খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
ঘুম থেকে উঠেই গৃহকর্মী মনোয়ারার কাছে পানি চাইলেন সালমান শাহ। কলবেল বাজল। নিজেই দরজা খুলে দিলেন। বাইরে মালি জাকির। তিন মাসের বেতন পাওনা ছিল তাঁর। টাকাটা চাইলে কোনো উত্তর না দিয়ে ভেতরে চলে যান সালমান। ইন্টারকমে দারোয়ানকে ফোন করে বলে দেন, বাসায় যেন কাউকে ঢুকতে দেওয়া না হয়। বেডরুমের দরজার সামনে অনেকক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন সালমান। সামিরা টিভি দেখছিলেন। সালমান একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকেন তাঁর দিকে। শেষবারের মতো স্ত্রীকে দেখে বাথরুমে ঢোকেন। এরপর ড্রেসিংরুমে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বরের সকাল। আর কয়েক ঘণ্টা পরই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে স্বপ্নের নায়কের আকস্মিক বিদায়ের খবর।
এর আগের রাতটা খুব অস্থির কেটেছে। আদালতে জমা দেওয়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রিপোর্ট বলছে, ৫ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে উত্তরায় শুটিং করেছেন সালমান। সন্ধ্যার দিকে যান এফডিসিতে। ফোন করে স্ত্রী সামিরাকেও যেতে বলেছিলেন সেখানে। সামিরা গিয়ে দেখেন, স্টুডিওতে ডাবিং চলছে। আর ভেতরে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে আছেন সালমান ও শাবনূর। এ দৃশ্য দেখে রাগ করে বাইরে চলে আসেন সামিরা। পরদিন বাদল খন্দকারের একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল সালমানের। এফডিসিতে তাঁকে টাকা দিতে গিয়েছিলেন বাদল। রাতে সালমান ও সামিরার সঙ্গে একই গাড়িতে তিনিও যান নায়কের বাসায়।
বাসায় গিয়ে হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদল করেন নায়ক। শাবনূরের সঙ্গে আর কোনো সিনেমা করবেন না জানিয়ে বাদল খন্দকারের সামনেই কন্ট্রাক্ট পেপার ছিঁড়ে ফেলেন। শাবনূরকে কেন্দ্র করে তখনো সালমান-সামিরার মধ্যে কথা-কাটাকাটি চলছিল। দুজনকে বুঝিয়ে, শান্ত থাকতে বলে চলে যান বাদল। রাতে কয়েকবার শাবনূরের কল আসে সালমানের মোবাইলে। প্রতিবারই তিনি উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করতে থাকেন। শাবনূরকে জানিয়ে দেন তাঁকে আর কল না করতে। এ পরিস্থিতিতে সামিরা বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে চাইলে ব্যক্তিগত সহকারী আবুলকে পাঠিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে আনেন। রাগ করে শাবনূরের উপহার দেওয়া ফ্যান ও মোবাইল ফোন মেঝেতে আছড়ে ভেঙে ফেলেন সালমান।
সালমান-সামিরার জীবনে শাবনূরের আগমন ছিল অনেকটা ঝোড়ো হাওয়ার মতো। যে ধাক্কায় এলোমেলো হয়ে পড়েছিল তাঁদের সুখের সংসার। দিনে দিনে সালমান-শাবনূর জুটি যত জনপ্রিয় হচ্ছিল, ততই ফিকে হচ্ছিল সালমান-সামিরার সম্পর্ক। অথচ ভালোবেসেই বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তাঁদের সম্পর্কের শুরুর দিকটাও। চট্টগ্রামের একটি ফ্যাশন শোতে ১৯৯০ সালের ১২ জুলাই তাঁদের পরিচয়। ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা, প্রেম, বিয়ের সিদ্ধান্ত। শুরু থেকেই ছেলের এ সম্পর্কে মত ছিল না নীলা চৌধুরীর। তবে সামিরাকে বিয়ের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন একরোখা-জেদি স্বভাবের সালমান। এ নিয়ে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ১৯৯২ সালের নভেম্বরে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় স্যাভলন খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সালমান। একই বছরের ২০ ডিসেম্বর গোপনে বিয়ে করেন সালমান-সামিরা। শাবনূরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার আগপর্যন্ত ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার।
সালমানের মৃত্যুর পর তাঁর গৃহকর্মী জরিনা বেগম আদালতে যে জবানবন্দি দেন, তাতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সালমান-সামিরা-শাবনূরের ত্রিভুজ সম্পর্কের বিষয়টি। সালমানের বাসায় প্রায়ই যেতেন শাবনূর। নায়কের স্ত্রী এটা ভালোভাবে নিতেন না। ফলে টানাপোড়েন লেগেই থাকত। সামিরা চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায়ও দু্ই দিন সালমানের বাসায় গিয়েছিলেন শাবনূর। একদিন সারা রাত ছিলেন, আরেক দিন বের হন রাত ১২টার দিকে। ফিরে এসে সেটা জানতে পারেন সালমানের স্ত্রী।
সামিরা ও শাবনূর—দুজনকেই ভালোবাসতেন সালমান। শাবনূরকে বিয়ে করে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবেও রাখতে চেয়েছিলেন। তবে সামিরার আপত্তিতে সেটা সম্ভব হয়নি। এই জটিল সম্পর্কের বেড়াজাল থেকে শেষ পর্যন্ত বেরোতে পারেননি সালমান শাহ। পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, শুটিংয়ের সময় শাবনূরকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে থাকতেন সালমান। এমনকি ১৯৯৬ সালের ১৫ জুলাই স্ত্রীকে না জানিয়ে গোপনে শাবনূরকে নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন ভারত সফরে। সামিরা তখন চট্টগ্রামে।
চলবে...
ঘুম থেকে উঠেই গৃহকর্মী মনোয়ারার কাছে পানি চাইলেন সালমান শাহ। কলবেল বাজল। নিজেই দরজা খুলে দিলেন। বাইরে মালি জাকির। তিন মাসের বেতন পাওনা ছিল তাঁর। টাকাটা চাইলে কোনো উত্তর না দিয়ে ভেতরে চলে যান সালমান। ইন্টারকমে দারোয়ানকে ফোন করে বলে দেন, বাসায় যেন কাউকে ঢুকতে দেওয়া না হয়। বেডরুমের দরজার সামনে অনেকক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন সালমান। সামিরা টিভি দেখছিলেন। সালমান একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকেন তাঁর দিকে। শেষবারের মতো স্ত্রীকে দেখে বাথরুমে ঢোকেন। এরপর ড্রেসিংরুমে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বরের সকাল। আর কয়েক ঘণ্টা পরই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে স্বপ্নের নায়কের আকস্মিক বিদায়ের খবর।
এর আগের রাতটা খুব অস্থির কেটেছে। আদালতে জমা দেওয়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রিপোর্ট বলছে, ৫ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে উত্তরায় শুটিং করেছেন সালমান। সন্ধ্যার দিকে যান এফডিসিতে। ফোন করে স্ত্রী সামিরাকেও যেতে বলেছিলেন সেখানে। সামিরা গিয়ে দেখেন, স্টুডিওতে ডাবিং চলছে। আর ভেতরে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে আছেন সালমান ও শাবনূর। এ দৃশ্য দেখে রাগ করে বাইরে চলে আসেন সামিরা। পরদিন বাদল খন্দকারের একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল সালমানের। এফডিসিতে তাঁকে টাকা দিতে গিয়েছিলেন বাদল। রাতে সালমান ও সামিরার সঙ্গে একই গাড়িতে তিনিও যান নায়কের বাসায়।
বাসায় গিয়ে হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদল করেন নায়ক। শাবনূরের সঙ্গে আর কোনো সিনেমা করবেন না জানিয়ে বাদল খন্দকারের সামনেই কন্ট্রাক্ট পেপার ছিঁড়ে ফেলেন। শাবনূরকে কেন্দ্র করে তখনো সালমান-সামিরার মধ্যে কথা-কাটাকাটি চলছিল। দুজনকে বুঝিয়ে, শান্ত থাকতে বলে চলে যান বাদল। রাতে কয়েকবার শাবনূরের কল আসে সালমানের মোবাইলে। প্রতিবারই তিনি উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করতে থাকেন। শাবনূরকে জানিয়ে দেন তাঁকে আর কল না করতে। এ পরিস্থিতিতে সামিরা বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে চাইলে ব্যক্তিগত সহকারী আবুলকে পাঠিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে আনেন। রাগ করে শাবনূরের উপহার দেওয়া ফ্যান ও মোবাইল ফোন মেঝেতে আছড়ে ভেঙে ফেলেন সালমান।
সালমান-সামিরার জীবনে শাবনূরের আগমন ছিল অনেকটা ঝোড়ো হাওয়ার মতো। যে ধাক্কায় এলোমেলো হয়ে পড়েছিল তাঁদের সুখের সংসার। দিনে দিনে সালমান-শাবনূর জুটি যত জনপ্রিয় হচ্ছিল, ততই ফিকে হচ্ছিল সালমান-সামিরার সম্পর্ক। অথচ ভালোবেসেই বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তাঁদের সম্পর্কের শুরুর দিকটাও। চট্টগ্রামের একটি ফ্যাশন শোতে ১৯৯০ সালের ১২ জুলাই তাঁদের পরিচয়। ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা, প্রেম, বিয়ের সিদ্ধান্ত। শুরু থেকেই ছেলের এ সম্পর্কে মত ছিল না নীলা চৌধুরীর। তবে সামিরাকে বিয়ের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন একরোখা-জেদি স্বভাবের সালমান। এ নিয়ে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ১৯৯২ সালের নভেম্বরে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় স্যাভলন খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সালমান। একই বছরের ২০ ডিসেম্বর গোপনে বিয়ে করেন সালমান-সামিরা। শাবনূরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার আগপর্যন্ত ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার।
সালমানের মৃত্যুর পর তাঁর গৃহকর্মী জরিনা বেগম আদালতে যে জবানবন্দি দেন, তাতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সালমান-সামিরা-শাবনূরের ত্রিভুজ সম্পর্কের বিষয়টি। সালমানের বাসায় প্রায়ই যেতেন শাবনূর। নায়কের স্ত্রী এটা ভালোভাবে নিতেন না। ফলে টানাপোড়েন লেগেই থাকত। সামিরা চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায়ও দু্ই দিন সালমানের বাসায় গিয়েছিলেন শাবনূর। একদিন সারা রাত ছিলেন, আরেক দিন বের হন রাত ১২টার দিকে। ফিরে এসে সেটা জানতে পারেন সালমানের স্ত্রী।
সামিরা ও শাবনূর—দুজনকেই ভালোবাসতেন সালমান। শাবনূরকে বিয়ে করে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবেও রাখতে চেয়েছিলেন। তবে সামিরার আপত্তিতে সেটা সম্ভব হয়নি। এই জটিল সম্পর্কের বেড়াজাল থেকে শেষ পর্যন্ত বেরোতে পারেননি সালমান শাহ। পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, শুটিংয়ের সময় শাবনূরকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে থাকতেন সালমান। এমনকি ১৯৯৬ সালের ১৫ জুলাই স্ত্রীকে না জানিয়ে গোপনে শাবনূরকে নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন ভারত সফরে। সামিরা তখন চট্টগ্রামে।
চলবে...
১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ডক প্রোডিউসিং সাউথ’ শীর্ষক আয়োজন। স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে তথ্যচিত্র নির্মাণের বাজেট, ডিস্ট্রিবিউশন পরিকল্পনা, চিত্রনাট্য রচনাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন বিভিন্ন দেশের নির্মাতা ও প্রযোজকেরা।
১ দিন আগেগত বছরের শেষ দিকে মাদককাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে খবরের শিরোনাম হন টিভি নাটকের অভিনেত্রী—তানজিন তিশা, মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া ও সাফা কবির। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, একটি বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে নিয়মিত মাদক সংগ্রহ করছিলেন তাঁরা।
১ দিন আগে২০২১ সালের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর নাট্যদল বাতিঘর থিয়েটার মঞ্চে নিয়ে এসেছিল তাদের ১৫তম প্রযোজনা ‘মাংকি ট্রায়াল’। চার বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মাংকি ট্রায়ালের রজতজয়ন্তী প্রদর্শনী। ১৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার...
১ দিন আগেশাহরুখপুত্র আরিয়ান খানের প্রথম ওয়েব সিরিজে তিন খানকে দেখা যাবে অতিথি চরিত্রে। প্রথমবারের মতো একই প্রজেক্টে অভিনয় করেছেন তাঁরা।
২ দিন আগে