Ajker Patrika

শেরপুরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ৫ ভাতিজা মিলে চাচাকে খুন

শেরপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ মে ২০২৩, ২১: ৩৪
শেরপুরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ৫ ভাতিজা মিলে চাচাকে খুন

শেরপুর সদর উপজেলার প্রতাবিয়া এলাকায় আব্দুর রফিক (৫৫) নামে এক কৃষককে হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন চাচা আব্দুর রফিককে খুন করে বাড়ির পাশে একটি মেহগনিবাগানে ফেলে রাখেন পাঁচ ভাতিজা। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার এবং ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

গতকাল শুক্রবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন প্রতাবিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালেবের ছেলে মো. ওয়াসিম মিয়া (৩৪), মো. জসিম মিয়া (৩৬), মো. জিয়ার আলী (৩৮), মো. আলম মিয়া (২৮) ও মো. ফয়সাল মিয়া (২৫)। 

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ২০ জানুয়ারি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের প্রতাবিয়া পূর্বপাড়া এলাকায় একটি মেহগনিবাগানের ভেতরে রফিক মিয়া নামে এক কৃষকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে নবী হোসেন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে রফিকদের প্রতিপক্ষ প্রতিবেশী কুদরত আলী আঙ্গুর, মস্তু মিয়া, সুলতান, কেনা, রস্তমসহ ৯ জনের নাম দেওয়া হয়। ওই মামলার সাক্ষী ছিলেন নিহত রফিকের পাঁচ ভাতিজা। 

তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ ভিন্ন ঘটনার তথ্যপ্রমাণ পায়। পরে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রফিকের ভাতিজাদের আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই এলাকার রাজু মিয়া নামের এক ব্যক্তি স্বপ্রণোদিত হয়ে পুলিশের কাছে ঘটনার বিষয়বস্তু খুলে বলেন এবং ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। 

জবানবন্দিতে রাজু জানান, ঘটনার দিন রাতে তাঁকে (রাজু) দিয়েই ভাতিজারা চাচা রফিককে বাড়ি থেকে ডেকে আনেন। পরে চাচা আর বাড়িতে ফেরেননি। এরপর ভাতিজাদের আদালতের আদেশে এক দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পুলিশ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদকালে তাঁরা রফিককে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। 

ভাতিজাদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, পূর্বের মামলার বিষয়ে আলোচনা করার কথা বলে রফিক মিয়াকে বাড়ি থেকে ডেকে আনেন ভাতিজারা। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য তাঁরাসহ আরও কয়েকজন মিলে রফিক মিয়াকে কাঠ বাগানের ভেতরে নিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ঘটনাস্থলের ১৫০ গজ পূর্ব দিকে রফিক মিয়ার পুকুরেই ফেলে দেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার ভোর চারটা থেকে চারটি সেচ পাম্প দিয়ে পুকুরের পানি সেচে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করা হয়। আসামিদের রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. সোহেল মাহমুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাইদুর রহমান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান, ডিআইও-১ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানার এসআই খন্দকার সালেহ্ আবু নাঈমসহ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত