Ajker Patrika

মেয়ের সঙ্গে প্রেম সইতে না পেরে ‘কিশোরকে হত্যা করে অ্যাসিডে মুখ ঝলসে’ দেন বাবা

নড়াইল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ মে ২০২৩, ১১: ৪৪
মেয়ের সঙ্গে প্রেম সইতে না পেরে ‘কিশোরকে হত্যা করে অ্যাসিডে মুখ ঝলসে’ দেন বাবা

কিশোরী প্রেমিকার ফোনকল পেয়ে রাতেই বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে দেখা করতে যায় এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ শেখ (১৬)। টের পেয়ে তাকে ধাওয়া করেন প্রেমিকার বাবা সবুর শেখ (৫৩)। অন্ধকারের গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে সিরাজ। ওই অবস্থাই তাকে পেটান। এরপর মৃত ভেবে পুকুরে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখেন সবুর শেখ। বাড়িতে ফেরার পর সন্দেহ হওয়ায় রাতেই পুকুর থেকে তুলে ছুরি দিয়ে গলা কাটেন সবুর শেখ। কিন্তু এবার ধরা পড়ার ভয় পেয়ে বসে। পরদিন লাশ তুলে দুই কিলোমিটার দূরে নিয়ে অ্যাসিড দিয়ে মুখমণ্ডল ঝলসে দেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে নড়াইলের লোহাগড়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকের কাছে সিরাজ শেখকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সবুর শেখ। তাঁর স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও রক্তমাখা কোদাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত সিরাজ লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের চরদৌলতপুর গ্রামের ইকরাম শেখের ছেলে। সে চরদৌলতপুর সরস্বতী একাডেমি থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

এর আগে সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ শেখের বিকৃত লাশ নিখোঁজের চার দিন পর গত বুধবার (১০ মে) বিকেলে লংকারচর গ্রামের মিরু শেখের বাড়ির পাশের বাগান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষার আগের রাত অর্থাৎ ৬ মে রাতে নিখোঁজ হয় সিরাজ শেখ। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একই গ্রামের সবুর শেখ (৫৩), তাঁর স্ত্রী শাহিনা বেগম (৪৭), ছেলে জাহিদুল শেখ (২০) এবং সিরাজ শেখের মেয়ে ও ওই কিশোরের প্রেমিকাকে গ্রেপ্তার পুলিশ।

স্বীকারোক্তির পর পুলিশের উদ্ধার করা হত্যার আলামতস্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ওসি জানান, ৬ মে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে প্রেমিকার কল পেয়ে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে দেখা করতে যায় এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ শেখ। ঘটনা জানতে পেরে সিরাজ শেখকে ধাওয়া করেন প্রেমিকার বাবা সবুর শেখ। দৌড়ে পালানোর সময় মেহগনিগাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যায় সিরাজ। তখন কোদালের গোড়া দিয়ে সিরাজের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন সবুর শেখ।

সিরাজ একসময় নিস্তেজ হয়ে পড়ে। মারা গেছে ভেবে ওই রাতেই তার নিথর দেহ সবুর শেখ ঘাড়ে করে বাড়ির পাশে পুকুরের কচুরিপানার নিচে ঢেকে রাখেন। পরে বাড়ি আসার পরও কিশোর বেঁচে আছে বলে সবুরের সন্দেহ হয়। কিছুক্ষণ পর ছুরি নিয়ে আবার সেখানে গিয়ে সিরাজের দেহ কচুরিপানার নিচ থেকে বের করে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কাটেন সবুর।

পরের দিন ৭ মে (রোববার) গভীর রাতে ঘরে থাকা ব্যাটারির অ্যাসিড নিয়ে সিরাজের মরদেহ পুকুর থেকে উঠিয়ে বিলের মধ্যে দিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে মিরু শেখের বাগানে নিয়ে যান। লাশটি যাতে কেউ শনাক্ত করতে না পারে সে জন্য মরদেহ বাগানে ফেলে ব্যাটারির অ্যাসিড ঢেলে সিরাজের মুখমণ্ডল ঝলসে দেন সবুর শেখ।

ওসি মো. নাসির উদ্দিন জানান, মামলা রুজুর ১৫ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের একাধিক টিম তদন্তপূর্বক হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃত চার আসামিকে আদালতে হাজির করলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করেন সবুর শেখ। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‎জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হত্যার ঘটনায় তাঁর ছাত্রী সপরিবারে পুলিশ হেফাজতে

পুরান ঢাকায় বাসার সিঁড়িতে জবি ছাত্রদল নেতার রক্তাক্ত লাশ

৪৯তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১২১৯

ফরিদপুরে এ কে আজাদের গণসংযোগে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর

ভিডিও কলে ‘বিয়ে’: দেশে ফিরে দেখেন আরেকজনের স্ত্রী, অতঃপর কারাগারে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত