Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

ডাকসুকে যত দ্রুত সম্ভব ক্রিয়াশীল করতে সচেষ্ট আছি

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে তিনি এ দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইলিয়াস শান্ত।

ইলিয়াস শান্ত
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৪, ২৩: ১০

প্রশ্ন: গত ২২ সেপ্টেম্বর খুলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নবীন শিক্ষার্থীদেরও ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম কেমন চলছে, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কেমন?

উপাচার্য: একটা অনিশ্চিত সময় অতিক্রম করে সবার সহযোগিতায় আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি। পাঠদান শুরুর পর থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখতে পাচ্ছি। ক্লাস শুরুর পরপরই আমরা নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছি। অভিভাবকদের সঙ্গেও বিভিন্ন পর্যায়ে আমার কথা হয়েছে। এটা সত্যি যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে একটা অনিশ্চয়তা ছিল, যেটা সময়ের ব্যবধানে কেটে যাচ্ছে। আমি তিনটি বিভাগে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এসব বিভাগে নিয়মিত ৮৬-৯০ ভাগ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হচ্ছেন। নতুন শিক্ষাবর্ষে যাঁরা ভর্তি হয়েছেন, তাঁরাও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ক্লাসে থাকছেন।

প্রশ্ন: সিন্ডিকেট এক সিদ্ধান্তে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের দলীয় রাজনীতি বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে। শুধু শিক্ষার্থীরা নন, শিক্ষক-কর্মচারীদেরও দলীয় রাজনীতি বন্ধ করা হয়েছে...

উপাচার্য: দলীয় রাজনীতির বিষয়ে সিন্ডিকেটে আলোচনা হয়েছে। তবে আমরা এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত দিইনি। যেটা হয়েছে সেটা হলো নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা। আমরা এটা এর আগেও বহুবার বলেছি, ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতির বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাব। তবে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বলতে আমরা যে কাঠামোর সঙ্গে পরিচিত, বিগত বছরগুলোতে যে রাজনীতির নামে অপরাজনীতির চর্চা হয়েছে, যেটার মাধ্যমে আমাদের যে কঠিন ও তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেটাকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। এ ধরনের রাজনীতি চলতে দেওয়া যাবে না।

প্রশ্ন: এখন ডাকসু নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ডাকসু এবং ১৮টি হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনের ৫ বছর পার হয়ে গেছে। নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না কেন? এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবেন?

উপাচার্য: আমাদের নীতিগত ও সংবিধিবদ্ধ যেসব ব্যবস্থা আছে, সেগুলোর আওতায় ডাকসু এবং ডাকসুকে কেন্দ্র করে নেতৃত্ব তৈরির যে গণতান্ত্রিক চর্চা, সেটি আমরা সবাই ভালোভাবে অবগত। ডাকসুকে যত দ্রুত সম্ভব ক্রিয়াশীল করতে সচেষ্ট আছি। তবে বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে অংশীজনের সঙ্গে আলাপ করতে চাই। বিশেষ করে আমাদের ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই—সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেব। তবে ডাকসুর প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই অনুভব করি।

প্রশ্ন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই আন্দোলন সফল হয়েছে। আন্দোলনে ঢাবি থেকে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের দুজন এখন সরকারে আছেন। সামনের সারির বাকি দুজন ছায়া সরকারের ভূমিকায়। তাঁদের কারও কারও এখনো পড়ালেখা শেষ হয়নি। তাঁদের ভবিষ্যৎ জীবন কেমন হবে?

উপাচার্য: যেকোনো বিবেচনায় আমাদের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ প্রক্রিয়ায় যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের সবার প্রতিই আমাদের অভিবাদন এবং কৃতজ্ঞতা আছে। এ বিপ্লবে যাঁরা সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমরা সব সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে রাখব। তাঁদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগও হচ্ছে। যাঁরা সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন, কিন্তু এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের প্রতিও আমাদের সমান শ্রদ্ধা-সম্মান রয়েছে। এখনো হাসপাতালগুলোতে যাঁরা গুরুতর আহত অবস্থায় রয়েছেন, আমরা তাঁদের বিষয়েও সচেতন রয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা সরাসরি এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। এই আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিপ্লবীদের স্মরণ করার জন্য বিশেষায়িত ক্লাবগুলোর মাধ্যমে কিছু মূল্যবান ছবি সংগ্রহ করেছি। কিছু গ্রাফিতি বিভিন্ন পর্যায় থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। জাতিসংঘের যে দলটি এই অভ্যুত্থান নিয়ে তদন্ত করছে, তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ আছে। তাদের এসব সরবরাহ করব। আমরা নিজেরাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলো তদন্তে একটি কমিটি করেছি। এ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই অভ্যুত্থানের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য একটি কর্নার করার চিন্তা রয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে কিছু সভা-সেমিনার ও একাডেমিক আলোচনা আমরা নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছি। অর্থাৎ আমরা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে একাডেমিক এবং এক্সট্রা কারিকুলার—দুই দিক থেকেই স্মরণ করতে চাই, তাঁদের অবদানকে স্বীকার করতে চাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রশ্ন: এ আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশ বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এদের অনেকের বিরুদ্ধে আরও নানা ধরনের অভিযোগও রয়েছে...

উপাচার্য: এ বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তারা সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। কিছু ক্ষেত্রে মোটামুটি সমঝোতা হয়েছে। কোনো ক্ষেত্রে সমঝোতা হয়নি। সে ক্ষেত্রে তদন্ত কমিটি ও আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে। একটি বিষয় পরিষ্কার, যারা গুরুতর অপরাধে জড়িত, তাদের আইন অনুযায়ী বিচার হবে। যেসব জায়গায় দ্বন্দ্ব নিরসনের মাধ্যমে শান্তি স্থাপন সম্ভব, সেখানে সেটাই করা হবে।

প্রশ্ন: সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের র‍্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়েছে। ২০২৫ সালের বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ৮০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। তবে তালিকায় ১০০০-এর মধ্য আছে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়। এই পাঁচটির মধ্যেও নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাবির অবস্থান ১০০১-১২০০তমের মধ্যে...

উপাচার্য: আমরা র‍্যাঙ্কিংকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আমাদের সম্মানিত উপ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের নেতৃত্বে একটি বিশেষায়িত দল এখন কাজ করছে। এর বাইরে আমাদের যাঁরা ভালো গবেষক রয়েছেন, তাঁদের স্বীকৃতি দেওয়া শুরু করেছি। আমরা গবেষণা খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় ১০ জন গবেষক জায়গা পেয়েছেন। এটি যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গৌরবের, অন্যদিকে দেশবাসীর জন্য একটি আনন্দের খবর। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অফিশিয়ালি স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আমরা গবেষণার জন্য আলাদা কিছু বৃত্তি এবং বিশেষ ফান্ড দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের আগের প্রশাসন এ বিষয়ে কিছু উদ্যোগ নিয়েছিল। তাদের ভালো উদ্যোগগুলোকে আমরা আরও প্রসারিত করার চেষ্টা করছি। র‍্যাঙ্কিং নিয়ে বড় দাগে কথা হচ্ছে, আমরা কোনো রকম অজুহাত দেখাতে চাচ্ছি না। ঢাবি যেহেতু সর্ব জনতার বিশ্ববিদ্যালয়, সেহেতু সবার কাছে প্রত্যাশা একটু বেশিই। সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। সুতরাং, আমরা র‍্যাঙ্কিংয়ে ভালো করলে সবাই যেমন খুশি হন, সেটা আমরা অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে মনে রাখি। আমরা যখন ভালো করি না, তখন তারা দুঃখিত হন। সেটাতেও আমরা সচেতন থাকি। এ বিষয়ে আমাদের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। আমাদের এটাও মাথায় রাখতে হবে, র‍্যাঙ্কিংয়ের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ দেশের জাতীয় জীবনে বেশ কিছু কাজে ভূমিকা পালন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে আমাদের র‍্যাঙ্কিংকেন্দ্রিক একাডেমিক যে কাজ, তার মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখা যায় না। আমাদের অনেক বড় সামাজিক পরিসরে কাজ করতে হয়। এ কারণে সারা বছর র‍্যাঙ্কিংকেন্দ্রিক আমাদের একই ধরনের গুরুত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবু আমরা বলতে চাই, র‍্যাঙ্কিংয়ের বিষয়টি আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যেই রয়েছে।

প্রশ্ন: আবাসনব্যবস্থায় বড় সংস্কার হয়েছে বলা যায়। অছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশনার পর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এতে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা খুশি। তবে ছাত্রীদের আবাসন নিয়ে এখনো সংকট রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, কিছু কিছু হলে এখনো ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ছাত্রী অবস্থান করছেন...

উপাচার্য: আমাদের হল প্রশাসন স্মরণকালের বছরগুলোর মধ্যে প্রথমবারের মতো হলের ওপর নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে। বহু বহু বছর পর আমরা প্রথমবারের মতো চেষ্টা করছি, হল প্রশাসন হলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সিট বরাদ্দ দিচ্ছে। ফলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন বণ্টনে একরকম ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা মোটামুটি শিক্ষার্থীদের চাহিদা এবং মেরিট দুটোকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের হল বরাদ্দ দিচ্ছি। শিক্ষার্থীরা এখন হলগুলোতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রেখেছেন। গণরুমের সংস্কৃতি সম্পূর্ণভাবে দূর হয়েছে। তবু সংকট থেকেই যাচ্ছে। আমাদের নারী শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল নিয়ে ভুগছেন। আমি এ বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করার চেষ্টা করছি। এখন আমাদের যেটা হয়েছে, সেটা হলো আমাদের মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা শতকরা ৫১-৫৩ ভাগ। ধীরে ধীরে ছাত্রীরা এখন মেজরিটির দিকে যাচ্ছে। জাতীয় দিক বিবেচনায় এতে আমরা অত্যন্ত খুশি। কিন্তু ছাত্রীরা এগিয়ে এলেও তাদের জন্য আমাদের হলের সংখ্যা মাত্র ৫টি। এটার মানে হচ্ছে, আমাদের হল পর্যাপ্ত না। পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাব থাকায় এ সমস্যার সরাসরি কোনো সমাধান বা ম্যাজিক বুলেট বলতে যা বোঝায়, সেটি আমাদের হাতে নেই। আমরা এখন যেটি করছি, সেটা হলো প্রথম সুযোগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হল নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা অলরেডি বিভিন্ন বন্ধুদেশের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেছি। দেশের সরকার এবং ইউজিসির সঙ্গেও আমাদের এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। ইউজিসি আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে। আমরা আশাবাদী, ছাত্রীদের জন্য একটা হল অচিরেই নির্মাণকাজ শুরু করতে পারব। ছেলেদের হলে অবকাঠোমোও কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে চেষ্টা করছি। তবে এ ক্ষেত্রে আমরা মেয়েদের অগ্রাধিকার দিচ্ছি। প্রাথমিক ব্যবস্থাপনায় আমরা মেয়েদের হলগুলোর ফাঁকা স্থানে নতুন কিছু বেড সংযোজন করা যায় কি না সে বিষয়ে কাজ করছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা শুরু ৩০ জানুয়ারি

শিক্ষা ডেস্ক
বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা শুরু ৩০ জানুয়ারি

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির স্নাতকে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) ‍বিশ্ববিদ্যালয়টির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ফ্যাকাল্টির ডিন মুহাম্মদ তারেক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি ভর্তি পরীক্ষার জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদনের সময়সীমা ও এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও পত্রিকায় জানিয়ে দেওয়া হবে।

যেসব বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হবে, সেগুলো হলো বিএসসি (অনার্স) ইন ওশানোগ্রাফি, বিএসসি ইন নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড অফশোর ইঞ্জিনিয়ারিং, বিবিএ ইন পোর্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড লজিসটিকস, এলএলবি (অনার্স) ইন মেরিটাইম ল ও বিএসসি (অনার্স) ইন মেরিন ফিশারিজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়তে চাইলে

মো. আশিকুর রহমান
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ৪১
এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়তে চাইলে

‘পরিবেশ’ শব্দটি এখন কেবল বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়। সামাজিক, অর্থনৈতিক কিংবা স্বাস্থ্য—সব ক্ষেত্রে এটি অপরিহার্য আলোচ্য বিষয়। কিন্তু এই বোধ সঞ্চার করতে সময় লেগেছে অনেক, আর সেই বিলম্বই আজ পৃথিবীকে করেছে অসুস্থ। এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস বিপুলেন্দু বসাক। লিখেছেন মো. আশিকুর রহমান

মানুষ এখন ধীরে ধীরে বুঝতে শিখছে। মানুষ একা ভালো থাকতে পারে না; চারপাশ ভালো না থাকলে নিজের মঙ্গলও অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এই সামগ্রিক ভালো থাকার মূল চাবিকাঠি হলো পরিবেশ। উন্নত বিশ্ব যেখানে বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে পরিবেশবিজ্ঞানের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিল, সেখানে আমাদের দেশে বিষয়টি গুরুত্ব পেতে আরও প্রায় অর্ধশতাব্দী লেগে গেছে। এই দীর্ঘ অপেক্ষা আমাদের পরিবেশ ও উন্নয়নের সূচকে মারাত্মক ক্ষতি ডেকে এনেছে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে

এ দেশের পরিবেশবিজ্ঞান খুব পুরোনো কোনো বিষয় নয়। গত শতকের শেষ দিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দেশে বিষয়টির একাডেমিক যাত্রা শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিভাগ চালু এবং ব্যক্তি পর্যায়ের চিন্তা থেকে পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা ও কর্মসূচি একটি সামগ্রিক রূপ নিতে শুরু করে।

২০১৬ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের প্রথম এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। এটি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালে বুটেক্সেও একই নামে একটি বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত টেক্সটাইল শিল্পের দূষণ ও এর প্রতিকার নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করছে।

একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিষয়

এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোনো একক শাখার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি প্রকৃত অর্থে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি প্রফেশনাল অ্যাপ্রোচ। এই বিষয়ে পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য দরকার পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত, জীববিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব, ভূগোল, অণুজীববিজ্ঞান, হাইড্রোলজি, পাবলিক হেলথ অ্যান্ড সেফটির মতো নানা ক্ষেত্রের জ্ঞান।

ভূমির গভীর কোর থেকে শুরু করে মহাশূন্যের এক্সট্রা-টেরেস্ট্রিয়াল অবজেক্ট পর্যন্ত। প্রকৃতির প্রতিটি স্তর এই বিষয়ের গবেষণার পরিসরে আসে। এককথায়, পৃথিবীকে জানাই এই বিষয়ের মূল লক্ষ্য।

কর্মপরিধি ও সম্ভাবনা

পরিবেশবিজ্ঞান ও প্রকৌশল পেশার সুযোগ অত্যন্ত বিস্তৃত। পরিবেশবিজ্ঞানী বা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজের পাশাপাশি বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে গবেষক হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দপ্তর, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পানিসম্পদ বিভাগ, নদী ও উপকূল গবেষণা কেন্দ্র, মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা, স্প্যারো), বিশ্বব্যাংক, ইউএনডিপি, ইউনিসেফ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রকল্প ও এনজিওতেও কাজের সুযোগ রয়েছে।

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা

বর্তমান বিশ্বে একজন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্টিস্ট বা ইঞ্জিনিয়ারের চাহিদা ও বেতন দুটোই বিশ্বে প্রথম সারির পেশাগুলোর মধ্যে অন্যতম। উচ্চশিক্ষা ও যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই পেশায় খুব সহজেই নিজের ক্যারিয়ারের উন্নতি করা যায়। আর উন্নত বিশ্বে এই বিভাগের উচ্চ চাহিদার কথা মাথায় রেখেই উচ্চশিক্ষার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ, ফেলোশিপ ও ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা। যেগুলোতে কোয়ালিফাই করতে হলে ছাত্রজীবনে একটু অধ্যয়ন ও গবেষণায় মনোযোগী হওয়ার সদিচ্ছাই যথেষ্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফোনেটিকস

ইংরেজি ব্যঞ্জনবর্ণ (পর্ব-৬)

মমতাজ জাহান মম
ইংরেজি ব্যঞ্জনবর্ণ (পর্ব-৬)

স্বরবর্ণ হলো ভাষার সুর, কিন্তু সুরে গড়ন না থাকলে গান টেকে না। ব্যঞ্জনবর্ণ বা Consonants হলো সেই গড়ন। এটি ভাষাকে কাঠামো দেয়, শব্দকে শক্তপোক্ত করে তোলে।

ব্যঞ্জনবর্ণ কী?

যখন তুমি কোনো শব্দ উচ্চারণ করো আর মুখের ভেতর বাতাস কোথাও গিয়ে আটকে যায় বা ধাক্কা খায়, তখন তৈরি হয় ব্যঞ্জনবর্ণ। এ বাধা শব্দকে আলাদা আলাদা করে শোনায়।

উদাহরণ

‘b’ বললে ঠোঁট একসঙ্গে বন্ধ হয়।

‘t’ বললে জিব দাঁতের কাছে ঠেকে যায়।

‘s’ বললে বাতাস দাঁতের ফাঁক দিয়ে বের হয়।

ইংরেজিতে ব্যঞ্জনবর্ণের সংখ্যা

প্রায় ২৪টি ব্যঞ্জন ধ্বনি আছে। এগুলোকে উচ্চারণের ধরন ও জায়গা অনুযায়ী ভাগ করা হয়।

ব্যঞ্জনবর্ণের দুই বড় দিক

১. উচ্চারণের ধরন

Plosive (বিস্ফোরণধ্বনি)

Fricative (ঘর্ষণধ্বনি) f, v, s, z, sh, zh

Nasal (নাসিক্যধ্বনি) m, n, ng

Lateral l

Approximant— r, w, y

২. উচ্চারণের স্থান

Bilabial (দুই ঠোঁট) b, p, m

Dental (দাঁতের কাছে)— th (think, this)

Alveolar (দাঁতের মাড়ির কাছে) t, d, s, z, n, l

Velar (জিভের পেছনে) k, g, ng

মজার তুলনা

ভাবো, তোমার মুখটা এক মিউজিক ব্যান্ড। ঠোঁট = ড্রাম; দাঁত = গিটার

জিভ = পিয়ানো।

প্রতিটি ব্যঞ্জনবর্ণ একেকটা বাদ্যযন্ত্রের মতো বাজে, আর মিলেমিশে বানায় সুন্দর গান, মানে কথা।

ছোট্ট অনুশীলন

একবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলো: p, t, k। দেখো ঠোঁট, জিব আর গলার কোন অংশ নড়ে।

তারপর বলো: f, s, sh এবার লক্ষ করো বাতাস কীভাবে বের হচ্ছে।

আগামী পর্বে (পর্ব-৭)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিক্ষা উপদেষ্টার দেখা না পেয়ে পদত্যাগ দাবি করলেন ইবতেদায়ি শিক্ষকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ইবতেদায়ি মাদ্রাসাশিক্ষকদের পদযাত্রা আজ বুধবার কদম ফোয়ারা ও জাতীয় প্রেসক্লাবের গেটের মাঝামাঝি সড়কে আটকে দেয় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইবতেদায়ি মাদ্রাসাশিক্ষকদের পদযাত্রা আজ বুধবার কদম ফোয়ারা ও জাতীয় প্রেসক্লাবের গেটের মাঝামাঝি সড়কে আটকে দেয় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সব ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করেননি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন ইবতেদায়ি শিক্ষকেরা। একই সঙ্গে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ-মিছিলের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।

আজ বুধবার বিকেলে সচিবালয় থেকে বের হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠন ‘স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট’ এ দাবি জানায়।

জোটের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি ছিল শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ও দাবি নিয়ে আলোচনা করা। কিন্তু পদযাত্রা শুরু করার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধার মুখে পড়তে হয়। পুলিশের সহযোগিতায় ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি পেশ করলেও শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি।’

মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টা দেখা না করে শিক্ষকদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করেছেন। এটি শুধু শিক্ষকদের নয়, গোটা শিক্ষকসমাজের প্রতি অবমাননা। শিক্ষকদের সঙ্গে এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকসমাজকে অসম্মান করেছেন। তাই আমরা তাঁর পদত্যাগ দাবি করছি।’

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে দুপুরে পদযাত্রা শুরু করেন ইবতেদায়ি শিক্ষকেরা। পদযাত্রা কিছুটা এগোলে কদম ফোয়ারা ও প্রেসক্লাবের গেটের মাঝামাঝি সড়কে পুলিশ তা আটকে দেয়। এরপর দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলতে সচিবালয়ে যায় ১৫ জন শিক্ষকের প্রতিনিধিদল।

ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো ১ হাজার ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের ফাইল দ্রুত অনুমোদন, এমপিও আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি এবং আলাদা অধিদপ্তর স্থাপন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত