Ajker Patrika

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে হত্যাচেষ্টা, মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে হত্যাচেষ্টা, মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলা চালিয়ে গলা কেটে ও এলোপাতাড়ি মারধর করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রওশন আলীকে (৪৫) হত্যার চেষ্টা করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে ভুক্তভোগীর মামলা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনায় আজ বুধবার সকাল ১০টায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। 

এর আগে গত রোববার সকালে কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাঁওতা গ্রামের আমতলা বাজার এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন সাঁওতা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আজমত আলী শেখের একমাত্র ছেলে রওশন আলী। প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, বেকি, রামদা, হাত কুড়াল, ছ্যান, লোহার রড, কাঠের বাটাম ও বাঁশের লাঠি দিয়ে রওশন আলীকে গলা কেটে ও এলোপাতাড়ি মারধর করে। 

এ ঘটনায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও তিন-চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পরপর তিন দিন কুমারখালী থানায় লিখিত এজাহার জমা দিলেও পুলিশ তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। বিষয়টি নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। 

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাঁওতা গ্রামের মৃত মুনচুপ শেখের ছেলে সাইদুল ইসলাম ওরফে সাবদুল (৫৮), মৃত জোয়ার্দারের ছেলে কাশেম জোয়ার্দার (৫০), সাইদুল ইসলাম ওরফে সাবদুলের ছেলে খোকন ও শামিম, মৃত হেকমত আলীর ছেলে মোশারফ হোসেন ওরফে মছেন ও তুজাম এবং মৃত খেজমত আলীর ছেলে বিপুল। 

মানববন্ধনে রওশন আলীর বাবা মুক্তিযোদ্ধা আজমত আলী শেখ বলেন, ‘ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত থানায় মামলা রেকর্ড করেনি পুলিশ। ঘটনার দিন থেকে পরপর তিন দিন থানায় অভিযোগ দেয় হয়। কিন্তু অভিযোগটি এখনো মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি পুলিশ। তিন দিন থানায় ধরনা দিয়ে কোনো সমাধান হয়নি। প্রতিপক্ষের কাছে থেকে ঘুষ নিয়ে পুলিশ অভিযুক্ত আসামিদের পক্ষ নিয়েছে। পুলিশ মামলা না নিলে কুষ্টিয়া আদালতে মামলা করব আমরা। আমরা অপরাধীদের বিচার চাই।’ 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে রওশনের ওপর হামলা চালিয়ে গলা কেটে ও এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। রওশনের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। এলাকাবাসী গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা দেয়। অবস্থা গুরুতর হলে তাঁকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। থানায় এজাহার জমা দিলেও পুলিশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি, মামলা নেয়নি। আমরা অপরাধীদের শাস্তি চাই। 

বাদী রওশনের স্ত্রী ফেরদৌসী খাতুনের অভিযোগ, ‘মামলা নিয়ে নাটক করছে পুলিশ। অভিযোগ দেওয়ার তিন দিন অতিবাহিত হলেও মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি পুলিশ। প্রতিদিনই আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি থানায় গিয়ে। পুলিশ আসামিদের কাছে টাকা খেয়ে আমাদের সাথে অবিচার করছে। তা ছাড়া আসামিরা প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দিচ্ছে, দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমরা জান-মাল নিয়ে ভয়ে আছি। আমার স্বামীর গলায় ও মাথায় গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়েছে। এ ছাড়া এলোপাতাড়ি মারধর ও কোপানো হয়। প্রতিপক্ষের সাথে আমাদের পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। তাঁরা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার স্বামীকে মারধর করেছে। আমরা আসামিদের বিচার চাই।’ 

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ওই ঘটনায় ভুল বা মিথ্যা অভিযোগে কেউ হয়রানি হোক তা আমি চাই না। তাই অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। মামলা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত