Ajker Patrika

স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পরামর্শ

মো. শাহজালাল মিশুক
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৯
মো . শাহজালাল মিশুক, সহকারী অধ্যাপক নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ
মো . শাহজালাল মিশুক, সহকারী অধ্যাপক নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ

দেশে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। এ ধাপে একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে এবং দিন শেষে নিজেকে সফল প্রমাণ করতে হলে কিছু বিষয় মেনে চলা খুবই জরুরি।

নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল ও আত্মবিশ্বাসী হওয়া

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির সময় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে অনেক চাপে থাকেন। বেশি পড়াশোনার জন্য ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এটি করা যাবে না। একজন ভর্তি পরীক্ষার্থীর দৈনিক ৬-৭ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। নিয়মিত পানি পান করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার সময় কোনোভাবেই অসুস্থ হওয়া যাবে না।

কৌশলী প্রস্তুতি গ্রহণ

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কয়েক মাস সময় পাওয়া যায়। এ স্বল্প সময়ে ভর্তি পরীক্ষায় সফলতা লাভের জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ। এ ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীকে কৌশলী হওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস যথেষ্ট বড় এবং কঠিন হওয়ায় কোন কোন টপিক পরীক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটি আগে খুঁজে বের করতে হবে। সিলেবাসের কোন অংশ থেকে বেশি প্রশ্ন হয়ে থাকে, কোন অংশ থেকে তুলনামূলকভাবে কম প্রশ্ন হয়, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে যত বেশি সম্ভব বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন সমাধান করতে হবে।

ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার সীমিতকরণ

ভর্তি প্রস্তুতির সময় ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার, টেলিভিশন ইত্যাদি থেকে নিজেকে দূরে রাখা উচিত। কারণ প্রতিটি মুহূর্ত অনেক মূল্যবান। অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না। তবে প্রতিদিন আপডেট থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে তা যেন অবশ্যই পড়াশোনাবিষয়ক কাজেই ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিন একবার হলেও গণমাধ্যমগুলোর শিরোনাম পড়া উচিত।

বিগত সালের প্রশ্নব্যাংক সমাধান

নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার বিগত ১০ বছরের প্রশ্নগুলো প্রাথমিকভাবে ঘেঁটে দেখুন। এরপর সেখান থেকে বের করুন, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় কোন টপিক থেকে প্রশ্ন বেশি আসে, কোন কোন টপিক থেকে প্রশ্ন কম আসে, আর কোন কোন টপিক থেকে প্রশ্ন আসেই না। আপনার টার্গেটেড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা টপিকগুলো নোট করলে বেশি ভালো হয়।

অনুশীলন এবং অনুশীলন

এ সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন প্রচুর অনুশীলন। যে যত বেশি অনুশীলন করবে, সে তত বেশি এগিয়ে থাকবে। তবে অনুশীলনের সময় একটি বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি। সেটি হলো: একই টপিক বা বিষয় যেন বারবার রিভিশন দেওয়া না হয়। যেমন: একই নিয়মের ১০টি অঙ্ক সমাধান করার চেয়ে ১০ নিয়মের একটি করে অঙ্ক সমাধান করা বেশি কার্যকর। সব টপিক ও বিষয়কে সমান গুরুত্ব দিতে হবে।

সময় ব্যবস্থাপনা জরুরি

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে জয়লাভ করতে হলে অনেক রণকৌশল শিখতে হবে। সময় ব্যবস্থাপনা তার মধ্যে অন্যতম। কীভাবে কম সময়ের মধ্যে উত্তর করা যায়, তার জন্য প্রয়োজন প্রচুর অনুশীলন। এর জন্য শর্টকাট টেকনিকসহ আরও বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে বাড়িতে বসে সময় দেখে দেখে পরীক্ষা দিতে হবে। সময় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ধারণা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাদ পড়ে যায়।

শেষ মুহূর্তের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে পরীক্ষার নিয়মকানুন জানা, ওএমআর ফরম পূরণ, পরীক্ষার দিনে প্রবেশপত্র সঙ্গে থাকা ইত্যাদিও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একসঙ্গে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছপদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়, আর কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়—সেগুলো খেয়াল রেখে পরিকল্পনা করতে হবে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিটভিত্তিক পরীক্ষা নেয় তাদের জন্য একধরনের প্রস্তুতি, আর যারা বিষয়ভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা নেয় তাদের জন্য ভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...