Ajker Patrika

মন্ত্রীর নিরাপত্তায় আসা পুলিশের ভ্যানে এমপি অনুসারীদের হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
Thumbnail image

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর নিরাপত্তা দিতে আসা পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, রাজশাহী–৪ (বাগমারা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারীরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত। পরে চালক দ্রুত গাড়িটি তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে আরোহী পুলিশ সদস্যদের এবং গাড়িটিকে রক্ষা করেন। 

 ২০০৮ সাল থেকে এই আসনের এমপি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। ২০০৮ সালে প্রথমবার তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরেই পুলিশকে দুটি পিকআপ ভ্যান দিয়েছিলেন। এই পিকআপের সামনে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের নাম লেখা রয়েছে। তাই বর্তমান এমপির সমর্থকেরা এই হামলা চালান বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২০ মার্চ) সকালে বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভায় মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের সঙ্গে মতবিনিময় সভাসহ বিকেলে জামগ্রামের ইফতার মাহফিলে যোগ দিতে আসেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মন্ত্রীর সফর উপলক্ষে তাহেরপুর বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তাহেরপুর বাজারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী পৌঁছার আগেই থানাসহ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। 

বেলা ১১টার দিকে ঝিকরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে তাহেরপুর হরিতলায় আসে সাবেক এমপি এনামুল হকের নামে স্টিকার সংবলিত একটি পিকআপ ভ্যান। সেই পিকআপ থেকে পুলিশ সদস্যরা নামার আগেই সেখানে অবস্থান নেওয়া এমপি আবুল কালাম আজাদের অর্ধশতাধিক অনুসারী গাড়িটিতে হামলা করে। 

হামলাকারীরা গাড়ির চালক পুলিশ সদস্য ফিরোজকে বলতে থাকেন, ‘তুই এনামুল হকের গাড়ি নিয়ে কেন তাহেরপুর এসেছিস?’ হামলাকারীরা পুলিশের পিকআপে লাগানো এনামুল হকের নাম সংবলিত স্টিকার তুলে ফেলে এবং লোহার রড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। অবস্থা বেগতিক দেখে চালক গাড়িটি দ্রুত তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভেতরে নেন। 

পুলিশের ব্যবহৃত পিকআপে হামলা ও ভাঙচুর করলেও এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। 

পুলিশের ওই পিকআপ চালক ফিরোজ বলেন, ‘আমি পুলিশ সদস্যদের নামিয়ে দেওয়ার জন্য তাহেরপুরে আসছি। হরিতলা মোড়ে হালকা ব্রেক দিয়েছি পুলিশ সদস্যদের নামানোর জন্য। এ সময় হামলাকারীরা এসে অতর্কিতভাবে গাড়িটি ঘিরে ধরে আর স্টিকার তুলে ফেলাসহ হামলা ও ভাঙচুর করে। সেই সঙ্গে লাথি মারতে থাকে। পরে নিরাপত্তার স্বার্থে গাড়িটি সেখান থেকে তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিই।’ 

স্থানীয়রা জানান, তাহেরপুর পৌর যুবলীগে যুগ্ম আহ্বায়ক এমপি কালামের অনুসারী সোহেল রানা এবং তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কোরবান আলীর নেতৃত্বে পুলিশের গাড়িতে হামলা হয়েছে। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা সোহেল রানা বলেন, ‘একটা বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। কিছু কমবয়সী ছেলে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করছিল। আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম। ঝামেলার মীমাংসা করে দিয়েছি। পুলিশের পিকআপ ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ 

পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাগমারা থানার ওসি অরবিন্দ সরকারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি। 

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি। যদি সেরকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত