Ajker Patrika

মধ্যরাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএম কলেজ ছাত্রদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নেপথ্য কারণ কী

খান রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক
মধ্যরাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএম কলেজ ছাত্রদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নেপথ্য কারণ কী

বরিশালে বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) শিক্ষার্থীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নগরী। দু’দিন ধরে প্রতিষ্ঠান দুটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘটিত উত্তেজনার বিস্ফোরণ ঘটে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে। সংঘর্ষে আহত হয় উভয় পক্ষে শতাধিক। ভাঙচুর করা হয় বিএম কলেজের ৩টি বাস ও ছাত্রী হোস্টেল। 

এ ঘটনায় অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার ছুটি ঘোষণা করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা আজ সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ করে ববির কতিপয় শিক্ষার্থীকে চাঁদাবাজ অভিহিত করে ১২ ঘণ্টার মধ্যে সমাধানের আলটিমেটাম দিয়েছে। তা না হলে বরিশাল অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। 

যদিও বিএম কলেজের কতিপয় শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে ববি শিক্ষার্থীরা। 

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে আজ বিকেলে জরুরি সভা করেছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে নগরের ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডে জমি নিয়ে বিরোধ মেটাতে গিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় বিএম কলেজের ছাত্র সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমানকে চাঁদাবাজির অভিযোগে মারধর করা হয়। মঙ্গলবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র ইমন ও রাফিনকে চাঁদাবাজির অভিযোগে মারধর করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয় বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৩টি বাস যোগে নগরীতে এসে বিএম কলেজের কয়েকটি বাস ভাঙচুর করে। হামলা করে বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রীনিবাসে। এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত দুই পক্ষে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষে আহত হয়েছে অন্তত ১০০ জন। 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব প্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ মহসীন উদ্দীন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ববির এ পর্যন্ত ৭২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করতে বিভাগীয় কমিশনার বিকেলে সভা করেছেন। 

শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শামিম আহমেদ বলেন, আমরা বিএম কলেজে গিয়েছিলাম সমঝোতা করতে। তারা আমাদের আক্রমণ করতে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। 

সংঘর্ষ ও মারধরের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকাঅপর শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের ভাইয়েরা আটকে থাকার কারণে ববি শিক্ষার্থীরা তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য যাই। আমরা নিরস্ত্র ছিলাম। কিন্তু তারা (বিএম কলেজ) মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে সশস্ত্র হামলা চালায়। 

আজ বেলা ১১টায় বিএম কলেজছাত্ররা ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে সার্বিক বিষয় তুলে ধরে। লিখিত বক্তব্যে অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র সাব্বির হোসেন সোহাগ বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী একজন গরিব লোকের কাছে ৬০ হাজার টাকা দাবি করে। তাদের বটতলায় আটক করা হয়। পরে ববি শিক্ষার্থীরা আলেকান্দা পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করে। হামলা করা হয় বনমালী গাঙ্গুলি ছাত্রীনিবাসে। ভাঙচুর করা হয় ৫টি বাস। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে সুষ্ঠু সমাধান না হলে পুরো বরিশাল অচল করে দেওয়া হবে। বরিশালের মধ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাস চলতে দেওয়া হবে না। নগরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী থাকতে পারবে না। 

সোহাগ বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী চাঁদাবাজি করেছে, সন্ত্রাস করেছে। এই হামলা সন্ত্রাসের শামিল। 

পরে বিকেল ৫টার দিকে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। 

অপরদিকে আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়। 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের অন্যতম মো. তমাল বলেন, তাঁদের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ভাই মলম পার্টির খপ্পরে পড়েন। এতে বাস কর্তৃপক্ষকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করে জুনিয়ররা। পরে অবশিষ্ট টাকা নিতে এলে ইমন, রাফিন নামক দুই জনকে মারধর করে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা। 

তিনি বলেন, যা হয়েছে তা সমানে সমান। চাঁদাবাজির অভিযোগে ওদের একজনকে মারধর এবং আমাদেরও দুই জনকে চাঁদাবাজির অভিযোগে মারধর করা হয়েছে। রাতে মারামারিতে অনেকে আহত হয়েছে। যদি কেউ টাকার বিনিময় সালিস করতে আসে তাদের ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

সরকারি বিএম কলেজে ঢুকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকাএ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, তাঁদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে ক্লাস–পরীক্ষা নেওয়া যায় না। এ কারণে একদিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তা ছাড়া তাঁরা একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি করেছেন। কমিটির আহ্বায়ক আইন অনুষদের ডিন সুপ্রভাত হালদার। 

বরিশাল বিএম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আমিনুল হক বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ বিকেলে বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে সভা হয়েছে। এতে ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, ডিসি এবং দুই প্রতিষ্ঠান প্রধান ছিলেন। সভায় একটি লিয়াজোঁ কমিটি করা হয়েছে। যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন প্রশাসনের লোক এর আহ্বায়ক থাকবেন। ছাত্রদের দুই পক্ষকে আর যাতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি না হয় সে বিষয়ে আহ্বান জানানো হয়েছে। কলেজের পক্ষ থেকেও একটি কমিটি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান আজ বিকেলে জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ সতর্ক রয়েছে। তবে কোনো পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়নি। 

বরিশাল শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। এখন এক শ্রেণির মানুষ তাদের কাছে গিয়ে নানা অভিযোগ দিয়ে ছাত্রদের ভুল পথে পরিচালিত করছে। এই সুযোগে এক শ্রেণি চাঁদাবাজিতে নেমেছে। তিনি মনে করেন, যারা সালিসের নামে চাঁদাবাজি করছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করবে প্রশাসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১০
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।

গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।

সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।

এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র‍্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।

তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।

সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।

অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে যা আছে

ইয়ামাল কি তাহলে এভাবেই হারিয়ে যাবেন

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

সন্ধ্যা থেকে বন্ধ থাকবে নির্বাচন ভবনের আশপাশের ব্যবসা কার্যক্রম

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত