Ajker Patrika

সৈয়দপুরে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ১ হাজার ফার্মেসি, ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
সৈয়দপুরে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ১ হাজার ফার্মেসি, ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি

ড্রাগ লাইসেন্স, কেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই নীলফামারীর সৈয়দপুরে শহরসহ ইউনিয়ন পর্যায়ের অলি-গলিতে গড়ে উঠেছে ওষুধের দোকান। সরকারি রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিকসহ সব ধরনের ওষুধ বিক্রি করছেন ওই সব ব্যবসায়ীরা। বিক্রি করা হচ্ছে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধও। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন সাধারণ মানুষজন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সরকারিভাবে ড্রাগ লাইসেন্সধারী ফার্মেসি রয়েছে মোট ৩৬৬ টি। এর মধ্যে অ্যালোপ্যাথিক ৩৪৮টি, আয়ুর্বেদিক ৫ টি, হোমিওপ্যাথিক ৭টি ও ইউনানি ৬টি ফার্মেসি রয়েছে। ড্রাগ লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আরও শতাধিক আবেদন জমা আছে। এর বাইরে প্রায় ১ হাজার ফার্মেসি চলছে লাইসেন্স ছাড়াই। ড্রাগ লাইসেন্স না থাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রয়ের মতো অপরাধে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয় নামীদামি ফার্মেসিসহ বিভিন্ন ফার্মেসিতে জরিমানা করলেও কোনো কাজে আসেনি। দাপটে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের ভেতরে বিভিন্ন সড়কের পাশে ও গলিতে ফার্মেসি গড়ে উঠেছে। ফার্মেসিগুলোতে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই চলছে ওষুধ বিক্রি। ক্রেতারা চাওয়া মাত্র অ্যান্টিবায়োটিকসহ ব্যথা ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট অবাধে বিক্রয় করছেন ফার্মেসিতে দায়িত্বরত লোকজন। উপজেলাগুলোর ইউনিয়নের মোড়ে মোড়ে কিংবা হাটে বাজারে গড়ে ওঠা ফার্মেসি গুলোতেও একই চিত্র। ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট থাকার কথা থাকলে নিয়মের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র ওষুধ বিক্রয় করা হচ্ছে। 

ভুক্তভোগীরা বলেন, নিম্নআয়ের মানুষের চিকিৎসাসেবার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন এসব ফার্মেসি। ওষুধের দোকানগুলোতে কোনো ধরনের কেমিস্ট বা ফার্মাসিস্ট না থাকলেও সব ধরনের রোগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মাঝে মধ্যে ছোটখাটো অস্ত্রোপচারও করানো হচ্ছে। প্রশাসনের সঠিক নজরদারি না থাকায় এসব হচ্ছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফার্মেসির মালিক বলেন, ড্রাগ লাইসেন্স পাওয়াটা অনেক কঠিন ব্যাপার। তাই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিনি। শুনেছি আবেদন করলে নানা অজুহাতে অফিসের লোকজন টাকা-পয়সা চায়। এ ছাড়া লাইসেন্স ছাড়াইতো ওষুধ বিক্রয় করছি, কোনো সমস্যা তো হচ্ছে না। ওষুধ প্রশাসনের লোকজন এলে কিছু দিয়ে দিই তাইলে চলে যায়। বোঝেন তো সব চলে এখন সিস্টেমে। 

লাইসেন্সধারী ফার্মেসির মালিকেরা বলেন, আমাদের ওষুধের দোকানে সব সময় ফার্মাসিস্ট থাকে। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রি করা হয় না। তবে অনেক সময় পরিচিত মুখ হলে ওষুধ দিতে হয়। 

নীলফামারীর ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কাজী মো. ফরহাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমাদের জনবল কম। তাই এখানে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে পুরোপুরি মনিটরিং করা সম্ভব হয় না। এরপরও মাঝে মধ্যেই নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার দায়ে বিভিন্ন ফার্মেসিকে জরিমানা করা হচ্ছে। 

ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক আরও বলেন, যত দ্রুত সম্ভব লাইসেন্সবিহীন ওষুধ ফার্মেসি গুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। 

ওষুধ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগস সমিতি (বিসিডিএস) সৈয়দপুর উপ-শাখার সভাপতি ও শহীদ আমিনুল হক মেডিকেল স্টোরের মালিক মিজানুল হক বলেন, উপজেলায় যতগুলো লাইসেন্স আছে তার চেয়ে কয়েক গুন বেশি ফার্মেসি লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করছে। আবার ফার্মাসিস্ট দেখিয়ে অনেকে লাইসেন্স নিলেও এখন তাঁদের সেই লোকজন নেই। অবৈধভাবে অলিতে গলিতে গড়ে ওঠা ফার্মেসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত