Ajker Patrika

‘আমের জিলাপি’ বলে প্রচার করায় রাজশাহীর প্রতিষ্ঠানকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১০: ৪১
‘আমের জিলাপি’ বলে প্রচার করায় রাজশাহীর প্রতিষ্ঠানকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা

বৈচিত্র্যপূর্ণ জিলাপির জন্য রাজশাহীতে বেশ নাম করেছে ‘রসগোল্লা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি তারা আমের জিলাপি বানিয়ে সারা দেশ সাড়া ফেলেছে। কিন্তু আমের সঙ্গে ফুড গ্রেড রাসায়নিক রং ব্যবহার করেও ‘আমের জিলাপি’ বলে প্রচার চালানোয় প্রতিষ্ঠানটিকে মোট ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

তবে আজ শুক্রবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানটিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়। এরপর আবার ওই জিলাপি বিক্রির অপরাধে সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত আরও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে। 

প্রতিষ্ঠানটির দুই মালিকের একজন আরাফাত রুবেল। তিনি বলছেন, এ ধরনের অভিযান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং হয়রানিমূলক। কারণ, প্রথম অভিযানটি চালানোর পর ভোক্তা অধিকার বলেছিল, এই জিলাপি তাঁরা বেচতে পারবেন। কিন্তু তাঁরা চলে যাওয়ার পরই সন্ধ্যায় আবার জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে জরিমানা করে। 

বিকেলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান-আল-মারুফ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যদের নিয়ে অভিযানে যান। তিনি এই জিলাপিতে সবুজ রঙ আনার জন্য ফুড গ্রেড রাসায়নিক রং ব্যবহারের প্রমাণ পান। এই ফুড গ্রেড ব্যবহার করা যায় কি না তা জানার জন্য তিনি রাষ্ট্রায়াত্ত মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তাদের ডেকে আনেন। 

এরপর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ৪৫ ধারায় প্রতিষ্ঠানটিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ধারাটিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রি বা সরবরাহ না করলে তিনি এই ধারায় দোষী সাব্যস্ত হবেন।’ 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা হাসান-আল-মারুফ বলেন, ‘কাঁচা আমের জিলাপির প্রচারণায় প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল। তাই জরিমানা করা হয়েছে।’ 

কী ধরনের প্রতারণা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমের পরিমাণ খুবই কম। ৫ কেজি খামিরে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম আম দেওয়া হয়। এটা খুবই কম।’ তাহলে কত বেশি আম দিতে হবে হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিষয়টা ওরকম না। সে রকম কোনো হিসাবও নেই। কিন্তু পরিমিত তো দিতে হবে। আর জিলাপিতে ফুড গ্রেড ব্যবহার করা হয়। রসগোল্লা যদি বলত এটা আমের ফ্লেভারের জিলাপি, তাহলে কোনো অসুবিধা ছিল না।’ 

প্রতিষ্ঠানটির মালিক আরাফাত রুবেল গত ১০ এপ্রিল আজকের পত্রিকাকে বলেছিলেন, তিনি আম ব্লেন্ড করে দেন। কিন্তু এতে যথেষ্ট সবুজ রঙ হয় না। তাই মালয়েশিয়া থেকে আনা ফুড গ্রেড ব্যবহার করেন। এতে কোনো ক্ষতি নেই। আর এটার দাম প্রতিকেজি ৩০ হাজার টাকা। যত কম ব্যবহার করা যায় তিনি সেই চেষ্টাটাই করে থাকেন। তা না হলে খরচ বেড়ে যায়। 

আমের জিলাপি বলে প্রচার করে রাসায়নিক রং ব্যবহার করায় রাজশাহীর রসগোল্লাকে জরিমানারুবেল দাবি করেন, বিকালে ভোক্তা অধিকারের অভিযান শেষে কর্মকর্তারা তাঁকে জানিয়ে যান যে এ জিলাপি তিনি বিক্রি করতে পারবেন। তবে ফেসবুকে প্রচারে ‘আমের জিলাপি’ না লিখে ‘আমের ফ্লেভারে জিলাপি’ লিখতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেটি ফেসবুকে পরিবর্তন করেও দেন। এরপর জিলাপি বিক্রি করছিলেন। সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই জিলাপি বিক্রির কারণে আবার ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। তিনি বিএসটিআইয়েরও একজন কর্মকর্তা এনেছিলেন। তখন এই কর্মকর্তাও বলেছেন ফুড গ্রেডের বিষয়টি তাঁদের অধিভুক্ত নয়। 

অভিযানকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফুড গ্রেড তো কোন ফ্লেভার আনে না, এটা শুধু রং আনে। আমাকে যদি আম পরিমাণে কম দেওয়ার কারণেই জরিমানা করা হয়, তাহলে বলে দেওয়া হোক কী পরিমাণ খামিরে কী পরিমাণ আম দিতে হবে। আমি তাই দেব।’ 

জরিমানার পর জিলাপি বিক্রির অনুমতি দিয়ে আবার জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার বিষয়ে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা হাসান-আল-মারুফ বলেন, ‘এই জিলাপি তিনি (রসগোল্লার মালিক) বিক্রি করতে পারবেন কি না সে বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।’

জিলাপি সম্পর্কিত পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পালানোর গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরলেন আবদুল হামিদ

মেঘালয়ে হানিমুনের সময় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে হত্যা, উত্তর প্রদেশে নববধূর আত্মসমর্পণ

কানাডার লেকে বোট উল্টে বাংলাদেশের পাইলট ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

এআই যুগে চাকরি পেতে যে দক্ষতা লাগবেই, জানালেন মাইক্রোসফটের সিইও

ঈদের ছুটির সুযোগে মাদ্রাসার গাছ বেচে দিলেন সুপার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত