Ajker Patrika

কাউনিয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে স্বামীর ‘আত্মহত্যা’ 

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
কাউনিয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে স্বামীর ‘আত্মহত্যা’ 

রংপুরের কাউনিয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর মানসিক ভারসাম্যহীন স্বামী রবীন্দ্রনাথ চন্দ্র (৬৫) ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার কূর্শা ইউনিয়নের মীরবাগ ধর্মেশ্বর ড্রাইভারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

ছুরিকাঘাতে নিহত স্ত্রী শুভা রাণী (৪৪)। আর রবীন্দ্রনাথ মীরবাগ ধর্মেশ্বর ড্রাইভারপাড়া গ্রামের গৌরাঙ্গ চরণের ছেলে। 

আজ শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাউনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফরহাদ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।’ 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মানসিক রোগী রবীন্দ্রনাথ চন্দ্রের সঙ্গে তার স্ত্রী শুভা রানির ঝগড়া লাগে। ঝগড়ার একপর্যায়ে স্বামী রবীন্দ্রনাথ ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রীর মাথায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় ছুরিকাঘাতে শুভা রাণী গুরুতর রক্তাক্ত ও জখম হন। শোভার চিৎকারে ছুটে আসে রবীন্দ্রনাথের ছোট ভাই চেতন বর্মণ এবং চাচাতো ভাই গোলাপ চন্দ্রসহ আশপাশের লোকজন। মানসিক ভারসাম্যহীন রবীন্দ্রনাথের হাতে ধারালো ছুরি দেখে ভয়ে কেউ এগিয়ে যেতে সাহস পায় না। 

একপর্যায়ে ভাবিকে বাঁচাতে গিয়ে ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই চেতন চন্দ্র ও চাচাতো ভাই গোলাপ চন্দ্র আহত হয়। পরে লোকজন জড়ো হয়ে ছুরিকাঘাতে আহত শুভা রাণী ও চেতনকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোর ৬টার দিকে শুভা রানি মারা যায়। এরপর শোভা রানির মরদেহ স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে আসে। আর আহত চেতন চন্দ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 

এদিকে, স্ত্রীকে ধারালো ছুরি দিয়ে গুরুতর জখম করে ভোরের দিকে নিজ বাড়ির গোয়াল ঘরে দরজা আটকিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে স্বামী রবীন্দ্রনাথ। খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে কাউনিয়া থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত স্বামী ও স্ত্রী লাশ উদ্ধার করে। 

নিহতদের ছেলে উজ্জ্বল চন্দ্র বলেন, তার বাবা রবীন্দ্র দুই-তিন বছর ধরেই মানসিক রোগে ভুগছিলেন। মাঝে মধ্যেই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করত। গতকাল রাতে হঠাৎ মাকে ধারালো দা-ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপ দিতে থাকে। মাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার চাচাসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বাবার হাতে ধারালো অস্ত্র থাকায় স্বজনরা তার কাছে কেউ যেতে সাহস পাইনি। মায়ের মৃত্যুর খবর জানার পর বাবা গোয়াল ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। 

রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান জানান, খবর পেয়ে আমরা সকালেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা ও একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত