার রিলিজ হচ্ছে। অভিনয়শিল্পীরা তাঁদের ফেসবুক পেজ ও প্রোফাইলে শেয়ার দিয়ে হলে দর্শকদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। অনেক তারকা আবার ভিডিও বার্তায় শুভকামনা জানাচ্ছেন। এদিকে এগিয়ে আছে মোস্তফা কামাল রাজের ওমর। এই সিনেমাকে শুভকামনা জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন ৯১ জন তারকা।
হল নিয়ে শঙ্কা
২০০৯ সালের এক ঈদে ১১টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। তখনো দেশে হল ছিল প্রায় পাঁচ শ। এরপর থেকেই পর্যায়ক্রমে কমতে থাকে হলের সংখ্যা। এখন দেশে নিয়মিত সিঙ্গেল স্ক্রিন চালু রয়েছে ৬০টির মতো। ঈদের সময় এই তালিকা বেড়ে হয় ১৫০ থেকে ১৬০টির মতো। সঙ্গে আছে মাল্টিপ্লেক্সে ৩৫টি হল। এই অবস্থায় এক ঈদে ১৩টি সিনেমা মুক্তি দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত মনে করছেন সিনেমাসংশ্লিষ্টরা। ঈদের আর দুই দিন বাকি থাকলেও এখনো হল সংখ্যা চূড়ান্ত করতে পারেনি বেশির ভাগ সিনেমা। অনেকেই মনে করছেন শেষের দিকে এসে ছিটকে যেতে পারে মুক্তির তালিকায় থাকা একাধিক সিনেমা। হল নিয়ে শঙ্কা থাকলেও প্রচারণায় থেমে নেই সিনেমার কলাকুশলীরা। হলের জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান তাঁরা। এখন দেখার বিষয়, শঙ্কা কাটিয়ে মুক্তির তালিকায় থাকা সিনেমাগুলো আলোর মুখ দেখে কি না।
মুক্তির তালিকায় থাকা ১৩ সিনেমা
রাজকুমার
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: হিমেল আশরাফ
অভিনয়ে: শাকিব খান, কোর্টনি কফি, তারিক আনাম খান
প্রযোজনা: আরশাদ আদনান
গল্প: প্রেম, পারিবারিক সম্পর্ক আর স্বপ্নবাজ এক তরুণের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে রাজকুমার।
কাজলরেখা
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: গিয়াস উদ্দিন সেলিম
অভিনয়ে: শরিফুল রাজ, মন্দিরা চক্রবর্তী, রাফিয়াত রশীদ মিথিলা, ইরেশ যাকের প্রমুখ
প্রযোজনা: সরকারি অনুদানে নির্মিত
গল্প: কিশোরী কাজলরেখাকে বনবাসে পাঠায় তার বাবা। সেখানে সুচরাজার জীবন বাঁচায় কাজলরেখা। তাকে বিয়ে করতে চায় সুচরাজা। কিন্তু পরচিয় গোপন করে সুচরাজাকে বিয়ে করে কঙ্কনদাসী।
দেয়ালের দেশ
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: মিশুক মনি
অভিনয়ে: শরিফুল রাজ, শবনম বুবলী, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা প্রমুখ
প্রযোজনা: সরকারি অনুদানে নির্মিত
গল্প: নিম্নশ্রেণির দুজন মানুষ রাজ ও বুবলীর মধ্যে প্রেম হয়। হঠাৎ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় বুবলী। এরপর তার লাশ নিয়েই বসবাস শুরু করে রাজ।
ওমর
চিত্রনাট্য: সিদ্দিক আহমেদ
পরিচালনা: মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ
অভিনয়ে: শরিফুল রাজ, ফজলুর রহমান বাবু, শহীদুজ্জামান সেলিম, নাসির উদ্দীন খান প্রমুখ
প্রযোজনা: খোরশেদ আলম
গল্প: লন্ডন থেকে বাংলাদেশে বেড়াতে আসে ছোট মির্জার বন্ধু রাজ। হঠাৎ খুন হয় ছোট মির্জা। সেই খুনকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে রাজ ও নাসির উদ্দীন। অন্যদিকে ভাইকে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে বড় মির্জা চরিত্রের শহীদুজ্জামান সেলিম।
মায়া- দ্য লাভ
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: জসিম উদ্দিন জাকির
অভিনয়ে: আনিসুর রহমান মিলন, সাইমন সাদিক, বুবলী, রোশান প্রমুখ।
প্রযোজনা: আলীনুর আসিক ভূঁইয়া
গল্প: রোশান ও বুবলী একে অপরকে ভালোবাসে। তাদের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মাহমুদুল হাসান মিঠু। এদিকে বুবলীকে মনে মনে ভালোবাসে সাইমন। বুবলীর জন্য সব করতে প্রস্তুত সে। অন্যদিকে, নিজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা ছেড়ে বুবলীর টানে চলে আসে মিলন।
লিপস্টিক
চিত্রনাট্য: আব্দুল্লাহ্ জহির বাবু
পরিচালনা: কামরুজ্জামান রোমান
অভিনয়ে: আদর আজাদ, পূজা চেরি প্রমুখ
প্রযোজনা: স্মার্ট মাল্টিমিডিয়া
গল্প: গ্রামের কিশোরী বুচির চোখেমুখে নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন। বুচির নায়িকা হওয়ার জার্নি নিয়েই তৈরি হয়েছে লিপস্টিক।
সোনার চর
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: জাহিদ হোসেন
অভিনয়ে: মৌসুমী, ওমর সানী, জায়েদ খান, স্নিগ্ধা প্রমুখ।
প্রযোজনা: জাহাঙ্গীর শিকদার
গল্প: ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ফিরে আসার সময়ের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি।
মেঘনা কন্যা
চিত্রনাট্য: ফাহমিদুর রহমান ও আহমেদ খান হীরক
পরিচালনা: ফুয়াদ চৌধুরী
অভিনয়ে: ফজলুর রহমান বাবু, কাজী নওশাবা, সাজ্জাদ হোসেন, সেমন্তী সৌমি প্রমুখ।
প্রযোজনা: আজাদ ফিল্মস এবং এস জে মোশনস পিকচার্স
গল্প: নারী পাচারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম ও শহরের দুই নারীর শিকল ভাঙার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি।
আহারে জীবন
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: ছটকু আহমেদ
অভিনয়ে: ফেরদৌস আহমেদ, পূর্ণিমা, জয় চৌধুরী, মিশা সওদাগর প্রমুখ।
প্রযোজনা: সরকারি অনুদানে নির্মিত
গল্প: করোনাকালীন সময়ের অসহায়ত্ব, মানবিকতা আর সম্পর্কের টানাপোড়েনের নানা গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি।
পটু
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: আহমেদ হুমায়ুন
অভিনয়ে: ইভান সাইর, আফরা শাইয়ারা, শোয়েব মনির, দিলরুবা হোসেন মুখ।
প্রযোজনা: জাজ মাল্টিমিডিয়া
গল্প: রাজশাহীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জীবনাচরণের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমার চিত্রনাট্য।
মোনা: জ্বীন ২
পরিচালনা: কামরুজ্জামান রোমান
অভিনয়ে: তারিক আনাম খান, আহমেদ রুবেল, সুপ্রভাত ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
প্রযোজনা: জাজ মাল্টিমিডিয়া
গল্প: জিনের উৎপাতে বাড়ির মালিক নিজ বাড়ি ছেড়ে মাদ্রাসা ভাড়া দেয়। কিন্তু মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষক জিনের উৎপাতে সেই বাড়ি ছেড়ে দেয়। জিন কেন উৎপাত করছে? সেই রহস্য নিয়েই নিয়েই মোনা সিনেমার গল্প।
ডেডবডি
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: মোহাম্মদ ইকবাল
অভিনয়ে: ওমর সানী, রোশান, শ্যামল মাওলা, অন্বেষা রায় প্রমুখ।
প্রযোজনা: মোহাম্মদ ইকবাল
গল্প: ঘুমালেই স্বপ্নে পচা-গলা লাশ দেখতে পায় শ্যামল মাওলা। একসময় তাদের বশে চলে যায় সে। আক্রমণ করতে শুরু করে নারীদের। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা শ্যামলকে ঠেকাতে এগিয়ে আসে ওমর সানী ও জিয়াউল রোশান।
গ্রীন কার্ড
পরিচালনা: কাজী হায়াত ও রওশন আরা নিপা।
অভিনয়ে: কাজী মারুফ, নুসরাত তিসা, নাজিদা সৈয়দ প্রমুখ।
প্রযোজনা: কাজী মারুফ
গল্প: উন্নত জীবনের আশায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো এক ছেলে কাজী মারুফ। সেখানে স্থায়ী হওয়ার গ্রিন কার্ডের প্রয়োজন। সেই কার্ড পাওয়া কতটা কঠিন এবং কার্ড না পেলে যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, তা দেখা যাবে এ সিনেমায়।

সারা বছর দেশের প্রেক্ষাগৃহে নিয়মিত সিনেমা মুক্তি না পেলেও ঈদ এলেই পাল্টে যায় চিত্র। তড়িঘড়ি করে নির্মাণ শেষ করে ঈদে আসতে চান নির্মাতারা। এই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ঈদের সিনেমার সংখ্যা বাড়ছেই। গত বছর রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছিল ৮টি সিনেমা। এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩। নিকট অতীতে এক ঈদে এত সিনেমা মুক্তির নজির নেই। দেশে হলের সংখ্যা কম থাকায় এত সিনেমা কোথায় চলবে, লগ্নি উঠে আসবে কি না, এই চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে সংশ্লিষ্টব্যক্তিদের। তবে মুক্তির সিদ্ধান্তে অনড় নির্মাতা-প্রযোজকেরা। সবাই নিজেদের জায়গা থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার।
আলোচনায় এগিয়ে শাকিব ও রাজ
ঈদের সিনেমার আলোচনায় এগিয়ে রয়েছে শাকিব খান ও শরিফুল রাজ। গত বছর হিমেল আশরাফের পরিচালনায় ‘প্রিয়তমা’ দিয়ে চমকে দিয়েছিলেন শাকিব খান। এবার একই পরিচালকের ‘রাজকুমার’ সিনেমায় দেখা যাবে তাঁকে। তবে সিনেমার গানগুলো তেমন আলোচনা সৃষ্টি করতে পারেনি যেমনটা হয়েছিল প্রিয়তমার বেলায়। বিশেষ করে ‘আমি একাই রাজকুমার’ গানটি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রায় দেড় বছর পর নতুন সিনেমা নিয়ে আসছেন শরিফুল রাজ। ঈদে একটি নয়, তিনটি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে তাঁর। গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’, মোস্তফা কামাল রাজের ‘ওমর’ ও মিশুক মনি পরিচালিত ‘দেয়ালের দেশ’। গান, টিজার ও ট্রেলার প্রকাশের পর প্রশংসিত হচ্ছে সিনেমা তিনটি।
প্রচারণার হাতিয়ার এখন সোশ্যাল মিডিয়া
একসময় সিনেমা মুক্তির আগে দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগানো হতো, টিভি ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপা হতো, মাইকিং করতে দেখা যেত। সময়ের সঙ্গে প্রচারণায় এসেছে ভিন্নতা। প্রচারণায় সবাই এখন মনোযোগী সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মাধ্যমে। সেখানেই সিনেমার গান, টিজার ও ট্রেলার রিলিজ হচ্ছে। অভিনয়শিল্পীরা তাঁদের ফেসবুক পেজ ও প্রোফাইলে শেয়ার দিয়ে হলে দর্শকদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। অনেক তারকা আবার ভিডিও বার্তায় শুভকামনা জানাচ্ছেন। এদিকে এগিয়ে আছে মোস্তফা কামাল রাজের ওমর। এই সিনেমাকে শুভকামনা জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন ৯১ জন তারকা।
হল নিয়ে শঙ্কা
২০০৯ সালের এক ঈদে ১১টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। তখনো দেশে হল ছিল প্রায় পাঁচ শ। এরপর থেকেই পর্যায়ক্রমে কমতে থাকে হলের সংখ্যা। এখন দেশে নিয়মিত সিঙ্গেল স্ক্রিন চালু রয়েছে ৬০টির মতো। ঈদের সময় এই তালিকা বেড়ে হয় ১৫০ থেকে ১৬০টির মতো। সঙ্গে আছে মাল্টিপ্লেক্সে ৩৫টি হল। এই অবস্থায় এক ঈদে ১৩টি সিনেমা মুক্তি দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত মনে করছেন সিনেমাসংশ্লিষ্টরা। ঈদের আর দুই দিন বাকি থাকলেও এখনো হল সংখ্যা চূড়ান্ত করতে পারেনি বেশির ভাগ সিনেমা। অনেকেই মনে করছেন শেষের দিকে এসে ছিটকে যেতে পারে মুক্তির তালিকায় থাকা একাধিক সিনেমা। হল নিয়ে শঙ্কা থাকলেও প্রচারণায় থেমে নেই সিনেমার কলাকুশলীরা। হলের জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান তাঁরা। এখন দেখার বিষয়, শঙ্কা কাটিয়ে মুক্তির তালিকায় থাকা সিনেমাগুলো আলোর মুখ দেখে কি না।
মুক্তির তালিকায় থাকা ১৩ সিনেমা
রাজকুমার
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: হিমেল আশরাফ
অভিনয়ে: শাকিব খান, কোর্টনি কফি, তারিক আনাম খান
প্রযোজনা: আরশাদ আদনান
গল্প: প্রেম, পারিবারিক সম্পর্ক আর স্বপ্নবাজ এক তরুণের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে রাজকুমার।
কাজলরেখা
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: গিয়াস উদ্দিন সেলিম
অভিনয়ে: শরিফুল রাজ, মন্দিরা চক্রবর্তী, রাফিয়াত রশীদ মিথিলা, ইরেশ যাকের প্রমুখ
প্রযোজনা: সরকারি অনুদানে নির্মিত
গল্প: কিশোরী কাজলরেখাকে বনবাসে পাঠায় তার বাবা। সেখানে সুচরাজার জীবন বাঁচায় কাজলরেখা। তাকে বিয়ে করতে চায় সুচরাজা। কিন্তু পরচিয় গোপন করে সুচরাজাকে বিয়ে করে কঙ্কনদাসী।
দেয়ালের দেশ
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: মিশুক মনি
অভিনয়ে: শরিফুল রাজ, শবনম বুবলী, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা প্রমুখ
প্রযোজনা: সরকারি অনুদানে নির্মিত
গল্প: নিম্নশ্রেণির দুজন মানুষ রাজ ও বুবলীর মধ্যে প্রেম হয়। হঠাৎ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় বুবলী। এরপর তার লাশ নিয়েই বসবাস শুরু করে রাজ।
ওমর
চিত্রনাট্য: সিদ্দিক আহমেদ
পরিচালনা: মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ
অভিনয়ে: শরিফুল রাজ, ফজলুর রহমান বাবু, শহীদুজ্জামান সেলিম, নাসির উদ্দীন খান প্রমুখ
প্রযোজনা: খোরশেদ আলম
গল্প: লন্ডন থেকে বাংলাদেশে বেড়াতে আসে ছোট মির্জার বন্ধু রাজ। হঠাৎ খুন হয় ছোট মির্জা। সেই খুনকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে রাজ ও নাসির উদ্দীন। অন্যদিকে ভাইকে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে বড় মির্জা চরিত্রের শহীদুজ্জামান সেলিম।
মায়া- দ্য লাভ
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: জসিম উদ্দিন জাকির
অভিনয়ে: আনিসুর রহমান মিলন, সাইমন সাদিক, বুবলী, রোশান প্রমুখ।
প্রযোজনা: আলীনুর আসিক ভূঁইয়া
গল্প: রোশান ও বুবলী একে অপরকে ভালোবাসে। তাদের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মাহমুদুল হাসান মিঠু। এদিকে বুবলীকে মনে মনে ভালোবাসে সাইমন। বুবলীর জন্য সব করতে প্রস্তুত সে। অন্যদিকে, নিজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা ছেড়ে বুবলীর টানে চলে আসে মিলন।
লিপস্টিক
চিত্রনাট্য: আব্দুল্লাহ্ জহির বাবু
পরিচালনা: কামরুজ্জামান রোমান
অভিনয়ে: আদর আজাদ, পূজা চেরি প্রমুখ
প্রযোজনা: স্মার্ট মাল্টিমিডিয়া
গল্প: গ্রামের কিশোরী বুচির চোখেমুখে নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন। বুচির নায়িকা হওয়ার জার্নি নিয়েই তৈরি হয়েছে লিপস্টিক।
সোনার চর
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: জাহিদ হোসেন
অভিনয়ে: মৌসুমী, ওমর সানী, জায়েদ খান, স্নিগ্ধা প্রমুখ।
প্রযোজনা: জাহাঙ্গীর শিকদার
গল্প: ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ফিরে আসার সময়ের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি।
মেঘনা কন্যা
চিত্রনাট্য: ফাহমিদুর রহমান ও আহমেদ খান হীরক
পরিচালনা: ফুয়াদ চৌধুরী
অভিনয়ে: ফজলুর রহমান বাবু, কাজী নওশাবা, সাজ্জাদ হোসেন, সেমন্তী সৌমি প্রমুখ।
প্রযোজনা: আজাদ ফিল্মস এবং এস জে মোশনস পিকচার্স
গল্প: নারী পাচারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম ও শহরের দুই নারীর শিকল ভাঙার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি।
আহারে জীবন
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: ছটকু আহমেদ
অভিনয়ে: ফেরদৌস আহমেদ, পূর্ণিমা, জয় চৌধুরী, মিশা সওদাগর প্রমুখ।
প্রযোজনা: সরকারি অনুদানে নির্মিত
গল্প: করোনাকালীন সময়ের অসহায়ত্ব, মানবিকতা আর সম্পর্কের টানাপোড়েনের নানা গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি।
পটু
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: আহমেদ হুমায়ুন
অভিনয়ে: ইভান সাইর, আফরা শাইয়ারা, শোয়েব মনির, দিলরুবা হোসেন মুখ।
প্রযোজনা: জাজ মাল্টিমিডিয়া
গল্প: রাজশাহীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জীবনাচরণের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমার চিত্রনাট্য।
মোনা: জ্বীন ২
পরিচালনা: কামরুজ্জামান রোমান
অভিনয়ে: তারিক আনাম খান, আহমেদ রুবেল, সুপ্রভাত ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
প্রযোজনা: জাজ মাল্টিমিডিয়া
গল্প: জিনের উৎপাতে বাড়ির মালিক নিজ বাড়ি ছেড়ে মাদ্রাসা ভাড়া দেয়। কিন্তু মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষক জিনের উৎপাতে সেই বাড়ি ছেড়ে দেয়। জিন কেন উৎপাত করছে? সেই রহস্য নিয়েই নিয়েই মোনা সিনেমার গল্প।
ডেডবডি
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: মোহাম্মদ ইকবাল
অভিনয়ে: ওমর সানী, রোশান, শ্যামল মাওলা, অন্বেষা রায় প্রমুখ।
প্রযোজনা: মোহাম্মদ ইকবাল
গল্প: ঘুমালেই স্বপ্নে পচা-গলা লাশ দেখতে পায় শ্যামল মাওলা। একসময় তাদের বশে চলে যায় সে। আক্রমণ করতে শুরু করে নারীদের। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা শ্যামলকে ঠেকাতে এগিয়ে আসে ওমর সানী ও জিয়াউল রোশান।
গ্রীন কার্ড
পরিচালনা: কাজী হায়াত ও রওশন আরা নিপা।
অভিনয়ে: কাজী মারুফ, নুসরাত তিসা, নাজিদা সৈয়দ প্রমুখ।
প্রযোজনা: কাজী মারুফ
গল্প: উন্নত জীবনের আশায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো এক ছেলে কাজী মারুফ। সেখানে স্থায়ী হওয়ার গ্রিন কার্ডের প্রয়োজন। সেই কার্ড পাওয়া কতটা কঠিন এবং কার্ড না পেলে যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, তা দেখা যাবে এ সিনেমায়।

ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক।
১৮ ঘণ্টা আগে
যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি।
১৮ ঘণ্টা আগে
ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
১৮ ঘণ্টা আগে
১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
১৮ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক। তাঁর হাতেই অনেকখানি জীবনবোধ শিখেছে, আন্তর্জাতিকতা পেয়েছে বাংলা চলচ্চিত্র। ঢাকায় তাঁর জন্ম। রাজশাহীতে যৌবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। দেশভাগের কারণে ঠাঁই হয় কলকাতায়। নিজের শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার এই কষ্ট সারা জীবন তাড়িয়ে বেড়িয়েছে ঋত্বিক ঘটককে। তাঁর প্রতিটি কাজেও সেটাই হয়ে উঠেছে প্রধান বিষয়। আজ এই বাংলা চলচ্চিত্রের দামাল প্রতিভার জন্মশতবর্ষ। এ উপলক্ষে ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে বিশেষ আয়োজন।

ঋত্বিক আমার থেকেও অনেক বেশি বাঙালি
সত্যজিৎ রায়, নির্মাতা
ঋত্বিকের সঙ্গে সামনাসামনি পরিচয় হবার আগে আমি তাঁকে প্রথম চিনি নিমাই ঘোষের ‘ছিন্নমূল’ সিনেমার অভিনেতা হিসেবে। অরোরা কোম্পানির আপিসে ঋত্বিকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তার কিছু আগে ‘পথের পাঁচালী’ মুক্তি পেয়েছে, ঋত্বিক সে ছবি দেখেছে, এবং তার খুব বেশি রকম ভালো লেগেছিল। সে কথা সে প্রাণ খুলে আমার কাছে বলে। কিন্তু আমার কাছে সবচাইতে ভালো লেগেছিল, সে যেভাবে ছবিটাকে বিশ্লেষণ করেছিল, তাতে আমার মনে হয়েছিল, ঋত্বিক যদি ছবি করে তাহলে সে খুবই ভালো করবে।
‘অযান্ত্রিক’ ছবির প্রথম শোতে আমি উপস্থিত ছিলাম। দেখে বুঝতে পেরেছিলাম, একজন সত্যিকারের শিল্পী যদি কাজের সুযোগ পায়, তাহলে সে কতটা এগিয়ে যেতে পারে! উনিশ শ ত্রিশ বা পঁচিশ থেকে শুরু করে প্রায় ষাট অবধি আমরা হলিউডের বাইরে খুব বেশি ছবি দেখার সুযোগ পাইনি। আমাদের সকলের মধ্যেই তাই কিছু কিছু হলিউডের প্রভাব ঢুকে পড়েছে। কিন্তু ঋত্বিক এক রহস্যময় কারণে সম্পূর্ণ সে প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল, তার মধ্যে হলিউডের কোনো ছাপ নেই। এটা যে কী করে হয়েছে, সেটা আমার কাছে রহস্য হয়ে রয়ে গেছে। ঋত্বিক মনেপ্রাণে বাঙালি পরিচালক ছিল, বাঙালি শিল্পী ছিল—আমার থেকেও অনেক বেশি বাঙালি। আমার কাছে সেইটেই তার সবচেয়ে বড় পরিচয় এবং তার সবচেয়ে মূল্যবান এবং লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য।

ঋত্বিক ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া
মৃণাল সেন, নির্মাতা
ঋত্বিক, সলিল চৌধুরী, তাপস সেন, হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়, বংশী চন্দ্রগুপ্ত, নৃপেন গঙ্গোপাধ্যায় আর আমি; এই নিয়ে আমাদের একটা ছোট্ট দল ছিল তখন। কখনো বিজন ভট্টাচার্য এসে জুটতেন, কখনোবা কালী বন্দ্যোপাধ্যায়। ঋত্বিক ছিল দলের সবচেয়ে লম্বাটে, সবচেয়ে রোগাটে এবং অবশ্যই সবচেয়ে ডাকসাইটে শরিক। সকাল হতেই বেরিয়ে পড়তাম, হাজরা রোডের ওপর ছোট্ট একটা চায়ের দোকানে ভিড় করতাম। সকাল আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত চলত একটানা আসর। সূর্যের তলায় যা কিছু ছিল সবই তুলে ধরতাম চায়ের টেবিলে, বিচারে আর বিশ্লেষণে মুখর হয়ে উঠতাম প্রতি মুহূর্তে। কিন্তু বারবার নানা কথার মধ্যেও যে প্রশ্নে, যে তর্কে, যে বিষয়ে ফিরে আসতাম তা হলো সিনেমা। সিনেমাকে বিপ্লবের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে আমরা চলতে শিখেছিলাম সেদিন থেকেই। এই প্রাণচঞ্চল আসরগুলোয় যার গলা সবচেয়ে উঁচু পর্দায় বাঁধা ছিল, সে হলো ঋত্বিক। ঋত্বিক ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া। কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করত না।
ঋত্বিকের বেপরোয়া মেজাজ পরবর্তীকালে দর্শক প্রত্যক্ষ করেছেন ‘অযান্ত্রিক’-এ, ‘মেঘে ঢাকা তারা’য়, ‘সুবর্ণরেখা’য়, ওর কথাবার্তায়, ওর লিখিত বক্তব্যে। আমরা ঝগড়াও করেছি প্রচুর। তখন এবং পরবর্তী জীবনে। ঝগড়া করেছি, মতান্তর ঘটেছে, আবার সময় আর ঘটনার মধ্য দিয়ে মিশে গিয়েছি আগেকার মতোই, একসঙ্গে চলেছি।

অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে তাঁর কাজগুলো
মার্টিন স্করসেসি, হলিউড নির্মাতা
সত্যজিৎ রায় একবার ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে বলেছিলেন, তাঁর কাছে হয়তো হলিউডের অস্তিত্বই ছিল না কখনো। কথাটা খুবই দারুণ লেগেছিল। আমরা ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড সিনেমা প্রজেক্ট শুরু করি। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে কখনো কখনো অনেক সিনেমা আড়ালে পড়ে গেছে, সেসব সিনেমাকে সংরক্ষণ করে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। অনেক সময় এমন হয়, নির্মাতার জীবদ্দশায় তাঁর কাজের যথেষ্ট স্বীকৃতি মেলে না। ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল। জীবনের শেষ প্রান্তে গিয়ে সিনেমাটি বানিয়েছিলেন তিনি।
অনেক বছর ধরে পশ্চিমাদের কাছে ভারতীয় চলচ্চিত্র মানেই ছিল সত্যজিৎ রায়। তারপর আসে বলিউড। সময় যত গড়িয়েছে, আমাদের দৃষ্টিসীমা যত প্রসারিত হয়েছে, ঋত্বিক ঘটকের মতো অনেক প্রতিভা বেরিয়ে আসছে। তাঁর প্রথম সিনেমা ‘নাগরিক’ তৈরি হয়েছিল ‘পথের পাঁচালী’রও বছরখানেক আগে। সময়মতো মুক্তি পেলে এটিই হতে পারত প্রথম বাংলা আর্ট ফিল্ম। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ শিল্পী ছিলেন ঘটক। মাত্র ৮টি সিনেমা তৈরি করেছেন। তবে সিনেমা সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল খুবই পরিষ্কার। তাঁর প্রতিটি সিনেমা ভিজ্যুয়ালি এবং থিমের জায়গা থেকে খুবই সমৃদ্ধ। ভারতের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে তাঁর কাজগুলো।
একনজরে ঋত্বিক ঘটক

ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক। তাঁর হাতেই অনেকখানি জীবনবোধ শিখেছে, আন্তর্জাতিকতা পেয়েছে বাংলা চলচ্চিত্র। ঢাকায় তাঁর জন্ম। রাজশাহীতে যৌবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। দেশভাগের কারণে ঠাঁই হয় কলকাতায়। নিজের শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার এই কষ্ট সারা জীবন তাড়িয়ে বেড়িয়েছে ঋত্বিক ঘটককে। তাঁর প্রতিটি কাজেও সেটাই হয়ে উঠেছে প্রধান বিষয়। আজ এই বাংলা চলচ্চিত্রের দামাল প্রতিভার জন্মশতবর্ষ। এ উপলক্ষে ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে বিশেষ আয়োজন।

ঋত্বিক আমার থেকেও অনেক বেশি বাঙালি
সত্যজিৎ রায়, নির্মাতা
ঋত্বিকের সঙ্গে সামনাসামনি পরিচয় হবার আগে আমি তাঁকে প্রথম চিনি নিমাই ঘোষের ‘ছিন্নমূল’ সিনেমার অভিনেতা হিসেবে। অরোরা কোম্পানির আপিসে ঋত্বিকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তার কিছু আগে ‘পথের পাঁচালী’ মুক্তি পেয়েছে, ঋত্বিক সে ছবি দেখেছে, এবং তার খুব বেশি রকম ভালো লেগেছিল। সে কথা সে প্রাণ খুলে আমার কাছে বলে। কিন্তু আমার কাছে সবচাইতে ভালো লেগেছিল, সে যেভাবে ছবিটাকে বিশ্লেষণ করেছিল, তাতে আমার মনে হয়েছিল, ঋত্বিক যদি ছবি করে তাহলে সে খুবই ভালো করবে।
‘অযান্ত্রিক’ ছবির প্রথম শোতে আমি উপস্থিত ছিলাম। দেখে বুঝতে পেরেছিলাম, একজন সত্যিকারের শিল্পী যদি কাজের সুযোগ পায়, তাহলে সে কতটা এগিয়ে যেতে পারে! উনিশ শ ত্রিশ বা পঁচিশ থেকে শুরু করে প্রায় ষাট অবধি আমরা হলিউডের বাইরে খুব বেশি ছবি দেখার সুযোগ পাইনি। আমাদের সকলের মধ্যেই তাই কিছু কিছু হলিউডের প্রভাব ঢুকে পড়েছে। কিন্তু ঋত্বিক এক রহস্যময় কারণে সম্পূর্ণ সে প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল, তার মধ্যে হলিউডের কোনো ছাপ নেই। এটা যে কী করে হয়েছে, সেটা আমার কাছে রহস্য হয়ে রয়ে গেছে। ঋত্বিক মনেপ্রাণে বাঙালি পরিচালক ছিল, বাঙালি শিল্পী ছিল—আমার থেকেও অনেক বেশি বাঙালি। আমার কাছে সেইটেই তার সবচেয়ে বড় পরিচয় এবং তার সবচেয়ে মূল্যবান এবং লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য।

ঋত্বিক ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া
মৃণাল সেন, নির্মাতা
ঋত্বিক, সলিল চৌধুরী, তাপস সেন, হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়, বংশী চন্দ্রগুপ্ত, নৃপেন গঙ্গোপাধ্যায় আর আমি; এই নিয়ে আমাদের একটা ছোট্ট দল ছিল তখন। কখনো বিজন ভট্টাচার্য এসে জুটতেন, কখনোবা কালী বন্দ্যোপাধ্যায়। ঋত্বিক ছিল দলের সবচেয়ে লম্বাটে, সবচেয়ে রোগাটে এবং অবশ্যই সবচেয়ে ডাকসাইটে শরিক। সকাল হতেই বেরিয়ে পড়তাম, হাজরা রোডের ওপর ছোট্ট একটা চায়ের দোকানে ভিড় করতাম। সকাল আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত চলত একটানা আসর। সূর্যের তলায় যা কিছু ছিল সবই তুলে ধরতাম চায়ের টেবিলে, বিচারে আর বিশ্লেষণে মুখর হয়ে উঠতাম প্রতি মুহূর্তে। কিন্তু বারবার নানা কথার মধ্যেও যে প্রশ্নে, যে তর্কে, যে বিষয়ে ফিরে আসতাম তা হলো সিনেমা। সিনেমাকে বিপ্লবের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে আমরা চলতে শিখেছিলাম সেদিন থেকেই। এই প্রাণচঞ্চল আসরগুলোয় যার গলা সবচেয়ে উঁচু পর্দায় বাঁধা ছিল, সে হলো ঋত্বিক। ঋত্বিক ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া। কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করত না।
ঋত্বিকের বেপরোয়া মেজাজ পরবর্তীকালে দর্শক প্রত্যক্ষ করেছেন ‘অযান্ত্রিক’-এ, ‘মেঘে ঢাকা তারা’য়, ‘সুবর্ণরেখা’য়, ওর কথাবার্তায়, ওর লিখিত বক্তব্যে। আমরা ঝগড়াও করেছি প্রচুর। তখন এবং পরবর্তী জীবনে। ঝগড়া করেছি, মতান্তর ঘটেছে, আবার সময় আর ঘটনার মধ্য দিয়ে মিশে গিয়েছি আগেকার মতোই, একসঙ্গে চলেছি।

অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে তাঁর কাজগুলো
মার্টিন স্করসেসি, হলিউড নির্মাতা
সত্যজিৎ রায় একবার ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে বলেছিলেন, তাঁর কাছে হয়তো হলিউডের অস্তিত্বই ছিল না কখনো। কথাটা খুবই দারুণ লেগেছিল। আমরা ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড সিনেমা প্রজেক্ট শুরু করি। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে কখনো কখনো অনেক সিনেমা আড়ালে পড়ে গেছে, সেসব সিনেমাকে সংরক্ষণ করে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। অনেক সময় এমন হয়, নির্মাতার জীবদ্দশায় তাঁর কাজের যথেষ্ট স্বীকৃতি মেলে না। ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল। জীবনের শেষ প্রান্তে গিয়ে সিনেমাটি বানিয়েছিলেন তিনি।
অনেক বছর ধরে পশ্চিমাদের কাছে ভারতীয় চলচ্চিত্র মানেই ছিল সত্যজিৎ রায়। তারপর আসে বলিউড। সময় যত গড়িয়েছে, আমাদের দৃষ্টিসীমা যত প্রসারিত হয়েছে, ঋত্বিক ঘটকের মতো অনেক প্রতিভা বেরিয়ে আসছে। তাঁর প্রথম সিনেমা ‘নাগরিক’ তৈরি হয়েছিল ‘পথের পাঁচালী’রও বছরখানেক আগে। সময়মতো মুক্তি পেলে এটিই হতে পারত প্রথম বাংলা আর্ট ফিল্ম। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ শিল্পী ছিলেন ঘটক। মাত্র ৮টি সিনেমা তৈরি করেছেন। তবে সিনেমা সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল খুবই পরিষ্কার। তাঁর প্রতিটি সিনেমা ভিজ্যুয়ালি এবং থিমের জায়গা থেকে খুবই সমৃদ্ধ। ভারতের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে তাঁর কাজগুলো।
একনজরে ঋত্বিক ঘটক

সারা বছর দেশের প্রেক্ষাগৃহে নিয়মিত সিনেমা মুক্তি না পেলেও ঈদ এলেই পাল্টে যায় চিত্র। তড়িঘড়ি করে নির্মাণ শেষ করে ঈদে আসতে চান নির্মাতারা। এই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ঈদের সিনেমার সংখ্যা বাড়ছেই। গত বছর রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছিল ৮টি সিনেমা।
০৮ এপ্রিল ২০২৪
যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি।
১৮ ঘণ্টা আগে
ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
১৮ ঘণ্টা আগে
১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
১৮ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অভিনেতা আবুল হায়াত, মফিদুল হক, সুলতানা কামালসহ অনেকে।
রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের বসতভিটায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি। আজ বিকেল ৪টা থেকে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংগীত ও গণসংগীত, প্রদীপ প্রজ্বালন, ঋত্বিককে নিয়ে আলোচনা এবং তাঁর বায়োপিক ‘মেঘে ঢাকা তারা’র প্রদর্শনী।
বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম হাতে নিয়েছে বছরব্যাপী ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠান। আজ বিকেল ৫টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে রয়েছে উদ্বোধনী আয়োজন। প্রদর্শিত হবে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।
আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ সেমিনার ‘ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্র: মালো জীবন-বাস্তবতার মহাকাব্যিক নির্মাণ’। উপস্থিত থাকবেন হাবিবুর রহমান খান, ড. মো. সেলিম রেজা, অধ্যাপক ড. ফাহমিদা আক্তার, ড. জাকির হোসেন রাজু ও অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আজ বেলা ৩টায় রয়েছে ‘শতবর্ষে ঋত্বিক ঘটক’। স্মারক বক্তৃতা দেবেন মইনুদ্দীন খালেদ। বিকেল ৪টায় প্রদর্শিত হবে ‘কোমল গান্ধার’ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ‘অযান্ত্রিক’। আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ।
জহির রায়হান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের আয়োজনে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজে আজ বিকেল ৪টায় রয়েছে ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজন। থাকবে প্রবন্ধ পাঠ, মুক্ত আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
চট্টগ্রাম ফিল্ম ইনস্টিটিউট আয়োজন করেছে তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান। ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে দেখানো হবে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ এবং ৮ নভেম্বর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। ১৪ নভেম্বর একই স্থানে থাকবে স্মারক বক্তৃতা।

যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অভিনেতা আবুল হায়াত, মফিদুল হক, সুলতানা কামালসহ অনেকে।
রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের বসতভিটায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি। আজ বিকেল ৪টা থেকে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংগীত ও গণসংগীত, প্রদীপ প্রজ্বালন, ঋত্বিককে নিয়ে আলোচনা এবং তাঁর বায়োপিক ‘মেঘে ঢাকা তারা’র প্রদর্শনী।
বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম হাতে নিয়েছে বছরব্যাপী ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠান। আজ বিকেল ৫টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে রয়েছে উদ্বোধনী আয়োজন। প্রদর্শিত হবে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।
আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ সেমিনার ‘ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্র: মালো জীবন-বাস্তবতার মহাকাব্যিক নির্মাণ’। উপস্থিত থাকবেন হাবিবুর রহমান খান, ড. মো. সেলিম রেজা, অধ্যাপক ড. ফাহমিদা আক্তার, ড. জাকির হোসেন রাজু ও অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আজ বেলা ৩টায় রয়েছে ‘শতবর্ষে ঋত্বিক ঘটক’। স্মারক বক্তৃতা দেবেন মইনুদ্দীন খালেদ। বিকেল ৪টায় প্রদর্শিত হবে ‘কোমল গান্ধার’ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ‘অযান্ত্রিক’। আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ।
জহির রায়হান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের আয়োজনে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজে আজ বিকেল ৪টায় রয়েছে ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজন। থাকবে প্রবন্ধ পাঠ, মুক্ত আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
চট্টগ্রাম ফিল্ম ইনস্টিটিউট আয়োজন করেছে তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান। ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে দেখানো হবে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ এবং ৮ নভেম্বর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। ১৪ নভেম্বর একই স্থানে থাকবে স্মারক বক্তৃতা।

সারা বছর দেশের প্রেক্ষাগৃহে নিয়মিত সিনেমা মুক্তি না পেলেও ঈদ এলেই পাল্টে যায় চিত্র। তড়িঘড়ি করে নির্মাণ শেষ করে ঈদে আসতে চান নির্মাতারা। এই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ঈদের সিনেমার সংখ্যা বাড়ছেই। গত বছর রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছিল ৮টি সিনেমা।
০৮ এপ্রিল ২০২৪
ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক।
১৮ ঘণ্টা আগে
ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
১৮ ঘণ্টা আগে
১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
১৮ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
১৯৬৪-৬৫ সালে পত্রপত্রিকায় ঋত্বিক ঘটকের কিছু লেখা পড়ে আগ্রহ তৈরি হয়। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের উপায় হয় ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একুশে ফেব্রুয়ারি পালন উপলক্ষে আমাদের এক সংগঠনের আয়োজনে সত্যজিৎ রায়, শ্যামল মিত্র ঢাকায় আসেন। সত্যজিৎ রায়ের পিএস বরুণ বক্সি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সত্যজিৎ বাবুর ছবি করবেন?’ বললাম, সিনেমা একটি করতে পারি, যদি ঋত্বিক ঘটককে পাওয়া যায়। মাস দেড়েক পরে ফোন দিলেন, ‘ঋত্বিককে পেয়েছি, চলে আসেন’। চলে গেলাম। ঋত্বিকের সঙ্গে দেখা হলো, কথা হলো। তাঁর ছবি দেখলাম, স্পেশালি অ্যারেঞ্জ করা হলো ‘সুবর্ণরেখা’। দেখার পর মনে হচ্ছিল, কোনো মানুষ এই ছবি বানায়নি। তাঁকে বললাম, ‘আমি আপনার কোন সিনেমা করব?’ তিনি বললেন, ‘আমার তো তিতাস করার শখ।’ বললাম, ডান। একটি ট্রাস্টের কাছে তিতাসের রাইট ছিল। তাতে ট্রাস্টি ছিলেন সত্যজিৎ রায়। যখন জানালাম, আমরা ঋত্বিক ঘটককে দিয়ে উপন্যাসটি অবলম্বনে সিনেমা করতে চাই, তখন সত্যজিৎ বলেন, ‘ঋত্বিকবাবু যদি করেন, তাহলে এটি দেওয়া যেতে পারে।’
ঋত্বিক ঘটককে লোকেশন দেখানোর জন্য ঢাকায় নিয়ে এলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আরিচা, নারায়ণগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে লোকেশন দেখলেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই শুটিং শুরু হয়েছে, ১৯৭৩ সালের ২৭ জুলাই রিলিজ হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি দিন ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে এক খাটে ঘুমিয়েছি, যতবার ইন্ডিয়ায় গেছেন, সঙ্গে গেছি। এক কাজে মুম্বাই গেলেন, আমিও গেলাম। তাঁর তো ঠিক নেই, খেয়ালি মানুষ—তাই সব সময় তাঁর সঙ্গে থাকতাম।
কলাকুশলী, অভিনেতা—সব তিনি দেখে দেখে নিয়েছেন। আমরা তাঁকে সাহায্য করেছি। তিতাসের পারে প্রায় ২৫ শতাংশ শুটিং হয়েছে। সেখানে আমরা সেট তৈরি করে শুটিং করেছি। আমাদের কাছে একটি বড় জেনারেটর ছিল, সেটি লঞ্চের সঙ্গে বাঁধা থাকত। তখন বর্ষাকাল, পানি অনেক। কোনো অসুবিধা ছিল না। যেখানে খুশি জেনারেটর লাগিয়ে নিতাম। লঞ্চে অবশ্য অনেক কষ্ট করে শুটিং ইউনিট থাকত। এফডিসিতে তিন-চার দিন ইনডোর শুটিং হয়েছে। জেলেপাড়ার শুটিং দুই জায়গায় হয়েছে। কিছু আরিচায়, কিছু তিতাসের ঘাটে।
শুটিং, ডাবিং—সব কাজেই ছিলেন ঋত্বিক ঘটক। এডিটিংয়ের শেষ পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে চলে গেলেন। যাওয়ার সময় এডিটরকে বললেন, ‘এই বাকিটুকু কেটেকুটে ছবিটিকে রিলিজ করে দেবেন।’ বললাম, আর কেউ আপনার ছবিতে হাত দেবে না। লিখে দেন। তিনি এডিটরকে লিখিত পারমিশন দিয়ে গেলেন। সুস্থ হয়ে ফিরে এসে দু-তিনটি শট অ্যাডজাস্ট করা ছাড়া আর কিছুই করেননি। অনেকে মনে করেন, তিনি এডিট করেননি। সব বাজে কথা। এখন আমরা ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ যেভাবে দেখি, সেটি তাঁরই পরিকল্পনায়, ঋত্বিকেরই হাতে তৈরি।
এ সিনেমায় ঋত্বিক ঘটক আর ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খান ছাড়া বাইরের কেউ কাজ করেননি। সবাই বাংলাদেশের। ক্যামেরা, এডিটিং, সাউন্ড—সবই এখানকার। তিতাস একটি কমপ্লিট বাংলাদেশি ফিল্ম। কোনোভাবেই যৌথ প্রযোজনার নয়। তিতাস করতে খরচ হয়েছিল ৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা। তখন ১ লাখ টাকায় একটি সিনেমা হতো। আমার আট গুণ খরচ হয়েছিল। ফেরত এসেছিল এক লাখ ২৩ হাজার টাকা। আমি এখনো বছরে এক-দুইবার দেখি সিনেমাটি। যত বয়স বাড়ছে, ততই ভিন্নমাত্রায় তিতাস ধরা পড়ছে আমার চোখে।

ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
১৯৬৪-৬৫ সালে পত্রপত্রিকায় ঋত্বিক ঘটকের কিছু লেখা পড়ে আগ্রহ তৈরি হয়। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের উপায় হয় ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একুশে ফেব্রুয়ারি পালন উপলক্ষে আমাদের এক সংগঠনের আয়োজনে সত্যজিৎ রায়, শ্যামল মিত্র ঢাকায় আসেন। সত্যজিৎ রায়ের পিএস বরুণ বক্সি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সত্যজিৎ বাবুর ছবি করবেন?’ বললাম, সিনেমা একটি করতে পারি, যদি ঋত্বিক ঘটককে পাওয়া যায়। মাস দেড়েক পরে ফোন দিলেন, ‘ঋত্বিককে পেয়েছি, চলে আসেন’। চলে গেলাম। ঋত্বিকের সঙ্গে দেখা হলো, কথা হলো। তাঁর ছবি দেখলাম, স্পেশালি অ্যারেঞ্জ করা হলো ‘সুবর্ণরেখা’। দেখার পর মনে হচ্ছিল, কোনো মানুষ এই ছবি বানায়নি। তাঁকে বললাম, ‘আমি আপনার কোন সিনেমা করব?’ তিনি বললেন, ‘আমার তো তিতাস করার শখ।’ বললাম, ডান। একটি ট্রাস্টের কাছে তিতাসের রাইট ছিল। তাতে ট্রাস্টি ছিলেন সত্যজিৎ রায়। যখন জানালাম, আমরা ঋত্বিক ঘটককে দিয়ে উপন্যাসটি অবলম্বনে সিনেমা করতে চাই, তখন সত্যজিৎ বলেন, ‘ঋত্বিকবাবু যদি করেন, তাহলে এটি দেওয়া যেতে পারে।’
ঋত্বিক ঘটককে লোকেশন দেখানোর জন্য ঢাকায় নিয়ে এলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আরিচা, নারায়ণগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে লোকেশন দেখলেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই শুটিং শুরু হয়েছে, ১৯৭৩ সালের ২৭ জুলাই রিলিজ হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি দিন ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে এক খাটে ঘুমিয়েছি, যতবার ইন্ডিয়ায় গেছেন, সঙ্গে গেছি। এক কাজে মুম্বাই গেলেন, আমিও গেলাম। তাঁর তো ঠিক নেই, খেয়ালি মানুষ—তাই সব সময় তাঁর সঙ্গে থাকতাম।
কলাকুশলী, অভিনেতা—সব তিনি দেখে দেখে নিয়েছেন। আমরা তাঁকে সাহায্য করেছি। তিতাসের পারে প্রায় ২৫ শতাংশ শুটিং হয়েছে। সেখানে আমরা সেট তৈরি করে শুটিং করেছি। আমাদের কাছে একটি বড় জেনারেটর ছিল, সেটি লঞ্চের সঙ্গে বাঁধা থাকত। তখন বর্ষাকাল, পানি অনেক। কোনো অসুবিধা ছিল না। যেখানে খুশি জেনারেটর লাগিয়ে নিতাম। লঞ্চে অবশ্য অনেক কষ্ট করে শুটিং ইউনিট থাকত। এফডিসিতে তিন-চার দিন ইনডোর শুটিং হয়েছে। জেলেপাড়ার শুটিং দুই জায়গায় হয়েছে। কিছু আরিচায়, কিছু তিতাসের ঘাটে।
শুটিং, ডাবিং—সব কাজেই ছিলেন ঋত্বিক ঘটক। এডিটিংয়ের শেষ পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে চলে গেলেন। যাওয়ার সময় এডিটরকে বললেন, ‘এই বাকিটুকু কেটেকুটে ছবিটিকে রিলিজ করে দেবেন।’ বললাম, আর কেউ আপনার ছবিতে হাত দেবে না। লিখে দেন। তিনি এডিটরকে লিখিত পারমিশন দিয়ে গেলেন। সুস্থ হয়ে ফিরে এসে দু-তিনটি শট অ্যাডজাস্ট করা ছাড়া আর কিছুই করেননি। অনেকে মনে করেন, তিনি এডিট করেননি। সব বাজে কথা। এখন আমরা ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ যেভাবে দেখি, সেটি তাঁরই পরিকল্পনায়, ঋত্বিকেরই হাতে তৈরি।
এ সিনেমায় ঋত্বিক ঘটক আর ওস্তাদ বাহাদুর হোসেন খান ছাড়া বাইরের কেউ কাজ করেননি। সবাই বাংলাদেশের। ক্যামেরা, এডিটিং, সাউন্ড—সবই এখানকার। তিতাস একটি কমপ্লিট বাংলাদেশি ফিল্ম। কোনোভাবেই যৌথ প্রযোজনার নয়। তিতাস করতে খরচ হয়েছিল ৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা। তখন ১ লাখ টাকায় একটি সিনেমা হতো। আমার আট গুণ খরচ হয়েছিল। ফেরত এসেছিল এক লাখ ২৩ হাজার টাকা। আমি এখনো বছরে এক-দুইবার দেখি সিনেমাটি। যত বয়স বাড়ছে, ততই ভিন্নমাত্রায় তিতাস ধরা পড়ছে আমার চোখে।

সারা বছর দেশের প্রেক্ষাগৃহে নিয়মিত সিনেমা মুক্তি না পেলেও ঈদ এলেই পাল্টে যায় চিত্র। তড়িঘড়ি করে নির্মাণ শেষ করে ঈদে আসতে চান নির্মাতারা। এই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ঈদের সিনেমার সংখ্যা বাড়ছেই। গত বছর রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছিল ৮টি সিনেমা।
০৮ এপ্রিল ২০২৪
ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক।
১৮ ঘণ্টা আগে
যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি।
১৮ ঘণ্টা আগে
১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
১৮ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
লাফিয়ে উঠলাম, আরে করব না মানে! হাসান ভাইয়ের সঙ্গে গিয়ে দেখি, খালি গায়ে, লুঙ্গি পরে একটা চৌকির ওপর বসে আছেন ঋত্বিক ঘটক। বিড়ি খাচ্ছেন। হাসান ভাই বললেন, এই যে ঋত্বিকদা, হায়াতরে নিয়ে আসছি। বলেছিলাম না আপনাকে? এই যে হায়াত। আমার দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, এইডারে কালকে এফডিসিতে লইয়া আহিস। কালকে দেখুমনে।
পরদিন গেলাম এফডিসির এক নম্বর স্টুডিওতে। এক ঘণ্টা পর হন্তদন্ত হয়ে ঋত্বিক বাবু এলেন, ‘হাসান লইয়া আইছে ওই পোলাডা কই?’ আমাকে দেখে মেকআপম্যানকে বললেন, ‘এইডার মাথায় চুলটুল লাগায়া দ্যাহো তো জমিদারের মতো করা যায় কিনা।’ বসে রইলাম। চুল লাগালাম। আবার বসে রইলাম। একসময় তিনি এলেন, উইগ পরা অবস্থায় দেখে আমার থুতনি ধরে এদিক-ওদিক থেকে দেখলেন। হঠাৎ টান দিয়ে উইগটা খুলে দিয়ে বললেন, ‘চুল ছাড়াই ভালো লাগতাসে, পাস।’
আমার প্রথম দিনের শুটিং ছিল আরিচাতে। সারা দিন ওয়েট করলাম। সন্ধ্যাবেলায় ঋত্বিকদা বললেন, আইজকে তো পারুম না। কাইলকে অইবো তোমারটা। এভাবে তিন দিন গেছি। আমার সিকোয়েন্সের শুটিং হয়নি। আমার তো মাথায় হাত। সরকারি চাকরি করি। তাঁকে বললাম, ঋত্বিকদা, আমার বোধ হয় এ সিনেমায় আর অভিনয় করা হবে না। কারণ, আমি আর ছুটি পাব না। ঋত্বিকদা বললেন, আইচ্চা চলো, তোমারটাই কইরা দিব আইজকা। প্রথম দাঁড়ালাম ক্যামেরার সামনে। বেবী ইসলাম ক্যামেরাম্যান। ঋত্বিকদা ডিরেক্টর। আমার কো-অ্যাক্টর হলেন রোজী, খায়ের ভাই আর রানী সরকার।

১৯৭২ সালের কথা, এক রাতে বাসায় বসে আছি, আমার গুরু সৈয়দ হাসান ইমাম এসে বললেন, ঋত্বিক বাবু তোমাকে দেখতে চেয়েছেন। উনি সিনেমা করবেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। শিল্পী দরকার। আমি তোমার নাম বলেছি। তুমি করবে নাকি?
লাফিয়ে উঠলাম, আরে করব না মানে! হাসান ভাইয়ের সঙ্গে গিয়ে দেখি, খালি গায়ে, লুঙ্গি পরে একটা চৌকির ওপর বসে আছেন ঋত্বিক ঘটক। বিড়ি খাচ্ছেন। হাসান ভাই বললেন, এই যে ঋত্বিকদা, হায়াতরে নিয়ে আসছি। বলেছিলাম না আপনাকে? এই যে হায়াত। আমার দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, এইডারে কালকে এফডিসিতে লইয়া আহিস। কালকে দেখুমনে।
পরদিন গেলাম এফডিসির এক নম্বর স্টুডিওতে। এক ঘণ্টা পর হন্তদন্ত হয়ে ঋত্বিক বাবু এলেন, ‘হাসান লইয়া আইছে ওই পোলাডা কই?’ আমাকে দেখে মেকআপম্যানকে বললেন, ‘এইডার মাথায় চুলটুল লাগায়া দ্যাহো তো জমিদারের মতো করা যায় কিনা।’ বসে রইলাম। চুল লাগালাম। আবার বসে রইলাম। একসময় তিনি এলেন, উইগ পরা অবস্থায় দেখে আমার থুতনি ধরে এদিক-ওদিক থেকে দেখলেন। হঠাৎ টান দিয়ে উইগটা খুলে দিয়ে বললেন, ‘চুল ছাড়াই ভালো লাগতাসে, পাস।’
আমার প্রথম দিনের শুটিং ছিল আরিচাতে। সারা দিন ওয়েট করলাম। সন্ধ্যাবেলায় ঋত্বিকদা বললেন, আইজকে তো পারুম না। কাইলকে অইবো তোমারটা। এভাবে তিন দিন গেছি। আমার সিকোয়েন্সের শুটিং হয়নি। আমার তো মাথায় হাত। সরকারি চাকরি করি। তাঁকে বললাম, ঋত্বিকদা, আমার বোধ হয় এ সিনেমায় আর অভিনয় করা হবে না। কারণ, আমি আর ছুটি পাব না। ঋত্বিকদা বললেন, আইচ্চা চলো, তোমারটাই কইরা দিব আইজকা। প্রথম দাঁড়ালাম ক্যামেরার সামনে। বেবী ইসলাম ক্যামেরাম্যান। ঋত্বিকদা ডিরেক্টর। আমার কো-অ্যাক্টর হলেন রোজী, খায়ের ভাই আর রানী সরকার।

সারা বছর দেশের প্রেক্ষাগৃহে নিয়মিত সিনেমা মুক্তি না পেলেও ঈদ এলেই পাল্টে যায় চিত্র। তড়িঘড়ি করে নির্মাণ শেষ করে ঈদে আসতে চান নির্মাতারা। এই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ঈদের সিনেমার সংখ্যা বাড়ছেই। গত বছর রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছিল ৮টি সিনেমা।
০৮ এপ্রিল ২০২৪
ঋত্বিক ঘটক—যেন এক গ্রিক মাস্টার! লম্বা শরীর, এলোমেলো চুল, পরনে পাঞ্জাবি, তার ওপর খাদির জ্যাকেট। বোতাম খোলা। একটা ঝোলা কাঁধ বেয়ে নেমে ঝুলে পড়েছে—আর জ্বলজ্বলে বুদ্ধিদীপ্ত দুটি চোখ, যেন ধরে রাখছে সব। প্রতিটি মুহূর্ত, দৃশ্য, জীবন—কিছুই ও চোখে এড়ায় না। সব মিলিয়ে ঋত্বিক ঘটক।
১৮ ঘণ্টা আগে
যমজ ঋত্বিক কুমার ঘটক ও বোন প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২ নভেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ৩টায়। ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও প্রতীতি দেবীর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি।
১৮ ঘণ্টা আগে
ঋত্বিক ঘটকের সিনেমায় বারবার ফিরে এসেছে মানুষের ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণাদীর্ণ জীবনগাথা, সম্পর্কের জটিলতা ও ভাঙন। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় সেখান থেকে সরে এসে একটি জনপদে বহমান জীবনকে পর্দায় প্রতিফলিত করেন তিনি। এ সিনেমা তৈরি হওয়ার গল্প জানিয়েছেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান।
১৮ ঘণ্টা আগে