Ajker Patrika

মা-বোনকে ঘরে আটকে রেখে শাবল দিয়ে স্ত্রীকে খুন করেন রুবেল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫: ৩৮
Thumbnail image

ভোরের ঠিক আগে। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সবাই। স্ত্রীর পাশ থেকে উঠে গিয়ে মা আর বোনের ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে দেন রুবেল হোসেন (২৫)। এরপর স্ত্রী ঝর্ণা খাতুনের (২৪) কাছে গিয়ে শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেন তাঁকে। গ্রেপ্তারের পর রুবেল র‍্যাবের কাছে ঘটনার এমন বিবরণ দিয়েছেন।

রুবেল হোসেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় রডমিস্ত্রি। গত সোমবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনি স্ত্রীকে খুন করে পালিয়ে যান। পরে সোমবার রাত ১১টার দিকে রাজশাহীর কাটাখালী থানার মাসকাটা দিঘি এলাকায় বন্ধুর বাড়ি থেকে র‍্যাব-৫-এর একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে। 

আজ মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস জানান, ঝর্ণার একটি সন্তান আছে। তিনি অত্যন্ত ধার্মিক ও পরহেজগার ছিলেন। এলাকার লোকজন তাঁকে ভালো বলেই জানে। তার পরও রুবেল হোসেন স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন। যদিও এ ব্যাপারে তাঁর কাছে কোনো প্রমাণ ছিল না। 

র‍্যাব-৫-এর অধিনায়ক আরও জানান, সম্প্রতি রুবেল ঝর্ণাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চান। বলেছিলেন, আর কখনো স্ত্রীকে মারধর করবেন না। তাঁকে যেন একবার সুযোগ দেওয়া হয়। তিনি ভালো হয়ে যাবেন। তাঁর এমন প্রতিশ্রুতিতে ঝর্ণা আবার স্বামীর বাড়ি আসেন। কিন্তু রুবেল স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা অনুসারে, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁরা একসঙ্গেই শুয়ে পড়েন। ভোরের দিকে রুবেল ঝর্ণাকে নৃশংসভাবে খুন করে পালিয়ে যান। 

র‍্যাবের অধিনায়ক আরও জানান, রুবেল মাদকাসক্ত। দুটি বেসরকারি সংস্থায় তাঁর ঋণ আছে। ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে তিনি মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। স্ত্রীকে হত্যার পর রুবেল প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ জন্য রাজশাহী শহরে এসে বন্ধুর বাড়িতে আত্মগোপন করেন। ঘটনার পর থেকে র‍্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রুবেলকে বাগমারা থানায় হস্তান্তর করা হবে। 

ঝর্ণাকে হত্যার অভিযোগে সোমবার তাঁর ভাই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় রুবেল ছাড়াও তাঁর মা ও বোনকে আসামি করা হয়। তবে রুবেল র‍্যাবের কাছে দাবি করেছেন, মা ও বোন যেন হত্যাকাণ্ডে বাধা দিতে না পারে, সে জন্য তিনি তাদের ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে রেখেছিলেন। খুন করেছেন তিনি একাই। 

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই পলাতক। আমরা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি।’ মা ও বোনকে ঘরে আটকে রাখার বিষয়ে রুবেলের জবানবন্দির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রুবেল র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার বলে শুনেছি। সে তো আমাদের কাছে এখনো আসেনি। আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হলে তাকে আমরাও জিজ্ঞাসাবাদ করব। সবকিছু শুনব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত