Ajker Patrika

ধামরাইয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের নিষ্ঠুরতা: চুরির অভিযোগে বৈদ্যুতিক শকে একজনের মৃত্যু, আরেকজন হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
ধামরাইয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের নিষ্ঠুরতা: চুরির অভিযোগে বৈদ্যুতিক শকে একজনের মৃত্যু, আরেকজন হাসপাতালে

এস্কেভেটরের (খননযন্ত্র) ব্যাটারি চুরির অভিযোগে দুইজনকে আটক করে কয়েক ঘণ্টা ধরে লাঠি পেটার পর দেওয়া হয় বৈদ্যুতিক শক। এর কয়েক ঘণ্টা পর গতকাল শনিবার রাতে একজনের মৃত্যু হয়। অপরজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকার ধামরাইয়ের নান্দেশ্বরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। 
 
নিহত ব্যক্তির নাম ফজলুল হক (৪০)। তিনি ধামরাইয়ের আমতা ইউনিয়নের বাউখন্ড গ্রামের মোমতাজ উদ্দিনের ছেলে, পেশায় দিনমজুর। নির্যাতনের শিকার অপর জনের আবদুল মান্নান (২৫) একই গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। 

মান্নানের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তিনি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অর্থের অভাবে তাঁর বাবা মুচলেকা দিয়ে ওই হাসপাতালেই রেখেছেন বলে জানান কর্তব্যরত সেবিকারা। 

পুলিশ ও হতাহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমতা ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলকেছ এবং একই ইউনিয়নের নান্দেশ্বরী গ্রামের আল–আমিন (বড়), আয়ুব আলী, আল–আমিন (ছোট) ও নয়াচর গ্রামের মীর হোসেনসহ আরও কয়েকজন মিলে মাটির ব্যবসা করেন। তাঁরা বাউখন্ড গ্রামের পাশের এলাকা বড়নরায়নপুর থেকে এস্কেভেটর দিয়ে অবৈধভাবে কৃষি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় সরবরাহ করেন। কয়েক দিন আগে ওই এস্কেভেটরের দুটি ব্যাটারি চুরি যায়। ব্যাটারি চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গতকাল শনিবার ফজলুল হক ও মান্নানকে আটক করে লাঠিপেটার পর বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর ফজলুল হক মারা যান। 

সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি একটা কাজে শনিবার সকালে মানিকগঞ্জ যাই। সকাল ১০টার দিকে বড় আল–আমিন ও রতনসহ আরও কয়েকজনে আমারে মানিকগঞ্জ থিকা ধইরা মোটরসাইকেলে তুইলা নান্দেশ্বরী নিয়ে যায়। এরপর আমারে নান্দেশ্বরী মাদ্রাসার উল্টা দিকে আইয়ুব আলীর মাটি ব্যবসার অফিসে (চাচা ভাতিজা এন্টারপ্রাইজ) নিয়া মাইর শুরু করে। এর কিছুক্ষণ পরে তারা ফজলুরেও মারতে মারতে ওই অফিসে নিয়ে আসে। বড় আল–আমিন, আইয়ুব ও রতনসহ আরও কয়েকজনে আমাগো কয়েক ঘণ্টা ধইরা লাঠি দিয়া পিটায়। লাঠির বাড়িতে আমার পুরা শরীর অবশ হইয়া যায়। এরপর আমাগো যহন কারেন্টের শক দেয় তহন আমি জ্ঞান হারাইয়া ফালাই। জ্ঞান ফিরা দেহি আমি হাসপাতালে।’ 

ব্যাটারি চুরির সঙ্গে জড়িত কিনা জানাতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। 

আমতা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও বাউখন্ড গাজীর পাথর এলাকার মুদি দোকানি আবদুল মজিদ বলেন, ‘শনিবার সকাল ১১টার দিকে ফজলু আমার দোকানে বসা ছিলেন। এ সময় চারটি মোটরসাইকেলে করে ৮ থেকে ১০ জন লোক এসে ফজলুকে বেদম মারধর করে রিকশায় তুলে নিয়ে যায়।’ 

ফজলুল ভাতিজা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘চুরির অপবাদ দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য আমার চাচাকে শনিবার গ্রাম থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ি আসার ১০ মিনিট পরই তিনি মারা যান।’ 

হাবির রহমান আরও বলেন, ‘হত্যার ঘটনায় আমার দাদি আছিয়া বেগম বাদী হয়ে আজ (রোববার) ধামরাই থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় ইউপি সদস্য আলকেছ, বড় আল–আমিন, ছোট আল–আমিন, মীর হোসেন ও রতনসহ আট জনকে আসামি করা হয়েছে।’ 

আমতা ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘ব্যাটারি চুরির অভিযোগে ফজলুল হক ও মান্নানকে ধরে এনে মারধর করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে আমি আইয়ুব আলী ও বড় আল–আমিনের অফিসে যাই। তখন ওই অফিসে একই ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলকেছ, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফুল ইসলাম ও বড় আল–আমিনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু আমি কাউকে মারতে দেখিনি। তবে আগে মারধরের কারণে ফজলুল হক ও মান্নানকে অসুস্থ মনে হয়েছে। এরপর আমরা তিন ইউপি সদস্য মিলে ফজলু ও মান্নানকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেই। এর কয়েক ঘণ্টা পর খবর পাই ফজলু মারা গেছে।’ 

মামলার পর থেকে আসামিরা পলাতক। 

ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘বাদীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত