Ajker Patrika

১০ টাকা ভাড়া নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফের সংঘর্ষে আহত ২০, আগুন ১৩ দোকানে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২৩: ০৮
১০ টাকা ভাড়া নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফের সংঘর্ষে আহত ২০, আগুন ১৩ দোকানে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ১০ টাকার ভাড়া নিয়ে বিরোধের জেরে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার সকালে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় স্থানীয় বাজারের ১৩টি দোকানে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা করেছে প্রায় অর্ধশতাধিক দোকান ও বসতঘর।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলা সদরের রেলগেট থেকে স্কুলছাত্র রিমন সিএনজি করে দূর্গাপুর গ্রামে আসেন। এ সময় সিএসজি চালক রহুল আমিন ২০ টাকার স্থলে অতিরিক্ত ১০ টাকা বেশি ৩০ টাকা ভাড়া দাবি করেন। এ সময় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে স্কুলছাত্র রিমনকে মারধর করে সিএনজি চালক রুহুল আমিন। পরবর্তীতে রিমন বিষয়টি তাদের দূর্গাপুর গ্রামের হাজী বংশের মিজান মিয়া মেম্বারকে অবগত করে। মিজান মিয়া মেম্বার বিষয়টি সিএনজি চালক রহুল আমিনের বংশ জারু মিয়া বাড়ির প্রধান দূর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল মিয়াকে অবগত করেন। এরপর ফেরার পথে মিজান মিয়া মেম্বারের ওপর হামলা চালান চেয়ারম্যানের লোকজন। 

স্থানীয় বাজারের ১৩টি দোকানে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়এই খবর পেয়ে হাজীর বংশ ও চেয়ারম্যানের গোষ্ঠী জারু মিয়ার ‘বাড়ী’ বংশের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এই ঘটনার জের ধরে পরের দিন শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আবারও দুই বংশের লোকজনের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে আহত হন আরও ৩০ জন। এই সময় সংঘর্ষ পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের পক্ষে গ্রামের অন্য বংশগুলো সংঘর্ষে অংশ নেয়। তবে হাজী বংশের পক্ষে মোল্লাবাড়ি, হাজী ইউসূফ পাড়া ও শরিয়ত উল্লাহ পাড়া এবং জারু মিয়া বংশের পক্ষে নজর বাড়ি, মুন্সিবাড়ি, বামুমুন্সির বাড়ি ও নূরারপাড় বাড়ি লোকজন অংশ নেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এই ঘটনার জের ধরে জারু মিয়া বাড়ির প্রধান দূর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল মিয়া ও হাজী বংশের মিজান মেম্বারের গোষ্ঠীর লোকজন আজ বুধবার সকালে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে হাজী বংশের মিজান মেম্বারের গোষ্ঠীর একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ সময় স্থানীয় বাজারের ১৩টি দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙচুর করা করেছে প্রায় অর্ধশতাধিক দোকান ও বসতঘর। পরে দমকল বাহিনীর সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

পূর্ব বিরোধের জেরে শুরু হওয়া সংঘর্ষে বসতবাড়ির খড়ে আগুন জালিয়ে দেয় প্রতিপক্ষএই বিষয়ে জানতে দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাসেল মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইলে নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। অন্যদিকে ইউপি সদস্য মিজান মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। 

আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের খবরে আমরা সেখানে গিয়েছি। মুদি, ফার্মেসিসহ বিভিন্ন প্রকার ১৩টি দোকান অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়েছে। আমাদের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দমকল বাহিনীর দল অংশ গ্রহণ করে।’

সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেনএই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এই ঘটনায় ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে যাতে আর কোনো ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত