সুতপা বেদজ্ঞ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা এবং ডিজিটাল নানা অপরাধ রুখতে সরকার ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করে। বর্তমানে এই আইনের সামান্য পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষাসংক্রান্ত অংশ নিয়েই আলোচনাটি সীমাবদ্ধ রাখতে চাই।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রথম অধ্যায়ের ২ ধারায় বিভিন্ন শব্দের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই ধারার ‘প’-এ বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থ যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ।’ একই আইনের ২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার দণ্ড বিষয়ে বলা হয়েছে।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ প্রসঙ্গ নিয়ে বিতর্ক শেষ হয়নি। বলা যায়, বিতর্কটিকে জিইয়ে রাখা হয়েছে। একদিকে স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্র সক্রিয় রয়েছে। যেসব মহান চেতনা বা আদর্শের ওপর দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, সেই সব চেতনার কথা দশকের পর দশক জাতির সামনে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্মের কাছ থেকে সব সময় মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস কৌশলে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা অব্যাহত আছে। অন্যদিকে চেতনা রক্ষার্থে আইন তৈরি করা হচ্ছে।
‘চেতনা’ একটি বিমূর্ত শব্দ। চেতনা শব্দটি এমন এক অবস্থাকে প্রকাশ করে, যা একজন মানুষকে এমন অনুভূতিশীল করে, যার ফলে সে নিজের সত্তা ও আশপাশের পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক অনুধাবন করার ক্ষমতা অর্জন করে। বুদ্ধিবৃত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক, মানবিক চর্চা ছাড়া চেতনা জাগ্রত হয় না। ‘চেতনা মানুষের সচেতন অস্তিত্ব ছাড়া আর কিছু নয়। আর এই অস্তিত্বই মানুষের জীবনের সঠিক প্রক্রিয়া।
বাস্তবতাবিহীন কোনো চেতনা তৈরি হয় না।’ ‘মানুষের চৈতন্যের কাজই হলো সমাজজীবনের প্রকৃত অবস্থা জানা এবং সেই অবস্থাকে মানুষের স্বার্থে পরিবর্তিত করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় খুঁজে বের করা।’
আমরা জানি চেতনা সব সময় কতগুলো আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এবং এই সব আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্যে চেতনা বেঁচে থাকে।সংক্ষেপে দেখার চেষ্টা করি, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনে কীভাবে বেঁচে আছে।
যখন কোনো জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাষাগত, সাংস্কৃতিক ও জীবনধারণগত ঐক্য দেখা দেয়, তখন তাদের মধ্যে জাতীয়তাবোধের সৃষ্টি হয়। জাতীয়তাবাদ একটি মানসিক চেতনা। আমাদের সংবিধানে উল্লিখিত জাতীয়তাবাদকে ক্ষমতাসীনেরা ধর্মীয় ভিত্তিতে রূপ দিয়েছে; যা কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে না।
ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে রাষ্ট্র আর ধর্মকে পৃথকরূপে প্রকাশ করাকে বোঝায়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আইন কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ওপর নির্ভরশীল থাকে না। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই মতবাদ অনুযায়ী সরকার কোনোরূপ ধর্মীয় হস্তক্ষেপ করবে না, কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী হবে না এবং কোনো ধর্মকে কোনো ধরনের অতিরিক্ত সুবিধা দেবে না।
প্রতিটি ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। রাজনৈতিক ব্যবহারের দিক থেকে বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষবাদ হলো ধর্ম ও রাষ্ট্রকে পৃথক করার আন্দোলন, যাতে ধর্মভিত্তিক আইনের বদলে সাধারণ আইন জারি এবং সব ধরনের ভেদাভেদমুক্ত সমাজ গড়ার আহ্বান থাকে।
বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ (অনুচ্ছেদ-১২) অনুসারে, সব ধরনের সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। এ ক্ষেত্রে বাস্তবতা হচ্ছে, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্র ধর্ম একই সঙ্গে বহাল রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সব কাজে ধর্মের ব্যবহার করা হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে সম্পত্তির উত্তরাধিকার আইনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় আইন বহাল রয়েছে।
সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে গণতন্ত্র বলতে এমন একটি ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, যেখানে বাক্স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ভোটের স্বাধীনতাসহ মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি-ডেম ইনস্টিটিউটের ২০২২ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদার গণতান্ত্রিক সূচকে ১৭৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম।
‘নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচকে’ বাংলাদেশের অবস্থান ১৩১তম। দেশে বর্তমানে রাতের ভোট, বিরোধী মত দমন, নির্যাতন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে রুদ্ধ করা হয়েছে। এ অবস্থা সংবিধানে বর্ণিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে মেলে কি?
মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি আদর্শ সমাজতন্ত্র। ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুসারে সমাজতন্ত্র বলতে শোষণমুক্ত ন্যায়ানুগ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ-১০), অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ জনগণের মৌলিক চাহিদা মেটানো (অনুচ্ছেদ-১৫), জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য দূর করা (অনুচ্ছেদ-১৬), অনুপার্জিত (দুর্নীতি বা অনিয়মের মাধ্যমে) আয় ভোগ করার অবসান ঘটানো (অনুচ্ছেদ-২০) ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতার ঘোষণায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা করিবে, যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে।’
বর্তমানে দেশে জীবনমানের ক্রমাগত বৈষম্য, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া, সরকারি কলকারখানা ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেওয়া, লোকসান দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া, সরকারি চিকিৎসকদের হাসপাতালেই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুবিধা দেওয়া, বহুমুখী
শিক্ষাকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া, প্রাইভেট ও কোচিংয়ের সুবিধার্থে স্কুল-কলেজমুখী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে ধ্বংস করে ফেলা এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণে উৎসাহ দেওয়া—এসব কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ?
বর্তমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, চেতনা সুরক্ষার নামে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকারকে আইন দ্বারা আটকে দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, মতপ্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রশ্নে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পৃথিবীর কঠোরতম আইনগুলোর মধ্যে একটি।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যত মামলা হয়েছে তার ৮৫ শতাংশের বাদী সরকারদলীয় নেতা-কর্মী। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে এই আইনে ৭ হাজার ১টি মামলা হয়েছে। তথ্য ও মতপ্রকাশের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘আর্টিকেল নাইনটিন’ বলেছে, গত চার বছরে ভিন্নমত ও সরকারের সমালোচনা দমনে এই আইনের নজিরবিহীন অপপ্রয়োগ হয়েছে।
বিভিন্ন মামলায় তিন বছরে ৫৩ জন সাংবাদিককে জেলে যেতে হয়েছে। ওই সংগঠনের দক্ষিণ এশীয় পরিচালকের মতে, ‘ভয়ের পরিবেশ তৈরির জন্যই আইনটা করা হয়েছিল গত নির্বাচনের আগে।’ ফলে সাংবাদিকসহ মুক্তচিন্তার লেখক এবং সামাজিক মাধ্যমে যাঁরা যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব, তাঁরা নিজেদের ওপর ‘সেলফ সেন্সরশিপ’ আরোপ করেছেন। একটা লাইন এমনকি একটা শব্দ লিখতে গেলেও দশবার ভাবতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় সম্পাদক পরিষদ ও জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সচেতন ব্যক্তি ও সংগঠন যৌক্তিকতা দেখিয়ে আইনটি পুরোপুরি বাতিলের দাবি করছিল। দেশে বর্তমান সময়ে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে আরও কিছু বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অজামিনযোগ্য ধারা ছিল ১৪টি, প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে জামিনযোগ্য ধারা ৮টি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে বাধা হওয়ায় প্রস্তাবিত আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে এবং দুটি ধারায় কোনো পরিবর্তনই আনা হয়নি। নতুন আইনেও আগের মতো অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন আইনে কেবল নামেই পরিবর্তন আসছে, গুণগত কোনো পরিবর্তন এতে নেই। সাজা কমানো কিংবা বাড়ানো কিংবা সাজার মাত্রা পরিবর্তনের ঘটনায় নাগরিকদের অধিকার বা সুরক্ষা হবে না। ‘নতুন আইনেও লেখার কারণে অপরাধ করার যে ভয়, সেই ভয় বিন্দুমাত্র বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। মানহানি,
চেতনায় আঘাত, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া, এগুলোর জন্য শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশে কোনো আইন নেই।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়নি, পরিবর্তন করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা এক বছর ধরে জেল খাটছেন, আরও অনেকে জেলে রয়েছেন অথবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
যেহেতু আইনটি বাতিল হচ্ছে না, ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নব সংস্করণ সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩-এর কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে চেতনা রক্ষার নামে রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের এই আইনের পিঠে সওয়ার হয়ে আরও অনেক নিরপরাধ নাগরিককে ঝুঁকিতে ফেলার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বাস্তবে চেতনা সুরক্ষার জন্য কোনো আইন হতে পারে না।
লেখক: কলামিস্ট ও নারী আন্দোলনের নেত্রী

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা এবং ডিজিটাল নানা অপরাধ রুখতে সরকার ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করে। বর্তমানে এই আইনের সামান্য পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষাসংক্রান্ত অংশ নিয়েই আলোচনাটি সীমাবদ্ধ রাখতে চাই।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রথম অধ্যায়ের ২ ধারায় বিভিন্ন শব্দের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই ধারার ‘প’-এ বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থ যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ।’ একই আইনের ২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার দণ্ড বিষয়ে বলা হয়েছে।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ প্রসঙ্গ নিয়ে বিতর্ক শেষ হয়নি। বলা যায়, বিতর্কটিকে জিইয়ে রাখা হয়েছে। একদিকে স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্র সক্রিয় রয়েছে। যেসব মহান চেতনা বা আদর্শের ওপর দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, সেই সব চেতনার কথা দশকের পর দশক জাতির সামনে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্মের কাছ থেকে সব সময় মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস কৌশলে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা অব্যাহত আছে। অন্যদিকে চেতনা রক্ষার্থে আইন তৈরি করা হচ্ছে।
‘চেতনা’ একটি বিমূর্ত শব্দ। চেতনা শব্দটি এমন এক অবস্থাকে প্রকাশ করে, যা একজন মানুষকে এমন অনুভূতিশীল করে, যার ফলে সে নিজের সত্তা ও আশপাশের পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক অনুধাবন করার ক্ষমতা অর্জন করে। বুদ্ধিবৃত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক, মানবিক চর্চা ছাড়া চেতনা জাগ্রত হয় না। ‘চেতনা মানুষের সচেতন অস্তিত্ব ছাড়া আর কিছু নয়। আর এই অস্তিত্বই মানুষের জীবনের সঠিক প্রক্রিয়া।
বাস্তবতাবিহীন কোনো চেতনা তৈরি হয় না।’ ‘মানুষের চৈতন্যের কাজই হলো সমাজজীবনের প্রকৃত অবস্থা জানা এবং সেই অবস্থাকে মানুষের স্বার্থে পরিবর্তিত করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় খুঁজে বের করা।’
আমরা জানি চেতনা সব সময় কতগুলো আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এবং এই সব আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্যে চেতনা বেঁচে থাকে।সংক্ষেপে দেখার চেষ্টা করি, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনে কীভাবে বেঁচে আছে।
যখন কোনো জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাষাগত, সাংস্কৃতিক ও জীবনধারণগত ঐক্য দেখা দেয়, তখন তাদের মধ্যে জাতীয়তাবোধের সৃষ্টি হয়। জাতীয়তাবাদ একটি মানসিক চেতনা। আমাদের সংবিধানে উল্লিখিত জাতীয়তাবাদকে ক্ষমতাসীনেরা ধর্মীয় ভিত্তিতে রূপ দিয়েছে; যা কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে না।
ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে রাষ্ট্র আর ধর্মকে পৃথকরূপে প্রকাশ করাকে বোঝায়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আইন কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ওপর নির্ভরশীল থাকে না। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই মতবাদ অনুযায়ী সরকার কোনোরূপ ধর্মীয় হস্তক্ষেপ করবে না, কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী হবে না এবং কোনো ধর্মকে কোনো ধরনের অতিরিক্ত সুবিধা দেবে না।
প্রতিটি ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। রাজনৈতিক ব্যবহারের দিক থেকে বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষবাদ হলো ধর্ম ও রাষ্ট্রকে পৃথক করার আন্দোলন, যাতে ধর্মভিত্তিক আইনের বদলে সাধারণ আইন জারি এবং সব ধরনের ভেদাভেদমুক্ত সমাজ গড়ার আহ্বান থাকে।
বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ (অনুচ্ছেদ-১২) অনুসারে, সব ধরনের সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। এ ক্ষেত্রে বাস্তবতা হচ্ছে, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্র ধর্ম একই সঙ্গে বহাল রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সব কাজে ধর্মের ব্যবহার করা হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে সম্পত্তির উত্তরাধিকার আইনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় আইন বহাল রয়েছে।
সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে গণতন্ত্র বলতে এমন একটি ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, যেখানে বাক্স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ভোটের স্বাধীনতাসহ মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি-ডেম ইনস্টিটিউটের ২০২২ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদার গণতান্ত্রিক সূচকে ১৭৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম।
‘নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচকে’ বাংলাদেশের অবস্থান ১৩১তম। দেশে বর্তমানে রাতের ভোট, বিরোধী মত দমন, নির্যাতন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে রুদ্ধ করা হয়েছে। এ অবস্থা সংবিধানে বর্ণিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে মেলে কি?
মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি আদর্শ সমাজতন্ত্র। ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুসারে সমাজতন্ত্র বলতে শোষণমুক্ত ন্যায়ানুগ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ-১০), অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ জনগণের মৌলিক চাহিদা মেটানো (অনুচ্ছেদ-১৫), জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য দূর করা (অনুচ্ছেদ-১৬), অনুপার্জিত (দুর্নীতি বা অনিয়মের মাধ্যমে) আয় ভোগ করার অবসান ঘটানো (অনুচ্ছেদ-২০) ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতার ঘোষণায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা করিবে, যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে।’
বর্তমানে দেশে জীবনমানের ক্রমাগত বৈষম্য, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া, সরকারি কলকারখানা ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেওয়া, লোকসান দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া, সরকারি চিকিৎসকদের হাসপাতালেই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুবিধা দেওয়া, বহুমুখী
শিক্ষাকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া, প্রাইভেট ও কোচিংয়ের সুবিধার্থে স্কুল-কলেজমুখী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে ধ্বংস করে ফেলা এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণে উৎসাহ দেওয়া—এসব কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ?
বর্তমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, চেতনা সুরক্ষার নামে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকারকে আইন দ্বারা আটকে দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, মতপ্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রশ্নে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পৃথিবীর কঠোরতম আইনগুলোর মধ্যে একটি।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যত মামলা হয়েছে তার ৮৫ শতাংশের বাদী সরকারদলীয় নেতা-কর্মী। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে এই আইনে ৭ হাজার ১টি মামলা হয়েছে। তথ্য ও মতপ্রকাশের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘আর্টিকেল নাইনটিন’ বলেছে, গত চার বছরে ভিন্নমত ও সরকারের সমালোচনা দমনে এই আইনের নজিরবিহীন অপপ্রয়োগ হয়েছে।
বিভিন্ন মামলায় তিন বছরে ৫৩ জন সাংবাদিককে জেলে যেতে হয়েছে। ওই সংগঠনের দক্ষিণ এশীয় পরিচালকের মতে, ‘ভয়ের পরিবেশ তৈরির জন্যই আইনটা করা হয়েছিল গত নির্বাচনের আগে।’ ফলে সাংবাদিকসহ মুক্তচিন্তার লেখক এবং সামাজিক মাধ্যমে যাঁরা যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব, তাঁরা নিজেদের ওপর ‘সেলফ সেন্সরশিপ’ আরোপ করেছেন। একটা লাইন এমনকি একটা শব্দ লিখতে গেলেও দশবার ভাবতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় সম্পাদক পরিষদ ও জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সচেতন ব্যক্তি ও সংগঠন যৌক্তিকতা দেখিয়ে আইনটি পুরোপুরি বাতিলের দাবি করছিল। দেশে বর্তমান সময়ে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে আরও কিছু বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অজামিনযোগ্য ধারা ছিল ১৪টি, প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে জামিনযোগ্য ধারা ৮টি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে বাধা হওয়ায় প্রস্তাবিত আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে এবং দুটি ধারায় কোনো পরিবর্তনই আনা হয়নি। নতুন আইনেও আগের মতো অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন আইনে কেবল নামেই পরিবর্তন আসছে, গুণগত কোনো পরিবর্তন এতে নেই। সাজা কমানো কিংবা বাড়ানো কিংবা সাজার মাত্রা পরিবর্তনের ঘটনায় নাগরিকদের অধিকার বা সুরক্ষা হবে না। ‘নতুন আইনেও লেখার কারণে অপরাধ করার যে ভয়, সেই ভয় বিন্দুমাত্র বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। মানহানি,
চেতনায় আঘাত, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া, এগুলোর জন্য শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশে কোনো আইন নেই।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়নি, পরিবর্তন করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা এক বছর ধরে জেল খাটছেন, আরও অনেকে জেলে রয়েছেন অথবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
যেহেতু আইনটি বাতিল হচ্ছে না, ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নব সংস্করণ সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩-এর কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে চেতনা রক্ষার নামে রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের এই আইনের পিঠে সওয়ার হয়ে আরও অনেক নিরপরাধ নাগরিককে ঝুঁকিতে ফেলার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বাস্তবে চেতনা সুরক্ষার জন্য কোনো আইন হতে পারে না।
লেখক: কলামিস্ট ও নারী আন্দোলনের নেত্রী
সুতপা বেদজ্ঞ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা এবং ডিজিটাল নানা অপরাধ রুখতে সরকার ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করে। বর্তমানে এই আইনের সামান্য পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষাসংক্রান্ত অংশ নিয়েই আলোচনাটি সীমাবদ্ধ রাখতে চাই।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রথম অধ্যায়ের ২ ধারায় বিভিন্ন শব্দের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই ধারার ‘প’-এ বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থ যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ।’ একই আইনের ২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার দণ্ড বিষয়ে বলা হয়েছে।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ প্রসঙ্গ নিয়ে বিতর্ক শেষ হয়নি। বলা যায়, বিতর্কটিকে জিইয়ে রাখা হয়েছে। একদিকে স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্র সক্রিয় রয়েছে। যেসব মহান চেতনা বা আদর্শের ওপর দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, সেই সব চেতনার কথা দশকের পর দশক জাতির সামনে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্মের কাছ থেকে সব সময় মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস কৌশলে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা অব্যাহত আছে। অন্যদিকে চেতনা রক্ষার্থে আইন তৈরি করা হচ্ছে।
‘চেতনা’ একটি বিমূর্ত শব্দ। চেতনা শব্দটি এমন এক অবস্থাকে প্রকাশ করে, যা একজন মানুষকে এমন অনুভূতিশীল করে, যার ফলে সে নিজের সত্তা ও আশপাশের পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক অনুধাবন করার ক্ষমতা অর্জন করে। বুদ্ধিবৃত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক, মানবিক চর্চা ছাড়া চেতনা জাগ্রত হয় না। ‘চেতনা মানুষের সচেতন অস্তিত্ব ছাড়া আর কিছু নয়। আর এই অস্তিত্বই মানুষের জীবনের সঠিক প্রক্রিয়া।
বাস্তবতাবিহীন কোনো চেতনা তৈরি হয় না।’ ‘মানুষের চৈতন্যের কাজই হলো সমাজজীবনের প্রকৃত অবস্থা জানা এবং সেই অবস্থাকে মানুষের স্বার্থে পরিবর্তিত করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় খুঁজে বের করা।’
আমরা জানি চেতনা সব সময় কতগুলো আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এবং এই সব আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্যে চেতনা বেঁচে থাকে।সংক্ষেপে দেখার চেষ্টা করি, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনে কীভাবে বেঁচে আছে।
যখন কোনো জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাষাগত, সাংস্কৃতিক ও জীবনধারণগত ঐক্য দেখা দেয়, তখন তাদের মধ্যে জাতীয়তাবোধের সৃষ্টি হয়। জাতীয়তাবাদ একটি মানসিক চেতনা। আমাদের সংবিধানে উল্লিখিত জাতীয়তাবাদকে ক্ষমতাসীনেরা ধর্মীয় ভিত্তিতে রূপ দিয়েছে; যা কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে না।
ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে রাষ্ট্র আর ধর্মকে পৃথকরূপে প্রকাশ করাকে বোঝায়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আইন কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ওপর নির্ভরশীল থাকে না। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই মতবাদ অনুযায়ী সরকার কোনোরূপ ধর্মীয় হস্তক্ষেপ করবে না, কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী হবে না এবং কোনো ধর্মকে কোনো ধরনের অতিরিক্ত সুবিধা দেবে না।
প্রতিটি ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। রাজনৈতিক ব্যবহারের দিক থেকে বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষবাদ হলো ধর্ম ও রাষ্ট্রকে পৃথক করার আন্দোলন, যাতে ধর্মভিত্তিক আইনের বদলে সাধারণ আইন জারি এবং সব ধরনের ভেদাভেদমুক্ত সমাজ গড়ার আহ্বান থাকে।
বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ (অনুচ্ছেদ-১২) অনুসারে, সব ধরনের সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। এ ক্ষেত্রে বাস্তবতা হচ্ছে, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্র ধর্ম একই সঙ্গে বহাল রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সব কাজে ধর্মের ব্যবহার করা হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে সম্পত্তির উত্তরাধিকার আইনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় আইন বহাল রয়েছে।
সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে গণতন্ত্র বলতে এমন একটি ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, যেখানে বাক্স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ভোটের স্বাধীনতাসহ মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি-ডেম ইনস্টিটিউটের ২০২২ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদার গণতান্ত্রিক সূচকে ১৭৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম।
‘নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচকে’ বাংলাদেশের অবস্থান ১৩১তম। দেশে বর্তমানে রাতের ভোট, বিরোধী মত দমন, নির্যাতন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে রুদ্ধ করা হয়েছে। এ অবস্থা সংবিধানে বর্ণিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে মেলে কি?
মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি আদর্শ সমাজতন্ত্র। ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুসারে সমাজতন্ত্র বলতে শোষণমুক্ত ন্যায়ানুগ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ-১০), অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ জনগণের মৌলিক চাহিদা মেটানো (অনুচ্ছেদ-১৫), জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য দূর করা (অনুচ্ছেদ-১৬), অনুপার্জিত (দুর্নীতি বা অনিয়মের মাধ্যমে) আয় ভোগ করার অবসান ঘটানো (অনুচ্ছেদ-২০) ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতার ঘোষণায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা করিবে, যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে।’
বর্তমানে দেশে জীবনমানের ক্রমাগত বৈষম্য, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া, সরকারি কলকারখানা ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেওয়া, লোকসান দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া, সরকারি চিকিৎসকদের হাসপাতালেই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুবিধা দেওয়া, বহুমুখী
শিক্ষাকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া, প্রাইভেট ও কোচিংয়ের সুবিধার্থে স্কুল-কলেজমুখী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে ধ্বংস করে ফেলা এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণে উৎসাহ দেওয়া—এসব কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ?
বর্তমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, চেতনা সুরক্ষার নামে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকারকে আইন দ্বারা আটকে দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, মতপ্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রশ্নে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পৃথিবীর কঠোরতম আইনগুলোর মধ্যে একটি।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যত মামলা হয়েছে তার ৮৫ শতাংশের বাদী সরকারদলীয় নেতা-কর্মী। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে এই আইনে ৭ হাজার ১টি মামলা হয়েছে। তথ্য ও মতপ্রকাশের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘আর্টিকেল নাইনটিন’ বলেছে, গত চার বছরে ভিন্নমত ও সরকারের সমালোচনা দমনে এই আইনের নজিরবিহীন অপপ্রয়োগ হয়েছে।
বিভিন্ন মামলায় তিন বছরে ৫৩ জন সাংবাদিককে জেলে যেতে হয়েছে। ওই সংগঠনের দক্ষিণ এশীয় পরিচালকের মতে, ‘ভয়ের পরিবেশ তৈরির জন্যই আইনটা করা হয়েছিল গত নির্বাচনের আগে।’ ফলে সাংবাদিকসহ মুক্তচিন্তার লেখক এবং সামাজিক মাধ্যমে যাঁরা যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব, তাঁরা নিজেদের ওপর ‘সেলফ সেন্সরশিপ’ আরোপ করেছেন। একটা লাইন এমনকি একটা শব্দ লিখতে গেলেও দশবার ভাবতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় সম্পাদক পরিষদ ও জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সচেতন ব্যক্তি ও সংগঠন যৌক্তিকতা দেখিয়ে আইনটি পুরোপুরি বাতিলের দাবি করছিল। দেশে বর্তমান সময়ে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে আরও কিছু বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অজামিনযোগ্য ধারা ছিল ১৪টি, প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে জামিনযোগ্য ধারা ৮টি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে বাধা হওয়ায় প্রস্তাবিত আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে এবং দুটি ধারায় কোনো পরিবর্তনই আনা হয়নি। নতুন আইনেও আগের মতো অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন আইনে কেবল নামেই পরিবর্তন আসছে, গুণগত কোনো পরিবর্তন এতে নেই। সাজা কমানো কিংবা বাড়ানো কিংবা সাজার মাত্রা পরিবর্তনের ঘটনায় নাগরিকদের অধিকার বা সুরক্ষা হবে না। ‘নতুন আইনেও লেখার কারণে অপরাধ করার যে ভয়, সেই ভয় বিন্দুমাত্র বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। মানহানি,
চেতনায় আঘাত, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া, এগুলোর জন্য শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশে কোনো আইন নেই।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়নি, পরিবর্তন করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা এক বছর ধরে জেল খাটছেন, আরও অনেকে জেলে রয়েছেন অথবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
যেহেতু আইনটি বাতিল হচ্ছে না, ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নব সংস্করণ সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩-এর কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে চেতনা রক্ষার নামে রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের এই আইনের পিঠে সওয়ার হয়ে আরও অনেক নিরপরাধ নাগরিককে ঝুঁকিতে ফেলার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বাস্তবে চেতনা সুরক্ষার জন্য কোনো আইন হতে পারে না।
লেখক: কলামিস্ট ও নারী আন্দোলনের নেত্রী

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা এবং ডিজিটাল নানা অপরাধ রুখতে সরকার ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করে। বর্তমানে এই আইনের সামান্য পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষাসংক্রান্ত অংশ নিয়েই আলোচনাটি সীমাবদ্ধ রাখতে চাই।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রথম অধ্যায়ের ২ ধারায় বিভিন্ন শব্দের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই ধারার ‘প’-এ বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থ যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ।’ একই আইনের ২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার দণ্ড বিষয়ে বলা হয়েছে।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ প্রসঙ্গ নিয়ে বিতর্ক শেষ হয়নি। বলা যায়, বিতর্কটিকে জিইয়ে রাখা হয়েছে। একদিকে স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্র সক্রিয় রয়েছে। যেসব মহান চেতনা বা আদর্শের ওপর দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, সেই সব চেতনার কথা দশকের পর দশক জাতির সামনে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্মের কাছ থেকে সব সময় মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস কৌশলে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা অব্যাহত আছে। অন্যদিকে চেতনা রক্ষার্থে আইন তৈরি করা হচ্ছে।
‘চেতনা’ একটি বিমূর্ত শব্দ। চেতনা শব্দটি এমন এক অবস্থাকে প্রকাশ করে, যা একজন মানুষকে এমন অনুভূতিশীল করে, যার ফলে সে নিজের সত্তা ও আশপাশের পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক অনুধাবন করার ক্ষমতা অর্জন করে। বুদ্ধিবৃত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক, মানবিক চর্চা ছাড়া চেতনা জাগ্রত হয় না। ‘চেতনা মানুষের সচেতন অস্তিত্ব ছাড়া আর কিছু নয়। আর এই অস্তিত্বই মানুষের জীবনের সঠিক প্রক্রিয়া।
বাস্তবতাবিহীন কোনো চেতনা তৈরি হয় না।’ ‘মানুষের চৈতন্যের কাজই হলো সমাজজীবনের প্রকৃত অবস্থা জানা এবং সেই অবস্থাকে মানুষের স্বার্থে পরিবর্তিত করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় খুঁজে বের করা।’
আমরা জানি চেতনা সব সময় কতগুলো আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এবং এই সব আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্যে চেতনা বেঁচে থাকে।সংক্ষেপে দেখার চেষ্টা করি, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনে কীভাবে বেঁচে আছে।
যখন কোনো জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাষাগত, সাংস্কৃতিক ও জীবনধারণগত ঐক্য দেখা দেয়, তখন তাদের মধ্যে জাতীয়তাবোধের সৃষ্টি হয়। জাতীয়তাবাদ একটি মানসিক চেতনা। আমাদের সংবিধানে উল্লিখিত জাতীয়তাবাদকে ক্ষমতাসীনেরা ধর্মীয় ভিত্তিতে রূপ দিয়েছে; যা কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে না।
ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে রাষ্ট্র আর ধর্মকে পৃথকরূপে প্রকাশ করাকে বোঝায়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আইন কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ওপর নির্ভরশীল থাকে না। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই মতবাদ অনুযায়ী সরকার কোনোরূপ ধর্মীয় হস্তক্ষেপ করবে না, কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী হবে না এবং কোনো ধর্মকে কোনো ধরনের অতিরিক্ত সুবিধা দেবে না।
প্রতিটি ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। রাজনৈতিক ব্যবহারের দিক থেকে বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষবাদ হলো ধর্ম ও রাষ্ট্রকে পৃথক করার আন্দোলন, যাতে ধর্মভিত্তিক আইনের বদলে সাধারণ আইন জারি এবং সব ধরনের ভেদাভেদমুক্ত সমাজ গড়ার আহ্বান থাকে।
বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ (অনুচ্ছেদ-১২) অনুসারে, সব ধরনের সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। এ ক্ষেত্রে বাস্তবতা হচ্ছে, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্র ধর্ম একই সঙ্গে বহাল রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সব কাজে ধর্মের ব্যবহার করা হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে সম্পত্তির উত্তরাধিকার আইনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় আইন বহাল রয়েছে।
সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে গণতন্ত্র বলতে এমন একটি ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, যেখানে বাক্স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ভোটের স্বাধীনতাসহ মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি-ডেম ইনস্টিটিউটের ২০২২ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদার গণতান্ত্রিক সূচকে ১৭৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম।
‘নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচকে’ বাংলাদেশের অবস্থান ১৩১তম। দেশে বর্তমানে রাতের ভোট, বিরোধী মত দমন, নির্যাতন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে রুদ্ধ করা হয়েছে। এ অবস্থা সংবিধানে বর্ণিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে মেলে কি?
মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি আদর্শ সমাজতন্ত্র। ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুসারে সমাজতন্ত্র বলতে শোষণমুক্ত ন্যায়ানুগ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ-১০), অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ জনগণের মৌলিক চাহিদা মেটানো (অনুচ্ছেদ-১৫), জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য দূর করা (অনুচ্ছেদ-১৬), অনুপার্জিত (দুর্নীতি বা অনিয়মের মাধ্যমে) আয় ভোগ করার অবসান ঘটানো (অনুচ্ছেদ-২০) ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতার ঘোষণায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা করিবে, যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে।’
বর্তমানে দেশে জীবনমানের ক্রমাগত বৈষম্য, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া, সরকারি কলকারখানা ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেওয়া, লোকসান দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া, সরকারি চিকিৎসকদের হাসপাতালেই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুবিধা দেওয়া, বহুমুখী
শিক্ষাকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া, প্রাইভেট ও কোচিংয়ের সুবিধার্থে স্কুল-কলেজমুখী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে ধ্বংস করে ফেলা এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণে উৎসাহ দেওয়া—এসব কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ?
বর্তমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, চেতনা সুরক্ষার নামে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকারকে আইন দ্বারা আটকে দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, মতপ্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রশ্নে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পৃথিবীর কঠোরতম আইনগুলোর মধ্যে একটি।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যত মামলা হয়েছে তার ৮৫ শতাংশের বাদী সরকারদলীয় নেতা-কর্মী। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে এই আইনে ৭ হাজার ১টি মামলা হয়েছে। তথ্য ও মতপ্রকাশের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘আর্টিকেল নাইনটিন’ বলেছে, গত চার বছরে ভিন্নমত ও সরকারের সমালোচনা দমনে এই আইনের নজিরবিহীন অপপ্রয়োগ হয়েছে।
বিভিন্ন মামলায় তিন বছরে ৫৩ জন সাংবাদিককে জেলে যেতে হয়েছে। ওই সংগঠনের দক্ষিণ এশীয় পরিচালকের মতে, ‘ভয়ের পরিবেশ তৈরির জন্যই আইনটা করা হয়েছিল গত নির্বাচনের আগে।’ ফলে সাংবাদিকসহ মুক্তচিন্তার লেখক এবং সামাজিক মাধ্যমে যাঁরা যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব, তাঁরা নিজেদের ওপর ‘সেলফ সেন্সরশিপ’ আরোপ করেছেন। একটা লাইন এমনকি একটা শব্দ লিখতে গেলেও দশবার ভাবতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় সম্পাদক পরিষদ ও জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সচেতন ব্যক্তি ও সংগঠন যৌক্তিকতা দেখিয়ে আইনটি পুরোপুরি বাতিলের দাবি করছিল। দেশে বর্তমান সময়ে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে আরও কিছু বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অজামিনযোগ্য ধারা ছিল ১৪টি, প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে জামিনযোগ্য ধারা ৮টি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে বাধা হওয়ায় প্রস্তাবিত আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে এবং দুটি ধারায় কোনো পরিবর্তনই আনা হয়নি। নতুন আইনেও আগের মতো অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন আইনে কেবল নামেই পরিবর্তন আসছে, গুণগত কোনো পরিবর্তন এতে নেই। সাজা কমানো কিংবা বাড়ানো কিংবা সাজার মাত্রা পরিবর্তনের ঘটনায় নাগরিকদের অধিকার বা সুরক্ষা হবে না। ‘নতুন আইনেও লেখার কারণে অপরাধ করার যে ভয়, সেই ভয় বিন্দুমাত্র বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। মানহানি,
চেতনায় আঘাত, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া, এগুলোর জন্য শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশে কোনো আইন নেই।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়নি, পরিবর্তন করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা এক বছর ধরে জেল খাটছেন, আরও অনেকে জেলে রয়েছেন অথবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
যেহেতু আইনটি বাতিল হচ্ছে না, ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নব সংস্করণ সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩-এর কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে চেতনা রক্ষার নামে রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের এই আইনের পিঠে সওয়ার হয়ে আরও অনেক নিরপরাধ নাগরিককে ঝুঁকিতে ফেলার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বাস্তবে চেতনা সুরক্ষার জন্য কোনো আইন হতে পারে না।
লেখক: কলামিস্ট ও নারী আন্দোলনের নেত্রী

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা এবং ডিজিটাল নানা অপরাধ রুখতে সরকার ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করে। বর্তমানে এই আইনের সামান্য পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষাসংক্রান্ত অংশ নিয়েই আলোচনাটি সীমাবদ্ধ র
২২ আগস্ট ২০২৩
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা এবং ডিজিটাল নানা অপরাধ রুখতে সরকার ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করে। বর্তমানে এই আইনের সামান্য পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষাসংক্রান্ত অংশ নিয়েই আলোচনাটি সীমাবদ্ধ র
২২ আগস্ট ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা এবং ডিজিটাল নানা অপরাধ রুখতে সরকার ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করে। বর্তমানে এই আইনের সামান্য পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষাসংক্রান্ত অংশ নিয়েই আলোচনাটি সীমাবদ্ধ র
২২ আগস্ট ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা এবং ডিজিটাল নানা অপরাধ রুখতে সরকার ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করে। বর্তমানে এই আইনের সামান্য পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষাসংক্রান্ত অংশ নিয়েই আলোচনাটি সীমাবদ্ধ র
২২ আগস্ট ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে