Ajker Patrika

ঢাবির জিয়া হল প্রাধ্যক্ষের অপসারণ দাবি বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর

ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাবির জিয়া হল প্রাধ্যক্ষের অপসারণ দাবি বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর

মেসেঞ্জারে গ্রুপে দেওয়া এক বার্তাকে কেন্দ্র করে ‘রাষ্ট্রবিরোধী, সরকারবিরোধী ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা’র অভিযোগ এনে এক ছাত্রকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। প্রাধ্যক্ষের এমন কর্মকাণ্ডকে ‘হয়রানি’ উল্লেখ করে তাঁর অপসারণের দাবি করেছে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো। 

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার, সাধারণ সম্পাদক আদনান আজিজ চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ) ঢাবি শাখার সভাপতি রাজিব কান্তি রায়, সাধারণ সম্পাদক সুহাইল আহমেদ শুভ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী) ঢাবি শাখার সভাপতি সাদিকুল ইসলাম সাদিক, সাধারণ সম্পাদক আরাফাত সাদ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাবি শাখার অর্থ সম্পাদক আরমানুল হক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ঢাবি শাখার সংগঠক জাবির আহমেদ জুলে, ছাত্র ফেডারেশন ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মাহফুজ আহাম্মেদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক শোয়েব আব্দুল্লাহ এক যুক্ত বিবৃতিতে এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ এবং প্রাধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করেন। 

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, হলগুলোতে দখলদারি ও সন্ত্রাস বজায় রাখতে গিয়ে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ন্যূনতম সমালোচনাও গ্রহণ করতে পারছে না। সমালোচনা দমনের জন্য প্রতিনিয়ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালায়। গেস্টরুমে ম্যানার শেখানোর নামে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়। সারা দেশে বিদ্যমান স্বৈরতান্ত্রিক পরিবেশের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ পরিবেশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বজায় রেখেছে ছাত্রলীগ। আবার আমরা দেখলাম হল প্রাধ্যক্ষ স্ব-প্রণোদিত হয়ে মারুফকে (জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মেফতাহুল মারুফ) থানায় সোপর্দ করেছেন। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের, সেখানে প্রশাসন খোদ ফ্যাসিবাদের পদলেহন করছে। 

ছাত্র নেতারা প্রাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেনের অপসারণ, সংশ্লিষ্ট সব ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিচার ও গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবি জানান। একই সঙ্গে সব স্তরের শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস বিনির্মাণের লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা। 

এদিকে আগামীকাল রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে একই দাবিতে সমাবেশের ডাক দিয়েছে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো। 

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে চলতি মাসের ১৭ আগস্ট ছাত্রলীগের সমাবেশ ও মিছিলের ফলে রাস্তায় যানজটে পথচারীদের ভোগান্তি, ছাত্রলীগের ঘন ঘন কর্মসূচিতে হলের শিক্ষার্থীদের জোর করে নিয়ে যাওয়া এসব বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মেসেঞ্জার গ্রুপ ‘চৌদ্দশিখা’তে আলাপ চলছিল। এ সময় মারুফ গ্রুপে লেখেন, ‘সিরিজ বোমা হামলা চালাইছে জামায়াতুল মুজাহিদিন নামে একটা জঙ্গি সংগঠন বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে। সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত। এই ক্ষমতায় থাকার জন্য যদি দায়ী তারা হয় তাহলে ২০০৮-বর্তমানে গুলশানসহ সকল জঙ্গী হামলার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ।’ তাঁর এই বার্তা তাঁর কয়েকজন সহপাঠীরা হল ছাত্রলীগের নজরে আনে। হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত ওই শিক্ষার্থীকে আধা ঘণ্টা জেরা করার পর ঘটনা জানাজানি হলে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রাধ্যক্ষ ওই মেসেজের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী, সরকার বিরোধী ও জঙ্গি সম্পৃক্ততা’র অভিযোগ এনে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন। পরদিন বিকেলে বিভাগের শিক্ষক, সহপাঠীরা থানায় গিয়ে মারুফকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত