Ajker Patrika

এসএসসি পরীক্ষার ফল

সফলতা উদ্‌যাপন হোক, ব্যর্থতায় হোক পুনর্জাগরণ

শিক্ষা ডেস্ক
মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা
মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা

চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর নিয়মিত ও অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন। এবার গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর এই হার ছিল ৮৩ দশমিক ৪। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার ১৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমেছে। এই পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রী ৭৩ হাজার ৬১৬ ও ছাত্র ৬৫ হাজার ৪১৬ জন। যারা উত্তীর্ণ হয়েছে, তারা নিঃসন্দেহে পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও আত্মনিবেদনের ফল পেয়েছে। তাদের জন্য রইল আন্তরিক অভিনন্দন ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। এই অর্জন যেন তাদের সামনে আরও উচ্চতর লক্ষ্য নির্ধারণে সহায়ক হয়, এই প্রত্যাশা করি। এখন সময় উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়ে আরও বড় স্বপ্ন দেখার, নিজেকে গড়ে তোলার।

যেসব শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত ফল

পায়নি বা অকৃতকার্য হয়েছে, তাদের বলব, একটি পরীক্ষায় খারাপ ফল মানে জীবন ব্যর্থ নয়। সামনের দিনগুলোয় তাদের জন্য নতুন প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এখনই নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার সময়; ভুলগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো থেকে শেখার সময়। হতাশ হওয়া যাবে না। প্রতিটি ব্যর্থতা হোক আগামী সাফল্যের প্রস্তুতির মঞ্চ।

অভিভাবকদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ

যেসব শিক্ষার্থী ভালো ফল করেছে, তাদের পাশে থাকুন। তাদের স্বপ্নগুলো শোনার চেষ্টা করুন। তারা কী হতে চায়, কী করতে চায়, সেসব জানুন এবং যথাসাধ্য সহায়তা করুন। পাশাপাশি যারা ভালো করতে পারেনি, তাদের প্রতি যেন কোনো অবহেলা বা কটূক্তি না হয়। কোনোভাবেই যেন তারা নিজেকে পরিবারের কাছে অবাঞ্ছিত বা অনাদৃত মনে না করে। তাদের সঙ্গে সহানুভূতিশীল আচরণ করুন। খারাপ ফলাফলের পেছনে কারণ কী ছিল, তা বোঝার চেষ্টা করুন এবং সেভাবে তাকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিন। ভুলে গেলে চলবে না, মানসিকভাবে সুস্থ না থাকলে কোনো শিক্ষার্থী তার সর্বোচ্চটা দিতে পারে না।

পরীক্ষার আগের প্রেক্ষাপট ভুলে গেলে চলবে না

এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রাক্কালে আমাদের শিক্ষার্থীরা ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই আন্দোলনে তাদের ভূমিকা দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের অন্যতম নিয়ামক হয়ে ওঠে। এই অভিজ্ঞতা তাদের ভেতরে গর্বের পাশাপাশি একধরনের মানসিক চাপও তৈরি করেছে। অনেকে এই ট্রমা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বসেছে পরীক্ষার বেঞ্চে। ফলে প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও অনেকের ফল প্রত্যাশার চেয়ে কম এসেছে। আবার কেউ কেউ মানসিক চাপে পড়ে পুরোপুরি প্রস্তুতি নিতে পারেনি।

তাই ফলাফল বিচার করার আগে আমাদের সেই প্রেক্ষাপট মাথায় রাখা উচিত। আমরা যেন একজন শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন শুধু তার মার্কশিট দিয়ে না করি। তার মনন, পরিস্থিতি ও সাহসিকতাও আমাদের দৃষ্টিতে আনতে হবে।

এসএসসি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলেও এটি জীবনের শেষ নয়। এই ধাপ পার হয়ে যাত্রা শুরু হয় নতুন এক অভিযাত্রার, জীবন গঠনের, সমাজের জন্য কিছু করার, স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়ার। যারা সফল হয়েছে, তারা নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাক। আর যারা ব্যর্থ হয়েছে, তারা যেন ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে নতুন উদ্দীপনায় প্রস্তুতি নেয়।

আমরা শিক্ষকদের, অভিভাবকদের এবং সমাজের দায়িত্ব সব শিক্ষার্থীর পাশে থাকা। সফলতায় আমরা গর্ব করি এবং ব্যর্থতায় হাত বাড়িয়ে দিই, তাহলে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে হবে আলোকিত মানুষ, সমাজের আসল সম্পদ।

মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা, অধ্যক্ষ, সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডেমরা, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

শেখ হাসিনা ও কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের দিন নির্ধারণ ১৩ নভেম্বর

এলাকার খবর
Loading...