Ajker Patrika

পাঠাভ্যাস তৈরিতে কাজ করছে ইনোভেটর

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭: ০২
পাঠাভ্যাস তৈরিতে কাজ করছে ইনোভেটর

২০০৬ থেকে ২০২৩। সময়টা ১৭ বছরের। এই পুরো সময় কিশোর-তরুণদের পাঠাভ্যাস তৈরিতে নিরলস কাজ করে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে গুটিকয় শিক্ষার্থী নিয়ে ১৭ বছর আগে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা এখন অযুত স্বপ্নের ডালপালা মেলেছে। শহর পেরিয়ে গ্রাম, জেলা, উপজেলায় বিস্তৃত হয়েছে কার্যক্রম। বইয়ের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে স্কুল থেকে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে।

‘ইনোভেটর’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ২০০৬ সালে। সে সময়টা জুড়ে আছে জঙ্গিবাদের উত্থান, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি আর তারুণ্যের নিদারুণ ক্ষয়ে যাওয়ার স্মৃতি। সিলেটের একঝাঁক তরুণ-তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে ইনোভেটর প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেন সমাজকর্মী রেজওয়ান আহমদ এবং শিক্ষক ও সংগঠক প্রণব কান্তি দেব। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে তাঁরা ডাক দিয়েছিলেন তারুণ্যকে।

বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বই বিতরণ, ভাষার মাসে পরীক্ষা আর স্বাধীনতার মাসে পুরস্কার বিতরণ—এভাবেই নির্ধারিত হয় ইনোভেটরের বইপড়া উৎসবের গতিপথ। এই উৎসবের পাশাপাশি বই বিনিময় উৎসব, বই আলোচনা প্রতিযোগিতা, কুইজ, সেমিনার, বিতর্ক ইত্যাদি বই নিয়ে বিভিন্ন আয়োজন করে চলেছে সংগঠনটি। লক্ষ্য একটাই, আগামী প্রজন্ম যেন বেড়ে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও আদর্শ ধারণ করে। দিনে দিনে বাড়ছে পড়ুয়ার সংখ্যা। এমনকি করোনা সংক্রমণের কারণে সবকিছুতেই যখন স্থবিরতা নেমে এসেছিল, তখনো থেমে থাকেনি ইনোভেটরের কার্যক্রম। ঘরবন্দী সে সময়ে সংগঠনটি আয়োজন করে ‘অনলাইনে বইপড়া কর্মসূচি’র। এখন প্রতিবছর এই কর্মসূচিতে হাজারো শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শহর পেরিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় এতে।

বছরব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রম থাকলেও ইনোভেটরের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি বইপড়া উৎসব। প্রতিবছরের ডিসেম্বর থেকে মার্চ—এই তিন মাস চলে উৎসব। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে শুরু হয় রেজিস্ট্রেশন। এরপর উৎসব করে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অংশগ্রহণকারীদের হাতে নির্বাচিত বই তুলে দেওয়া হয় ডিসেম্বরে। সকলের বই পড়া নিশ্চিত করতে বিতরণ করা বইয়ের ওপর একটি পরীক্ষা নেওয়া হয় ফেব্রুয়ারিতে। আর বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয় মার্চে।

ইনোভেটরের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সঞ্চালক প্রণব কান্তি দেব জানিয়েছেন, যে সময় তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তখন ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছিল। জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ বিস্তার লাভ করায় তরুণেরা বিপথগামী হয়ে পড়ছিল। সে সময় এই উদ্যোগকে অনেকে ভালোভাবে নেয়নি। মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ানো কেন, এমনও প্রশ্ন তোলা হতো। পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসত না কেউ।

এ চ্যালেঞ্জ জয় করেই এগিয়ে চলছে বই পড়ার এই উদ্যোগ। এ পর্যন্ত মোট ১৭ হাজার ৭৭৬ জন শিক্ষার্থী সরাসরি বইপড়া উৎসবে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রণব।

এই মুহূর্তে ইনোভেটরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি একটি নির্বাচিত গ্রন্থতালিকাও তৈরি করেছে ইনোভেটর। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৭ সালে সংগঠনটি পেয়েছে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড।

ইনোভেটরের কার্যক্রম নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরঞ্জন দে নির্মাণ করেছেন ‘অক্ষর-আলোকে অবিনাশী যাত্রা’ শিরোনামে একটি প্রামাণ্যচিত্র।

আশার কথা, ইনোভেটর বাংলাদেশের বইপড়ার সংস্কৃতিতে প্রতিনিয়ত যুক্ত করে চলেছে নতুন নতুন পালক। তিন বছর ধরে সিলেট জেলা পরিষদ এগিয়ে এসেছে বইপড়া উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতায়। এ বছর সিলেটের সব কটি উপজেলায় ‘জেলা পরিষদ, সিলেট-ইনোভেটর বইপড়া উৎসব’-এর আয়োজন চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইউল্যাবের ৮ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) অষ্টম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও ইউল্যাবের আচার্যের প্রতিনিধি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সমাবর্তন অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন এবং সভাপতিত্ব করেন। এবারের সমাবর্তনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘ইনফর্মড মাইন্ডস, ইন্সপায়ার পাথস’।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম।

সমাবর্তনে বক্তব্য দেন অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। এ ছাড়া ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সৈয়দা মাদিহা মোরশেদ এবং ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান সমাবর্তনে স্নাতকদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

সমাবর্তনে ভ্যালেডিক্টোরিয়ান অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন তাশিন হক; যিনি ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রোগ্রাম থেকে ৩.৮৬ সিজিপিএ অর্জন করে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

এ ছাড়া স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পর্যায় থেকে দুজন শিক্ষার্থী স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।

এ বছর ইউল্যাব থেকে মোট ১ হাজার ৫০৮ জন শিক্ষার্থী সনদ পান, যার মধ্যে ১ হাজার ১১১ জন স্নাতক এবং ৩৯৭ জন স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্লাস ফাঁকি দিয়েও ভালো নম্বর পাচ্ছেন হার্ভার্ড শিক্ষার্থীরা, দুশ্চিন্তায় শিক্ষকেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ০৯
হার্ভার্ডে প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় বাদ পড়েন প্রায় ৯৭ শতাংশ আবেদনকারী। ছবি: হার্ভার্ডের ওয়েবসাইট
হার্ভার্ডে প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় বাদ পড়েন প্রায় ৯৭ শতাংশ আবেদনকারী। ছবি: হার্ভার্ডের ওয়েবসাইট

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পাওয়া বেশ কঠিন। প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষায় বাদ পড়েন প্রায় ৯৭ শতাংশ আবেদনকারী। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, এই সুযোগ পাওয়া ৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর অনেকে ক্লাসে উপস্থিত হন না এবং নির্ধারিত পাঠ্য পড়েন না বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যাপকেরা।

‘ক্লাসরুম সোশ্যাল কমপ্যাক্ট কমিটি’ নামে সাতজন অধ্যাপকের একটি দল হার্ভার্ডের শ্রেণিকক্ষ সংস্কৃতি নিয়ে একটি প্রতিবেদনে এ কথা জানান। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত হলেও বেশির ভাগ সময় নিজের মুঠোফোন বা অন্যান্য ডিভাইসে বেশি মনোযোগ দেন। ক্লাসে চলমান আলোচনায় অংশ নিতে অনীহা দেখান। আবার অনেক সময় ভিন্নমত প্রকাশের ভয়ে চুপ থাকেন। আবার অনেক সময় হোমওয়ার্ক বা পাঠ্যবই না পড়ায় আলোচনায় অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেন না।

৭ অধ্যাপকের এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এত কিছুর পরও শিক্ষার্থীরা সহজে ভালো ফল পেয়ে যাচ্ছেন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত নম্বর প্রদান বা ‘গ্রেড ইনফ্লেশন’-এর প্রবণতা চলছে।

শিক্ষকেরা বলছেন, অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে খুব বেশি কথা না বলেই কিংবা কোনো অর্থবহ আলোচনায় অংশ না নিয়েই স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করছেন। নিজেদের মতাদর্শগত বলয়ের মধ্যে আটকে থাকায় এই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী সময়ে চ্যালেঞ্জিং বা ভিন্নধর্মী ধারণার সঙ্গে জড়াতে অনিচ্ছুক বা অক্ষম হয়ে পড়ছেন।

রক্ষণশীল সমালোচকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, হার্ভার্ড ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উদারপন্থী পক্ষপাতকে (liberal bias) ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার করতে দিয়েছে। ফলে কার্যত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়ে পড়েছে। এই উদ্বেগ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাসে পরিবর্তন আনার জন্য রিপাবলিকানদের উদ্যোগকে আরও জোরদার করেছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে, গত জানুয়ারিতে হার্ভার্ড কমিটির প্রতিবেদনটি যেন পরোক্ষভাবে এই সমালোচনার কিছু সত্যতা স্বীকার করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্লাসে উপস্থিত না থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা ভিন্ন মতাদর্শ বা দৃষ্টিভঙ্গির সহপাঠীদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ হারাচ্ছে।

অধ্যাপকদের এই কমিটির বক্তব্যের যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে বলে মনে করেন হার্ভার্ডের প্রি-মেড বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওমোসেফে নোরুওয়া। তিনি বলেন, ‘রেকর্ডেড লেকচারের কারণে সশরীরে ক্লাস ফাঁকি দেওয়া সহজ হয়েছে। ক্লাসে না গিয়েও যদি ভালো গ্রেড পাওয়া যায় বলে তাঁরা ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।’

তিনি আরও জানান, একবার এমন একটি কোর্সে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে আলোচনা হয়েছিল ‘আমরা কি এখনো গৃহযুদ্ধ লড়ছি?’ তা নিয়ে। সেই ক্লাসের আলোচনা ছিল ‘চিন্তাশীল ও শিক্ষণীয়’। তবে ক্লাসের বাইরে পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন।

নোরুওয়া বলেন, ‘আমার প্রথম দুই বছর ছিল খুবই রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনাপূর্ণ।’ তিনি জানান, হার্ভার্ডে উদারপন্থী মতাদর্শের আধিপত্য আছে। তাঁর মতো যাঁদের চিন্তাভাবনায় উদার ও রক্ষণশীল, উভয় দৃষ্টিভঙ্গির মিশ্রণ রয়েছে, তাঁদের জন্য পরিবেশটি কখনো কখনো অস্বস্তিকর হতে পারে।

এ বছর পরিস্থিতি ‘কিছুটা শান্ত ও স্বস্তিদায়ক’ বলে যোগ করেন তিনি।

হার্ভার্ডের ‘ইকোনমিকস ১০: প্রিন্সিপলস অব ইকোনমিকস’ ক্লাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় কোর্সগুলোর একটি। এই টার্মে ৭৬১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। একটি ঐতিহাসিক কাঠের প্যানেলে ঘেরা থিয়েটারে তাঁদের ক্লাস হয়। অধ্যাপক মঞ্চে এক পাশ থেকে অন্য পাশে হাঁটেন, যেন শেক্‌সপিয়ারের নাটকের অভিনেতা।

থিয়েটারে ঢুকলেই চোখে পড়ে অর্কেস্ট্রা আসনের সারি, যেগুলোর সামনে বড় অক্ষরে লেখা ‘DEVICE FREE SECTION’। অর্থাৎ মোবাইল বা অন্য কোনো ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ। সেই সারির বেশির ভাগ আসনই ফাঁকা থাকে।

অর্থনীতির অধ্যাপক ডেভিড লাইবসন হার্ভার্ডের ওই প্রতিবেদন তৈরির কমিটির সহসভাপতিও ছিলেন। তিনি বলেন, এসব সমস্যা দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। সেই ১৯৮০-র দশক থেকে। যখন তিনি নিজেও হার্ভার্ডের শিক্ষার্থী ছিলেন, তখন থেকে এ ধরনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

তাঁর ভাষায়, ‘দ্বিধা, দেরি করা এবং অতিরিক্ত সময়সূচি তৈরি করা’—তিনটি বিষয়ই হার্ভার্ডে এবং আমার ধারণা অনুযায়ী বেশির ভাগ স্কুলেই, শিক্ষাজীবনের অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য হয়ে আছে।’

এটি পরিবর্তনের সময় এসেছে বলে মনে করেন তিনি। অধ্যাপক লাইবসন বলেন, ‘যখন তুমি তোমার ফোনে মন দিচ্ছ, তখন তুমি আসলে আমার ভাবনাগুলো শুনছ না।’

কমিটির প্রতিবেদন হার্ভার্ডের শিক্ষা সংস্কৃতির কিছু কঠিন সত্য তুলে ধরেছে বলে মন্তব্য করেন হার্ভার্ডের ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের ডিন হোপি হোয়েকস্ট্রা।

এ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায়, হার্ভার্ড এবং এর অধ্যাপকেরা ফল সেশনে শিক্ষার্থীদের মুক্তমনা এবং শিক্ষাগতভাবে সক্রিয় করতে কাজ করছেন। কিছু শিক্ষক এখন উপস্থিতি নেওয়া শুরু করেছেন। শিক্ষার্থীদের ফোন বা ল্যাপটপের পরিবর্তে হাতে লিখে নোট নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।

এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা ক্লাসে মত প্রকাশ করতে ভয় পেলে তা কাটিয়ে উঠতে অধ্যাপকেরা এমন নিয়ম চালু করছেন, যেখানে অন্যদের বক্তব্য বাইরে শেয়ার করা যাবে না।

পাশাপাশি হার্ভার্ড শিক্ষার্থীদের মুক্তমনা হওয়ার দক্ষতা যাচাই করার জন্য পরীক্ষা নিচ্ছে। ২০২৪ সালে তাঁদের আবেদনপত্রে এ-সম্পর্কিত একটি নতুন প্রশ্ন যোগ করা হয়েছে। এতে প্রার্থীদের ১৫০ শব্দে কারও সঙ্গে দ্বিমত পোষণের সময়কার কথা তুলে ধরতে বলা হয়েছে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৭ অধ্যাপকের এই ‘ক্লাসরুম কমপ্যাক্ট কমিটি’ কাজ শুরু করে। সে সময় গাজায় ইসরায়েলি অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তীব্র এবং কখনো কখনো সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কমিটির দায়িত্ব ছিল সংলাপ বাড়ানোর উপায় খোঁজা এবং ‘হার্ভার্ডে শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্য কী?’ এই মৌলিক প্রশ্নের উত্তর বের করা।

কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. লাইবসন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ক্লাস এড়িয়ে গেলে তারা চ্যালেঞ্জিং বা বিতর্কিত ধারণাগুলোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ হারাচ্ছে। এমনকি যখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত থাকে, অনেক সময় দেখা যায়, তারা পড়াশোনা না করেও এমন ভান করে যেন করেছে, ফলে শ্রেণিকক্ষের আলোচনা যথাযথ ফলপ্রসূ হয় না। এভাবে সবার সময় নষ্ট হয়, আর প্রায়ই দেখা যায় একজন শিক্ষার্থীই পুরো আলোচনাকে টেনে নিয়ে যায়।’

প্রতিবেদনে কমিটি উল্লেখ করেছে, শ্রেণিকক্ষ এমন জায়গা হওয়া উচিত, যেখানে মতবিনিময়ের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। কিন্তু ২০২৪ সালের বসন্তে হার্ভার্ডের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সিনিয়র শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাঁরা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত অনুভূতি ও বিশ্বাস সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারেন, যা আগের বছরের ৪৬ শতাংশ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

শিক্ষার্থীরা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ভয়ে এ কাজ করেন। তাঁরা আশঙ্কা করেন, কথা বললে হয়তো বোকা শোনাবে। অনেকের ধারণা, ভালো গ্রেড পেতে হলে অধ্যাপকের মতামতের সঙ্গে নিজেদের অবস্থান মেলাতে হবে। আর তাঁরা কৌতূহল বা শেখার আগ্রহে নয়, বরং মূলত কোথায় ভালো গ্রেড পাওয়া সহজ হবে, সেটা দেখে ক্লাস বেছে নিচ্ছিলেন।

অন্যদিকে হার্ভার্ডের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট বিভাগের ডিন অ্যামান্ডা ক্লেবাহ জানান, গ্রেড ইনফ্লেশন, যা কোভিড মহামারির আগেই গুরুতর সমস্যা ছিল, তা এখন আরও বেড়েছে।

তিনি আরও জানান, ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট গ্রেডের প্রায় ৪০ শতাংশ ছিল ‘এ’। এখন সেই হার প্রায় ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে এবং এর অর্ধেক বৃদ্ধি পেয়েছে অনলাইনে বা রিমোট ক্লাসের সময়কালে।

ড. ক্লেবাহ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। শিক্ষকেরা সেটা বুঝতে পারেন। তাই তাঁরা কোর্সগুলোকে কম চাপযুক্ত করার চেষ্টা করেন।’

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, অনেক অধ্যাপক আশঙ্কা করেন, যদি তাঁরা কঠোরভাবে নম্বর দেন, তাহলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেতিবাচক মূল্যায়ন পেতে পারেন। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলাদা করে তুলতে বেশি ক্লাবে যোগ দিচ্ছেন, অতিরিক্ত কোর্স নিচ্ছেন বা একটি বিষয়ের বদলে দুটি বিষয়ে কনসেন্ট্রেশন (বিশেষায়ন) করছেন।

অধ্যাপকেরা লিখেছেন, ‘কেউ কেউ বহির্গামী কার্যকলাপে (extracurricular commitments) ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণকে তাদের সময়ের আরও পরিপূর্ণ, অর্থবহ ও উপকারী ব্যবহার বলে মনে করে।’

প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি শিক্ষার্থীরাই আসল সমস্যা

সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদদের উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থী অনুপস্থিতি, দৃঢ়পন্থী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং শিক্ষাগত ফল হ্রাস।

মহামারির সময়ে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অনুপস্থিতি তীব্রভাবে বেড়েছে। অধ্যাপকেরা উদ্বিগ্ন যে, শিক্ষার্থীরা পুরো বই পড়ার মতো ধৈর্য ধরে রাখতে পারছে না। জাতীয় পরীক্ষার মাধ্যমে পরিমাপ করা শিক্ষাগত অর্জনও দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।

কানসাস ইউনিভার্সিটির উচ্চশিক্ষাবিষয়ক অধ্যাপক লিসা উলফ-ওয়েন্ডেল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসা অর্থপূর্ণ হতে হবে। এটা এমন কিছু হতে হবে, যা তাঁরা কেবল তাঁদের ডর্মরুমে একাই করতে পারবে না।’

ক্লাসে লেকচার সব সময় আকর্ষণীয় না-ও হতে পারে, কিন্তু আগে শিক্ষার্থীদের যেতে হতো (বা সহপাঠীর নোট ধার করতে হতো)। এখন যেহেতু অনেক লেকচার অনলাইনে দেখা যায়, তাই অধ্যাপকেরা আরও কঠোর চেষ্টা করছেন শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে আকৃষ্ট করার জন্য, যোগ করেন ড. উলফ-ওয়েন্ডেল।

তাহলে ক্লাসে আসার পেছনে আর কি গুরুত্বপূর্ণ কারণ থাকতে পারে জানতে চাইলে ওয়েন্ডেল বলেন, ‘এটি একটি পারস্পরিক সম্পর্ক।’

হার্ভার্ডে কিছু শিক্ষার্থী এই ধারণার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। তাঁরা মনে করেন, সমস্যা মূলত তাঁদের।

তাঁরা বলেন, আইন বা ফাইন্যান্সের মতো ক্ষেত্রের ইন্টার্নশিপ এবং পরবর্তী চাকরির প্রতিযোগিতা তীব্র। তাই তাঁদের আর কোনো উপায় নেই। বরং তাঁরা ক্লাবে উল্লেখযোগ্য সময় বিনিয়োগ করতে বাধ্য, যা তাঁদের আগ্রহ ও দক্ষতা প্রদর্শন করবে এবং সেসব হার্ভার্ড শিক্ষার্থীদের থেকে আলাদা করবে যাঁরা ‘এ’ গ্রেড পাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, হার্ভার্ডে ভর্তি হওয়ার আগে থেকেই তাঁদের সবকিছু সামলানোর শিল্পে পারদর্শী হতে হয়েছিল কারণ এটিই তাঁদের এখানে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিল।

লং আইল্যান্ডের পাবলিক স্কুল উইলিয়াম ফ্লয়েড হাই স্কুলের ক্লাস ভ্যালাডিক্টোরিয়ান (সেরা একাডেমিক ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষার্থী) জোশুয়া শুল্টজার হার্ভার্ডে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এক্সট্রা-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজ এবং পড়াশোনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে বড় হয়েছি। যখন আপনি এমন একটি স্কুলে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছেন যেখানে প্রায় সবাই সহপাঠ্যক্রমিক কাজ করে। তাঁরা যে তা চালিয়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক।’

শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে হার্ভার্ডও আংশিকভাবে দোষী হতে পারে। কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা একই সময়ে দুটি ক্লাস ‘এনরোল’ করতে পারে।

ড. লাইবসন শিক্ষার্থীদের বলেন, সরাসরি উপস্থিত থেকে শেখা ভিডিও দেখে শেখার চেয়ে ভালো। তবে তিনি একই সঙ্গে ডাবল-শিডিউলিং প্রথাকে সমর্থন করেন কারণ হার্ভার্ডের অনেক ক্লাসই একই সময়ে চলে।

‘যদি আমরা একই সময়ে ভর্তি নেওয়া অনুমোদন না দিতাম, তবে অনেক শিক্ষার্থী সমস্যায় পড়ত’, যোগ করেন তিনি।

যে শিক্ষার্থীরা তাঁর লেকচারে আসে, তাঁদের জন্য ড. লাইবসন শ্রেণিকক্ষের আলোচনাকে আরও খোলামেলা করার চেষ্টা করেন। তিনি সিলেবাসে সতর্কতা অন্তর্ভুক্ত করেন, অন্য শিক্ষার্থীর ভিন্নমত থাকতে পারে এবং ক্লাসে মন্তব্যগুলো বাইরে শেয়ার করার সময় বক্তাকে চিহ্নিত করার সম্ভাবনা আছে বলে সতর্ক করেন।

শিক্ষার্থী জোশুয়া শুল্টজার বলেন, শিক্ষার্থীদের আরও মুক্তমনা হতে উৎসাহ দেওয়া একটি মহান লক্ষ্য হতে পারে, তবে হার্ভার্ডের পরিবেশ শুধু সমস্যার একটি অংশমাত্র। একইভাবে, বর্তমানের অত্যন্ত বিভক্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশও সমস্যার একটি অংশ।

তিনি আরও বলেন, ‘এটাই বিশ্বের বাস্তবতা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মালয়েশিয়ায় স্টেট ইউনিভার্সিটির ১১ শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট আউটবাউন্ড প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে

তাকি বিন মহসিন
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৩৫
মালয়েশিয়ার ইন্তি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আমন্ত্রণে অংশ নিতে যাওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ১১ শিক্ষার্থী
মালয়েশিয়ার ইন্তি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আমন্ত্রণে অংশ নিতে যাওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ১১ শিক্ষার্থী

‘শিক্ষা কেবল পাঠ্যবইয়ে সীমাবদ্ধ নয়, এটি অভিজ্ঞতারও আরেক নাম।’ এই বিশ্বাস থেকে নতুন দিগন্তে পা রাখলেন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এসইউবি) একদল তরুণ শিক্ষার্থী। মালয়েশিয়ার ইন্তি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আমন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন মেধাবী শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন দুই সপ্তাহব্যাপী শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়ভিত্তিক স্টুডেন্ট আউটবাউন্ড প্রোগ্রামে। এই আয়োজন দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত একাডেমিক সমঝোতা স্মারকের ধারাবাহিক অংশ।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ইন্তি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রোগ্রামটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এরপরই অনুষ্ঠিত হয় ক্যাম্পাস ট্যুর, অফিশিয়াল ফটোসেশন এবং এসইউবি ও ইন্তির প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রতীকী পতাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠান।

স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন মো. ইয়াহিয়া আরমান, আলামিন হোসেন, ফারদিন আলম, দিয়া তারান্নুম, কামরুন নাহার পিয়া, ফাহমিদা খানম উম্মি, মাশরিহা ওয়াহিদ, সানজিদা মৌ, অর্চি, তামিম ও তাকি বিন মহসিন।

আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও অভিজ্ঞতা

এই প্রোগ্রামে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি চীনের জিয়ামেন নানইয়াং কলেজের শিক্ষার্থীরাও অংশ নিয়েছেন। একসঙ্গে শেখা, কাজ করা এবং সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যমে তাঁরা গড়ে তুলছেন এক বৈশ্বিক বন্ধুত্বের বন্ধন।

দুই সপ্তাহব্যাপী এই সফরে শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন বিজনেস, রোবোটিকস, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আই) এবং অন্যান্য সমসাময়িক বিষয়ের সার্টিফিকেট কোর্সে। পাশাপাশি তাঁরা মালয়েশিয়ার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন ঘুরে দেখবেন, যা তাঁদের জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

মালয়েশিয়ার ইন্তি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আমন্ত্রণে অংশ নিতে যাওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ১১ শিক্ষার্থী
মালয়েশিয়ার ইন্তি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আমন্ত্রণে অংশ নিতে যাওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ১১ শিক্ষার্থী

তত্ত্বাবধান ও নেতৃত্বে

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডিশনাল রেজিস্ট্রার ফারহানা শারমিন এবং আউটরিচ অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক। তাঁরা পুরো প্রোগ্রামের তত্ত্বাবধান এবং শিক্ষার্থীদের শেখার প্রতিটি ধাপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইন্তি ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির সভাপতি ও কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, এ প্রোগ্রামটি শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি, পেশাগত দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য এটি হবে এক বাস্তবভিত্তিক অনুপ্রেরণা, যা তাঁদের ভাবনায় ও জীবনে নতুন আলো ছড়াবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ১৩
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হবে। চলবে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন ফি জমা দেওয়া যাবে।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. নায়েব মো. গোলাম জাকারিয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ জানুয়ারি। মডিউল ‘এ’ এবং ‘বি’ ক্যাটাগরিতে সকাল এবং বিকেল দুই শিফটে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এবার প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা থাকছে না। কেবল লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তিযোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করা হবে। তবে আগের মতো মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। ভর্তি পরীক্ষায় দুই ক্যাটাগরি তথা প্রকৌশল বিভাগসমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং কৌশল বিভাগসমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগের ক্ষেত্রে আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ ও ১ হাজার ৫০০ টাকা। ভর্তির জন্য নির্বাচিত ও অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের নামসহ মেধাক্রম (সম্ভাব্য) ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে।

ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত