Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

যদি লক্ষ্য থাকে অটুট

আফসানা আলম প্রীতি। ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুর জেলার পশ্চিম শেখপুরা গ্রাম থেকে উঠে এসে হলি ক্রস কলেজ এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস বোস্টনে পাবলিক পলিসিতে পিএইচডি গবেষণার যাত্রা। বর্তমানে ম্যাসাচুসেটস স্টেট হাউসের ব্যস্ত করিডরে লেজিসলেটিভ ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করছেন। বলছি বাংলাদেশের তরুণী আফসানা আলম প্রীতির কথা। তাঁর শৈশব, উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন, বৃত্তি পাওয়ার অভিজ্ঞতা এবং যুক্তরাষ্ট্রে মানিয়ে নেওয়ার গল্প নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক খান

আব্দুর রাজ্জাক খান

আপনার শৈশব এবং পড়াশোনা বিষয়ে জানতে চাই।

শৈশব কেটেছে লক্ষ্মীপুর জেলার পশ্চিম শেখপুরা গ্রামে। বড় হয়েছি যৌথ পরিবারে। স্কুলজীবনের প্রথম অংশ কেটেছে স্থানীয় স্কুলে। অষ্টম শ্রেণিতে শহরের রামগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হই। দু-তিন ঘণ্টা লাগত সেখানে যেতে। মাধ্যমিক পর্যন্ত সেখানে পড়াশোনা শেষে ঢাকায় হলি ক্রস কলেজ এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি।

আপনি কখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখলেন? প্রেরণা কোথায় পেলেন?

স্নাতকের শেষ দিকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার কথা ভাবা শুরু করি। স্নাতকে বিষয় ছিল গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা। হঠাৎ আগ্রহ বদলে যায়। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার প্রক্রিয়াটা জটিল ও ব্যয়বহুল মনে হলেও পরে জানতে পারি, বৃত্তির সুযোগ রয়েছে। স্বপ্নটা আর অসম্ভব মনে হয়নি। শুধু পড়াশোনা নয়, নতুন দেশ, নতুন সংস্কৃতি এবং নতুন সমাজ সম্পর্কে জানার সুযোগও ভীষণভাবে আকর্ষণ করেছিল। সবচেয়ে বড় কথা, শুরু থেকে পরিবারের সদস্যরা পাশে ছিলেন। তাঁরা সাহস জুগিয়েছেন, অনুপ্রাণিত করেছেন এবং প্রতিটি ধাপে আমার সঙ্গে থেকেছেন।

বৃত্তি পাওয়ার প্রক্রিয়াটা কেমন ছিল?

এই প্রক্রিয়াটা ছিল দীর্ঘ আর ধৈর্যের। শুরুতে এমন বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজতে শুরু করি, যেখানে আমার আগ্রহের প্রোগ্রাম রয়েছে। এরপর সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করি। ভাষাগত দক্ষতা প্রমাণের জন্য আইইএলটিএস পরীক্ষা দিই। তারপর শুরু করি স্টেটমেন্ট অব পারপাস লেখার কাজ, যেটি সময় নিয়ে ভেবেচিন্তে লিখেছি। কারণ, এর মাধ্যমেই নিজের গল্প, দক্ষতা ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য অ্যাডমিশন কমিটির কাছে তুলে ধরতে হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে আবেদনপ্রক্রিয়া নিয়ে গাইড করার কেউ ছিলেন না। সবকিছু নিজেই শিখতে হয়েছে। যাঁরা আমাকে একাডেমিক ও প্রফেশনাল দিক থেকে ভালোভাবে চেনেন এবং আমার কাজ সম্পর্কে বলতে পারেন, তাঁদের থেকেই রেফারেন্স লেটার চেয়েছি।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম যখন পা রাখলেন, কী মনে হয়েছিল? সংস্কৃতি, আবহাওয়া, ভাষাগত ব্যবধান—কোনটা সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল?

প্রথম যখন যুক্তরাষ্ট্রে আসি, ভাষাগত দিক থেকে খুব বেশি চ্যালেঞ্জ অনুভব করিনি। ইংরেজি ভাষায় আগে থেকে কিছুটা অভ্যস্ত ছিলাম। বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আবহাওয়া। তীব্র ঠান্ডা, বরফ—এসবের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন ছিল। প্রথম তুষার পড়তে দেখার অনুভূতি স্বপ্নের মতো লেগেছিল।

সংস্কৃতির দিক থেকেও কিছু পার্থক্য ছিল। যদিও প্রতিটি সংস্কৃতিরই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য আছে।

কাজ, ক্লাস, হোমওয়ার্ক—সবকিছু সামলে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কীভাবে নিজেকে সামলেছেন?

মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখা শুরুতে কঠিন ছিল। পড়াশোনার চাপ, একা থাকা, নতুন পরিবেশ—সব মিলিয়ে নিজেকে তৈরি করতে কিছুটা সময় লেগেছিল। আমার পরিবার এবং বন্ধুরা সব সময় মানসিকভাবে সমর্থন দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক সচেতন। এখানে কাউন্সেলিং সেন্টার, ওয়েলনেস প্রোগ্রাম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য নানা রিসোর্স বা সময় বরাদ্দ থাকে, যা সহায়ক হয়েছে। ধীরে ধীরে বুঝেছি, মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে নিজের জন্য সময় বের করা জরুরি। চেষ্টা করি সময় পরিকল্পনা করে ব্যবহার করতে, যাতে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের জন্যও কিছুটা সময় রাখা যায়। মাঝে মাঝে হাঁটতে বের হই, প্রিয় গান শুনি, বই পড়ি কিংবা ইয়োগা করি। আর পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখাটা আমার জন্য অপরিহার্য।

‘কমিশন অন ইলেকশন ল’-এ আপনি এখন যুক্ত আছেন। এই কাজটা আসলে কী ধরনের?

বর্তমানে আমি ম্যাসাচুসেটস স্টেট হাউসে ‘কমিশন অন ইলেকশন ল’-এর অধীনে লেজিসলেটিভ ইন্টার্নশিপ করছি। এই কমিশনের মূল কাজ হলো নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন আইন, ভোটাধিকার এবং পুরো নির্বাচনপ্রক্রিয়া ঘিরে আসা বিলগুলো পর্যালোচনা করা এবং আলোচনা ও গবেষণার মাধ্যমে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করা।

আমার কাজের অংশ হিসেবে নির্বাচনী আইন-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো নিয়ে গবেষণা করি, কমিটির শুনানি পর্যবেক্ষণ করি এবং মাঝে মাঝে রিপোর্ট তৈরিতে সহায়তা করি। এই কাজ করতে গিয়ে আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া, নীতিনির্ধারণ এবং জনগণের অংশগ্রহণ—সবই কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাচ্ছি।

এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কাজ করতে গিয়ে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ বা শিখন অভিজ্ঞতা হয়েছে?

খুব বড় কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়িনি; বরং পুরো পরিবেশটাই ছিল দারুণ। সবাই আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছেন। তবে শুরুতে আমেরিকার সরকারব্যবস্থা, নির্বাচনপ্রক্রিয়া, বিশেষ করে ম্যাসাচুসেটসের সম্পর্কে খুব বেশি জানতাম না। এখানে কাজ করতে গিয়ে নতুন অনেক শব্দ, নিয়ম ও পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হতে হয়েছে।

শুনেছি, আপনি ম্যাসাচুসেটস স্টেট হাউসে হিয়ারিং সেশনে অংশ নিয়েছেন। সেদিনের কথা যদি বলেন।

এই অভিজ্ঞতা সত্যিই বিশেষ ছিল। ক্লাসরুমে বসে এত দিন যেসব নীতি ও পলিসি নিয়ে আলোচনা করতাম, সেগুলো এবার সামনে থেকে দেখা, পুরো প্রক্রিয়ার অংশ হওয়া—আলাদা অনুভূতি ছিল। যেকোনো আইন বা নীতি কীভাবে জনগণের প্রত্যক্ষ মতামতে তৈরি হয়, সেই বিষয়েও ধারণা হয়েছে। নীতিনির্ধারণ যে শুধু তাত্ত্বিক কিছু নয়, বরং বাস্তব প্রক্রিয়া, সেটা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি।

‘বিদেশি’ বা নারী শিক্ষার্থী হিসেবে কখনো কি বৈষম্যের শিকার হয়েছেন?

একজন নারী বা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে আমার পরিচয় নিয়ে কেউ অবমূল্যায়ন করেছে, এমনটা হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের জন্য কিছু সীমাবদ্ধতা আছে; বিশেষ করে কাজের ধরন, ইন্টার্নশিপ বা কিছু বৃত্তির ক্ষেত্রে। তবে আমার বিশ্ববিদ্যালয়, কাজের জায়গা—সব সময় চাহিদা বা পরিস্থিতি বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচনা করেছে।

আফসানা আলম প্রীতি। ছবি: সংগৃহীত
আফসানা আলম প্রীতি। ছবি: সংগৃহীত

এখন পাবলিক পলিসিতে পিএইচডি করছেন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

ভবিষ্যতে এমন জায়গায় নিজেকে দেখতে চাই, যেখানে গবেষণা আর নীতিনির্ধারণ—দুটি একসঙ্গে করা যায়। আমার কাজ যেন শুধু একাডেমিক গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং বাস্তবিক জীবনযাপনকে প্রভাবিত করে, এটাই চাওয়া। বিশেষ করে নারী, অভিবাসী বা প্রান্তিক মানুষকে নিয়ে কাজ করতে চাই। ভবিষ্যতে কোনো গবেষণাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় বা নীতিনির্ধারণমূলক সংস্থায় কাজ করতে চাই।

যেহেতু রাজনীতি ও নীতিনির্ধারণ নিয়ে শিখছি, এই খাতেও কাজ করতে আগ্রহী। যে কাজই করি, তা যেন মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে।

যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে থাকেন, সেখানে শিক্ষার্থীর জন্য থাকা-খাওয়ার খরচ কত?

আমি বোস্টনে থাকি, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ব্যয়বহুল শহর। একজন শিক্ষার্থীর জন্য এখানে থাকা-খাওয়া, যাতায়াত, হেলথ ইনস্যুরেন্স—সব মিলিয়ে মাসে প্রায় ২ হাজার ডলার খরচ হয়। এটি সামলাতে আমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া স্টাইপেন্ডের ওপর নির্ভর করতে হয়। কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হলেও পরিকল্পনা করে চললে এই খরচ ম্যানেজ করা সম্ভব।

অনেক শিক্ষার্থীই ডাইনিং হলে, ক্যাফে বা টিউটরিং করে আয় করেন। আপনার ক্ষেত্রে কেমন ছিল?

ক্যাফেতে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুব ভালো লেগেছে। কাস্টমার গ্রিটিংস, কফি বানানো—এসব আমার ভালো লাগত। এখন বিভিন্ন ধরনের কফি বানাতে পারি! টিউটরিংয়ের অভিজ্ঞতাও দারুণ ছিল। যখন কাউকে কিছু শেখাতাম, সে ক্ষেত্রে নিজেরও অনেক কিছু জানা হয়ে যেত।

ফান্ডিং থাকলেও কি কখনো আর্থিক টানাপোড়েন অনুভব করেছেন?

হ্যাঁ, অবশ্যই। পুরোপুরি ফান্ডেড হলেও আর্থিক টানাপোড়েন তো রয়েছেই। কারণ যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে যেখানে থাকি, সেই শহরটা অনেক ব্যয়বহুল।

এখানে বিভিন্ন ধরনের খরচ থাকে, অনেক সময় এমন খরচও চলে আসে, যেটা আগে ধারণা করা যায় না। তাই মনে হয়, বাজেট করে চলাটা খুব জরুরি।

যাঁরা এখন যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে আসতে চান, তাঁদের কী পরামর্শ দেবেন?

প্রথমে নিজের লক্ষ্য অটুট রাখতে হবে। আপনি কেন মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে চান, কোন বিষয়ে করতে চান, আর সেটা কীভাবে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সঙ্গে মেলে। এসব বিষয় ভেবে সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রাম নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। স্টেটমেন্ট অব পারপাস আর রেফারেন্স লেটার—এসব নিয়ে আগে থেকে কাজ করা উচিত। তাড়াহুড়ো না করে হাতে সময় নিয়ে এই প্রস্তুতিগুলো নিতে পারলে ভালো হয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে এসে শুধু পড়াশোনাই নয়, মানিয়ে নেওয়া, একা থাকা, আর্থিক দিক সামলানো—সবকিছুই চ্যালেঞ্জিং। তাই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা খুব দরকার। সবচেয়ে বড় কথা, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা জরুরি। এই জার্নিতে অনিশ্চয়তা এবং নানা ধরনের মানসিক চাপ আসবে। আপনি যদি মন থেকে চেষ্টা করেন, শেখার ইচ্ছা রাখেন, আর ধৈর্য ধরে এগিয়ে যান, অবশ্যই সফল হবেন।

সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আজকের পত্রিকাকে ধন্যবাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ নিয়ে সভা ২৫ ডিসেম্বর, নতুন বছরে প্রথম দিন ক্লাস শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ১৩
প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে নানা স্লোগান দেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে নানা স্লোগান দেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি) প্রথম ব্যাচের ক্লাস আগামী ১ জানুয়ারি শুরু হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের খসড়া ২৫ ডিসেম্বর আন্তমন্ত্রণালয় সভায় উপস্থাপন করা হবে।

অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষার্থীদের একাংশের শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির মধ্যে আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধ্যাদেশ সংশোধন করা হচ্ছে জানিয়ে বলেছে, এ প্রক্রিয়া ‘সময়সাপেক্ষ’।

আজ বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৯ হাজার ৩৮৮ জন শিক্ষার্থী ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট, বিজ্ঞান ইউনিট ও ব্যবসাশিক্ষা ইউনিটে ভর্তি নিশ্চয়ন করেছেন। বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামোতে ভর্তি করা শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর জন্য স্ব-স্ব কলেজের শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আসন্ন শীতকালীন ছুটি শেষে ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে বলে শিক্ষক প্রতিনিধিরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশের খসড়ার বিষয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সুধীজনসহ বিভিন্ন মহল হতে পাঁচ হাজারের বেশি মতামত পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত প্রতিটি মতামত আইনগত ও বাস্তবতার নিরিখে পর্যালোচনা করে খসড়া পরিমার্জন করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, পরিমার্জনের কাজ সম্পন্ন করে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিমার্জিত খসড়ার ওপর আন্তমন্ত্রণালয় সভা করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে সাত কলেজের সম্পৃক্ততার ধরন বিষয়ে বাস্তবসম্মত, কার্যকর ও উপযোগী কাঠামো নির্ধারণসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে ও বিধিবদ্ধ পদ্ধতি অনুসরণ করে অধ্যাদেশের খসড়া পরিমার্জন করা হচ্ছে।

এদিকে এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ অধ্যাদেশ জারির দাবিতে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। দুপুরের পর আব্দুল গণি রোডের শিক্ষা ভবনের সামনের সংযোগ সড়ক থেকে সচিবালয় অভিমুখী সড়কে অবস্থান নেন তাঁরা। এতে হাইকোর্ট মোড় থেকে সচিবালয় অভিমুখে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট হয়। শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে গতকাল রোববার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত শিক্ষা ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

জানতে চাইলে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ২০২৪-২৫ ব্যাচের ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবু বকর আজ দুপুরে বলেন, ‘অধ্যাদেশ জারি হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব ৷ দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজকে নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের কার্যক্রম চলছে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খসড়ায় সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ বা ‘স্কুলিং’ কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী কলেজগুলোতে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।

ওই খসড়া প্রকাশের পর কলেজগুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভিন্ন অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। ওই সাত কলেজসহ সারা দেশের সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতির মতো মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার শঙ্কায় আছেন। তাঁরা কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে ‘অধিভুক্তিমূলক কাঠামোতে’ নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের একাংশ দ্রুত অধ্যাদেশের দাবি জানিয়েছেন এবং উচ্চমাধ্যমিক ও অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ ‘স্কুলিং’ কাঠামো বাতিল এবং কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘এসটিআই’ সম্মেলন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৮
৭ম আই-ইইই ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি (এসটিআই) ৫.০’ আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে ডিআরইউয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
৭ম আই-ইইই ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি (এসটিআই) ৫.০’ আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে ডিআরইউয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিল্পের জন্য টেকসই প্রযুক্তির উন্নয়নে আন্তর্জাতিক গবেষকদের সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে সপ্তম আই-ইইই ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি (এসটিআই) ৫.০’ আন্তর্জাতিক সম্মেলন। আগামী ১১-১২ ডিসেম্বর পূর্বাচলের আমেরিকান সিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আয়োজকেরা।

আয়োজকেরা জানান, এ বছর সম্মেলনে এআই সহযোগিতা, সাইবার সিকিউরিটি, রেজিলিয়েন্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিস্টেম, আইওটি ও উন্নত অটোমেশন, গ্রিন টেকনোলজি, সার্কুলার ইকোনমি, পোস্ট-প্যান্ডেমিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রান্সফরমেশনসহ সমসাময়িক নানা বিষয়ে মূল বক্তব্য, গবেষণা উপস্থাপনা, কর্মশালা ও প্যানেল আলোচনা হবে।

আয়োজক আই-ইইই কম্পিউটার সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে গ্রিন ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে প্রথম এসটিআই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে ২০টির বেশি দেশের গবেষক অংশ নিলেও ২০২৪ সাল নাগাদ এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০।

সংবাদ সম্মেলনে জিইউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন, এআই যুগে প্রযুক্তিগত বিপ্লব ও সম্ভাব্য কর্মহীনতার আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে লাগসই শিল্পপ্রযুক্তি ও গবেষণানির্ভর সমাধানের কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষাবিদ, গবেষক, শিল্প খাত ও নীতিনির্ধারকদের সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমেই টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানবিক উদ্ভাবন ও বাস্তব প্রয়োগ যোগ্যতার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া দরকার। গ্রিন ইউনিভার্সিটি সে দিকটি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। তা ছাড়া প্রতি বছরই সম্মেলনের গবেষণা প্রবন্ধ আই-ইইই এক্সপ্লোর ও স্কোপাস ইনডেক্সিংয়ের মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সম্মেলনের মর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়িয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ও সম্মেলনের পাবলিকেশন চেয়ার ড. মো. আহসান হাবীব জানান, টেকসই শিল্পপ্রযুক্তির গবেষণা ও প্রয়োগ বৃদ্ধিতেই এসটিআই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইলেকট্রনিকস, রোবোটিকস, সাইবার-ফিজিক্যাল সিস্টেম, টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন খাতের গবেষণাকে শিল্পে প্রয়োগযোগ্য করে তোলাই এ প্ল্যাটফর্মের লক্ষ্য।

জিইউবির তড়িৎ ও বৈদ্যুতিন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এএসএম শিহাব উদ্দিন বলেন, এবারের সম্মেলনে দেশ-বিদেশ থেকে ৪৩৪টি গবেষণা পেপার জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১১৮টি প্রবন্ধ উপস্থাপনার জন্য নির্বাচিত হয়েছে। নির্বাচিত সেরা গবেষণাপত্রগুলোকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হবে এবং সেগুলো আই-ইইই এক্সপ্লোর ও স্কোপাস ইনডেক্সিংয়ে প্রকাশিত হবে।

তিনি জানান, ১১ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যরা। ১২ ডিসেম্বর সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান।

সম্মেলনে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কি-নোট স্পিকার, শিল্প খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জিইউবি সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম যোগাযোগ বিভাগের শিক্ষক ড. মো. অলিউর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ

শিক্ষা ডেস্ক
শিক্ষকদের সঙ্গে ৫৪তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষকদের সঙ্গে ৫৪তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগে ফল সেমিস্টার–২০২৫-এ ভর্তি হওয়া ৫৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্প্রতি ডিআইইউ কমিউনিকেশন ক্লাবের উদ্যোগে সাভারের আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটির বনমায়া প্রাঙ্গণে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল কাবিল খান জামিল। শুরুতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও ডিআইইউ কমিউনিকেশন ক্লাবের পক্ষ থেকে নবীনদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিয়াদুস সালেহীন শৌভিক ও সাবাবা খাদিজা হক।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গ্রেগরি জন সাইমন, স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক ও সহকারী অধ্যাপক অমিত চক্রবর্তী, বিভাগের প্রভাষক ইহা অবাপ্তি, মেহেরাবুল হক রাফি, মেহেরুন নাহার, ডিআইইউ কমিউনিকেশন ক্লাবের সভাপতি তামান্না ইয়াসমিন মারিয়া, সাধারণ সম্পাদক ইশরাক আলমসহ প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

বক্তারা বলেন, সাংবাদিকতা বিভাগ একটি সৃজনশীল ও সম্ভাবনাময় শিক্ষাক্ষেত্র, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিভা বিকাশের পাশাপাশি বাস্তবমুখী অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পায়। চার বছরের বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে পাঠের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় থাকার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জাতির প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য তারা নবীনদের উৎসাহিত করেন। শিক্ষার্থীদের যেকোনো ইতিবাচক উদ্যোগ ও দক্ষতা উন্নয়নে সবসময় পাশে থাকার আশ্বাসও দেন শিক্ষকেরা।

নবীন শিক্ষার্থীরা বলেন, এমন আন্তরিক ও প্রাণবন্ত আয়োজন তাদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। শিক্ষকবৃন্দের দিকনির্দেশনা এবং জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুটিকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। তারা প্রত্যাশা করেন যে সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যয়ন শেষে দক্ষ ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবেন।

আলোচনা পর্ব শেষে নবীন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় গান, নৃত্যসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ‘নব্যপ্রভা’-এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি

উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ফিনল্যান্ডের দ্বার খুলেছে। দেশটির অন্যতম শীর্ষ বিদ্যাপীঠ ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ঘোষণা করেছে সম্মানজনক বৃত্তি কর্মসূচি। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থী আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারছেন না, তাঁদের জন্য এই বৃত্তি হতে পারে ইউরোপে পড়াশোনার এক স্বর্ণালী সুযোগ।

ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কি ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। ১৬৪০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে নিয়মিতভাবে শীর্ষস্থান দখল করা এ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানসম্মত শিক্ষার জন্য বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত।

সুযোগ-সুবিধা: ফিনল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কিতে পড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এই বৃত্তি কর্মসূচির আওতায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীরা তাঁদের টিউশন ফির ৫০ বা ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন। সাধারণত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক টিউশন ফি ১৩ হাজার থেকে ১৮ হাজার ইউরোর মধ্যে হয়ে থাকে, যা এই স্কলারশিপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। ফলে শিক্ষার্থীদের জন্য ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথ আরও সহজ ও সাশ্রয়ী হবে।

আবেদনের যোগ্যতা: বৃত্তিটির জন্য আবেদনে আগ্রহী প্রার্থীদের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রার্থীদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরের দেশের শিক্ষার্থী হতে হবে। আবেদনকারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তিযোগ্য হতে হবে। প্রার্থীকে ফিনল্যান্ডে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় স্টুডেন্ট ভিসা ও রেসিডেন্স পারমিটের শর্তও পূরণ করতে হবে। প্রার্থীর অবশ্যই ভালো ফলসহ স্নাতক (ব্যাচেলর) ডিগ্রি থাকতে হবে। এ ছাড়া যাঁদের মাতৃভাষা ইংরেজি নয়, তাঁদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইংরেজি ভাষা পরীক্ষার সনদ থাকতে হবে।

প্রয়োজনীয় তথ্য: ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কির স্কলারশিপে আবেদনের জন্য প্রার্থীদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে ডিগ্রির ট্রান্সক্রিপ্ট, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার সনদ (টোয়েফল বা আইইএলটিএস), পরিচয় নিশ্চিত করতে পাসপোর্টের কপি এবং নিজের শিক্ষাগত ও অভিজ্ঞতার বিস্তারিত তুলে ধরতে একটি হালনাগাদ জীবনবৃত্তান্ত। এসব নথি সঠিক ও সম্পূর্ণভাবে জমা দিয়ে আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রগুলো: বিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান ও পরিবেশ বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, মানবিক ও ভাষাবিজ্ঞান, আইন অনুষদ, শিক্ষা ও মনোবিজ্ঞান, কৃষি ও বনবিদ্যা ও চিকিৎসাবিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদ। প্রতিটি অনুষদের অধীনে রয়েছে অন্তত ৫-৭টি বিভাগ। বৃত্তির শর্ত ও শিক্ষার্থীদের আগ্রহ অনুযায়ী নিজের পছন্দের অনুষদ ও বিভাগ বেছে নেওয়া যাবে।

আবেদনের পদ্ধতি: আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এই লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: ১৬ জানুয়ারি, ২০২৬

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক

আনিসুলের জাপা ও মঞ্জুর জেপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঘোষণা

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লিব লিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

বুধবার সিইসির তফসিল ঘোষণা রেকর্ড হবে, বিটিভি–বেতারকে ইসির চিঠি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত