কামরুল হাসান

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ছয়-সাতজন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবেই বেওয়ারিশ হয়েছিলেন। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে। কে জানত, এত জনপ্রিয় মেয়েটি!
জনকণ্ঠের কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ছিলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। একদিন সন্ধ্যায় শার্টের বুক পকেটে করে একটি লাশের ছবি নিয়ে অফিসে হাজির। বললেন, ‘বস, এইডা একটু ছাপাইয়া দ্যান। দ্যাকতে বড় লোকের মাইয়ার মতন লাগে।' সালাউদ্দিনের বর্ণনা ছিল, চীন-মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের ওপর লাশটি পড়ে ছিল। কেরানীগঞ্জ থানার এএসআই শফিউদ্দিন লাশ উদ্ধার করেছেন। পুলিশ মনে করছে, মেয়েটি আত্মহত্যার জন্য বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে লাফ দিয়েছিল। কিন্তু পানিতে না পড়ে পিলারের ওপর পড়েছে। মিটফোর্ড মর্গে লাশ আছে, চার দিনে কেউ তাঁর খোঁজ নিতে আসেনি। পত্রিকায় ছবি ছাপা হলে হয়তো পরিচয় মিলবে। ২০০২ সালের কথা বলছি। তখন সংবাদপত্রে লাশের ছবি ছাপা নিয়ে অত রাখঢাক ছিল না। হরদম ছাপা হতো।
ছবিটি নিয়ে চিফ রিপোর্টারকে দেখালাম, পাত্তা পেলাম না। পরদিন বার্তা সম্পাদককে অনুরোধ করতেই বললেন, ‘পেজ টু-এ দিয়ে দেন।’ ‘এই তরুণীর পরিচয় নেই’ শিরোনামে তিন কলামজুড়ে ছাপা হলো অজ্ঞাত তরুণীর লাশের ছবি।
এটা ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর। ওই দিন দুপুরে ধানমন্ডি থেকে ফোন দিলেন অনু নামের এক যুবক। বললেন, ছাপা ছবিটির মূল ছবি তাঁরা দেখতে চান। সেটা দেখতে একটি পরিবার আমার অফিসে আসবে। কলাবাগান থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে তাঁরা এলেন সন্ধ্যার দিকে। ছবিটি হাতে নিতেই সুজন নামে একজন বলে উঠলেন, ‘ঠিকই তো আছে।’ পাশে থাকা এক নারী ছবির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর দেখাদেখি আরেকজনও শুরু করলেন কান্না। যতই চুপ করতে বলি, কেউ কথা শোনেন না। বললাম, এটা কার ছবি? কেউ বলেন না। তাঁদের সঙ্গে আসা অনু বললেন, এটা মডেল তিন্নি ওরফে সৈয়দা তানিয়া মাহবুবের ছবি। কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। মাঝবয়সী এক নারীকে দেখিয়ে বললেন, ‘উনি তিন্নির ফুফু’।
একজন একটু শান্ত হয়ে জানতে চাইলেন, এখন তাঁদের কী করতে হবে। বললাম, আগে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
ঘণ্টা দেড়েক পর অনুর ফোন: ‘ভাই, মর্গে তো লাশ নেই। আজ বিকেলে আঞ্জুমান জুরাইন কবরস্থানে দাফন কইরা ফেলছে।’ বললাম, এবার কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমও সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
পরদিন ফলোআপ করতে তিন্নিদের কলাবাগানের বাড়িতে গেলাম। মনে হলো সবাই খুব ভয়ে আছেন। কেউ কিছু বললেন না। কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হলো। তদন্ত শুরু করলেন এসআই কাইয়ুম আলী সরদার। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করলেন। পুলিশ ধরে নিয়েছিল, এ ঘটনার কয়েক দিন আগে তিন্নির সঙ্গে পিয়ালের ছাড়াছাড়ি হয়। সেই ক্ষোভেই পিয়াল মেয়েটিকে খুন করেছেন।
কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে পিয়ালের সঙ্গে কথা বলতেই পেয়ে গেলাম আসল খবর। পিয়ালের এক বন্ধু সে সময় থানায় ছিলেন। বললেন, নামকরা একটি পত্রিকার কাভার ফটো হওয়ার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান তিন্নি। এরপর খুব কম সময়ে তিনি অনেকগুলো নামী পণ্যের মডেল হন। তাঁর এই সাফল্যের পেছনের মানুষ ছিলেন স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়াল। তাঁদের তিন বছরের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে ছিল।
একদিন একটি পাঁচতারকা হোটেলের পার্টিতে এসে তিন্নির সঙ্গে পরিচয় হয় সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভির। অভির প্রেমে পড়ে যান তিন্নি। তখন অভি থাকতেন নিউ ইস্কাটনের প্রোপার্টি এনক্লেভের একটি ফ্ল্যাটে। সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন তিন্নি। অভির সঙ্গে কয়েকবার বিদেশেও যান। নতুন সম্পর্ক নিয়ে পিয়ালের সঙ্গে বিরোধ বাধে তিন্নির। তিন্নি সিদ্ধান্ত নেন পিয়ালকে ছেড়ে অভিকেই বিয়ে করবেন।
২০০২ সালের ৬ নভেম্বর পিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দেড় বছরের মেয়েকে স্বামীর কাছে রেখে অভির ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে চলে আসেন তিন্নি। সেখানে থাকার সময় ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে তিনি খুন হন।
এই খুনের মামলা যাঁরা তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের একজন সিআইডির এএসপি আরমান আলী। অভির গাড়িচালক, গৃহকর্মী ও ফ্ল্যাটের নিরাপত্তাকর্মীকে জেরা করেন তিনি। আরমান আলী আমাকে বলেছিলেন, ইস্কাটনের বাড়িতে এসে বিয়ের জন্য অভিকে চাপ দিতে থাকেন তিন্নি। কিন্তু অভি রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে গণমাধ্যমের কাছে এ ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভি তিন্নির মাথায় আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিন্নি। এরপর গভীর রাতে অভি সেই মরদেহ গাড়িতে তুলে বুড়িগঙ্গা ব্রিজের কাছে যান। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে লাশটি নদীতে ফেলে দেন। কিন্তু পানিতে না পড়ে লাশ পড়ে ব্রিজের পিলারের মাথার ওপর।
সাতজন তদন্তকারী এই মামলার তদন্ত করেন। ছয় বছর পর ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির এএসপি মোজাম্মেল হক। অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকার, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ও নাট্যকার এজাজ খান এই মামলার সাক্ষী ছিলেন। আরেক সাক্ষী ছিলেন শীর্ষসন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ইমন পুলিশকে বলেছিলেন, তিন্নি খুনের পর অভি ঢাকা থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে কলকাতায় যান। কলকাতায় তাঁর আশ্রয়ে থাকার সময় তিন্নিকে খুন করার কথা স্বীকার করেন অভি।
এবার অভিকে নিয়ে কিছু বলতেই হয়। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া গ্রামের আরশাদ আহমেদের চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে ছোট গোলাম ফারুক অভি। অসম্ভব মেধাবী অভি এসএসসিতে মেধাতালিকায় স্থান পান। ভাইবোনদের সবাই উচ্চশিক্ষিত, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ পদস্থ সরকারি চাকুরে। একজন নামকরা সাংবাদিক। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘হিফজুল বাহার’-এ সওয়ার হয়েছিলেন ছাত্রজীবনে। তারপর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে ভিড়ে যান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকও হন। আরেক ছাত্রনেতা নীরুর সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন বিশাল এক বাহিনী। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তাঁরা নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে পড়েন।
এরশাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ছাত্রদল প্রকাশ্যে থাকলেও অভি-নীরু গোপনে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করেন। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন অভি। এতে তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। জেলে এরশাদের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরশাদের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন অভি। ১৯৯০-এর ২৭ নভেম্বর এরশাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নেতৃত্ব দেন অভি-নীরু। ওই দিন গুলিতে ডা. মিলন নিহত হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। কয়েক দিন পর এরশাদের পতন হয়।
এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক সফিক উল্লাহ তাঁর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’তে লিখেছেন, এরশাদের এক সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল করতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে অভিদের জন্য সরকারি গুলি সরবরাহ করা হয়। পরে সেই গুলির কিছু অংশ রাজারবাগে ফেরতও দেওয়া হয়। রাজারবাগের অস্ত্রাগারের নথিতে এসব তথ্য রয়েছে।
ডা. মিলন হত্যার পর গোপনে কলকাতায় চলে যান অভি। ফিরে এসে বরিশাল-২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ওই আসনে বিএনপির মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছে হেরে যান।
অভির জীবন ছিল বেপরোয়া। বহু অভিনেত্রী, মডেল ও চিত্রনায়িকা তাঁর লালসার শিকার হয়েছেন। একবার ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করার অভিযোগে এক অভিনেত্রী তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। অভির সর্বশেষ শিকার মডেল তিন্নি।
অভির বিরুদ্ধে তিন্নি খুনের অভিযোগ ওঠে লাশ উদ্ধারের চার-পাঁচ দিন পর। এরপরই গা-ঢাকা দেন তিনি। শুনেছিলাম, একটি ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সহায়তায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে থিতু হন কানাডায়। রমনা থানার একটি অস্ত্র মামলায় অভির ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। তাঁকে ধরতে ইন্টারপোল কয়েক দফা রেড নোটিশ জারি করেছিল। সব মিলিয়ে পুলিশি তৎপরতা বলতে ছিল এটুকুই।
এই লেখাটা শেষ করার আগে তিন্নির ফেলে আসা পরিবারের খোঁজ নিলাম। তাঁর মেয়ে এখন বাবার সঙ্গে বিদেশে থাকেন। তিন্নিরা ছিলেন দুই বোন, ছোট বোন এয়ারহোস্টেস। তাঁর প্রবাসী বাবা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এখন দেশে একাই থাকেন। তিন্নির মা স্বামীকে ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গেছেন। কলাবাগানে ফুফুর যে বাড়িতে তিন্নিরা থাকতেন, অভির ভয়ে সেটাও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। এভাবে একটি খুন লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা একটি পরিবারকে। অথচ ঘটনার মূল হোতা অভি থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আসলে, ধর্মের কলও অনেক সময় বাতাসে নড়ে না।
আরও পড়ুন:

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ছয়-সাতজন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবেই বেওয়ারিশ হয়েছিলেন। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে। কে জানত, এত জনপ্রিয় মেয়েটি!
জনকণ্ঠের কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ছিলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। একদিন সন্ধ্যায় শার্টের বুক পকেটে করে একটি লাশের ছবি নিয়ে অফিসে হাজির। বললেন, ‘বস, এইডা একটু ছাপাইয়া দ্যান। দ্যাকতে বড় লোকের মাইয়ার মতন লাগে।' সালাউদ্দিনের বর্ণনা ছিল, চীন-মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের ওপর লাশটি পড়ে ছিল। কেরানীগঞ্জ থানার এএসআই শফিউদ্দিন লাশ উদ্ধার করেছেন। পুলিশ মনে করছে, মেয়েটি আত্মহত্যার জন্য বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে লাফ দিয়েছিল। কিন্তু পানিতে না পড়ে পিলারের ওপর পড়েছে। মিটফোর্ড মর্গে লাশ আছে, চার দিনে কেউ তাঁর খোঁজ নিতে আসেনি। পত্রিকায় ছবি ছাপা হলে হয়তো পরিচয় মিলবে। ২০০২ সালের কথা বলছি। তখন সংবাদপত্রে লাশের ছবি ছাপা নিয়ে অত রাখঢাক ছিল না। হরদম ছাপা হতো।
ছবিটি নিয়ে চিফ রিপোর্টারকে দেখালাম, পাত্তা পেলাম না। পরদিন বার্তা সম্পাদককে অনুরোধ করতেই বললেন, ‘পেজ টু-এ দিয়ে দেন।’ ‘এই তরুণীর পরিচয় নেই’ শিরোনামে তিন কলামজুড়ে ছাপা হলো অজ্ঞাত তরুণীর লাশের ছবি।
এটা ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর। ওই দিন দুপুরে ধানমন্ডি থেকে ফোন দিলেন অনু নামের এক যুবক। বললেন, ছাপা ছবিটির মূল ছবি তাঁরা দেখতে চান। সেটা দেখতে একটি পরিবার আমার অফিসে আসবে। কলাবাগান থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে তাঁরা এলেন সন্ধ্যার দিকে। ছবিটি হাতে নিতেই সুজন নামে একজন বলে উঠলেন, ‘ঠিকই তো আছে।’ পাশে থাকা এক নারী ছবির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর দেখাদেখি আরেকজনও শুরু করলেন কান্না। যতই চুপ করতে বলি, কেউ কথা শোনেন না। বললাম, এটা কার ছবি? কেউ বলেন না। তাঁদের সঙ্গে আসা অনু বললেন, এটা মডেল তিন্নি ওরফে সৈয়দা তানিয়া মাহবুবের ছবি। কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। মাঝবয়সী এক নারীকে দেখিয়ে বললেন, ‘উনি তিন্নির ফুফু’।
একজন একটু শান্ত হয়ে জানতে চাইলেন, এখন তাঁদের কী করতে হবে। বললাম, আগে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
ঘণ্টা দেড়েক পর অনুর ফোন: ‘ভাই, মর্গে তো লাশ নেই। আজ বিকেলে আঞ্জুমান জুরাইন কবরস্থানে দাফন কইরা ফেলছে।’ বললাম, এবার কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমও সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
পরদিন ফলোআপ করতে তিন্নিদের কলাবাগানের বাড়িতে গেলাম। মনে হলো সবাই খুব ভয়ে আছেন। কেউ কিছু বললেন না। কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হলো। তদন্ত শুরু করলেন এসআই কাইয়ুম আলী সরদার। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করলেন। পুলিশ ধরে নিয়েছিল, এ ঘটনার কয়েক দিন আগে তিন্নির সঙ্গে পিয়ালের ছাড়াছাড়ি হয়। সেই ক্ষোভেই পিয়াল মেয়েটিকে খুন করেছেন।
কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে পিয়ালের সঙ্গে কথা বলতেই পেয়ে গেলাম আসল খবর। পিয়ালের এক বন্ধু সে সময় থানায় ছিলেন। বললেন, নামকরা একটি পত্রিকার কাভার ফটো হওয়ার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান তিন্নি। এরপর খুব কম সময়ে তিনি অনেকগুলো নামী পণ্যের মডেল হন। তাঁর এই সাফল্যের পেছনের মানুষ ছিলেন স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়াল। তাঁদের তিন বছরের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে ছিল।
একদিন একটি পাঁচতারকা হোটেলের পার্টিতে এসে তিন্নির সঙ্গে পরিচয় হয় সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভির। অভির প্রেমে পড়ে যান তিন্নি। তখন অভি থাকতেন নিউ ইস্কাটনের প্রোপার্টি এনক্লেভের একটি ফ্ল্যাটে। সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন তিন্নি। অভির সঙ্গে কয়েকবার বিদেশেও যান। নতুন সম্পর্ক নিয়ে পিয়ালের সঙ্গে বিরোধ বাধে তিন্নির। তিন্নি সিদ্ধান্ত নেন পিয়ালকে ছেড়ে অভিকেই বিয়ে করবেন।
২০০২ সালের ৬ নভেম্বর পিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দেড় বছরের মেয়েকে স্বামীর কাছে রেখে অভির ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে চলে আসেন তিন্নি। সেখানে থাকার সময় ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে তিনি খুন হন।
এই খুনের মামলা যাঁরা তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের একজন সিআইডির এএসপি আরমান আলী। অভির গাড়িচালক, গৃহকর্মী ও ফ্ল্যাটের নিরাপত্তাকর্মীকে জেরা করেন তিনি। আরমান আলী আমাকে বলেছিলেন, ইস্কাটনের বাড়িতে এসে বিয়ের জন্য অভিকে চাপ দিতে থাকেন তিন্নি। কিন্তু অভি রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে গণমাধ্যমের কাছে এ ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভি তিন্নির মাথায় আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিন্নি। এরপর গভীর রাতে অভি সেই মরদেহ গাড়িতে তুলে বুড়িগঙ্গা ব্রিজের কাছে যান। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে লাশটি নদীতে ফেলে দেন। কিন্তু পানিতে না পড়ে লাশ পড়ে ব্রিজের পিলারের মাথার ওপর।
সাতজন তদন্তকারী এই মামলার তদন্ত করেন। ছয় বছর পর ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির এএসপি মোজাম্মেল হক। অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকার, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ও নাট্যকার এজাজ খান এই মামলার সাক্ষী ছিলেন। আরেক সাক্ষী ছিলেন শীর্ষসন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ইমন পুলিশকে বলেছিলেন, তিন্নি খুনের পর অভি ঢাকা থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে কলকাতায় যান। কলকাতায় তাঁর আশ্রয়ে থাকার সময় তিন্নিকে খুন করার কথা স্বীকার করেন অভি।
এবার অভিকে নিয়ে কিছু বলতেই হয়। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া গ্রামের আরশাদ আহমেদের চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে ছোট গোলাম ফারুক অভি। অসম্ভব মেধাবী অভি এসএসসিতে মেধাতালিকায় স্থান পান। ভাইবোনদের সবাই উচ্চশিক্ষিত, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ পদস্থ সরকারি চাকুরে। একজন নামকরা সাংবাদিক। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘হিফজুল বাহার’-এ সওয়ার হয়েছিলেন ছাত্রজীবনে। তারপর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে ভিড়ে যান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকও হন। আরেক ছাত্রনেতা নীরুর সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন বিশাল এক বাহিনী। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তাঁরা নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে পড়েন।
এরশাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ছাত্রদল প্রকাশ্যে থাকলেও অভি-নীরু গোপনে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করেন। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন অভি। এতে তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। জেলে এরশাদের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরশাদের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন অভি। ১৯৯০-এর ২৭ নভেম্বর এরশাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নেতৃত্ব দেন অভি-নীরু। ওই দিন গুলিতে ডা. মিলন নিহত হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। কয়েক দিন পর এরশাদের পতন হয়।
এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক সফিক উল্লাহ তাঁর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’তে লিখেছেন, এরশাদের এক সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল করতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে অভিদের জন্য সরকারি গুলি সরবরাহ করা হয়। পরে সেই গুলির কিছু অংশ রাজারবাগে ফেরতও দেওয়া হয়। রাজারবাগের অস্ত্রাগারের নথিতে এসব তথ্য রয়েছে।
ডা. মিলন হত্যার পর গোপনে কলকাতায় চলে যান অভি। ফিরে এসে বরিশাল-২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ওই আসনে বিএনপির মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছে হেরে যান।
অভির জীবন ছিল বেপরোয়া। বহু অভিনেত্রী, মডেল ও চিত্রনায়িকা তাঁর লালসার শিকার হয়েছেন। একবার ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করার অভিযোগে এক অভিনেত্রী তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। অভির সর্বশেষ শিকার মডেল তিন্নি।
অভির বিরুদ্ধে তিন্নি খুনের অভিযোগ ওঠে লাশ উদ্ধারের চার-পাঁচ দিন পর। এরপরই গা-ঢাকা দেন তিনি। শুনেছিলাম, একটি ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সহায়তায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে থিতু হন কানাডায়। রমনা থানার একটি অস্ত্র মামলায় অভির ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। তাঁকে ধরতে ইন্টারপোল কয়েক দফা রেড নোটিশ জারি করেছিল। সব মিলিয়ে পুলিশি তৎপরতা বলতে ছিল এটুকুই।
এই লেখাটা শেষ করার আগে তিন্নির ফেলে আসা পরিবারের খোঁজ নিলাম। তাঁর মেয়ে এখন বাবার সঙ্গে বিদেশে থাকেন। তিন্নিরা ছিলেন দুই বোন, ছোট বোন এয়ারহোস্টেস। তাঁর প্রবাসী বাবা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এখন দেশে একাই থাকেন। তিন্নির মা স্বামীকে ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গেছেন। কলাবাগানে ফুফুর যে বাড়িতে তিন্নিরা থাকতেন, অভির ভয়ে সেটাও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। এভাবে একটি খুন লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা একটি পরিবারকে। অথচ ঘটনার মূল হোতা অভি থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আসলে, ধর্মের কলও অনেক সময় বাতাসে নড়ে না।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ছয়-সাতজন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবেই বেওয়ারিশ হয়েছিলেন। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে। কে জানত, এত জনপ্রিয় মেয়েটি!
জনকণ্ঠের কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ছিলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। একদিন সন্ধ্যায় শার্টের বুক পকেটে করে একটি লাশের ছবি নিয়ে অফিসে হাজির। বললেন, ‘বস, এইডা একটু ছাপাইয়া দ্যান। দ্যাকতে বড় লোকের মাইয়ার মতন লাগে।' সালাউদ্দিনের বর্ণনা ছিল, চীন-মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের ওপর লাশটি পড়ে ছিল। কেরানীগঞ্জ থানার এএসআই শফিউদ্দিন লাশ উদ্ধার করেছেন। পুলিশ মনে করছে, মেয়েটি আত্মহত্যার জন্য বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে লাফ দিয়েছিল। কিন্তু পানিতে না পড়ে পিলারের ওপর পড়েছে। মিটফোর্ড মর্গে লাশ আছে, চার দিনে কেউ তাঁর খোঁজ নিতে আসেনি। পত্রিকায় ছবি ছাপা হলে হয়তো পরিচয় মিলবে। ২০০২ সালের কথা বলছি। তখন সংবাদপত্রে লাশের ছবি ছাপা নিয়ে অত রাখঢাক ছিল না। হরদম ছাপা হতো।
ছবিটি নিয়ে চিফ রিপোর্টারকে দেখালাম, পাত্তা পেলাম না। পরদিন বার্তা সম্পাদককে অনুরোধ করতেই বললেন, ‘পেজ টু-এ দিয়ে দেন।’ ‘এই তরুণীর পরিচয় নেই’ শিরোনামে তিন কলামজুড়ে ছাপা হলো অজ্ঞাত তরুণীর লাশের ছবি।
এটা ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর। ওই দিন দুপুরে ধানমন্ডি থেকে ফোন দিলেন অনু নামের এক যুবক। বললেন, ছাপা ছবিটির মূল ছবি তাঁরা দেখতে চান। সেটা দেখতে একটি পরিবার আমার অফিসে আসবে। কলাবাগান থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে তাঁরা এলেন সন্ধ্যার দিকে। ছবিটি হাতে নিতেই সুজন নামে একজন বলে উঠলেন, ‘ঠিকই তো আছে।’ পাশে থাকা এক নারী ছবির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর দেখাদেখি আরেকজনও শুরু করলেন কান্না। যতই চুপ করতে বলি, কেউ কথা শোনেন না। বললাম, এটা কার ছবি? কেউ বলেন না। তাঁদের সঙ্গে আসা অনু বললেন, এটা মডেল তিন্নি ওরফে সৈয়দা তানিয়া মাহবুবের ছবি। কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। মাঝবয়সী এক নারীকে দেখিয়ে বললেন, ‘উনি তিন্নির ফুফু’।
একজন একটু শান্ত হয়ে জানতে চাইলেন, এখন তাঁদের কী করতে হবে। বললাম, আগে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
ঘণ্টা দেড়েক পর অনুর ফোন: ‘ভাই, মর্গে তো লাশ নেই। আজ বিকেলে আঞ্জুমান জুরাইন কবরস্থানে দাফন কইরা ফেলছে।’ বললাম, এবার কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমও সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
পরদিন ফলোআপ করতে তিন্নিদের কলাবাগানের বাড়িতে গেলাম। মনে হলো সবাই খুব ভয়ে আছেন। কেউ কিছু বললেন না। কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হলো। তদন্ত শুরু করলেন এসআই কাইয়ুম আলী সরদার। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করলেন। পুলিশ ধরে নিয়েছিল, এ ঘটনার কয়েক দিন আগে তিন্নির সঙ্গে পিয়ালের ছাড়াছাড়ি হয়। সেই ক্ষোভেই পিয়াল মেয়েটিকে খুন করেছেন।
কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে পিয়ালের সঙ্গে কথা বলতেই পেয়ে গেলাম আসল খবর। পিয়ালের এক বন্ধু সে সময় থানায় ছিলেন। বললেন, নামকরা একটি পত্রিকার কাভার ফটো হওয়ার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান তিন্নি। এরপর খুব কম সময়ে তিনি অনেকগুলো নামী পণ্যের মডেল হন। তাঁর এই সাফল্যের পেছনের মানুষ ছিলেন স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়াল। তাঁদের তিন বছরের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে ছিল।
একদিন একটি পাঁচতারকা হোটেলের পার্টিতে এসে তিন্নির সঙ্গে পরিচয় হয় সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভির। অভির প্রেমে পড়ে যান তিন্নি। তখন অভি থাকতেন নিউ ইস্কাটনের প্রোপার্টি এনক্লেভের একটি ফ্ল্যাটে। সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন তিন্নি। অভির সঙ্গে কয়েকবার বিদেশেও যান। নতুন সম্পর্ক নিয়ে পিয়ালের সঙ্গে বিরোধ বাধে তিন্নির। তিন্নি সিদ্ধান্ত নেন পিয়ালকে ছেড়ে অভিকেই বিয়ে করবেন।
২০০২ সালের ৬ নভেম্বর পিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দেড় বছরের মেয়েকে স্বামীর কাছে রেখে অভির ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে চলে আসেন তিন্নি। সেখানে থাকার সময় ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে তিনি খুন হন।
এই খুনের মামলা যাঁরা তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের একজন সিআইডির এএসপি আরমান আলী। অভির গাড়িচালক, গৃহকর্মী ও ফ্ল্যাটের নিরাপত্তাকর্মীকে জেরা করেন তিনি। আরমান আলী আমাকে বলেছিলেন, ইস্কাটনের বাড়িতে এসে বিয়ের জন্য অভিকে চাপ দিতে থাকেন তিন্নি। কিন্তু অভি রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে গণমাধ্যমের কাছে এ ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভি তিন্নির মাথায় আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিন্নি। এরপর গভীর রাতে অভি সেই মরদেহ গাড়িতে তুলে বুড়িগঙ্গা ব্রিজের কাছে যান। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে লাশটি নদীতে ফেলে দেন। কিন্তু পানিতে না পড়ে লাশ পড়ে ব্রিজের পিলারের মাথার ওপর।
সাতজন তদন্তকারী এই মামলার তদন্ত করেন। ছয় বছর পর ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির এএসপি মোজাম্মেল হক। অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকার, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ও নাট্যকার এজাজ খান এই মামলার সাক্ষী ছিলেন। আরেক সাক্ষী ছিলেন শীর্ষসন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ইমন পুলিশকে বলেছিলেন, তিন্নি খুনের পর অভি ঢাকা থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে কলকাতায় যান। কলকাতায় তাঁর আশ্রয়ে থাকার সময় তিন্নিকে খুন করার কথা স্বীকার করেন অভি।
এবার অভিকে নিয়ে কিছু বলতেই হয়। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া গ্রামের আরশাদ আহমেদের চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে ছোট গোলাম ফারুক অভি। অসম্ভব মেধাবী অভি এসএসসিতে মেধাতালিকায় স্থান পান। ভাইবোনদের সবাই উচ্চশিক্ষিত, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ পদস্থ সরকারি চাকুরে। একজন নামকরা সাংবাদিক। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘হিফজুল বাহার’-এ সওয়ার হয়েছিলেন ছাত্রজীবনে। তারপর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে ভিড়ে যান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকও হন। আরেক ছাত্রনেতা নীরুর সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন বিশাল এক বাহিনী। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তাঁরা নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে পড়েন।
এরশাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ছাত্রদল প্রকাশ্যে থাকলেও অভি-নীরু গোপনে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করেন। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন অভি। এতে তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। জেলে এরশাদের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরশাদের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন অভি। ১৯৯০-এর ২৭ নভেম্বর এরশাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নেতৃত্ব দেন অভি-নীরু। ওই দিন গুলিতে ডা. মিলন নিহত হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। কয়েক দিন পর এরশাদের পতন হয়।
এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক সফিক উল্লাহ তাঁর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’তে লিখেছেন, এরশাদের এক সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল করতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে অভিদের জন্য সরকারি গুলি সরবরাহ করা হয়। পরে সেই গুলির কিছু অংশ রাজারবাগে ফেরতও দেওয়া হয়। রাজারবাগের অস্ত্রাগারের নথিতে এসব তথ্য রয়েছে।
ডা. মিলন হত্যার পর গোপনে কলকাতায় চলে যান অভি। ফিরে এসে বরিশাল-২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ওই আসনে বিএনপির মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছে হেরে যান।
অভির জীবন ছিল বেপরোয়া। বহু অভিনেত্রী, মডেল ও চিত্রনায়িকা তাঁর লালসার শিকার হয়েছেন। একবার ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করার অভিযোগে এক অভিনেত্রী তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। অভির সর্বশেষ শিকার মডেল তিন্নি।
অভির বিরুদ্ধে তিন্নি খুনের অভিযোগ ওঠে লাশ উদ্ধারের চার-পাঁচ দিন পর। এরপরই গা-ঢাকা দেন তিনি। শুনেছিলাম, একটি ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সহায়তায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে থিতু হন কানাডায়। রমনা থানার একটি অস্ত্র মামলায় অভির ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। তাঁকে ধরতে ইন্টারপোল কয়েক দফা রেড নোটিশ জারি করেছিল। সব মিলিয়ে পুলিশি তৎপরতা বলতে ছিল এটুকুই।
এই লেখাটা শেষ করার আগে তিন্নির ফেলে আসা পরিবারের খোঁজ নিলাম। তাঁর মেয়ে এখন বাবার সঙ্গে বিদেশে থাকেন। তিন্নিরা ছিলেন দুই বোন, ছোট বোন এয়ারহোস্টেস। তাঁর প্রবাসী বাবা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এখন দেশে একাই থাকেন। তিন্নির মা স্বামীকে ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গেছেন। কলাবাগানে ফুফুর যে বাড়িতে তিন্নিরা থাকতেন, অভির ভয়ে সেটাও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। এভাবে একটি খুন লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা একটি পরিবারকে। অথচ ঘটনার মূল হোতা অভি থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আসলে, ধর্মের কলও অনেক সময় বাতাসে নড়ে না।
আরও পড়ুন:

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ছয়-সাতজন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবেই বেওয়ারিশ হয়েছিলেন। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে। কে জানত, এত জনপ্রিয় মেয়েটি!
জনকণ্ঠের কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ছিলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। একদিন সন্ধ্যায় শার্টের বুক পকেটে করে একটি লাশের ছবি নিয়ে অফিসে হাজির। বললেন, ‘বস, এইডা একটু ছাপাইয়া দ্যান। দ্যাকতে বড় লোকের মাইয়ার মতন লাগে।' সালাউদ্দিনের বর্ণনা ছিল, চীন-মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের ওপর লাশটি পড়ে ছিল। কেরানীগঞ্জ থানার এএসআই শফিউদ্দিন লাশ উদ্ধার করেছেন। পুলিশ মনে করছে, মেয়েটি আত্মহত্যার জন্য বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে লাফ দিয়েছিল। কিন্তু পানিতে না পড়ে পিলারের ওপর পড়েছে। মিটফোর্ড মর্গে লাশ আছে, চার দিনে কেউ তাঁর খোঁজ নিতে আসেনি। পত্রিকায় ছবি ছাপা হলে হয়তো পরিচয় মিলবে। ২০০২ সালের কথা বলছি। তখন সংবাদপত্রে লাশের ছবি ছাপা নিয়ে অত রাখঢাক ছিল না। হরদম ছাপা হতো।
ছবিটি নিয়ে চিফ রিপোর্টারকে দেখালাম, পাত্তা পেলাম না। পরদিন বার্তা সম্পাদককে অনুরোধ করতেই বললেন, ‘পেজ টু-এ দিয়ে দেন।’ ‘এই তরুণীর পরিচয় নেই’ শিরোনামে তিন কলামজুড়ে ছাপা হলো অজ্ঞাত তরুণীর লাশের ছবি।
এটা ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর। ওই দিন দুপুরে ধানমন্ডি থেকে ফোন দিলেন অনু নামের এক যুবক। বললেন, ছাপা ছবিটির মূল ছবি তাঁরা দেখতে চান। সেটা দেখতে একটি পরিবার আমার অফিসে আসবে। কলাবাগান থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে তাঁরা এলেন সন্ধ্যার দিকে। ছবিটি হাতে নিতেই সুজন নামে একজন বলে উঠলেন, ‘ঠিকই তো আছে।’ পাশে থাকা এক নারী ছবির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর দেখাদেখি আরেকজনও শুরু করলেন কান্না। যতই চুপ করতে বলি, কেউ কথা শোনেন না। বললাম, এটা কার ছবি? কেউ বলেন না। তাঁদের সঙ্গে আসা অনু বললেন, এটা মডেল তিন্নি ওরফে সৈয়দা তানিয়া মাহবুবের ছবি। কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। মাঝবয়সী এক নারীকে দেখিয়ে বললেন, ‘উনি তিন্নির ফুফু’।
একজন একটু শান্ত হয়ে জানতে চাইলেন, এখন তাঁদের কী করতে হবে। বললাম, আগে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
ঘণ্টা দেড়েক পর অনুর ফোন: ‘ভাই, মর্গে তো লাশ নেই। আজ বিকেলে আঞ্জুমান জুরাইন কবরস্থানে দাফন কইরা ফেলছে।’ বললাম, এবার কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমও সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
পরদিন ফলোআপ করতে তিন্নিদের কলাবাগানের বাড়িতে গেলাম। মনে হলো সবাই খুব ভয়ে আছেন। কেউ কিছু বললেন না। কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হলো। তদন্ত শুরু করলেন এসআই কাইয়ুম আলী সরদার। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করলেন। পুলিশ ধরে নিয়েছিল, এ ঘটনার কয়েক দিন আগে তিন্নির সঙ্গে পিয়ালের ছাড়াছাড়ি হয়। সেই ক্ষোভেই পিয়াল মেয়েটিকে খুন করেছেন।
কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে পিয়ালের সঙ্গে কথা বলতেই পেয়ে গেলাম আসল খবর। পিয়ালের এক বন্ধু সে সময় থানায় ছিলেন। বললেন, নামকরা একটি পত্রিকার কাভার ফটো হওয়ার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান তিন্নি। এরপর খুব কম সময়ে তিনি অনেকগুলো নামী পণ্যের মডেল হন। তাঁর এই সাফল্যের পেছনের মানুষ ছিলেন স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়াল। তাঁদের তিন বছরের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে ছিল।
একদিন একটি পাঁচতারকা হোটেলের পার্টিতে এসে তিন্নির সঙ্গে পরিচয় হয় সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভির। অভির প্রেমে পড়ে যান তিন্নি। তখন অভি থাকতেন নিউ ইস্কাটনের প্রোপার্টি এনক্লেভের একটি ফ্ল্যাটে। সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন তিন্নি। অভির সঙ্গে কয়েকবার বিদেশেও যান। নতুন সম্পর্ক নিয়ে পিয়ালের সঙ্গে বিরোধ বাধে তিন্নির। তিন্নি সিদ্ধান্ত নেন পিয়ালকে ছেড়ে অভিকেই বিয়ে করবেন।
২০০২ সালের ৬ নভেম্বর পিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দেড় বছরের মেয়েকে স্বামীর কাছে রেখে অভির ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে চলে আসেন তিন্নি। সেখানে থাকার সময় ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে তিনি খুন হন।
এই খুনের মামলা যাঁরা তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের একজন সিআইডির এএসপি আরমান আলী। অভির গাড়িচালক, গৃহকর্মী ও ফ্ল্যাটের নিরাপত্তাকর্মীকে জেরা করেন তিনি। আরমান আলী আমাকে বলেছিলেন, ইস্কাটনের বাড়িতে এসে বিয়ের জন্য অভিকে চাপ দিতে থাকেন তিন্নি। কিন্তু অভি রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে গণমাধ্যমের কাছে এ ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভি তিন্নির মাথায় আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিন্নি। এরপর গভীর রাতে অভি সেই মরদেহ গাড়িতে তুলে বুড়িগঙ্গা ব্রিজের কাছে যান। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে লাশটি নদীতে ফেলে দেন। কিন্তু পানিতে না পড়ে লাশ পড়ে ব্রিজের পিলারের মাথার ওপর।
সাতজন তদন্তকারী এই মামলার তদন্ত করেন। ছয় বছর পর ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির এএসপি মোজাম্মেল হক। অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকার, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ও নাট্যকার এজাজ খান এই মামলার সাক্ষী ছিলেন। আরেক সাক্ষী ছিলেন শীর্ষসন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ইমন পুলিশকে বলেছিলেন, তিন্নি খুনের পর অভি ঢাকা থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে কলকাতায় যান। কলকাতায় তাঁর আশ্রয়ে থাকার সময় তিন্নিকে খুন করার কথা স্বীকার করেন অভি।
এবার অভিকে নিয়ে কিছু বলতেই হয়। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া গ্রামের আরশাদ আহমেদের চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে ছোট গোলাম ফারুক অভি। অসম্ভব মেধাবী অভি এসএসসিতে মেধাতালিকায় স্থান পান। ভাইবোনদের সবাই উচ্চশিক্ষিত, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ পদস্থ সরকারি চাকুরে। একজন নামকরা সাংবাদিক। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘হিফজুল বাহার’-এ সওয়ার হয়েছিলেন ছাত্রজীবনে। তারপর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে ভিড়ে যান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকও হন। আরেক ছাত্রনেতা নীরুর সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন বিশাল এক বাহিনী। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তাঁরা নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে পড়েন।
এরশাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ছাত্রদল প্রকাশ্যে থাকলেও অভি-নীরু গোপনে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করেন। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন অভি। এতে তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। জেলে এরশাদের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরশাদের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন অভি। ১৯৯০-এর ২৭ নভেম্বর এরশাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নেতৃত্ব দেন অভি-নীরু। ওই দিন গুলিতে ডা. মিলন নিহত হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। কয়েক দিন পর এরশাদের পতন হয়।
এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক সফিক উল্লাহ তাঁর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’তে লিখেছেন, এরশাদের এক সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল করতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে অভিদের জন্য সরকারি গুলি সরবরাহ করা হয়। পরে সেই গুলির কিছু অংশ রাজারবাগে ফেরতও দেওয়া হয়। রাজারবাগের অস্ত্রাগারের নথিতে এসব তথ্য রয়েছে।
ডা. মিলন হত্যার পর গোপনে কলকাতায় চলে যান অভি। ফিরে এসে বরিশাল-২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ওই আসনে বিএনপির মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছে হেরে যান।
অভির জীবন ছিল বেপরোয়া। বহু অভিনেত্রী, মডেল ও চিত্রনায়িকা তাঁর লালসার শিকার হয়েছেন। একবার ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করার অভিযোগে এক অভিনেত্রী তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। অভির সর্বশেষ শিকার মডেল তিন্নি।
অভির বিরুদ্ধে তিন্নি খুনের অভিযোগ ওঠে লাশ উদ্ধারের চার-পাঁচ দিন পর। এরপরই গা-ঢাকা দেন তিনি। শুনেছিলাম, একটি ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সহায়তায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে থিতু হন কানাডায়। রমনা থানার একটি অস্ত্র মামলায় অভির ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। তাঁকে ধরতে ইন্টারপোল কয়েক দফা রেড নোটিশ জারি করেছিল। সব মিলিয়ে পুলিশি তৎপরতা বলতে ছিল এটুকুই।
এই লেখাটা শেষ করার আগে তিন্নির ফেলে আসা পরিবারের খোঁজ নিলাম। তাঁর মেয়ে এখন বাবার সঙ্গে বিদেশে থাকেন। তিন্নিরা ছিলেন দুই বোন, ছোট বোন এয়ারহোস্টেস। তাঁর প্রবাসী বাবা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এখন দেশে একাই থাকেন। তিন্নির মা স্বামীকে ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গেছেন। কলাবাগানে ফুফুর যে বাড়িতে তিন্নিরা থাকতেন, অভির ভয়ে সেটাও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। এভাবে একটি খুন লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা একটি পরিবারকে। অথচ ঘটনার মূল হোতা অভি থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আসলে, ধর্মের কলও অনেক সময় বাতাসে নড়ে না।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ৬-৭ জন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবে বেওয়ারিশ হয়েছিল। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে।
৩০ অক্টোবর ২০২১
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ৬-৭ জন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবে বেওয়ারিশ হয়েছিল। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে।
৩০ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ৬-৭ জন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবে বেওয়ারিশ হয়েছিল। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে।
৩০ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ৬-৭ জন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবে বেওয়ারিশ হয়েছিল। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে।
৩০ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে