Ajker Patrika

সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা পরিচয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা: ডিবি 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

চায়ের দোকান, রাজনৈতিক দলের সভাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে সামরিক বাহিনী ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয়ে ঘুরে বেড়াতেন তাঁরা। এ সব স্থানে গিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে এ পরিচয় ব্যবহার করে বাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দিতেন চক্রের সদস্যরা। কেউ তাঁদের ফাঁদে পা দিলে শুরু হত বিশ্বাস অর্জনের পালা। বিলাসী অফিস ও দামি গাড়ি ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে বিশ্বাস অর্জন করে শুরু হত প্রতারণা। 

সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগ। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চক্রের মূল হোতা ও সাবেক সেনা সদস্য ইব্রাহিম খলিল ওরফে ফয়সাল ওরফে মেজর কামাল (৪৫), তাঁর অন্যতম সহযোগী ও মাগুরার বিএনপি নেতা হাফিজার রহমান ওরফে ডেভিড, সাবেক সেনা সদস্য তৈয়েবুর রহমান মোস্তাক (৫২), আমিনুল ইসলাম সোহাগ (৪২), সাইফুল ইসলাম রাসেল (৩৮), নাঈম ইসলাম (৩৫) ও আরিফুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার পৃথক অভিযানে রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

এ সময় তাঁদের কাছ থেকে চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র, বিভিন্ন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র, স্বাক্ষরসহ সাদা স্ট্যাম্প ও ভুয়া ভিজিটিং কার্ড জব্দ করা হয়। 

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, ২০১৯ সাল থেকে একটি চক্র নিজেদের সামরিক বাহিনী ও জাতীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছিল। তাঁরা সেনাবাহিনীর স্টেশন সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদে সাত থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দিত। তাঁদের প্রস্তাবে রাজি হলে নিজেদের নির্ধারিত স্থানে নিয়ে কথিত একটি পরীক্ষার আয়োজন করত। এরপর সেনাবাহিনীর চাকরি সংক্রান্ত মেসেজ ভুক্তভোগীদের মোবাইলে পাঠাত। বিভিন্নভাবে ভুক্তভোগীদের বিশ্বাস অর্জন করত। এরপর নিয়োগপত্র দেওয়ার আগে ৫০ ভাগ টাকা নিত। ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়ার পর বাকি ৫০ ভাগ টাকা হাতিয়ে নিত। 

ডিবি প্রধান আরও জানান, ‘চক্রটি জমি দখল, ভুয়া চেকে লেনদেন, সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে প্রতারণা করত। চক্রের হাতে প্রতারণার শিকার কয়েকজন ভুক্তভোগী আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।’ 

ডিবি প্রধান আরও বলেন, সম্প্রতি কোরবান আলী নামের এক ব্যক্তির ছেলেকে চাকরি দেওয়ার নামে সাত লাখ ও তার মাধ্যমে আরও কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়েছে চক্রটি। গত ৪ বছরে চক্রটি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চক্রের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারায় টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এই চক্রের আরও বেশ কয়েকজন পলাতক রয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

গ্রেপ্তার প্রতারক চক্রের প্রায় সবার নামেই একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত পরবর্তী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত