রিমন রহমান, রাজশাহী ও অর্চি হক, ঢাকা

অ্যাপে গ্রাহক হয়ে বিদেশি সিনেমার টিকিট কিনে রাখলেই লভ্যাংশ। যত টিকিট তত লাভ। টাকায় নয়, বিনিয়োগ-লাভের সব হিসাব মার্কিন ডলারে। অ্যাপে জমা রাখা ডলার লাভ-আসলে এক মাসেই বেড়ে দ্বিগুণ থেকে ৩৬০ গুণ পর্যন্ত হচ্ছিল। এভাবে অ্যাপে কেউ লাখ, কেউবা হাজার হাজার ডলারের মালিক বনে গিয়েছিলেন। রাতে নিজেকে বড়লোক দেখে ঘুমালেও সকালে উঠে সবার চোখ ছানাবড়া। কারণ, হিসাবের খাতা শূন্য। ভোজবাজির মতো সব গায়েব।
দ্রুত ধনী হওয়ার লোভে এই অ্যাপে বিনিয়োগ করা কয়েক হাজার মানুষ এখন দিশেহারা। তাঁদের বিনিয়োগের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এই অ্যাপটির নাম ‘ই-মুভি প্ল্যান’। গুগল প্লে স্টোরের এই অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত বিদেশিসহ দেশি একটি প্রতারক চক্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ই-মুভি প্ল্যানের হাজার হাজার বিনিয়োগকারী রয়েছে। বেকার তরুণ-তরুণীরাই এর বড় ইউজার (গ্রাহক)। তাঁদের মাধ্যমে কিশোর, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ এই অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলে ইউজার হয়েছিলেন। বাদ ছিলেন না সরকারি চাকরিজীবীরাও। কিছুদিন গ্রাহকেরা এই অ্যাপ থেকে টাকাও তুলেছেন। তা দেখে নতুন নতুন ইউজার লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন অ্যাপ থেকে টাকা তোলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন তাঁরা। তবে এ নিয়ে কেউ এখনো থানায় অভিযোগ করেননি।
গতকাল মঙ্গলবার গুগল প্লেতে গিয়ে দেখা যায়, ই-মুভি প্ল্যান নামে কোনো অ্যাপ নেই। তবে ই-মুভিপ্ল্যান প্লাস নামে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করা যাচ্ছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘ই-মুভির বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এটা আমাদের অথরাইজড সাইট নয়। তাই আমাদের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও নেই। তাদের বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেখবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী গ্রামের এক যুবক গত বছরের অক্টোবরে ই-মুভি প্ল্যানে প্রথমে ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। অ্যাপে দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বরে টাকা দেওয়ার পর ই-মুভি প্ল্যানের অ্যাকাউন্টে তা ডলারে রূপান্তরিত হয়। সেই ডলার দিয়ে তিনি সিনেমার টিকিট কিনতে থাকেন। অ্যাকাউন্টে থাকা ডলারের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে লভ্যাংশ। ডলারে আসা লভ্যাংশও তোলেন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। রাতারাতি বদলে যায় তাঁর অবস্থা। দামি মোটরসাইকেল কেনেন। একতলার বাড়ির ছাদ ঢালাই দিয়ে দোতলার কাজ শুরু করেন। তাঁর এমন উন্নতির কারণ জেনে ওই অ্যাপে বিনিয়োগ করেন এলাকার অসংখ্য মানুষ।
প্রেমতলীর এই যুবক জানান, সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা যেত ই-মুভি প্ল্যানে। গত সোমবার রাতেও ই-মুভি প্ল্যানে তাঁর ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৪৫ ডলার (প্রায় ২ কোটি টাকা) ছিল। গতকাল সকালে সব শূন্য। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে যারা অল্প বিনিয়োগ করেছে, তাদের টাকা উঠে গেছে। কিন্তু শেষ দিকে লোভে পড়ে যাঁরা চার-পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন, তাঁরা আসল টাকা তুলতে পারেননি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রেমতলী গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ এই অ্যাপে বিনিয়োগ করেছেন। এলাকাবাসী জানেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুহুল আমিন নয়ন বলেন, ‘অনেক ভালো ভালো মানুষ এতে টাকা ঢুকিয়েছিলেন। সবার টাকা গেছে! এখন লজ্জায় স্বীকার করছেন না। আমি ২ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট করেছিলাম।’
ভুক্তভোগীরা জানান, জেলায় জেলায় নিযুক্ত ই-মুভি প্ল্যানের এজেন্টরা এটি চীনা প্রতিষ্ঠান বলে মানুষকে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করেছেন। কেউ একটি অ্যাকাউন্ট খোলার পর কাউকে রেফার করলে ওই তথ্যও নিজের অ্যাপে দেখাত। এরপর তার নিচে যতজন ই-মুভি প্ল্যানে যুক্ত হতো, তাদের লভ্যাংশের একটা অংশও প্রথমজন পেতেন। কারও কারও নিচে ২ হাজারের বেশি ইউজার হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি অ্যাপ থেকে টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার টাকা তোলা যাবে। কিন্তু তা হয়নি।
প্রতারিত ব্যক্তিরা জানান, ঢাকার উত্তরার সাইফুল নামের এক ব্যক্তি ই-মুভি প্ল্যানের এজেন্ট। রাজশাহীর এজেন্টের নাম আজমল হুদা মানিক। নওগাঁর এজেন্ট লিজা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তোফায়েল। এই এজেন্টদের নগদ টাকা দিলে তাঁরাই অ্যাপে ডলার দিতে পারতেন।
নোয়াখালীর ভুক্তভোগী মোহাম্মদ সিজান জানান, আজিজুর রহমান নামের এজেন্টের মাধ্যমে মাসখানেক আগে ২১২ ডলার বিনিয়োগ করার পরপরই তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়। এজেন্ট আজিজুরও লাপাত্তা।
রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের জেবিডি আইটির প্রতিষ্ঠাতা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বিক্রম কুমার বলেন, ‘এভাবে ডিজিটালি প্রতারণা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক হতে হবে।’
ভুক্তভোগীরা জানান, বিদেশি প্রতারকেরা সব সময় টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত থেকে বার্তা দিতেন। ইউজারদের কাছে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করতে গত ৭ জানুয়ারি পাঁচ তারকা হোটেল ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে সারা দেশের এজেন্ট ও বড় বড় বিনিয়োগকারীকে নিয়ে সম্মেলন করা হয়। এতে চার চীনা নাগরিক এসেছিলেন। এদের তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। সেখানে নিজেদের ই-মুভির ভাইস প্রেসিডেন্ট পরিচয় দিয়ে কথা বলেছিলেন ব্রায়ান জন ও মিস্টার মাইকেল নামের দুজন। এই মাইকেল মাঝে মাঝে বিভিন্ন বার্তা নিয়ে ই-মুভি প্ল্যানের ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসতেন।
ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, সিঙ্গাপুরের একটি ব্যবসায়িক গ্রুপের পরিচয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ই-মুভি প্ল্যানের নামে তাদের একটি হল বুক করা হয়েছিল। ব্যবসায়িক নীতির কারণে রিজেন্সির ওই কর্মকর্তা এর বেশি জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
ভুক্তভোগীরা জানান, এমডি কৃষ্ণা নামের একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে ইউজারদের সঙ্গে কথা বলতেন নিজেকে ই-মুভির পরিচালক পরিচয় দেওয়া একজন। তাঁর টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টটি হংকংয়ের +৮৫২৬০৯১৭৩৯৬ নম্বর দিয়ে খোলা। এলিস নামের একজন সহকারী এবং মু লি জি নামের আরেকজন কথা বলতেন। আগামী ২৪ মার্চ রাজশাহী শহরের একটি তিন তারকা হোটেলে তাঁদের উপস্থিতিতে সম্মেলনের কথা জানানো হয়েছিল।
ই-মুভি প্ল্যানের রাজশাহীর এজেন্ট আজমল হুদা মানিকের অফিস শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শিরোইল কলোনি সাড়ে ৩ নম্বর গলির ৫১৩ নম্বর ভাড়া বাড়িতে। গতকাল সকালে ওই অফিসের অবস্থান জানতে চাইলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের কর্মী মো. তন্ময়ের প্রশ্ন, ‘অনলাইনে কাজ করে ওই মানিক? ধরা খাইছেন?’ তিনি জানান, মানিক এখানে অফিস করার পর কাউন্সিলরের কার্যালয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছিল।
মানিকের অফিসের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেটি তালাবদ্ধ। কিছুক্ষণ পর তাঁকে খুঁজতে মোটরসাইকেলে চড়ে এলেন কয়েকজন যুবক। তাঁদের একজন মোবাইলে কাউকে বলছিলেন, ‘আমাকে সাত দিন আগে পামপট্টি মেরে ই-মুভিতে ঢুকিয়ে দিল মামা! আমি ১২ হাজার টাকা দিয়েছি। আমাকে এমনভাবে মুরগি বানালো মামা!’
কথা বলে জানা গেল, ওই যুবকের নাম হিমেল। বাড়ি শহরের উপশহরে। সঙ্গে আসা ফাহিম ও রিংকুও ই-মুভিতে বিনিয়োগ করেছেন। তাই এজেন্ট মানিককে ধরতে এসেছেন। তাঁর মোবাইল নম্বরও বন্ধ। সোমবার রাতে মানিক টেলিগ্রাম গ্রুপে এক বার্তায় বলেছেন, নিজের ডলার নিয়েই তিনি বিপাকে পড়েছেন। তাঁকে যেন কেউ ফোন করে বিরক্ত না করেন।
বিষয়টি জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করে মানিকের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। ই-মুভির এই প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি হংকংয়ের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। টেলিগ্রামে বার্তা পাঠানো হলেও কেউ সাড়া দেননি।
প্রতারণার শিকার এক তরুণ জানান, ই-মুভিতে তাঁর প্রায় ২ লাখ ডলার জমা হয়েছিল। কিন্তু টাকা ওঠানো যাচ্ছিল না দেখে তিনি কাস্টমার সার্ভিসের গ্রুপে যোগাযোগ করেন। গ্রুপটি পরিচালনা করা হতো হংকংয়ের +৮৫২৬৭৩৫৭৬২১ নম্বর থেকে। কিন্তু উত্তর মেলেনি। পরে মু লি জি নামের টেলিগ্রাম আইডি থেকে জানানো হয়, তাঁর ই-মুভিতে যত ডলার আছে তার ৩০ শতাংশ ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে ডিপোজিট করলে তিনি তাঁর সব ডলার ভাঙাতে পারবেন। নির্ধারিত সময়ে ডিপোজিট না করলে বাংলাদেশ সরকার সব ডলার বাজেয়াপ্ত করবে।
জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এস এ এম রফিকুন্নবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ই-মুভি প্ল্যান নামে কোনো অ্যাপের কথা আমাদের জানা নেই। কিসের কে ডলার বাজেয়াপ্ত করবে? এটা পুরোপুরি প্রতারণার ফাঁদ।’
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সব ভাঁওতাবাজি। প্রতারিত কেউ অভিযোগ করলে এখানকার এজেন্টদের খুঁজে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল) মুহাম্মদ সাঈদ আলী বলেন, ‘আমরা ই-মুভি প্ল্যানের নামে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বা যে অভিযোগ উঠছে সেগুলোর সত্যতা পেলে বিটিআরসিকে সাইটটি বন্ধ করতে বলব।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা অভিযুক্ত ৩৩১টি ওয়েবসাইট বন্ধ করিয়েছি। আরও ৬৯টি ওয়েবসাইটের নাম গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে।’
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, ‘ই-কমার্সের নামে এ ধরনের ব্যবসা করা হলে আমরা সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান না হলে কিছু করার এখতিয়ার আসলে আমাদের নেই।’
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বলেন, ‘আমরা নিজেরা কোনো সাইট বন্ধ করি না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অথবা কোনো সংস্থা আমাদের কাছে সুপারিশ করলে আমরা সেটা বন্ধ করতে পারি। ই-মুভি প্ল্যান বন্ধের বিষয়ে যদি কোনো সুপারিশ আসে, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

অ্যাপে গ্রাহক হয়ে বিদেশি সিনেমার টিকিট কিনে রাখলেই লভ্যাংশ। যত টিকিট তত লাভ। টাকায় নয়, বিনিয়োগ-লাভের সব হিসাব মার্কিন ডলারে। অ্যাপে জমা রাখা ডলার লাভ-আসলে এক মাসেই বেড়ে দ্বিগুণ থেকে ৩৬০ গুণ পর্যন্ত হচ্ছিল। এভাবে অ্যাপে কেউ লাখ, কেউবা হাজার হাজার ডলারের মালিক বনে গিয়েছিলেন। রাতে নিজেকে বড়লোক দেখে ঘুমালেও সকালে উঠে সবার চোখ ছানাবড়া। কারণ, হিসাবের খাতা শূন্য। ভোজবাজির মতো সব গায়েব।
দ্রুত ধনী হওয়ার লোভে এই অ্যাপে বিনিয়োগ করা কয়েক হাজার মানুষ এখন দিশেহারা। তাঁদের বিনিয়োগের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এই অ্যাপটির নাম ‘ই-মুভি প্ল্যান’। গুগল প্লে স্টোরের এই অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত বিদেশিসহ দেশি একটি প্রতারক চক্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ই-মুভি প্ল্যানের হাজার হাজার বিনিয়োগকারী রয়েছে। বেকার তরুণ-তরুণীরাই এর বড় ইউজার (গ্রাহক)। তাঁদের মাধ্যমে কিশোর, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ এই অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলে ইউজার হয়েছিলেন। বাদ ছিলেন না সরকারি চাকরিজীবীরাও। কিছুদিন গ্রাহকেরা এই অ্যাপ থেকে টাকাও তুলেছেন। তা দেখে নতুন নতুন ইউজার লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন অ্যাপ থেকে টাকা তোলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন তাঁরা। তবে এ নিয়ে কেউ এখনো থানায় অভিযোগ করেননি।
গতকাল মঙ্গলবার গুগল প্লেতে গিয়ে দেখা যায়, ই-মুভি প্ল্যান নামে কোনো অ্যাপ নেই। তবে ই-মুভিপ্ল্যান প্লাস নামে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করা যাচ্ছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘ই-মুভির বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এটা আমাদের অথরাইজড সাইট নয়। তাই আমাদের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও নেই। তাদের বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেখবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী গ্রামের এক যুবক গত বছরের অক্টোবরে ই-মুভি প্ল্যানে প্রথমে ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। অ্যাপে দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বরে টাকা দেওয়ার পর ই-মুভি প্ল্যানের অ্যাকাউন্টে তা ডলারে রূপান্তরিত হয়। সেই ডলার দিয়ে তিনি সিনেমার টিকিট কিনতে থাকেন। অ্যাকাউন্টে থাকা ডলারের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে লভ্যাংশ। ডলারে আসা লভ্যাংশও তোলেন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। রাতারাতি বদলে যায় তাঁর অবস্থা। দামি মোটরসাইকেল কেনেন। একতলার বাড়ির ছাদ ঢালাই দিয়ে দোতলার কাজ শুরু করেন। তাঁর এমন উন্নতির কারণ জেনে ওই অ্যাপে বিনিয়োগ করেন এলাকার অসংখ্য মানুষ।
প্রেমতলীর এই যুবক জানান, সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা যেত ই-মুভি প্ল্যানে। গত সোমবার রাতেও ই-মুভি প্ল্যানে তাঁর ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৪৫ ডলার (প্রায় ২ কোটি টাকা) ছিল। গতকাল সকালে সব শূন্য। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে যারা অল্প বিনিয়োগ করেছে, তাদের টাকা উঠে গেছে। কিন্তু শেষ দিকে লোভে পড়ে যাঁরা চার-পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন, তাঁরা আসল টাকা তুলতে পারেননি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রেমতলী গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ এই অ্যাপে বিনিয়োগ করেছেন। এলাকাবাসী জানেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুহুল আমিন নয়ন বলেন, ‘অনেক ভালো ভালো মানুষ এতে টাকা ঢুকিয়েছিলেন। সবার টাকা গেছে! এখন লজ্জায় স্বীকার করছেন না। আমি ২ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট করেছিলাম।’
ভুক্তভোগীরা জানান, জেলায় জেলায় নিযুক্ত ই-মুভি প্ল্যানের এজেন্টরা এটি চীনা প্রতিষ্ঠান বলে মানুষকে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করেছেন। কেউ একটি অ্যাকাউন্ট খোলার পর কাউকে রেফার করলে ওই তথ্যও নিজের অ্যাপে দেখাত। এরপর তার নিচে যতজন ই-মুভি প্ল্যানে যুক্ত হতো, তাদের লভ্যাংশের একটা অংশও প্রথমজন পেতেন। কারও কারও নিচে ২ হাজারের বেশি ইউজার হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি অ্যাপ থেকে টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার টাকা তোলা যাবে। কিন্তু তা হয়নি।
প্রতারিত ব্যক্তিরা জানান, ঢাকার উত্তরার সাইফুল নামের এক ব্যক্তি ই-মুভি প্ল্যানের এজেন্ট। রাজশাহীর এজেন্টের নাম আজমল হুদা মানিক। নওগাঁর এজেন্ট লিজা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তোফায়েল। এই এজেন্টদের নগদ টাকা দিলে তাঁরাই অ্যাপে ডলার দিতে পারতেন।
নোয়াখালীর ভুক্তভোগী মোহাম্মদ সিজান জানান, আজিজুর রহমান নামের এজেন্টের মাধ্যমে মাসখানেক আগে ২১২ ডলার বিনিয়োগ করার পরপরই তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়। এজেন্ট আজিজুরও লাপাত্তা।
রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের জেবিডি আইটির প্রতিষ্ঠাতা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বিক্রম কুমার বলেন, ‘এভাবে ডিজিটালি প্রতারণা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক হতে হবে।’
ভুক্তভোগীরা জানান, বিদেশি প্রতারকেরা সব সময় টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত থেকে বার্তা দিতেন। ইউজারদের কাছে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করতে গত ৭ জানুয়ারি পাঁচ তারকা হোটেল ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে সারা দেশের এজেন্ট ও বড় বড় বিনিয়োগকারীকে নিয়ে সম্মেলন করা হয়। এতে চার চীনা নাগরিক এসেছিলেন। এদের তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। সেখানে নিজেদের ই-মুভির ভাইস প্রেসিডেন্ট পরিচয় দিয়ে কথা বলেছিলেন ব্রায়ান জন ও মিস্টার মাইকেল নামের দুজন। এই মাইকেল মাঝে মাঝে বিভিন্ন বার্তা নিয়ে ই-মুভি প্ল্যানের ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসতেন।
ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, সিঙ্গাপুরের একটি ব্যবসায়িক গ্রুপের পরিচয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ই-মুভি প্ল্যানের নামে তাদের একটি হল বুক করা হয়েছিল। ব্যবসায়িক নীতির কারণে রিজেন্সির ওই কর্মকর্তা এর বেশি জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
ভুক্তভোগীরা জানান, এমডি কৃষ্ণা নামের একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে ইউজারদের সঙ্গে কথা বলতেন নিজেকে ই-মুভির পরিচালক পরিচয় দেওয়া একজন। তাঁর টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টটি হংকংয়ের +৮৫২৬০৯১৭৩৯৬ নম্বর দিয়ে খোলা। এলিস নামের একজন সহকারী এবং মু লি জি নামের আরেকজন কথা বলতেন। আগামী ২৪ মার্চ রাজশাহী শহরের একটি তিন তারকা হোটেলে তাঁদের উপস্থিতিতে সম্মেলনের কথা জানানো হয়েছিল।
ই-মুভি প্ল্যানের রাজশাহীর এজেন্ট আজমল হুদা মানিকের অফিস শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শিরোইল কলোনি সাড়ে ৩ নম্বর গলির ৫১৩ নম্বর ভাড়া বাড়িতে। গতকাল সকালে ওই অফিসের অবস্থান জানতে চাইলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের কর্মী মো. তন্ময়ের প্রশ্ন, ‘অনলাইনে কাজ করে ওই মানিক? ধরা খাইছেন?’ তিনি জানান, মানিক এখানে অফিস করার পর কাউন্সিলরের কার্যালয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছিল।
মানিকের অফিসের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেটি তালাবদ্ধ। কিছুক্ষণ পর তাঁকে খুঁজতে মোটরসাইকেলে চড়ে এলেন কয়েকজন যুবক। তাঁদের একজন মোবাইলে কাউকে বলছিলেন, ‘আমাকে সাত দিন আগে পামপট্টি মেরে ই-মুভিতে ঢুকিয়ে দিল মামা! আমি ১২ হাজার টাকা দিয়েছি। আমাকে এমনভাবে মুরগি বানালো মামা!’
কথা বলে জানা গেল, ওই যুবকের নাম হিমেল। বাড়ি শহরের উপশহরে। সঙ্গে আসা ফাহিম ও রিংকুও ই-মুভিতে বিনিয়োগ করেছেন। তাই এজেন্ট মানিককে ধরতে এসেছেন। তাঁর মোবাইল নম্বরও বন্ধ। সোমবার রাতে মানিক টেলিগ্রাম গ্রুপে এক বার্তায় বলেছেন, নিজের ডলার নিয়েই তিনি বিপাকে পড়েছেন। তাঁকে যেন কেউ ফোন করে বিরক্ত না করেন।
বিষয়টি জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করে মানিকের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। ই-মুভির এই প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি হংকংয়ের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। টেলিগ্রামে বার্তা পাঠানো হলেও কেউ সাড়া দেননি।
প্রতারণার শিকার এক তরুণ জানান, ই-মুভিতে তাঁর প্রায় ২ লাখ ডলার জমা হয়েছিল। কিন্তু টাকা ওঠানো যাচ্ছিল না দেখে তিনি কাস্টমার সার্ভিসের গ্রুপে যোগাযোগ করেন। গ্রুপটি পরিচালনা করা হতো হংকংয়ের +৮৫২৬৭৩৫৭৬২১ নম্বর থেকে। কিন্তু উত্তর মেলেনি। পরে মু লি জি নামের টেলিগ্রাম আইডি থেকে জানানো হয়, তাঁর ই-মুভিতে যত ডলার আছে তার ৩০ শতাংশ ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে ডিপোজিট করলে তিনি তাঁর সব ডলার ভাঙাতে পারবেন। নির্ধারিত সময়ে ডিপোজিট না করলে বাংলাদেশ সরকার সব ডলার বাজেয়াপ্ত করবে।
জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এস এ এম রফিকুন্নবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ই-মুভি প্ল্যান নামে কোনো অ্যাপের কথা আমাদের জানা নেই। কিসের কে ডলার বাজেয়াপ্ত করবে? এটা পুরোপুরি প্রতারণার ফাঁদ।’
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সব ভাঁওতাবাজি। প্রতারিত কেউ অভিযোগ করলে এখানকার এজেন্টদের খুঁজে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল) মুহাম্মদ সাঈদ আলী বলেন, ‘আমরা ই-মুভি প্ল্যানের নামে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বা যে অভিযোগ উঠছে সেগুলোর সত্যতা পেলে বিটিআরসিকে সাইটটি বন্ধ করতে বলব।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা অভিযুক্ত ৩৩১টি ওয়েবসাইট বন্ধ করিয়েছি। আরও ৬৯টি ওয়েবসাইটের নাম গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে।’
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, ‘ই-কমার্সের নামে এ ধরনের ব্যবসা করা হলে আমরা সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান না হলে কিছু করার এখতিয়ার আসলে আমাদের নেই।’
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বলেন, ‘আমরা নিজেরা কোনো সাইট বন্ধ করি না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অথবা কোনো সংস্থা আমাদের কাছে সুপারিশ করলে আমরা সেটা বন্ধ করতে পারি। ই-মুভি প্ল্যান বন্ধের বিষয়ে যদি কোনো সুপারিশ আসে, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
রিমন রহমান, রাজশাহী ও অর্চি হক, ঢাকা

অ্যাপে গ্রাহক হয়ে বিদেশি সিনেমার টিকিট কিনে রাখলেই লভ্যাংশ। যত টিকিট তত লাভ। টাকায় নয়, বিনিয়োগ-লাভের সব হিসাব মার্কিন ডলারে। অ্যাপে জমা রাখা ডলার লাভ-আসলে এক মাসেই বেড়ে দ্বিগুণ থেকে ৩৬০ গুণ পর্যন্ত হচ্ছিল। এভাবে অ্যাপে কেউ লাখ, কেউবা হাজার হাজার ডলারের মালিক বনে গিয়েছিলেন। রাতে নিজেকে বড়লোক দেখে ঘুমালেও সকালে উঠে সবার চোখ ছানাবড়া। কারণ, হিসাবের খাতা শূন্য। ভোজবাজির মতো সব গায়েব।
দ্রুত ধনী হওয়ার লোভে এই অ্যাপে বিনিয়োগ করা কয়েক হাজার মানুষ এখন দিশেহারা। তাঁদের বিনিয়োগের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এই অ্যাপটির নাম ‘ই-মুভি প্ল্যান’। গুগল প্লে স্টোরের এই অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত বিদেশিসহ দেশি একটি প্রতারক চক্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ই-মুভি প্ল্যানের হাজার হাজার বিনিয়োগকারী রয়েছে। বেকার তরুণ-তরুণীরাই এর বড় ইউজার (গ্রাহক)। তাঁদের মাধ্যমে কিশোর, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ এই অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলে ইউজার হয়েছিলেন। বাদ ছিলেন না সরকারি চাকরিজীবীরাও। কিছুদিন গ্রাহকেরা এই অ্যাপ থেকে টাকাও তুলেছেন। তা দেখে নতুন নতুন ইউজার লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন অ্যাপ থেকে টাকা তোলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন তাঁরা। তবে এ নিয়ে কেউ এখনো থানায় অভিযোগ করেননি।
গতকাল মঙ্গলবার গুগল প্লেতে গিয়ে দেখা যায়, ই-মুভি প্ল্যান নামে কোনো অ্যাপ নেই। তবে ই-মুভিপ্ল্যান প্লাস নামে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করা যাচ্ছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘ই-মুভির বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এটা আমাদের অথরাইজড সাইট নয়। তাই আমাদের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও নেই। তাদের বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেখবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী গ্রামের এক যুবক গত বছরের অক্টোবরে ই-মুভি প্ল্যানে প্রথমে ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। অ্যাপে দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বরে টাকা দেওয়ার পর ই-মুভি প্ল্যানের অ্যাকাউন্টে তা ডলারে রূপান্তরিত হয়। সেই ডলার দিয়ে তিনি সিনেমার টিকিট কিনতে থাকেন। অ্যাকাউন্টে থাকা ডলারের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে লভ্যাংশ। ডলারে আসা লভ্যাংশও তোলেন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। রাতারাতি বদলে যায় তাঁর অবস্থা। দামি মোটরসাইকেল কেনেন। একতলার বাড়ির ছাদ ঢালাই দিয়ে দোতলার কাজ শুরু করেন। তাঁর এমন উন্নতির কারণ জেনে ওই অ্যাপে বিনিয়োগ করেন এলাকার অসংখ্য মানুষ।
প্রেমতলীর এই যুবক জানান, সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা যেত ই-মুভি প্ল্যানে। গত সোমবার রাতেও ই-মুভি প্ল্যানে তাঁর ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৪৫ ডলার (প্রায় ২ কোটি টাকা) ছিল। গতকাল সকালে সব শূন্য। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে যারা অল্প বিনিয়োগ করেছে, তাদের টাকা উঠে গেছে। কিন্তু শেষ দিকে লোভে পড়ে যাঁরা চার-পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন, তাঁরা আসল টাকা তুলতে পারেননি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রেমতলী গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ এই অ্যাপে বিনিয়োগ করেছেন। এলাকাবাসী জানেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুহুল আমিন নয়ন বলেন, ‘অনেক ভালো ভালো মানুষ এতে টাকা ঢুকিয়েছিলেন। সবার টাকা গেছে! এখন লজ্জায় স্বীকার করছেন না। আমি ২ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট করেছিলাম।’
ভুক্তভোগীরা জানান, জেলায় জেলায় নিযুক্ত ই-মুভি প্ল্যানের এজেন্টরা এটি চীনা প্রতিষ্ঠান বলে মানুষকে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করেছেন। কেউ একটি অ্যাকাউন্ট খোলার পর কাউকে রেফার করলে ওই তথ্যও নিজের অ্যাপে দেখাত। এরপর তার নিচে যতজন ই-মুভি প্ল্যানে যুক্ত হতো, তাদের লভ্যাংশের একটা অংশও প্রথমজন পেতেন। কারও কারও নিচে ২ হাজারের বেশি ইউজার হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি অ্যাপ থেকে টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার টাকা তোলা যাবে। কিন্তু তা হয়নি।
প্রতারিত ব্যক্তিরা জানান, ঢাকার উত্তরার সাইফুল নামের এক ব্যক্তি ই-মুভি প্ল্যানের এজেন্ট। রাজশাহীর এজেন্টের নাম আজমল হুদা মানিক। নওগাঁর এজেন্ট লিজা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তোফায়েল। এই এজেন্টদের নগদ টাকা দিলে তাঁরাই অ্যাপে ডলার দিতে পারতেন।
নোয়াখালীর ভুক্তভোগী মোহাম্মদ সিজান জানান, আজিজুর রহমান নামের এজেন্টের মাধ্যমে মাসখানেক আগে ২১২ ডলার বিনিয়োগ করার পরপরই তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়। এজেন্ট আজিজুরও লাপাত্তা।
রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের জেবিডি আইটির প্রতিষ্ঠাতা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বিক্রম কুমার বলেন, ‘এভাবে ডিজিটালি প্রতারণা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক হতে হবে।’
ভুক্তভোগীরা জানান, বিদেশি প্রতারকেরা সব সময় টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত থেকে বার্তা দিতেন। ইউজারদের কাছে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করতে গত ৭ জানুয়ারি পাঁচ তারকা হোটেল ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে সারা দেশের এজেন্ট ও বড় বড় বিনিয়োগকারীকে নিয়ে সম্মেলন করা হয়। এতে চার চীনা নাগরিক এসেছিলেন। এদের তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। সেখানে নিজেদের ই-মুভির ভাইস প্রেসিডেন্ট পরিচয় দিয়ে কথা বলেছিলেন ব্রায়ান জন ও মিস্টার মাইকেল নামের দুজন। এই মাইকেল মাঝে মাঝে বিভিন্ন বার্তা নিয়ে ই-মুভি প্ল্যানের ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসতেন।
ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, সিঙ্গাপুরের একটি ব্যবসায়িক গ্রুপের পরিচয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ই-মুভি প্ল্যানের নামে তাদের একটি হল বুক করা হয়েছিল। ব্যবসায়িক নীতির কারণে রিজেন্সির ওই কর্মকর্তা এর বেশি জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
ভুক্তভোগীরা জানান, এমডি কৃষ্ণা নামের একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে ইউজারদের সঙ্গে কথা বলতেন নিজেকে ই-মুভির পরিচালক পরিচয় দেওয়া একজন। তাঁর টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টটি হংকংয়ের +৮৫২৬০৯১৭৩৯৬ নম্বর দিয়ে খোলা। এলিস নামের একজন সহকারী এবং মু লি জি নামের আরেকজন কথা বলতেন। আগামী ২৪ মার্চ রাজশাহী শহরের একটি তিন তারকা হোটেলে তাঁদের উপস্থিতিতে সম্মেলনের কথা জানানো হয়েছিল।
ই-মুভি প্ল্যানের রাজশাহীর এজেন্ট আজমল হুদা মানিকের অফিস শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শিরোইল কলোনি সাড়ে ৩ নম্বর গলির ৫১৩ নম্বর ভাড়া বাড়িতে। গতকাল সকালে ওই অফিসের অবস্থান জানতে চাইলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের কর্মী মো. তন্ময়ের প্রশ্ন, ‘অনলাইনে কাজ করে ওই মানিক? ধরা খাইছেন?’ তিনি জানান, মানিক এখানে অফিস করার পর কাউন্সিলরের কার্যালয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছিল।
মানিকের অফিসের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেটি তালাবদ্ধ। কিছুক্ষণ পর তাঁকে খুঁজতে মোটরসাইকেলে চড়ে এলেন কয়েকজন যুবক। তাঁদের একজন মোবাইলে কাউকে বলছিলেন, ‘আমাকে সাত দিন আগে পামপট্টি মেরে ই-মুভিতে ঢুকিয়ে দিল মামা! আমি ১২ হাজার টাকা দিয়েছি। আমাকে এমনভাবে মুরগি বানালো মামা!’
কথা বলে জানা গেল, ওই যুবকের নাম হিমেল। বাড়ি শহরের উপশহরে। সঙ্গে আসা ফাহিম ও রিংকুও ই-মুভিতে বিনিয়োগ করেছেন। তাই এজেন্ট মানিককে ধরতে এসেছেন। তাঁর মোবাইল নম্বরও বন্ধ। সোমবার রাতে মানিক টেলিগ্রাম গ্রুপে এক বার্তায় বলেছেন, নিজের ডলার নিয়েই তিনি বিপাকে পড়েছেন। তাঁকে যেন কেউ ফোন করে বিরক্ত না করেন।
বিষয়টি জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করে মানিকের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। ই-মুভির এই প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি হংকংয়ের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। টেলিগ্রামে বার্তা পাঠানো হলেও কেউ সাড়া দেননি।
প্রতারণার শিকার এক তরুণ জানান, ই-মুভিতে তাঁর প্রায় ২ লাখ ডলার জমা হয়েছিল। কিন্তু টাকা ওঠানো যাচ্ছিল না দেখে তিনি কাস্টমার সার্ভিসের গ্রুপে যোগাযোগ করেন। গ্রুপটি পরিচালনা করা হতো হংকংয়ের +৮৫২৬৭৩৫৭৬২১ নম্বর থেকে। কিন্তু উত্তর মেলেনি। পরে মু লি জি নামের টেলিগ্রাম আইডি থেকে জানানো হয়, তাঁর ই-মুভিতে যত ডলার আছে তার ৩০ শতাংশ ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে ডিপোজিট করলে তিনি তাঁর সব ডলার ভাঙাতে পারবেন। নির্ধারিত সময়ে ডিপোজিট না করলে বাংলাদেশ সরকার সব ডলার বাজেয়াপ্ত করবে।
জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এস এ এম রফিকুন্নবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ই-মুভি প্ল্যান নামে কোনো অ্যাপের কথা আমাদের জানা নেই। কিসের কে ডলার বাজেয়াপ্ত করবে? এটা পুরোপুরি প্রতারণার ফাঁদ।’
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সব ভাঁওতাবাজি। প্রতারিত কেউ অভিযোগ করলে এখানকার এজেন্টদের খুঁজে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল) মুহাম্মদ সাঈদ আলী বলেন, ‘আমরা ই-মুভি প্ল্যানের নামে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বা যে অভিযোগ উঠছে সেগুলোর সত্যতা পেলে বিটিআরসিকে সাইটটি বন্ধ করতে বলব।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা অভিযুক্ত ৩৩১টি ওয়েবসাইট বন্ধ করিয়েছি। আরও ৬৯টি ওয়েবসাইটের নাম গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে।’
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, ‘ই-কমার্সের নামে এ ধরনের ব্যবসা করা হলে আমরা সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান না হলে কিছু করার এখতিয়ার আসলে আমাদের নেই।’
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বলেন, ‘আমরা নিজেরা কোনো সাইট বন্ধ করি না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অথবা কোনো সংস্থা আমাদের কাছে সুপারিশ করলে আমরা সেটা বন্ধ করতে পারি। ই-মুভি প্ল্যান বন্ধের বিষয়ে যদি কোনো সুপারিশ আসে, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

অ্যাপে গ্রাহক হয়ে বিদেশি সিনেমার টিকিট কিনে রাখলেই লভ্যাংশ। যত টিকিট তত লাভ। টাকায় নয়, বিনিয়োগ-লাভের সব হিসাব মার্কিন ডলারে। অ্যাপে জমা রাখা ডলার লাভ-আসলে এক মাসেই বেড়ে দ্বিগুণ থেকে ৩৬০ গুণ পর্যন্ত হচ্ছিল। এভাবে অ্যাপে কেউ লাখ, কেউবা হাজার হাজার ডলারের মালিক বনে গিয়েছিলেন। রাতে নিজেকে বড়লোক দেখে ঘুমালেও সকালে উঠে সবার চোখ ছানাবড়া। কারণ, হিসাবের খাতা শূন্য। ভোজবাজির মতো সব গায়েব।
দ্রুত ধনী হওয়ার লোভে এই অ্যাপে বিনিয়োগ করা কয়েক হাজার মানুষ এখন দিশেহারা। তাঁদের বিনিয়োগের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এই অ্যাপটির নাম ‘ই-মুভি প্ল্যান’। গুগল প্লে স্টোরের এই অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত বিদেশিসহ দেশি একটি প্রতারক চক্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ই-মুভি প্ল্যানের হাজার হাজার বিনিয়োগকারী রয়েছে। বেকার তরুণ-তরুণীরাই এর বড় ইউজার (গ্রাহক)। তাঁদের মাধ্যমে কিশোর, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ এই অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলে ইউজার হয়েছিলেন। বাদ ছিলেন না সরকারি চাকরিজীবীরাও। কিছুদিন গ্রাহকেরা এই অ্যাপ থেকে টাকাও তুলেছেন। তা দেখে নতুন নতুন ইউজার লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন অ্যাপ থেকে টাকা তোলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন তাঁরা। তবে এ নিয়ে কেউ এখনো থানায় অভিযোগ করেননি।
গতকাল মঙ্গলবার গুগল প্লেতে গিয়ে দেখা যায়, ই-মুভি প্ল্যান নামে কোনো অ্যাপ নেই। তবে ই-মুভিপ্ল্যান প্লাস নামে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করা যাচ্ছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘ই-মুভির বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এটা আমাদের অথরাইজড সাইট নয়। তাই আমাদের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও নেই। তাদের বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেখবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী গ্রামের এক যুবক গত বছরের অক্টোবরে ই-মুভি প্ল্যানে প্রথমে ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। অ্যাপে দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বরে টাকা দেওয়ার পর ই-মুভি প্ল্যানের অ্যাকাউন্টে তা ডলারে রূপান্তরিত হয়। সেই ডলার দিয়ে তিনি সিনেমার টিকিট কিনতে থাকেন। অ্যাকাউন্টে থাকা ডলারের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে লভ্যাংশ। ডলারে আসা লভ্যাংশও তোলেন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। রাতারাতি বদলে যায় তাঁর অবস্থা। দামি মোটরসাইকেল কেনেন। একতলার বাড়ির ছাদ ঢালাই দিয়ে দোতলার কাজ শুরু করেন। তাঁর এমন উন্নতির কারণ জেনে ওই অ্যাপে বিনিয়োগ করেন এলাকার অসংখ্য মানুষ।
প্রেমতলীর এই যুবক জানান, সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা যেত ই-মুভি প্ল্যানে। গত সোমবার রাতেও ই-মুভি প্ল্যানে তাঁর ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৪৫ ডলার (প্রায় ২ কোটি টাকা) ছিল। গতকাল সকালে সব শূন্য। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে যারা অল্প বিনিয়োগ করেছে, তাদের টাকা উঠে গেছে। কিন্তু শেষ দিকে লোভে পড়ে যাঁরা চার-পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন, তাঁরা আসল টাকা তুলতে পারেননি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রেমতলী গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ এই অ্যাপে বিনিয়োগ করেছেন। এলাকাবাসী জানেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুহুল আমিন নয়ন বলেন, ‘অনেক ভালো ভালো মানুষ এতে টাকা ঢুকিয়েছিলেন। সবার টাকা গেছে! এখন লজ্জায় স্বীকার করছেন না। আমি ২ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট করেছিলাম।’
ভুক্তভোগীরা জানান, জেলায় জেলায় নিযুক্ত ই-মুভি প্ল্যানের এজেন্টরা এটি চীনা প্রতিষ্ঠান বলে মানুষকে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করেছেন। কেউ একটি অ্যাকাউন্ট খোলার পর কাউকে রেফার করলে ওই তথ্যও নিজের অ্যাপে দেখাত। এরপর তার নিচে যতজন ই-মুভি প্ল্যানে যুক্ত হতো, তাদের লভ্যাংশের একটা অংশও প্রথমজন পেতেন। কারও কারও নিচে ২ হাজারের বেশি ইউজার হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি অ্যাপ থেকে টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার টাকা তোলা যাবে। কিন্তু তা হয়নি।
প্রতারিত ব্যক্তিরা জানান, ঢাকার উত্তরার সাইফুল নামের এক ব্যক্তি ই-মুভি প্ল্যানের এজেন্ট। রাজশাহীর এজেন্টের নাম আজমল হুদা মানিক। নওগাঁর এজেন্ট লিজা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তোফায়েল। এই এজেন্টদের নগদ টাকা দিলে তাঁরাই অ্যাপে ডলার দিতে পারতেন।
নোয়াখালীর ভুক্তভোগী মোহাম্মদ সিজান জানান, আজিজুর রহমান নামের এজেন্টের মাধ্যমে মাসখানেক আগে ২১২ ডলার বিনিয়োগ করার পরপরই তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়। এজেন্ট আজিজুরও লাপাত্তা।
রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের জেবিডি আইটির প্রতিষ্ঠাতা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বিক্রম কুমার বলেন, ‘এভাবে ডিজিটালি প্রতারণা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক হতে হবে।’
ভুক্তভোগীরা জানান, বিদেশি প্রতারকেরা সব সময় টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত থেকে বার্তা দিতেন। ইউজারদের কাছে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করতে গত ৭ জানুয়ারি পাঁচ তারকা হোটেল ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে সারা দেশের এজেন্ট ও বড় বড় বিনিয়োগকারীকে নিয়ে সম্মেলন করা হয়। এতে চার চীনা নাগরিক এসেছিলেন। এদের তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। সেখানে নিজেদের ই-মুভির ভাইস প্রেসিডেন্ট পরিচয় দিয়ে কথা বলেছিলেন ব্রায়ান জন ও মিস্টার মাইকেল নামের দুজন। এই মাইকেল মাঝে মাঝে বিভিন্ন বার্তা নিয়ে ই-মুভি প্ল্যানের ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসতেন।
ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, সিঙ্গাপুরের একটি ব্যবসায়িক গ্রুপের পরিচয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ই-মুভি প্ল্যানের নামে তাদের একটি হল বুক করা হয়েছিল। ব্যবসায়িক নীতির কারণে রিজেন্সির ওই কর্মকর্তা এর বেশি জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
ভুক্তভোগীরা জানান, এমডি কৃষ্ণা নামের একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে ইউজারদের সঙ্গে কথা বলতেন নিজেকে ই-মুভির পরিচালক পরিচয় দেওয়া একজন। তাঁর টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টটি হংকংয়ের +৮৫২৬০৯১৭৩৯৬ নম্বর দিয়ে খোলা। এলিস নামের একজন সহকারী এবং মু লি জি নামের আরেকজন কথা বলতেন। আগামী ২৪ মার্চ রাজশাহী শহরের একটি তিন তারকা হোটেলে তাঁদের উপস্থিতিতে সম্মেলনের কথা জানানো হয়েছিল।
ই-মুভি প্ল্যানের রাজশাহীর এজেন্ট আজমল হুদা মানিকের অফিস শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শিরোইল কলোনি সাড়ে ৩ নম্বর গলির ৫১৩ নম্বর ভাড়া বাড়িতে। গতকাল সকালে ওই অফিসের অবস্থান জানতে চাইলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের কর্মী মো. তন্ময়ের প্রশ্ন, ‘অনলাইনে কাজ করে ওই মানিক? ধরা খাইছেন?’ তিনি জানান, মানিক এখানে অফিস করার পর কাউন্সিলরের কার্যালয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছিল।
মানিকের অফিসের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেটি তালাবদ্ধ। কিছুক্ষণ পর তাঁকে খুঁজতে মোটরসাইকেলে চড়ে এলেন কয়েকজন যুবক। তাঁদের একজন মোবাইলে কাউকে বলছিলেন, ‘আমাকে সাত দিন আগে পামপট্টি মেরে ই-মুভিতে ঢুকিয়ে দিল মামা! আমি ১২ হাজার টাকা দিয়েছি। আমাকে এমনভাবে মুরগি বানালো মামা!’
কথা বলে জানা গেল, ওই যুবকের নাম হিমেল। বাড়ি শহরের উপশহরে। সঙ্গে আসা ফাহিম ও রিংকুও ই-মুভিতে বিনিয়োগ করেছেন। তাই এজেন্ট মানিককে ধরতে এসেছেন। তাঁর মোবাইল নম্বরও বন্ধ। সোমবার রাতে মানিক টেলিগ্রাম গ্রুপে এক বার্তায় বলেছেন, নিজের ডলার নিয়েই তিনি বিপাকে পড়েছেন। তাঁকে যেন কেউ ফোন করে বিরক্ত না করেন।
বিষয়টি জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করে মানিকের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। ই-মুভির এই প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি হংকংয়ের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। টেলিগ্রামে বার্তা পাঠানো হলেও কেউ সাড়া দেননি।
প্রতারণার শিকার এক তরুণ জানান, ই-মুভিতে তাঁর প্রায় ২ লাখ ডলার জমা হয়েছিল। কিন্তু টাকা ওঠানো যাচ্ছিল না দেখে তিনি কাস্টমার সার্ভিসের গ্রুপে যোগাযোগ করেন। গ্রুপটি পরিচালনা করা হতো হংকংয়ের +৮৫২৬৭৩৫৭৬২১ নম্বর থেকে। কিন্তু উত্তর মেলেনি। পরে মু লি জি নামের টেলিগ্রাম আইডি থেকে জানানো হয়, তাঁর ই-মুভিতে যত ডলার আছে তার ৩০ শতাংশ ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে ডিপোজিট করলে তিনি তাঁর সব ডলার ভাঙাতে পারবেন। নির্ধারিত সময়ে ডিপোজিট না করলে বাংলাদেশ সরকার সব ডলার বাজেয়াপ্ত করবে।
জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এস এ এম রফিকুন্নবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ই-মুভি প্ল্যান নামে কোনো অ্যাপের কথা আমাদের জানা নেই। কিসের কে ডলার বাজেয়াপ্ত করবে? এটা পুরোপুরি প্রতারণার ফাঁদ।’
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সব ভাঁওতাবাজি। প্রতারিত কেউ অভিযোগ করলে এখানকার এজেন্টদের খুঁজে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল) মুহাম্মদ সাঈদ আলী বলেন, ‘আমরা ই-মুভি প্ল্যানের নামে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বা যে অভিযোগ উঠছে সেগুলোর সত্যতা পেলে বিটিআরসিকে সাইটটি বন্ধ করতে বলব।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা অভিযুক্ত ৩৩১টি ওয়েবসাইট বন্ধ করিয়েছি। আরও ৬৯টি ওয়েবসাইটের নাম গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে।’
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, ‘ই-কমার্সের নামে এ ধরনের ব্যবসা করা হলে আমরা সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান না হলে কিছু করার এখতিয়ার আসলে আমাদের নেই।’
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বলেন, ‘আমরা নিজেরা কোনো সাইট বন্ধ করি না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অথবা কোনো সংস্থা আমাদের কাছে সুপারিশ করলে আমরা সেটা বন্ধ করতে পারি। ই-মুভি প্ল্যান বন্ধের বিষয়ে যদি কোনো সুপারিশ আসে, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

অ্যাপে গ্রাহক হয়ে বিদেশি সিনেমার টিকিট কিনে রাখলেই লভ্যাংশ। যত টিকিট তত লাভ। টাকায় নয়, বিনিয়োগ-লাভের সব হিসাব মার্কিন ডলারে। অ্যাপে জমা রাখা ডলার লাভ-আসলে এক মাসেই বেড়ে দ্বিগুণ থেকে ৩৬০ গুণ পর্যন্ত হচ্ছিল। এভাবে অ্যাপে কেউ লাখ, কেউবা হাজার হাজার ডলারের
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

অ্যাপে গ্রাহক হয়ে বিদেশি সিনেমার টিকিট কিনে রাখলেই লভ্যাংশ। যত টিকিট তত লাভ। টাকায় নয়, বিনিয়োগ-লাভের সব হিসাব মার্কিন ডলারে। অ্যাপে জমা রাখা ডলার লাভ-আসলে এক মাসেই বেড়ে দ্বিগুণ থেকে ৩৬০ গুণ পর্যন্ত হচ্ছিল। এভাবে অ্যাপে কেউ লাখ, কেউবা হাজার হাজার ডলারের
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অ্যাপে গ্রাহক হয়ে বিদেশি সিনেমার টিকিট কিনে রাখলেই লভ্যাংশ। যত টিকিট তত লাভ। টাকায় নয়, বিনিয়োগ-লাভের সব হিসাব মার্কিন ডলারে। অ্যাপে জমা রাখা ডলার লাভ-আসলে এক মাসেই বেড়ে দ্বিগুণ থেকে ৩৬০ গুণ পর্যন্ত হচ্ছিল। এভাবে অ্যাপে কেউ লাখ, কেউবা হাজার হাজার ডলারের
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অ্যাপে গ্রাহক হয়ে বিদেশি সিনেমার টিকিট কিনে রাখলেই লভ্যাংশ। যত টিকিট তত লাভ। টাকায় নয়, বিনিয়োগ-লাভের সব হিসাব মার্কিন ডলারে। অ্যাপে জমা রাখা ডলার লাভ-আসলে এক মাসেই বেড়ে দ্বিগুণ থেকে ৩৬০ গুণ পর্যন্ত হচ্ছিল। এভাবে অ্যাপে কেউ লাখ, কেউবা হাজার হাজার ডলারের
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে