Ajker Patrika

চাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

সুমন বাইজিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এত প্রাণবন্ত আমেজ তাঁরা আগে দেখেননি।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে ৯০৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ৪১৫ জন এবং হল ও একটি হোস্টেল সংসদে ৪৯৩ জন প্রার্থী। কেন্দ্রীয় সংসদে ৩৬৭ জন পুরুষ ও ৪৮ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৭। তাঁদের মধ্যে ছাত্র ভোটার ১৬ হাজার ৮৪ এবং ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৪৩৪ জন।

শিক্ষার্থীরা মনে করেন, চাকসু শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। প্রতিষ্ঠার ৬০ বছরে আবাসন হয়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ। তাঁদের চাওয়া, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবেন। শিক্ষার্থীরা এমন প্রার্থীকে বেছে নিতে চান, যিনি মেধাবী, স্বচ্ছ, শিক্ষার্থীবান্ধব এবং বাস্তবসম্মত কর্মসূচি বাস্তবায়নে সক্রিয়।

মো. ফারুক হোসেন
মো. ফারুক হোসেন

চাকসু নির্বাচন একটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি হয়ে উঠুক

মো. ফারুক হোসেন, শিক্ষার্থী, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। দীর্ঘদিন ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় এর কার্যকারিতা বা প্রতিনিধির দায়িত্ব কেমন হয়, তা আমাদের অভিজ্ঞতা নেই। তবু আশা করি, এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক চর্চা ও সংস্কৃতিতে পরিণত হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন। আশা করি, উৎসবমুখর এই নির্বাচন পরিপূর্ণতা পাবে এবং দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীরা এই গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করে দেশকে এগিয়ে নেবেন।

সারাহ চৌধুরী
সারাহ চৌধুরী

শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর প্রশাসনের কাছে পৌঁছাবে

সারাহ চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগ

চবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে তাঁদের দাবি পৌঁছাতে পারেন না। চাকসু নির্বাচন হলে আমরা একজন প্রতিনিধি পাব, যিনি ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর কণ্ঠস্বর প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেবেন। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবশ্যই অভিজ্ঞ, সৎ, সাহসী ও লেজুড়বৃত্তিহীন হতে হবে। রাজনৈতিক আদর্শ থাকতে পারে, তবে তাঁদের মূল লক্ষ্য হবে শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা করা। একজন প্রকৃত প্রতিনিধি যেকোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করতে সক্ষম হবেন। চাকসু বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে নতুন দিক উন্মোচিত হবে এবং শিক্ষা ও গবেষণার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে।

ফারিহা নানজিবা
ফারিহা নানজিবা

নারী ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের সমান মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে

ফারিহা নানজিবা, দর্শন বিভাগ

চাকসুর কার্যকারিতা নির্ভর করে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সক্রিয়তার ওপর। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবশ্যই প্রতিশ্রুতিতে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবায়নের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করবেন। দলীয় পরিচয় ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন, আবাসন, নিরাপত্তাব্যবস্থা ও জরুরি সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। নারী ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের সমান মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দলীয় বিভাজন বা ভয়ভীতির রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকলে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারবেন।

রিপন মিয়া
রিপন মিয়া

পাওয়ার পলিটিকস থেকে মুক্ত হবে

রিপন মিয়া, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

চাকসু নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে আশা করি। শিক্ষার্থীরাও এখন প্রচারণার উৎসবমুখর পরিবেশ উপভোগ করছেন। প্রার্থীরা তাঁদের ইউনিক আইডিয়া নিয়ে আসছেন। চাকসুকে কেন্দ্র করে কেউ পাওয়ার পলিটিকস করতে পারবেন না, এ বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে। আমি চাই এমন নেতা, যিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধানে কাজ করবেন। যেমন শাটল ট্রেনের বগি বাড়ানো, খাদ্যের মান উন্নয়ন, ব্যাংকিং সিস্টেম ডিজিটাল করা, নারীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস তৈরি, বাসা ভাড়া কমানো ও পরিবেশ উন্নয়ন।

মো. সোহাগ আলম
মো. সোহাগ আলম

চাকসু হোক শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের প্ল্যাটফর্ম

মো. সোহাগ আলম, নৃবিজ্ঞান বিভাগ

৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন হচ্ছে। ক্যাম্পাসে যে আমেজ, উন্মাদনা ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। প্রার্থীরা নতুন ভাবনা ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আসছেন। আমি চাই, চাকসু কোনো রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার না হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে কাজ করুক। সবচেয়ে বড় সংকট হলো আবাসন। আন্তরিকতা থাকলে প্রতিটি হলে এক্সটেনশন করে সমস্যা কিছুটা হলেও নিরসন সম্ভব। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের পরিবেশ ঠিক রাখা, সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং খাদ্যনিরাপত্তার উন্নয়নের জন্যও চাকসু কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের হারে বাংলাদেশের বিদায়, হামজার হতাশা

এবার দলগুলো পেল চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও স্বাক্ষরের আমন্ত্রণপত্র

সেনা কর্মকর্তাদের জন্য ‘সাবজেল’ ঘোষণার যৌক্তিকতা কী, টিআইবির প্রশ্ন

ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করলেন হাবিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত