Ajker Patrika

ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ: নজরুল গবেষণায় পথ দেখাবে

মো. আশিকুর রহমান
ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ: নজরুল গবেষণায় পথ দেখাবে

বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে প্রথম একমাত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ। ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৪ সালে এ ইনস্টিটিউটটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। নজরুলের স্মৃতি রক্ষা, তাঁর জীবন, সাহিত্য, সংগীত এবং সামগ্রিক অবদান সম্পর্কে পাঠদান, গবেষণা পরিচালনা, রচনাবলি সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রকাশনা ও প্রচারে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ ইনস্টিটিউটে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের পাশাপাশি কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, আর্টক্যাম্প, বক্তৃতা, সেমিনার, কনফারেন্স, প্রামাণ্যচিত্র, অ্যালবাম, জার্নাল, বইসহ বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন আয়োজন চলমান থাকে বছরজুড়ে। এখানে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু করা হয়েছে এমফিল কোর্স। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগে ‘‌নজরুল-স্টাডিজ’ আবশ্যিক কোর্স হিসেবে চালু রয়েছে। এ কোর্সের জন্য এরই মধ্যে ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ কর্তৃক এক অভিন্ন সিলেবাস প্রণয়ন করেছে। 
প্রতিবছর নজরুলের জীবন ও কর্মের ওপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণা প্রকল্পে অনুদান দিয়ে আসছে ইনস্টিটিউটটি। সময়ের ব্যবধানে নজরুল গবেষণায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন শিক্ষার্থীরা। ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পর প্রথম পাঁচ বছরে যেখানে গবেষণা প্রকল্পের সংখ্যা ছিল ২৬, সেখানে সর্বশেষ তিন অর্থবছরে প্রকল্পের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২টি।

এ ছাড়া প্রতিবছর স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে প্রতি বিভাগে প্রথম স্থান অধিকারী শিক্ষার্থীদের ইনস্টিটিউট বৃত্তি দিয়ে থাকে।অনুষদভেদে বৃত্তির নামকরণ হয়েছে কবি পরিবারের সদস্যদের নামে। কবিপত্নীর নামে কলা অনুষদে রয়েছে প্রমীলা বৃত্তি, কবির জ্যেষ্ঠ পুত্রের নামে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদে কাজী সব্যসাচী বৃত্তি, কবির কনিষ্ঠ পুত্রের নামে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে কাজী অনিরুদ্ধ বৃত্তি, অন্য পুত্রের নামে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে রয়েছে বুলবুল বৃত্তি, জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূর নামে চারুকলা অনুষদে উমা কাজী বৃত্তি ও কনিষ্ঠ পুত্রবধূর নামে আইন অনুষদে রয়েছে কল্যাণী কাজী বৃত্তি। এ পর্যন্ত আটটি শিক্ষাবর্ষে মোট ৯১ শিক্ষার্থীকে এসব বৃত্তি দেওয়া হয়েছে।

‘নজরুল ও নারী মুক্তি’, ‘একুশ শতকে নজরুল’, ‘নজরুল জীবন ও মনন’, ‘নজরুলের রচনায় নটরাজ’, ‘বাংলার শিক্ষা বঞ্চনার ইতিহাস: নজরুলের শিক্ষা চিন্তার প্রাসঙ্গিকতা’ ইত্যাদি বিষয়ের ওপর সেমিনার আয়োজন করা হয় এ ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে। আয়োজন করা হয় আন্তর্জাতিক নজরুল কনফারেন্স, যেখানে ভারত ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে নজরুল গবেষকেরা উপস্থিত থাকেন।

ইতিমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইরানের ফেরদৌসী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজী নজরুলের ওপর গবেষণা ও কর্মের পথ অনেক প্রশস্ত হয়েছে। আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজের সঙ্গে যৌথভাবে প্রকাশ করা হয়েছে নজরুলবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্র ‘‍নজরুল জার্নাল’। এর তৃতীয় সংখ্যা প্রকাশিত হবে শিগগির।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পর ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাঁর উদ্যোগের কারণে ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম নতুন মাত্রা পেয়েছে। এমফিল প্রোগ্রাম চালুর পাশাপাশি তিনি নিজেই সম্পাদনা করেছেন ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে নজরুল’ ও ‘নজরুল স্টাডিজ পাঠ্যপুস্তক’ নামে দুটি বই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ তলাবিশিষ্ট একটি আধুনিক ইনস্টিটিউট ভবন নির্মাণাধীন। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গবেষণার কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত হবে বলে প্রত্যাশা করছেন ইনস্টিটিউটসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইইউবিতে ১০ম সিজেন কনফারেন্স ২০২৫ অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন (এমএমসি) বিভাগ আয়োজিত ‘১০ম কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম এডুকেটরস নেটওয়ার্ক (সিজেন) কনফারেন্স ২০২৫’ ২৪ ও ২৫ অক্টোবর এআইইউবি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিডব্লিউ একাডেমির সহযোগিতায় আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যম পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘মিডিয়া ট্রান্সফর্মড: বাংলাদেশ অ্যাট এ ক্রসরোড’।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. হাসানুল এ. হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিডব্লিউ একাডেমির প্রজেক্ট ম্যানেজার মিস জিমি আমির। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এআইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ড. কারমেন জিটা লামাগনা, এআইইউবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম, প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আব্দুর রহমান, ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের (এফএএসএস) ডিন প্রফেসর ড. তাজুল ইসলাম, এমএমসি বিভাগের উপদেষ্টা ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গণমাধ্যম পেশাজীবীরা।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন এমএমসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মিস রানি এলেন ভি রামোস। দুই দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন, প্যানেল আলোচনা এবং একাডেমিক পেপার সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে ২৪ অক্টোবর কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৫-এর ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর গড় পাসের হার ৬২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাবিবুল্যাহ মাহামুদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষ মিলিয়ে মোট ৩৮ হাজার ৩৪২ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৩১ হাজার ৪২১ জন শিক্ষার্থী। আর চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন ১৬ হাজার ৭৮৩ জন, যার মধ্যে ১০ হাজার ৪৬৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫ হাজার ৬৪০ জন ছাত্র ও ৪ হাজার ৮২৩ জন ছাত্রী। পরীক্ষার ফল বাউবির ওয়েবসাইট (result.bou.ac.bd) থেকে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বের ৫০ তরুণের একজন আমিমুল

আব্দুর রাজ্জাক খান
বিশ্বের ৫০ তরুণের একজন আমিমুল

বিশ্বের নানা প্রান্তের তরুণেরা যখন পরিবর্তনের স্বপ্নে ভবিষ্যৎ গড়ছেন, তখন সেই স্বপ্নবাজদের সারিতে বাংলাদেশের তরুণ আমিমুল এহসান খান যোগ করেছেন এক অনন্য অধ্যায়। সম্প্রতি তিনি নির্বাচিত হয়েছেন ‘গ্লোবাল চেঞ্জমেকার ২০২৫’ হিসেবে। বিশ্বের ৫০ জন তরুণের মধ্য থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জন করেছেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট ২০২৫-এ অংশ নেন আমিমুল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৫০ তরুণ নেতাকে নিয়ে আয়োজিত এই সামিটে আলোচনা হয় নেতৃত্ব, টেকসই উন্নয়ন, সামাজিক পরিবর্তন ও বৈশ্বিক সহযোগিতা নিয়ে। এই সম্মেলন ছিল ফুল ফান্ডেড। সামিটে অংশগ্রহণ করা তরুণদের সব ব্যয় বহন করেছে আয়োজক সংস্থা।

টোকিও থেকে বিশ্বমঞ্চে

আমিমুলের উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে জাপানের টোকিও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পেয়েছেন ৮০ শতাংশ স্কলারশিপ, পাশাপাশি জাপান সরকারের এক বছরের বৃত্তিও পেয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন অ্যাওয়ারনেস ৩৬০ নামের একটি বৈশ্বিক তরুণ নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট লিড হিসেবে। পাশাপাশি জাপানের এশিয়ান বিজনেস নেটওয়ার্কে তিনি মার্কেটিং ম্যানেজার পদেও কর্মরত।

পরিবর্তনের পথে নেতৃত্ব

নিজের যাত্রা নিয়ে আমিমুল বলেন, ‘আমি এই সুযোগ পেয়েছি যুব ক্ষমতায়নমূলক কাজের জন্য, যা আমি অ্যাওয়ারনেস ৩৬০-এর সঙ্গে করে আসছি। আমি একা পৃথিবী বদলাতে পারব না জানি, তাই আমি অন্যদের অনুপ্রাণিত করছি, যাতে তারাও পরিবর্তনের পথে এগিয়ে আসে।’

39f00df0-২

তাঁর নেতৃত্বে প্রতিবছর আয়োজিত হয় অ্যাওয়ারনেস ৩৬০ ফেলোশিপ প্রোগ্রাম। যেখানে তরুণদের শেখানো হয় নেতৃত্ব, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ও সামাজিক প্রভাব তৈরির দক্ষতা। পাঁচ বছর ধরে প্রতিবছর এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন বিশ্বের ৭০টির বেশি দেশের প্রায় ৫০০ তরুণ।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি

যুবসমাজের জন্য নিরলস পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২২ সালে আমিমুল পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘দ্য ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড’। এটি ছিল তরুণ নেতৃত্ব এবং সামাজিক প্রভাব তৈরির অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার।

অনুপ্রেরণার বার্তা

দক্ষিণ আফ্রিকার সামিটে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও দৃঢ় করেছে। তিনি বলেন, ‘এই সম্মেলনে অংশ নিয়ে বুঝেছি, পৃথিবীর প্রত্যেক তরুণই পরিবর্তনের বাহক হতে পারে। আমাদের চিন্তা, কাজ আর সহযোগিতার মাধ্যমে গড়ে উঠতে পারে এক সুন্দর, টেকসই ভবিষ্যৎ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাইবার সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশে আরাফাত চৌধুরী

নওসাদ আল সাইম
আরাফাত চৌধুরী।
আরাফাত চৌধুরী।

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে সাইবার অপরাধের ঝুঁকি। ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, ভুয়া আইডি থেকে অপপ্রচার, অনলাইন প্রতারণা কিংবা ডিপফেক ভিডিও—সবকিছু মিলিয়ে এখন সাইবার অপরাধ এক বড় সামাজিক সংকটে পরিণত হয়েছে।

সাইবার এইড বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ডিপফেক ও এআইনির্ভর অপরাধের হার এখন ২৩ শতাংশের বেশি। সোশ্যাল মিডিয়া হ্যাকিং ২১ শতাংশ, ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে অপপ্রচার ১৫ শতাংশ, ই-কমার্স প্রতারণা ১৫ শতাংশ এবং অনলাইন হুমকি ১১ শতাংশ। ভুক্তভোগীদের প্রায় ৭৯ শতাংশের বয়স ১৮-৩০ বছরের মধ্যে, তাঁদের ৫৯ শতাংশই নারী।

অধিকাংশ ভুক্তভোগী জানেন না, কোথায় অভিযোগ করতে হবে। জরিপে দেখা গেছে, ৪২ শতাংশ অভিযোগ দাখিলের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে অজ্ঞ এবং যাঁরা অভিযোগ করেন, তাঁদের মাত্র ১২ শতাংশ আইনি প্রতিকার পান। ফলে সচেতনতার অভাব ও আইনি কাঠামোর সীমাবদ্ধতায় সাইবার নিরাপত্তা এখন দেশের বড় এক চ্যালেঞ্জ।

এই বাস্তবতায় এগিয়ে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী। ২০২২ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘সাইবার এইড বাংলাদেশ’, যা সাইবার অপরাধের শিকার মানুষের আইনি সহায়তা এবং মানসিক সাপোর্ট দেয়। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে সংগঠনটি দেশে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে।

আরাফাত বলেন, ‘সাইবার অপরাধ শুধু মানসিক যন্ত্রণা নয়, সামাজিক মর্যাদাহানির কারণও। কিন্তু বেশির ভাগ ভুক্তভোগী ভয় বা লজ্জায় মুখ খুলতে চান না।’ সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ১ হাজার ৭৬১ জন এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রায়

৪ হাজার মানুষ সাইবার এইডের সহায়তা পেয়েছেন। সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে ৭৬ শতাংশই নারী। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে ব্ল্যাকমেল ও ই-কমার্স প্রতারণা-সংক্রান্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান সুমনা বলেন, ‘একজন আমার ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেল করতে থাকে। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। তখন সাইবার এইডে যোগাযোগ করি। শুধু আইনি সহায়তাই নয়; মানসিকভাবেও তারা পাশে দাঁড়ায়।’

অন্যদিকে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘অনলাইনে একটি পেজ থেকে আইফোন কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছিলাম। সাইবার এইডের সহায়তায় পুলিশে অভিযোগ করতে পারি। এখন অন্তত জানি, প্রতারণার শিকার হলে চুপ করে না থেকে লড়াই করা যায়।’

শুধু আইনি সহায়তা নয়, সচেতনতা সৃষ্টিতেও কাজ করছে সংগঠনটি। এ পর্যন্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইবার সচেতনতা ক্যাম্পেইন এবং বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৫৬টির বেশি সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে তারা। অনলাইনে ‘বেসিক সাইবার লিটারেসি’, ‘সাইবার স্পেস সিকিউরিটি’ ও ‘ডিজিটাল ফরেনসিক’ কোর্স চালু করেছে। ভবিষ্যতে চালু হবে একটি মোবাইল অ্যাপ, যেখানে থাকবে লাইভ চ্যাট সাপোর্ট, এআইনির্ভর নিরাপত্তা নির্দেশনা এবং দ্রুত অভিযোগ দাখিলের সুবিধা।

ভুক্তভোগীরা হটলাইন, ফেসবুক পেজ বা গ্রুপের মাধ্যমে অভিযোগ করলে সাইবার এইড বাংলাদেশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন ও সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।

সাইবার অপরাধ বাড়ার পেছনে আরাফাত দুটি বড় কারণ দেখছেন। সেগুলো হলো সচেতনতার অভাব এবং আইনগত সীমাবদ্ধতা। তাঁর মতে, বেশির ভাগ সাইবার অপরাধ জামিনযোগ্য হওয়ায় অপরাধীদের ভয় কম। আবার ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতায়ও ঘাটতি রয়েছে।

আরাফাতের বিশ্বাস, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সাইবার ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই প্রয়োজন আগাম প্রস্তুতি ও সচেতনতা। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা চাই তরুণেরা শুধু প্রযুক্তির ব্যবহারকারী নয়, বরং প্রযুক্তির নিরাপত্তা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুক।’

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট আল মামুন রাসেল বলেন, সাইবার এইড বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে সাইবার ক্রাইম ভিকটিমদের আইনি সহযোগিতা করে যাচ্ছে। পাশাপাশি সাইবার‌ ক্রাইম প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। সাইবার ক্রাইম ভুক্তভোগীদের আইনি সহযোগিতা প্রদানে এটি অনন্য ও কার্যকরী উদ্যোগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

ঘরে ঝুলছিল নারীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত