Ajker Patrika

এইচএসসি পরীক্ষার ফল: মূল্যায়নে কড়াকড়ি ছাড়াও নানা সমস্যায় খারাপ ফল

  • এইচএসসিতে দুই দশকে সবচেয়ে খারাপ ফল
  • ৫ লাখ ফেল, কমেছে জিপিএ-৫
  • পাসে শীর্ষে মাদ্রাসা, নিচে কুমিল্লা বোর্ড
  • তারপরও সাফল্যে এগিয়ে মেয়েরা
রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ১১
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

এবারের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছে। ৯টি সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ১১টি বোর্ড মিলিয়ে ২০০৫ সালে পাসের হার ছিল ৫৯ দশমিক ০৭ শতাংশ। তখন থেকে এইচএসসিতে পাসের হার আর কখনো ৫৯ শতাংশের নিচে নামেনি। এর আগে অবশ্য ২০০৪ সালে ফল আরও খারাপ হয়। তখন পাসের হার ছিল মাত্র ৪৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল। এবারের গড় পাসের হার গত বছরের চেয়ে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ কম। গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এবারের পাসের হার এত নিচু হওয়ার কারণ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে নানা প্রশ্ন ও আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।

ফল ও সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দেখা যায়, মূলত তিনটি কারণে এবার পাসের হার এবং জিপিএ-৫ কমেছে। প্রথমত, এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে কলেজে ক্লাস কম পেয়েছে। দ্বিতীয়ত, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান ও আইসিটিতে পাসের হার ছিল তুলনামূলক কম। তৃতীয়ত, উত্তরপত্র মূল্যায়নে ‘কড়াকড়ি’; যাকে কেউ কেউ বলছেন ‘যথাযথ মূল্যায়ন’। এ ছাড়া শিক্ষকসংকটসহ নানা সমস্যা গ্রামাঞ্চলের পরীক্ষার্থীদের ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ফলের এই অবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই ফলকে বাস্তবতার প্রতিফলন বলা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার সময় দেখি, যে পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে মাত্রার দক্ষতা থাকা উচিত, তা নেই। এর কারণ হলো, শিক্ষায় নানা সংকট রয়েছে। যেমন আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের যে ধরনের একাডেমিক যোগ্যতা থাকার কথা, তা নেই। মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসছেন না। শিক্ষা নিয়ে সরকারের নীতি পরিবর্তন করতে হবে।’

এবারের ফল শিক্ষার প্রকৃত চিত্র বলে মনে করেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারও। গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক সংস্কৃতি গড়ে তুলেছি, যেখানে সংখ্যাই সত্য হয়ে উঠেছিল; পাসের হারই যেন সাফল্যের প্রতীক, জিপিএ-৫-এর সংখ্যা ছিল তৃপ্তির মানদণ্ড। ফল “ভালো” দেখাতে গিয়ে আমরা অজান্তেই শিক্ষার প্রকৃত সংকট আড়াল করেছি। আমি সেই সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই।’

ফল ধসের কয়েকটি কারণ

২০০৫ সালের এইচএসসির মাত্র ৫৯ দশমিক ০৭ শতাংশ গড় হারের পর থেকে প্রায় প্রতিবছরই পাসের হার বেড়েছে। কখনো সামান্য কমবেশি হয়েছে। কিন্তু এবার এসেছে বড় ধাক্কা। গড় পাস এবার গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কম। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বিপুলভাবে কমেছে। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন। গত বছর সংখ্যাটি ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১।

ফল খারাপের পেছনের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘ইংরেজিতে শিক্ষার্থীরা বরাবরই খারাপ করে। হিসাববিজ্ঞানও কঠিন বিষয়। এসব বিষয়ে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভালো শিক্ষক নেই। শিক্ষকের অভাবসহ কিছু কারণ রয়েছে। আমরা এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’

একই সুরে কথা বলেছেন সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘ইংরেজিসহ কয়েকটি বিষয়ে খারাপ ফলের প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক ফলাফলে। এ ছাড়া দুর্গম হাওরাঞ্চল ও গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ইংরেজি ও হিসাববিজ্ঞান, আইসিটি বিষয়ে মানসম্পন্ন শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা এসব বিষয়ে ভালো করতে পারেনি। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী অস্থিতিশীল সময়ে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত না হওয়া ফল খারাপের অন্যতম কারণ।’

মানবিক ও বাণিজ্যে ধরাশায়ী শিক্ষার্থীরা

বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতিবারের মতো এবারও তুলনামূলক ভালো করেছে। তার তুলনায় মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের ফল এবার বেশ খারাপ হয়েছে।

বিজ্ঞান বিভাগে এবার পাসের হার ৭৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। সেখানে বাণিজ্য বিভাগে পাসের হার মাত্র ৫৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ আর মানবিকে মাত্র ৪৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। মানবিক বিভাগে ইংরেজিতেই বেশি খারাপ করেছে শিক্ষার্থীরা।

৫ লাখ ফেল, কমেছে জিপিএ-৫

এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ফেল করেছে ৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলের সংখ্যা বেশি। তথ্য বলছে, মোট ছেলে পরীক্ষার্থী ছিল ৬ লাখ ১১ হাজার ৪৪৬ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৬৪ জন। আর মেয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ৬ লাখ ২৪ হাজার ২১৫ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৬ জন। সব মিলিয়ে এবার ফেল করেছে ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন।

এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৯ হাজার ৯৭ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৩৭ হাজার ৪৪ এবং ছাত্র ৩২ হাজার ৫৩ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ শিক্ষার্থী।

এবারও এগিয়ে মেয়েরা

সার্বিক ফল অনুযায়ী এবারও এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে। এবার মেয়েদের পাসের হার ৬২ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং ছেলেদের ৫৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যেও এগিয়ে মেয়েরা। জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ৬৯ হাজার ৯৭ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৩৭ হাজার ৪৪ এবং ছাত্র ৩২ হাজার ৫৩ জন।

২০২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবাই ফেল

চলতি বছর দেশের ২০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৬৫। আর শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও কমেছে। এবার মোট ৩৪৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী পাস করেছে। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৮৮টি।

পাসে শীর্ষে মাদ্রাসা, নিচে কুমিল্লা বোর্ড

৯টি সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা। এ বোর্ডে ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। আর সবচেয়ে কম পাস করেছে কুমিল্লা বোর্ডে, ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হারে এগিয়ে ঢাকা আর পিছিয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড।

ফলের তথ্য বলছে, ঢাকা বোর্ডে ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ, যশোরে ৫০ দশমিক ২০ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৫২ দশমিক ৫৭ শতাংশ, বরিশালে ৬২ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সিলেটে ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ, দিনাজপুরে ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে ৬২ দশমিক ৬৭ শতাংশ পাস করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ নিয়ে সভা ২৫ ডিসেম্বর, নতুন বছরে প্রথম দিন ক্লাস শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ১৩
প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে নানা স্লোগান দেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে নানা স্লোগান দেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি) প্রথম ব্যাচের ক্লাস আগামী ১ জানুয়ারি শুরু হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের খসড়া ২৫ ডিসেম্বর আন্তমন্ত্রণালয় সভায় উপস্থাপন করা হবে।

অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষার্থীদের একাংশের শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির মধ্যে আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধ্যাদেশ সংশোধন করা হচ্ছে জানিয়ে বলেছে, এ প্রক্রিয়া ‘সময়সাপেক্ষ’।

আজ বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৯ হাজার ৩৮৮ জন শিক্ষার্থী ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট, বিজ্ঞান ইউনিট ও ব্যবসাশিক্ষা ইউনিটে ভর্তি নিশ্চয়ন করেছেন। বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামোতে ভর্তি করা শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর জন্য স্ব-স্ব কলেজের শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আসন্ন শীতকালীন ছুটি শেষে ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে বলে শিক্ষক প্রতিনিধিরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশের খসড়ার বিষয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সুধীজনসহ বিভিন্ন মহল হতে পাঁচ হাজারের বেশি মতামত পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত প্রতিটি মতামত আইনগত ও বাস্তবতার নিরিখে পর্যালোচনা করে খসড়া পরিমার্জন করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, পরিমার্জনের কাজ সম্পন্ন করে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিমার্জিত খসড়ার ওপর আন্তমন্ত্রণালয় সভা করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে সাত কলেজের সম্পৃক্ততার ধরন বিষয়ে বাস্তবসম্মত, কার্যকর ও উপযোগী কাঠামো নির্ধারণসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে ও বিধিবদ্ধ পদ্ধতি অনুসরণ করে অধ্যাদেশের খসড়া পরিমার্জন করা হচ্ছে।

এদিকে এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ অধ্যাদেশ জারির দাবিতে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। দুপুরের পর আব্দুল গণি রোডের শিক্ষা ভবনের সামনের সংযোগ সড়ক থেকে সচিবালয় অভিমুখী সড়কে অবস্থান নেন তাঁরা। এতে হাইকোর্ট মোড় থেকে সচিবালয় অভিমুখে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট হয়। শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে গতকাল রোববার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত শিক্ষা ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

জানতে চাইলে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ২০২৪-২৫ ব্যাচের ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবু বকর আজ দুপুরে বলেন, ‘অধ্যাদেশ জারি হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব ৷ দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজকে নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের কার্যক্রম চলছে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খসড়ায় সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ বা ‘স্কুলিং’ কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী কলেজগুলোতে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।

ওই খসড়া প্রকাশের পর কলেজগুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভিন্ন অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। ওই সাত কলেজসহ সারা দেশের সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতির মতো মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার শঙ্কায় আছেন। তাঁরা কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে ‘অধিভুক্তিমূলক কাঠামোতে’ নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের একাংশ দ্রুত অধ্যাদেশের দাবি জানিয়েছেন এবং উচ্চমাধ্যমিক ও অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ ‘স্কুলিং’ কাঠামো বাতিল এবং কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘এসটিআই’ সম্মেলন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৮
৭ম আই-ইইই ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি (এসটিআই) ৫.০’ আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে ডিআরইউয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
৭ম আই-ইইই ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি (এসটিআই) ৫.০’ আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে ডিআরইউয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিল্পের জন্য টেকসই প্রযুক্তির উন্নয়নে আন্তর্জাতিক গবেষকদের সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে সপ্তম আই-ইইই ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি (এসটিআই) ৫.০’ আন্তর্জাতিক সম্মেলন। আগামী ১১-১২ ডিসেম্বর পূর্বাচলের আমেরিকান সিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আয়োজকেরা।

আয়োজকেরা জানান, এ বছর সম্মেলনে এআই সহযোগিতা, সাইবার সিকিউরিটি, রেজিলিয়েন্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিস্টেম, আইওটি ও উন্নত অটোমেশন, গ্রিন টেকনোলজি, সার্কুলার ইকোনমি, পোস্ট-প্যান্ডেমিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রান্সফরমেশনসহ সমসাময়িক নানা বিষয়ে মূল বক্তব্য, গবেষণা উপস্থাপনা, কর্মশালা ও প্যানেল আলোচনা হবে।

আয়োজক আই-ইইই কম্পিউটার সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে গ্রিন ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে প্রথম এসটিআই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে ২০টির বেশি দেশের গবেষক অংশ নিলেও ২০২৪ সাল নাগাদ এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০।

সংবাদ সম্মেলনে জিইউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন, এআই যুগে প্রযুক্তিগত বিপ্লব ও সম্ভাব্য কর্মহীনতার আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে লাগসই শিল্পপ্রযুক্তি ও গবেষণানির্ভর সমাধানের কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষাবিদ, গবেষক, শিল্প খাত ও নীতিনির্ধারকদের সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমেই টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানবিক উদ্ভাবন ও বাস্তব প্রয়োগ যোগ্যতার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া দরকার। গ্রিন ইউনিভার্সিটি সে দিকটি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। তা ছাড়া প্রতি বছরই সম্মেলনের গবেষণা প্রবন্ধ আই-ইইই এক্সপ্লোর ও স্কোপাস ইনডেক্সিংয়ের মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সম্মেলনের মর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়িয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ও সম্মেলনের পাবলিকেশন চেয়ার ড. মো. আহসান হাবীব জানান, টেকসই শিল্পপ্রযুক্তির গবেষণা ও প্রয়োগ বৃদ্ধিতেই এসটিআই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইলেকট্রনিকস, রোবোটিকস, সাইবার-ফিজিক্যাল সিস্টেম, টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন খাতের গবেষণাকে শিল্পে প্রয়োগযোগ্য করে তোলাই এ প্ল্যাটফর্মের লক্ষ্য।

জিইউবির তড়িৎ ও বৈদ্যুতিন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এএসএম শিহাব উদ্দিন বলেন, এবারের সম্মেলনে দেশ-বিদেশ থেকে ৪৩৪টি গবেষণা পেপার জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১১৮টি প্রবন্ধ উপস্থাপনার জন্য নির্বাচিত হয়েছে। নির্বাচিত সেরা গবেষণাপত্রগুলোকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হবে এবং সেগুলো আই-ইইই এক্সপ্লোর ও স্কোপাস ইনডেক্সিংয়ে প্রকাশিত হবে।

তিনি জানান, ১১ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যরা। ১২ ডিসেম্বর সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান।

সম্মেলনে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কি-নোট স্পিকার, শিল্প খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জিইউবি সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম যোগাযোগ বিভাগের শিক্ষক ড. মো. অলিউর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ

শিক্ষা ডেস্ক
শিক্ষকদের সঙ্গে ৫৪তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষকদের সঙ্গে ৫৪তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগে ফল সেমিস্টার–২০২৫-এ ভর্তি হওয়া ৫৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্প্রতি ডিআইইউ কমিউনিকেশন ক্লাবের উদ্যোগে সাভারের আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটির বনমায়া প্রাঙ্গণে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল কাবিল খান জামিল। শুরুতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও ডিআইইউ কমিউনিকেশন ক্লাবের পক্ষ থেকে নবীনদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিয়াদুস সালেহীন শৌভিক ও সাবাবা খাদিজা হক।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গ্রেগরি জন সাইমন, স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক ও সহকারী অধ্যাপক অমিত চক্রবর্তী, বিভাগের প্রভাষক ইহা অবাপ্তি, মেহেরাবুল হক রাফি, মেহেরুন নাহার, ডিআইইউ কমিউনিকেশন ক্লাবের সভাপতি তামান্না ইয়াসমিন মারিয়া, সাধারণ সম্পাদক ইশরাক আলমসহ প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

বক্তারা বলেন, সাংবাদিকতা বিভাগ একটি সৃজনশীল ও সম্ভাবনাময় শিক্ষাক্ষেত্র, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিভা বিকাশের পাশাপাশি বাস্তবমুখী অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পায়। চার বছরের বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে পাঠের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় থাকার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জাতির প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য তারা নবীনদের উৎসাহিত করেন। শিক্ষার্থীদের যেকোনো ইতিবাচক উদ্যোগ ও দক্ষতা উন্নয়নে সবসময় পাশে থাকার আশ্বাসও দেন শিক্ষকেরা।

নবীন শিক্ষার্থীরা বলেন, এমন আন্তরিক ও প্রাণবন্ত আয়োজন তাদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। শিক্ষকবৃন্দের দিকনির্দেশনা এবং জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুটিকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। তারা প্রত্যাশা করেন যে সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যয়ন শেষে দক্ষ ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবেন।

আলোচনা পর্ব শেষে নবীন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় গান, নৃত্যসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ‘নব্যপ্রভা’-এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি

উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ফিনল্যান্ডের দ্বার খুলেছে। দেশটির অন্যতম শীর্ষ বিদ্যাপীঠ ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ঘোষণা করেছে সম্মানজনক বৃত্তি কর্মসূচি। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থী আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারছেন না, তাঁদের জন্য এই বৃত্তি হতে পারে ইউরোপে পড়াশোনার এক স্বর্ণালী সুযোগ।

ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কি ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। ১৬৪০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে নিয়মিতভাবে শীর্ষস্থান দখল করা এ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানসম্মত শিক্ষার জন্য বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত।

সুযোগ-সুবিধা: ফিনল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কিতে পড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এই বৃত্তি কর্মসূচির আওতায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীরা তাঁদের টিউশন ফির ৫০ বা ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন। সাধারণত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক টিউশন ফি ১৩ হাজার থেকে ১৮ হাজার ইউরোর মধ্যে হয়ে থাকে, যা এই স্কলারশিপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। ফলে শিক্ষার্থীদের জন্য ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথ আরও সহজ ও সাশ্রয়ী হবে।

আবেদনের যোগ্যতা: বৃত্তিটির জন্য আবেদনে আগ্রহী প্রার্থীদের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রার্থীদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরের দেশের শিক্ষার্থী হতে হবে। আবেদনকারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তিযোগ্য হতে হবে। প্রার্থীকে ফিনল্যান্ডে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় স্টুডেন্ট ভিসা ও রেসিডেন্স পারমিটের শর্তও পূরণ করতে হবে। প্রার্থীর অবশ্যই ভালো ফলসহ স্নাতক (ব্যাচেলর) ডিগ্রি থাকতে হবে। এ ছাড়া যাঁদের মাতৃভাষা ইংরেজি নয়, তাঁদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইংরেজি ভাষা পরীক্ষার সনদ থাকতে হবে।

প্রয়োজনীয় তথ্য: ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কির স্কলারশিপে আবেদনের জন্য প্রার্থীদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে ডিগ্রির ট্রান্সক্রিপ্ট, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার সনদ (টোয়েফল বা আইইএলটিএস), পরিচয় নিশ্চিত করতে পাসপোর্টের কপি এবং নিজের শিক্ষাগত ও অভিজ্ঞতার বিস্তারিত তুলে ধরতে একটি হালনাগাদ জীবনবৃত্তান্ত। এসব নথি সঠিক ও সম্পূর্ণভাবে জমা দিয়ে আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রগুলো: বিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান ও পরিবেশ বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, মানবিক ও ভাষাবিজ্ঞান, আইন অনুষদ, শিক্ষা ও মনোবিজ্ঞান, কৃষি ও বনবিদ্যা ও চিকিৎসাবিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদ। প্রতিটি অনুষদের অধীনে রয়েছে অন্তত ৫-৭টি বিভাগ। বৃত্তির শর্ত ও শিক্ষার্থীদের আগ্রহ অনুযায়ী নিজের পছন্দের অনুষদ ও বিভাগ বেছে নেওয়া যাবে।

আবেদনের পদ্ধতি: আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এই লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: ১৬ জানুয়ারি, ২০২৬

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত