Ajker Patrika

বাবাকে হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে জলদস্যুর নাটক সাজানোর অভিযোগ 

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৩, ১৪: ৪০
বাবাকে হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে জলদস্যুর নাটক সাজানোর অভিযোগ 

মুন্সিগঞ্জে বাবাকে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে জলদস্যু নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে দুই ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের দুই ছেলেসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

আজ সোমবার ভোরে উপজেলার আধারা ইউনিয়নের ভাসানচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত ব্যক্তির নাম মো. নুরুল ইসলাম হাওলাদার (৫০)। তিনি ভাসানচর মিজিকান্দি এলাকার প্রয়াত সুবেদ আলীর ছেলে। পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। 

আটকেরা হলেন—নিহতের বড় ছেলে মো. সুমন হাওলাদার, সুমনের স্ত্রী ও আরেক ছেলে মোহাম্মাদ আলী হাওলাদার। 

স্থানীয়রা জানান, নুরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের পারিবারিক কলহ ছিল। প্রায়ই তাঁদের বাড়িতে ছোট বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো। গতকাল রোববারও তাঁর স্ত্রী তাছলিমা বেগমের সঙ্গে নুর ইসলামের ঝগড়া হয়। তাছলিমাকে নুরুল মারধর করেছিলেন। তখন নুরুল ইসলামের বড় ছেলেরা তাঁকে মারপিটের জন্য খুঁজছিলেন। 

নুরুল ইসলামের ছোট বোন হামিদা বেগম বলেন, ‘কিছু হলেই ভাবি ও ভাতিজারা আমার ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। আমার ভাই তাঁর জমিতে ধান লাগিয়ে ছিলেন। তাঁর ছেলেরা কোনো কাজ করত না। কয়েক দিন ধরে তিনি একা একা জমির ধান কাটছিলেন। এ নিয়ে ভাই ভাতিজাদের গালি দেন। ভাবিও ভাতিজাদের পক্ষ নিয়ে ভাইকে গালি দেন। পরে ভাই-ভাবির মধ্যে ঝগড়া হয়, ভাবিকে মারধরও করেন। এ ঘটনা শুনে তাঁর ছেলেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ভাইকে মারপিটের প্রস্তুতি নেয়। বিষয়টি ভাই আমাকে জানিয়েছিলেন। শুনেছিলাম ভাই থানায়ও গিয়েছিলেন।’ 

হামিদা বেগম আরও বলেন, ‘আমার ভাই রাতে আমাকে মোবাইল ফোনে বলেছিলেন। বাড়িতে গেলে তাঁর ছেলেরা মেরে ফেলবে। স্থানীয় মাতব্বরদের ভরসায় তিনি বাড়িতে গিয়েছিলেন। ভোরে ছোট ভাতিজা সুজন ফোন করে জানায় তার বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে।’ 

অভিযুক্ত সুমন হাওলাদার আটকের আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা রোববার গভীর রাতে মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে যান। ভোরে মাছ ধরে ফিরে আসার সময় সংঘবদ্ধ জলদস্যুরা নৌকায় হামলা চালিয়ে নগদ টাকা, মাছ ও জাল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিলে জলদস্যুরা লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে তাঁর বাবা মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে নদীতে পড়ে যান। পরে তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এম এ কালাম প্রধান বলেন, ভোর সোয়া ৪টার দিকে নুরুল ইসলামকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। 

নিহতের বোন হামিদা বেগম বলেন, ‘আমার ভাই একজন কাঠমিস্ত্রি। তিনি কখনো মাছ ধরতেন না। তাঁকে হত্যা করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মাছ ধরার কথা বলা হচ্ছে। আমার ভাইকে আমার ভাতিজারা তাঁদের মামাদের সহযোগিতা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।’ 

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খাইরুল হাসান বলেন, ‘নিহতের মাথায় ও শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাসপাতালে তাঁর তিন ছেলে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে একজন বলছিলেন তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। এ সময় জলদস্যুরা তাঁকে হত্যা করে। ইতিমধ্যে পারিবারিক কলহের ঘটনাও জানতে পেরেছি। মাছ ধরা নাকি তাঁকে হত্যা করে মাছ ধরার ঘটনা সাজানো হচ্ছে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত