কামরুল হাসান

শুক্রবার মানেই ক্রাইম রিপোর্টারদের আরাম হারামের দিন। সেদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটবেই। তা-ও সেটা ছোটখাটো কিছু নয়, রীতিমতো হইচই ফেলা ঘটনা। ২০০২ সালের ১০ মে, শুক্রবার সকালটাও সেভাবেই শুরু হয়েছিল দুরুদুরু মন নিয়ে। শেষ পর্যন্ত যা ভাবা, তা-ই হলো। জুমার আগেই খবর এল, ধানমন্ডিতে বড় মার্ডার হয়েছে।
মিরপুর রোডে গিয়ে দেখি, অর্কিড প্লাজার সামনে পুলিশের অনেক গাড়ি রাস্তার ওপর দাঁড় করানো। মার্কেটের সামনের রাস্তায় রক্তের দাগ। গুলিতে কাচ ঝাঁঝরা হওয়া নীল রঙের একটি মাইক্রোবাস ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে অনেক লোক। পুলিশ সদস্যরা মার্কেটের ভেতরে যাচ্ছেন আর আসছেন। সবাই তটস্থ, একটু পরে সেখানে কমিশনার আসবেন।
কে খুন হয়েছেন? এক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, নিউটন। কোন নিউটন? তিনি আর বলতে পারলেন না। পাশ থেকে এক সাংবাদিক সহকর্মী বলে উঠলেন, মিরপুরের কাউন্সিলর নিউটন। এক ক্রাইম রিপোর্টার বন্ধু পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি খিস্তি করে বললেন, ‘আরে ব্যাটা, তুই কয় দিন আগে যারে নিয়ে নিউজ করলি, হেই ব্যাটা।’ তাঁর কথায় আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল এক স্মার্ট, সুদর্শন যুবকের মুখ। তাঁর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে মাসখানেক আগে একটি রিপোর্ট করেছিলাম। সেই রিপোর্টের জন্য তাঁর সঙ্গে বসে অনেকক্ষণ কথাও বলেছিলাম। তিনি আমার সঙ্গে খুব ভালো আচরণ করেছিলেন। রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর তিনি আমাকে ফোন করে কিছু অংশের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বেশ বিনয় ছিল। সেই যুবক এভাবে খুন হওয়ায় একটু খারাপ লাগল।
ততক্ষণে অর্কিড প্লাজার সামনে মানুষের ভিড় জমে গেছে। পুলিশ রাস্তার এক পাশ বন্ধ করে দিয়েছে। সব গণমাধ্যমের সাংবাদিক সেখানে হামলে পড়েছেন।
সাধারণত কোনো ঘটনাস্থলে মানুষের ভিড় বেশি হলে নানা ধরনের কথা আসতে থাকে। তাতে ঘটনার সঙ্গে রটনাও মিশে যায়। তখন আসল-নকল খুঁজে বের করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এখানেও সেটা হয়েছে। একজনের কাছে জানতে চাইলাম, মিরপুরের নিউটন এখানে কী করছিলেন? একেকজন একেক কথা বলেন। পরে পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া গেল আসল খবর।
সেই পুলিশ কর্মকর্তা বললেন, নিউটনের ছোট ভাই তপনের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল সাতমসজিদ রোডের একটি কমিউনিটি সেন্টারে। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মিরপুরের বাসা থেকে সকালে ধানমন্ডি আসেন নিউটন। অর্কিড প্লাজার দোতলার কোনার দিকে শীতল নামের একটি সেলুন ছিল। চুল-দাড়ি কাটাতে সেখানে এসেছিলেন।
শীতল সেলুনের মালিক আলাউদ্দিন আমাকে বললেন, নিউটন এসেছিলেন বেলা ১১টার দিকে। ঠিক দুপুর ১২টার সময় তিনি নিচে নেমে যান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ইসমাইল নামের একজন দেহরক্ষী ছিলেন। তিনি নিচে নেমে গাড়িতে ওঠার সময় তিন যুবক তাঁকে অনুসরণ করে গাড়ির দরজা পর্যন্ত চলে যান। তিনি যখন গাড়িতে উঠবেন, ঠিক তখনই যুবকদের একজন তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি ছোড়েন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন নিউটন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। নিউটনের গাড়িচালক মিজান এগিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন। সন্ত্রাসীরা তাঁকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে।
অর্কিড প্লাজার দারোয়ান সাইদ আমাকে বললেন, গুলি করার পর তিন যুবক রাস্তা পার হয়ে উল্টো দিকে চলে যান। সেখানে সাদা রঙের একটি গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। যুবকের দল সেই গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায়।
নিউটন কেন খুন হলেন, সেটা বলার আগে তাঁর ফিরিস্তিটা একটু বলে নিই। ছায়েদুর রহমান নিউটনের বাবার নাম ওয়ালিউর রহমান। মিরপুর ১ নম্বরের জি ব্লকে তাঁদের আদি নিবাস। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর পরিবারের সবাই লন্ডনপ্রবাসী। ’৮৯ সালে তেজগাঁও কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলে যোগ দেন। তখন মিরপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হন। কলেজের পর্ব শেষ করে লন্ডনে চলে যান। ’৯২ সালে ফিরে এসে মিরপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হন। ’৯৬ সালে মহানগর কমিটিতে আসেন। সে সময় ছাত্রনেতা নাসির উদ্দীন পিন্টুর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। লাল্টু-পিন্টুর কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহসভাপতিও হন নিউটন। পরে নাসির উদ্দীন পিন্টু তাঁর ছোট বোন ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টির সঙ্গে বিয়ে দেন। নিউটন দম্পতির চমক নামের একটি মেয়েও আছে।
নাসির উদ্দীন পিন্টুর সঙ্গে সখ্যর সুবাদে নিউটন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি মিরপুর এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। একটি ধর্ষণ মামলায় জেলও খাটেন। সে সময় পুলিশ আমাকে বলেছিল, নিউটনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা আছে। এগুলোর মধ্যে একটি খুনের মামলাও ছিল। তবে নিউটন বলেছিলেন, এসব মামলা ষড়যন্ত্র করে করা হয়েছিল। যা হোক, তার পরও তিনি ২০০২ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে চারদলীয় জোট সরকারের মনোনয়ন পান। সেই নির্বাচনে তিনি জয়ী হন। নিহত হওয়ার মাত্র তিন দিন আগে ৭ মে কাউন্সিলর হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। এমনিতে নিউটন সব সময় চলতেন পুলিশি পাহারায়। তেজগাঁও কলেজে এমএ পরীক্ষা দেওয়ার সময়ও পুলিশ পাহারায় ছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর তিনি পুলিশের পাহারা ছেড়ে নিজস্ব লোকজন নিয়ে চলাফেরা শুরু করেন। যত দূর শুনেছিলাম, পুলিশ সঙ্গে নিয়ে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়। এর পরই পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়।
পুলিশ ও বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, নিউটন কেন খুন হলেন। মনে হয়েছিল, হয় নির্বাচনী কোনো কারণে অথবা পুরোনো কোনো বিরোধে তিনি খুন হয়েছেন। কিন্তু দুটোর কোনোটাই সত্যি হলো না। তিনি খুন হয়েছিলেন মিরপুর ১ নম্বর এলাকার কো-অপারেটিভ হকার্স মার্কেটের দখল নিয়ে বিরোধের জেরে। সে সময় মার্কেটটি দখলে নিতে চেয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী ও তাঁর দলের লোকেরা। তাঁরা এই দখল কবজায় রাখতে কালা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। কালা জাহাঙ্গীর তাঁর সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচর কিলার আব্বাসকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। নিউটন খুনের পর ২৭ মে কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী ভুট্টো পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ভুট্টো বলেছিলেন, নিউটন হত্যাকাণ্ডে কালা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তিনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন।
নিউটন খুনের ঘটনায় তাঁর মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনী প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রিপন হেরে যাওয়ার আক্রোশে আগা খান মিন্টু, রাহাত খান, মোশাররফ হোসেন মশুদের সহযোগিতায় নিউটনকে হত্যা করা হয়। পুলিশ এই মামলা তদন্ত করে ১৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। আসামি শওকত, রুবেল ও আইয়ুব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। ২০০৬ সালের ২৪ মে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১৮ জনের মধ্যে দুজনকে খালাস দিয়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরে হাইকোর্ট ফাঁসি ও যাবজ্জীবন থেকে ছয় আসামিকে অব্যাহতি দেন। মজার বিষয় হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরেরও মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।
আজকের আষাঢ়ে নয় লিখতে গিয়ে মনে পড়ল নিউটনের সঙ্গে আমার সেই সাক্ষাতের কথা। তিনি বলছিলেন, যেকোনো সময় তিনি খুন হতে পারেন। তাঁর পেছনে বুলেট ঘুরছে। আমি তাঁকে বলেছিলাম, এসব ছেড়ে দেন, তাহলে ঝামেলা থাকবে না। তিনি বলেছিলেন, এটা একমুখী পথ, শুধু ঢোকা যায়, বের হওয়া যায় না। নিউটন খুন হওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল, তাঁর কথাই সত্যি হলো। তিনি আর বের হতে পারলেন না।
আরও পড়ুন:

শুক্রবার মানেই ক্রাইম রিপোর্টারদের আরাম হারামের দিন। সেদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটবেই। তা-ও সেটা ছোটখাটো কিছু নয়, রীতিমতো হইচই ফেলা ঘটনা। ২০০২ সালের ১০ মে, শুক্রবার সকালটাও সেভাবেই শুরু হয়েছিল দুরুদুরু মন নিয়ে। শেষ পর্যন্ত যা ভাবা, তা-ই হলো। জুমার আগেই খবর এল, ধানমন্ডিতে বড় মার্ডার হয়েছে।
মিরপুর রোডে গিয়ে দেখি, অর্কিড প্লাজার সামনে পুলিশের অনেক গাড়ি রাস্তার ওপর দাঁড় করানো। মার্কেটের সামনের রাস্তায় রক্তের দাগ। গুলিতে কাচ ঝাঁঝরা হওয়া নীল রঙের একটি মাইক্রোবাস ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে অনেক লোক। পুলিশ সদস্যরা মার্কেটের ভেতরে যাচ্ছেন আর আসছেন। সবাই তটস্থ, একটু পরে সেখানে কমিশনার আসবেন।
কে খুন হয়েছেন? এক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, নিউটন। কোন নিউটন? তিনি আর বলতে পারলেন না। পাশ থেকে এক সাংবাদিক সহকর্মী বলে উঠলেন, মিরপুরের কাউন্সিলর নিউটন। এক ক্রাইম রিপোর্টার বন্ধু পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি খিস্তি করে বললেন, ‘আরে ব্যাটা, তুই কয় দিন আগে যারে নিয়ে নিউজ করলি, হেই ব্যাটা।’ তাঁর কথায় আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল এক স্মার্ট, সুদর্শন যুবকের মুখ। তাঁর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে মাসখানেক আগে একটি রিপোর্ট করেছিলাম। সেই রিপোর্টের জন্য তাঁর সঙ্গে বসে অনেকক্ষণ কথাও বলেছিলাম। তিনি আমার সঙ্গে খুব ভালো আচরণ করেছিলেন। রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর তিনি আমাকে ফোন করে কিছু অংশের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বেশ বিনয় ছিল। সেই যুবক এভাবে খুন হওয়ায় একটু খারাপ লাগল।
ততক্ষণে অর্কিড প্লাজার সামনে মানুষের ভিড় জমে গেছে। পুলিশ রাস্তার এক পাশ বন্ধ করে দিয়েছে। সব গণমাধ্যমের সাংবাদিক সেখানে হামলে পড়েছেন।
সাধারণত কোনো ঘটনাস্থলে মানুষের ভিড় বেশি হলে নানা ধরনের কথা আসতে থাকে। তাতে ঘটনার সঙ্গে রটনাও মিশে যায়। তখন আসল-নকল খুঁজে বের করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এখানেও সেটা হয়েছে। একজনের কাছে জানতে চাইলাম, মিরপুরের নিউটন এখানে কী করছিলেন? একেকজন একেক কথা বলেন। পরে পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া গেল আসল খবর।
সেই পুলিশ কর্মকর্তা বললেন, নিউটনের ছোট ভাই তপনের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল সাতমসজিদ রোডের একটি কমিউনিটি সেন্টারে। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মিরপুরের বাসা থেকে সকালে ধানমন্ডি আসেন নিউটন। অর্কিড প্লাজার দোতলার কোনার দিকে শীতল নামের একটি সেলুন ছিল। চুল-দাড়ি কাটাতে সেখানে এসেছিলেন।
শীতল সেলুনের মালিক আলাউদ্দিন আমাকে বললেন, নিউটন এসেছিলেন বেলা ১১টার দিকে। ঠিক দুপুর ১২টার সময় তিনি নিচে নেমে যান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ইসমাইল নামের একজন দেহরক্ষী ছিলেন। তিনি নিচে নেমে গাড়িতে ওঠার সময় তিন যুবক তাঁকে অনুসরণ করে গাড়ির দরজা পর্যন্ত চলে যান। তিনি যখন গাড়িতে উঠবেন, ঠিক তখনই যুবকদের একজন তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি ছোড়েন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন নিউটন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। নিউটনের গাড়িচালক মিজান এগিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন। সন্ত্রাসীরা তাঁকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে।
অর্কিড প্লাজার দারোয়ান সাইদ আমাকে বললেন, গুলি করার পর তিন যুবক রাস্তা পার হয়ে উল্টো দিকে চলে যান। সেখানে সাদা রঙের একটি গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। যুবকের দল সেই গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায়।
নিউটন কেন খুন হলেন, সেটা বলার আগে তাঁর ফিরিস্তিটা একটু বলে নিই। ছায়েদুর রহমান নিউটনের বাবার নাম ওয়ালিউর রহমান। মিরপুর ১ নম্বরের জি ব্লকে তাঁদের আদি নিবাস। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর পরিবারের সবাই লন্ডনপ্রবাসী। ’৮৯ সালে তেজগাঁও কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলে যোগ দেন। তখন মিরপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হন। কলেজের পর্ব শেষ করে লন্ডনে চলে যান। ’৯২ সালে ফিরে এসে মিরপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হন। ’৯৬ সালে মহানগর কমিটিতে আসেন। সে সময় ছাত্রনেতা নাসির উদ্দীন পিন্টুর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। লাল্টু-পিন্টুর কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহসভাপতিও হন নিউটন। পরে নাসির উদ্দীন পিন্টু তাঁর ছোট বোন ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টির সঙ্গে বিয়ে দেন। নিউটন দম্পতির চমক নামের একটি মেয়েও আছে।
নাসির উদ্দীন পিন্টুর সঙ্গে সখ্যর সুবাদে নিউটন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি মিরপুর এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। একটি ধর্ষণ মামলায় জেলও খাটেন। সে সময় পুলিশ আমাকে বলেছিল, নিউটনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা আছে। এগুলোর মধ্যে একটি খুনের মামলাও ছিল। তবে নিউটন বলেছিলেন, এসব মামলা ষড়যন্ত্র করে করা হয়েছিল। যা হোক, তার পরও তিনি ২০০২ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে চারদলীয় জোট সরকারের মনোনয়ন পান। সেই নির্বাচনে তিনি জয়ী হন। নিহত হওয়ার মাত্র তিন দিন আগে ৭ মে কাউন্সিলর হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। এমনিতে নিউটন সব সময় চলতেন পুলিশি পাহারায়। তেজগাঁও কলেজে এমএ পরীক্ষা দেওয়ার সময়ও পুলিশ পাহারায় ছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর তিনি পুলিশের পাহারা ছেড়ে নিজস্ব লোকজন নিয়ে চলাফেরা শুরু করেন। যত দূর শুনেছিলাম, পুলিশ সঙ্গে নিয়ে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়। এর পরই পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়।
পুলিশ ও বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, নিউটন কেন খুন হলেন। মনে হয়েছিল, হয় নির্বাচনী কোনো কারণে অথবা পুরোনো কোনো বিরোধে তিনি খুন হয়েছেন। কিন্তু দুটোর কোনোটাই সত্যি হলো না। তিনি খুন হয়েছিলেন মিরপুর ১ নম্বর এলাকার কো-অপারেটিভ হকার্স মার্কেটের দখল নিয়ে বিরোধের জেরে। সে সময় মার্কেটটি দখলে নিতে চেয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী ও তাঁর দলের লোকেরা। তাঁরা এই দখল কবজায় রাখতে কালা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। কালা জাহাঙ্গীর তাঁর সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচর কিলার আব্বাসকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। নিউটন খুনের পর ২৭ মে কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী ভুট্টো পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ভুট্টো বলেছিলেন, নিউটন হত্যাকাণ্ডে কালা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তিনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন।
নিউটন খুনের ঘটনায় তাঁর মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনী প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রিপন হেরে যাওয়ার আক্রোশে আগা খান মিন্টু, রাহাত খান, মোশাররফ হোসেন মশুদের সহযোগিতায় নিউটনকে হত্যা করা হয়। পুলিশ এই মামলা তদন্ত করে ১৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। আসামি শওকত, রুবেল ও আইয়ুব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। ২০০৬ সালের ২৪ মে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১৮ জনের মধ্যে দুজনকে খালাস দিয়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরে হাইকোর্ট ফাঁসি ও যাবজ্জীবন থেকে ছয় আসামিকে অব্যাহতি দেন। মজার বিষয় হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরেরও মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।
আজকের আষাঢ়ে নয় লিখতে গিয়ে মনে পড়ল নিউটনের সঙ্গে আমার সেই সাক্ষাতের কথা। তিনি বলছিলেন, যেকোনো সময় তিনি খুন হতে পারেন। তাঁর পেছনে বুলেট ঘুরছে। আমি তাঁকে বলেছিলাম, এসব ছেড়ে দেন, তাহলে ঝামেলা থাকবে না। তিনি বলেছিলেন, এটা একমুখী পথ, শুধু ঢোকা যায়, বের হওয়া যায় না। নিউটন খুন হওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল, তাঁর কথাই সত্যি হলো। তিনি আর বের হতে পারলেন না।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

শুক্রবার মানেই ক্রাইম রিপোর্টারদের আরাম হারামের দিন। সেদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটবেই। তা-ও সেটা ছোটখাটো কিছু নয়, রীতিমতো হইচই ফেলা ঘটনা। ২০০২ সালের ১০ মে, শুক্রবার সকালটাও সেভাবেই শুরু হয়েছিল দুরুদুরু মন নিয়ে। শেষ পর্যন্ত যা ভাবা, তা-ই হলো। জুমার আগেই খবর এল, ধানমন্ডিতে বড় মার্ডার হয়েছে।
মিরপুর রোডে গিয়ে দেখি, অর্কিড প্লাজার সামনে পুলিশের অনেক গাড়ি রাস্তার ওপর দাঁড় করানো। মার্কেটের সামনের রাস্তায় রক্তের দাগ। গুলিতে কাচ ঝাঁঝরা হওয়া নীল রঙের একটি মাইক্রোবাস ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে অনেক লোক। পুলিশ সদস্যরা মার্কেটের ভেতরে যাচ্ছেন আর আসছেন। সবাই তটস্থ, একটু পরে সেখানে কমিশনার আসবেন।
কে খুন হয়েছেন? এক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, নিউটন। কোন নিউটন? তিনি আর বলতে পারলেন না। পাশ থেকে এক সাংবাদিক সহকর্মী বলে উঠলেন, মিরপুরের কাউন্সিলর নিউটন। এক ক্রাইম রিপোর্টার বন্ধু পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি খিস্তি করে বললেন, ‘আরে ব্যাটা, তুই কয় দিন আগে যারে নিয়ে নিউজ করলি, হেই ব্যাটা।’ তাঁর কথায় আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল এক স্মার্ট, সুদর্শন যুবকের মুখ। তাঁর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে মাসখানেক আগে একটি রিপোর্ট করেছিলাম। সেই রিপোর্টের জন্য তাঁর সঙ্গে বসে অনেকক্ষণ কথাও বলেছিলাম। তিনি আমার সঙ্গে খুব ভালো আচরণ করেছিলেন। রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর তিনি আমাকে ফোন করে কিছু অংশের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বেশ বিনয় ছিল। সেই যুবক এভাবে খুন হওয়ায় একটু খারাপ লাগল।
ততক্ষণে অর্কিড প্লাজার সামনে মানুষের ভিড় জমে গেছে। পুলিশ রাস্তার এক পাশ বন্ধ করে দিয়েছে। সব গণমাধ্যমের সাংবাদিক সেখানে হামলে পড়েছেন।
সাধারণত কোনো ঘটনাস্থলে মানুষের ভিড় বেশি হলে নানা ধরনের কথা আসতে থাকে। তাতে ঘটনার সঙ্গে রটনাও মিশে যায়। তখন আসল-নকল খুঁজে বের করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এখানেও সেটা হয়েছে। একজনের কাছে জানতে চাইলাম, মিরপুরের নিউটন এখানে কী করছিলেন? একেকজন একেক কথা বলেন। পরে পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া গেল আসল খবর।
সেই পুলিশ কর্মকর্তা বললেন, নিউটনের ছোট ভাই তপনের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল সাতমসজিদ রোডের একটি কমিউনিটি সেন্টারে। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মিরপুরের বাসা থেকে সকালে ধানমন্ডি আসেন নিউটন। অর্কিড প্লাজার দোতলার কোনার দিকে শীতল নামের একটি সেলুন ছিল। চুল-দাড়ি কাটাতে সেখানে এসেছিলেন।
শীতল সেলুনের মালিক আলাউদ্দিন আমাকে বললেন, নিউটন এসেছিলেন বেলা ১১টার দিকে। ঠিক দুপুর ১২টার সময় তিনি নিচে নেমে যান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ইসমাইল নামের একজন দেহরক্ষী ছিলেন। তিনি নিচে নেমে গাড়িতে ওঠার সময় তিন যুবক তাঁকে অনুসরণ করে গাড়ির দরজা পর্যন্ত চলে যান। তিনি যখন গাড়িতে উঠবেন, ঠিক তখনই যুবকদের একজন তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি ছোড়েন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন নিউটন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। নিউটনের গাড়িচালক মিজান এগিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন। সন্ত্রাসীরা তাঁকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে।
অর্কিড প্লাজার দারোয়ান সাইদ আমাকে বললেন, গুলি করার পর তিন যুবক রাস্তা পার হয়ে উল্টো দিকে চলে যান। সেখানে সাদা রঙের একটি গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। যুবকের দল সেই গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায়।
নিউটন কেন খুন হলেন, সেটা বলার আগে তাঁর ফিরিস্তিটা একটু বলে নিই। ছায়েদুর রহমান নিউটনের বাবার নাম ওয়ালিউর রহমান। মিরপুর ১ নম্বরের জি ব্লকে তাঁদের আদি নিবাস। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর পরিবারের সবাই লন্ডনপ্রবাসী। ’৮৯ সালে তেজগাঁও কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলে যোগ দেন। তখন মিরপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হন। কলেজের পর্ব শেষ করে লন্ডনে চলে যান। ’৯২ সালে ফিরে এসে মিরপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হন। ’৯৬ সালে মহানগর কমিটিতে আসেন। সে সময় ছাত্রনেতা নাসির উদ্দীন পিন্টুর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। লাল্টু-পিন্টুর কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহসভাপতিও হন নিউটন। পরে নাসির উদ্দীন পিন্টু তাঁর ছোট বোন ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টির সঙ্গে বিয়ে দেন। নিউটন দম্পতির চমক নামের একটি মেয়েও আছে।
নাসির উদ্দীন পিন্টুর সঙ্গে সখ্যর সুবাদে নিউটন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি মিরপুর এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। একটি ধর্ষণ মামলায় জেলও খাটেন। সে সময় পুলিশ আমাকে বলেছিল, নিউটনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা আছে। এগুলোর মধ্যে একটি খুনের মামলাও ছিল। তবে নিউটন বলেছিলেন, এসব মামলা ষড়যন্ত্র করে করা হয়েছিল। যা হোক, তার পরও তিনি ২০০২ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে চারদলীয় জোট সরকারের মনোনয়ন পান। সেই নির্বাচনে তিনি জয়ী হন। নিহত হওয়ার মাত্র তিন দিন আগে ৭ মে কাউন্সিলর হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। এমনিতে নিউটন সব সময় চলতেন পুলিশি পাহারায়। তেজগাঁও কলেজে এমএ পরীক্ষা দেওয়ার সময়ও পুলিশ পাহারায় ছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর তিনি পুলিশের পাহারা ছেড়ে নিজস্ব লোকজন নিয়ে চলাফেরা শুরু করেন। যত দূর শুনেছিলাম, পুলিশ সঙ্গে নিয়ে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়। এর পরই পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়।
পুলিশ ও বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, নিউটন কেন খুন হলেন। মনে হয়েছিল, হয় নির্বাচনী কোনো কারণে অথবা পুরোনো কোনো বিরোধে তিনি খুন হয়েছেন। কিন্তু দুটোর কোনোটাই সত্যি হলো না। তিনি খুন হয়েছিলেন মিরপুর ১ নম্বর এলাকার কো-অপারেটিভ হকার্স মার্কেটের দখল নিয়ে বিরোধের জেরে। সে সময় মার্কেটটি দখলে নিতে চেয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী ও তাঁর দলের লোকেরা। তাঁরা এই দখল কবজায় রাখতে কালা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। কালা জাহাঙ্গীর তাঁর সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচর কিলার আব্বাসকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। নিউটন খুনের পর ২৭ মে কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী ভুট্টো পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ভুট্টো বলেছিলেন, নিউটন হত্যাকাণ্ডে কালা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তিনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন।
নিউটন খুনের ঘটনায় তাঁর মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনী প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রিপন হেরে যাওয়ার আক্রোশে আগা খান মিন্টু, রাহাত খান, মোশাররফ হোসেন মশুদের সহযোগিতায় নিউটনকে হত্যা করা হয়। পুলিশ এই মামলা তদন্ত করে ১৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। আসামি শওকত, রুবেল ও আইয়ুব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। ২০০৬ সালের ২৪ মে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১৮ জনের মধ্যে দুজনকে খালাস দিয়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরে হাইকোর্ট ফাঁসি ও যাবজ্জীবন থেকে ছয় আসামিকে অব্যাহতি দেন। মজার বিষয় হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরেরও মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।
আজকের আষাঢ়ে নয় লিখতে গিয়ে মনে পড়ল নিউটনের সঙ্গে আমার সেই সাক্ষাতের কথা। তিনি বলছিলেন, যেকোনো সময় তিনি খুন হতে পারেন। তাঁর পেছনে বুলেট ঘুরছে। আমি তাঁকে বলেছিলাম, এসব ছেড়ে দেন, তাহলে ঝামেলা থাকবে না। তিনি বলেছিলেন, এটা একমুখী পথ, শুধু ঢোকা যায়, বের হওয়া যায় না। নিউটন খুন হওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল, তাঁর কথাই সত্যি হলো। তিনি আর বের হতে পারলেন না।
আরও পড়ুন:

শুক্রবার মানেই ক্রাইম রিপোর্টারদের আরাম হারামের দিন। সেদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটবেই। তা-ও সেটা ছোটখাটো কিছু নয়, রীতিমতো হইচই ফেলা ঘটনা। ২০০২ সালের ১০ মে, শুক্রবার সকালটাও সেভাবেই শুরু হয়েছিল দুরুদুরু মন নিয়ে। শেষ পর্যন্ত যা ভাবা, তা-ই হলো। জুমার আগেই খবর এল, ধানমন্ডিতে বড় মার্ডার হয়েছে।
মিরপুর রোডে গিয়ে দেখি, অর্কিড প্লাজার সামনে পুলিশের অনেক গাড়ি রাস্তার ওপর দাঁড় করানো। মার্কেটের সামনের রাস্তায় রক্তের দাগ। গুলিতে কাচ ঝাঁঝরা হওয়া নীল রঙের একটি মাইক্রোবাস ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে অনেক লোক। পুলিশ সদস্যরা মার্কেটের ভেতরে যাচ্ছেন আর আসছেন। সবাই তটস্থ, একটু পরে সেখানে কমিশনার আসবেন।
কে খুন হয়েছেন? এক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, নিউটন। কোন নিউটন? তিনি আর বলতে পারলেন না। পাশ থেকে এক সাংবাদিক সহকর্মী বলে উঠলেন, মিরপুরের কাউন্সিলর নিউটন। এক ক্রাইম রিপোর্টার বন্ধু পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি খিস্তি করে বললেন, ‘আরে ব্যাটা, তুই কয় দিন আগে যারে নিয়ে নিউজ করলি, হেই ব্যাটা।’ তাঁর কথায় আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল এক স্মার্ট, সুদর্শন যুবকের মুখ। তাঁর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে মাসখানেক আগে একটি রিপোর্ট করেছিলাম। সেই রিপোর্টের জন্য তাঁর সঙ্গে বসে অনেকক্ষণ কথাও বলেছিলাম। তিনি আমার সঙ্গে খুব ভালো আচরণ করেছিলেন। রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর তিনি আমাকে ফোন করে কিছু অংশের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বেশ বিনয় ছিল। সেই যুবক এভাবে খুন হওয়ায় একটু খারাপ লাগল।
ততক্ষণে অর্কিড প্লাজার সামনে মানুষের ভিড় জমে গেছে। পুলিশ রাস্তার এক পাশ বন্ধ করে দিয়েছে। সব গণমাধ্যমের সাংবাদিক সেখানে হামলে পড়েছেন।
সাধারণত কোনো ঘটনাস্থলে মানুষের ভিড় বেশি হলে নানা ধরনের কথা আসতে থাকে। তাতে ঘটনার সঙ্গে রটনাও মিশে যায়। তখন আসল-নকল খুঁজে বের করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এখানেও সেটা হয়েছে। একজনের কাছে জানতে চাইলাম, মিরপুরের নিউটন এখানে কী করছিলেন? একেকজন একেক কথা বলেন। পরে পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া গেল আসল খবর।
সেই পুলিশ কর্মকর্তা বললেন, নিউটনের ছোট ভাই তপনের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল সাতমসজিদ রোডের একটি কমিউনিটি সেন্টারে। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মিরপুরের বাসা থেকে সকালে ধানমন্ডি আসেন নিউটন। অর্কিড প্লাজার দোতলার কোনার দিকে শীতল নামের একটি সেলুন ছিল। চুল-দাড়ি কাটাতে সেখানে এসেছিলেন।
শীতল সেলুনের মালিক আলাউদ্দিন আমাকে বললেন, নিউটন এসেছিলেন বেলা ১১টার দিকে। ঠিক দুপুর ১২টার সময় তিনি নিচে নেমে যান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ইসমাইল নামের একজন দেহরক্ষী ছিলেন। তিনি নিচে নেমে গাড়িতে ওঠার সময় তিন যুবক তাঁকে অনুসরণ করে গাড়ির দরজা পর্যন্ত চলে যান। তিনি যখন গাড়িতে উঠবেন, ঠিক তখনই যুবকদের একজন তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি ছোড়েন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন নিউটন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। নিউটনের গাড়িচালক মিজান এগিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন। সন্ত্রাসীরা তাঁকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে।
অর্কিড প্লাজার দারোয়ান সাইদ আমাকে বললেন, গুলি করার পর তিন যুবক রাস্তা পার হয়ে উল্টো দিকে চলে যান। সেখানে সাদা রঙের একটি গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। যুবকের দল সেই গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায়।
নিউটন কেন খুন হলেন, সেটা বলার আগে তাঁর ফিরিস্তিটা একটু বলে নিই। ছায়েদুর রহমান নিউটনের বাবার নাম ওয়ালিউর রহমান। মিরপুর ১ নম্বরের জি ব্লকে তাঁদের আদি নিবাস। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর পরিবারের সবাই লন্ডনপ্রবাসী। ’৮৯ সালে তেজগাঁও কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলে যোগ দেন। তখন মিরপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হন। কলেজের পর্ব শেষ করে লন্ডনে চলে যান। ’৯২ সালে ফিরে এসে মিরপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হন। ’৯৬ সালে মহানগর কমিটিতে আসেন। সে সময় ছাত্রনেতা নাসির উদ্দীন পিন্টুর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। লাল্টু-পিন্টুর কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহসভাপতিও হন নিউটন। পরে নাসির উদ্দীন পিন্টু তাঁর ছোট বোন ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টির সঙ্গে বিয়ে দেন। নিউটন দম্পতির চমক নামের একটি মেয়েও আছে।
নাসির উদ্দীন পিন্টুর সঙ্গে সখ্যর সুবাদে নিউটন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি মিরপুর এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। একটি ধর্ষণ মামলায় জেলও খাটেন। সে সময় পুলিশ আমাকে বলেছিল, নিউটনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা আছে। এগুলোর মধ্যে একটি খুনের মামলাও ছিল। তবে নিউটন বলেছিলেন, এসব মামলা ষড়যন্ত্র করে করা হয়েছিল। যা হোক, তার পরও তিনি ২০০২ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে চারদলীয় জোট সরকারের মনোনয়ন পান। সেই নির্বাচনে তিনি জয়ী হন। নিহত হওয়ার মাত্র তিন দিন আগে ৭ মে কাউন্সিলর হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। এমনিতে নিউটন সব সময় চলতেন পুলিশি পাহারায়। তেজগাঁও কলেজে এমএ পরীক্ষা দেওয়ার সময়ও পুলিশ পাহারায় ছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর তিনি পুলিশের পাহারা ছেড়ে নিজস্ব লোকজন নিয়ে চলাফেরা শুরু করেন। যত দূর শুনেছিলাম, পুলিশ সঙ্গে নিয়ে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়। এর পরই পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়।
পুলিশ ও বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, নিউটন কেন খুন হলেন। মনে হয়েছিল, হয় নির্বাচনী কোনো কারণে অথবা পুরোনো কোনো বিরোধে তিনি খুন হয়েছেন। কিন্তু দুটোর কোনোটাই সত্যি হলো না। তিনি খুন হয়েছিলেন মিরপুর ১ নম্বর এলাকার কো-অপারেটিভ হকার্স মার্কেটের দখল নিয়ে বিরোধের জেরে। সে সময় মার্কেটটি দখলে নিতে চেয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী ও তাঁর দলের লোকেরা। তাঁরা এই দখল কবজায় রাখতে কালা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। কালা জাহাঙ্গীর তাঁর সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচর কিলার আব্বাসকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। নিউটন খুনের পর ২৭ মে কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী ভুট্টো পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ভুট্টো বলেছিলেন, নিউটন হত্যাকাণ্ডে কালা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তিনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন।
নিউটন খুনের ঘটনায় তাঁর মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনী প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রিপন হেরে যাওয়ার আক্রোশে আগা খান মিন্টু, রাহাত খান, মোশাররফ হোসেন মশুদের সহযোগিতায় নিউটনকে হত্যা করা হয়। পুলিশ এই মামলা তদন্ত করে ১৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। আসামি শওকত, রুবেল ও আইয়ুব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। ২০০৬ সালের ২৪ মে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১৮ জনের মধ্যে দুজনকে খালাস দিয়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরে হাইকোর্ট ফাঁসি ও যাবজ্জীবন থেকে ছয় আসামিকে অব্যাহতি দেন। মজার বিষয় হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরেরও মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।
আজকের আষাঢ়ে নয় লিখতে গিয়ে মনে পড়ল নিউটনের সঙ্গে আমার সেই সাক্ষাতের কথা। তিনি বলছিলেন, যেকোনো সময় তিনি খুন হতে পারেন। তাঁর পেছনে বুলেট ঘুরছে। আমি তাঁকে বলেছিলাম, এসব ছেড়ে দেন, তাহলে ঝামেলা থাকবে না। তিনি বলেছিলেন, এটা একমুখী পথ, শুধু ঢোকা যায়, বের হওয়া যায় না। নিউটন খুন হওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল, তাঁর কথাই সত্যি হলো। তিনি আর বের হতে পারলেন না।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

শুক্রবার মানেই ক্রাইম রিপোর্টারদের আরাম হারামের দিন। সেদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটবেই। তা-ও সেটা ছোটখাটো কোনো কিছু নয়, রীতিমতো হইচই ফেলা ঘটনা। ২০০২ সালের ১০ মে, শুক্রবার সকালটাও সেভাবে শুরু হয়েছিল দুরুদুরু মন নিয়ে।
২৮ জানুয়ারি ২০২৩
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

শুক্রবার মানেই ক্রাইম রিপোর্টারদের আরাম হারামের দিন। সেদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটবেই। তা-ও সেটা ছোটখাটো কোনো কিছু নয়, রীতিমতো হইচই ফেলা ঘটনা। ২০০২ সালের ১০ মে, শুক্রবার সকালটাও সেভাবে শুরু হয়েছিল দুরুদুরু মন নিয়ে।
২৮ জানুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

শুক্রবার মানেই ক্রাইম রিপোর্টারদের আরাম হারামের দিন। সেদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটবেই। তা-ও সেটা ছোটখাটো কোনো কিছু নয়, রীতিমতো হইচই ফেলা ঘটনা। ২০০২ সালের ১০ মে, শুক্রবার সকালটাও সেভাবে শুরু হয়েছিল দুরুদুরু মন নিয়ে।
২৮ জানুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

শুক্রবার মানেই ক্রাইম রিপোর্টারদের আরাম হারামের দিন। সেদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটবেই। তা-ও সেটা ছোটখাটো কোনো কিছু নয়, রীতিমতো হইচই ফেলা ঘটনা। ২০০২ সালের ১০ মে, শুক্রবার সকালটাও সেভাবে শুরু হয়েছিল দুরুদুরু মন নিয়ে।
২৮ জানুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে