Ajker Patrika

স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে বলে আত্মহত্যা

বগুড়া প্রতিনিধি
স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে বলে আত্মহত্যা

‘তুমি ভালো থেকো। আবার বিয়ে করো। আমাদের ছেলেটাকে ওর নানির কাছে রেখে এসো। আমি তোমার কাছে সময় পাই না, আমার চেয়ে বন্ধুই তোমার কাছে বড়। তুমি তোমার মতোই থাকো, ভালো থেকো।’ চিরকুটে এমনই অভিমানের কথা লেখা ছিল ২০ বছর বয়সী গৃহবধূ হাবিবা বেগমের।

আজ সোমবার সকালে শোয়ার ঘর থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনাটি ঘটে বগুড়ার কাহালু উপজেলার পানদিঘী গ্রামে।

মৃত হাবিবা ওই গ্রামের মো. রিমনের (২৬) স্ত্রী। শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পরিবারের কাছে তাঁর হস্তান্তর করেছে পুলিশ। রাত ৯টায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমবার হোসেন।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে রিমনের সঙ্গে বিয়ে হয় হাবিবার। তাদের ঘরে এখন আট মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। রিমন পেশায় একজন ট্রাকচালক। কাজের জন্য প্রায়ই তাঁকে পরিবারের বাইরে থাকতে হয়। এ ছাড়াও তিনি ছিলেন আড্ডা প্রিয় মানুষ। বন্ধুরা ডাকলেই যখন-তখন আড্ডা দিতে চলে যেতেন তিনি। কিন্তু তরুণ গৃহবধূ হাবিবার তা পছন্দ ছিল না। তিনি চাইতেন স্বামী তাঁকে আরও বেশি সময় দিক, তাঁর প্রতি বেশি মনোযোগী হোক। তাই অভিমান করে আত্মহত্যা করেন তিনি।

এ বিষয়ে কাহালু থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ গৃহবধূর স্বামীর বরাত দিয়ে বলেন, ‘প্রতিদিনের কাজ শেষে যথারীতি গতকাল রাতে হাবিবা ও রিমন ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুমানোর আগে হাবিবা তাঁর বাবার সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন স্বাভাবিকভাবে। এরপর রাত তিনটার দিকে ঘুম থেকে উঠে রিমন ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন হাবিবাকে। তখন তিনি চিৎকার করলে তাঁর মা তাদের ঘরে আসেন। তারপর মা-ছেলে দুজনে সেখান থেকে হাবিবাকে নিচে নামান। পরে ভোরে তারা পুলিশকে জানালে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়। চিঠিতে হাবিবার অভিমানের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হাবিবার বাবার বাড়ি থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি উল্লেখ পুলিশ কর্মকর্তা ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, ‘দুই পরিবার থেকে যতটুকু জেনেছি পারিবারিক বা দাম্পত্য কলহ ছিল না হাবিবা এবং রিমনের। তাদের কোনো অভিযোগও নেই। তবু যেহেতু মৃত্যুর সময় একই ঘরে ছিলেন স্বামী রিমন, তাই আমরা মরদেহ পোস্টমর্টেম করেছি। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত