কামরুল হাসান
দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না।
টানেলের মুখে আলোর দেখা মেলে ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকালে। ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিকের হোস্টেল থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুর রহমানের আপন ভাই, জেএমবির সামরিক প্রধান আতাউর রহমান সানি। সানিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ ক্লু—জেএমবির মজলিশে শুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ জানেন আবদুর রহমান কোথায় আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় হাফেজ মাহমুদকে পাকড়াওয়ের অভিযান। টানা দুই মাস চেষ্টার পর র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিনের পাতা ফাঁদে পা দেন হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে ধরা হয় ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগার থেকে।
শুরু হয় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু হাফেজ অটল। শায়খ রহমানের অবস্থান কিছুতেই বলবেন না। একপর্যায়ে শায়খের ফোন নম্বর জানাতে রাজি হন। র্যাবের আইটি শাখার মেজর জোহা খোঁজ নেন, নম্বরটি সিলেটের এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায়। শুরু হয়ে গেল জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান। মঙ্গলবার, বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকজনকে দু-পাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল গুলজার আমাকে ফোন করেন। চেনা আওয়াজ : ‘ওস্তাদ, ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আগাম ক্লু দিয়ে রাখতেন। তাঁর ফোন পেয়ে তৈরি হয়ে থাকি। নতুন অভিযান, নতুন খবরের প্রত্যাশা।
তার আগে বলে রাখি, এই ভয়ংকর জঙ্গি নেতাকে ধরার অভিযানটি ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। অভিযানের আগেও ছিল দীর্ঘ গোয়েন্দা তৎপরতা। গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই অভিযানের পরতে পরতে ছিল চমকপ্রদ সব তথ্য। তবে সেই সব কাহিনি বলার আগে শায়খ আবদুর রহমানের ব্যক্তিগত তথ্যটা একটু ঝালিয়ে নিতে পারি।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের মূলনীতি ও ধর্মপ্রচার বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া শায়খ আবদুর রহমানের দিনকাল ভালোই চলছিল। ব্যবসাও করছিলেন বেশ। ১৯৯৮ সালে রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটির পরিচালক আকরামুজ্জামানের সঙ্গে আলাপের পর তিনি তথাকথিত জিহাদের স্বপ্ন দেখেন। এ জন্য পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার নেতা আবদুল করিম টুন্ডার সঙ্গেও বৈঠক করেন। এরপর ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে ছয় সঙ্গী নিয়ে গঠন করেন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ—জেএমবি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে সারা দেশের ৬৩ জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় তাদের হাতে ৭৩ জন নিহত আর আহত হয় প্রায় ৮০০ লোক। পরে দেশ-বিদেশের চাপে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ করে।
এবার অভিযানে ফিরে আসি। সিলেটে ততক্ষণে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোমিন সদর দপ্তরের নির্দেশ পেয়ে এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায় ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলছেন। লে. কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের দলটি সিলেটে পৌঁছায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টায়। মেজর আতিক, মেজর মানিক, মেজর জাভেদ, মেজর ওয়াসি, ক্যাপ্টেন তানভির ও ক্যাপ্টেন তোফাজ্জলের মতো একঝাঁক সাহসী অফিসার সেই দলে। সবার হাতে ভারী অস্ত্র, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি সবাই।
র্যাবের আড়াই শ সদস্য সিলেট নগরীর টিলাগড় ও শিবগঞ্জ এলাকার ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রতিটি সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নেন। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় বাড়ি বাড়ি চিরুনি তল্লাশি। কোনো কিছুই যেন তল্লাশি থেকে বাদ না পড়ে। আস্তে আস্তে তল্লাশির পরিধি কমিয়ে এনে টিলাগড়, শাপলাবাগ, কল্যাণপুর, কালশি ও বাজপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীভূত করা হয়।
সবার হাতে হাতে শায়খ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ছবিসংবলিত লিফলেট। রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে টুলটিকর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় আবদুস সালাম সড়কের ২২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে প্রথম বাধা পায় র্যাব। এক ব্যক্তি ছুরি হাতে তেড়ে এসে বলে : ‘এগোলে খারাপ হবে।’ এরপর যা বোঝার বুঝে যায় সবাই। অভিযান তখন কেন্দ্রীভূত হয় এই বাড়ি ঘিরে। বাড়ির নাম ‘সূর্য্য দীঘল বাড়ী’।
দ্রুত বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। আশপাশের বাড়িতেও অবস্থান নেন অনেকে। নিয়ে আসা হয় ভারী অস্ত্র ও লাইফ সাপোর্ট জ্যাকেট। রাত পৌনে ১টার দিকে মাইকে সূর্য্য দীঘল বাড়ীর লোকজনকে বেরিয়ে আসতে বললেও কেউ সাড়া দেয় না। তাদের নীরবতায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে বাড়ির মালিক লন্ডনপ্রবাসী আবদুল হকের ছোট ভাই মইনুল হককে বাইরে থেকে ডেকে আনা হয়। তিনি মুখে মাইক লাগিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া হৃদয়ের নাম ধরে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তাতেও কাজ হয় না। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুন নবীকে দিয়ে ডাকানো হয়; কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
রাত ২টার দিকে একবার বাড়ির পেছনে দরজা খোলার শব্দ হয়। র্যাব সদস্যরা সচকিত হয়ে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধও হয়ে যায়। রাত ২টা ১০ মিনিটে হঠাৎ করে বাড়ির ভেতর থেকে একজন বয়স্ক মানুষ ভারী গলায় দোয়া-দরুদ পড়তে শুরু করেন। কর্নেল গুলজার তখন ডাক দেন : ‘আবদুর রহমান বেরিয়ে আসুন।’ বাড়ির ভেতর থেকে ভারী গলার আওয়াজ : ‘ওই কাফের! তোর মুখে আমার নাম মানায় না, আমাকে মুজাহিদ বল।’
বুঝতে বাকি থাকে না, এটাই শায়খ আবদুর রহমানের কণ্ঠ। শেষ হয় প্রথম রাত। পরদিন বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার চেষ্টা। আবার রাত আসে। কথা বললেও আত্মসমর্পণে রাজি হন না শায়খ রহমান। ততক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গেছে। সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বাড়ির ভেতরে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরপর চার-পাঁচটা বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত নিয়ে আসা হয় দালান ভাঙার যন্ত্রপাতি। সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙা হয় দক্ষিণের একটি জানালা। বৈদ্যুতিক কাটার এনে ছাদ ফুটো করা হয়। প্রথমে আয়না লাগিয়ে, পরে রশি দিয়ে ক্যামেরা নামিয়ে দেখা হয়—ভেতরে কী আছে। দেখা যায়, একটা বিছানা থেকে তার বেরিয়ে আছে। শুরু হয় হইচই—নিশ্চয়ই সারা বাড়িতে বোমা পাতা আছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা নিয়ে আসেন বড় বড় বড়শি। ফুটো দিয়ে নামিয়ে বিছানা টেনে তুলে দেখেন, সব ভুয়া যন্ত্রপাতিতে সাজানো।
দুপুরের দিকে একের পর এক কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় বাড়ির ভেতরে। সেই গ্যাসে টিকতে না পেরে বেরিয়ে আসেন শায়খের স্ত্রী নূরজাহান বেগম রূপা, ছেলে নাবিল (১৬), মাহমুদ (১৩), ফুয়াদ (১০) ও দেড় বছরের আহাম্মদ। সিলেটের তখনকার জেলা প্রশাসক এম ফয়সল আলম শায়খের স্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি আপনার স্বামীকে বেরিয়ে আসতে বলেন।’ রূপা বলেন, ‘আমার কথা তিনি শুনবেন না। আসলে উনি কারও কথা শোনেন না।’ জেলা প্রশাসক পীড়াপীড়ি করেন। এবার শায়খের স্ত্রী মুখে মাইক লাগিয়ে বলেন: ‘শুনছেন, ওনারা আপনাকে বের হতে বলছেন, আপনি বের হয়ে আসেন।’ স্ত্রীর কথায়ও কান দেন না শায়খ।
আবার রাত আসে। হঠাৎ শোরগোল পড়ে যায়। চারদিকে আতরের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। একজন র্যাব সদস্য সে খবর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। তিনি জানান তাঁর ঊর্ধ্বতনকে। সন্দেহ জাগে—শায়খ কি তবে আতর-গোলাপ মেখে আত্মঘাতী হলেন? আলোচনা শুরু হয়, অভিযান ব্যর্থ হবে? শুরু হয় গন্ধের উৎস খোঁজা। দেখা যায়, সিলেটের এক ফটোসাংবাদিকের কানে আতরমাখা তুলা গুঁজে রাখা। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। ২০০৬ সালের ২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত হুমকির সুরে কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। এখনই বের না হলে অভিযান হবে। এরপর জানালায় এসে উঁকি দেন শায়খ রহমান। উপায় না দেখে হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসেন।
শায়খের স্ত্রীকে জানানো হয়, আপনার স্বামী বের হয়ে এসেছেন। স্ত্রী অবাক চোখে তাকিয়ে বলেন : ‘উনি না শহীদ হতে চেয়েছিলেন! কই শহীদ হলেন না যে!’ আবদুর রহমান তাঁর জবানবন্দিতে সে কথার জবাব দেন। বলেছিলেন, তাঁর পরিকল্পনা ছিল একটি বোমা দিয়ে দুই সঙ্গীসহ আত্মঘাতী (ফেদায়ি) হবেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের ছোড়া পানিতে সেই বোমা ভিজে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শেষমেশ বিচারে ফাঁসিতেই প্রাণ দেন শায়খ আবদুর রহমান।
আরও পড়ুন:
দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না।
টানেলের মুখে আলোর দেখা মেলে ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকালে। ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিকের হোস্টেল থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুর রহমানের আপন ভাই, জেএমবির সামরিক প্রধান আতাউর রহমান সানি। সানিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ ক্লু—জেএমবির মজলিশে শুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ জানেন আবদুর রহমান কোথায় আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় হাফেজ মাহমুদকে পাকড়াওয়ের অভিযান। টানা দুই মাস চেষ্টার পর র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিনের পাতা ফাঁদে পা দেন হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে ধরা হয় ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগার থেকে।
শুরু হয় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু হাফেজ অটল। শায়খ রহমানের অবস্থান কিছুতেই বলবেন না। একপর্যায়ে শায়খের ফোন নম্বর জানাতে রাজি হন। র্যাবের আইটি শাখার মেজর জোহা খোঁজ নেন, নম্বরটি সিলেটের এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায়। শুরু হয়ে গেল জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান। মঙ্গলবার, বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকজনকে দু-পাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল গুলজার আমাকে ফোন করেন। চেনা আওয়াজ : ‘ওস্তাদ, ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আগাম ক্লু দিয়ে রাখতেন। তাঁর ফোন পেয়ে তৈরি হয়ে থাকি। নতুন অভিযান, নতুন খবরের প্রত্যাশা।
তার আগে বলে রাখি, এই ভয়ংকর জঙ্গি নেতাকে ধরার অভিযানটি ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। অভিযানের আগেও ছিল দীর্ঘ গোয়েন্দা তৎপরতা। গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই অভিযানের পরতে পরতে ছিল চমকপ্রদ সব তথ্য। তবে সেই সব কাহিনি বলার আগে শায়খ আবদুর রহমানের ব্যক্তিগত তথ্যটা একটু ঝালিয়ে নিতে পারি।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের মূলনীতি ও ধর্মপ্রচার বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া শায়খ আবদুর রহমানের দিনকাল ভালোই চলছিল। ব্যবসাও করছিলেন বেশ। ১৯৯৮ সালে রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটির পরিচালক আকরামুজ্জামানের সঙ্গে আলাপের পর তিনি তথাকথিত জিহাদের স্বপ্ন দেখেন। এ জন্য পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার নেতা আবদুল করিম টুন্ডার সঙ্গেও বৈঠক করেন। এরপর ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে ছয় সঙ্গী নিয়ে গঠন করেন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ—জেএমবি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে সারা দেশের ৬৩ জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় তাদের হাতে ৭৩ জন নিহত আর আহত হয় প্রায় ৮০০ লোক। পরে দেশ-বিদেশের চাপে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ করে।
এবার অভিযানে ফিরে আসি। সিলেটে ততক্ষণে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোমিন সদর দপ্তরের নির্দেশ পেয়ে এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায় ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলছেন। লে. কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের দলটি সিলেটে পৌঁছায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টায়। মেজর আতিক, মেজর মানিক, মেজর জাভেদ, মেজর ওয়াসি, ক্যাপ্টেন তানভির ও ক্যাপ্টেন তোফাজ্জলের মতো একঝাঁক সাহসী অফিসার সেই দলে। সবার হাতে ভারী অস্ত্র, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি সবাই।
র্যাবের আড়াই শ সদস্য সিলেট নগরীর টিলাগড় ও শিবগঞ্জ এলাকার ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রতিটি সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নেন। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় বাড়ি বাড়ি চিরুনি তল্লাশি। কোনো কিছুই যেন তল্লাশি থেকে বাদ না পড়ে। আস্তে আস্তে তল্লাশির পরিধি কমিয়ে এনে টিলাগড়, শাপলাবাগ, কল্যাণপুর, কালশি ও বাজপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীভূত করা হয়।
সবার হাতে হাতে শায়খ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ছবিসংবলিত লিফলেট। রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে টুলটিকর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় আবদুস সালাম সড়কের ২২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে প্রথম বাধা পায় র্যাব। এক ব্যক্তি ছুরি হাতে তেড়ে এসে বলে : ‘এগোলে খারাপ হবে।’ এরপর যা বোঝার বুঝে যায় সবাই। অভিযান তখন কেন্দ্রীভূত হয় এই বাড়ি ঘিরে। বাড়ির নাম ‘সূর্য্য দীঘল বাড়ী’।
দ্রুত বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। আশপাশের বাড়িতেও অবস্থান নেন অনেকে। নিয়ে আসা হয় ভারী অস্ত্র ও লাইফ সাপোর্ট জ্যাকেট। রাত পৌনে ১টার দিকে মাইকে সূর্য্য দীঘল বাড়ীর লোকজনকে বেরিয়ে আসতে বললেও কেউ সাড়া দেয় না। তাদের নীরবতায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে বাড়ির মালিক লন্ডনপ্রবাসী আবদুল হকের ছোট ভাই মইনুল হককে বাইরে থেকে ডেকে আনা হয়। তিনি মুখে মাইক লাগিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া হৃদয়ের নাম ধরে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তাতেও কাজ হয় না। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুন নবীকে দিয়ে ডাকানো হয়; কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
রাত ২টার দিকে একবার বাড়ির পেছনে দরজা খোলার শব্দ হয়। র্যাব সদস্যরা সচকিত হয়ে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধও হয়ে যায়। রাত ২টা ১০ মিনিটে হঠাৎ করে বাড়ির ভেতর থেকে একজন বয়স্ক মানুষ ভারী গলায় দোয়া-দরুদ পড়তে শুরু করেন। কর্নেল গুলজার তখন ডাক দেন : ‘আবদুর রহমান বেরিয়ে আসুন।’ বাড়ির ভেতর থেকে ভারী গলার আওয়াজ : ‘ওই কাফের! তোর মুখে আমার নাম মানায় না, আমাকে মুজাহিদ বল।’
বুঝতে বাকি থাকে না, এটাই শায়খ আবদুর রহমানের কণ্ঠ। শেষ হয় প্রথম রাত। পরদিন বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার চেষ্টা। আবার রাত আসে। কথা বললেও আত্মসমর্পণে রাজি হন না শায়খ রহমান। ততক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গেছে। সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বাড়ির ভেতরে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরপর চার-পাঁচটা বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত নিয়ে আসা হয় দালান ভাঙার যন্ত্রপাতি। সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙা হয় দক্ষিণের একটি জানালা। বৈদ্যুতিক কাটার এনে ছাদ ফুটো করা হয়। প্রথমে আয়না লাগিয়ে, পরে রশি দিয়ে ক্যামেরা নামিয়ে দেখা হয়—ভেতরে কী আছে। দেখা যায়, একটা বিছানা থেকে তার বেরিয়ে আছে। শুরু হয় হইচই—নিশ্চয়ই সারা বাড়িতে বোমা পাতা আছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা নিয়ে আসেন বড় বড় বড়শি। ফুটো দিয়ে নামিয়ে বিছানা টেনে তুলে দেখেন, সব ভুয়া যন্ত্রপাতিতে সাজানো।
দুপুরের দিকে একের পর এক কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় বাড়ির ভেতরে। সেই গ্যাসে টিকতে না পেরে বেরিয়ে আসেন শায়খের স্ত্রী নূরজাহান বেগম রূপা, ছেলে নাবিল (১৬), মাহমুদ (১৩), ফুয়াদ (১০) ও দেড় বছরের আহাম্মদ। সিলেটের তখনকার জেলা প্রশাসক এম ফয়সল আলম শায়খের স্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি আপনার স্বামীকে বেরিয়ে আসতে বলেন।’ রূপা বলেন, ‘আমার কথা তিনি শুনবেন না। আসলে উনি কারও কথা শোনেন না।’ জেলা প্রশাসক পীড়াপীড়ি করেন। এবার শায়খের স্ত্রী মুখে মাইক লাগিয়ে বলেন: ‘শুনছেন, ওনারা আপনাকে বের হতে বলছেন, আপনি বের হয়ে আসেন।’ স্ত্রীর কথায়ও কান দেন না শায়খ।
আবার রাত আসে। হঠাৎ শোরগোল পড়ে যায়। চারদিকে আতরের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। একজন র্যাব সদস্য সে খবর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। তিনি জানান তাঁর ঊর্ধ্বতনকে। সন্দেহ জাগে—শায়খ কি তবে আতর-গোলাপ মেখে আত্মঘাতী হলেন? আলোচনা শুরু হয়, অভিযান ব্যর্থ হবে? শুরু হয় গন্ধের উৎস খোঁজা। দেখা যায়, সিলেটের এক ফটোসাংবাদিকের কানে আতরমাখা তুলা গুঁজে রাখা। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। ২০০৬ সালের ২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত হুমকির সুরে কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। এখনই বের না হলে অভিযান হবে। এরপর জানালায় এসে উঁকি দেন শায়খ রহমান। উপায় না দেখে হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসেন।
শায়খের স্ত্রীকে জানানো হয়, আপনার স্বামী বের হয়ে এসেছেন। স্ত্রী অবাক চোখে তাকিয়ে বলেন : ‘উনি না শহীদ হতে চেয়েছিলেন! কই শহীদ হলেন না যে!’ আবদুর রহমান তাঁর জবানবন্দিতে সে কথার জবাব দেন। বলেছিলেন, তাঁর পরিকল্পনা ছিল একটি বোমা দিয়ে দুই সঙ্গীসহ আত্মঘাতী (ফেদায়ি) হবেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের ছোড়া পানিতে সেই বোমা ভিজে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শেষমেশ বিচারে ফাঁসিতেই প্রাণ দেন শায়খ আবদুর রহমান।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান
দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না।
টানেলের মুখে আলোর দেখা মেলে ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকালে। ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিকের হোস্টেল থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুর রহমানের আপন ভাই, জেএমবির সামরিক প্রধান আতাউর রহমান সানি। সানিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ ক্লু—জেএমবির মজলিশে শুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ জানেন আবদুর রহমান কোথায় আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় হাফেজ মাহমুদকে পাকড়াওয়ের অভিযান। টানা দুই মাস চেষ্টার পর র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিনের পাতা ফাঁদে পা দেন হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে ধরা হয় ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগার থেকে।
শুরু হয় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু হাফেজ অটল। শায়খ রহমানের অবস্থান কিছুতেই বলবেন না। একপর্যায়ে শায়খের ফোন নম্বর জানাতে রাজি হন। র্যাবের আইটি শাখার মেজর জোহা খোঁজ নেন, নম্বরটি সিলেটের এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায়। শুরু হয়ে গেল জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান। মঙ্গলবার, বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকজনকে দু-পাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল গুলজার আমাকে ফোন করেন। চেনা আওয়াজ : ‘ওস্তাদ, ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আগাম ক্লু দিয়ে রাখতেন। তাঁর ফোন পেয়ে তৈরি হয়ে থাকি। নতুন অভিযান, নতুন খবরের প্রত্যাশা।
তার আগে বলে রাখি, এই ভয়ংকর জঙ্গি নেতাকে ধরার অভিযানটি ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। অভিযানের আগেও ছিল দীর্ঘ গোয়েন্দা তৎপরতা। গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই অভিযানের পরতে পরতে ছিল চমকপ্রদ সব তথ্য। তবে সেই সব কাহিনি বলার আগে শায়খ আবদুর রহমানের ব্যক্তিগত তথ্যটা একটু ঝালিয়ে নিতে পারি।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের মূলনীতি ও ধর্মপ্রচার বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া শায়খ আবদুর রহমানের দিনকাল ভালোই চলছিল। ব্যবসাও করছিলেন বেশ। ১৯৯৮ সালে রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটির পরিচালক আকরামুজ্জামানের সঙ্গে আলাপের পর তিনি তথাকথিত জিহাদের স্বপ্ন দেখেন। এ জন্য পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার নেতা আবদুল করিম টুন্ডার সঙ্গেও বৈঠক করেন। এরপর ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে ছয় সঙ্গী নিয়ে গঠন করেন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ—জেএমবি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে সারা দেশের ৬৩ জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় তাদের হাতে ৭৩ জন নিহত আর আহত হয় প্রায় ৮০০ লোক। পরে দেশ-বিদেশের চাপে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ করে।
এবার অভিযানে ফিরে আসি। সিলেটে ততক্ষণে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোমিন সদর দপ্তরের নির্দেশ পেয়ে এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায় ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলছেন। লে. কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের দলটি সিলেটে পৌঁছায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টায়। মেজর আতিক, মেজর মানিক, মেজর জাভেদ, মেজর ওয়াসি, ক্যাপ্টেন তানভির ও ক্যাপ্টেন তোফাজ্জলের মতো একঝাঁক সাহসী অফিসার সেই দলে। সবার হাতে ভারী অস্ত্র, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি সবাই।
র্যাবের আড়াই শ সদস্য সিলেট নগরীর টিলাগড় ও শিবগঞ্জ এলাকার ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রতিটি সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নেন। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় বাড়ি বাড়ি চিরুনি তল্লাশি। কোনো কিছুই যেন তল্লাশি থেকে বাদ না পড়ে। আস্তে আস্তে তল্লাশির পরিধি কমিয়ে এনে টিলাগড়, শাপলাবাগ, কল্যাণপুর, কালশি ও বাজপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীভূত করা হয়।
সবার হাতে হাতে শায়খ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ছবিসংবলিত লিফলেট। রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে টুলটিকর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় আবদুস সালাম সড়কের ২২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে প্রথম বাধা পায় র্যাব। এক ব্যক্তি ছুরি হাতে তেড়ে এসে বলে : ‘এগোলে খারাপ হবে।’ এরপর যা বোঝার বুঝে যায় সবাই। অভিযান তখন কেন্দ্রীভূত হয় এই বাড়ি ঘিরে। বাড়ির নাম ‘সূর্য্য দীঘল বাড়ী’।
দ্রুত বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। আশপাশের বাড়িতেও অবস্থান নেন অনেকে। নিয়ে আসা হয় ভারী অস্ত্র ও লাইফ সাপোর্ট জ্যাকেট। রাত পৌনে ১টার দিকে মাইকে সূর্য্য দীঘল বাড়ীর লোকজনকে বেরিয়ে আসতে বললেও কেউ সাড়া দেয় না। তাদের নীরবতায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে বাড়ির মালিক লন্ডনপ্রবাসী আবদুল হকের ছোট ভাই মইনুল হককে বাইরে থেকে ডেকে আনা হয়। তিনি মুখে মাইক লাগিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া হৃদয়ের নাম ধরে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তাতেও কাজ হয় না। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুন নবীকে দিয়ে ডাকানো হয়; কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
রাত ২টার দিকে একবার বাড়ির পেছনে দরজা খোলার শব্দ হয়। র্যাব সদস্যরা সচকিত হয়ে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধও হয়ে যায়। রাত ২টা ১০ মিনিটে হঠাৎ করে বাড়ির ভেতর থেকে একজন বয়স্ক মানুষ ভারী গলায় দোয়া-দরুদ পড়তে শুরু করেন। কর্নেল গুলজার তখন ডাক দেন : ‘আবদুর রহমান বেরিয়ে আসুন।’ বাড়ির ভেতর থেকে ভারী গলার আওয়াজ : ‘ওই কাফের! তোর মুখে আমার নাম মানায় না, আমাকে মুজাহিদ বল।’
বুঝতে বাকি থাকে না, এটাই শায়খ আবদুর রহমানের কণ্ঠ। শেষ হয় প্রথম রাত। পরদিন বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার চেষ্টা। আবার রাত আসে। কথা বললেও আত্মসমর্পণে রাজি হন না শায়খ রহমান। ততক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গেছে। সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বাড়ির ভেতরে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরপর চার-পাঁচটা বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত নিয়ে আসা হয় দালান ভাঙার যন্ত্রপাতি। সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙা হয় দক্ষিণের একটি জানালা। বৈদ্যুতিক কাটার এনে ছাদ ফুটো করা হয়। প্রথমে আয়না লাগিয়ে, পরে রশি দিয়ে ক্যামেরা নামিয়ে দেখা হয়—ভেতরে কী আছে। দেখা যায়, একটা বিছানা থেকে তার বেরিয়ে আছে। শুরু হয় হইচই—নিশ্চয়ই সারা বাড়িতে বোমা পাতা আছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা নিয়ে আসেন বড় বড় বড়শি। ফুটো দিয়ে নামিয়ে বিছানা টেনে তুলে দেখেন, সব ভুয়া যন্ত্রপাতিতে সাজানো।
দুপুরের দিকে একের পর এক কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় বাড়ির ভেতরে। সেই গ্যাসে টিকতে না পেরে বেরিয়ে আসেন শায়খের স্ত্রী নূরজাহান বেগম রূপা, ছেলে নাবিল (১৬), মাহমুদ (১৩), ফুয়াদ (১০) ও দেড় বছরের আহাম্মদ। সিলেটের তখনকার জেলা প্রশাসক এম ফয়সল আলম শায়খের স্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি আপনার স্বামীকে বেরিয়ে আসতে বলেন।’ রূপা বলেন, ‘আমার কথা তিনি শুনবেন না। আসলে উনি কারও কথা শোনেন না।’ জেলা প্রশাসক পীড়াপীড়ি করেন। এবার শায়খের স্ত্রী মুখে মাইক লাগিয়ে বলেন: ‘শুনছেন, ওনারা আপনাকে বের হতে বলছেন, আপনি বের হয়ে আসেন।’ স্ত্রীর কথায়ও কান দেন না শায়খ।
আবার রাত আসে। হঠাৎ শোরগোল পড়ে যায়। চারদিকে আতরের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। একজন র্যাব সদস্য সে খবর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। তিনি জানান তাঁর ঊর্ধ্বতনকে। সন্দেহ জাগে—শায়খ কি তবে আতর-গোলাপ মেখে আত্মঘাতী হলেন? আলোচনা শুরু হয়, অভিযান ব্যর্থ হবে? শুরু হয় গন্ধের উৎস খোঁজা। দেখা যায়, সিলেটের এক ফটোসাংবাদিকের কানে আতরমাখা তুলা গুঁজে রাখা। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। ২০০৬ সালের ২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত হুমকির সুরে কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। এখনই বের না হলে অভিযান হবে। এরপর জানালায় এসে উঁকি দেন শায়খ রহমান। উপায় না দেখে হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসেন।
শায়খের স্ত্রীকে জানানো হয়, আপনার স্বামী বের হয়ে এসেছেন। স্ত্রী অবাক চোখে তাকিয়ে বলেন : ‘উনি না শহীদ হতে চেয়েছিলেন! কই শহীদ হলেন না যে!’ আবদুর রহমান তাঁর জবানবন্দিতে সে কথার জবাব দেন। বলেছিলেন, তাঁর পরিকল্পনা ছিল একটি বোমা দিয়ে দুই সঙ্গীসহ আত্মঘাতী (ফেদায়ি) হবেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের ছোড়া পানিতে সেই বোমা ভিজে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শেষমেশ বিচারে ফাঁসিতেই প্রাণ দেন শায়খ আবদুর রহমান।
আরও পড়ুন:
দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না।
টানেলের মুখে আলোর দেখা মেলে ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকালে। ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিকের হোস্টেল থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুর রহমানের আপন ভাই, জেএমবির সামরিক প্রধান আতাউর রহমান সানি। সানিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ ক্লু—জেএমবির মজলিশে শুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ জানেন আবদুর রহমান কোথায় আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় হাফেজ মাহমুদকে পাকড়াওয়ের অভিযান। টানা দুই মাস চেষ্টার পর র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিনের পাতা ফাঁদে পা দেন হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে ধরা হয় ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগার থেকে।
শুরু হয় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু হাফেজ অটল। শায়খ রহমানের অবস্থান কিছুতেই বলবেন না। একপর্যায়ে শায়খের ফোন নম্বর জানাতে রাজি হন। র্যাবের আইটি শাখার মেজর জোহা খোঁজ নেন, নম্বরটি সিলেটের এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায়। শুরু হয়ে গেল জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান। মঙ্গলবার, বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকজনকে দু-পাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল গুলজার আমাকে ফোন করেন। চেনা আওয়াজ : ‘ওস্তাদ, ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আগাম ক্লু দিয়ে রাখতেন। তাঁর ফোন পেয়ে তৈরি হয়ে থাকি। নতুন অভিযান, নতুন খবরের প্রত্যাশা।
তার আগে বলে রাখি, এই ভয়ংকর জঙ্গি নেতাকে ধরার অভিযানটি ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। অভিযানের আগেও ছিল দীর্ঘ গোয়েন্দা তৎপরতা। গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই অভিযানের পরতে পরতে ছিল চমকপ্রদ সব তথ্য। তবে সেই সব কাহিনি বলার আগে শায়খ আবদুর রহমানের ব্যক্তিগত তথ্যটা একটু ঝালিয়ে নিতে পারি।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের মূলনীতি ও ধর্মপ্রচার বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া শায়খ আবদুর রহমানের দিনকাল ভালোই চলছিল। ব্যবসাও করছিলেন বেশ। ১৯৯৮ সালে রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটির পরিচালক আকরামুজ্জামানের সঙ্গে আলাপের পর তিনি তথাকথিত জিহাদের স্বপ্ন দেখেন। এ জন্য পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার নেতা আবদুল করিম টুন্ডার সঙ্গেও বৈঠক করেন। এরপর ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে ছয় সঙ্গী নিয়ে গঠন করেন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ—জেএমবি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে সারা দেশের ৬৩ জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় তাদের হাতে ৭৩ জন নিহত আর আহত হয় প্রায় ৮০০ লোক। পরে দেশ-বিদেশের চাপে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ করে।
এবার অভিযানে ফিরে আসি। সিলেটে ততক্ষণে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোমিন সদর দপ্তরের নির্দেশ পেয়ে এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায় ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলছেন। লে. কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের দলটি সিলেটে পৌঁছায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টায়। মেজর আতিক, মেজর মানিক, মেজর জাভেদ, মেজর ওয়াসি, ক্যাপ্টেন তানভির ও ক্যাপ্টেন তোফাজ্জলের মতো একঝাঁক সাহসী অফিসার সেই দলে। সবার হাতে ভারী অস্ত্র, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি সবাই।
র্যাবের আড়াই শ সদস্য সিলেট নগরীর টিলাগড় ও শিবগঞ্জ এলাকার ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রতিটি সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নেন। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় বাড়ি বাড়ি চিরুনি তল্লাশি। কোনো কিছুই যেন তল্লাশি থেকে বাদ না পড়ে। আস্তে আস্তে তল্লাশির পরিধি কমিয়ে এনে টিলাগড়, শাপলাবাগ, কল্যাণপুর, কালশি ও বাজপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীভূত করা হয়।
সবার হাতে হাতে শায়খ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ছবিসংবলিত লিফলেট। রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে টুলটিকর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় আবদুস সালাম সড়কের ২২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে প্রথম বাধা পায় র্যাব। এক ব্যক্তি ছুরি হাতে তেড়ে এসে বলে : ‘এগোলে খারাপ হবে।’ এরপর যা বোঝার বুঝে যায় সবাই। অভিযান তখন কেন্দ্রীভূত হয় এই বাড়ি ঘিরে। বাড়ির নাম ‘সূর্য্য দীঘল বাড়ী’।
দ্রুত বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। আশপাশের বাড়িতেও অবস্থান নেন অনেকে। নিয়ে আসা হয় ভারী অস্ত্র ও লাইফ সাপোর্ট জ্যাকেট। রাত পৌনে ১টার দিকে মাইকে সূর্য্য দীঘল বাড়ীর লোকজনকে বেরিয়ে আসতে বললেও কেউ সাড়া দেয় না। তাদের নীরবতায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে বাড়ির মালিক লন্ডনপ্রবাসী আবদুল হকের ছোট ভাই মইনুল হককে বাইরে থেকে ডেকে আনা হয়। তিনি মুখে মাইক লাগিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া হৃদয়ের নাম ধরে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তাতেও কাজ হয় না। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুন নবীকে দিয়ে ডাকানো হয়; কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
রাত ২টার দিকে একবার বাড়ির পেছনে দরজা খোলার শব্দ হয়। র্যাব সদস্যরা সচকিত হয়ে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধও হয়ে যায়। রাত ২টা ১০ মিনিটে হঠাৎ করে বাড়ির ভেতর থেকে একজন বয়স্ক মানুষ ভারী গলায় দোয়া-দরুদ পড়তে শুরু করেন। কর্নেল গুলজার তখন ডাক দেন : ‘আবদুর রহমান বেরিয়ে আসুন।’ বাড়ির ভেতর থেকে ভারী গলার আওয়াজ : ‘ওই কাফের! তোর মুখে আমার নাম মানায় না, আমাকে মুজাহিদ বল।’
বুঝতে বাকি থাকে না, এটাই শায়খ আবদুর রহমানের কণ্ঠ। শেষ হয় প্রথম রাত। পরদিন বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার চেষ্টা। আবার রাত আসে। কথা বললেও আত্মসমর্পণে রাজি হন না শায়খ রহমান। ততক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গেছে। সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বাড়ির ভেতরে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরপর চার-পাঁচটা বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত নিয়ে আসা হয় দালান ভাঙার যন্ত্রপাতি। সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙা হয় দক্ষিণের একটি জানালা। বৈদ্যুতিক কাটার এনে ছাদ ফুটো করা হয়। প্রথমে আয়না লাগিয়ে, পরে রশি দিয়ে ক্যামেরা নামিয়ে দেখা হয়—ভেতরে কী আছে। দেখা যায়, একটা বিছানা থেকে তার বেরিয়ে আছে। শুরু হয় হইচই—নিশ্চয়ই সারা বাড়িতে বোমা পাতা আছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা নিয়ে আসেন বড় বড় বড়শি। ফুটো দিয়ে নামিয়ে বিছানা টেনে তুলে দেখেন, সব ভুয়া যন্ত্রপাতিতে সাজানো।
দুপুরের দিকে একের পর এক কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় বাড়ির ভেতরে। সেই গ্যাসে টিকতে না পেরে বেরিয়ে আসেন শায়খের স্ত্রী নূরজাহান বেগম রূপা, ছেলে নাবিল (১৬), মাহমুদ (১৩), ফুয়াদ (১০) ও দেড় বছরের আহাম্মদ। সিলেটের তখনকার জেলা প্রশাসক এম ফয়সল আলম শায়খের স্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি আপনার স্বামীকে বেরিয়ে আসতে বলেন।’ রূপা বলেন, ‘আমার কথা তিনি শুনবেন না। আসলে উনি কারও কথা শোনেন না।’ জেলা প্রশাসক পীড়াপীড়ি করেন। এবার শায়খের স্ত্রী মুখে মাইক লাগিয়ে বলেন: ‘শুনছেন, ওনারা আপনাকে বের হতে বলছেন, আপনি বের হয়ে আসেন।’ স্ত্রীর কথায়ও কান দেন না শায়খ।
আবার রাত আসে। হঠাৎ শোরগোল পড়ে যায়। চারদিকে আতরের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। একজন র্যাব সদস্য সে খবর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। তিনি জানান তাঁর ঊর্ধ্বতনকে। সন্দেহ জাগে—শায়খ কি তবে আতর-গোলাপ মেখে আত্মঘাতী হলেন? আলোচনা শুরু হয়, অভিযান ব্যর্থ হবে? শুরু হয় গন্ধের উৎস খোঁজা। দেখা যায়, সিলেটের এক ফটোসাংবাদিকের কানে আতরমাখা তুলা গুঁজে রাখা। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। ২০০৬ সালের ২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত হুমকির সুরে কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। এখনই বের না হলে অভিযান হবে। এরপর জানালায় এসে উঁকি দেন শায়খ রহমান। উপায় না দেখে হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসেন।
শায়খের স্ত্রীকে জানানো হয়, আপনার স্বামী বের হয়ে এসেছেন। স্ত্রী অবাক চোখে তাকিয়ে বলেন : ‘উনি না শহীদ হতে চেয়েছিলেন! কই শহীদ হলেন না যে!’ আবদুর রহমান তাঁর জবানবন্দিতে সে কথার জবাব দেন। বলেছিলেন, তাঁর পরিকল্পনা ছিল একটি বোমা দিয়ে দুই সঙ্গীসহ আত্মঘাতী (ফেদায়ি) হবেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের ছোড়া পানিতে সেই বোমা ভিজে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শেষমেশ বিচারে ফাঁসিতেই প্রাণ দেন শায়খ আবদুর রহমান।
আরও পড়ুন:
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৩ ঘণ্টা আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
৬ ঘণ্টা আগেবৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
৫ দিন আগেদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবিপ্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না
২৮ আগস্ট ২০২১জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
৬ ঘণ্টা আগেবৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
৫ দিন আগেদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।
রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
ভক্তদের মানববন্ধন
এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
সালমান শাহের মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া আদালতের রায়ের বিরুদ্ধের তাঁর মা নীলা চৌধুরী দ্বিতীয় দফায় যে রিভিশন মামলা করেছিলেন, তা মঞ্জুর করে আজ এই আদেশ দিলেন আদালত।
রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, আদেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাই অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
নীলা চৌধুরীর এ রিভিশন মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ অক্টোবর আদালত আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আবার আদালতে মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই সময় সিআইডিকে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়।
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে রিভিশন মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে বারবার তাঁর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
ভক্তদের মানববন্ধন
এদিকে সালমান শাহর ভক্তরা সকাল থেকে আদালত এলাকায় হাজির হন। হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা। এ সময় তাঁরা সালমান শাহ হত্যার বিচার চেয়ে স্লোগান দেন।
দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবিপ্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না
২৮ আগস্ট ২০২১দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৩ ঘণ্টা আগেবৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
৫ দিন আগেদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বংশালের নবাবপুর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের স্ত্রী তাসলিমার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পারিবারিক কলহ চলছিল। নজরুলের ধারণা ছিল, তাঁর স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন। পাশাপাশি সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার আশঙ্কাও করতেন তিনি। এসব সন্দেহ থেকেই তাসলিমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন নজরুল।
গত রোববার রাতে বাসায় ফিরে নজরুল দেখেন, ফ্ল্যাটের তিনটি লকের মধ্যে দুটি খোলা। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে স্ত্রী তাসলিমাকে হত্যা করেন। পরে গামছা দিয়ে লাশ বেঁধে বিছানার চাদর ও ওড়না মুড়িয়ে ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন। আলামত গোপনের জন্য রক্তমাখা তোশক উল্টে দেন, মেঝে ধুয়ে ফেলেন এবং নিজের জামাকাপড় ধুয়ে ফেলেন।
পরদিন সকালে সন্তানদের জানান, তাদের মা অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। বড় সন্তান দেয়ালে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ করে। এরপর নজরুল দুই সন্তানকে নানার বাড়ি পাঠানোর কথা বলে রাজধানীর আদাবরে ফুফুর বাসায় রেখে পালিয়ে যান।
তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম হোসেন জানান, বোনের কোনো খোঁজ না পেয়ে তিনি সন্তানদের সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ডিপ ফ্রিজ খুললে মাছ-মাংসের নিচে কাপড়ে মোড়ানো তাসলিমার লাশ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় তাসলিমার ভাই নাঈম হোসেন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় নজরুলের অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের সন্দেহই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে।
বৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বংশালের নবাবপুর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের স্ত্রী তাসলিমার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পারিবারিক কলহ চলছিল। নজরুলের ধারণা ছিল, তাঁর স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন। পাশাপাশি সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার আশঙ্কাও করতেন তিনি। এসব সন্দেহ থেকেই তাসলিমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন নজরুল।
গত রোববার রাতে বাসায় ফিরে নজরুল দেখেন, ফ্ল্যাটের তিনটি লকের মধ্যে দুটি খোলা। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে স্ত্রী তাসলিমাকে হত্যা করেন। পরে গামছা দিয়ে লাশ বেঁধে বিছানার চাদর ও ওড়না মুড়িয়ে ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন। আলামত গোপনের জন্য রক্তমাখা তোশক উল্টে দেন, মেঝে ধুয়ে ফেলেন এবং নিজের জামাকাপড় ধুয়ে ফেলেন।
পরদিন সকালে সন্তানদের জানান, তাদের মা অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। বড় সন্তান দেয়ালে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ করে। এরপর নজরুল দুই সন্তানকে নানার বাড়ি পাঠানোর কথা বলে রাজধানীর আদাবরে ফুফুর বাসায় রেখে পালিয়ে যান।
তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম হোসেন জানান, বোনের কোনো খোঁজ না পেয়ে তিনি সন্তানদের সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ডিপ ফ্রিজ খুললে মাছ-মাংসের নিচে কাপড়ে মোড়ানো তাসলিমার লাশ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় তাসলিমার ভাই নাঈম হোসেন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় নজরুলের অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের সন্দেহই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে।
দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবিপ্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না
২৮ আগস্ট ২০২১দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৩ ঘণ্টা আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
৬ ঘণ্টা আগেদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন। রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ওবায়দুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। এ ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা করেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যার অভিযোগে আবার মামলা করেন তিনি। তখন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত অপমৃত্যু ও হত্যার মামলার একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।
ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। তবে প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ বলা হয়। কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে হত্যা মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। এরপর ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বারবার তদন্তে তাঁর মৃত্যুকে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন। রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ওবায়দুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। এ ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা করেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যার অভিযোগে আবার মামলা করেন তিনি। তখন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত অপমৃত্যু ও হত্যার মামলার একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।
ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। তবে প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ বলা হয়। কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে হত্যা মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। এরপর ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।
রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বারবার তদন্তে তাঁর মৃত্যুকে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবিপ্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না
২৮ আগস্ট ২০২১দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৩ ঘণ্টা আগেজনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার ২৯ বছর পর আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন।
৬ ঘণ্টা আগেবৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।
৫ দিন আগে