Ajker Patrika

প্রাণীদের বন্ধু বায়েজিদ

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
Thumbnail image

বলা হয়, বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’। কিন্তু কিছু সুযোগসন্ধানী মানুষ টাকার লোভে বন্য প্রাণী ধরে নিয়ে আসে লোকালয়ে। আবার কিছু মানুষ এদের ফিরিয়ে দেয় নিজ আবাসস্থলে। তেমনই একজন বায়েজিদ মুন্সী। তাঁর কাছে পথের ধারে পড়ে থাকা অসুস্থ কুকুর সেবা পায়। বন্য পাখি, প্যাঁচা, সাপ, বনবিড়াল, মেছো বিড়াল ও শিয়ালের মতো প্রাণীগুলো ফিরে পায় তাদের নিজ আবাসস্থল। এভাবে স্থানীয় মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া বায়েজিদ বন্য প্রাণীর পাশে দাঁড়িয়ে নজর কাড়ছেন সবার।

২০২০ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত শতাধিক সাপ, বিভিন্ন জাতের বন্য পাখি, প্যাঁচা, বনবিড়াল, মেছো বিড়াল ও শিয়াল উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করেছেন বায়েজিদ। উপকূল অঞ্চল পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার আমিরাবাদ গ্রামের বসবাস করেন তিনি। বন্য প্রাণী, কুকুর, বিড়াল রেসকিউ এবং চিকিৎসার কাজ তিনি শুরু করেন ২০২০ সালে। কোথাও অসুস্থ কোনো প্রাণী পড়ে থাকলে পকেটের টাকা খরচ করে চিকিৎসা করান। অনেক সময় কুকুরের শরীরে-মুখে হাড় আটকে যায়। তখন তাদের বায়েজিদ সাহায্য করেন। পটুয়াখালীর উপকূলের থানা বাউফল, দুমকি, দশমিনা, কলাপাড়া, গলাচিপার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে বেড়ান বায়েজিদ। নানান প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেই এগিয়ে যান। কখনো কখনো মানুষের কথায় খারাপ লাগলেও তৃণমূল মানুষের ভালোবাসা তাঁর কাজের অনুপ্রেরণা বলে জানান। একটি অসুস্থ প্রাণী রেসকিউ করে পরে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ হলে বনে ছেড়ে দেওয়াকেই আনন্দের বিষয় বলে মনে করেন তিনি।

 বায়েজিদ বলেন, ‘নদীমাতৃক দেশ হলেও আমরা অনেকে সাপ, বিষ এবং এর সঠিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানি না। বিষধর সাপের দংশনে চিকিৎসক নয়, এখনো মানুষ প্রথমে ওঝার কাছে নিয়ে যায়। যখন রোগীর অবস্থা খুব খারাপ হয়, তখন চিকিৎসকের কাছে যায়। এসনকি উপকূলের মানুষও সাপ সম্পর্কে অসচেতন। এর কারণে সাপে কাটা রোগীর মৃত্যুহার সেখানে বেশি।’

ঝুঁকিপূর্ণ হলেও স্নেক রেসকিউ টিম থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বায়েজিদ শুরু করেছেন সাপ রেসকিউ কার্যক্রম। মানুষ সাপুড়ে বললেও সেসব বায়েজিদ একদমই পাত্তা দেন না। এ পর্যন্ত তিনি পদ্ম গোখরা, খৈয়া গোখরা, রাসেলস ভাইপার, শঙ্খিনীসহ অসংখ্য সাপ রেসকিউ করেছেন। সাতটি অসুস্থ সাপ চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে ছেড়ে দিয়েছেন বনে। সাপ রেসকিউ বা উদ্ধার অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ কাজ বলে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেন বায়েজিদ। তারপরও দাঁড়াশ, তামাটে মাথা দুধরাজ, ঘরগিন্নির ছোবল খেয়েও দমে যাননি তিনি। অ্যানিমেল লাভার অব পটুয়াখালী একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রাণিকল্যাণ ও পরিবেশবাদী সংগঠন। এর স্বেচ্ছাসেবক বায়েজিদ।

 মানুষকে সচেতন করার জন্য বাজার, হাট, স্কুল-কলেজে ক্যাম্পিং করেন বায়েজিদ। লিফলেট বিতরণ করে সেখানে কী লেখা আছে, তা সহজ করে বুঝিয়ে বলেন তিনি। নিজের কাজের জন্য বন বিভাগ খুলনা থেকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণের জন্য সার্টিফিকেট পেয়েছেন। স্থানীয় মানুষদের বন্য প্রাণী হত্যা থেকে বিরত রাখতে এবং বন্য প্রাণী সুরক্ষায় সচেতন করতে কাজ করতে চান বায়েজিদ মুন্সী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত