কামরুল হাসান

গভীর রাতের আদুরে ঘুমে আচ্ছন্ন রাজধানীর মানুষ। শুধু অভিজাত পাড়ার একটি ক্লাবে জেগে আছে শ-দুয়েক তরুণ-তরুণী। ক্লাবের ড্যান্স ফ্লোরে রঙিন আলোর নিচে কানফাটা মিউজিকের তালে চলছে উদ্দাম নাচ। সবাই মত্ত সেই ভিনদেশি নাচের তালে। মিউজিক থামিয়ে হঠাৎ ঘোষণা: ‘দ্রুত হল ত্যাগ করুন।’ বিপদ বুঝে যে যার মতো বেরিয়ে এলেন। নিচে নেমে দেখেন, লিফটের পাশে কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ এক যুবক। একটু পরে কাতরানিও থেমে গেল। নিভে গেল যুবকের জীবনপ্রদীপ। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত দুটোর ঘর পেরিয়ে গেছে। তারিখ: ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৮।
কী হলো, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেশের ইতিহাসে একটি আলোচিত খুন হয়ে গেল চোখের নিমেষে। মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা নিহত যুবককে পাশ ফেরাতেই পরিচয় বেরিয়ে এল। তিনি আর কেউ নন, শিল্পপতির পুত্র, ব্যবসায়ী চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। খবরের কাগজগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ল। আলোচনায় উঠে এল উচ্চবিত্তদের বিনোদনকেন্দ্রের নাম ‘ক্লাব ট্রাম্পস’।
ঢাকায় তখন ‘নাইট ক্লাব’ কালচার সীমাবদ্ধ ছিল শুধু পাঁচতারকা হোটেলে। দুটি পাঁচতারকা হোটেলে সপ্তাহের এক দিন ডিসকো হতো। এর বাইরে মতিঝিল এলাকার একটি তিনতারকা হোটেলেও শুরু হয় ডিসকো নাচ। মদপানের সঙ্গে চড়া মিউজিকের তালে নাচানাচি। বিত্তশালী পরিবারের কমবয়সী তরুণেরা সেখানে ভিড় করতে শুরু করেন। তাই দেখে অভিজাত পাড়া বনানীর আবেদিন টাওয়ারের সাততলার বিশাল ফ্লোরজুড়ে শুরু হয় ক্লাব ট্রাম্পসের যাত্রা।
ক্লাবটির নাম কেন ট্রাম্পস, সে রহস্য ভেদ হয়নি। তবে এটা জানা যায়, আবেদিন টাওয়ারের মালিকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল যোগ ও শরীরচর্চাকেন্দ্র তৈরির কথা বলে। সেই মতো ফ্লোর সাজানো এবং মিউজিক সিস্টেম বসানো হয়। এরপর শুরু হয় অবৈধ পন্থায় মদ কেনাবেচা। উঠতি তরুণেরা ভিড় করতে শুরু করেন সেখানে। চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই সেখানে নিয়মিত আসতেন। প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহও ছিলেন এই তালিকায়। তবে সবচেয়ে বেশি শোনা যেত অভিনেতা নাদের চৌধুরীর নাম।
ক্লাব ট্রাম্পসের মূল আয়োজক ছিলেন অধুনালুপ্ত ইংরেজি দৈনিক মর্নিং সানের মালিক ববি ইসলামের ছোট ভাই আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম। তিনি ছিলেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু। তাঁর বড় ভাই ববি ইসলামের মেয়ে নওরিনকে বিয়ে করেছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। সেই সুবাদে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চাচাশ্বশুর বান্টি ইসলাম। বান্টি তখন ডিশ ব্যবসাও চালাতেন।
ক্লাব ট্রাম্পস জমে ওঠার পরপরই নানা ধরনের উটকো ঝামেলা শুরু হয়। বিশেষ করে বনানীর বাসিন্দারা ক্লাব নিয়ে আপত্তি তোলেন। সংবাদপত্রে লেখালেখি হতে থাকে। একপর্যায়ে বান্টিকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। তিনি তাঁর সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক কাজে লাগান। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কয়েকজন ক্লাবে নিয়মিত আসতে শুরু করেন। সেই তালিকায় ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও লেদার লিটন।
ক্লাব ট্রাম্পসে যেদিন গুলি হয়, সেই রাতে রাজধানীর আর সব আমজনতার মতো আমিও ঘুমিয়ে ছিলাম। ভোর হতে না হতেই সাংবাদিক-বন্ধুদের ফোন। বড় খুন হয়েছে—ছুটতে হবে। গেলাম বনানীর আবেদিন টাওয়ারে। থানা আর গোয়েন্দা পুলিশের কড়া পাহারা। পুরো ভবনে চলছে চিরুনি তল্লাশি।
ক্লাবের সামনের রাস্তায় রক্তের দাগ। সেই দাগ দেখে মনে হচ্ছিল, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সোহেল চৌধুরী বনানীর কাঁচাবাজারের সামনের মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। এই মসজিদের সামনের বাড়িটিই তাঁদের। এ বাড়িতেই তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পুরোনো বাড়িটি এখনো সে রকমই আছে।
সোহেলের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে অনেক দিন পর দেখা। তিনি বললেন, ১৯৬২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ভারতের সমর্থন আদায়ের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর দুই সহযোগীকে নিয়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন। সেই সফরে তাঁর সঙ্গী ছিলেন দুজন। যাঁদের একজনের নাম তারেক আহমেদ চৌধুরী। ত্রিপুরার সাংবাদিক অনিল ভট্টাচার্যের লেখা ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরা’ বইয়ে তার বিশদ বিবরণ রয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে মফিদুল হকের প্রতিষ্ঠান সাহিত্য প্রকাশ। বঙ্গবন্ধুর সেই সফরসঙ্গী তারেক আহমেদ চৌধুরীই হলেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর বাবা।
সোহেলের ছোটবেলার গল্প বললেন তিনি। সোহেলের ডাক নাম ছিল সুলু। আসল নাম সোলাইমান চৌধুরী। ছোটবেলায় বেশি খেতেন বলে এই নাম দিয়েছিলেন মা। তাঁর চলচ্চিত্রের নাম সোহেল চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সোহেলই ছোট।
সোহেলদের দাদার বাড়ি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে। পরে ঢাকার বনানীতে থিতু হন। দাদা ছিলেন এফডিসির তৎকালীন পরিচালক। তিনি ছেলেকে বিদেশে লেখাপড়া করান। দেশে ফিরে তারেক আহমেদ চৌধুরী ব্যবসায় মনোযোগ দেন।
সোহেল ও তাঁর ভাই পড়তেন শাহিন স্কুলে। এসএসসি পাসের পর ভর্তি হন তিতুমীর কলেজে। কলেজে ওঠার আগে থেকেই সোহেল ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনকে অনুসরণ করতেন। তাঁর মতো চুলও কাটতেন। কলেজের মেয়েরা তাঁকে ডাকতেন অমিতাভ বলে।
কলেজে পড়ার সময় লেখাপড়া বাদ দিয়ে টেকনোভিশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে ডিশ ব্যবসা শুরু করেন সোহেল। এরপর শুরু করেন দেশি বাংলা সিনেমা কিনে ভিডিও ক্যাসেটে রূপান্তরের কাজ। এই ব্যবসায় শত শত বাংলা সিনেমা সস্তায় কিনে বিদেশ থেকে ভিডিও ক্যাসেট করেন। ব্যবসাটা অল্প দিনে বড় হয়ে যায়। লন্ডনে কোম্পানির অফিস খোলেন।
১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধান’ নামে অভিনেতা-অভিনেত্রীর খোঁজ করে চলচ্চিত্র মহল। সোহেল চৌধুরী মনোনীত হন। ১৯৮৬ সালে তাঁর প্রথম ছবি মুক্তি পায়। ছবির পরিচালক এফ কবির চৌধুরী। সিনেমায় এসেই নায়িকা দিতির প্রেমে পড়েন সোহেল। সে বছরই তাঁকে বিয়ে করেন। পরের বছর জন্ম হয় তাঁদের প্রথম সন্তান লামিয়া চৌধুরীর। কানাডায় পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় ফিরে এসে ব্যবসা করছেন লামিয়া। ১৯৮৯ সালে তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান সাফায়েত আহমেদ চৌধুরীর জন্ম। সাফায়েত এখন নেদারল্যান্ডসে মিউজিক নিয়ে ব্যবসা করেন। তবে সোহেল-দিতির সুখের সংসার খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। দিতি এরপর চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করেন। সে সংসারও টেকেনি। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ মারা যান দিতি। তবে দিতির সঙ্গে বিচ্ছেদের পরই একা হয়ে যান সোহেল। মূলত বিচ্ছেদের পর দিতির ক্যারিয়ার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হলেও সোহেল আর এগোতে পারেননি। এতে বিষণ্ন সোহেলের গোছানো জীবন এলোমেলো হয়ে যায়।
ক্লাব ট্রাম্পস ওঠানো নিয়ে বনানীর বাসিন্দারা তখন এককাট্টা। সোহেলও তাঁদের সঙ্গে। এ নিয়ে বান্টির সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। সোহেলের পরিবারের কাছে অভিযোগও করেন বান্টি। ক্লাব ট্রাম্পসের ভেতর একদিন মদ্যপ অবস্থায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইের গায়ে হাত তোলেন সোহেল। এতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ভীষণ ক্ষুব্ধ হন। এর পর থেকেই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যায় ক্লাব ট্রাম্পসে।
ঘটনার দিন রাত দুটোর দিকে চার বন্ধুকে নিয়ে ক্লাব ট্রাম্পসে আসেন সোহেল। ক্লাবের নিচেই কলাপসিবল গেটের কাছে দুই যুবক তাঁদের গতি রোধ করেন। এক যুবক বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। এক যুবক কোমরে বাঁধা হোলস্টার থেকে রিভলবার তুলে গুলি চালান। মাত্র একটি গুলি লাগে সোহেলের বুকে। লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসক জানিয়ে দেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। পুলিশ এরপর ক্লাবের ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। সোহেলের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা আসে ডিবিতে। সেই মামলায় ১৯৯৯ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশান থেকে বান্টি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এর তিন দিন পর ৬ জানুয়ারি গুলশান লেডিস পার্কের সামনে থেকে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গ্রেপ্তার করে এসবি। আসামিদের একজন আদনান সিদ্দিকি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাতে উল্লেখ করেন, হত্যাকাণ্ডের আগে এক শিল্পপতির ফোন পেয়ে ঢাকা ক্লাব থেকে ঘটনাস্থলে যান তিনি।
১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। এতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়াও তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনকে অভিযুক্ত করা হয়।
২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর মামলাটির অভিযোগ গঠিত হয়। বিচারের জন্য পাঠানো হয় দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে তারিক সাঈদ মামুন হাইকোর্টে রিট করেন। এরপর হাইকোর্টের বেঞ্চ ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি আদেশ দেন। এতে বলা হয়, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এরপর থেকে সেভাবেই পড়ে আছে মামলাটি। রাষ্ট্রপক্ষ আর খোঁজ করেনি একসময়ের জনপ্রিয় এই নায়ক খুনের কী হলো। সোহেলের বড় ভাই সেই আক্ষেপই করলেন।
আরও পড়ুন:

গভীর রাতের আদুরে ঘুমে আচ্ছন্ন রাজধানীর মানুষ। শুধু অভিজাত পাড়ার একটি ক্লাবে জেগে আছে শ-দুয়েক তরুণ-তরুণী। ক্লাবের ড্যান্স ফ্লোরে রঙিন আলোর নিচে কানফাটা মিউজিকের তালে চলছে উদ্দাম নাচ। সবাই মত্ত সেই ভিনদেশি নাচের তালে। মিউজিক থামিয়ে হঠাৎ ঘোষণা: ‘দ্রুত হল ত্যাগ করুন।’ বিপদ বুঝে যে যার মতো বেরিয়ে এলেন। নিচে নেমে দেখেন, লিফটের পাশে কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ এক যুবক। একটু পরে কাতরানিও থেমে গেল। নিভে গেল যুবকের জীবনপ্রদীপ। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত দুটোর ঘর পেরিয়ে গেছে। তারিখ: ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৮।
কী হলো, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেশের ইতিহাসে একটি আলোচিত খুন হয়ে গেল চোখের নিমেষে। মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা নিহত যুবককে পাশ ফেরাতেই পরিচয় বেরিয়ে এল। তিনি আর কেউ নন, শিল্পপতির পুত্র, ব্যবসায়ী চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। খবরের কাগজগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ল। আলোচনায় উঠে এল উচ্চবিত্তদের বিনোদনকেন্দ্রের নাম ‘ক্লাব ট্রাম্পস’।
ঢাকায় তখন ‘নাইট ক্লাব’ কালচার সীমাবদ্ধ ছিল শুধু পাঁচতারকা হোটেলে। দুটি পাঁচতারকা হোটেলে সপ্তাহের এক দিন ডিসকো হতো। এর বাইরে মতিঝিল এলাকার একটি তিনতারকা হোটেলেও শুরু হয় ডিসকো নাচ। মদপানের সঙ্গে চড়া মিউজিকের তালে নাচানাচি। বিত্তশালী পরিবারের কমবয়সী তরুণেরা সেখানে ভিড় করতে শুরু করেন। তাই দেখে অভিজাত পাড়া বনানীর আবেদিন টাওয়ারের সাততলার বিশাল ফ্লোরজুড়ে শুরু হয় ক্লাব ট্রাম্পসের যাত্রা।
ক্লাবটির নাম কেন ট্রাম্পস, সে রহস্য ভেদ হয়নি। তবে এটা জানা যায়, আবেদিন টাওয়ারের মালিকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল যোগ ও শরীরচর্চাকেন্দ্র তৈরির কথা বলে। সেই মতো ফ্লোর সাজানো এবং মিউজিক সিস্টেম বসানো হয়। এরপর শুরু হয় অবৈধ পন্থায় মদ কেনাবেচা। উঠতি তরুণেরা ভিড় করতে শুরু করেন সেখানে। চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই সেখানে নিয়মিত আসতেন। প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহও ছিলেন এই তালিকায়। তবে সবচেয়ে বেশি শোনা যেত অভিনেতা নাদের চৌধুরীর নাম।
ক্লাব ট্রাম্পসের মূল আয়োজক ছিলেন অধুনালুপ্ত ইংরেজি দৈনিক মর্নিং সানের মালিক ববি ইসলামের ছোট ভাই আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম। তিনি ছিলেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু। তাঁর বড় ভাই ববি ইসলামের মেয়ে নওরিনকে বিয়ে করেছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। সেই সুবাদে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চাচাশ্বশুর বান্টি ইসলাম। বান্টি তখন ডিশ ব্যবসাও চালাতেন।
ক্লাব ট্রাম্পস জমে ওঠার পরপরই নানা ধরনের উটকো ঝামেলা শুরু হয়। বিশেষ করে বনানীর বাসিন্দারা ক্লাব নিয়ে আপত্তি তোলেন। সংবাদপত্রে লেখালেখি হতে থাকে। একপর্যায়ে বান্টিকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। তিনি তাঁর সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক কাজে লাগান। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কয়েকজন ক্লাবে নিয়মিত আসতে শুরু করেন। সেই তালিকায় ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও লেদার লিটন।
ক্লাব ট্রাম্পসে যেদিন গুলি হয়, সেই রাতে রাজধানীর আর সব আমজনতার মতো আমিও ঘুমিয়ে ছিলাম। ভোর হতে না হতেই সাংবাদিক-বন্ধুদের ফোন। বড় খুন হয়েছে—ছুটতে হবে। গেলাম বনানীর আবেদিন টাওয়ারে। থানা আর গোয়েন্দা পুলিশের কড়া পাহারা। পুরো ভবনে চলছে চিরুনি তল্লাশি।
ক্লাবের সামনের রাস্তায় রক্তের দাগ। সেই দাগ দেখে মনে হচ্ছিল, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সোহেল চৌধুরী বনানীর কাঁচাবাজারের সামনের মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। এই মসজিদের সামনের বাড়িটিই তাঁদের। এ বাড়িতেই তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পুরোনো বাড়িটি এখনো সে রকমই আছে।
সোহেলের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে অনেক দিন পর দেখা। তিনি বললেন, ১৯৬২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ভারতের সমর্থন আদায়ের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর দুই সহযোগীকে নিয়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন। সেই সফরে তাঁর সঙ্গী ছিলেন দুজন। যাঁদের একজনের নাম তারেক আহমেদ চৌধুরী। ত্রিপুরার সাংবাদিক অনিল ভট্টাচার্যের লেখা ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরা’ বইয়ে তার বিশদ বিবরণ রয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে মফিদুল হকের প্রতিষ্ঠান সাহিত্য প্রকাশ। বঙ্গবন্ধুর সেই সফরসঙ্গী তারেক আহমেদ চৌধুরীই হলেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর বাবা।
সোহেলের ছোটবেলার গল্প বললেন তিনি। সোহেলের ডাক নাম ছিল সুলু। আসল নাম সোলাইমান চৌধুরী। ছোটবেলায় বেশি খেতেন বলে এই নাম দিয়েছিলেন মা। তাঁর চলচ্চিত্রের নাম সোহেল চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সোহেলই ছোট।
সোহেলদের দাদার বাড়ি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে। পরে ঢাকার বনানীতে থিতু হন। দাদা ছিলেন এফডিসির তৎকালীন পরিচালক। তিনি ছেলেকে বিদেশে লেখাপড়া করান। দেশে ফিরে তারেক আহমেদ চৌধুরী ব্যবসায় মনোযোগ দেন।
সোহেল ও তাঁর ভাই পড়তেন শাহিন স্কুলে। এসএসসি পাসের পর ভর্তি হন তিতুমীর কলেজে। কলেজে ওঠার আগে থেকেই সোহেল ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনকে অনুসরণ করতেন। তাঁর মতো চুলও কাটতেন। কলেজের মেয়েরা তাঁকে ডাকতেন অমিতাভ বলে।
কলেজে পড়ার সময় লেখাপড়া বাদ দিয়ে টেকনোভিশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে ডিশ ব্যবসা শুরু করেন সোহেল। এরপর শুরু করেন দেশি বাংলা সিনেমা কিনে ভিডিও ক্যাসেটে রূপান্তরের কাজ। এই ব্যবসায় শত শত বাংলা সিনেমা সস্তায় কিনে বিদেশ থেকে ভিডিও ক্যাসেট করেন। ব্যবসাটা অল্প দিনে বড় হয়ে যায়। লন্ডনে কোম্পানির অফিস খোলেন।
১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধান’ নামে অভিনেতা-অভিনেত্রীর খোঁজ করে চলচ্চিত্র মহল। সোহেল চৌধুরী মনোনীত হন। ১৯৮৬ সালে তাঁর প্রথম ছবি মুক্তি পায়। ছবির পরিচালক এফ কবির চৌধুরী। সিনেমায় এসেই নায়িকা দিতির প্রেমে পড়েন সোহেল। সে বছরই তাঁকে বিয়ে করেন। পরের বছর জন্ম হয় তাঁদের প্রথম সন্তান লামিয়া চৌধুরীর। কানাডায় পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় ফিরে এসে ব্যবসা করছেন লামিয়া। ১৯৮৯ সালে তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান সাফায়েত আহমেদ চৌধুরীর জন্ম। সাফায়েত এখন নেদারল্যান্ডসে মিউজিক নিয়ে ব্যবসা করেন। তবে সোহেল-দিতির সুখের সংসার খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। দিতি এরপর চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করেন। সে সংসারও টেকেনি। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ মারা যান দিতি। তবে দিতির সঙ্গে বিচ্ছেদের পরই একা হয়ে যান সোহেল। মূলত বিচ্ছেদের পর দিতির ক্যারিয়ার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হলেও সোহেল আর এগোতে পারেননি। এতে বিষণ্ন সোহেলের গোছানো জীবন এলোমেলো হয়ে যায়।
ক্লাব ট্রাম্পস ওঠানো নিয়ে বনানীর বাসিন্দারা তখন এককাট্টা। সোহেলও তাঁদের সঙ্গে। এ নিয়ে বান্টির সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। সোহেলের পরিবারের কাছে অভিযোগও করেন বান্টি। ক্লাব ট্রাম্পসের ভেতর একদিন মদ্যপ অবস্থায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইের গায়ে হাত তোলেন সোহেল। এতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ভীষণ ক্ষুব্ধ হন। এর পর থেকেই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যায় ক্লাব ট্রাম্পসে।
ঘটনার দিন রাত দুটোর দিকে চার বন্ধুকে নিয়ে ক্লাব ট্রাম্পসে আসেন সোহেল। ক্লাবের নিচেই কলাপসিবল গেটের কাছে দুই যুবক তাঁদের গতি রোধ করেন। এক যুবক বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। এক যুবক কোমরে বাঁধা হোলস্টার থেকে রিভলবার তুলে গুলি চালান। মাত্র একটি গুলি লাগে সোহেলের বুকে। লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসক জানিয়ে দেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। পুলিশ এরপর ক্লাবের ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। সোহেলের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা আসে ডিবিতে। সেই মামলায় ১৯৯৯ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশান থেকে বান্টি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এর তিন দিন পর ৬ জানুয়ারি গুলশান লেডিস পার্কের সামনে থেকে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গ্রেপ্তার করে এসবি। আসামিদের একজন আদনান সিদ্দিকি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাতে উল্লেখ করেন, হত্যাকাণ্ডের আগে এক শিল্পপতির ফোন পেয়ে ঢাকা ক্লাব থেকে ঘটনাস্থলে যান তিনি।
১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। এতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়াও তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনকে অভিযুক্ত করা হয়।
২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর মামলাটির অভিযোগ গঠিত হয়। বিচারের জন্য পাঠানো হয় দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে তারিক সাঈদ মামুন হাইকোর্টে রিট করেন। এরপর হাইকোর্টের বেঞ্চ ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি আদেশ দেন। এতে বলা হয়, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এরপর থেকে সেভাবেই পড়ে আছে মামলাটি। রাষ্ট্রপক্ষ আর খোঁজ করেনি একসময়ের জনপ্রিয় এই নায়ক খুনের কী হলো। সোহেলের বড় ভাই সেই আক্ষেপই করলেন।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

গভীর রাতের আদুরে ঘুমে আচ্ছন্ন রাজধানীর মানুষ। শুধু অভিজাত পাড়ার একটি ক্লাবে জেগে আছে শ-দুয়েক তরুণ-তরুণী। ক্লাবের ড্যান্স ফ্লোরে রঙিন আলোর নিচে কানফাটা মিউজিকের তালে চলছে উদ্দাম নাচ। সবাই মত্ত সেই ভিনদেশি নাচের তালে। মিউজিক থামিয়ে হঠাৎ ঘোষণা: ‘দ্রুত হল ত্যাগ করুন।’ বিপদ বুঝে যে যার মতো বেরিয়ে এলেন। নিচে নেমে দেখেন, লিফটের পাশে কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ এক যুবক। একটু পরে কাতরানিও থেমে গেল। নিভে গেল যুবকের জীবনপ্রদীপ। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত দুটোর ঘর পেরিয়ে গেছে। তারিখ: ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৮।
কী হলো, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেশের ইতিহাসে একটি আলোচিত খুন হয়ে গেল চোখের নিমেষে। মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা নিহত যুবককে পাশ ফেরাতেই পরিচয় বেরিয়ে এল। তিনি আর কেউ নন, শিল্পপতির পুত্র, ব্যবসায়ী চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। খবরের কাগজগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ল। আলোচনায় উঠে এল উচ্চবিত্তদের বিনোদনকেন্দ্রের নাম ‘ক্লাব ট্রাম্পস’।
ঢাকায় তখন ‘নাইট ক্লাব’ কালচার সীমাবদ্ধ ছিল শুধু পাঁচতারকা হোটেলে। দুটি পাঁচতারকা হোটেলে সপ্তাহের এক দিন ডিসকো হতো। এর বাইরে মতিঝিল এলাকার একটি তিনতারকা হোটেলেও শুরু হয় ডিসকো নাচ। মদপানের সঙ্গে চড়া মিউজিকের তালে নাচানাচি। বিত্তশালী পরিবারের কমবয়সী তরুণেরা সেখানে ভিড় করতে শুরু করেন। তাই দেখে অভিজাত পাড়া বনানীর আবেদিন টাওয়ারের সাততলার বিশাল ফ্লোরজুড়ে শুরু হয় ক্লাব ট্রাম্পসের যাত্রা।
ক্লাবটির নাম কেন ট্রাম্পস, সে রহস্য ভেদ হয়নি। তবে এটা জানা যায়, আবেদিন টাওয়ারের মালিকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল যোগ ও শরীরচর্চাকেন্দ্র তৈরির কথা বলে। সেই মতো ফ্লোর সাজানো এবং মিউজিক সিস্টেম বসানো হয়। এরপর শুরু হয় অবৈধ পন্থায় মদ কেনাবেচা। উঠতি তরুণেরা ভিড় করতে শুরু করেন সেখানে। চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই সেখানে নিয়মিত আসতেন। প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহও ছিলেন এই তালিকায়। তবে সবচেয়ে বেশি শোনা যেত অভিনেতা নাদের চৌধুরীর নাম।
ক্লাব ট্রাম্পসের মূল আয়োজক ছিলেন অধুনালুপ্ত ইংরেজি দৈনিক মর্নিং সানের মালিক ববি ইসলামের ছোট ভাই আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম। তিনি ছিলেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু। তাঁর বড় ভাই ববি ইসলামের মেয়ে নওরিনকে বিয়ে করেছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। সেই সুবাদে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চাচাশ্বশুর বান্টি ইসলাম। বান্টি তখন ডিশ ব্যবসাও চালাতেন।
ক্লাব ট্রাম্পস জমে ওঠার পরপরই নানা ধরনের উটকো ঝামেলা শুরু হয়। বিশেষ করে বনানীর বাসিন্দারা ক্লাব নিয়ে আপত্তি তোলেন। সংবাদপত্রে লেখালেখি হতে থাকে। একপর্যায়ে বান্টিকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। তিনি তাঁর সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক কাজে লাগান। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কয়েকজন ক্লাবে নিয়মিত আসতে শুরু করেন। সেই তালিকায় ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও লেদার লিটন।
ক্লাব ট্রাম্পসে যেদিন গুলি হয়, সেই রাতে রাজধানীর আর সব আমজনতার মতো আমিও ঘুমিয়ে ছিলাম। ভোর হতে না হতেই সাংবাদিক-বন্ধুদের ফোন। বড় খুন হয়েছে—ছুটতে হবে। গেলাম বনানীর আবেদিন টাওয়ারে। থানা আর গোয়েন্দা পুলিশের কড়া পাহারা। পুরো ভবনে চলছে চিরুনি তল্লাশি।
ক্লাবের সামনের রাস্তায় রক্তের দাগ। সেই দাগ দেখে মনে হচ্ছিল, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সোহেল চৌধুরী বনানীর কাঁচাবাজারের সামনের মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। এই মসজিদের সামনের বাড়িটিই তাঁদের। এ বাড়িতেই তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পুরোনো বাড়িটি এখনো সে রকমই আছে।
সোহেলের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে অনেক দিন পর দেখা। তিনি বললেন, ১৯৬২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ভারতের সমর্থন আদায়ের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর দুই সহযোগীকে নিয়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন। সেই সফরে তাঁর সঙ্গী ছিলেন দুজন। যাঁদের একজনের নাম তারেক আহমেদ চৌধুরী। ত্রিপুরার সাংবাদিক অনিল ভট্টাচার্যের লেখা ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরা’ বইয়ে তার বিশদ বিবরণ রয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে মফিদুল হকের প্রতিষ্ঠান সাহিত্য প্রকাশ। বঙ্গবন্ধুর সেই সফরসঙ্গী তারেক আহমেদ চৌধুরীই হলেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর বাবা।
সোহেলের ছোটবেলার গল্প বললেন তিনি। সোহেলের ডাক নাম ছিল সুলু। আসল নাম সোলাইমান চৌধুরী। ছোটবেলায় বেশি খেতেন বলে এই নাম দিয়েছিলেন মা। তাঁর চলচ্চিত্রের নাম সোহেল চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সোহেলই ছোট।
সোহেলদের দাদার বাড়ি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে। পরে ঢাকার বনানীতে থিতু হন। দাদা ছিলেন এফডিসির তৎকালীন পরিচালক। তিনি ছেলেকে বিদেশে লেখাপড়া করান। দেশে ফিরে তারেক আহমেদ চৌধুরী ব্যবসায় মনোযোগ দেন।
সোহেল ও তাঁর ভাই পড়তেন শাহিন স্কুলে। এসএসসি পাসের পর ভর্তি হন তিতুমীর কলেজে। কলেজে ওঠার আগে থেকেই সোহেল ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনকে অনুসরণ করতেন। তাঁর মতো চুলও কাটতেন। কলেজের মেয়েরা তাঁকে ডাকতেন অমিতাভ বলে।
কলেজে পড়ার সময় লেখাপড়া বাদ দিয়ে টেকনোভিশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে ডিশ ব্যবসা শুরু করেন সোহেল। এরপর শুরু করেন দেশি বাংলা সিনেমা কিনে ভিডিও ক্যাসেটে রূপান্তরের কাজ। এই ব্যবসায় শত শত বাংলা সিনেমা সস্তায় কিনে বিদেশ থেকে ভিডিও ক্যাসেট করেন। ব্যবসাটা অল্প দিনে বড় হয়ে যায়। লন্ডনে কোম্পানির অফিস খোলেন।
১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধান’ নামে অভিনেতা-অভিনেত্রীর খোঁজ করে চলচ্চিত্র মহল। সোহেল চৌধুরী মনোনীত হন। ১৯৮৬ সালে তাঁর প্রথম ছবি মুক্তি পায়। ছবির পরিচালক এফ কবির চৌধুরী। সিনেমায় এসেই নায়িকা দিতির প্রেমে পড়েন সোহেল। সে বছরই তাঁকে বিয়ে করেন। পরের বছর জন্ম হয় তাঁদের প্রথম সন্তান লামিয়া চৌধুরীর। কানাডায় পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় ফিরে এসে ব্যবসা করছেন লামিয়া। ১৯৮৯ সালে তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান সাফায়েত আহমেদ চৌধুরীর জন্ম। সাফায়েত এখন নেদারল্যান্ডসে মিউজিক নিয়ে ব্যবসা করেন। তবে সোহেল-দিতির সুখের সংসার খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। দিতি এরপর চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করেন। সে সংসারও টেকেনি। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ মারা যান দিতি। তবে দিতির সঙ্গে বিচ্ছেদের পরই একা হয়ে যান সোহেল। মূলত বিচ্ছেদের পর দিতির ক্যারিয়ার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হলেও সোহেল আর এগোতে পারেননি। এতে বিষণ্ন সোহেলের গোছানো জীবন এলোমেলো হয়ে যায়।
ক্লাব ট্রাম্পস ওঠানো নিয়ে বনানীর বাসিন্দারা তখন এককাট্টা। সোহেলও তাঁদের সঙ্গে। এ নিয়ে বান্টির সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। সোহেলের পরিবারের কাছে অভিযোগও করেন বান্টি। ক্লাব ট্রাম্পসের ভেতর একদিন মদ্যপ অবস্থায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইের গায়ে হাত তোলেন সোহেল। এতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ভীষণ ক্ষুব্ধ হন। এর পর থেকেই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যায় ক্লাব ট্রাম্পসে।
ঘটনার দিন রাত দুটোর দিকে চার বন্ধুকে নিয়ে ক্লাব ট্রাম্পসে আসেন সোহেল। ক্লাবের নিচেই কলাপসিবল গেটের কাছে দুই যুবক তাঁদের গতি রোধ করেন। এক যুবক বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। এক যুবক কোমরে বাঁধা হোলস্টার থেকে রিভলবার তুলে গুলি চালান। মাত্র একটি গুলি লাগে সোহেলের বুকে। লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসক জানিয়ে দেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। পুলিশ এরপর ক্লাবের ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। সোহেলের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা আসে ডিবিতে। সেই মামলায় ১৯৯৯ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশান থেকে বান্টি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এর তিন দিন পর ৬ জানুয়ারি গুলশান লেডিস পার্কের সামনে থেকে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গ্রেপ্তার করে এসবি। আসামিদের একজন আদনান সিদ্দিকি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাতে উল্লেখ করেন, হত্যাকাণ্ডের আগে এক শিল্পপতির ফোন পেয়ে ঢাকা ক্লাব থেকে ঘটনাস্থলে যান তিনি।
১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। এতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়াও তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনকে অভিযুক্ত করা হয়।
২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর মামলাটির অভিযোগ গঠিত হয়। বিচারের জন্য পাঠানো হয় দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে তারিক সাঈদ মামুন হাইকোর্টে রিট করেন। এরপর হাইকোর্টের বেঞ্চ ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি আদেশ দেন। এতে বলা হয়, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এরপর থেকে সেভাবেই পড়ে আছে মামলাটি। রাষ্ট্রপক্ষ আর খোঁজ করেনি একসময়ের জনপ্রিয় এই নায়ক খুনের কী হলো। সোহেলের বড় ভাই সেই আক্ষেপই করলেন।
আরও পড়ুন:

গভীর রাতের আদুরে ঘুমে আচ্ছন্ন রাজধানীর মানুষ। শুধু অভিজাত পাড়ার একটি ক্লাবে জেগে আছে শ-দুয়েক তরুণ-তরুণী। ক্লাবের ড্যান্স ফ্লোরে রঙিন আলোর নিচে কানফাটা মিউজিকের তালে চলছে উদ্দাম নাচ। সবাই মত্ত সেই ভিনদেশি নাচের তালে। মিউজিক থামিয়ে হঠাৎ ঘোষণা: ‘দ্রুত হল ত্যাগ করুন।’ বিপদ বুঝে যে যার মতো বেরিয়ে এলেন। নিচে নেমে দেখেন, লিফটের পাশে কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ এক যুবক। একটু পরে কাতরানিও থেমে গেল। নিভে গেল যুবকের জীবনপ্রদীপ। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত দুটোর ঘর পেরিয়ে গেছে। তারিখ: ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৮।
কী হলো, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেশের ইতিহাসে একটি আলোচিত খুন হয়ে গেল চোখের নিমেষে। মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা নিহত যুবককে পাশ ফেরাতেই পরিচয় বেরিয়ে এল। তিনি আর কেউ নন, শিল্পপতির পুত্র, ব্যবসায়ী চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। খবরের কাগজগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ল। আলোচনায় উঠে এল উচ্চবিত্তদের বিনোদনকেন্দ্রের নাম ‘ক্লাব ট্রাম্পস’।
ঢাকায় তখন ‘নাইট ক্লাব’ কালচার সীমাবদ্ধ ছিল শুধু পাঁচতারকা হোটেলে। দুটি পাঁচতারকা হোটেলে সপ্তাহের এক দিন ডিসকো হতো। এর বাইরে মতিঝিল এলাকার একটি তিনতারকা হোটেলেও শুরু হয় ডিসকো নাচ। মদপানের সঙ্গে চড়া মিউজিকের তালে নাচানাচি। বিত্তশালী পরিবারের কমবয়সী তরুণেরা সেখানে ভিড় করতে শুরু করেন। তাই দেখে অভিজাত পাড়া বনানীর আবেদিন টাওয়ারের সাততলার বিশাল ফ্লোরজুড়ে শুরু হয় ক্লাব ট্রাম্পসের যাত্রা।
ক্লাবটির নাম কেন ট্রাম্পস, সে রহস্য ভেদ হয়নি। তবে এটা জানা যায়, আবেদিন টাওয়ারের মালিকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল যোগ ও শরীরচর্চাকেন্দ্র তৈরির কথা বলে। সেই মতো ফ্লোর সাজানো এবং মিউজিক সিস্টেম বসানো হয়। এরপর শুরু হয় অবৈধ পন্থায় মদ কেনাবেচা। উঠতি তরুণেরা ভিড় করতে শুরু করেন সেখানে। চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই সেখানে নিয়মিত আসতেন। প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহও ছিলেন এই তালিকায়। তবে সবচেয়ে বেশি শোনা যেত অভিনেতা নাদের চৌধুরীর নাম।
ক্লাব ট্রাম্পসের মূল আয়োজক ছিলেন অধুনালুপ্ত ইংরেজি দৈনিক মর্নিং সানের মালিক ববি ইসলামের ছোট ভাই আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম। তিনি ছিলেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বন্ধু। তাঁর বড় ভাই ববি ইসলামের মেয়ে নওরিনকে বিয়ে করেছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। সেই সুবাদে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের চাচাশ্বশুর বান্টি ইসলাম। বান্টি তখন ডিশ ব্যবসাও চালাতেন।
ক্লাব ট্রাম্পস জমে ওঠার পরপরই নানা ধরনের উটকো ঝামেলা শুরু হয়। বিশেষ করে বনানীর বাসিন্দারা ক্লাব নিয়ে আপত্তি তোলেন। সংবাদপত্রে লেখালেখি হতে থাকে। একপর্যায়ে বান্টিকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। তিনি তাঁর সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক কাজে লাগান। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কয়েকজন ক্লাবে নিয়মিত আসতে শুরু করেন। সেই তালিকায় ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও লেদার লিটন।
ক্লাব ট্রাম্পসে যেদিন গুলি হয়, সেই রাতে রাজধানীর আর সব আমজনতার মতো আমিও ঘুমিয়ে ছিলাম। ভোর হতে না হতেই সাংবাদিক-বন্ধুদের ফোন। বড় খুন হয়েছে—ছুটতে হবে। গেলাম বনানীর আবেদিন টাওয়ারে। থানা আর গোয়েন্দা পুলিশের কড়া পাহারা। পুরো ভবনে চলছে চিরুনি তল্লাশি।
ক্লাবের সামনের রাস্তায় রক্তের দাগ। সেই দাগ দেখে মনে হচ্ছিল, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সোহেল চৌধুরী বনানীর কাঁচাবাজারের সামনের মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। এই মসজিদের সামনের বাড়িটিই তাঁদের। এ বাড়িতেই তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পুরোনো বাড়িটি এখনো সে রকমই আছে।
সোহেলের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে অনেক দিন পর দেখা। তিনি বললেন, ১৯৬২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ভারতের সমর্থন আদায়ের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর দুই সহযোগীকে নিয়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন। সেই সফরে তাঁর সঙ্গী ছিলেন দুজন। যাঁদের একজনের নাম তারেক আহমেদ চৌধুরী। ত্রিপুরার সাংবাদিক অনিল ভট্টাচার্যের লেখা ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরা’ বইয়ে তার বিশদ বিবরণ রয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে মফিদুল হকের প্রতিষ্ঠান সাহিত্য প্রকাশ। বঙ্গবন্ধুর সেই সফরসঙ্গী তারেক আহমেদ চৌধুরীই হলেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর বাবা।
সোহেলের ছোটবেলার গল্প বললেন তিনি। সোহেলের ডাক নাম ছিল সুলু। আসল নাম সোলাইমান চৌধুরী। ছোটবেলায় বেশি খেতেন বলে এই নাম দিয়েছিলেন মা। তাঁর চলচ্চিত্রের নাম সোহেল চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সোহেলই ছোট।
সোহেলদের দাদার বাড়ি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে। পরে ঢাকার বনানীতে থিতু হন। দাদা ছিলেন এফডিসির তৎকালীন পরিচালক। তিনি ছেলেকে বিদেশে লেখাপড়া করান। দেশে ফিরে তারেক আহমেদ চৌধুরী ব্যবসায় মনোযোগ দেন।
সোহেল ও তাঁর ভাই পড়তেন শাহিন স্কুলে। এসএসসি পাসের পর ভর্তি হন তিতুমীর কলেজে। কলেজে ওঠার আগে থেকেই সোহেল ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনকে অনুসরণ করতেন। তাঁর মতো চুলও কাটতেন। কলেজের মেয়েরা তাঁকে ডাকতেন অমিতাভ বলে।
কলেজে পড়ার সময় লেখাপড়া বাদ দিয়ে টেকনোভিশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে ডিশ ব্যবসা শুরু করেন সোহেল। এরপর শুরু করেন দেশি বাংলা সিনেমা কিনে ভিডিও ক্যাসেটে রূপান্তরের কাজ। এই ব্যবসায় শত শত বাংলা সিনেমা সস্তায় কিনে বিদেশ থেকে ভিডিও ক্যাসেট করেন। ব্যবসাটা অল্প দিনে বড় হয়ে যায়। লন্ডনে কোম্পানির অফিস খোলেন।
১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধান’ নামে অভিনেতা-অভিনেত্রীর খোঁজ করে চলচ্চিত্র মহল। সোহেল চৌধুরী মনোনীত হন। ১৯৮৬ সালে তাঁর প্রথম ছবি মুক্তি পায়। ছবির পরিচালক এফ কবির চৌধুরী। সিনেমায় এসেই নায়িকা দিতির প্রেমে পড়েন সোহেল। সে বছরই তাঁকে বিয়ে করেন। পরের বছর জন্ম হয় তাঁদের প্রথম সন্তান লামিয়া চৌধুরীর। কানাডায় পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় ফিরে এসে ব্যবসা করছেন লামিয়া। ১৯৮৯ সালে তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান সাফায়েত আহমেদ চৌধুরীর জন্ম। সাফায়েত এখন নেদারল্যান্ডসে মিউজিক নিয়ে ব্যবসা করেন। তবে সোহেল-দিতির সুখের সংসার খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। দিতি এরপর চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করেন। সে সংসারও টেকেনি। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ মারা যান দিতি। তবে দিতির সঙ্গে বিচ্ছেদের পরই একা হয়ে যান সোহেল। মূলত বিচ্ছেদের পর দিতির ক্যারিয়ার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হলেও সোহেল আর এগোতে পারেননি। এতে বিষণ্ন সোহেলের গোছানো জীবন এলোমেলো হয়ে যায়।
ক্লাব ট্রাম্পস ওঠানো নিয়ে বনানীর বাসিন্দারা তখন এককাট্টা। সোহেলও তাঁদের সঙ্গে। এ নিয়ে বান্টির সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। সোহেলের পরিবারের কাছে অভিযোগও করেন বান্টি। ক্লাব ট্রাম্পসের ভেতর একদিন মদ্যপ অবস্থায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইের গায়ে হাত তোলেন সোহেল। এতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ভীষণ ক্ষুব্ধ হন। এর পর থেকেই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যায় ক্লাব ট্রাম্পসে।
ঘটনার দিন রাত দুটোর দিকে চার বন্ধুকে নিয়ে ক্লাব ট্রাম্পসে আসেন সোহেল। ক্লাবের নিচেই কলাপসিবল গেটের কাছে দুই যুবক তাঁদের গতি রোধ করেন। এক যুবক বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। এক যুবক কোমরে বাঁধা হোলস্টার থেকে রিভলবার তুলে গুলি চালান। মাত্র একটি গুলি লাগে সোহেলের বুকে। লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসক জানিয়ে দেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। পুলিশ এরপর ক্লাবের ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। সোহেলের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা আসে ডিবিতে। সেই মামলায় ১৯৯৯ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশান থেকে বান্টি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এর তিন দিন পর ৬ জানুয়ারি গুলশান লেডিস পার্কের সামনে থেকে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গ্রেপ্তার করে এসবি। আসামিদের একজন আদনান সিদ্দিকি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাতে উল্লেখ করেন, হত্যাকাণ্ডের আগে এক শিল্পপতির ফোন পেয়ে ঢাকা ক্লাব থেকে ঘটনাস্থলে যান তিনি।
১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। এতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়াও তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনকে অভিযুক্ত করা হয়।
২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর মামলাটির অভিযোগ গঠিত হয়। বিচারের জন্য পাঠানো হয় দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে তারিক সাঈদ মামুন হাইকোর্টে রিট করেন। এরপর হাইকোর্টের বেঞ্চ ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি আদেশ দেন। এতে বলা হয়, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এরপর থেকে সেভাবেই পড়ে আছে মামলাটি। রাষ্ট্রপক্ষ আর খোঁজ করেনি একসময়ের জনপ্রিয় এই নায়ক খুনের কী হলো। সোহেলের বড় ভাই সেই আক্ষেপই করলেন।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

গভীর রাতের আদুরে ঘুমে আচ্ছন্ন রাজধানীর মানুষ। শুধু অভিজাত পাড়ার একটি ক্লাবে জেগে আছে শ-দুয়েক তরুণ-তরুণী। ক্লাবের ড্যান্স ফ্লোরে রঙিন আলোর নিচে কানফাটা মিউজিকের তালে চলছে উদ্দাম নাচ। সবাই মত্ত সেই ভিনদেশি নাচের তালে। মিউজিক থামিয়ে হঠাৎ ঘোষণা: ‘দ্রুত হল ত্যাগ করুন।’ বিপদ বুঝে যে যার মতো বেরিয়ে এলেন। ন
১৫ জানুয়ারি ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

গভীর রাতের আদুরে ঘুমে আচ্ছন্ন রাজধানীর মানুষ। শুধু অভিজাত পাড়ার একটি ক্লাবে জেগে আছে শ-দুয়েক তরুণ-তরুণী। ক্লাবের ড্যান্স ফ্লোরে রঙিন আলোর নিচে কানফাটা মিউজিকের তালে চলছে উদ্দাম নাচ। সবাই মত্ত সেই ভিনদেশি নাচের তালে। মিউজিক থামিয়ে হঠাৎ ঘোষণা: ‘দ্রুত হল ত্যাগ করুন।’ বিপদ বুঝে যে যার মতো বেরিয়ে এলেন। ন
১৫ জানুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

গভীর রাতের আদুরে ঘুমে আচ্ছন্ন রাজধানীর মানুষ। শুধু অভিজাত পাড়ার একটি ক্লাবে জেগে আছে শ-দুয়েক তরুণ-তরুণী। ক্লাবের ড্যান্স ফ্লোরে রঙিন আলোর নিচে কানফাটা মিউজিকের তালে চলছে উদ্দাম নাচ। সবাই মত্ত সেই ভিনদেশি নাচের তালে। মিউজিক থামিয়ে হঠাৎ ঘোষণা: ‘দ্রুত হল ত্যাগ করুন।’ বিপদ বুঝে যে যার মতো বেরিয়ে এলেন। ন
১৫ জানুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
১০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

গভীর রাতের আদুরে ঘুমে আচ্ছন্ন রাজধানীর মানুষ। শুধু অভিজাত পাড়ার একটি ক্লাবে জেগে আছে শ-দুয়েক তরুণ-তরুণী। ক্লাবের ড্যান্স ফ্লোরে রঙিন আলোর নিচে কানফাটা মিউজিকের তালে চলছে উদ্দাম নাচ। সবাই মত্ত সেই ভিনদেশি নাচের তালে। মিউজিক থামিয়ে হঠাৎ ঘোষণা: ‘দ্রুত হল ত্যাগ করুন।’ বিপদ বুঝে যে যার মতো বেরিয়ে এলেন। ন
১৫ জানুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৬ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৯ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৯ দিন আগে