কামরুল হাসান

অনেক দিন রিপোর্টিং করার সুবাদে রাজধানীর পথঘাট আমার কাছে হাতের রেখার মতো। অচেনা কোনো এলাকা নেই। মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে ১ নম্বর সড়কের মুখের তিনতলা বাড়িটি চিনতেও কোনো অসুবিধা হলো না। এই বাড়িতেই থাকেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী এ এফ এম মহিতুল ইসলাম। একজনকে তাঁর নাম বলতেই ডান হাতের তর্জনী উঁচিয়ে বললেন, ওই দেখেন তিনি বসে আছেন। বাড়ির সামনে একটি বাগান, তার ভেতরে জনা কয়েক পুলিশ নিয়ে বসে আছেন তিনি।
আমি তাঁর পাশে গিয়ে পরিচয় দিতেই হাতের ইশারা দিয়ে চেয়ারে বসতে বললেন। কথা বলার উপায় নেই, অনর্গল তাঁর ফোন বেজে চলেছে। কোনোটা নিজে ধরছেন, কোনোটা পাশের কাউকে দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যে একটি শিশু এসে এটা-সেটা বলছে। পুলিশের এক সদস্য বললেন, ‘স্যার, কাল অনেক কাজ। টিভি রেকর্ডিং, বঙ্গবন্ধু ভবনে যেতে হবে।’ তিনি তাঁকে হাত দিয়ে থামিয়ে দিয়ে আমাকে বললেন, বলেন কী জানতে চান।
প্রথমে জানতে চাইলাম, আপনি কি এখানেই থাকেন? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, বাড়ির নিচতলায় স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে থাকি।’ তিনি হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওমা... ১২টা বেজে গেছে! আমি ভাই ডায়াবেটিসের রোগী, তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।’
মহিতুল ইসলামের সঙ্গে আমার এই কথোপকথন ২০০৯ সালের ১৮ নভেম্বর সকালে। এর পরদিন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায় উপলক্ষে বাদীর সঙ্গে কথা বলার অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে এসেছি। কিন্তু মহিতুল ইসলামকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি থাকতেন অনেকটা আত্মগোপনে। মামলার রায়ের দিন যত কাছে আসছিল, নিজের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর শঙ্কা তত বাড়ছিল।
কথায় কথায় আমাকে বললেন, ‘১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা করার পর থেকে পুলিশের পাহারায় ছিলাম। প্রথম চার বছর বাড়িতে পুলিশ ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ তুলে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হলো নানা অত্যাচার। অধিকাংশ দিন বাড়িতে থাকতাম না। রাতে ঢিল পড়ত বাড়িতে। আমার জীবন ছিল ফেরারি আসামির মতো। অচেনা লোকজন খুঁজতে আসত। ফোনে ভয়ভীতি দেখাত। ভয়ে থানা-পুলিশের ধারেকাছেও যেতাম না। বাড়ির সামনে ফুলের টব ছিল, একদিন কে বা কারা সেটা নিয়ে গেল। একটা পোষা ছাগল ছিল, সেটাও লুট হলো। একেকবার মনে হতো আর বাঁচতে পারব না, কিন্তু সাহস হারাইনি। বুকে পাথর চেপে সময় পার করেছি।’
মহিতুল ইসলামের আদিবাস ছিল যশোরে। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ ফজলুল হক মনি, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমদ ও সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে যে মুজিব বাহিনী গঠন করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন সেই বাহিনীর সদস্য। যুদ্ধের পরে ’৭২ সালে ঢাকায় এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর হাতে অস্ত্র জমা দিতে। তার আগে এসএসসি পাস করেন। তখন মুখ্য সচিব ছিলেন রুহুল কুদ্দুস। তিনি চাকরির প্রস্তাব দিলে রাজি হয়ে যান। তিন-চার দিনের মধ্যে চাকরি হয় শাখা সহকারী হিসেবে। এর মধ্যে একদিন মুখ্য সচিবের অফিস থেকে একটি ফাইল নিয়ে যান ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। প্রথম দেখায় তাঁকে পছন্দ করেন বঙ্গবন্ধু, সেদিনই তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ জুটে যায়। সেই থেকে তিনি হয়ে যান জাতির জনকের ব্যক্তিগত সহকারী।
জানতে চাইলাম, আপনি কী কাজ করতেন? তিনি বললেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাড়ির নিচতলায় অফিস ছিল, আমার কাজ ছিল রাষ্ট্রপতির পক্ষে ফোন ধরা আর প্রটোকল রক্ষা করা।’ ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের সেই ভয়াবহ রাতের কথা তুলতেই মহিতুল বললেন, “সেদিন রাতে বাসার মিস্ত্রি মতিন আমাকে ঘুম থেকে জাগায়। বলে, প্রেসিডেন্ট আমাকে ডাকছেন। সেরনিয়াবাতের বাসায় আক্রমণ হয়েছে, পুলিশ কন্ট্রোলরুমে ফোন করতে হবে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু নিজেই নিচে নেমে আসেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনের শেষ ফোনটি আমিই ধরিয়ে দিয়েছিলাম। না, সেই ফোনে কেউ আর সাড়া দেয়নি। বঙ্গবন্ধু আমার হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট বলছি, আমার বাড়ির সামনে গুলি হচ্ছে, তোমরা দেখো।’ এরপর তিনি ওপরে চলে যান।” তিনি বলেই যাচ্ছেন, “ততক্ষণে ৩২ নম্বরের আশপাশে গুলি শুরু হয়েছে। একপর্যায়ে শেখ কামাল নিচে নামেন। তিনি নামতে না নামতেই কয়েকজন ঘাতক বাড়ির ভেতরে ঢোকে। তারা কামালকে হাত উঁচিয়ে থাকতে বলে। ব্রাশফায়ারে আমার সামনেই নিথর হয়ে যায় শেখ কামালের শরীর। ওই গুলিতে আমি, ডিএসপি নুরুল ইসলাম ও এসবির এক দারোগা আহত হই। আমরা পালাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। ঘাতকেরা আমাদের চুল ধরে টেনে লাইনে দাঁড় করায়। একপর্যায়ে ওপর থেকে বঙ্গবন্ধুর গলা শোনা যায়। তিনি চিৎকার করে বলছেন, ‘তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?’ সঙ্গে সঙ্গে গুলির আওয়াজ। লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি। রাসেল দৌড়ে এসে এ অবস্থায় আমাকে জড়িয়ে ধরে। সে ভয়ে ভয়ে বলে, ‘ভাইয়া, ওরা আমাকে মারবে না তো।’ আমি তাকে অভয় দিই। এ সময় একজন ঘাতক তাকে জোর করে আমার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভবনের গেটের পুলিশ বক্সে নিয়ে বসিয়ে রাখে। একজন ঘাতক মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছি বলে ওপরে নিয়ে তাকে গুলি করে।”
তারপর কী হলো? প্রশ্ন করতেই মহিতুল বললেন, ‘সকাল ১০টা পর্যন্ত আমরা সবাই ৩২ নম্বরে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পা থেকে তখনো রক্ত ঝরছিল। এরপর আর্মির গাড়িতে করে আমাদের ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। সেখানে পাহারায় চিকিৎসা চলছিল। তিন দিন থাকার পর ফাঁক বুঝে পালিয়ে যশোরে চলে যাই। ছয় দিন পর যশোর থেকে সেনাবাহিনী আমাকে ঢাকায় ধরে আনে। গণভবনে তখন তদন্ত কমিশন কাজ করছিল। তারা আমাকে আটক করে জেরা করে।’
জানতে চাইলাম, আপনি কি ঘাতকদের নাম কমিশনের কাছে বলেছিলেন? তিনি বললেন, ‘না বলিনি। আমার মনে হয়েছিল এদের সবকিছু সাজানো, লোক দেখানো। এ কারণে তাদের জেরার জবাবে আমি কিছুই বলিনি। তখন খন্দকার মোশতাকের মুখ্য সচিব শাহরিয়ার জেড এ ইকবাল আমাকে বাঁচিয়েছিলেন। পরে আমি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেছি। ২০০১ সালের ১ এপ্রিল বিএনপি সরকার আমাকে চাকরিচ্যুত করে।’
আগে কখনো মামলা করতে চেয়েছিলেন—প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে ত্বরিত জবাব দিলেন মহিতুল। বললেন, “’৭৬ সালের ২৩ অক্টোবর একবার চেষ্টা করেছিলাম। সরকারের অনুমতি ছাড়া লালবাগ থানায় গিয়েছিলাম মামলা করতে। এজাহারের বিবরণ শুনে ডিউটি অফিসার গালে এক চড় কষিয়ে বললেন, ‘তুইও মরবি, আমাদেরও মারবি।’ এরপর অপেক্ষায় ছিলাম, ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর মামলা করলাম ধানমন্ডি থানায়।”
মহিতুল বলছিলেন, ‘ইতিহাসের এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না, এটা হতে পারে না। আমি মনে করেছিলাম, যত দিন বেঁচে আছি, আমার পক্ষে যা করার করে যাব। কিছুটা হলেও বঙ্গবন্ধু পরিবারের ঋণ শোধ করতে পারব। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ঘাতকদের সাজা কার্যকর দেখে যেতে পারলে আমি মরেও শান্তি পাব।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় হয়েছে, আসামিদের সাজাও কার্যকর হয়েছে। ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট তিনি মারা যান।
আর মাত্র এক দিন পরেই ১৫ আগস্টের সেই কালরাত। শোকাবহ এই দিনে অকুতোভয় মানুষটির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
আরও পড়ুন:

অনেক দিন রিপোর্টিং করার সুবাদে রাজধানীর পথঘাট আমার কাছে হাতের রেখার মতো। অচেনা কোনো এলাকা নেই। মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে ১ নম্বর সড়কের মুখের তিনতলা বাড়িটি চিনতেও কোনো অসুবিধা হলো না। এই বাড়িতেই থাকেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী এ এফ এম মহিতুল ইসলাম। একজনকে তাঁর নাম বলতেই ডান হাতের তর্জনী উঁচিয়ে বললেন, ওই দেখেন তিনি বসে আছেন। বাড়ির সামনে একটি বাগান, তার ভেতরে জনা কয়েক পুলিশ নিয়ে বসে আছেন তিনি।
আমি তাঁর পাশে গিয়ে পরিচয় দিতেই হাতের ইশারা দিয়ে চেয়ারে বসতে বললেন। কথা বলার উপায় নেই, অনর্গল তাঁর ফোন বেজে চলেছে। কোনোটা নিজে ধরছেন, কোনোটা পাশের কাউকে দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যে একটি শিশু এসে এটা-সেটা বলছে। পুলিশের এক সদস্য বললেন, ‘স্যার, কাল অনেক কাজ। টিভি রেকর্ডিং, বঙ্গবন্ধু ভবনে যেতে হবে।’ তিনি তাঁকে হাত দিয়ে থামিয়ে দিয়ে আমাকে বললেন, বলেন কী জানতে চান।
প্রথমে জানতে চাইলাম, আপনি কি এখানেই থাকেন? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, বাড়ির নিচতলায় স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে থাকি।’ তিনি হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওমা... ১২টা বেজে গেছে! আমি ভাই ডায়াবেটিসের রোগী, তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।’
মহিতুল ইসলামের সঙ্গে আমার এই কথোপকথন ২০০৯ সালের ১৮ নভেম্বর সকালে। এর পরদিন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায় উপলক্ষে বাদীর সঙ্গে কথা বলার অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে এসেছি। কিন্তু মহিতুল ইসলামকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি থাকতেন অনেকটা আত্মগোপনে। মামলার রায়ের দিন যত কাছে আসছিল, নিজের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর শঙ্কা তত বাড়ছিল।
কথায় কথায় আমাকে বললেন, ‘১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা করার পর থেকে পুলিশের পাহারায় ছিলাম। প্রথম চার বছর বাড়িতে পুলিশ ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ তুলে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হলো নানা অত্যাচার। অধিকাংশ দিন বাড়িতে থাকতাম না। রাতে ঢিল পড়ত বাড়িতে। আমার জীবন ছিল ফেরারি আসামির মতো। অচেনা লোকজন খুঁজতে আসত। ফোনে ভয়ভীতি দেখাত। ভয়ে থানা-পুলিশের ধারেকাছেও যেতাম না। বাড়ির সামনে ফুলের টব ছিল, একদিন কে বা কারা সেটা নিয়ে গেল। একটা পোষা ছাগল ছিল, সেটাও লুট হলো। একেকবার মনে হতো আর বাঁচতে পারব না, কিন্তু সাহস হারাইনি। বুকে পাথর চেপে সময় পার করেছি।’
মহিতুল ইসলামের আদিবাস ছিল যশোরে। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ ফজলুল হক মনি, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমদ ও সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে যে মুজিব বাহিনী গঠন করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন সেই বাহিনীর সদস্য। যুদ্ধের পরে ’৭২ সালে ঢাকায় এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর হাতে অস্ত্র জমা দিতে। তার আগে এসএসসি পাস করেন। তখন মুখ্য সচিব ছিলেন রুহুল কুদ্দুস। তিনি চাকরির প্রস্তাব দিলে রাজি হয়ে যান। তিন-চার দিনের মধ্যে চাকরি হয় শাখা সহকারী হিসেবে। এর মধ্যে একদিন মুখ্য সচিবের অফিস থেকে একটি ফাইল নিয়ে যান ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। প্রথম দেখায় তাঁকে পছন্দ করেন বঙ্গবন্ধু, সেদিনই তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ জুটে যায়। সেই থেকে তিনি হয়ে যান জাতির জনকের ব্যক্তিগত সহকারী।
জানতে চাইলাম, আপনি কী কাজ করতেন? তিনি বললেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাড়ির নিচতলায় অফিস ছিল, আমার কাজ ছিল রাষ্ট্রপতির পক্ষে ফোন ধরা আর প্রটোকল রক্ষা করা।’ ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের সেই ভয়াবহ রাতের কথা তুলতেই মহিতুল বললেন, “সেদিন রাতে বাসার মিস্ত্রি মতিন আমাকে ঘুম থেকে জাগায়। বলে, প্রেসিডেন্ট আমাকে ডাকছেন। সেরনিয়াবাতের বাসায় আক্রমণ হয়েছে, পুলিশ কন্ট্রোলরুমে ফোন করতে হবে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু নিজেই নিচে নেমে আসেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনের শেষ ফোনটি আমিই ধরিয়ে দিয়েছিলাম। না, সেই ফোনে কেউ আর সাড়া দেয়নি। বঙ্গবন্ধু আমার হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট বলছি, আমার বাড়ির সামনে গুলি হচ্ছে, তোমরা দেখো।’ এরপর তিনি ওপরে চলে যান।” তিনি বলেই যাচ্ছেন, “ততক্ষণে ৩২ নম্বরের আশপাশে গুলি শুরু হয়েছে। একপর্যায়ে শেখ কামাল নিচে নামেন। তিনি নামতে না নামতেই কয়েকজন ঘাতক বাড়ির ভেতরে ঢোকে। তারা কামালকে হাত উঁচিয়ে থাকতে বলে। ব্রাশফায়ারে আমার সামনেই নিথর হয়ে যায় শেখ কামালের শরীর। ওই গুলিতে আমি, ডিএসপি নুরুল ইসলাম ও এসবির এক দারোগা আহত হই। আমরা পালাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। ঘাতকেরা আমাদের চুল ধরে টেনে লাইনে দাঁড় করায়। একপর্যায়ে ওপর থেকে বঙ্গবন্ধুর গলা শোনা যায়। তিনি চিৎকার করে বলছেন, ‘তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?’ সঙ্গে সঙ্গে গুলির আওয়াজ। লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি। রাসেল দৌড়ে এসে এ অবস্থায় আমাকে জড়িয়ে ধরে। সে ভয়ে ভয়ে বলে, ‘ভাইয়া, ওরা আমাকে মারবে না তো।’ আমি তাকে অভয় দিই। এ সময় একজন ঘাতক তাকে জোর করে আমার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভবনের গেটের পুলিশ বক্সে নিয়ে বসিয়ে রাখে। একজন ঘাতক মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছি বলে ওপরে নিয়ে তাকে গুলি করে।”
তারপর কী হলো? প্রশ্ন করতেই মহিতুল বললেন, ‘সকাল ১০টা পর্যন্ত আমরা সবাই ৩২ নম্বরে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পা থেকে তখনো রক্ত ঝরছিল। এরপর আর্মির গাড়িতে করে আমাদের ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। সেখানে পাহারায় চিকিৎসা চলছিল। তিন দিন থাকার পর ফাঁক বুঝে পালিয়ে যশোরে চলে যাই। ছয় দিন পর যশোর থেকে সেনাবাহিনী আমাকে ঢাকায় ধরে আনে। গণভবনে তখন তদন্ত কমিশন কাজ করছিল। তারা আমাকে আটক করে জেরা করে।’
জানতে চাইলাম, আপনি কি ঘাতকদের নাম কমিশনের কাছে বলেছিলেন? তিনি বললেন, ‘না বলিনি। আমার মনে হয়েছিল এদের সবকিছু সাজানো, লোক দেখানো। এ কারণে তাদের জেরার জবাবে আমি কিছুই বলিনি। তখন খন্দকার মোশতাকের মুখ্য সচিব শাহরিয়ার জেড এ ইকবাল আমাকে বাঁচিয়েছিলেন। পরে আমি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেছি। ২০০১ সালের ১ এপ্রিল বিএনপি সরকার আমাকে চাকরিচ্যুত করে।’
আগে কখনো মামলা করতে চেয়েছিলেন—প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে ত্বরিত জবাব দিলেন মহিতুল। বললেন, “’৭৬ সালের ২৩ অক্টোবর একবার চেষ্টা করেছিলাম। সরকারের অনুমতি ছাড়া লালবাগ থানায় গিয়েছিলাম মামলা করতে। এজাহারের বিবরণ শুনে ডিউটি অফিসার গালে এক চড় কষিয়ে বললেন, ‘তুইও মরবি, আমাদেরও মারবি।’ এরপর অপেক্ষায় ছিলাম, ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর মামলা করলাম ধানমন্ডি থানায়।”
মহিতুল বলছিলেন, ‘ইতিহাসের এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না, এটা হতে পারে না। আমি মনে করেছিলাম, যত দিন বেঁচে আছি, আমার পক্ষে যা করার করে যাব। কিছুটা হলেও বঙ্গবন্ধু পরিবারের ঋণ শোধ করতে পারব। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ঘাতকদের সাজা কার্যকর দেখে যেতে পারলে আমি মরেও শান্তি পাব।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় হয়েছে, আসামিদের সাজাও কার্যকর হয়েছে। ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট তিনি মারা যান।
আর মাত্র এক দিন পরেই ১৫ আগস্টের সেই কালরাত। শোকাবহ এই দিনে অকুতোভয় মানুষটির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

অনেক দিন রিপোর্টিং করার সুবাদে রাজধানীর পথঘাট আমার কাছে হাতের রেখার মতো। অচেনা কোনো এলাকা নেই। মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে ১ নম্বর সড়কের মুখের তিনতলা বাড়িটি চিনতেও কোনো অসুবিধা হলো না। এই বাড়িতেই থাকেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী এ এফ এম মহিতুল ইসলাম। একজনকে তাঁর নাম বলতেই ডান হাতের তর্জনী উঁচিয়ে বললেন, ওই দেখেন তিনি বসে আছেন। বাড়ির সামনে একটি বাগান, তার ভেতরে জনা কয়েক পুলিশ নিয়ে বসে আছেন তিনি।
আমি তাঁর পাশে গিয়ে পরিচয় দিতেই হাতের ইশারা দিয়ে চেয়ারে বসতে বললেন। কথা বলার উপায় নেই, অনর্গল তাঁর ফোন বেজে চলেছে। কোনোটা নিজে ধরছেন, কোনোটা পাশের কাউকে দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যে একটি শিশু এসে এটা-সেটা বলছে। পুলিশের এক সদস্য বললেন, ‘স্যার, কাল অনেক কাজ। টিভি রেকর্ডিং, বঙ্গবন্ধু ভবনে যেতে হবে।’ তিনি তাঁকে হাত দিয়ে থামিয়ে দিয়ে আমাকে বললেন, বলেন কী জানতে চান।
প্রথমে জানতে চাইলাম, আপনি কি এখানেই থাকেন? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, বাড়ির নিচতলায় স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে থাকি।’ তিনি হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওমা... ১২টা বেজে গেছে! আমি ভাই ডায়াবেটিসের রোগী, তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।’
মহিতুল ইসলামের সঙ্গে আমার এই কথোপকথন ২০০৯ সালের ১৮ নভেম্বর সকালে। এর পরদিন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায় উপলক্ষে বাদীর সঙ্গে কথা বলার অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে এসেছি। কিন্তু মহিতুল ইসলামকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি থাকতেন অনেকটা আত্মগোপনে। মামলার রায়ের দিন যত কাছে আসছিল, নিজের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর শঙ্কা তত বাড়ছিল।
কথায় কথায় আমাকে বললেন, ‘১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা করার পর থেকে পুলিশের পাহারায় ছিলাম। প্রথম চার বছর বাড়িতে পুলিশ ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ তুলে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হলো নানা অত্যাচার। অধিকাংশ দিন বাড়িতে থাকতাম না। রাতে ঢিল পড়ত বাড়িতে। আমার জীবন ছিল ফেরারি আসামির মতো। অচেনা লোকজন খুঁজতে আসত। ফোনে ভয়ভীতি দেখাত। ভয়ে থানা-পুলিশের ধারেকাছেও যেতাম না। বাড়ির সামনে ফুলের টব ছিল, একদিন কে বা কারা সেটা নিয়ে গেল। একটা পোষা ছাগল ছিল, সেটাও লুট হলো। একেকবার মনে হতো আর বাঁচতে পারব না, কিন্তু সাহস হারাইনি। বুকে পাথর চেপে সময় পার করেছি।’
মহিতুল ইসলামের আদিবাস ছিল যশোরে। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ ফজলুল হক মনি, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমদ ও সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে যে মুজিব বাহিনী গঠন করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন সেই বাহিনীর সদস্য। যুদ্ধের পরে ’৭২ সালে ঢাকায় এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর হাতে অস্ত্র জমা দিতে। তার আগে এসএসসি পাস করেন। তখন মুখ্য সচিব ছিলেন রুহুল কুদ্দুস। তিনি চাকরির প্রস্তাব দিলে রাজি হয়ে যান। তিন-চার দিনের মধ্যে চাকরি হয় শাখা সহকারী হিসেবে। এর মধ্যে একদিন মুখ্য সচিবের অফিস থেকে একটি ফাইল নিয়ে যান ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। প্রথম দেখায় তাঁকে পছন্দ করেন বঙ্গবন্ধু, সেদিনই তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ জুটে যায়। সেই থেকে তিনি হয়ে যান জাতির জনকের ব্যক্তিগত সহকারী।
জানতে চাইলাম, আপনি কী কাজ করতেন? তিনি বললেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাড়ির নিচতলায় অফিস ছিল, আমার কাজ ছিল রাষ্ট্রপতির পক্ষে ফোন ধরা আর প্রটোকল রক্ষা করা।’ ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের সেই ভয়াবহ রাতের কথা তুলতেই মহিতুল বললেন, “সেদিন রাতে বাসার মিস্ত্রি মতিন আমাকে ঘুম থেকে জাগায়। বলে, প্রেসিডেন্ট আমাকে ডাকছেন। সেরনিয়াবাতের বাসায় আক্রমণ হয়েছে, পুলিশ কন্ট্রোলরুমে ফোন করতে হবে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু নিজেই নিচে নেমে আসেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনের শেষ ফোনটি আমিই ধরিয়ে দিয়েছিলাম। না, সেই ফোনে কেউ আর সাড়া দেয়নি। বঙ্গবন্ধু আমার হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট বলছি, আমার বাড়ির সামনে গুলি হচ্ছে, তোমরা দেখো।’ এরপর তিনি ওপরে চলে যান।” তিনি বলেই যাচ্ছেন, “ততক্ষণে ৩২ নম্বরের আশপাশে গুলি শুরু হয়েছে। একপর্যায়ে শেখ কামাল নিচে নামেন। তিনি নামতে না নামতেই কয়েকজন ঘাতক বাড়ির ভেতরে ঢোকে। তারা কামালকে হাত উঁচিয়ে থাকতে বলে। ব্রাশফায়ারে আমার সামনেই নিথর হয়ে যায় শেখ কামালের শরীর। ওই গুলিতে আমি, ডিএসপি নুরুল ইসলাম ও এসবির এক দারোগা আহত হই। আমরা পালাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। ঘাতকেরা আমাদের চুল ধরে টেনে লাইনে দাঁড় করায়। একপর্যায়ে ওপর থেকে বঙ্গবন্ধুর গলা শোনা যায়। তিনি চিৎকার করে বলছেন, ‘তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?’ সঙ্গে সঙ্গে গুলির আওয়াজ। লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি। রাসেল দৌড়ে এসে এ অবস্থায় আমাকে জড়িয়ে ধরে। সে ভয়ে ভয়ে বলে, ‘ভাইয়া, ওরা আমাকে মারবে না তো।’ আমি তাকে অভয় দিই। এ সময় একজন ঘাতক তাকে জোর করে আমার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভবনের গেটের পুলিশ বক্সে নিয়ে বসিয়ে রাখে। একজন ঘাতক মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছি বলে ওপরে নিয়ে তাকে গুলি করে।”
তারপর কী হলো? প্রশ্ন করতেই মহিতুল বললেন, ‘সকাল ১০টা পর্যন্ত আমরা সবাই ৩২ নম্বরে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পা থেকে তখনো রক্ত ঝরছিল। এরপর আর্মির গাড়িতে করে আমাদের ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। সেখানে পাহারায় চিকিৎসা চলছিল। তিন দিন থাকার পর ফাঁক বুঝে পালিয়ে যশোরে চলে যাই। ছয় দিন পর যশোর থেকে সেনাবাহিনী আমাকে ঢাকায় ধরে আনে। গণভবনে তখন তদন্ত কমিশন কাজ করছিল। তারা আমাকে আটক করে জেরা করে।’
জানতে চাইলাম, আপনি কি ঘাতকদের নাম কমিশনের কাছে বলেছিলেন? তিনি বললেন, ‘না বলিনি। আমার মনে হয়েছিল এদের সবকিছু সাজানো, লোক দেখানো। এ কারণে তাদের জেরার জবাবে আমি কিছুই বলিনি। তখন খন্দকার মোশতাকের মুখ্য সচিব শাহরিয়ার জেড এ ইকবাল আমাকে বাঁচিয়েছিলেন। পরে আমি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেছি। ২০০১ সালের ১ এপ্রিল বিএনপি সরকার আমাকে চাকরিচ্যুত করে।’
আগে কখনো মামলা করতে চেয়েছিলেন—প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে ত্বরিত জবাব দিলেন মহিতুল। বললেন, “’৭৬ সালের ২৩ অক্টোবর একবার চেষ্টা করেছিলাম। সরকারের অনুমতি ছাড়া লালবাগ থানায় গিয়েছিলাম মামলা করতে। এজাহারের বিবরণ শুনে ডিউটি অফিসার গালে এক চড় কষিয়ে বললেন, ‘তুইও মরবি, আমাদেরও মারবি।’ এরপর অপেক্ষায় ছিলাম, ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর মামলা করলাম ধানমন্ডি থানায়।”
মহিতুল বলছিলেন, ‘ইতিহাসের এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না, এটা হতে পারে না। আমি মনে করেছিলাম, যত দিন বেঁচে আছি, আমার পক্ষে যা করার করে যাব। কিছুটা হলেও বঙ্গবন্ধু পরিবারের ঋণ শোধ করতে পারব। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ঘাতকদের সাজা কার্যকর দেখে যেতে পারলে আমি মরেও শান্তি পাব।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় হয়েছে, আসামিদের সাজাও কার্যকর হয়েছে। ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট তিনি মারা যান।
আর মাত্র এক দিন পরেই ১৫ আগস্টের সেই কালরাত। শোকাবহ এই দিনে অকুতোভয় মানুষটির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
আরও পড়ুন:

অনেক দিন রিপোর্টিং করার সুবাদে রাজধানীর পথঘাট আমার কাছে হাতের রেখার মতো। অচেনা কোনো এলাকা নেই। মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে ১ নম্বর সড়কের মুখের তিনতলা বাড়িটি চিনতেও কোনো অসুবিধা হলো না। এই বাড়িতেই থাকেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী এ এফ এম মহিতুল ইসলাম। একজনকে তাঁর নাম বলতেই ডান হাতের তর্জনী উঁচিয়ে বললেন, ওই দেখেন তিনি বসে আছেন। বাড়ির সামনে একটি বাগান, তার ভেতরে জনা কয়েক পুলিশ নিয়ে বসে আছেন তিনি।
আমি তাঁর পাশে গিয়ে পরিচয় দিতেই হাতের ইশারা দিয়ে চেয়ারে বসতে বললেন। কথা বলার উপায় নেই, অনর্গল তাঁর ফোন বেজে চলেছে। কোনোটা নিজে ধরছেন, কোনোটা পাশের কাউকে দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যে একটি শিশু এসে এটা-সেটা বলছে। পুলিশের এক সদস্য বললেন, ‘স্যার, কাল অনেক কাজ। টিভি রেকর্ডিং, বঙ্গবন্ধু ভবনে যেতে হবে।’ তিনি তাঁকে হাত দিয়ে থামিয়ে দিয়ে আমাকে বললেন, বলেন কী জানতে চান।
প্রথমে জানতে চাইলাম, আপনি কি এখানেই থাকেন? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, বাড়ির নিচতলায় স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে থাকি।’ তিনি হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওমা... ১২টা বেজে গেছে! আমি ভাই ডায়াবেটিসের রোগী, তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।’
মহিতুল ইসলামের সঙ্গে আমার এই কথোপকথন ২০০৯ সালের ১৮ নভেম্বর সকালে। এর পরদিন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায় উপলক্ষে বাদীর সঙ্গে কথা বলার অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে এসেছি। কিন্তু মহিতুল ইসলামকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি থাকতেন অনেকটা আত্মগোপনে। মামলার রায়ের দিন যত কাছে আসছিল, নিজের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর শঙ্কা তত বাড়ছিল।
কথায় কথায় আমাকে বললেন, ‘১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা করার পর থেকে পুলিশের পাহারায় ছিলাম। প্রথম চার বছর বাড়িতে পুলিশ ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ তুলে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হলো নানা অত্যাচার। অধিকাংশ দিন বাড়িতে থাকতাম না। রাতে ঢিল পড়ত বাড়িতে। আমার জীবন ছিল ফেরারি আসামির মতো। অচেনা লোকজন খুঁজতে আসত। ফোনে ভয়ভীতি দেখাত। ভয়ে থানা-পুলিশের ধারেকাছেও যেতাম না। বাড়ির সামনে ফুলের টব ছিল, একদিন কে বা কারা সেটা নিয়ে গেল। একটা পোষা ছাগল ছিল, সেটাও লুট হলো। একেকবার মনে হতো আর বাঁচতে পারব না, কিন্তু সাহস হারাইনি। বুকে পাথর চেপে সময় পার করেছি।’
মহিতুল ইসলামের আদিবাস ছিল যশোরে। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ ফজলুল হক মনি, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমদ ও সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে যে মুজিব বাহিনী গঠন করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন সেই বাহিনীর সদস্য। যুদ্ধের পরে ’৭২ সালে ঢাকায় এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর হাতে অস্ত্র জমা দিতে। তার আগে এসএসসি পাস করেন। তখন মুখ্য সচিব ছিলেন রুহুল কুদ্দুস। তিনি চাকরির প্রস্তাব দিলে রাজি হয়ে যান। তিন-চার দিনের মধ্যে চাকরি হয় শাখা সহকারী হিসেবে। এর মধ্যে একদিন মুখ্য সচিবের অফিস থেকে একটি ফাইল নিয়ে যান ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। প্রথম দেখায় তাঁকে পছন্দ করেন বঙ্গবন্ধু, সেদিনই তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ জুটে যায়। সেই থেকে তিনি হয়ে যান জাতির জনকের ব্যক্তিগত সহকারী।
জানতে চাইলাম, আপনি কী কাজ করতেন? তিনি বললেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাড়ির নিচতলায় অফিস ছিল, আমার কাজ ছিল রাষ্ট্রপতির পক্ষে ফোন ধরা আর প্রটোকল রক্ষা করা।’ ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের সেই ভয়াবহ রাতের কথা তুলতেই মহিতুল বললেন, “সেদিন রাতে বাসার মিস্ত্রি মতিন আমাকে ঘুম থেকে জাগায়। বলে, প্রেসিডেন্ট আমাকে ডাকছেন। সেরনিয়াবাতের বাসায় আক্রমণ হয়েছে, পুলিশ কন্ট্রোলরুমে ফোন করতে হবে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু নিজেই নিচে নেমে আসেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনের শেষ ফোনটি আমিই ধরিয়ে দিয়েছিলাম। না, সেই ফোনে কেউ আর সাড়া দেয়নি। বঙ্গবন্ধু আমার হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট বলছি, আমার বাড়ির সামনে গুলি হচ্ছে, তোমরা দেখো।’ এরপর তিনি ওপরে চলে যান।” তিনি বলেই যাচ্ছেন, “ততক্ষণে ৩২ নম্বরের আশপাশে গুলি শুরু হয়েছে। একপর্যায়ে শেখ কামাল নিচে নামেন। তিনি নামতে না নামতেই কয়েকজন ঘাতক বাড়ির ভেতরে ঢোকে। তারা কামালকে হাত উঁচিয়ে থাকতে বলে। ব্রাশফায়ারে আমার সামনেই নিথর হয়ে যায় শেখ কামালের শরীর। ওই গুলিতে আমি, ডিএসপি নুরুল ইসলাম ও এসবির এক দারোগা আহত হই। আমরা পালাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। ঘাতকেরা আমাদের চুল ধরে টেনে লাইনে দাঁড় করায়। একপর্যায়ে ওপর থেকে বঙ্গবন্ধুর গলা শোনা যায়। তিনি চিৎকার করে বলছেন, ‘তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?’ সঙ্গে সঙ্গে গুলির আওয়াজ। লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি। রাসেল দৌড়ে এসে এ অবস্থায় আমাকে জড়িয়ে ধরে। সে ভয়ে ভয়ে বলে, ‘ভাইয়া, ওরা আমাকে মারবে না তো।’ আমি তাকে অভয় দিই। এ সময় একজন ঘাতক তাকে জোর করে আমার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভবনের গেটের পুলিশ বক্সে নিয়ে বসিয়ে রাখে। একজন ঘাতক মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছি বলে ওপরে নিয়ে তাকে গুলি করে।”
তারপর কী হলো? প্রশ্ন করতেই মহিতুল বললেন, ‘সকাল ১০টা পর্যন্ত আমরা সবাই ৩২ নম্বরে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পা থেকে তখনো রক্ত ঝরছিল। এরপর আর্মির গাড়িতে করে আমাদের ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। সেখানে পাহারায় চিকিৎসা চলছিল। তিন দিন থাকার পর ফাঁক বুঝে পালিয়ে যশোরে চলে যাই। ছয় দিন পর যশোর থেকে সেনাবাহিনী আমাকে ঢাকায় ধরে আনে। গণভবনে তখন তদন্ত কমিশন কাজ করছিল। তারা আমাকে আটক করে জেরা করে।’
জানতে চাইলাম, আপনি কি ঘাতকদের নাম কমিশনের কাছে বলেছিলেন? তিনি বললেন, ‘না বলিনি। আমার মনে হয়েছিল এদের সবকিছু সাজানো, লোক দেখানো। এ কারণে তাদের জেরার জবাবে আমি কিছুই বলিনি। তখন খন্দকার মোশতাকের মুখ্য সচিব শাহরিয়ার জেড এ ইকবাল আমাকে বাঁচিয়েছিলেন। পরে আমি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেছি। ২০০১ সালের ১ এপ্রিল বিএনপি সরকার আমাকে চাকরিচ্যুত করে।’
আগে কখনো মামলা করতে চেয়েছিলেন—প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে ত্বরিত জবাব দিলেন মহিতুল। বললেন, “’৭৬ সালের ২৩ অক্টোবর একবার চেষ্টা করেছিলাম। সরকারের অনুমতি ছাড়া লালবাগ থানায় গিয়েছিলাম মামলা করতে। এজাহারের বিবরণ শুনে ডিউটি অফিসার গালে এক চড় কষিয়ে বললেন, ‘তুইও মরবি, আমাদেরও মারবি।’ এরপর অপেক্ষায় ছিলাম, ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর মামলা করলাম ধানমন্ডি থানায়।”
মহিতুল বলছিলেন, ‘ইতিহাসের এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না, এটা হতে পারে না। আমি মনে করেছিলাম, যত দিন বেঁচে আছি, আমার পক্ষে যা করার করে যাব। কিছুটা হলেও বঙ্গবন্ধু পরিবারের ঋণ শোধ করতে পারব। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ঘাতকদের সাজা কার্যকর দেখে যেতে পারলে আমি মরেও শান্তি পাব।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় হয়েছে, আসামিদের সাজাও কার্যকর হয়েছে। ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট তিনি মারা যান।
আর মাত্র এক দিন পরেই ১৫ আগস্টের সেই কালরাত। শোকাবহ এই দিনে অকুতোভয় মানুষটির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

অনেক দিন রিপোর্টিং করার সুবাদে রাজধানীর পথঘাট আমার কাছে হাতের রেখার মতো। অচেনা কোনো এলাকা নেই। মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে ১ নম্বর সড়কের মুখের তিনতলা বাড়িটি চিনতেও কোনো অসুবিধা
১৩ আগস্ট ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

অনেক দিন রিপোর্টিং করার সুবাদে রাজধানীর পথঘাট আমার কাছে হাতের রেখার মতো। অচেনা কোনো এলাকা নেই। মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে ১ নম্বর সড়কের মুখের তিনতলা বাড়িটি চিনতেও কোনো অসুবিধা
১৩ আগস্ট ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

অনেক দিন রিপোর্টিং করার সুবাদে রাজধানীর পথঘাট আমার কাছে হাতের রেখার মতো। অচেনা কোনো এলাকা নেই। মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে ১ নম্বর সড়কের মুখের তিনতলা বাড়িটি চিনতেও কোনো অসুবিধা
১৩ আগস্ট ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

অনেক দিন রিপোর্টিং করার সুবাদে রাজধানীর পথঘাট আমার কাছে হাতের রেখার মতো। অচেনা কোনো এলাকা নেই। মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে ১ নম্বর সড়কের মুখের তিনতলা বাড়িটি চিনতেও কোনো অসুবিধা
১৩ আগস্ট ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৩ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৬ দিন আগে