কে এম হিমেল আহমেদ, বেরোবি
সারা দিন ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্টে ব্যস্ততার শেষ নেই। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী একাডেমিক কাজ শেষে রুমে ফিরে নিজেকে স্বস্তি দিতে বিশ্রাম, আড্ডা কিংবা ঘুরাঘুরি বেছে নেন। কিন্তু একাডেমিক সব কাজ সেরে বিকেল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খাবার বিক্রিতে ব্যস্ত থাকেন মাহবুব।
নিজে রান্না করে নিজেই খাবার পরিবেশন করেন। এ থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ মেটানোসহ বাড়িতে মা-বাবা, ভাই-বোনদের জন্য টাকা পাঠান। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লড়াকু এই শিক্ষার্থীর নাম মাহবুব মোর্শেদ।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুব। বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায়। বাবা আতিয়ার রহমান ও মা আমিনা খাতুন। মাহবুব তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। বোন তানিয়া আক্তার কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। ছোট ভাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছেন।
আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে মাহবুব দুই বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড় এলাকায় তিন হাজার টাকায় দোকান ভাড়া নিয়ে ‘ভার্সিটি ক্যাফে’ নামের একটি রেস্তোরাঁ চালু করেন। সেখানে পোলাও, বিরিয়ানি, ভুনা খিচুড়ি, নুডলস, কফি, চাওমিন ও মুরগির মাংসের সঙ্গে হাফ প্লেট করে খিচুড়িও বিক্রি করেন ৫০ টাকায়। এই খাবারের দোকানে রান্না থেকে পরিবেশন—সবকিছু একাই করেন।
সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় মাহবুবের ছোট্ট দোকানে উপস্থিত হই। অল্প কিছু টেবিল-চেয়ার আছে সেখানে। একসঙ্গে ২০ জনের মতো বসতে পারেন। সবার সামনে ছোট্ট একটি রান্নাঘরে রান্না হচ্ছে নানান পদ। প্লেট পরিষ্কার করে উপস্থিত ক্রেতাদের টেবিলে নিজেই খাবার পরিবেশন করছেন মাহবুব। পোলাও-মাংসের সঙ্গে এক টুকরো লেবু ও দুই টুকরা শসা দিচ্ছেন। খাবার শেষে নিজেই টিস্যু পেপার দিয়ে ক্রেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে খাবার কেমন হয়েছে জানতেও চান তিনি। ‘আবার আসবেন’ বলে বিদায় দেন ক্রেতাদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোনারুল ইসলাম মোনা এখানে মাঝেমধ্যে খেতে আসেন। মোনা জানান, ভার্সিটি ক্যাফের খাবারের মান ভালো, দামে কম ও সুস্বাদু। এমন দোকান এখানে চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অনেক সুবিধা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কাজের ফাঁকে মাহবুবের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে বাজার করি। তারপর ডিপার্টমেন্টের ক্লাস বা পরীক্ষা শেষ করে এসে বিকেলে রান্না করি। খাবারের মান ঠিক রেখে ব্যবসা আরও বড় করব।’
ছোটবেলায় মায়ের রান্না দেখে শিখেছেন মাহবুব। তাঁর এই ছোট্ট দোকানে বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। দিনে সব খরচ বাদ দিয়ে ৫০০-৬০০ টাকা লাভ হয়। প্রতি মাসে অন্তত তিনটা বড় অর্ডার আসে। এসব অর্ডারে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার খাবার বিক্রি হয়। কথা প্রসঙ্গে মাহবুব জানান, পরিচিত এক বড় ভাই তাঁকে এই দোকানের জামানত বাবদ আড়াই লাখ টাকা, বাসনপত্র ও চেয়ার-টেবিল কেনা বাবদ আরও ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা মাহবুব পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করবেন। সেই ‘বড় ভাই’ ব্যবসার কোনো লভ্যাংশও নেবেন না।
মাহবুব মোর্শেদ জানান, বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সাধারণত খুব একটা পড়াশোনা হয় না। এই সময়টা তিনি কাজে লাগিয়েছেন। কাজ করতে তাঁর কোনো লজ্জা বা হীনম্মন্যতা নেই।
নিজের লেখাপড়া চালানো এবং পরিবারকে সহায়তা করতেই মাহবুব মোর্শেদের এই প্রাণান্ত চেষ্টা। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ পরিচয়ের বাইরে বয়ে চলেছেন শ্রমঘন জীবন। যে জীবনে প্রশান্তি আছে, আনন্দ আছে। খানিক ক্লান্তিও আছে।
সারা দিন ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্টে ব্যস্ততার শেষ নেই। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী একাডেমিক কাজ শেষে রুমে ফিরে নিজেকে স্বস্তি দিতে বিশ্রাম, আড্ডা কিংবা ঘুরাঘুরি বেছে নেন। কিন্তু একাডেমিক সব কাজ সেরে বিকেল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খাবার বিক্রিতে ব্যস্ত থাকেন মাহবুব।
নিজে রান্না করে নিজেই খাবার পরিবেশন করেন। এ থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ মেটানোসহ বাড়িতে মা-বাবা, ভাই-বোনদের জন্য টাকা পাঠান। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লড়াকু এই শিক্ষার্থীর নাম মাহবুব মোর্শেদ।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুব। বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায়। বাবা আতিয়ার রহমান ও মা আমিনা খাতুন। মাহবুব তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। বোন তানিয়া আক্তার কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। ছোট ভাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছেন।
আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে মাহবুব দুই বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড় এলাকায় তিন হাজার টাকায় দোকান ভাড়া নিয়ে ‘ভার্সিটি ক্যাফে’ নামের একটি রেস্তোরাঁ চালু করেন। সেখানে পোলাও, বিরিয়ানি, ভুনা খিচুড়ি, নুডলস, কফি, চাওমিন ও মুরগির মাংসের সঙ্গে হাফ প্লেট করে খিচুড়িও বিক্রি করেন ৫০ টাকায়। এই খাবারের দোকানে রান্না থেকে পরিবেশন—সবকিছু একাই করেন।
সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় মাহবুবের ছোট্ট দোকানে উপস্থিত হই। অল্প কিছু টেবিল-চেয়ার আছে সেখানে। একসঙ্গে ২০ জনের মতো বসতে পারেন। সবার সামনে ছোট্ট একটি রান্নাঘরে রান্না হচ্ছে নানান পদ। প্লেট পরিষ্কার করে উপস্থিত ক্রেতাদের টেবিলে নিজেই খাবার পরিবেশন করছেন মাহবুব। পোলাও-মাংসের সঙ্গে এক টুকরো লেবু ও দুই টুকরা শসা দিচ্ছেন। খাবার শেষে নিজেই টিস্যু পেপার দিয়ে ক্রেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে খাবার কেমন হয়েছে জানতেও চান তিনি। ‘আবার আসবেন’ বলে বিদায় দেন ক্রেতাদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোনারুল ইসলাম মোনা এখানে মাঝেমধ্যে খেতে আসেন। মোনা জানান, ভার্সিটি ক্যাফের খাবারের মান ভালো, দামে কম ও সুস্বাদু। এমন দোকান এখানে চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অনেক সুবিধা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কাজের ফাঁকে মাহবুবের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে বাজার করি। তারপর ডিপার্টমেন্টের ক্লাস বা পরীক্ষা শেষ করে এসে বিকেলে রান্না করি। খাবারের মান ঠিক রেখে ব্যবসা আরও বড় করব।’
ছোটবেলায় মায়ের রান্না দেখে শিখেছেন মাহবুব। তাঁর এই ছোট্ট দোকানে বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। দিনে সব খরচ বাদ দিয়ে ৫০০-৬০০ টাকা লাভ হয়। প্রতি মাসে অন্তত তিনটা বড় অর্ডার আসে। এসব অর্ডারে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার খাবার বিক্রি হয়। কথা প্রসঙ্গে মাহবুব জানান, পরিচিত এক বড় ভাই তাঁকে এই দোকানের জামানত বাবদ আড়াই লাখ টাকা, বাসনপত্র ও চেয়ার-টেবিল কেনা বাবদ আরও ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা মাহবুব পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করবেন। সেই ‘বড় ভাই’ ব্যবসার কোনো লভ্যাংশও নেবেন না।
মাহবুব মোর্শেদ জানান, বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সাধারণত খুব একটা পড়াশোনা হয় না। এই সময়টা তিনি কাজে লাগিয়েছেন। কাজ করতে তাঁর কোনো লজ্জা বা হীনম্মন্যতা নেই।
নিজের লেখাপড়া চালানো এবং পরিবারকে সহায়তা করতেই মাহবুব মোর্শেদের এই প্রাণান্ত চেষ্টা। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ পরিচয়ের বাইরে বয়ে চলেছেন শ্রমঘন জীবন। যে জীবনে প্রশান্তি আছে, আনন্দ আছে। খানিক ক্লান্তিও আছে।
ছাত্ররাজনীতি থেকে মুক্ত হলেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরাবরই রাজনীতিসচেতন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়ে ওঠে দক্ষিণবঙ্গের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু।
২৭ মিনিট আগে১৫ জুলাই, ২০২৪, সন্ধ্যায় হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করতে গিয়ে দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের বর্বর হামলা চালিয়েছে। মনে হলো, এত দিন কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিসে অংশ নিয়েছি যেসব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে, আর এখন সেসব শিক্ষার্থীরাই নির্যাতিত; তাদের পাশে দাঁড়ানোই হবে সত্যিকারের
২ ঘণ্টা আগে২০২৪ সালের জুলাইয়ের শুরুতে কোটা আন্দোলন আমাদের কাছে ছিল শুধুই টিভি স্ক্রিন আর সোশ্যাল মিডিয়ার ফিডের দৃশ্য। কিন্তু ১০ জুলাইয়ের পর রামপুরা-বাড্ডা এলাকায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল পরিবেশ; ছোট ছোট অবরোধ, স্লোগান আর পোস্টারে শহর যেন বদলে যেতে লাগল। ১৪ জুলাইয়ের পর তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের বেফাঁস মন্তব্য আগুনে
৪ ঘণ্টা আগে২০১৮ সালে বাতিল হওয়া কোটা পদ্ধতি পূর্ণরূপে পুনর্বহাল হলে সারা দেশের মতো বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ২০২৪ সালের ৫ জুন আন্দোলনে সক্রিয় হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রতিবাদ হয় ৩০ জুন। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন বাংলা বিভাগের শামসুর রহমান সুমন, ইংরেজি বিভাগের...
৯ ঘণ্টা আগে