Ajker Patrika

সাংবাদিককে পিটিয়ে তৃতীয় তলা থেকে ফেলে দিল দুর্বৃত্তরা

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ১২: ০৮
সাংবাদিককে পিটিয়ে তৃতীয় তলা থেকে ফেলে দিল দুর্বৃত্তরা

চট্টগ্রামের চন্দনাইশে এক সাংবাদিককে পিটিয়ে তৃতীয় তলা থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার শিকার সাংবাদিক আয়ুব মিয়াজী (৩২) একটি জাতীয় ও একটি স্থানীয় দৈনিকের চন্দনাইশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনামতে, গত মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে সাংবাদিক মিয়াজী চন্দনাইশ সদরে দোহাজারী রেলস্টেশনসংলগ্ন ভবনের তৃতীয় তলায় মিয়াজী কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে কাজ করছিলেন। এ সময় সাত-আটজন সন্ত্রাসী হকিস্টিক, ছুরি, লাঠি নিয়ে সেখানে প্রবেশ করে তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি খালি রিকশার ওপর পড়েন মিয়াজী। পা এবং কোমরে গুরুতর আঘাত পান তিনি। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাঁকে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তাঁর মাথা ও শরীরের কয়েকটি স্থানে হাড় ভেঙে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন। 

সন্ত্রাসীরা আয়ুব মিয়াজী কম্পিউটার সেন্টারে পাঁচটি ল্যাপটপ ভাঙচুর করে এবং তিনটি ল্যাপটপ নিয়ে যায়। ক্যাশবাক্সে থাকা ৫০ হাজার টাকা, ব্যবহারের দুটি মোবাইল ফোন, মূল্যবান কাগজপত্রও নিয়ে যায় তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার সংবাদ পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। 

এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রায় নির্জন রাস্তায় দাঁড়ানো একটি রিকশার ওপর হঠাৎ ওপর থেকে একজন পড়ে গেলেন। রিকশার একপাশে বাড়ি খেয়ে তিনি রাস্তার ওপর উপুড় হয়ে পড়েন। এরপর পথচারীদের তাঁর কাছে ছুটে আসতে দেখা যায়। তবে লোকটিকে নিথর পড়ে থাকতে দেখা যায়। 

উল্লেখ্য, আয়ুব মিয়াজী সম্প্রতি পূর্ব দোহাজারী এলাকায় রাতের আঁধারে পাহাড় কাটার সংবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জানান এবং একটি অনলাইন পোর্টালে সংবাদ করেন। এ নিয়ে একটি পক্ষ ক্ষিপ্ত ছিল। গত ৪ এপ্রিলের ঘটনা সেই ক্ষোভ থেকেই ঘটানো হয়েছে বলে অনেকে ধারণা করছেন। 

এ ব্যাপারে ইউএনও মাহমুদা বলেন, ‘মিয়াজীর সংবাদ পেয়ে সহকারী কমিশনার ঘটনাস্থলে গেলে মাটিদস্যুরা পালিয়ে যায়। তবে মাটি কাটার বিষয়টি দৃশ্যমান ছিল। পরিবেশ রক্ষার্থে পাহাড়ের মাটি কাটার বিষয়ে প্রশাসনকে সংবাদ দেওয়া এবং সংবাদ প্রচার করার জন্য সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়ে থাকলে সেটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।’ 

মাটি কাটার বিষয়ে জেলা সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করবেন এবং মামলা করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করেন ইউএনও। 

সাংবাদিক আয়ুব মিয়াজীকে (৩২) পিটিয়ে তিনতলা থেকে ফেলে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীতএদিকে এ ঘটনায় চন্দনাইশ থানায় মামলা করেছেন সাংবাদিক আয়ুব মিয়াজীর বাবা আবদুশ শুক্কুর। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’ 

তবে ওসি বলেন, ‘বিষয়টি মেয়েঘটিত বলে মনে হচ্ছে। একজন নারী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তবে তাঁর এনআইডি কার্ড দিতে না পারায় অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়নি।’ 

ওসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, থানায় দেওয়া অভিযোগে এনআইডি কার্ডে উল্লেখিত নম্বরটি দোহাজারী সদর এলাকার আলী মিয়ার মেয়ে রৌশন আরা বেগমের। কিন্তু অভিযোগ দিয়েছেন কক্সবাজার এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদের মেয়ে রোজিনা আক্তার। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বুধবার স্থানীয় সাংবাদিকেরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন। সমাবেশে তাঁরা বলেন, দিনদুপুরে একজন গণমাধ্যমকর্মীকে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মারধর করে তৃতীয় তলা থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশের কাছে তথ্য-প্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, মাদ্রাসা সুপারসহ তিনজন আটক

মধুচন্দ্রিমায় স্বামী নিহত, কফিন জড়িয়ে হিমাশি

বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক সাফিনুলের পরিবারের ৫৬ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

১৬ বছর আগে নিহত শিশু ও সাত বছর ধরে প্রবাসী অষ্টগ্রামে মামলার আসামি!

এটা ছোটখাটো অপহরণ: চবির ৫ শিক্ষার্থীকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত