Ajker Patrika

ঘরে উঠতে পারছে না ১২ সাঁওতাল পরিবার

দিনাজপুর প্রতিনিধি
ঘরে উঠতে পারছে না ১২ সাঁওতাল পরিবার

দিনাজপুর সদরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পরও উঠতে পারছে না সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ১২টি পরিবার। তাদের ঘরগুলো দখলে নিয়ে কয়েকটি বাঙালি পরিবার বসবাস করছে। এ ঘটনায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভুক্তভোগী সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের চিলমন খাঁ দিঘির পাড়ের খাসজমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় পাকা ঘর তৈরি করা হয়েছে। প্রথম দুই ধাপে তৈরি হওয়া ৪০টি ঘরের মধ্যে ৩৮টি সাঁওতাল ও দুটি বাঙালি পরিবার বরাদ্দ পেয়ে ইতিমধ্যে বসবাস শুরু করেছে। কিন্তু শেষ ধাপে বানানো ১২টি ঘর নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। দিঘির পূর্ব পাড়ে মুসলমানদের কবরস্থান-সংলগ্ন এ ঘরগুলো দখল করে নিয়েছে বাঙালিরা। তারা সব কটি ঘরে তালা দিয়ে ছয়টি ঘরে বসবাসও শুরু করেছে। উপায়ান্তর না পেয়ে সাঁওতাল পরিবারের সদস্যরা ঘর দখল হওয়ার বিষয়ে গত মঙ্গলবার ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেন।

অভিযোগে জানানো হয়, সরকারের কাছ থেকে দলিল বুঝে পাওয়ার পর ঘরে উঠতে গিয়ে সাঁওতালেরা দেখতে পান, বাঙালিরা আগে থেকেই ঘরগুলো দখলে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছে। সেখানে কয়েকটি ঘরে তারা বসবাস শুরু করেছে।

ঘর দখলে রাখা দিনমজুর দফিলউদ্দিন জানান, ছেলেরা খেতে দেন না, দেখাশোনাও করেন না। তাই তিনি আশ্রয়ণের ঘরে এসে উঠেছেন। ঘরে উঠতে না পারা সুনীল কিস্কু বলেন, ‘দিঘিপাড়ে আমার একটাই মাটির ঘর ছিল। ঘরটা ভেঙে নতুন করে সরকারি ঘর হলো, কিন্তু সে ঘরে আর উঠতে পারছি না। বোনের বাড়ির বারান্দায় রাত কাটাতে হচ্ছে। ঘরে উঠতে গিয়ে দেখি তালা মেরে রাখা হয়েছে।’

এ বিষয়ে স্থানীয় ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অভিজিৎ বসাক জানান, ঘর দখল নিয়ে সৃষ্ট ঝামেলা এড়াতে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানানো হয়েছে। 
যোগাযোগ করা হলে ইউএনও মর্তুজা আল-মুঈদ বলেন, ‘কয়েকটি পরিবার তাঁদের জন্য বরাদ্দ আশ্রয়ণের ঘরে উঠতে পারছেন না, এমন অভিযোগ পেয়েছি। সরকারিভাবে যাঁদের জন্য ঘর বরাদ্দ হয়েছে, তাঁরাই প্রাপ্য হবেন। অন্য কারও দখলে নেওয়ার সুযোগ নেই। কবরস্থান ঘিরে যেন সমস্যা না হয়, সে জন্য ইটের দেয়াল দিয়ে কবরস্থান ঘিরে দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হবে।’

ঘর দখলে রাখা ব্যক্তিদের সম্পর্কে ইউএনও জানান, তাঁরা যদি সত্যিই ভূমিহীন হয়ে থাকেন, তাহলে প্রয়োজনে তাঁদের অন্যখানে জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত