Ajker Patrika

ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার তালিকায় উঠতে কারসাজি, ঘোল খাইয়েছেন বিবিসি-রয়টার্সকেও

আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ১৪
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার তালিকায় উঠতে কারসাজি, ঘোল খাইয়েছেন বিবিসি-রয়টার্সকেও

গত বছরের সেপ্টেম্বরের এক সোনালি সকাল। ক্যালভিন লো নামের এক ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যবিষয়ক সাময়িকী ফোর্বসের এক সম্পাদককে হংকংয়ে পারিবারিক জীবনবিমা ব্রোকারেজ ফার্মে ডেকে পাঠান। আর. ই. লি. ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই ফার্মে যাওয়ার পর ফোর্বস সম্পাদকের চোখ তো ছানাবড়া! অফিসের সাজসজ্জা দেখে অভিভূত হয়ে পড়েন। অবশ্য সেই বিস্ময় কেটে যায় ফোর্বসের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর।

থ্রিপিস স্যুট, টাই এবং এর সঙ্গে মিলিয়ে পকেট স্কয়ার পরা ক্যালভিন লো অফিসের কনফারেন্স রুমে ফোর্বস সম্পাদককে নিয়ে বসেছিলেন। অফিসটি কাঠ দিয়ে মোড়ানো, চামড়ার মলাটযুক্ত বই এবং ফুলদানি দিয়ে সজ্জিত।

ক্যালভিন লো মূলত ফোর্বসের বিলিয়নিয়ারদের তালিকা নিয়ে আলোচনার জন্য সম্পাদককে ডেকেছিলেন। প্রথমে এশিয়ার অন্য বিলিয়নিয়ারদের র‍্যাঙ্কিং কীভাবে করা হয় তা জানতে ‘কৌতূহলী’ বলে জানান। ফোর্বসকে সম্পদের বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করবেন কি না, তা নিয়ে ‘দ্বিধায়’ আছেন—এমন ভান করেন।

বয়স্ক বিলিয়নিয়ার গোপনীয়তা বজায় রাখতে চাইলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের ধনকুবেররা তাঁদের বিপরীত—এই প্রবণতা তাঁকে বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় স্থান পেতে আগ্রহী করেছে বলেও জানান লো।

পরবর্তী সময়ে ফোর্বসের নথি যাচাইয়ে উঠে আসে, বাস্তবে লোর কৌতূহলী এবং দ্বিধান্বিত ভাব দেখানো ছিল একটা ফাঁদ। আসলে তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চেষ্টা করছিলেন ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার তালিকায় স্থান পেতে। অবশ্য লো একা নন, তাঁর মতো ২০২০ সাল থেকে কমপক্ষে সাত ব্যক্তি ২০টিরও বেশি অনুষ্ঠানে ফোর্বসের ১১ জন সাংবাদিকের কাছে ধরনা দিয়েছেন।

ফোর্বস সম্পাদককে জানানো হয়, লো একজন আড়ালে থাকা বিলিয়নিয়ার, জনহিতৈষী ও বিনিয়োগকারী। ওই সাক্ষাতের পর ফোর্বসের কাছে এক ডজনেরও বেশি নথি পাঠানো হয়। কিছু নথি ব্যক্তিগত ও গোপনীয় সিলযুক্ত।

পাগানি গাড়ির আসল ছবি ও লো’র পাশে দাঁড়ানো নকলপ্রাথমিকভাবে ফোর্বস বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। কারণ, প্রতিবছরই অসংখ্য লোক ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার তালিকায় ওঠার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয়।

হংকংয়ে ফোর্বসের ছয়জন সম্পাদকের ব্যুরো। সেখানে আর. ই. লি. ইন্টারন্যাশনাল অবস্থিত হলেও প্রতিষ্ঠানটির নাম তাঁরা কখনো শোনেননি। আর বিমা পলিসি বিক্রি করে বিলিয়ন ডলার আয় করা অবিশ্বাস্যই মনে হয়েছিল সম্পাদকদের কাছে।

তবে ক্যালভিন লো ক্ষান্ত হননি। ঘুষ দিয়ে ফোর্বসের মধ্যপ্রাচ্য শাখা থেকে একটি ফিচার ছাপিয়েছিলেন। যেখানে তাঁকে বিলিয়নিয়ার বলা হয়। পরে অবশ্য ফোর্বসের মূল শাখা বিষয়টি জানতে পেরে নিবন্ধটি সরিয়ে দেয়।

 ‘ফোর্বসের বিলিয়নিয়ারদের তালিকায়’ ওঠার এই ভুয়া খবর বিশ্বের নামকরা সব সংবাদমাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন লো। তারা ফোর্বসকে উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রকাশ করে। বিবিসি, সিএনবিসি, ডেইলি এক্সপ্রেস, ডেইলি মিরর, দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, নিক্কেই এশিয়া, রয়টার্স এবং সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের মতো সংবাদমাধ্যমও এ তালিকায় রয়েছে। সব খবরেই ক্যালভিন লোকে বিলিয়নিয়ার বলে উল্লেখ করা হয়।

হংকংয়ে লোর সঙ্গে প্রথম বৈঠকের পর কমপক্ষে এক বছর তাঁর দেওয়া তথ্য যাচাই করেছে ফোর্বস। এ সময় ছয় দেশের ৪০ জন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে। লোর দেওয়া শত শত পৃষ্ঠার নথিতে দাবি করা হয়, আর. ই. লি. ইন্টারন্যাশনাল পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ইনস্যুরেন্স ব্রোকার, যার প্রিমিয়াম মূল্য ১ বিলিয়ন ডলার। আর প্রতিষ্ঠাতা লোর সম্পদের মূল্য ৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার।

হার্ভার্ডে পড়ুয়া দাবি করা এই বিনিয়োগকারী ২০১৮ সালে ব্যক্তিগত গাড়ি, আর. ই. লি. অক্টাগন এবং তাইওয়ানের পাঁচ তারকা ম্যান্ডারিন ওরিয়েন্টাল হোটেল কিনতে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়।

এ ছাড়া ২৫০ মিলিয়ন ডলারের দাতব্য ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং সারা বিশ্বে দেড় ডজন বাড়ির মালিক বলেও দাবি করা হয় নথিতে।

শুধু তাই নয়, তিনি এশিয়ার বৃহত্তম বিনিয়োগকারী, দামি অ্যালকোহল শ্যাম্পেন সংগ্রাহক, এশিয়ায় প্রথম গালফস্ট্রিম জি৬৫০ প্রাইভেট জেটের মালিক এবং কিংবদন্তি উইলিয়ামস ফর্মুলা-১ রেসিং দলের বিনিয়োগকারী—এমনটি দাবি করা হয়।

তবে ফোর্বসের তদন্তে এসব দাবির বেশির ভাগেরই সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। আর বাকিগুলো সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ। 

এফ-১ রেসিং দলে লোর কোনো অংশীদারত্ব নেই। তিনি ম্যান্ডারিন ওরিয়েন্টাল তাইপেই হোটেলের মালিক নন। তাঁর সরবরাহ করা ঠিকানায় বাড়িগুলো হয় তাঁর বাবা-মায়ের বা অন্য লোকের। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে ক্যালভিন লো নামে কারও স্নাতক হওয়ার রেকর্ড নেই। তাঁর দাতব্য ফাউন্ডেশন বা আর. ই. লি. অক্টাগনের অস্তিত্বও পাওয়া যায়নি। 

এদিকে আর. ই. লি. ক্যাপিটাল ফোর্বসকে জানিয়েছে, লো প্রকৃতপক্ষে এই ফার্মের একজন নন-এক্সিকিউটিভ ইক্যুইটি বিনিয়োগকারীর ছেলে। তাঁর মা রেজিনা লি এটির চেয়ারম্যান হলেও ক্যালভিন লোকে কোম্পানির সহযোগী বলে মনে করা উচিত নয়। এ ছাড়া আর. ই. লি. ক্যাপিটালের সম্পদ ৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার নয় বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। 

অন্যদিকে লোর প্রতিষ্ঠিত আর. ই. লি. ইন্টারন্যাশনালের সাবেক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত বছর প্রতিষ্ঠানটির অভিহিত মূল্য (ফেস ভ্যালু) ৮০০ মিলিয়নের বেশি ছিল না। ফোর্বসের অনুমান কোম্পানিটির মূল্য সর্বসাকল্যে ৬০ মিলিয়ন ডলারের মতো। আর এই অর্থের মালিক প্রকৃতপক্ষে কে তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেননা, লোর মা ২০১৫ সালে কোম্পানিটি কিনেছিলেন। 

তবে লোর বাবা ফ্রান্সিস লো এবং মা রেজিনা লির দুটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে হংকংয়ের অভিজাত এলাকায়। এ ছাড়া হংকংয়ের বাণিজ্যিক এলাকায় ও ভ্যানকুভারে আর. ই. লি. ইন্টারন্যাশনালের মোট ৪ হাজার ৪৫ বর্গফুটের অফিস রয়েছে। 

বিলিয়নিয়ার দাবি করা হংকংয়ের এক লাইফ ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানের সিইও ক্যালভিন লোলোর পরিবার ধনিক শ্রেণির—এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, তবে বিলিয়নিয়ার নয়। ফোর্বসের ধারণা, লো ও তাঁর বাবা-মায়ের মোট সম্পদ ২০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। 

ফোর্বস লো এবং তাঁর মায়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে একটি দীর্ঘ প্রশ্নের তালিকা পাঠিয়েছিল। জবাবে একটি আইনি সংস্থা চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছিল, তাঁদের মক্কেল ‘অসৎ, অসত্য বা অনৈতিক’ বলে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সত্য নয়। 

লোর কথিত ব্যক্তিগত বিনিয়োগ সংস্থা আর. ই. লি. অক্টাগনের অস্তিত্ব নেই। ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ, হংকং বা সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত এমন কোনো সংস্থা নেই। জুলাই মাসের শেষ দিকে সংস্থাটির একটি একক ই-মেইল ঠিকানাসহ এক পৃষ্ঠার ওয়েবসাইট ছিল। কিন্তু সাইটটি এখন আর নেই। 

গভীর জলের মাছ লোর একজন প্রতিনিধি দাবি করেছিলেন, তাঁর প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি শ্যাম্পেন সংগ্রহশালা রয়েছে। এ বিষয়ে লন্ডনের ক্রিস্টির ওয়াইন অ্যান্ড স্পিরিটসের আন্তর্জাতিক পরিচালক টিম ট্রিপট্রি বলেন, ‘আমি মনে করি না এটি ১০০ মিলিয়নের বেশি। এটি অসম্ভব বলে মনে করি। কারণ ১৮ বছরে এত মূল্যবান ওয়াইনের কোনো সংগ্রহ খুঁজে পাইনি।’ 

লো একটি পাগানি হুয়ারা বিসিসহ অন্যান্য বিরল সুপার কারের মালিক বলেও গর্ব করে বলেছিলেন। ফোর্বস তাঁর একটি পাগানি হুয়ারা টেম্পেস্টার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছবি খুঁজে পেয়েছে। হংকং-ভিত্তিক মিং পাও সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের কেউ একজন ছবিটি তুলেছিলেন। পত্রিকায় সেটি ছাপাও হয়েছিল।

কিন্তু ফোর্বস ঠিক একই ছবি খুঁজে পেয়েছে যেখানে লো নেই। ২০১৭ সালে সোথবির নিলামের জন্য ফটোগ্রাফার রবিন অ্যাডামস ছবিটি তুলেছিলেন। তিনি ফোর্বসকে বলেন, তাঁর সেই ছবিই এডিট করে লোর ছবি বসানো হয়েছে। তাঁর কোনো অনুমতি ছাড়াই ছবিটি তারা ব্যবহার করেছে। আর সেই গাড়িটি আসলে কোনো এক ব্যক্তি ২ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলারে কিনেছেন। 

পরে ফোর্বস চাপ দিলে পৃথিবীর ছয় শহরে (হংকং, সিঙ্গাপুর, টোকিও, লন্ডন, ভ্যাঙ্কুভার এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে) বাড়ি আছে—এমন দাবি থেকে সরে আসেন লো। এরপর প্রথমে পাঁচটি ও শেষ পর্যন্ত হংকংয়ে চারটি এবং সিঙ্গাপুরে একটি সম্পত্তির তথ্য দেন। কিন্তু রিয়েল এস্টেট রেকর্ড থেকে জানা যায়, এসব বাড়ির মধ্যে দুটি তাঁর বাবা–মার এবং বাকিগুলো অন্যদের। 

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফোর্বসের সঙ্গে একটি বৈঠকে লো বলেছিলেন, তিনি বোস্টনের সান লাইফ ফাইন্যান্সিয়াল এবং নিউইয়র্কের জেপি মরগানে কাজ করেছেন। তবে জেপি মরগান জানিয়েছে, তিনি ২০০১-২০০২ সালে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ ও ব্যাংকিং বিভাগে খুবই স্বল্প সময়ের জন্য কাজ করেছিলেন। কিন্তু লোর ফার্মের মাধ্যমে বিমা পলিসি বিক্রি করার কথা বলা হলেও সান লাইফ জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটিতে লোর কাজ করার কোনো রেকর্ড নেই। 

ফোর্বস সব তদন্ত শেষে লোকে সেসব নথি পাঠিয়েছিল। তখন লো প্রতিনিধির মাধ্যমে জানান, এ নিয়ে তাঁর আর কোনো আগ্রহ নেই। ফোর্বসে প্রকাশিত বিলিয়নিয়ার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেন। পাশাপাশি এ নিয়ে ফোর্বসে আর কোনো লেখা প্রকাশ হোক সেটিও চান না বলে উল্লেখ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১০
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।

গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।

সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।

এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র‍্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।

তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।

সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।

অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত