কামরুল হাসান

বেনাপোল মোড় থেকে উত্তর দিকে যে গ্রামটিতে আমরা যাচ্ছি, সেটি কাশীপুর। অর্ধেক বাংলাদেশে, অর্ধেক ভারতে। সীমান্তের উঁচু কাঁটাতার গ্রামটিকে এফোঁড়-ওফোঁড় করেছে। সেই পথ ধরে মিনিট বিশেক চলার পর গাড়ি এসে থামল ধবধবে সমাধিসৌধের সামনে। কিছুক্ষণ আগে তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। সেই পানিতে ধুয়ে সমাধির পাথর আরও শুভ্র হয়েছে। সমাধির গায়ে খোদাই করা নামটি দেখে বুক ভরে গেল–বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধি।
যশোর বিমানবন্দর থেকে এযাত্রায় আমার সঙ্গী হয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম। সমাধির দিকে তাকিয়ে তিনি বেশ বিজ্ঞর মতো বললেন, যে গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠর সমাধি থাকে, সেখানকার মানুষও মাদকের কারবার করে! আমি তাঁকে অনিমেষ বৈশ্যর চরণ শুনিয়ে বললাম, যেখানে রবীন্দ্রনাথের গান বাজে, সেখানেও মানুষ খুন হয়।
মনিরুল হেসে বললেন, কিন্তু এটাও সত্যি যে আমরা এখানে খুনের ঘটনা জানতে এসেছি। মনিরুলের কথা ঠিক, সীমান্তের এই গ্রামে আমরা এসেছি এক গ্রামীণ সাংবাদিকের খোঁজ নিতে, মাদক ও চোরাচালান বিষয়ে প্রতিবেদন করে যিনি খুন হয়েছেন।
যাঁর খোঁজ নিতে এসেছি, তিনি বিখ্যাত কেউ নন, খুব সাধারণ একজন। নাম জামাল উদ্দিন। কাজ করতেন যশোর থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক গ্রামের কাগজ’-এ, কাশীপুর প্রতিনিধি হিসেবে। তাঁর খুনের খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছিল দায়সারাভাবে, ভেতরের পাতায় খুব ছোট করে। সাধারণ একজন গ্রামীণ সাংবাদিককে নিয়ে এত ভাবার সময় কার আছে?
জামাল উদ্দিন খুন হন ২০১২ সালের ১৫ জুন, রাতে। এর মাস তিনেক পর বেনামি একটি চিঠি আসে আমার কাছে। খামের ভেতরে শুধু একটি পেনড্রাইভ। সেটাতে থাকা অডিও ফাইল কম্পিউটারে চালাতেই দেখি একটি ফোনালাপ।
‘–ও যখন মা মা কয়ে চিৎকার করে, আমি তখন লাথি দিয়া রেলিংটা ভাইঙ্গা ওর গলা চেপে ধরি। চিৎকার দিবি না, খবরদার! তারপর ভুঁড়িটা নিয়ে নিছি।
-প্রথম কী করিছিলি?
-প্রথম ভুঁড়ি, তারপর চোখ, তারপর তিনটা রগ।
-রক্ত তো পড়ে নাই বেশি?
-চেপে ধরেছিলাম না। চিৎকার যাতে না পাড়ে। রক্ত যাতে না পড়ে সেভাবেই মারছি।
-দূরে থাক, সাবধানে থাক; ধরা পড়িস না।’
পেনড্রাইভের ভেতরে একটি ওয়ার্ড ফাইলে ছিল সেই খুনের বিবরণ। সেটা পড়ে বুঝলাম, এই ফোনালাপ একজন খুনি এবং এক পুলিশ সদস্যের। এই খুনের সঙ্গে তারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পড়ে-শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। যশোরের মনিরুলকে ফোন করে বললাম, কাল আসছি। এটা ২০১২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।
উড়োজাহাজ থেকে যশোর বিমানবন্দরে নামতেই তুমুল বৃষ্টি। সেই বৃষ্টির পথ মাড়িয়ে বেনাপোল হয়ে কাশীপুর গ্রামে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে গেল। জামাল উদ্দিনের বাড়িও খুঁজে পেলাম সহজে। বাড়ি না বলে একে কুঁড়েঘর বলাই ভালো। একটিমাত্র মাটির ঘর, তাতে আসবাব বলতে শুধু একটি কাঠের চৌকি। দুই মেয়ে রিয়া ও নেহা আর ছেলে চঞ্চলকে নিয়ে জামাল উদ্দিনের সংসার। স্থায়ী পেশা বলতে বেনাপোলের বাসমালিক সমিতিতে চাকরি, বাসের সময় নিয়ন্ত্রণের কাজ (স্টার্টার)। আর মাঝেমধ্যে এলাকার খবর পাঠাতেন গ্রামের কাগজে।
সেই জামাল উদ্দিনকে এক রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান তাঁর পরিচিত কয়েকজন। তাঁরা কাশীপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে গল্প জুড়ে দেন। গল্পের ফাঁকে চেতনানাশক মেশানো কোমল পানীয় খাওয়ান জামালকে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এ ঘটনার ৫-৬ মিনিটের মধ্যে সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে হাজির হন।
অত রাতে মফস্বলের ওই বাজারে লোকজন বেশি ছিল না। তারপরও লোকজন খুনিদের চিনিয়ে দিয়ে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করে। কিন্তু পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।
জামালের ভাই লিটন আমাকে বললেন, ‘কিলারদের দেইখে লোকজন পুলিশকে বলল, ভাই, ওই দ্যাখেন, খুনিরা যাইতেছে। পুলিশ বলল, তোমাদের কিছু করতি হবি না, আমরা দেকছি।’
এরপর খুনিরা চলে গেল। কিন্তু লোকজন পুলিশের এ কর্মকাণ্ড মেনে নিতে পারেনি। প্রতিবাদে পুলিশের সামনেই তারা সন্দেহভাজন দুই খুনির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আমি কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, খুনটা হলো কী করে। জামালের বাবা আবদুল আলিম আমাকে বললেন, দেড় মাস আগে কাশীপুর ঘাট দিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার (গাড়ির এসিতে ব্যবহারের উপযোগী) পাচারে বাধা দিয়েছিলেন জামাল। সেখানকার চোরাচালানি শরিফুল ও তোতা এটা পাচার করছিল। পরে জামাল থানায় খবর দিয়ে এসব ধরিয়ে দেন। এতে পুলিশ ফাঁড়ির তখনকার ইনচার্জ ও চোরাচালানিরা ক্ষুব্ধ হয়। এ ঘটনার পরই তারা জামালকে খুনের পরিকল্পনা করে।
কাশীপুর বাজারের এক দোকানি আমাকে বললেন, এই গ্রামের আশপাশে ৬-৭টি চোরাচালানের ঘাট আছে। প্রতি মাসে এসব ঘাট থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ৩-৪ লাখ টাকা আদায় করেন। কাশীপুর গ্রাম থেকে একটু দূরের শার্শা থানা-পুলিশের গৌরপাড়া ফাঁড়ি। চোরাচালানের ঘাট থেকে আয়ের সব টাকা সেই ফাঁড়ির প্রধানের হাত ঘুরে কর্তাদের পকেটে যায়।
সব শুনে মনে হলো, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার স্বার্থ। জামাল উদ্দিন এলাকার মাদক কারবার নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট করতেন। স্থানীয় পত্রিকাটিতে সেসব খবর ছাপাও হতো। এসব কারণেই মাদক ব্যবসায়ীরা তাঁকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
খুনের পর গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি আদালতে বলেছিলেন, তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, জামাল উদ্দিনের হাত ও পা কেটে নেবেন, চোখ তুলে ফেলবেন—কিন্তু প্রাণে মারবেন না। স্বাভাবিকভাবেই এই খুনের সঙ্গে ফাঁড়ির সেই পুলিশ সদস্যের হাত ছিল। কুরিয়ারে আসা ফোনালাপ তারই প্রমাণ।
জামালের বাবা আমাকে বললেন, ফাঁড়ির সেই সদস্য শুধু খুনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি এখন এ নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ না করার জন্য তাঁদেরকে চাপে রেখেছেন। হত্যা মামলার প্রধান আসামির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করে তাঁকে নানাভাবে সহায়তাও করছেন।
এলাকার আরও কয়েকজনের সঙ্গে আমার কথা হলো। তাঁরা বললেন, জামালকে যারা খুন করেছে, তাদের সঙ্গে ফাঁড়ির সেই সদস্যের অনেক দহরম-মহরম। রাত বাড়লেই তাদের একসঙ্গে দেখা যায়।
শার্শা থানায় তখন ওসি ছিলেন এ কে এম ফারুক হোসেন। তিনি আমার সব কথা শুনে বললেন, ‘আপনার মাথা খারাপ, পুলিশ কি মার্ডার করে?’ তখন যশোরের এসপি ছিলেন কামরুল আহসান। তিনি বলেছিলেন, ‘এই ফোনালাপ সাজানো হতে পারে।’
জামালের এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমার রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর একটি তদন্ত কমিটি হয়েছিল। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৭ মে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তাতে সাতজনের নাম উল্লেখ ছিল। কিন্তু অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ছাড়াও লোকজন সেদিন যাদের ঘটনাস্থলে দেখেছিল, তাদের অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। জামালের অসহায় বাবা এ নিয়ে অনেক চেষ্টা-তদবির করেছিলেন, কিন্তু কে শোনে তাঁর কথা।
‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে গতকাল আবার মনিরুলকে ফোন করেছিলাম এই মামলার শেষটা জানতে। মনিরুল বললেন, আদালতে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত জামালের বাবা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। এখন এ মামলা নিয়ে কেউ আর ঘাঁটাঘাঁটি করে না।
মনিরুলের কথায় মনে হলো, এ মামলার কোনো সাক্ষী আর আদালতে যান না। সে কারণে বিচারও আটকে গেছে। পড়ে থাকতে থাকতে ধুলোর আস্তরণে ঢেকে গেছে হতভাগ্য এক গ্রামীণ সাংবাদিক খুনের ‘কেস ডকেট’।
এখানে বিচারের বাণী আর কাঁদে না, পাথর হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:

বেনাপোল মোড় থেকে উত্তর দিকে যে গ্রামটিতে আমরা যাচ্ছি, সেটি কাশীপুর। অর্ধেক বাংলাদেশে, অর্ধেক ভারতে। সীমান্তের উঁচু কাঁটাতার গ্রামটিকে এফোঁড়-ওফোঁড় করেছে। সেই পথ ধরে মিনিট বিশেক চলার পর গাড়ি এসে থামল ধবধবে সমাধিসৌধের সামনে। কিছুক্ষণ আগে তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। সেই পানিতে ধুয়ে সমাধির পাথর আরও শুভ্র হয়েছে। সমাধির গায়ে খোদাই করা নামটি দেখে বুক ভরে গেল–বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধি।
যশোর বিমানবন্দর থেকে এযাত্রায় আমার সঙ্গী হয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম। সমাধির দিকে তাকিয়ে তিনি বেশ বিজ্ঞর মতো বললেন, যে গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠর সমাধি থাকে, সেখানকার মানুষও মাদকের কারবার করে! আমি তাঁকে অনিমেষ বৈশ্যর চরণ শুনিয়ে বললাম, যেখানে রবীন্দ্রনাথের গান বাজে, সেখানেও মানুষ খুন হয়।
মনিরুল হেসে বললেন, কিন্তু এটাও সত্যি যে আমরা এখানে খুনের ঘটনা জানতে এসেছি। মনিরুলের কথা ঠিক, সীমান্তের এই গ্রামে আমরা এসেছি এক গ্রামীণ সাংবাদিকের খোঁজ নিতে, মাদক ও চোরাচালান বিষয়ে প্রতিবেদন করে যিনি খুন হয়েছেন।
যাঁর খোঁজ নিতে এসেছি, তিনি বিখ্যাত কেউ নন, খুব সাধারণ একজন। নাম জামাল উদ্দিন। কাজ করতেন যশোর থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক গ্রামের কাগজ’-এ, কাশীপুর প্রতিনিধি হিসেবে। তাঁর খুনের খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছিল দায়সারাভাবে, ভেতরের পাতায় খুব ছোট করে। সাধারণ একজন গ্রামীণ সাংবাদিককে নিয়ে এত ভাবার সময় কার আছে?
জামাল উদ্দিন খুন হন ২০১২ সালের ১৫ জুন, রাতে। এর মাস তিনেক পর বেনামি একটি চিঠি আসে আমার কাছে। খামের ভেতরে শুধু একটি পেনড্রাইভ। সেটাতে থাকা অডিও ফাইল কম্পিউটারে চালাতেই দেখি একটি ফোনালাপ।
‘–ও যখন মা মা কয়ে চিৎকার করে, আমি তখন লাথি দিয়া রেলিংটা ভাইঙ্গা ওর গলা চেপে ধরি। চিৎকার দিবি না, খবরদার! তারপর ভুঁড়িটা নিয়ে নিছি।
-প্রথম কী করিছিলি?
-প্রথম ভুঁড়ি, তারপর চোখ, তারপর তিনটা রগ।
-রক্ত তো পড়ে নাই বেশি?
-চেপে ধরেছিলাম না। চিৎকার যাতে না পাড়ে। রক্ত যাতে না পড়ে সেভাবেই মারছি।
-দূরে থাক, সাবধানে থাক; ধরা পড়িস না।’
পেনড্রাইভের ভেতরে একটি ওয়ার্ড ফাইলে ছিল সেই খুনের বিবরণ। সেটা পড়ে বুঝলাম, এই ফোনালাপ একজন খুনি এবং এক পুলিশ সদস্যের। এই খুনের সঙ্গে তারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পড়ে-শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। যশোরের মনিরুলকে ফোন করে বললাম, কাল আসছি। এটা ২০১২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।
উড়োজাহাজ থেকে যশোর বিমানবন্দরে নামতেই তুমুল বৃষ্টি। সেই বৃষ্টির পথ মাড়িয়ে বেনাপোল হয়ে কাশীপুর গ্রামে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে গেল। জামাল উদ্দিনের বাড়িও খুঁজে পেলাম সহজে। বাড়ি না বলে একে কুঁড়েঘর বলাই ভালো। একটিমাত্র মাটির ঘর, তাতে আসবাব বলতে শুধু একটি কাঠের চৌকি। দুই মেয়ে রিয়া ও নেহা আর ছেলে চঞ্চলকে নিয়ে জামাল উদ্দিনের সংসার। স্থায়ী পেশা বলতে বেনাপোলের বাসমালিক সমিতিতে চাকরি, বাসের সময় নিয়ন্ত্রণের কাজ (স্টার্টার)। আর মাঝেমধ্যে এলাকার খবর পাঠাতেন গ্রামের কাগজে।
সেই জামাল উদ্দিনকে এক রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান তাঁর পরিচিত কয়েকজন। তাঁরা কাশীপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে গল্প জুড়ে দেন। গল্পের ফাঁকে চেতনানাশক মেশানো কোমল পানীয় খাওয়ান জামালকে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এ ঘটনার ৫-৬ মিনিটের মধ্যে সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে হাজির হন।
অত রাতে মফস্বলের ওই বাজারে লোকজন বেশি ছিল না। তারপরও লোকজন খুনিদের চিনিয়ে দিয়ে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করে। কিন্তু পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।
জামালের ভাই লিটন আমাকে বললেন, ‘কিলারদের দেইখে লোকজন পুলিশকে বলল, ভাই, ওই দ্যাখেন, খুনিরা যাইতেছে। পুলিশ বলল, তোমাদের কিছু করতি হবি না, আমরা দেকছি।’
এরপর খুনিরা চলে গেল। কিন্তু লোকজন পুলিশের এ কর্মকাণ্ড মেনে নিতে পারেনি। প্রতিবাদে পুলিশের সামনেই তারা সন্দেহভাজন দুই খুনির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আমি কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, খুনটা হলো কী করে। জামালের বাবা আবদুল আলিম আমাকে বললেন, দেড় মাস আগে কাশীপুর ঘাট দিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার (গাড়ির এসিতে ব্যবহারের উপযোগী) পাচারে বাধা দিয়েছিলেন জামাল। সেখানকার চোরাচালানি শরিফুল ও তোতা এটা পাচার করছিল। পরে জামাল থানায় খবর দিয়ে এসব ধরিয়ে দেন। এতে পুলিশ ফাঁড়ির তখনকার ইনচার্জ ও চোরাচালানিরা ক্ষুব্ধ হয়। এ ঘটনার পরই তারা জামালকে খুনের পরিকল্পনা করে।
কাশীপুর বাজারের এক দোকানি আমাকে বললেন, এই গ্রামের আশপাশে ৬-৭টি চোরাচালানের ঘাট আছে। প্রতি মাসে এসব ঘাট থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ৩-৪ লাখ টাকা আদায় করেন। কাশীপুর গ্রাম থেকে একটু দূরের শার্শা থানা-পুলিশের গৌরপাড়া ফাঁড়ি। চোরাচালানের ঘাট থেকে আয়ের সব টাকা সেই ফাঁড়ির প্রধানের হাত ঘুরে কর্তাদের পকেটে যায়।
সব শুনে মনে হলো, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার স্বার্থ। জামাল উদ্দিন এলাকার মাদক কারবার নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট করতেন। স্থানীয় পত্রিকাটিতে সেসব খবর ছাপাও হতো। এসব কারণেই মাদক ব্যবসায়ীরা তাঁকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
খুনের পর গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি আদালতে বলেছিলেন, তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, জামাল উদ্দিনের হাত ও পা কেটে নেবেন, চোখ তুলে ফেলবেন—কিন্তু প্রাণে মারবেন না। স্বাভাবিকভাবেই এই খুনের সঙ্গে ফাঁড়ির সেই পুলিশ সদস্যের হাত ছিল। কুরিয়ারে আসা ফোনালাপ তারই প্রমাণ।
জামালের বাবা আমাকে বললেন, ফাঁড়ির সেই সদস্য শুধু খুনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি এখন এ নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ না করার জন্য তাঁদেরকে চাপে রেখেছেন। হত্যা মামলার প্রধান আসামির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করে তাঁকে নানাভাবে সহায়তাও করছেন।
এলাকার আরও কয়েকজনের সঙ্গে আমার কথা হলো। তাঁরা বললেন, জামালকে যারা খুন করেছে, তাদের সঙ্গে ফাঁড়ির সেই সদস্যের অনেক দহরম-মহরম। রাত বাড়লেই তাদের একসঙ্গে দেখা যায়।
শার্শা থানায় তখন ওসি ছিলেন এ কে এম ফারুক হোসেন। তিনি আমার সব কথা শুনে বললেন, ‘আপনার মাথা খারাপ, পুলিশ কি মার্ডার করে?’ তখন যশোরের এসপি ছিলেন কামরুল আহসান। তিনি বলেছিলেন, ‘এই ফোনালাপ সাজানো হতে পারে।’
জামালের এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমার রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর একটি তদন্ত কমিটি হয়েছিল। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৭ মে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তাতে সাতজনের নাম উল্লেখ ছিল। কিন্তু অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ছাড়াও লোকজন সেদিন যাদের ঘটনাস্থলে দেখেছিল, তাদের অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। জামালের অসহায় বাবা এ নিয়ে অনেক চেষ্টা-তদবির করেছিলেন, কিন্তু কে শোনে তাঁর কথা।
‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে গতকাল আবার মনিরুলকে ফোন করেছিলাম এই মামলার শেষটা জানতে। মনিরুল বললেন, আদালতে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত জামালের বাবা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। এখন এ মামলা নিয়ে কেউ আর ঘাঁটাঘাঁটি করে না।
মনিরুলের কথায় মনে হলো, এ মামলার কোনো সাক্ষী আর আদালতে যান না। সে কারণে বিচারও আটকে গেছে। পড়ে থাকতে থাকতে ধুলোর আস্তরণে ঢেকে গেছে হতভাগ্য এক গ্রামীণ সাংবাদিক খুনের ‘কেস ডকেট’।
এখানে বিচারের বাণী আর কাঁদে না, পাথর হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

বেনাপোল মোড় থেকে উত্তর দিকে যে গ্রামটিতে আমরা যাচ্ছি, সেটি কাশীপুর। অর্ধেক বাংলাদেশে, অর্ধেক ভারতে। সীমান্তের উঁচু কাঁটাতার গ্রামটিকে এফোঁড়-ওফোঁড় করেছে। সেই পথ ধরে মিনিট বিশেক চলার পর গাড়ি এসে থামল ধবধবে সমাধিসৌধের সামনে। কিছুক্ষণ আগে তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। সেই পানিতে ধুয়ে সমাধির পাথর আরও শুভ্র হয়েছে। সমাধির গায়ে খোদাই করা নামটি দেখে বুক ভরে গেল–বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধি।
যশোর বিমানবন্দর থেকে এযাত্রায় আমার সঙ্গী হয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম। সমাধির দিকে তাকিয়ে তিনি বেশ বিজ্ঞর মতো বললেন, যে গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠর সমাধি থাকে, সেখানকার মানুষও মাদকের কারবার করে! আমি তাঁকে অনিমেষ বৈশ্যর চরণ শুনিয়ে বললাম, যেখানে রবীন্দ্রনাথের গান বাজে, সেখানেও মানুষ খুন হয়।
মনিরুল হেসে বললেন, কিন্তু এটাও সত্যি যে আমরা এখানে খুনের ঘটনা জানতে এসেছি। মনিরুলের কথা ঠিক, সীমান্তের এই গ্রামে আমরা এসেছি এক গ্রামীণ সাংবাদিকের খোঁজ নিতে, মাদক ও চোরাচালান বিষয়ে প্রতিবেদন করে যিনি খুন হয়েছেন।
যাঁর খোঁজ নিতে এসেছি, তিনি বিখ্যাত কেউ নন, খুব সাধারণ একজন। নাম জামাল উদ্দিন। কাজ করতেন যশোর থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক গ্রামের কাগজ’-এ, কাশীপুর প্রতিনিধি হিসেবে। তাঁর খুনের খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছিল দায়সারাভাবে, ভেতরের পাতায় খুব ছোট করে। সাধারণ একজন গ্রামীণ সাংবাদিককে নিয়ে এত ভাবার সময় কার আছে?
জামাল উদ্দিন খুন হন ২০১২ সালের ১৫ জুন, রাতে। এর মাস তিনেক পর বেনামি একটি চিঠি আসে আমার কাছে। খামের ভেতরে শুধু একটি পেনড্রাইভ। সেটাতে থাকা অডিও ফাইল কম্পিউটারে চালাতেই দেখি একটি ফোনালাপ।
‘–ও যখন মা মা কয়ে চিৎকার করে, আমি তখন লাথি দিয়া রেলিংটা ভাইঙ্গা ওর গলা চেপে ধরি। চিৎকার দিবি না, খবরদার! তারপর ভুঁড়িটা নিয়ে নিছি।
-প্রথম কী করিছিলি?
-প্রথম ভুঁড়ি, তারপর চোখ, তারপর তিনটা রগ।
-রক্ত তো পড়ে নাই বেশি?
-চেপে ধরেছিলাম না। চিৎকার যাতে না পাড়ে। রক্ত যাতে না পড়ে সেভাবেই মারছি।
-দূরে থাক, সাবধানে থাক; ধরা পড়িস না।’
পেনড্রাইভের ভেতরে একটি ওয়ার্ড ফাইলে ছিল সেই খুনের বিবরণ। সেটা পড়ে বুঝলাম, এই ফোনালাপ একজন খুনি এবং এক পুলিশ সদস্যের। এই খুনের সঙ্গে তারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পড়ে-শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। যশোরের মনিরুলকে ফোন করে বললাম, কাল আসছি। এটা ২০১২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।
উড়োজাহাজ থেকে যশোর বিমানবন্দরে নামতেই তুমুল বৃষ্টি। সেই বৃষ্টির পথ মাড়িয়ে বেনাপোল হয়ে কাশীপুর গ্রামে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে গেল। জামাল উদ্দিনের বাড়িও খুঁজে পেলাম সহজে। বাড়ি না বলে একে কুঁড়েঘর বলাই ভালো। একটিমাত্র মাটির ঘর, তাতে আসবাব বলতে শুধু একটি কাঠের চৌকি। দুই মেয়ে রিয়া ও নেহা আর ছেলে চঞ্চলকে নিয়ে জামাল উদ্দিনের সংসার। স্থায়ী পেশা বলতে বেনাপোলের বাসমালিক সমিতিতে চাকরি, বাসের সময় নিয়ন্ত্রণের কাজ (স্টার্টার)। আর মাঝেমধ্যে এলাকার খবর পাঠাতেন গ্রামের কাগজে।
সেই জামাল উদ্দিনকে এক রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান তাঁর পরিচিত কয়েকজন। তাঁরা কাশীপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে গল্প জুড়ে দেন। গল্পের ফাঁকে চেতনানাশক মেশানো কোমল পানীয় খাওয়ান জামালকে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এ ঘটনার ৫-৬ মিনিটের মধ্যে সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে হাজির হন।
অত রাতে মফস্বলের ওই বাজারে লোকজন বেশি ছিল না। তারপরও লোকজন খুনিদের চিনিয়ে দিয়ে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করে। কিন্তু পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।
জামালের ভাই লিটন আমাকে বললেন, ‘কিলারদের দেইখে লোকজন পুলিশকে বলল, ভাই, ওই দ্যাখেন, খুনিরা যাইতেছে। পুলিশ বলল, তোমাদের কিছু করতি হবি না, আমরা দেকছি।’
এরপর খুনিরা চলে গেল। কিন্তু লোকজন পুলিশের এ কর্মকাণ্ড মেনে নিতে পারেনি। প্রতিবাদে পুলিশের সামনেই তারা সন্দেহভাজন দুই খুনির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আমি কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, খুনটা হলো কী করে। জামালের বাবা আবদুল আলিম আমাকে বললেন, দেড় মাস আগে কাশীপুর ঘাট দিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার (গাড়ির এসিতে ব্যবহারের উপযোগী) পাচারে বাধা দিয়েছিলেন জামাল। সেখানকার চোরাচালানি শরিফুল ও তোতা এটা পাচার করছিল। পরে জামাল থানায় খবর দিয়ে এসব ধরিয়ে দেন। এতে পুলিশ ফাঁড়ির তখনকার ইনচার্জ ও চোরাচালানিরা ক্ষুব্ধ হয়। এ ঘটনার পরই তারা জামালকে খুনের পরিকল্পনা করে।
কাশীপুর বাজারের এক দোকানি আমাকে বললেন, এই গ্রামের আশপাশে ৬-৭টি চোরাচালানের ঘাট আছে। প্রতি মাসে এসব ঘাট থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ৩-৪ লাখ টাকা আদায় করেন। কাশীপুর গ্রাম থেকে একটু দূরের শার্শা থানা-পুলিশের গৌরপাড়া ফাঁড়ি। চোরাচালানের ঘাট থেকে আয়ের সব টাকা সেই ফাঁড়ির প্রধানের হাত ঘুরে কর্তাদের পকেটে যায়।
সব শুনে মনে হলো, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার স্বার্থ। জামাল উদ্দিন এলাকার মাদক কারবার নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট করতেন। স্থানীয় পত্রিকাটিতে সেসব খবর ছাপাও হতো। এসব কারণেই মাদক ব্যবসায়ীরা তাঁকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
খুনের পর গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি আদালতে বলেছিলেন, তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, জামাল উদ্দিনের হাত ও পা কেটে নেবেন, চোখ তুলে ফেলবেন—কিন্তু প্রাণে মারবেন না। স্বাভাবিকভাবেই এই খুনের সঙ্গে ফাঁড়ির সেই পুলিশ সদস্যের হাত ছিল। কুরিয়ারে আসা ফোনালাপ তারই প্রমাণ।
জামালের বাবা আমাকে বললেন, ফাঁড়ির সেই সদস্য শুধু খুনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি এখন এ নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ না করার জন্য তাঁদেরকে চাপে রেখেছেন। হত্যা মামলার প্রধান আসামির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করে তাঁকে নানাভাবে সহায়তাও করছেন।
এলাকার আরও কয়েকজনের সঙ্গে আমার কথা হলো। তাঁরা বললেন, জামালকে যারা খুন করেছে, তাদের সঙ্গে ফাঁড়ির সেই সদস্যের অনেক দহরম-মহরম। রাত বাড়লেই তাদের একসঙ্গে দেখা যায়।
শার্শা থানায় তখন ওসি ছিলেন এ কে এম ফারুক হোসেন। তিনি আমার সব কথা শুনে বললেন, ‘আপনার মাথা খারাপ, পুলিশ কি মার্ডার করে?’ তখন যশোরের এসপি ছিলেন কামরুল আহসান। তিনি বলেছিলেন, ‘এই ফোনালাপ সাজানো হতে পারে।’
জামালের এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমার রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর একটি তদন্ত কমিটি হয়েছিল। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৭ মে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তাতে সাতজনের নাম উল্লেখ ছিল। কিন্তু অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ছাড়াও লোকজন সেদিন যাদের ঘটনাস্থলে দেখেছিল, তাদের অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। জামালের অসহায় বাবা এ নিয়ে অনেক চেষ্টা-তদবির করেছিলেন, কিন্তু কে শোনে তাঁর কথা।
‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে গতকাল আবার মনিরুলকে ফোন করেছিলাম এই মামলার শেষটা জানতে। মনিরুল বললেন, আদালতে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত জামালের বাবা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। এখন এ মামলা নিয়ে কেউ আর ঘাঁটাঘাঁটি করে না।
মনিরুলের কথায় মনে হলো, এ মামলার কোনো সাক্ষী আর আদালতে যান না। সে কারণে বিচারও আটকে গেছে। পড়ে থাকতে থাকতে ধুলোর আস্তরণে ঢেকে গেছে হতভাগ্য এক গ্রামীণ সাংবাদিক খুনের ‘কেস ডকেট’।
এখানে বিচারের বাণী আর কাঁদে না, পাথর হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:

বেনাপোল মোড় থেকে উত্তর দিকে যে গ্রামটিতে আমরা যাচ্ছি, সেটি কাশীপুর। অর্ধেক বাংলাদেশে, অর্ধেক ভারতে। সীমান্তের উঁচু কাঁটাতার গ্রামটিকে এফোঁড়-ওফোঁড় করেছে। সেই পথ ধরে মিনিট বিশেক চলার পর গাড়ি এসে থামল ধবধবে সমাধিসৌধের সামনে। কিছুক্ষণ আগে তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। সেই পানিতে ধুয়ে সমাধির পাথর আরও শুভ্র হয়েছে। সমাধির গায়ে খোদাই করা নামটি দেখে বুক ভরে গেল–বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধি।
যশোর বিমানবন্দর থেকে এযাত্রায় আমার সঙ্গী হয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম। সমাধির দিকে তাকিয়ে তিনি বেশ বিজ্ঞর মতো বললেন, যে গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠর সমাধি থাকে, সেখানকার মানুষও মাদকের কারবার করে! আমি তাঁকে অনিমেষ বৈশ্যর চরণ শুনিয়ে বললাম, যেখানে রবীন্দ্রনাথের গান বাজে, সেখানেও মানুষ খুন হয়।
মনিরুল হেসে বললেন, কিন্তু এটাও সত্যি যে আমরা এখানে খুনের ঘটনা জানতে এসেছি। মনিরুলের কথা ঠিক, সীমান্তের এই গ্রামে আমরা এসেছি এক গ্রামীণ সাংবাদিকের খোঁজ নিতে, মাদক ও চোরাচালান বিষয়ে প্রতিবেদন করে যিনি খুন হয়েছেন।
যাঁর খোঁজ নিতে এসেছি, তিনি বিখ্যাত কেউ নন, খুব সাধারণ একজন। নাম জামাল উদ্দিন। কাজ করতেন যশোর থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক গ্রামের কাগজ’-এ, কাশীপুর প্রতিনিধি হিসেবে। তাঁর খুনের খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছিল দায়সারাভাবে, ভেতরের পাতায় খুব ছোট করে। সাধারণ একজন গ্রামীণ সাংবাদিককে নিয়ে এত ভাবার সময় কার আছে?
জামাল উদ্দিন খুন হন ২০১২ সালের ১৫ জুন, রাতে। এর মাস তিনেক পর বেনামি একটি চিঠি আসে আমার কাছে। খামের ভেতরে শুধু একটি পেনড্রাইভ। সেটাতে থাকা অডিও ফাইল কম্পিউটারে চালাতেই দেখি একটি ফোনালাপ।
‘–ও যখন মা মা কয়ে চিৎকার করে, আমি তখন লাথি দিয়া রেলিংটা ভাইঙ্গা ওর গলা চেপে ধরি। চিৎকার দিবি না, খবরদার! তারপর ভুঁড়িটা নিয়ে নিছি।
-প্রথম কী করিছিলি?
-প্রথম ভুঁড়ি, তারপর চোখ, তারপর তিনটা রগ।
-রক্ত তো পড়ে নাই বেশি?
-চেপে ধরেছিলাম না। চিৎকার যাতে না পাড়ে। রক্ত যাতে না পড়ে সেভাবেই মারছি।
-দূরে থাক, সাবধানে থাক; ধরা পড়িস না।’
পেনড্রাইভের ভেতরে একটি ওয়ার্ড ফাইলে ছিল সেই খুনের বিবরণ। সেটা পড়ে বুঝলাম, এই ফোনালাপ একজন খুনি এবং এক পুলিশ সদস্যের। এই খুনের সঙ্গে তারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পড়ে-শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। যশোরের মনিরুলকে ফোন করে বললাম, কাল আসছি। এটা ২০১২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।
উড়োজাহাজ থেকে যশোর বিমানবন্দরে নামতেই তুমুল বৃষ্টি। সেই বৃষ্টির পথ মাড়িয়ে বেনাপোল হয়ে কাশীপুর গ্রামে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে গেল। জামাল উদ্দিনের বাড়িও খুঁজে পেলাম সহজে। বাড়ি না বলে একে কুঁড়েঘর বলাই ভালো। একটিমাত্র মাটির ঘর, তাতে আসবাব বলতে শুধু একটি কাঠের চৌকি। দুই মেয়ে রিয়া ও নেহা আর ছেলে চঞ্চলকে নিয়ে জামাল উদ্দিনের সংসার। স্থায়ী পেশা বলতে বেনাপোলের বাসমালিক সমিতিতে চাকরি, বাসের সময় নিয়ন্ত্রণের কাজ (স্টার্টার)। আর মাঝেমধ্যে এলাকার খবর পাঠাতেন গ্রামের কাগজে।
সেই জামাল উদ্দিনকে এক রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান তাঁর পরিচিত কয়েকজন। তাঁরা কাশীপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে গল্প জুড়ে দেন। গল্পের ফাঁকে চেতনানাশক মেশানো কোমল পানীয় খাওয়ান জামালকে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এ ঘটনার ৫-৬ মিনিটের মধ্যে সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে হাজির হন।
অত রাতে মফস্বলের ওই বাজারে লোকজন বেশি ছিল না। তারপরও লোকজন খুনিদের চিনিয়ে দিয়ে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করে। কিন্তু পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।
জামালের ভাই লিটন আমাকে বললেন, ‘কিলারদের দেইখে লোকজন পুলিশকে বলল, ভাই, ওই দ্যাখেন, খুনিরা যাইতেছে। পুলিশ বলল, তোমাদের কিছু করতি হবি না, আমরা দেকছি।’
এরপর খুনিরা চলে গেল। কিন্তু লোকজন পুলিশের এ কর্মকাণ্ড মেনে নিতে পারেনি। প্রতিবাদে পুলিশের সামনেই তারা সন্দেহভাজন দুই খুনির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আমি কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, খুনটা হলো কী করে। জামালের বাবা আবদুল আলিম আমাকে বললেন, দেড় মাস আগে কাশীপুর ঘাট দিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার (গাড়ির এসিতে ব্যবহারের উপযোগী) পাচারে বাধা দিয়েছিলেন জামাল। সেখানকার চোরাচালানি শরিফুল ও তোতা এটা পাচার করছিল। পরে জামাল থানায় খবর দিয়ে এসব ধরিয়ে দেন। এতে পুলিশ ফাঁড়ির তখনকার ইনচার্জ ও চোরাচালানিরা ক্ষুব্ধ হয়। এ ঘটনার পরই তারা জামালকে খুনের পরিকল্পনা করে।
কাশীপুর বাজারের এক দোকানি আমাকে বললেন, এই গ্রামের আশপাশে ৬-৭টি চোরাচালানের ঘাট আছে। প্রতি মাসে এসব ঘাট থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ৩-৪ লাখ টাকা আদায় করেন। কাশীপুর গ্রাম থেকে একটু দূরের শার্শা থানা-পুলিশের গৌরপাড়া ফাঁড়ি। চোরাচালানের ঘাট থেকে আয়ের সব টাকা সেই ফাঁড়ির প্রধানের হাত ঘুরে কর্তাদের পকেটে যায়।
সব শুনে মনে হলো, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার স্বার্থ। জামাল উদ্দিন এলাকার মাদক কারবার নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট করতেন। স্থানীয় পত্রিকাটিতে সেসব খবর ছাপাও হতো। এসব কারণেই মাদক ব্যবসায়ীরা তাঁকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
খুনের পর গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি আদালতে বলেছিলেন, তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, জামাল উদ্দিনের হাত ও পা কেটে নেবেন, চোখ তুলে ফেলবেন—কিন্তু প্রাণে মারবেন না। স্বাভাবিকভাবেই এই খুনের সঙ্গে ফাঁড়ির সেই পুলিশ সদস্যের হাত ছিল। কুরিয়ারে আসা ফোনালাপ তারই প্রমাণ।
জামালের বাবা আমাকে বললেন, ফাঁড়ির সেই সদস্য শুধু খুনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি এখন এ নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ না করার জন্য তাঁদেরকে চাপে রেখেছেন। হত্যা মামলার প্রধান আসামির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করে তাঁকে নানাভাবে সহায়তাও করছেন।
এলাকার আরও কয়েকজনের সঙ্গে আমার কথা হলো। তাঁরা বললেন, জামালকে যারা খুন করেছে, তাদের সঙ্গে ফাঁড়ির সেই সদস্যের অনেক দহরম-মহরম। রাত বাড়লেই তাদের একসঙ্গে দেখা যায়।
শার্শা থানায় তখন ওসি ছিলেন এ কে এম ফারুক হোসেন। তিনি আমার সব কথা শুনে বললেন, ‘আপনার মাথা খারাপ, পুলিশ কি মার্ডার করে?’ তখন যশোরের এসপি ছিলেন কামরুল আহসান। তিনি বলেছিলেন, ‘এই ফোনালাপ সাজানো হতে পারে।’
জামালের এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমার রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর একটি তদন্ত কমিটি হয়েছিল। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৭ মে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তাতে সাতজনের নাম উল্লেখ ছিল। কিন্তু অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ছাড়াও লোকজন সেদিন যাদের ঘটনাস্থলে দেখেছিল, তাদের অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। জামালের অসহায় বাবা এ নিয়ে অনেক চেষ্টা-তদবির করেছিলেন, কিন্তু কে শোনে তাঁর কথা।
‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে গতকাল আবার মনিরুলকে ফোন করেছিলাম এই মামলার শেষটা জানতে। মনিরুল বললেন, আদালতে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত জামালের বাবা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। এখন এ মামলা নিয়ে কেউ আর ঘাঁটাঘাঁটি করে না।
মনিরুলের কথায় মনে হলো, এ মামলার কোনো সাক্ষী আর আদালতে যান না। সে কারণে বিচারও আটকে গেছে। পড়ে থাকতে থাকতে ধুলোর আস্তরণে ঢেকে গেছে হতভাগ্য এক গ্রামীণ সাংবাদিক খুনের ‘কেস ডকেট’।
এখানে বিচারের বাণী আর কাঁদে না, পাথর হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

বেনাপোল মোড় থেকে উত্তর দিকে যে গ্রামটিতে আমরা যাচ্ছি, সেটি কাশীপুর। অর্ধেক বাংলাদেশে, অর্ধেক ভারতে। সীমান্তের উঁচু কাঁটাতার গ্রামটিকে এফোঁড়-ওফোঁড় করেছে। সেই পথ ধরে মিনিট বিশেক চলার পর গাড়ি এসে
২৬ মার্চ ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বেনাপোল মোড় থেকে উত্তর দিকে যে গ্রামটিতে আমরা যাচ্ছি, সেটি কাশীপুর। অর্ধেক বাংলাদেশে, অর্ধেক ভারতে। সীমান্তের উঁচু কাঁটাতার গ্রামটিকে এফোঁড়-ওফোঁড় করেছে। সেই পথ ধরে মিনিট বিশেক চলার পর গাড়ি এসে
২৬ মার্চ ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

বেনাপোল মোড় থেকে উত্তর দিকে যে গ্রামটিতে আমরা যাচ্ছি, সেটি কাশীপুর। অর্ধেক বাংলাদেশে, অর্ধেক ভারতে। সীমান্তের উঁচু কাঁটাতার গ্রামটিকে এফোঁড়-ওফোঁড় করেছে। সেই পথ ধরে মিনিট বিশেক চলার পর গাড়ি এসে
২৬ মার্চ ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

বেনাপোল মোড় থেকে উত্তর দিকে যে গ্রামটিতে আমরা যাচ্ছি, সেটি কাশীপুর। অর্ধেক বাংলাদেশে, অর্ধেক ভারতে। সীমান্তের উঁচু কাঁটাতার গ্রামটিকে এফোঁড়-ওফোঁড় করেছে। সেই পথ ধরে মিনিট বিশেক চলার পর গাড়ি এসে
২৬ মার্চ ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে