Ajker Patrika

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা: লিখিত অংশে চাই বাড়তি গুরুত্ব

সামিহা সিরাজী লাজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের দেওয়া ‘কনসেশন’ হিসেবে। ফাইল ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের দেওয়া ‘কনসেশন’ হিসেবে। ফাইল ছবি

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই নতুনদের কলতানে মুখর হবে ঢাবি। প্রিয় ক্যাম্পাসে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে হলে ভর্তি-ইচ্ছুকদের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখা চলবে না। তবে যার যতটুকুই প্রস্তুতি হয়েছে, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিটা সবার জন্যই ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অন্যান্য অংশের পাশাপাশি লিখিত অংশে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে।

বাংলা

পাঠ্যবইয়ের ওপরে বিশেষ গুরুত্ব দাও (বিশেষত, কবি পরিচিতি, সাল, জন্মতারিখ, শব্দের অর্থ, লেখকের নাটক, উপন্যাস, কাব্যগ্রন্থ)। বাংলায় মুখস্থ অংশের ওপর নজর দাও। সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা—এগুলোয় বহুনির্বাচনী প্রশ্ন সলভ করো বেশি পরিমাণে। দৈনিক রুটিন মেনে পড়ার পাশাপাশি বিগত বছরের বাংলা প্রশ্নমালা এবং টপিকগুলো যাচাই করে নিতে পার।

বহুনির্বাচনী প্রশ্নের পাশাপাশি লিখিত বাংলা অংশে ভালো করতে বাসায় লেখার এবং সময়মাফিক লেখা শেষ করার গুরুত্ব অপরিসীম, যা তোমাকে ভর্তিযুদ্ধে বাকিদের থেকে বহুগুণ এগিয়ে রাখবে। প্রচলিত গাইডবই থেকে বেরিয়ে সৃজশীলতা কাজে লাগাও। প্রতিদিন লেখার চর্চা অব্যাহত রাখতে পার; অনলাইন-অফলাইন বিভিন্ন কোচিংয়ে শেষ সময়ের পরীক্ষা এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

ইংরেজি

পাঠ্যবইয়ে প্রতি চ্যাপ্টারের সব টপিকের ওপর গুরুত্ব দাও। সাম্প্রতিক সময়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাঠ্যবই ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে থাকে। গ্রামার অংশের জন্য ভালো মানের বই থেকে প্রশ্ন সলভ করো। মুখস্থ অংশের রিভিশন প্রতিদিন দিতে হবে। এ ছাড়াও, সামারি রাইটিং, থিম রাইটিং, কবিতার ভাবার্থ—এগুলো লেখার অনুশীলন করা গুরুত্বপূর্ণ।

লিখিত ইংরেজি অংশের জন্য ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকীয় পার্ট বরাবরই বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন সময় মেনে ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং প্র্যাকটিস করা জরুরি। সমসাময়িক যেকোনো বিষয়ের ওপর প্যারাগ্রাফ, বাক্যগঠন শিখতে হবে। সময়মতো লেখা শেষ করা এবং সহজ-সাবলীল লেখা পরীক্ষার খাতায় মার্ক বেশি পাওয়ার হাতিয়ার।

সাধারণ জ্ঞান

সাধারণ জ্ঞানের (ইতিহাস, পৌরনীতি, অর্থনীতি, ভূগোল, রাজনীতি, খেলাধুলা, সমসাময়িক, নোবেল পুরস্কার, অর্থনৈতিক সমীক্ষা, দেশ-বিদেশের অ্যাওয়ার্ড, জুলাই অভ্যুত্থান) বিভিন্ন টপিকের মধ্যে এ বছরের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর ওপর পূর্ণ মনোযোগ দাও। দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, জনপদ, পটভূমি থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক। জাতিসংঘ ও এর অঙ্গসংগঠন, কার্যাবলি, চুক্তি, প্রণালি, সভ্যতা, মহাদেশ, নদ-নদী—এগুলো শেষ সময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বোপরি এটুকু মনে রাখতে হবে, সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পরীক্ষার হলে সময় ব্যবস্থাপনাই পারে তোমাদেরকে আকাঙ্ক্ষিত সাফল্য এনে দিতে। সামান্য ভুল তোমাকে নিয়ে যেতে পারে শত শত পরীক্ষার্থীদের পেছনে। তাই সময় নিয়ে পরীক্ষার জন্য বের হও, আগের রাতে প্রবেশপত্রসহ দরকারি সবকিছু গুছিয়ে রাখ, নিজেকে সুস্থ রাখ এবং শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিকে করো আরও শাণিত ও সুশৃঙ্খল। নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলে পূর্ণ উদ্যমে পড়াশোনা চালিয়ে যাও।

এক্সাম হলে ঘড়ির দিকে লক্ষ রেখ, সঠিক বিষয়ে প্রশ্নের বৃত্ত ভরাট করো। বিজয়ের গৌরবে তোমাদের সবার সঙ্গে দেখা হোক ঢাবির এই বিশাল ক্যাম্পাসে—শুভকামনা রইল তোমাদের জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ